ভোলা-লক্ষ্মীপুর নৌপথে মেঘনা নদীতে কলমীলতা নামের একটি ফেরিতে আগুন লেগে নয়টি কাভার্ডভ্যান ও পিকআপভ্যান পুড়ে গেছে।
ভোলা সদর উপজেলার ভোলার চর ও লক্ষ্মীপুর জেলার ভোলার মতিরহাট সীমানার মাঝামাঝি এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস, নৌ-পুলিশ ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
ভোলার ইলিশা নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজন পাল নিউজবাংলাকে জানান, লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী ঘাট থেকে ১৬টি মালবাহী ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান নিয়ে ফেরিটি ইলিশা ঘাটের উদ্দেশে রওনা দেয়। এক ঘণ্টা চলার পর ফেরিতে আগুন ধরে যায়। এর এক ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট সেখানে পৌঁছায়।
এ বিষয়ে ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরি ইনচার্জ পারভেজ খান বলেন, ‘খবর পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা ভোলা থেকে আরেকটি ফেরিতে ফায়ার সার্ভিসের টিম নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাই। সেখানে আগুনের ভয়াবহতা দেখে আমরা অবাক হয়ে যাই। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও নয়টি যানবাহন পুড়ে গেছে।
‘তবে ওই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিস না নিতে পারলে হয়তোবা ফেরিতে থাকা অন্য যানবাহনগুলোসহ ফেরিরও ক্ষতি হয়ে যেত। এমনকি প্রাণহানির মতো ঘটনাও ঘটতে পারত।’
ফেরির এক যাত্রী তানজিল হোসেন জানান, আগুন লাগার পর স্টাফসহ যাত্রীরা ফেরির পেছন দিকে নিরাপদে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে মাছ ধরার একটি ট্রলার এগিয়ে এলে তারা ওই ট্রলারের সাহায্যে নিরাপদে ভোলার ইলিশা ঘাটে যান।
আরেক যাত্রী নাছির বলেন, ‘আমার গাড়িতে বেঙ্গল প্লাস্টিকের মালামাল ছিল। আগুন লাগার সাথে সাথে আমার গাড়িতে আগুন লাগে। আমি ট্রলারে করে ঘাটে নামি।’
বর্তমানে ফেরিটি মেঘনা নদীর ভোলার চর এলাকায় নোঙ্গর করা আছে।
আরও পড়ুন:স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল, মুক্তিযোদ্ধাদের দল। আমরা এই আদর্শকে ধারণ করি, লালন করি। মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে পাক হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর ঝাপিয়ে পড়েছিল, গণহত্যা চালিয়েছিল তখন একজন দেশপ্রেমিক সেনা অফিসার শহীদ জিয়াউর রহমান পাকিস্তানীদের এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তিনি বলেছিলেন, ‘আমি বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম পাকিস্তান সরকারের সাথে। আমি বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে। বাংলাদেশ যদি স্বাধীন না হতো তাহলে কোর্ট মার্শালে জিয়াউর রহমানের ফাঁসি হতো এই বিদ্রোহ ঘোষণার কারণে। নিশ্চিত ফাঁসি জেনেও তিনি দেশ মাতৃকার জন্য বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার কাজি মন্টু কলেজ মাঠে আয়োজিত ‘সম্প্রীতি সমাবেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে এসএম জিলানী বলেন, ইতিহাস থেকে জেনেছি, যখন কোনো দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয় তখন সেই দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলের নেতা সে দেশের মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে থাকেন। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে থাকেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য ছিল বাংলাদেশের মানুষের। কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা সেদিন স্বাধীনতার ঘোষণা দেন নাই। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ সেদিন দিকবেদিক নেতৃত্ব শূণ্যতায় ছিল। জিয়াউর রহমান অপেক্ষায় ছিলেন হয়তো স্বাধীনতার ঘোষণা কেউ দিবে। কিন্তু কোন রাজনৈতিক দলের নেতা যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন না। জিয়াউর রহমান উপলব্ধি করলেন যদি স্বাধীনতার ঘোষণা না দেই তাহলে বাংলাদেশর মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবে না। আর যদি বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ না হয় তাহলে স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা বিজয়ী হতে পারব না।
সমাবেশে কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী আবুল খায়ের। অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বশার হাওলাদার, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অলিউর রহমান হাওলাদার, মুক্তিযোদ্ধা মোদাচ্ছের ঠাকুরসহ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের সিনিয়র নেতারা।
ইতালির রোমে অনুষ্ঠেয় বিশ্ব খাদ্য ফোরাম ২০২৫-এ যোগ দিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলে আরও রয়েছেন কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান ও অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি উইং) ড. মো. মাহমুদুর রহমান।
উপদেষ্টার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল ফোরামে দেশের কৃষি, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিয়ে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময় ও সদস্য দেশসমূহের সাথে বিভিন্ন সেশনে অংশগ্রহণ করবে। সফরকালে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা ইতালির ইন্টেরিয়র মিনিস্টার এর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইতালির রোমস্থ জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিতব্য এ ফোরাম ১০ অক্টোবর শুরু হয়ে চলবে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত। সূত্র: বাসস
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীকে হত্যার দায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে কিশোরগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমিন বিপ্লব আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন। পাশাপাশি আসামিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে ছয় মাসের অতিরিক্ত কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ইসলাম উদ্দিন (৫৫) তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের তেওরিয়া গ্রামের মৃত আবুল হাসেমের ছেলে। তিনি ধলা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য।
কিশোরগঞ্জের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তর ধলা চকেরবাড়ির ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম ও তেওরিয়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ইসলাম উদ্দিনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ইসলাম উদ্দিন কামরুল ইসলামকে ছুরিকাঘাত করেন।
তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে কামরুলের ভাতিজা আনোয়ার ফকির ওরফে আনার (৩৭) এর বুকেও ছুরিকাঘাত করেন ইসলাম উদ্দিন। স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় আনোয়ার ফকিরকে উদ্ধার করে তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই আখলাকুল ফকির বাদী হয়ে ১৫ জনকে আসামি করে তাড়াইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই ২০১৮ সালের ৬ ডিসেম্বর ইসলাম উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ আদালত রায় ঘোষণা করে।
মাগুরায় হেযবুত তওহীদের উদ্যোগে ‘তওহিদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র গঠনে গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার মাগুরা প্রেসক্লাব হলরুমে এই সভার আয়োজন করা হয়। মাগুরা জেলা হেযবুত তওহীদের সাধারণ সম্পাদক লতিফুল ইসলাম মিলনের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি আলিম শেখ।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেযবুত তওহীদের সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুজ্জামান মিলন এবং খুলনা বিভাগীয় রাজনৈতিক যোগাযোগ সম্পাদক ফিরোজ মেহেদী প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, বর্তমান বিশ্বে কোন মতবাদ বা ব্যবস্থা মানবজাতির জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। আজ পৃথিবীতে গভীর সংকট বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ তওহীদ ভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।
বক্তারা আরো বলেন, কোনো রাষ্ট্র ব্যবস্থা নাগরিকদের নিরাপত্তা, ন্যায় বিচার, মানবাধিকার ও মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে না পারলে সেই রাষ্ট্র ব্যবস্থা ব্যর্থ। তাই একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে গণমাধ্যমের শান্তিপূর্ণ ভূমিকা অপরিসীম।
গোলটেবিল বৈঠকে মাগুরার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকসহ সংগঠনের নেতারা ও সুধীরা উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবের শুম্ভপুর রেল গেইট এলাকায় ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেন ছাত্র-জনতা। বুধবার দুপুরে ভৈরব উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের শুম্ভপুর রেল গেইট এলাকায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা যায়, ভৈরবকে জেলা বাস্তবায়ণের দাবিতে ছাত্রজনতা জড়ো হয়ে ময়মনসিংহ থেকে ছেড়ে আসা নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনের পূর্বে শুম্ভপুর রেল গেইটে এলাকায় রেল লাইনের ওপর লাল কাপড় টাঙিয়ে ট্রেনটি বেলা ১.২১ মিনিটে থামিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ছাত্র জনতা তাদের দাবি জানিয়ে ৫-৭ মিনিট পর ভৈরব থানার পুলিশের সহযোগিতায় শুম্ভপুর এলাকা থেকে ভৈরব স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এ সময় হঠাৎ চলতি ট্রেন থাকতে দেখে পথচারীদের মধ্য নানা কৌতুহল সৃষ্টি হয়।
এ সময় স্থানীয় ছাত্র-জনতার নেতা রাজীব বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ভৈরবকে দেশের ৬৫ তম জেলায় রূপান্তর করা। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছর যাবত বিগত সরকার আমাদের দাবি পূরণ করেননি। তাই বর্তমান সরকারের কাছে দাবি থাকবে অতি দ্রুত ভৈরবকে জেলা ঘোষণাসহ বাস্তবায়ন করবে। তা না হলে কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে ভৈরবে সড়ক, রেল ও নৌপথ বন্ধ করে দেয়ার হুশিয়ারি দেন।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার ওসি এসআই তোফায়েল আহমেদ জানান, জেলার দাবিতে ছাত্র-জনতা নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেন। ট্রেনটি শুম্ভপুর এলাকায় ৫-৭ মিনিটের মত থেমে ছিল বলে তিনি জানান।
নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় একসময় অবৈধ কারখানায় ভেজাল ওষুধ তৈরি ও বিক্রির দায়ে জেল খাটা এরশাদ আলী (৫৫) এবার শিশু চিকিৎসক সেজে অপচিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
‘ডাক্তার’ সেজে তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার আহসানগঞ্জ এলাকায় মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। অথচ তার কোনো বৈধ চিকিৎসা ডিগ্রি বা সনদ নেই, এমনকি রেজিস্টার্ড চিকিৎসকও নন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এরশাদ আলীর ভুল চিকিৎসায় শিশুরা মারাত্মক শারীরিক জটিলতায় পড়ছে, এমনকি মৃত্যুর আশঙ্কাও তৈরি হচ্ছে।
জানা যায়, জেলার আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মাত্র ৯০০ মিটার দূরে আহসানগঞ্জ সরকারি হাইস্কুল মার্কেটে অবস্থিত ‘মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে প্রতিদিন অসংখ্য রোগী ভিড় করেন। সপ্তাহে মাত্র একদিন এখানে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. বিধান কুমার শিশুদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বাকি ছয় দিন ফার্মেসির মালিক এরশাদ আলী নিজেই চিকিৎসকের ভূমিকায় শিশুদের নানা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, এরশাদ আলী রাজশাহীর পার্শ্ববর্তী বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের গাদু শেখের ছেলে। অতীতে তিনি ঢাকার চানখারপুল এলাকায় বাসায় অবৈধ ওষুধ কারখানা স্থাপন করে ভেজাল ওষুধ তৈরি করতেন এবং তা বিভিন্ন ফার্মেসিতে সরবরাহ করতেন। এ ঘটনায় একটি গোপন অভিযানে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত তার কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ওষুধ জব্দ করে এবং তাকে গ্রেপ্তার করে। পরে আদালতের রায়ে তাকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরশাদের অপচিকিৎসার শিকার হয়েছেন অনেকেই।
উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রামের হযরত আলী অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ১৩ মাস বয়সি কন্যাশিশু শ্বাসকষ্টে ভুগছিল। লোকমুখে শোনে এরশাদ আলীর কাছে নিয়ে গেলে তিনি একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকসহ সাতটি ওষুধ দেন। পরে জানতে পারি তিনি কোনো বৈধ চিকিৎসক নন।’
জাত আমরুল গ্রামের আরিফুল ইসলাম জানান, ‘তার মেয়ের জন্য প্রকৃত চিকিৎসক যে ওষুধ লিখে দিয়েছিলেন, মেহেদী মেডিকেল হল ফার্মেসিতে গেলে এরশাদ আলী তা পরিবর্তন করে ইনজেকশন দেন। ইনজেকশনটি ভুলভাবে প্রয়োগ করায় তার মেয়ের হাত ফুলে যায় এবং পরবর্তীতে রাজশাহীতে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়। তিনি অভিযোগ করেন, মেয়ের চিকিৎসা করতে গিয়ে তাকে নিজের জমি বন্ধক রাখতে হয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা রওনক রাজীব বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং ঔষধ প্রশাসন যদি এখনই পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে এরশাদের মতো ব্যক্তিরা ভবিষ্যতে আরও বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনবে।’
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে এরশাদ আলী দাবি করেন, আমি ফার্মেসিস্ট কোর্স সম্পন্ন করেছি, ফলে আমি চিকিৎসা দিতে পারি। সরকারের পক্ষ থেকে আমার ড্রাগ লাইসেন্সও রয়েছে। হ্যাঁ আমি কিছু দিন জেলে ছিলাম। এর বেশি কিছু বলতে চাই না। আর আপনাদের কোনো সনদ দেখাতে বাধ্য নই।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে নওগাঁর সিভিল সার্জন ডা. মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং এটি একটি দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌর প্রশাসনের জনকল্যাণমুখী বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করেছে পৌরসভাটির চিত্র। প্রাণ ফিরে পেয়েছে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও বাজার উন্নয়নের কার্যক্রম। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকাসহ ভানুগাছ বাজারের স্থানীয় উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা তাদের অর্থ দিয়ে নির্মাণ করেছেন দোকানকোটা। যা থেকে পৌরসভা মাসিক ভাড়া গ্রহণ করতে পারবে যা পৌরসভার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করবে। নতুন করে নানামুখী উন্নয়নের মাধ্যমে কমলগঞ্জ পৌরসভাকে বদলে দেওয়ার কারিগর হিসেবে ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মাখন চন্দ্র সূত্রধর।
জানা যায়, কমলগঞ্জ পৌরসভার ভানুগাছ বাজারে পূর্ব ও পশ্চিম পাশের নালার ওপর প্রকল্প কর্তৃক জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, মৌলভীবাজার থেকে ইজিপিতে দরপত্রের মাধ্যমে ড্রেন স্ল্যাবসহ নির্মাণ করা হয়েছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে। তৎকালীন পৌর মেয়র মো. জুয়েল আহমেদের সিদ্ধান্ত ছিল কালভার্টে স্ল্যাব নির্মিত হলে পূর্ব ও পশ্চিম অংশ ভবিষ্যতে পৌর কর্তৃপক্ষ সালামির বিনিময়ে সেখানে সেমিপাকা দোকান গৃহনির্মাণ করে পৌরসভার মাসিক ভাড়া গ্রহণ করতে পারবে যা পৌরসভার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করবে। সে লক্ষ্যে কালভার্টের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে স্ল্যাবসহ কালভার্ট নির্মিত হওয়ার পর জায়গাটি অরক্ষিত থাকায় ভানুগাছ বাজারের ব্যবসায়ীসহ খুচরা ফল বিক্রেতারা সে জায়গার ওপর ময়লা-আবর্জনা ফেলে জায়গাটি দখল করে নষ্ট করে ফেলতেছে। তাই পৌর কর্তৃপক্ষ বর্তমানে সিদ্ধান্ত নেয় যে, জায়গাটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সেলামির ভিত্তিতে সেমিপাকা দোকান গৃহনির্মাণ করে দিলে জায়গাটি সুরক্ষিতসহ পৌরসভার রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পাবে।
অতিসম্প্রতি একটি কুচক্রীমহল ইর্ষান্বিত হয়ে কমলগঞ্জ পৌরসভার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে ভানুগাছ বাজারের দোকানকোঠা নির্মাণ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ভুল এবং মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কাজী মামুনুর রশীদ, আবু তালেব, আরমান হোসেন দুলনসহ অনেক ব্যবসায়ীরা জানান, পৌরসভার এমন উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। আরও আগে যদি এমন উদ্যোগ নেওয়া হতো তাহলে কমলগঞ্জের ভানুগাছ বাজারের চিত্র পাল্টে যেত। বর্তমানে বাজারের ভেতরে দোকান ঘর নির্মাণ ও পৌরসভার ভেতরে ড্রেনের ওপর দোকানকোটা নির্মাণ করায় পৌর এলাকার ভানুগাছ বাজারের চিত্র পাল্টে গেছে। সবগুলো চালু হলে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে মানুষজন এসে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবে। যা থেকে সরকার ভালো রাজস্ব আদায় করতে পারবে।
নিজ অর্থায়নে পৌরবাজারে ঘর নির্মাণ করা রাজন, পারভেজ, শুভ, বুলবুল, মুক্তাদিরসহ অনেকেই জানান, আমরা পৌরসভায় আবেদন করি। তার পরিপ্রেক্ষিতে নিজ অর্থায়নে দোকানকোটা নির্মাণ করি। যা থেকে পৌরসভা মাসিক ভাড়া আমাদের কাছ থেকে গ্রহণ করবেন। এতে করে সরকারের বাড়তি রাজস্ব আয় হবে। তারা জানান, বর্তমানে কিছু কুচক্রী মহল পৌরসভার এমন উন্নয়নের চিত্র দেখে ওঠে পড়ে লেগেছে নিন্দা করার জন্য। তারা ফায়দা লুটতে না পারায় বিভিন্ন ফেক আইডি ব্যবহার করে পৌরসভার বদনাম ছড়াচ্ছে। যা তারা কখনো সফল হতে পারবে না।
ভানুগাছ বাজার পৌর বণিক সমিতির সভাপতি ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম কিবরিয়া সফি বলেন, স্থানীয় উদ্যোক্তা ও বণিক সমিতির সহায়তায় বাজারে দোকানকোটা নির্মাণ করা হয়। যা পৌর বণিক সমিতির যেমন লাভ হবে, তেমন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও পৌরসভার আয় বৃদ্ধি পাবে। তিনি আরও জানান, বর্তমান পৌর প্রশাসক যেকোনো ধরনের নাগরিক সমস্যার কথা জানালে তিনি ছুটে যান সেই সমস্যা সমাধানে। এভাবে তিনি অল্প সময়ে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। এত অল্প সময়ে প্রশাসক হিসেবে যে সকল কাজ হাতে নিয়েছেন সেগুলো ছিল পৌরবাসীর প্রাণের দাবি।
আলাপকালে কমলগঞ্জ পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মুহাম্মদ বেলাল আহম্মদ জানান, পৌরসভার ভানুগাছবাজারে ঘর নির্মাণ ও ড্রেনের ওপর দোকান কোটা নির্মাণের পর বাজারের পুরো চিত্র পাল্টে গেছে। যা আগের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এসব ঘর ও দোকানঘর থেকে পৌরসভা রাজস্ব আয় করতে পারবে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত, অক্টোবর ৬, ২০০৯ সালের পৌরসভার সম্পত্তি চুক্তি ৪৪-১ (ক) বিধি মোতাবেক ‘পৌরসভার মালিকানাধীন অথবা তার ওপর ন্যস্ত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ, উন্নয়নের জন্য বিধান করিতে পারিবে’ এবং ৪৪-২ (খ) বিধি মোতাবেক ‘নিজস্ব অথবা সরকার অথবা অন্য কর্তৃপক্ষ হতে প্রাপ্ত সম্পত্তির সার্বিক ব্যবস্থাপনা এবং উন্নতি সাধন করতে পারবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কমলগঞ্জ পৌর প্রশাসক মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, তিনি নিজের দায়বদ্ধতা থেকেই এ কাজগুলো করে যাচ্ছেন। যতদিন দায়িত্বে রয়েছেন ততদিন কমলগঞ্জ পৌর ও উপজেলার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাবেন। এ বিষয়ে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
মন্তব্য