নিহত ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর মল্লিক। ছবি: নিউজবাংলা
নিহত জাহাঙ্গীর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নুরুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং তিতুদহ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি বালু ব্যবসায়ী ছিলেন।
চুয়াডাঙ্গায় বালু তোলাকে কেন্দ্র করে পূর্ব বিরোধের জেরে জাহাঙ্গীর মল্লিক নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার বেলা ১টার দিকে সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
জাহাঙ্গীর উপজেলার নুরুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং তিতুদহ ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি বালু ব্যবসায়ী ছিলেন। ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুপুরে ছয়ঘরিয়া গ্রামে ট্রাক্টরে করে বালু আনতে যান জাহাঙ্গীরসহ আরও কয়েকজন। বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের ধাওয়া দেয়। অন্যরা পালাতে সক্ষম হলেও জাহাঙ্গীর ধরা পড়েন। তাকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাহাঙ্গীর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা নিউজবাংলাকে বলেন, সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শুকুর আলীর সঙ্গে ছয়ঘরিয়া গ্রামের যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিনের বিরোধ রয়েছে। জাহাঙ্গীর শুকুর আলীর বালু তদারকি করতেন। সম্প্রতি ছয়ঘরিয়া গ্রামের তিস্তা নদী থেকে বালু তুলে কেরু অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের খামারের পাশেই একটি স্থানে রাখেন শুকুর আলী। পূর্ব বিরোধের জেরে সেই বালু দখল নিয়ে বিক্রি বন্ধ করে দেন যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিন।
জাহাঙ্গীরের ভাই ইকবাল হোসেন জানান, বালু তোলা ও চাঁদা দাবি নিয়ে একটি পক্ষের লোকজনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরদের বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরেই জাহাঙ্গীরকে কোদাল, ব্যালচা ও লাঠিসোঁটা দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
তিতুদহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শুকুর আলী জানান, ‘জাহাঙ্গীর আমার বালুর ব্যবসা দেখাশোনা করত। দুপুরে সে বালি উত্তোলনের জায়গায় গেলে তার ওপর হামলা চালানো হয়। হামলায় অংশ নেয় রাজনৈতিক দলের একটি অঙ্গসংগঠনের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এর আগে তোলা বালু বিক্রি করতে গেলে চাঁদা দাবি করা হয়। এ ঘটনায় আমি মামলাও করি।’
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান বলেন, জাহাঙ্গীরের শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল। তার বাম হাত ভাঙা ছিল। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জাহাঙ্গীর।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ বা মামলা করেননি কেউ। জড়িত ব্যক্তিদের আটক করতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
বাগেরহাটের ফকিরহাটে দুই ট্রাকের সংঘর্ষে এক ট্রাকের চালক নিহত হয়েছেন। ছবি: নিউজবাংলা
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক গোলাম সরোয়ার বলেন, মোল্লাহাট থেকে সিমেন্টবাহী একটি ট্রাক বাগেরহাটের কাটাখালী এলাকায় যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা খেজুরবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়।
বাগেরহাটের ফকিরহাটে দুই ট্রাকের সংঘর্ষে আমিরুল ইসলাম নামে এক ট্রাকচালক নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দুইজন।
উপজেলার খুলনা-মাওয়া মহাসড়কের পালপাড়ায় মঙ্গলবার দুপুরে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আমিরুল ইসলামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক মো. গোলাম সরোয়ার বলেন, মোল্লাহাট থেকে সিমেন্টবাহী একটি ট্রাক বাগেরহাটের কাটাখালী এলাকায় যাচ্ছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা খেজুরবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে খেজুরবাহী ট্রাকের চালক ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আহত দুইজনকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আমিরুলের মরদেহ হাইওয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামে দুর্ঘটনাকবলিত লরি ও ট্রাক উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা
মিয়াবাজার হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আছাদুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলে ট্রাকের চালক ও হেলপার মারা যান। এ সময় আহত এক মোটরসাইকেলচালককে হাসপাতালে নিলে তিনিও মারা যান। এখন পর্যন্ত কারও পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ট্রাক ও লরির সংঘর্ষে চালক, হেলপারসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ৭ জন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা চৌদ্দগ্রামের আটগ্রাম এলাকায় মঙ্গলবার বেলা ১০টা ৫০ মিনিটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, চৌদ্দগ্রামের উনকোট গ্রামের লরি চালক রাসেল, ট্রাকের হেলপার চট্টগ্রামের মিরেরশরাই উপজেলার করেরহাটের আলমগীর হোসেন ও মোটরসাইকেল চালক পেয়ার আহম্মেদ।
আহতরা হলেন, ট্রাক চালক শহীদ, লরির হেলপার শাহাদাত, স্থানীয় রাজন, জামাল, রেদোয়ান, মামুন ও রাজিব।
প্রত্যক্ষদর্শীরা নিউজবাংলাকে জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের আটগ্রাম পুরাতন রাস্তার মাথায় একটি ট্রাক (ফেনী-ট-১১-০০৪৬) দাঁড়িয়ে ছিল। ঢাকামুখী একটি লরি (ঢাকামেট্রো-ঢ-৬২-০০১৬) ট্রাকটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এ সময় পাশে থাকা মোটরসাইকেলের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে লরিটি সড়কের পাশে থাকা দোকানে ঢুকে যায়।
এতে ঘটনাস্থলে তিনজন নিহত হন। মিয়াবাজার হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ও চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আহতদের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
মিয়াবাজার হাইওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আছাদুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলে ট্রাকের চালক ও হেলপার মারা যান। এ সময় আহত মোটরসাইকেলচালককে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনিও মারা যান। দুর্ঘটনাকবলিত লরি ও ট্রাক উদ্ধার করে ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে।
আদালতের নির্দেশে তদন্তের জন্য এক নারীর দেহ উত্তোলন করেছে পুলিশ। ছবি: নিউজবাংলা
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোরশেদা খানম জানান, গত ১৭ জানুয়ারি ওই নারীর মৃত্যু হয়। তখন অভিযোগ না দিয়ে দুলনের পরিবার মরদেহ দাফন করে। পরে তাদের সন্দেহ হয়, দুলনের স্বামী আব্দুল কাইয়ুম মারধর করে তাকে হত্যা করেছে।
দাফনের তিন মাস পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে তোলা হলো নেত্রকোণা সদরের দুলন আক্তার নামের এক নারীর মরদেহ।
সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়নের দরুনবালী এলাকার একটি কবরস্থান থেকে মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহটি তোলা করা হয়।
তাকে হত্যা করা হয়েছে সন্দেহে স্বজনরা আদালতে মামলা করলে তদন্তের জন্য বিচারক মরদেহ তুলে ময়নাতদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোরশেদা খানম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত ১৭ জানুয়ারি ওই নারীর মৃত্যু হয়। তখন অভিযোগ না দিয়ে দুলনের পরিবার মরদেহ দাফন করে। পরে তাদের সন্দেহ হয়, দুলনের স্বামী আব্দুল কাইয়ুম মারধর করে তাকে হত্যা করেছে।
দুলনের মা আলোয়া আক্তার গত ১২ এপ্রিল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আব্দুল কাইয়ুমসহ তিনজনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন। অন্য আসাসিরা হরেন, কাইয়ুমের দ্বিতীয় স্ত্রী রুমা আক্তার ও তার মা বেগম আক্তার।
সেদিনই আব্দুল কাইয়ুমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এএসপি মোরশেদা জানান, মামলায় বলা হয়েছে সদর উপজেলার কাইলাটী ইউনিয়নের দরুনবালী গ্রামের আব্দুর কাইয়ুমের সঙ্গে ২০১৪ সালে বিয়ে হয় বারহাট্টা নোয়াগাঁও গ্রামের দুলন আক্তারের। এরপর থেকেই দুলনের কাছে যৌতুক চাইতেন কাইয়ুম।
যৌতুক না পেয়ে দুলনকে প্রায়ই মারধর করা হতো। সবশেষ গত ১৭ জানুয়ারিতে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
দুলনের মৃত্যুর একমাস পর কাইয়ুম কলমাকান্দা উপজেলার রুমা আক্তারকে বিয়ে করেন। এরপরই দুলনের পরিবারের সন্দেহ হয়, তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসীম উদ্দিন। ছবি: নিউজবাংলা
অভিযোগকারী তরুণী জসীমকে বিয়ের চাপ দিলে চলতি বছরের ৫ মার্চ তাকে দুই দিনের মধ্যে বিয়ের কথা জানান। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও বিয়ে করেন না। একসময় জানান, তিনি বিবাহিত এবং ওই তরুণীকে তার বিয়ে করা সম্ভব নয়।
ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেছেন বরিশালের এক তরুণী।
বরিশাল মহানগর পুলিশের এয়ারপোর্ট থানায় সোমবার রাতে মামলার আবেদন করেন ওই তরুণী।
অভিযুক্ত জসীম উদ্দিন মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি।
অভিযোগে ওই তরুণী জানান, ২০১৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর বাসায় ঢুকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে জসীম তাকে ধর্ষণ করেন। এতে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়লে জসীম তাকে গর্ভপাতের ওষুধ খাওয়াতে থাকেন এবং একপর্যায়ে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করান।
এরপর জসীম তাকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন। তরুণী তাকে বিয়ের চাপ দিলে চলতি বছরের ৫ মার্চ জসীম তাকে দুই দিনের মধ্যে বিয়ের কথা জানান। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও বিয়ে করেন না। একসময় জানান, তিনি বিবাহিত এবং ওই তরুণীকে তার বিয়ে করা সম্ভব নয়।
এ ঘটনার পর অভিযোগকারী মামলার সিদ্ধান্ত নেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমলেশ চন্দ্র হালদার নিউজবাংলাকে জানান, অভিযোগ নেয়া হয়েছে। তবে সত্যতা যাচাইয়ের পর মামলা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জসীম উদ্দিন জানান, তিনি বিবাহিত। গত রোববার তার বিয়ে হয়েছে। অভিযোগকারী তার আত্মীয়। রাজনৈতিক কারণে ওই মেয়েকে ব্যবহার করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
১৬৯ বোতল ফেনসিডিলসহ জাবেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ছবি: নিউজবাংলা
র্যাব কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর তালুকদার নাজমুস সাকিব জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশ্বরোড এলাকায় একটি প্রাইভেট কারে তল্লাশি চালিয়ে ১৬৯ বোতল ফেনসিডিলসহ জাবেদকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনেকদিন ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জাবেদ জড়িত বলে জানা গেছে।
কুমিল্লায় প্রাইভেট কারে করে ফেনসিডিল পাচারের সময় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সদর দক্ষিণ উপজেলার বিশ্বরোড এলাকা থেকে সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার জাবেদ আলীর বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার উত্তর টকবী গ্রামে।
র্যাব কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর তালুকদার নাজমুস সাকিব জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশ্বরোড এলাকায় একটি প্রাইভেট কারে তল্লাশি চালিয়ে ১৬৯ বোতল ফেনসিডিলসহ জাবেদকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অনেকদিন ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জাবেদ জড়িত বলে জানা গেছে। রাতেই তাকে সদর দক্ষিণ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবাশিষ চৌধুরী নিউজবাংলাকে জানান, জাবেদের বিরুদ্ধে মাদক মামলা করে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
হাসপাতালে সামনের ওষুধের দোকানের মালিকরা বলছেন, স্যালাইনের দাম বেড়েছে। তবে নগরীর অন্য এলাকার দোকানে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে স্যালাইন।
বরিশাল সদরের জাগুয়া ইউনিয়নের আব্দুর রব ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন রোববার। বেড না পেয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালের মাঠে।
ভ্যান চালক আব্দুর রবের অভিযোগ, হাসপাতাল থেকে দেয়া হচ্ছে না স্যালাইন, কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতাল দিয়া একটা স্যালাইন দেছেল শরীরে দেয়ার লইগ্গা। স্যালাইন শেষ হওয়ার পর নার্সগো ধারে চাইছেলাম, হেরা কইছে এহানে নাই। কইলো ফার্মেসি দিয়া কিন্না আনেন।
‘সরকারি হাসপাতালে যদি স্যালাইন না থাহে তয় মোগো মতো গরীব মাইনষে কেমনে চিকিৎসা নিমু। পরে হেই কথা মত দুইটা স্যালাইন কেনা লাগছে।’
আব্দুর রবসহ হাসপাতালে ভর্তি অন্য ডায়রিয়া রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সুযোগে হাসপাতালের বাইরের ওষুধের দোকানগুলো বেশি দামে স্যালাইন বিক্রি করছে। ৯০ টাকার স্যালাইন কারও কাছে চাওয়া হচ্ছে ১২০ বা ১৩০ টাকা, কারও কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ২০০ টাকাও।
সরেজমিনে সোমবার সকালে সদর হাসপাতালের সামনে দেখা গেল, ডায়রিয়া রোগীর স্বজনরা স্যালাইনের জন্য ভিড় করে আছেন ওষুধের দোকানগুলোতে।
জাকিয়া বেগম নামে এক রোগীর স্বজন অভিযোগ করেন, ‘এমনেই কোনো সিট পাই নাই। হের উপর স্যালাইনডাও কেনা লাগে যদি তয় কি চিকিৎসা দেয় বুঝিনা।
‘স্যালাইনের আসল দাম ৯০ টাহা, আর হেই স্যালাইন ফার্মেসি ওয়ালারা সিন্ডিকেট কইরা ১৩০ টাহায় বেচে। এহানের ডাক্তার নার্সরা একটা বা দু্ইটা দিয়াই কয় নাই শেষ স্যালাইন।’
হাসপাতালের সামনের দি সেবা মেডিক্যাল হল নামের ওষুধের দোকানের কর্মচারি মো. বদরুদ্দোজার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেন স্যালাইনের দাম বেশি রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘হাজার মিলির কলেরা স্যালাইন রেট ৯০ টাকা করেই। তবে প্রোডাকশন কম থাকায় কোম্পানি অনেক বেশি দামে বিক্রি করেছে। তাই আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হয়েছে।’
হাজরা মেডিক্যাল হলের মো. শুভ বলেন, ‘৫০০ মিলির কলেরা স্যালাইনের দাম ৭০ টাকা আর হাজার মিলির কোম্পানি রেট ৯০ টাকা। অনেকে বেশি দাম রেখেছে। কিন্তু আমরা তা করিনি।’
নগরীর অন্য এলাকার ওষুধের দোকানে গিয়ে জানা গেল, স্যালাইনের দাম বাড়েনি। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর বিএম কলেজ এলাকার মা মেডিক্যাল হলের মালিক মো. কাদের বলেন, ‘কলেরা স্যালাইনের দাম বাড়েনি। যারা বেশি দাম নিচ্ছে তারা অবৈধভাবে তা নিচ্ছে।’
এদিকে, রোগীদের স্যালাইন বেশি কিনতে হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা মলয় কৃষ্ণ বড়াল বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে একজন রোগীকে তিন থেকে চারটি স্যালাইন আমরা দিয়ে থাকি। এর বেশি স্যালাইন লাগলে তাদের কিনতে হয় বাইরে থেকে। এমনিতে স্যালাইনের কোনো সংকট নেই আমাদের।’
ওষুধের দোকানের সঙ্গে যোগসাজশ করে স্যলাইনের সংকট দেখিয়ে নার্সরা রোগীদের তা কিনতে বাধ্য করছে কি না এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।
বরিশাল বিভাগে কয়েকদিন ধরেই বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা। এতে খোদ স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, বরিশালে এর আগে এমন ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায়নি।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক বাসুদেব কুমার দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হঠাৎ করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করেছি আমরা। শহরের মানুষ তেমন আক্রান্ত না হলেও, বেশি আক্রান্ত হচ্ছে উপকূল ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ।’
তিনি জানান, অতিরিক্ত গরমে স্বস্তি পেতে মানুষ পান্তা কিংবা শরবত খাচ্ছে বেশি। এসব তৈরিতে দূষিত পানি ব্যবহারের কারণেই ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়ছে বলে তার মত।
বাসুদেব কুমার দাস গত রোববার জানিয়েছিলেন, বরিশাল বিভাগে ১৮ দিনে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৯ হাজার ১১৪। সব থেকে বেশি আক্রান্ত দ্বীপ জেলা ভোলায়। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৭ হাজার ৪২১। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত ৬ হাজার ৭৩৭, পিরোজপুরে ৩ হাজার ৭৫০, বরগুনায় ৪ হাজার ৩৫৩ এবং ঝালকাঠিতে আক্রান্ত ২ হাজার ৯৯৮ জন।
জেনারেল হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী সেখানে গত ২৪ ঘন্টায় ৯৪ জন ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হন। জায়গা সল্পতার কারণে অনেককে মাঠে, ভ্যানে, গাছ তলায় বা ড্রেনের পাশে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে।
ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে ভালুকায় ছুরিকাঘাতে নিহত ব্যবসায়ী আসাদুল ইসলামের মরদেহ। ছবি: নিউজবাংলা
ভালুকা থানার ওসি জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে ব্যবসায়ী আসাদুলকে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ময়মনসিংহের ভালুকায় পূর্বশত্রুতার জেরে আসাদুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে ধীতপুর ইউনিয়নের আকন্দ বাড়ি রাস্তায় সোমবার সন্ধ্যায় তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়।
আসাদের বাড়ি ধীতপুর ইউনিয়নের গওয়ারী গ্রামে। তিনি পোল্ট্রি খাদ্যের ব্যবসা করতেন।
ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম বিয়ষটি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ব্যক্তির স্বজনদের অভিযোগ, পাশের গ্রামের আব্দুল মতিন আকন্দের ছেলে মেহেদী হাসান ও তার সহযোগীরা আসাদুলকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে।
আসাদের বোন আফরোজা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কিছুদিন আগে ভাওয়ালিয়াবাজু বাজারে কোনো এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেহেদীর সঙ্গে আসাদুলের কথা-কাটাকাটি হয়। সেই ঘটনার জেরে আমার ভাইকে ওরা হত্যা করেছে।’
ভালুকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম, প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, পূর্বশত্রুতার জেরে ব্যবসায়ী আসাদুলকে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া ও আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মন্তব্য