বাগেরহাটের মোল্লাহাটে বাবার আঘাতে আড়াই বছর বয়সী এক শিশুর প্রাণহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নিহত শিশুর নাম রাইসা আক্তার।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন শিশুটির বাবা হুমায়ুন সরদার।
পুলিশ জানিয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে চাকরি করেন হুমায়ুন।
মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী গোলাম কবির জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ার জেরে রাইসাকে আছাড় দেন তার বাবা। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যায় শিশুটি।
তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে হুমায়ুন পলাতক রয়েছেন। আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। হুমায়ুনকে আটকের জন্য অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।’
শিক্ষার্থীদের সামনেই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শার্টের কলার চেপে ধরে কিল-ঘুষি মেরেছেন যুব মহিলা লীগের এক নেত্রী। বুধবার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা সরকারি বহুমুখী মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
লাঞ্ছনার শিকার প্রধান শিক্ষকের নাম রবিউল ইসলাম খান। আর অভিযুক্ত সামশাদ রানু ওরফে রাঙ্গা ভাবি জেলা যুব মহিলা লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মহিলা প্যানেল মেয়র।
লাঞ্ছনার শিকার প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান বলেন, ‘আজ (বুধবার) বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা নেয়া হচ্ছিল। একই দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা ছিল।
‘অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা চলায় সামষ্টিক মূল্যায়ন পরীক্ষা নিতে দেরি হচ্ছিল। তাই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। তাদের মধ্যে সামশাদ রানুর ছেলে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্কও ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমি বিদ্যালয়ে আসতেই আমার শার্টের কলার চেপে ধরে টানতে টানতে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের দিকে নিয়ে যান সামশাদ রানু। একইসঙ্গে আমাকে কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় পায়ের জুতা খুলেও তিনি আমাকে মারধর করতে যান। অন্য শিক্ষকরা এগিয়ে আসায় তিনি জুতা দিয়ে আমাকে মারতে পারেননি।
‘সামশাদ রানু বিদ্যালয়ে সবার সামনে আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন। আকষ্মিক এ ঘটনায় আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। বিষয়টি মোবাইল ফোনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছি।’
অভিযুক্ত সামশাদ রানু এ বিষয়ে বলেন, ‘বিদ্যালয়ের কক্ষ না খোলায় আমার ছেলেসহ প্রায় ৮শ’ শিক্ষার্থী সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত তীব্র তাপদাহের মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠে অবস্থান করছিল। সোয়া ১০টার পর প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে এলে আমি তাকে শ্রেণিকক্ষের তালা খোলার কথা বলি। ‘তিনি বলেন- এই দায়িত্ব আমার না, সহকারী প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস ও কর্মচারী সিদ্দীকের। তিনি আমাকে উল্টো বলেন, সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ অন্যরা আপনাকে আমার পেছনে লেলিয়ে দিয়েছে।’
রানু বলেন, “প্রধান শিক্ষকের এমন বক্তব্যের জবাবে তাকে আমি বললাম, আমি এখানে কোনো নেত্রী হিসেবে না, অভিভাবক হিসেবে এসেছি। এরপরই আমি তার জামার কলার চেপে ধরে টেনে নিয়ে ‘তালা খোল’ বলে কক্ষের তালা খুলিয়েছি। তখন শিক্ষার্থীরা ক্লাসে বসে।”
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গার ইউএনও রনি আলম নূর বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক মোবাইল ফোনে আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তাকে আমার কার্যালয়ে আসতে বলেছি। অভিযোগ পেলে ওই নারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জে বিসিক শিল্প নগরীর গার্মেন্ট (পোশাক কারখানা) মালিকদের হয়রানি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার ফতুল্লার বিসিক শিল্প নগরীর পশ্চিম মাসদাইর থেকে বিসিকের ৩ নম্বর গেট পর্যন্ত ড্রেন ও রাস্তা নির্মাণ কাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ করে শামীম ওসমান বলেন, ‘কাউকে প্রশ্রয় দেবেন না। ঈদের পর র্যাব, পুলিশ, প্রয়োজনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে আসবো এই বিসিকে। ব্যবসায়ীরা তাদের মাল কাকে দেবেন সেটা তাদের ব্যাপার। পোশাক মালিকদের হয়রানি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে এই রাস্তার কাজ আগামী জুলাই মাসেই শুরু হবে। নারায়ণগঞ্জের শিল্প খাত থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় হয়। আমি শিল্প মন্ত্রণালকে জানাব, সমস্যার সমাধান না হলে ব্যবসায়ীরা ট্যাক্স দেবেন না।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘অনেকে দেশকে অস্বাভাবিক করে দিতে চায়। ভৌগোলিক সীমারেখায় থাবা দিতে চায়। কে কোন দল করে সেটা বিষয় নয়। সবার আগে দেশ। দেশ ভালো থাকলে, সবাই ভালো থাকবে।’
বিসিক শিল্প মালিক সমবায় সমিতির সহযোগিতায় এবং সদর উপজেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে রাস্তাটি নির্মাণ করার কথা জানানো হয় অনুষ্ঠানে। এ সময় আরও বক্তব্য দেন বিএকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মো. হাতেমসহ অন্য অনেক ব্যবসায়ী।
আরও পড়ুন:র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) হেফাজতে মারা যাওয়া নওগাঁ ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক সুলতানা জেসমিনের আর্থিক লেনদেনের প্রমাণপত্রে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায়ের নাম পাওয়া গেছে। সুলতানার হাতে লেখা প্রমাণপত্রগুলো তার স্বজনরা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির হাতে তুলে দিয়েছেন।
৪৬ পাতা প্রমাণপত্রের মধ্যে একটি পাতায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের একটি নম্বর, অংকে ও কথায় লেখা ৫০ হাজার টাকা, ০৫/০১/২০২৩ তারিখ (বৃহস্পতিবার) ও এডিসি মিল্টনের নাম লেখা আছে। সবই সুলতানার হাতে লেখা বলে তার স্বজনরা দাবি করেছেন।
সুলতানা জেসমিনের মামা নাজমূল হক মন্টু জানান, নওগাঁ শহরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন তার ভাগ্নী। সম্প্রতি সেই বাসা থেকে আসবাবপত্র সরিয়ে নিতে গিয়ে আর্থিক লেনদেনের ৪৬ পাতার পত্রগুলো পাওয়া যায়।
পত্রগুলোতে দেখা যায়, মৃত্যুর আগে সাম্প্রতিক সময়ে সুলতানা বেশ কয়েকটি মোবাইল ব্যাংকিং নম্বরে টাকা পাঠানোর কথা লিখে রেখেছিলেন। প্রমাণপত্রগুলো হাইকোর্টের নির্দেশে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
৪৬ পাতা প্রমাণপত্রের একটিতে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায়ের নাম লেখা আছে। সেই কাগজে একটি মোবাইল ব্যাংকিং নম্বর ও ৫০ হাজার টাকা দেনদেনের কথাও উল্লেখ করা আছে।
সুলতানার হাতে লেখা এসব প্রমাণপত্রের সূত্র ধরে অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এনামূল হকের দায়ের করা মামলা ও সুলতানার মৃত্যুর ঘটনার অনেক রহস্য বেরিয়ে আসবে উল্লেখ করেন মন্টু।
সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু ও তার বিরুদ্ধে এনামূল হকের করা মামলার বিষয়টি তদন্ত করছে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। এর অংশ হিসেবে সম্প্রতি নওগাঁ সার্কিট হাউসে সুলতানার স্বজনদের জবানবন্দি রেকর্ড করেছে কমিটি।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানান, খুঁটিনাটি সংশ্লিষ্ট সব বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েই তদন্ত করছেন তারা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই প্রতিবেদন জমা দেয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সুলতানার আর্থিক লেনদেনের প্রমাণপত্রে নাম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে এডিসি মিল্টন চন্দ্র রায় বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। সুলতানা জেসমিনকে আমি চিনতাম না। তার সঙ্গে আমার পরিবারের কারও কোনো সম্পর্কও ছিলো না।’
র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চ আদালতের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ২২ মে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির প্রধান করা হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খানকে।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, নওগাঁর সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং নওগাঁর পুলিশ সুপার মনোনীত একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
প্রসঙ্গত, র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল চলতি বছরের ২২ মার্চ রাজশাহী স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক যুগ্ম সচিব এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে সঙ্গে নিয়েই নওগাঁ পৌরসভার চণ্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনকে আটক করে। আটক অবস্থায়ই ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান।
আরও পড়ুন:কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর সুবল-আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থদের মধ্যে চারজন দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি আছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে।
শিক্ষার্থীদের অসুস্থতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিনুল ইসলাম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, বুধবার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা ছিল। ওই সময় বিভিন্ন কক্ষের শিক্ষার্থীরা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় তাদেরকে দ্রুত দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, চারজন শিক্ষার্থী গরমে অসুস্থ হয়ে পড়লে অন্যরাও ভয় ও আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সবাইকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছে।
হাসপাতালে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের দেখতে যান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, দাউদকান্দি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মেজর মোহাম্মদ আলী সুমনসহ অনেকে।
মঙ্গলবার একই স্কুলের শিক্ষার্থী হাবিবা অসুস্থ হয়ে মারা যায়। তার চোখ মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়। যে কারণে অনেকেই ধারণা করেছেন হিট স্ট্রোকে হাবিবার মৃত্যু হয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, ময়নাতদন্তের পর হাবিবার মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
আরও পড়ুন:নওগাঁ শহরের স্টাফ কোয়ার্টার এলাকায় একটি বেসরকারি হাসপাতালে পিত্তথলির পাথর সরাতে গিয়ে ভুল করে নাড়ি কাটায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্বজনরা।
মারা যাওয়া ৪৮ বছর বয়সী নারীর নাম মিলি বেগম। বলাকা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে তার অস্ত্রোপচার করেন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক আবদুল বারী খন্দকার।
স্বজনরা জানান, এক মাস আগে মিলি বেগমের পিত্তথলিতে পাথর আছে বলে জানান চিকিৎসক। সে পাথর অপসারণে বলাকা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ২০৩ নম্বর শয্যায় সোমবার বিকেলে ভর্তি হন।
ওই দিন সাড়ে ৫টার দিকে তার অস্ত্রোপচার করা হয়।
স্বজনদের অভিযোগ, অস্ত্রোপচারের সময় ভুল করে চিকিৎসক ওই নারীর বেশ কয়েকটি নাড়ি কেটে ফেলেন। এতে তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর কারণ জানতে চাইলে চিকিৎসক আবদুল বারী খন্দকার পালিয়ে যান।
মিলি বেগমের ছোট ছেলে তায়েব হাসান বলেন, ‘অপারেশনের পর বেডে নেয়ার ৫০ মিনিটের মধ্যে মা মারা যান। ওরা ভুল করে পেটের নাড়ি কেটে মাকে মেরে ফেলেছে।
ভাতিজা আশফাকুর রহমান বলেন, ‘ওই ক্লিনিকে এর আগেও অনেক মানুষকে ভুল অপারেশনে মরতে দেখেছি। এরপরেও ক্লিনিক বন্ধ হচ্ছে না।’
বড় ছেলে মেহেদী হাসান বলেন, ‘মাকে দাফনের পর আমরা শোকে কাতর। এটা হত্যাকাণ্ড। ডা. বারী এবং ক্লিনিক মালিক এনামুলের বিরুদ্ধে শিগগিরই মামলা করব। মোটা অংকের টাকায় সমঝোতার লোভ দেখিয়েছিল। আমার মায়ের মতো আর কোনো মা যেন ভুল অপারেশনে মারা না যান, সে জন্য আমরা লড়াই করে যাব।’
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. আবদুল বারী খন্দকার বলেন, ‘অপারেশন থিয়েটারে নেয়ার আগে রোগীর সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল। অপারেশন শুরুর পর সব প্রক্রিয়া ডিসপ্লেতে দেখানো হয়। এরপর তাকে শয্যায় নেয়া হলে সম্ভবত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে। ভুল অপারেশনে মৃত্যুর অভিযোগটি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে বলাকা ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের পরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘মিলি বেগমের অপারেশন অভিজ্ঞ সার্জন দিয়েই করানো হয়। সেটা ঠিক না ভুল আমি বলতে পারব না। রোগীর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল। মৃত্যুর পর সমঝোতার চেষ্টার অভিযোগটি সঠিক নয়।’
নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, ‘বলাকা ক্লিনিকে রাতে হট্টগোল সৃষ্টি হয়েছিল। পরে সেখানে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। লিখিত অভিযোগ এখনও পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
নওগাঁর সিভিল সার্জন আবু হেনা রায়হানুজ্জামান সরকার বলেন, ‘খোঁজ নিয়ে দেখব।’
আরও পড়ুন:সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় পিকআপে ট্রাকের ধাক্কার ঘটনায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইমরুল হাসান জানান, বুধবার দুপুরে নিহতদের পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে জেলা প্রশাসন নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা ও আহতদের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেয়।
এ ছাড়া সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে দেন।
বুধবার ভোরে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের কুতুবপুর এলাকায় বালুবাহী ট্রাক ও যাত্রীবহনকারী পিকআপের সংঘর্ষে ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুর্ঘটনায় নিহতদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ১৫ জনের মৃত্যুর তথ্য জানালেও সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৪ জনের মরদেহ পাওয়ার কথা জানায়।
দুপুরে ওই ১৪ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১২ জন। হতাহতদের সবাই নির্মাণশ্রমিক।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, হিমঘরের পাশে মাটিতে বসে আহাজহারি করছেন নিহত মেহের মিয়ার স্ত্রী চাঁদনী বেগম। তিনি বলেন, ‘সকালে ডিম রান্না করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি না খেয়েই চলে যান। এখন আমার বাচ্চাগুলো এতিম হয়ে গেল। আমি টাকা চাই না। বাচ্চাদের বাবাকে চাই।’
আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রবিউল ইসলাম বলেন, ‘হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকটি আমাদের পিকআপে ধাক্কা দিলে উল্টে যায়।’
দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিলেটের পুলিশ কমিশনার ইলিয়াছ শরীফ বলেন, ‘পিকআপে করে যাত্রী পরিবহন নিষিদ্ধ। তারপরও মহাসড়কে পিকআপে করে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। এ কারণেই এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা যাতে আর না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক থাকব।’
আরও পড়ুন:ভারতে পাচারকালে যশোরের শার্শা সীমান্তের রুদ্রপুর থেকে এক কেজি ৪০০ গ্রাম ওজনের ১২টি স্বর্ণ বারসহ দুই পাচারকারীকে আটক করেছে বিজিবি।
বুধবার ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের টহল দলের সদস্যরা স্বর্ণবারসহ এই দু’জনকে আটক করেন। তারা হলেন- বেনাপোল বন্দর থানার পুটখালী গ্রামের মিন্টু হালদারের ছেলে দেব হালদার ও শফিকুল ইসলামের ছেলে সাইদুল ইসলাম।
খুলনা ২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর রহমান জানান, সীমান্ত পথে একটি স্বর্ণের চালান ভারতে পাচার হবে এমন সংবাদে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি নজরদারি বাড়ায়।
বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে রুদ্রপুর গ্রামের বিলপাড়া এলাকার মেইন পিলার ২২-এর পাশ দিয়ে সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তি সীমান্তের দিকে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের ধাওয়া করে আটক করা হয়। পরে তাদের দেহ তল্লাশি করে ১২টি স্বর্ণবার পাওয়া যায়, যার ওজন এক কেজি ৪০০ গ্রাম। উদ্ধার এই স্বর্ণের বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি ২০ লাখ টাকা।
আটক পাচারকারীদের বিরুদ্ধে স্বর্ণপাচার আইনে মামলা হবে বলে জানান বিজিবি কর্মকর্তা।
মন্তব্য