অল্প আয়ের সংসার। সারাদিন ভ্যান চালিয়ে যা রোজগার, তা দিয়েই চাল-ডাল কিনে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু দিকে লকডাউনে আটকা পড়ে দুর্বিষহ দিন কেটেছে রানা বেপারীর।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের শুরুটা মাদারীপুরের শিবচরে। করোনা এলোমেলো করে দিয়েছিল এই উপজেলার জনজীবন। এক বছর পার হলো, কিন্তু সেই কষ্টের দিনগুলো এখনও তাড়িয়ে বেড়ায় সেখানকার মানুষদের।
দিনগুলোর কথা মনে করে নিউজবাংলাকে রানা বলেন, ‘হারা জীবনেও ওই দিনগুলার কথা ভোলতে পারমু না।
‘আমার বাড়িওয়ালীর (স্ত্রী) তখন সিজারে বাচ্চা হইছে, তার ওপর ছেলের অইছে অসুখ। আয় রোজগার সব বন্ধ, গাড়ি চালাইতে পারি না। চাউল কিন্না আনমু নাকি সিজারের খরচ দিমু, নাকি ছেলেরে চিকিৎসা করামু, চোখে খালি আন্দার দেখছি ভাই।’
লকডাউনের তিন মাস ভ্যান চালাতে পারেননি জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কখনও ভ্যান নিয়ে রাস্তায় বের হলেও যাত্রী না পাওয়ায় অর্থ কষ্টে কেটেছে সেসব দিন।
চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম শনাক্ত হয় গত বছরের আট মার্চ। দেশের করোনার সংক্রমণের শুরুর ধাক্কাটা বেশি দেখা যায় মাদারীপুরের শিবচরে।
ইউরোপে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর গত বছর মার্চ থেকে ইতালি, গ্রিস, স্পেন, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের থেকে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি ফিরে এসেছিলেন। তাদের বেশির ভাগই ছিল মাদারীপুরের। ১৩ই মার্চ শিবচরে ইতালি ফেরত এক ব্যক্তির দেহে করোনা শনাক্ত হয়। মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ নাগাদ দেশে শনাক্ত হওয়া ১৭ জন করোনা রোগীর মধ্যে আটজনই ছিলেন শিবচরের।
এ কারণে দেশে সবচেয়ে প্রথম লকডাউন করা হয় শিবচর উপজেলাকে। হঠাৎ টেলিভিশনে লকডাউনের খবর শুনে উপজেলার বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে যায়।
হাট-বাজার, শিক্ষা-সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হল। শুধু খোলা ছিল ওষুধ ও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান। তাও আবার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।
শিবচরবাসী হয় গৃহবন্দী। রাস্তায় রাস্তায় টহল দেয় আইনশৃংখলা রক্ষা বাহিনী। সবার মনে নতুন রোগটি নিয়ে আতঙ্ক।
এক বছর আগের ওই দিনগুলোর কথা মনে করে শিবচর বাজরের কাপড়ের ব্যবসায়ী রেজাউল ব্যাপারী বলেন, ‘৭ লাখ টাকা খরচ কইরা দোকান দিছি, দোকান ছাড়া আমাগো আর কোন আয় রোজগার নাই। করোনার তিন মাস দোকান বন্ধ থাকায় বড় কষ্টে কাটাইছি। আমরা ব্যবসায়ী দেইক্কা আমাগো কেউ দুই কেজি চাউলও দেয় নাই। কম অইলেও এই তিন মাসে ৪-৫ লাখ টাকা বেচা-বিক্রি করতে পারতাম। দিনগুলা খুব কষ্টে কাটাইছি। এখন মোটামুটি বেচা বিক্রি অয়। বেশি একটা অয় না। মানুষের হাতে আগের মত টাহা পয়সা নাই।’
বাজারের চায়ের দোকানী মোতাহার হোসেন মুন্সী বলেন, ‘হারা করোনার লকডাউনে মাত্র ৩০ কেজি চাউল পাইছি। পুলিশের ডরে দোকান খোলতে পারি নাই। পোলা মাইয়া লইয়া অনেক কষ্ট অইছে। এহন আল্লায় ভালই রাকছে। হেই কষ্টের দিনগুলা আর মনে করতে চাই না।’
লকডাউনের সময় ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েন শিক্ষার্থীরা। শিবচর বরহামগঞ্জ সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী জায়েদ বিন শাহীদ বলেন, ‘সারা বছর পড়াশোনা করে যখন ফাইনাল পরীক্ষার জন্য অপেক্ষা করছিলাম, তখনই লকডাউন ঘোষণা করা হল। সারাদিন ঘরে বসে থাকতাম। দেশের সার্বিক চিন্তায় তেমন পড়াও হত না।
‘দিন যতই বাড়তে থাকল ততই আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে থাকল। আমাদের পরীক্ষা অনিশ্চিত হয়ে গেল। ঘরে বসে সারাদিন শুয়ে বসে সময় কাটাতে হত। আমরা সবাই পরীক্ষার চিন্তার চেয়ে বেঁচে থাকার চিন্তাই বেশি করেছি। তারপর যখন সরকার আমাদের অটো প্রমোশনের ঘোষণা দিল, তখন কিছুটা স্বস্তি পেলাম।’
পাচ্চর ইউনিয়নের বড় বোয়ালী গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রীস আলী বেপারী বলেন, ‘জীবনে এত দিন ঘরে থাকি নাই। দরকার একটু বাজারে যাইতাম আবার কেনাকাটা কইরা বাড়িতে চইলা আসতাম। নতুন রোগ, কোন ওষুধও আবিষ্কার হয় নাই, তাই খুব ভয় থাকতাম। এখন তো আল্লাহর অনেক রহমত করছে।’
শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘শিবচরের মানুষ ভালো একটা সাপোর্ট পেয়েছে করানোর সময়। এখানেই রোগীরা করোনা টেস্ট করতে পেরেছে। প্রথমে আমরা কিছু করোনা রোগীকে ইনডোরে চিকিৎসা দিয়েছি। তারপর এখানকার লোকাল রাজনীতিবিদ এবং প্রশাসন সবাই মিলে একটা ডিসিশন নেয় যে, একটা আইসোলেশন সেন্টার করে সেবা দিলে সাধারণ রোগীরা সেইফ থাকবে; স্বাস্থ্যকর্মীরাও নিরাপদ থাকবে।
‘সেই হিসেবে বহেরাতলা মা ও শিশু হাসপাতাল যেখানে হওয়ার কথা ছিল সেখানে ২০ শয্যা বিশিষ্ট একটি আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়। ওখানে আমরা করোনা রোগীদের রেখে সেবা দিয়েছি। আমাদের ডাক্তার এবং নার্সরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছে।’
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আমির হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রথম করোনা রোগী পাওয়া যায় শিবচরে। আমরা প্রথমত ওই শনাক্ত হওয়া রোগীদের বাড়িগুলোকে লকডাউন করি এবং তারা যাদের সঙ্গে যারা চলাফেরা করেছে তাদের লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসি।
‘প্রতিটি বাজার এবং মার্কেট সীমিত সময়ের জন্য চালু রেখেছি। মানুষকে মাস্ক পরিধান করতে বাধ্য করেছি। মসজিদগুলোতে যাতে সীমিত সংখ্যক মুসল্লি নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে নামাজ আদায় করে সে বিষয়টিও আমরা নিশ্চিত করেছি। কাঁঠালবাড়ি ঘাটে কিছুদিনের জন্য আমরা লঞ্চ চলাচল বন্ধ রেখেছিলাম… সার্বিকভাবে আমরা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছিলাম।’
লকডাউন ও আতঙ্কের দিন কাটিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন শিবচরবাসী। অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন সব শ্রেণী-পেশার মানুষ।
বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া বাজারসংলগ্ন দুটি ব্রিজ ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুই উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ। সবচেয়ে বেশি বিপাকে রয়েছেন নারী, শিশু ও শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিনই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে খেয়া নৌকায় পারাপার করতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নাচনাপাড়া বাজারের উত্তর পাশে মাঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা উপজেলার সংযোগকারী কাঠের ব্রিজটি অনেক আগেই ভেঙে যায়। পরে এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে একটি সাঁকো তৈরি করলেও সম্প্রতি জোয়ারের চাপে সেটিও ভেঙে পড়ে। ফলে দুই পাড়ের মানুষ বাধ্য হয়ে নৌকায় পারাপার করছেন।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে বরগুনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ নূরুল ইসলাম মনি সেখানে একটি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু এরপর প্রায় ১৬ বছর টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আর কোনো নতুন ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। প্রায় এক দশক আগে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হলেও তা অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় বছরের পর বছর বন্ধ রয়েছে।
অন্যদিকে, নাচনাপাড়া বাজারের দক্ষিণ পাশেও একই চিত্র। এখানে প্রায় ২ বছর আগে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা মিলে একটি অস্থায়ী সাঁকো নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু সেটিও গত ১০ সেপ্টেম্বর জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙে পড়ে। এতে কাঠালতলী, চরদুয়ানী ও নাচনাপাড়ার হাজারো মানুষের চলাচল আরও চরম দুর্ভোগে পরিণত হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা জানান, শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীদের প্রতিদিনই বড় ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। জরুরি রোগী পরিবহনেও ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। তাদের দাবি- দ্রুত বিকল্প সাঁকো নির্মাণ, স্থায়ী স্লুইসগেট ও অসমাপ্ত ব্রিজ নির্মাণ কাজ চালু করতে হবে।
এলাকাবাসীর ভাষ্য, এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রতিশ্রুতি শুনে যাচ্ছেন, কিন্তু বাস্তবে কোনো কাজ হচ্ছে না। তারা আশা করছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন।
নাটোরে দুটি অভিযানে ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাস থেকে ১৭৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রোববার ভোরে শহরের বনবেলঘরিয়া এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ভগরইল এলাকার মো. ওয়াদুদ আলী (২৫), শিবগঞ্জ উপজেলার কয়লার দিয়ার এলাকার মো. ফসের আলী সোহেল (২৯), শেখটোলা কাশিবাটিপাড়া এলাকার মো. লালন (২৫) এবং একই এলাকার মো. সাবেরুল ইসলাম শহিদ (৩৫)।
পুলিশ সুপার তারিকুল ইসলাম জানান, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভোরে প্রথমে নোয়াখালী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী গ্রামীণ ট্রাভেলসের একটি যাত্রীবাহী বাসে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় যাত্রী সিটের নিচে রাখা দুটি বস্তা থেকে ১৪ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয় এবং এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একই এলাকায় নারায়গঞ্জ থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী একটি প্লাস্টিক ক্যারেট বহনকারী ট্রাককে থামানো হয়। তল্লাশিতে ক্যারেটের নিচে রাখা ছয়টি চটের বস্তা থেকে ১৬০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ সময় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
পুলিশ সুপার আরও জানান, মাদকের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। এই অভিযান চলমান থাকবে এবং ভবিষ্যতে আরও জোরদার করা হবে।
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় পিতা ইদ্রিস আলীকে হত্যার দায়ে ছেলে রেজাউল করিম লাবুকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক মাহবুবুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
একই মামলায় নিহতের স্ত্রী রেনুকা বেগম এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত লাবুর স্ত্রী ইসমত আরাকে তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল লতিফ আকন্দ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ৪ মার্চ দুপুরে সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার অলিদহ গ্রামের একটি পুকুরে গলা ও পায়ে রশি প্যাঁচানো অবস্থায় ইদ্রিস আলীর মরদেহ ভেসে থাকতে দেখা যায়। স্থানীয়রা খবর দিলে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। ওই দিনই নিহতের ছেলে রেজাউল করিম লাবু বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তদন্তে বেরিয়ে আসে, পিতাকে হত্যা করেছিলেন মামলার বাদী রেজাউল করিম লাবুই। আদালতে তার ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রোববার এ রায় ঘোষণা করা হয়।
ফসলি জমির পানি নিষ্কাশনের দাবিতে মেহেরপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকালে গাংনী উপজেলার তেরাইল, মহব্বতপুর, বাদিয়াপাড়া, কামারখালি, ষোলটাকা ও সহড়াবাড়িয়া গ্রামের শতাধিক কৃষক জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন বামুন্দি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জুলফিকার আলী ভুট্টো। এ সময় বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, বহু বছর ধরে সঠিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় প্রতি মৌসুমে হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি বা সামান্য প্লাবন হলেই জমি ডুবে যায়। ধান, পাট, শাক-সবজি থেকে শুরু করে সব ধরনের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
কৃষকরা আরও বলেন, সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে কৃষকরা একদিকে লোকসানের বোঝা বইছেন, অন্যদিকে ঋণের টাকা শোধ করতে হিমশিম খাচ্ছেন। বক্তারা দ্রুত সেচ ও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
মানববন্ধন শেষে কৃষকরা জেলা প্রশাসকের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে দ্রুত খাল খনন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নতকরণ এবং টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা প্রকল্প হাতে নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
কৃষকদের দাবি, সরকার যদি দ্রুত উদ্যোগ না নেয়, তবে আগামী মৌসুমে আরও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে এ অঞ্চলের কৃষক-সমাজ।
জামালপুরে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার মালিক সমিতির নির্বাচন উপলক্ষে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে।
রোববার দুপুরে জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এই ফরম বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।
প্রথম দিনে সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হকের কাছ থেকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন হজরত শাহ জামাল (র.) জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল ইসলাম বুলবুল। বুলবুল জানান, বিগত দিনে নির্বাচন ছাড়া কমিটি করা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আমরা বঞ্চিত হয়েছিলাম। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে নির্বাচনের যে তফসিল ঘোষণা হয়েছে সেই অনুযায়ী সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি আরও বলেন, একটি মহল নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কেউ যাতে পকেট কমিটি করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল হক জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যেই সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আজ (রোববার) থেকে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে এবং জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত। আগামী ৪ অক্টোবর ভোট গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
কেরানীগঞ্জে দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে মানবিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে কেরানীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব। রক্তের অভাবে বিপদে পড়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানো থেকে শুরু করে চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দেওয়া, সবখানেই তারা পরিচিত এক আস্থার নাম।
২০১৪ সালে সূচনা হওয়ার পর থেকে সংগঠনটি নিয়মিত রক্তদান কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত প্রায় ১৭ হাজার মানুষকে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার সেবা দেওয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও কার্ড প্রদান কার্যক্রম স্থানীয়ভাবে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।
সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরা শুধু রক্তদানেই সীমাবদ্ধ নয়, নানা সময়ে বিনা মূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করছে। এসব ক্যাম্পে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ করা হয়। অসুস্থ ও অসচ্ছল রোগীদের জন্য তাদের এই উদ্যোগ অনেক পরিবারকে উপকৃত করছে।
সংগঠনের অন্যতম সদস্য সুমন আহমেদ জানান, মানুষের পাশে থাকা এবং মানবিক কাজের ধারা অব্যাহত রাখা আমাদের মূল লক্ষ্য। আমরা মনে করি, সমাজের বিত্তবানরা সহযোগিতার হাত বাড়ালে এই কার্যক্রম আরও বিস্তৃত হবে।
বর্তমানে কেরানীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব তরুণ প্রজন্মকে সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত করতে সচেতনতামূলক কার্যক্রমও পরিচালনা করছে। দুর্যোগকালীন ত্রাণ বিতরণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও চিকিৎসা সহায়তা সব মিলিয়ে এটি কেরানীগঞ্জের মানুষের কাছে একটি নির্ভরযোগ্য সংগঠন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
সংগঠনের সদস্য শাহাদাৎ হোসেন বলেন, আমরা শুরু থেকেই চেষ্টা করেছি মানুষের বিপদে পাশে থাকতে। রক্তের অভাবে যেন কোনো মানুষ কষ্ট না পায়, সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি। আজকে সাধারণ মানুষ আমাদের পাশে আছে বলেই কেরানীগঞ্জ ব্লাড ডোনার্স ক্লাব এ পর্যন্ত এতটা পথ এগোতে পেরেছে। আগামীতেও মানবিক সেবা অব্যাহত রাখতে চাই।
সামাজিক সংগঠক মহল বলছে, ব্লাড ডোনার্স ক্লাব ইতোমধ্যে কেরানীগঞ্জে মানবিক কাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভবিষ্যতে এই সংগঠন যদি আরও সহায়তা পায় তবে মানবতার সেবায় বড় ভূমিকা রাখতে পারবে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিলে ভোটগ্রহণ শেষে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. রেদোয়ান খান এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ জি. কে. গউছ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন, সদস্য অ্যাডভোকেট আবেদ রাজাসহ বিএনপির অন্যান্য নেতারা।
ফলাফলে সভাপতি পদে মো. জয়নাল আবেদীন বাচ্চু ৪৯৩ ভোট, সিনিয়র সহসভাপতি পদে মো. আব্দুল জলিল জামাল ৩৬০ ভোট, সাধারণ সম্পাদক পদে বদরুজ্জামান সজল ৩৯২ ভোট, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে কমর উদ্দিন আহমদ কমরু ৪১৮ ভোট এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো. আব্দুল মুক্তাদির মনু ৩২৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। দীর্ঘদিন পর হওয়া এ নির্বাচনী কাউন্সিলে নেতা-কর্মীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়।
মন্তব্য