× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

সারা দেশ
ফুটবল মাঠ কাঁপানো সেই মেয়েদের কাঁধে শ্বশুরবাড়ির জোয়াল
google_news print-icon

ফুটবল মাঠ কাঁপানো সেই মেয়েদের কাঁধে শ্বশুরবাড়ির জোয়াল

ফুটবল-মাঠ-কাঁপানো-সেই-মেয়েদের-কাঁধে-শ্বশুরবাড়ির-জোয়াল
প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে দেশসেরা খুদে ফুটবলারের পুরস্কার নিচ্ছে স্মরলিকা। ছবি: নিউজবাংলা
স্বরলিকা নিউজবাংলাকে বলে, ‘ইচ্ছে ছিল জাতীয় দলে খেলার। কিন্তু এলাকার লোকজন নানা কথা বলত। বলত, মেয়েরা ফুটবল খেললে বিয়ে হবে না, ভালো ছেলে পাওয়া যাবে না।’

বছর তিনেক আগে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর পাথরডুবি ইউনিয়নের সাবেক ছিটমহল দীঘলটারী দক্ষিণ বাঁশজানী গ্রাম পরিচিতি পায় নারী ফুটবলাদের গ্রাম হিসেবে। গ্রামকে এই পরিচিতি এনে দেয় বাঁশজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একদল মেয়ে।

২০১৮ সালে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপে তৃতীয় হয় দলটি। কাপ না জিতলেও কোয়ার্টার ফাইনাল ও স্থান নির্ধারণী ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে দেশসেরা খুদে ফুটবলার হয় বাঁশজানির স্বরলিকা পারভীন। তার হাতে সেদিন পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহলে বাংলাদেশিদের পাওয়া প্রথম পুরস্কার স্বরলিকা।

সেই স্বরলিকার এখন ফুটবল মাঠ দাপিয়ে বেড়ানোর কথা থাকলেও স্বামীর সংসারের দায়িত্ব চেপেছে কাঁধে। হাইস্কুলের গণ্ডি না পেরোতেই বিয়ে হয় স্বরলিকার। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে এমন বিয়ের কারণে নিবন্ধনও (রেজিস্ট্রি) করেনি পরিবার। ধর্মীয় রীতিতে ৫ মার্চ মোটর মেকানিক কামরুল ইসলামের সঙ্গে বিয়ে হয় তার।

ফুটবল মাঠ কাঁপানো সেই মেয়েদের কাঁধে শ্বশুরবাড়ির জোয়াল
ফুটবলের মাঠ দাপিয়ে বেড়ানো স্বরলিকা এখন গৃহবধূ। ছবি: নিউজবাংলা

স্বরলিকার মতো তার দলের সাত ফুটবলারও এখন গৃহবধূ। তাদের পরিবারের দাবি, বাল্যবিয়ে দেয়ার পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ দারিদ্র্য। সংসারের খরচ কমাতে তারা মেয়েশিশুদের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন।

স্বরলিকা নিউজবাংলাকে বলে, ‘ইচ্ছে ছিল জাতীয় দলে খেলার। কিন্তু এলাকার লোকজন নানা কথা বলত। বলত, মেয়েরা ফুটবল খেললে বিয়ে হবে না, ভালো ছেলে পাওয়া যাবে না।’

স্বরলিকার বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, কৃষিকাজ করে পাঁচজনের সংসার চালান তিনি।

‘সীমান্ত এলাকা, এডে কোনো কামকাইজ নাই। করোনার জন্য অভাব আরও বেশি হইছে। ভালো ঘর পাইছি। ডিমান্ড ছাড়াই বিয়া দিছি মেয়ের।’

স্বরলিকাদের ফুটবল দলের আরেক ফুটবলার লিশামনির জন্য পাত্র খুঁজছে পরিবার।

ফুটবল মাঠ কাঁপানো সেই মেয়েদের কাঁধে শ্বশুরবাড়ির জোয়াল
প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়া এই ফুটবল দলের সাতজনের বাল্যবিয়ে হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা

লিশামনির মা আমিনা বেগম বলেন, ‘এই তিন বছর থাকি কেউ খোঁজ নেয়নি। স্কুল বন্ধ, পড়াশুনা নাই, মেয়েরা বসি থাকে। ভালো ছেলে পাইছে স্বরলিকার বিয়ে দিছে ওর বাপ-মা। আমিও ভালো ছেলে পাইলে আমার মেয়েকেও বিয়ে দেমো। হামারতো সামর্ত (সামর্থ্য) নাই যে, মেয়েকে পড়াশুনা করামো আর খেলোয়াড় বানামো।’

বাঁশজানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফুটবল দলটিকে প্রশিক্ষণ দেন আতিকুর রহমান খোকন।

আক্ষেপভরা কণ্ঠে নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমাদের অগোচরেই মেয়েদের বিয়ে দিচ্ছে তাদের পরিবার। এখন তাদের খেলার মাঠে থাকার কথা। অথচ অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ার কারণে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। ওদের কারও মুখের দিকে তাকানো যায় না। কতগুলো সম্ভাবনা চোখের সামনেই শেষ।’

বাঁশজানি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কায়সার আলী বলেন, ‘করোনার সময় স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের খোঁজখবর তেমন নেয়া সম্ভব হয়নি। অনেকের বিয়ের খবর পরে জানতে পেরেছি। বিয়ের সময় জানতে পারলেও বিয়ে আটকানো যেত। আসলে বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর আমাদের কিছু করার থাকে না।’

ফুটবল মাঠ কাঁপানো সেই মেয়েদের কাঁধে শ্বশুরবাড়ির জোয়াল
মেডেলগুলোর মতোই এখন বাক্সবন্দি স্বরলিকার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন। ছবি: নিউজাবাংলা

জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা বাগবান্ধা গ্রামেও ঘটছে এমন বাল্যবিয়ের ঘটনা।

গ্রামের এক বাড়িতে পাওয়া গেল ১৩ বছরের রূপালী খাতুনকে। শ্বশুরবাড়ির মাটির চুলোয় মাছ ভাজতে ভাজতে সে কথা বলে নিউজবাংলার সঙ্গে।

রূপালী জানায়, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় গেল ডিসেম্বরে বিয়ে হয়েছে। তার স্বামী বাসের হেলপার।

দিনমজুর হেলাল উদ্দিনের মেজো মেয়ে রূপালী। তার বড় বোন সোনালীর বিয়ে হয় ১২ বছর বয়সে।

সদর ইউনিয়নের চাকতাবাড়ি গ্রামের রৌমারী-ঢাকা মহাসড়কের পাশে সরকারি একটি আশ্রয়কেন্দ্রে বসবাস করেন তাদের বাবা-মা ও আরও পাঁচ ভাইবোন।

রূপালী বলে, ‘আমার বাবা-মায়ের থাকার জমি নেই। অভাবে পড়েই বিয়ে দিছে। স্কুলও বন্ধ। খাবারের সমস্যা। এ জন্যই বিয়ে দিছে।’

ফুটবল মাঠ কাঁপানো সেই মেয়েদের কাঁধে শ্বশুরবাড়ির জোয়াল
কুড়িগ্রামে করোনাকালে বেড়েছে বাল্যবিয়ে। ছবি: নিউজবাংলা


রূপালীর বাবা হেলালকে পাওয়া গেল ওই আশ্রয়কেন্দ্রে। তিনি বলেন, ‘কাজকর্ম নাই। মেয়েকে যত বড় করমো, ততই ডিমান্ড বাড়বে। এখন স্কুলও বন্ধ। অভাবের মধ্যে খরচ বেশি হয়। সে জন্য মেয়েকে কম বয়সেই বিয়ে দিয়েছি। যৌতুক ৩০ হাজার টাকার মধ্যে নগদে ১৫ হাজার টাকা দিয়া বেটি পার করছি। বাকি টাকা আস্তে আস্তে দেমো।’

প্রশাসনের নজর এড়িয়ে এসব বাল্যবিয়ে কীভাবে হচ্ছে, জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা নুর মোহাম্মদ বলেন, পরিবারগুলো তথ্য গোপন করে অন্য উপজেলায় গিয়ে বিয়ে দেয়। ভুয়া জন্মসনদ বানিয়ে নেয় অনেকে। এ জন্য পরে বিপদেও পড়তে হয়। কোনো কারণে বিয়েবিচ্ছেদ করতে হলে কাগজপত্রের অভাবে আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে না অভিভাবকরা।

রৌমারীর যাদুরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরবেশ আলী নিউজবাংলাকে বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কয়েক মাসে বাল্যবিয়ে বেড়েছে। লুকিয়ে অন্য উপজেলায় নিয়ে বিয়ে দেয়া হচ্ছে। আবার দেখা যায়, শুধু হুজুর ডেকেই কলেমা পড়িয়ে বিয়ে দেয়া হচ্ছে।

ভূরুঙ্গামারীর পাথরডুবি ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরফান আলী মনে করছেন সীমান্তবর্তী এই এলাকার বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা বাড়ানো গেলে বাল্যবিয়ে কমে আসবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার দেব শর্মাও বললেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিয়ে হওয়ার পর তারা খবর পান না। বিয়ের সাক্ষী বা প্রমাণ পাওয়া যায় না বলে আইনি ব্যবস্থাও নেয়া যায় না।

ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বাল্যবিয়ে ঠেকাতে কড়া নজর রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

ফুটবল মাঠ কাঁপানো সেই মেয়েদের কাঁধে শ্বশুরবাড়ির জোয়াল
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের জরিপে উঠে আসে কুড়িগ্রামে বাল্যবিবাহের এই হিসাব। ছবি: নিউজবাংলা

বেসরকারি সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম অফিসের হিসাবে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০-এর ডিসেম্বর পর্যন্ত কুড়িগ্রামে বাল্যবিয়ে হয়েছে ২ হাজার ৭৬১টি।

এর মধ্যে কুড়িগ্রাম সদরে ৬৪২টি, রাজারহাটে ৭২টি, উলিপুরে ২২৫টি, চিলমারীতে ১৩৮টি, রৌমারীতে ৮০টি, রাজিবপুরে ৪৭টি, নাগেশ্বরীতে ১০৭৮টি, ফুলবাড়ীতে ২৮২টি ও ভূরুঙ্গামারীতে ১৯৭টি বাল্যবিয়ে হয়। এর মধ্যে ১ হাজার ৪৭টি বিয়ে ঠেকানো গেছে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে।

সংস্থাটির কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের ‘বিল্ডিং বেটার ফিউচার ফর গার্লস’ প্রকল্পের প্রকল্প কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, করোনা পরিস্থিতিতে জরিপ ব্যাহত হওয়ায় জেলায় বাল্যবিয়ের সব হিসাব রাখা যায়নি। বাস্তবে আরও বেশি বাল্যবিবাহ হয়েছে।

করোনাকালে কুড়িগ্রামে বাল্যবিয়ে বাড়ার কথা স্বীকার করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনও।

কুড়িগ্রাম-৪ (রৌমারী, রাজিবপুর ও চিলমারী) আসনের এই সংসদ সদস্য নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আর যাতে বাল্যবিয়ে না হয় সে জন্য ইউএনও ও চেয়ারম্যানরা সজাগ আছেন। আর কোনো বাল্যবিয়ে হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

আরও পড়ুন:
হাতির পিঠে চড়ে বাল্যবিয়ে, পুলিশ আসার খবরে চম্পট 
রাতে বাল্যবিয়ের আয়োজন থামাল প্রশাসন
বাল্যবিয়ে: কাজির সহযোগী নারী গ্রেপ্তার
বিয়ে বাড়িতে হাজির ইউএনও, শিক্ষক বর জেলে
বাল্যবিয়ের চেষ্টা: কনের বোনের জরিমানা, বরের মামার জেল

মন্তব্য

আরও পড়ুন

সারা দেশ
Du Plessys name on the new record of the Century in Twenty20

টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ডে নাম ডু প্লেসির

টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরির নতুন রেকর্ডে নাম ডু প্লেসির

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়ে এখন ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে মনোযোগী হয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক ক্রিকেটার ফাফ ডু প্লেসি। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেটে (এমএলসি) টেক্সাস সুপার কিংসের হয়ে করেছেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি, তাতে বিরল এক রেকর্ডে ওঠেছে তার নাম। সান ফ্রান্সিসকো ইউনিকর্নের বিপক্ষে ১০০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলার সুবাদে ইতিহাসের তৃতীয় বয়োজ্যেষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন ৪১ বছরের ডু প্লেসি।

ম্যাচে সান ফ্রান্সিসকোর বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে সুপার কিংস নির্ধারিত ওভারে ৫ ‍উইকেটে ১৯৮ রান তুলে। ব্যাট হাতে ঝড় বইয়ে ৫১ বলেই পূর্ণ করেন, তিন অঙ্কের দেখা পান ডু প্লেসি। ৬টি চার ও ৭ ছক্কার সাহায্যে করেন বরাবর ১০০ রান।

তবে ১৯৯ রানের লক্ষ্য দিয়েও ম্যাচে প্রতিপক্ষকে হারাতে পারেনি ডু প্লেসির টেক্সাস। মারকাটারি ব্যাটিংয়ে ২৩ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সান ফ্রান্সিসকো। তবে ম্যাচের ফল পক্ষে না এলেও ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে ঠিকই আলো ছড়িয়েছেন ডু প্লেসি। ৪০ বছর ৩৪২ দিন বয়সে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে বনে গেছেন তৃতীয় সর্বোচ্চ বয়সি ব্যাটার হিসেবে টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরিয়ান। তার ওপরে আছেন শুধু দুজন। ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার পল কলিংউড ৪১ বছর ৬৫ দিন বয়সে ম্যাজিক ফিগার পূর্ণ করেন ২০১৭ সালে। এছাড়া দ্বিতীয় বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে (৪১ বছর ৩৭ দিন) গ্রায়েম হিক ২০০৭ সালে একই কীর্তি গড়েছেন।

মন্তব্য

সারা দেশ
Bolter should play nine in court with death

বোল্টার যেন কোর্টে নয়, খেলেন মৃত্যুর সঙ্গে

বোল্টার যেন কোর্টে নয়, খেলেন মৃত্যুর সঙ্গে

গেল মাসে অনুষ্ঠিত হওয়া ফ্রেঞ্চ ওপেনের নারী এককের প্রথম রাউন্ডে ম্যাচটা স্বাগতিক এক টেনিস তারকাকে হারিয়ে জিতেছিলেন ব্রিটিশ টেনিস সুন্দরী কেটি বোল্টার। সেটিও প্রথম সেটে টাইব্রেকারে হারের পর কঠিন এক লড়াই শেষে দুই সেটে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় তুলে নিয়েছিল, যা তার জন্য ছিল বেশ আনন্দের, তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ইনবক্সে ঢুকতেই বোল্টারের সামনে খুলে যায় এক বিভীষিকার দরজা। ইনস্টাগ্রামে তাকে দেওয়া হুমকির মেসেজগুলো ছিল ঠিক এ রকম, ‘আশা করি ক্যানসারে মরবে।’, ‘তোমার দাদির কবর খুঁড়ে ফেলব, যদি কালকের মধ্যে মারা না যান।’, ‘মরে যাও, আমার মায়ের পাঠানো টাকা তোমার কারণে উড়ে গেছে।’ ব্রিটিশ টেনিস তারকা কেটি বোল্টার হয়তো জীবনের সেরা ম্যাচগুলোর একটি খেলেছিলেন প্যারিসের কোর্টে। ফ্রেঞ্চ ওপেনের প্রথম রাউন্ডে প্রথম সেটের টাইব্রেকারে হেরে গেলেও পরের দুই সেটে দুর্দান্তে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় ছিনিয়ে নেন ৬-৭, ৬-১, ৬-১ স্কোরলাইনে। সেটাই ছিল তার রোলাঁ গারোর মূল পর্বে প্রথম জয়। কিন্তু সেই আনন্দের সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় এক ‘অন্ধকার অধ্যায়।’ মোবাইলে ঢুকতেই ইনবক্সে একের পর এক অশ্রাব্য গালি-গালাজ, ব্যক্তিগত আক্রমণ, এমনকি পরিবারকে ঘিরে ভয়ংকর হুমকি। বোল্টারের নিজের কথায়-‘এসব এখন এত স্বাভাবিক হয়ে গেছে, যেন এটা আমার রুটিনের অংশ।’

সম্প্রতি বিবিসি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বোল্টার যা বলেছেন, তা শুধু নিজের না এ যেন একটা প্রজন্মের ভয় আর বিষণ্ণতা। তিনি বলেন, ‘শুরুতে এগুলো খুব ব্যক্তিগতভাবে নিতাম। আতঙ্কে থাকতাম, মানসিকভাবে বেশ চাপ অনুভব করতাম। মাঝে মধ্যে কান্না করতাম, ডিপ্রেশনে ভুগতাম। তবে ধীরে ধীরে এটা অভ্যাস হয়ে গেছে। এখন ভাবি এরা কারা? কীভাবে এত ঘৃণা তৈরি হয় একজন মানুষকে ঘিরে?’ তবে ব্রিটিশ এ টেনিস সুন্দরী এটাও জানেন, এর পেছনে একটা বড় ভূমিকা রয়েছে ব্যাটিংয়ের। যারা খেলায় বাজি ধরে যারা হেরে যায়, তাদের অনেকেই রাগ ঝাড়েন সরাসরি খেলোয়াড়দের ওপর। গবেষণায় ওঠে এসেছে, ২০২৪ সালেই অন্তত ৮ হাজার হুমকিমূলক বার্তা এসেছে টেনিস খেলোয়াড়দের সামাজিক মাধ্যমে, যার প্রায় ৪০ শতাংশই এসেছে ‘রাগি জুয়াড়িদের’ কাছ থেকে।

একজন তো একবারেই ২৬৩টি হুমকির বার্তা পাঠিয়েছেন। এমন ১৫টি অ্যাকাউন্টের তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, তার মতো রয়েছে আরও হাজারও। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, এসব ‘ঘৃণা ব্যবসাতে’ সামাজিক মাধ্যমগুলোর প্রতিক্রিয়া প্রায় শূন্য। ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকের মালিক প্রতিষ্ঠান মেটা কোনো মন্তব্যই করেনি। অথচ বোল্টার জানাচ্ছেন, তার ইনবক্সের স্প্যামবক্সে প্রতিদিনই অশ্লীল ছবি পাঠানো হয়। তরুণীরা যারা এই পেশায় আসছে, তারা কীভাবে মানসিকভাবে সামলাবে এসব? যদিও তিনি মাঝে মধ্যে বিপরীত পথে হাঁটেন-অপমানকারীদের উত্তর দেন নম্রভাবে। সেই সময় অনেকে আবার জবাব দেন, ‘আমি আসলে তোমার বড় ভক্ত, আবেগে লিখে ফেলেছি।’ ২৮ বছর বয়সি বোল্টারের বাগদত্তো অস্ট্রেলিয়ার টেনিস তারকা অ্যালেক্স ডি মিনর। তিনিও হুমকি পান তার হবু স্ত্রীর কারণে, আবার উল্টো ঘটনাও ঘটে। ডি মিনরের ম্যাচের হুমকি আসে ব্রিটিশ সুন্দরীর ইনবক্সে। যেন দুই খেলোয়াড় এক সঙ্গে খেলছেন- তবে একপাশে টেনিস, অন্যপাশে ট্রল-টেনিস। আসন্ন উইম্বলডন সামনে রেখে বোল্টার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, কিন্তু সঙ্গে বাড়ছে মানসিক প্রস্তুতির চাপও। কারণ ঘরে খেলতে নামার মানে এখানে শুধু প্রতিপক্ষ নয়, ইনবক্সের হুমকি/আক্রমণাত্মক বার্তাগুলো যেন প্রতিদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী।

যদিও সামাজিক মাধ্যমে হুমকি শুধু বোল্টার কিংবা ডি মিনরেই পান না। বিবিসির অনুসন্ধানে জানা গেছে বিশ্বের শীর্ষ টেনিস তারকা ইগা শিয়নটেক, জেসিকা পেগুলা, ওন্স জাবের, আরিনা সাবালেস্কার মতো খেলোয়াড়রাও জানিয়েছেন তারা প্রায় নিয়মিতভাবেই এই সাইবার সহিংসতার শিকার হন। বিশেষ করে নারী টেনিস খেলোয়াড়দের সঙ্গেই এ ঘটনা ঘটে বেশি।

মন্তব্য

সারা দেশ
Yamal went to Neymars house and said my brother

নেইমারের বাসায় গিয়ে ইয়ামাল বললেন ‘আমার ভাই’

নেইমারের বাসায় গিয়ে ইয়ামাল বললেন ‘আমার ভাই’

দুর্দান্ত এক মৌসুম শেষ করেছেন লামিনে ইয়ামাল। বার্সেলোনা ক্লাব বিশ্বকাপে না থাকায় তার হাতে এখন অখণ্ড অবসর। আর এই অবসর সময়টা চুটিয়ে উপভোগ করছেন ১৭ বছর বয়সি এই স্প্যানিশ উইঙ্গার। তবে ছুটিতেও নিজেকে আলোচনায় রাখছেন ইয়ামাল। ছুটি কাটাতে তিনি প্রথমে যান ইতালিতে। ‘আজ্জুরি’ দের দেশে ছুটি কাটানোর বিভিন্ন মুহূর্তের ছবিও তিনি পোস্ট করেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপর ইয়ামাল আলোচনায় আসেন স্প্যানিশ মডেল, ইনফ্লুয়েন্সার ও বিমানের ক্রু-ফাতি ভাজকেজের সঙ্গে সুইমিংপুলের পাশে ও জলাশয়ে নৌকা নিয়ে ঘোরার ছবি ইনস্টাগ্রামে আপলোড করে। সে সময় ইয়ামালের সঙ্গে ১৩ বছরের বড় ফাতির প্রেম নিয়ে গুঞ্জনও শোনা গেছে বেশ। আর এবার ইয়ামাল আলোচনায় এলেন নেইমারের বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে। কদিন আগেই ইয়ামাল ব্রাজিলে ছুটি কাটাতে গিয়েছেন। এরই মধ্যে দুজনের এক সঙ্গে অবকাশযাপনের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। নেইমারের সঙ্গে ইয়ামালের ছুটি কাটানো নিয়ে ব্রাজিলিয়ান সংবাদমাধ্যম ‘ওগ্লোবো’ জানিয়েছে, সান্তোস তারকা নেইমার গত বৃহস্পতিবার রিও ডি জেনিরোর মানগারাবিতা শহরে নিজের বাসভবনে বার্সেলোনা তারকা ইয়ামালকে স্বাগত জানিয়েছেন। নেইমার নিজেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ইয়ামালের সঙ্গে সময় কাটানোর ভিডিও পোস্ট করেন। সেই ভিডিওর শুরুতে জিমে ব্যায়াম করতে দেখা যায় নেইমারকে। এরপর নেইমার যান ভলি খেলতে। নেইমারের বল অন্য প্রান্তে পাঠানোর পর দৃশ্যপটে আসেন ইয়ামাল। স্প্যানিশ তারকা বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ফেরত পাঠান নেইমারের কাছে। কিছু সময় খেলার পর দুজনকে দেখা যায় সুইমিংপুলের ধারে। সেখানে খুনসুটিতেও মাতেন দুজন। সবশেষে নেইমারের সান্তোসের জার্সি হাতে ইয়ামাল এবং ইয়ামালের বার্সেলোনার জার্সিতে নেইমারকে পোজ দিয়ে ছবি তুলতে দেখা যায়। এই ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে ভালোবাসার ইমোজি দিয়ে ইয়ামাল লিখেছেন, ‘আমার ভাই।’ ইয়ামাল নিজেও স্টোরিতে নেইমারের সঙ্গে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। যেখানে নেইমারের পাশে বসে গলফ কার্ট গাড়িতে চড়তে দেখা যায় ইয়ামালকে

ইয়ামাল অবশ্য আগে থেকেই নেইমারের বড় ভক্ত। গত বছর সান্তোসে নিজের প্রথম মেয়াদে নেইমারের পরা একটি জার্সি পরতে দেখা গিয়েছিল ইয়ামালকে। তবে ভক্ত থেকে এবার যেন আরও ভালোভাবে ভাই-বন্ধুত্বে পরিণত হলেন তারা।

২০০০ থেকে ২০২৫ সালে আটকালেও সংখ্যাটা খুব বেশি কমবে না। ভারত-ইংল্যান্ড সিরিজ শুরুর আগে স্কাই স্পোর্টসে দুই দেশ মিলিয়ে সেরা টেস্টে একাদশ বেছে নিতে তাই বেশ কষ্ট হয়েছে ইংল্যান্ডের দুই সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইন ও মাইকেল আথারটনের। শেষমেশ কাজটা তারা করলেও একাদশ গড়তে গিয়ে বাদ দিয়ে দিয়েছেন বিরাট কোহলি ও জো রুটকে।

যাদের নাম সেখানে আছে, তা দেখে খুব বেশি আপত্তি নাও-ওঠতে পারে। ২০০০ সাল থেকে হিসাব করা নাসের ও আথারটনের একাদশে দুই ওপেনার অ্যালিস্টার কুক ও বীরেন্দর শেবাগ। তিন ও চারে খেলবেন দুজন ভারতীয়। আন্দাজ করা খুব কঠিন কিছু নয়, রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকার। পাঁচ নম্বরে সুযোগ মিলেছে কেভিন পিটারসেনের। আর ছয়ে অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। স্টোকসই এই দলের অধিনায়ক। নাসের হুসেইন ও মাইকেল আথারটনের একাদশে উইকেট কিপার ঋষভ পন্ত। এই বাঁহাতির সঙ্গে আলোচনায় ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি ও ম্যাট প্রায়র। শেষ পর্যন্ত পন্তকেই বেছে নেন তারা। স্পিনার হিসেবে জায়গা পেয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। লড়াইয়ে গ্রায়েম সোয়ানকে পেছনে ফেলেন তিনি।

পেস বিভাগে জেমস অ্যান্ডারসন ও বুমরা অবধারিত। তৃতীয় পেসার নিয়ে ছিল দোটানা। জহির খানের নামটা এসেছিল বারবার। তবে শেষ পর্যন্ত তারা সুযোগ দিয়েছেন স্টুয়ার্ট ব্রডকে। নিজেদের একাদশ নিয়ে নাসের বলেছেন, ‘এটা তো দুর্দান্ত এক দল, এমনটাই তো আশা করা যায়। দুই দেশের সেরা খেলোয়াড়দেরই রাখা হয়েছে। এ নিয়ে কেই বা হতাশ হতে পারে? কোহলি হতাশ হবে। রুটও।’

আথারটন এরপর যোগ করেন, ‘এ দলটাই প্রমাণ করে, গত ২৫ বছরে ভারত ও ইংল্যান্ড কতটা অসাধারণ মানের ক্রিকেটার তৈরি করেছে।’ আজ শুরু হবে দুই দলের পাঁচ ম্যাচের সিরিজ। এই সিরিজে ভারতের টেস্ট দলে নেই রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। দুজনেই এ সংস্করণ থেকে অবসর নিয়েছেন। তাদের কেউ ভারতের টেস্ট দলে নেই, এমন কিছু দেখা গেছে ১৪ বছর আগে।

দ্য টেলিগ্রাফে লেখা কলামে ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ক্রিকেটার জিওফ বয়কট এই দুজনের না থাকা নিয়ে লিখেছেন। বয়কটের মতে, রোহিত নয়, ভারত বেশি মিস করবে কোহলিকে। তিনি বলেছেন, ‘রোহিত দারুণ ব্যাটসম্যান। সেরা ছন্দে থাকলে ও দারুণ স্ট্রোক খেলোয়াড়। তবে কোহলির মতো রোহিতকে ভারত ততটা মিস করবে না। কারণ, রোহিতের টেস্ট রেকর্ড ভালো হলেও অসাধারণ নয়। গত কয়েক বছরে তার ব্যাটিং কিছুটা অধারাবাহিক ছিল, যা ৩০-এর শেষ দিকে খুব একটা অবাক করার মতো নয়।’

মন্তব্য

মেসির পায়ে যাদুর ছোঁয়া

মেসির পায়ে যাদুর ছোঁয়া

ফুটবলটি বলা যায়। প্রতিপক্ষ দলের বক্সের মাথায় যে ছোট্ট ‘ডি’, তার নিশ্বাস লাগোয়া দূরত্বে বলটি বসানো। সেখান থেকে কয়েক পা দূরে দাঁড়িয়ে গোলাপি কিংবা আকাশি-সাদা জার্সি পরা ৩৭ বছর বয়সি রক্তমাংসের যে মানুষটি, তার নাম হতে পারে ‘অমরত্ব’। লোকে তাকে ডাকেন লিওনেল মেসি, কেউ কেউ শুধু মেসি। তার অর্জনের ডালিতে তাকিয়ে কেউ কেউ হয়তো সংগোপনে ওই নামেও ডাকেন, ‘ইম্মর্টাল’ কিংবা অমর।

ফুটবলে প্রায় এমন কোনো শিরোপা নেই, যা তার নেই। বয়সের ডালপালা গজিয়ে ক্রমে মহিরুহ হয়ে এখন পাতাঝরার ঋতুতে নামলেও তবু তার ‘সবুজ’ থাকার কী ক্ষুধা। এ সবুজ মানে তরতাজা, এ সবুজ মানে যত দিন সম্ভব সদ্য প্রস্ফুটিত ফুলের মতো টিকে থাকার নেশা। মানুষ এটাই চায়। পার্থক্য হলো, অন্যদের চাওয়াটা হয়তো নিজের জীবনকেন্দ্রীক, মেসির ফুটবলে। আর তাই, তার মাঠে নামার প্রতিটি দিনের ক্যানভাসেই নতুন নতুন ছবির জন্ম হয়। যেমনটা হলো গতকাল রাতে আটলান্টায় ক্লাব বিশ্বকাপের ম্যাচে। পোর্তোর বিপক্ষে তখন ১-১ গোলের সমতায় মায়ামি। ফ্রি-কিক (৫৩ মিনিট) পায় স্বাগতিকেরা। কে শটটি নিতে পারেন, সবার জানাই ছিল। বক্সের মাথায় ছোট্ট ‘ডি’-র সামনে বসানো বলটি থেকে কয়েক পা দূরে দাঁড়িয়ে মেসি যখন বুক ভরে শ্বাস নিচ্ছিলেন, সেই সময় অনেক দর্শকই হয়তো আন্দাজ করে নিয়েছিলেন, এরপর কী ঘটতে যাচ্ছে। দুই দশকের বেশি সময় ধরে এমন সব মুহূর্ত ও দৃশ্য তো তাদের পরিচিত।

তারপর সেই চিরায়ত বাঁ-পায়ের কিক ও বলের ধনুকের মতো বাঁক নিয়ে জালে আশ্রয় নেওয়া- এ পরিচিত দৃশ্যের পর দেখা মিলল আরও এক চেনা দৃশ্যের। দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে শিশুর মতো ছুটে নারালেন মেসি- এ পর্যন্ত এসে একটু পেছন ফিরে তাকাতে পারেন। সাফল্যের উপচে পড়া ডালি নিয়েই মায়ামিতে এসেছেন মেসি।

ক্যারিয়ারে চাওয়া-পাওয়া বলে তার আর কিছুই থাকার কথা নয়। কিন্তু ওই যে সবুজ, তরতাজা হয়ে টিকে থাকার নেশা, যার পাল্লায় পড়ে এই জনারণ্যে সাধারণ ও অসাধারণের পার্থক্য গড়ি আমরা- সেই নেশায় ডুবেই এখনো গোল করে শিশুর মতো আনন্দে ছুট লাগানো, দলের জয়ে চোখেমুখে ভর করে অন্য রকম এক দীপ্তি। অন্য চোখে তা আনন্দ, মেসিকে দেখার আনন্দ। আর যখন সবাই জানেন, এই আনন্দ আর বেশি দিন অবশিষ্ট নেই, তখন অবচেতন মনেই তার সবকিছুকে অমরত্ব দেওয়া শুরু হয়। মাঠে তার হাঁটা থেকে দৌড়, পাস থেকে ড্রিবলিং, শট থেকে সেটপিস সবকিছু, সবকিছুই চিরকালীন ফ্রেম পেতে থাকে। যেমন ধরুন, মেসির গোলে পোর্তোর বিপক্ষে মায়ামির জয়টি। পর্তুগিজ ক্লাবটি এক সময়ের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন। পর্তুগালের সবচেয়ে সফল দুটি (অন্যটি বেনফিকা) ক্লাবেরও একটি। ফুটবল দলীয় খেলা, তাই প্রতিপক্ষ দলে যতই মেসি থাকুন এ ম্যাচে পোর্তোর জয়ই ছিল প্রত্যাশিত। ধারে-ভারে কোথায় ৭ বছর আগে ফুটবল সেভাবে জনপ্রিয় নয়, এমন এক দেশে জন্ম নেওয়া এক ক্লাব, আর কোথায় ১৩১ বছর আগে জন্ম নেওয়া ৮৬টি বড় ট্রফিজয়ী ক্লাব।

এমন দুটি ক্লাবের মুখোমুখিতে ক্যারিয়ার সায়াহ্নে এসেও পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন যিনি, সেটাও তরুণ বয়সে যেভাবে ছবির মতো সুন্দর ফ্রি-কিক নিয়েছেন, এই ভারি বয়সে এসেও ঠিক তেমন কিছুরই কার্বন কপি যিনি জন্ম দিতে পারেন, তাকে অমরত্ব না দেওয়াই তো অপরাধ। অবশ্য আমাদের দেওয়া না-দেওয়ায় তার কিছু যায় আসে না। ইতিহাস তাকে সেই বরমাল্য দিয়েছে সম্ভবত ২০২২ বিশ্বকাপেই। এবার ক্লাব বিশ্বকাপেও হলো। উত্তর ও মধ্য আমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান অঞ্চল মিলিয়ে কনক্যাকাফ কনফেডারেশনের প্রথম দল হিসেবে অফিশিয়াল ফিফা টুর্নামেন্টে ইউরোপিয়ান দলকে হারাল মায়ামি। এরপর এমন ঘটনা হয়তো আরও অনেকবারই ঘটবে, কিন্তু প্রথমবার তো কখনো মুছে ফেলা যাবে না। আর সেই প্রথমবার যিনি এই পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন, তিনি এমনিতেই অমর। যেমনটা এখন ফিফা টুর্নামেন্টেও। ফিফার সব টুর্নামেন্ট মিলিয়ে সর্বোচ্চ গোল এখন মেসির। এই পথে তিনি পেছনে ফেলেছেন ব্রাজিলের ‘স্কার্ট পরা পেলে’ খ্যাত মার্তাকে। ছেলে ও মেয়েদের ফুটবল মিলিয়ে ফিফা আয়োজিত টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোল এখন মেসির। পোর্তোর জালে ফ্রি-কিক থেকে করা গোলটির মাধ্যমে মার্তাকে পেছনে ফেললেন মেসি। তার গোল সংখ্যা ২৫, মার্তার ২৪।

মন্তব্য

সারা দেশ
Gian Hakims dream of playing for Bangladesh

বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন জায়ান হাকিমের

বাংলাদেশের হয়ে খেলার স্বপ্ন জায়ান হাকিমের

উচ্চতা ৬ ফুট ২ ইঞ্চি। তার খেলায় আছে স্কিল, গতি আর গোলের ক্ষুধা। ইংল্যান্ডের অষ্টম টায়ারের ক্লাব অ্যান্সটে নোম্যাডসের জার্সি গায়ে গত মৌসুমে ৫৫ ম্যাচে করেছেন ১৮ গোল। ইংলিশ ফুটবলের পেশাদার ঘরানায় বেড়ে ওঠা এ লেফট ফুটেড সেন্টার ফরোয়ার্ডকে নিয়ে বাংলাদেশের দর্শকদের আগ্রহ তুঙ্গে। বাংলাদেশ জাতীয় দলে নম্বর নাইনের পজিশনে বহুদিনের আক্ষেপটা জায়ান মোহাম্মদ জুনায়েদ হাকিমের মাধ্যমে ঘুচবে বলে মনে করছেন ফুটবলবোদ্ধারা। হামজা দেওয়ান চৌধুরী-শমিত সোমদের পাস থেকে ২৬ বছর বয়সি জায়ান প্রতিপক্ষের জাল কাঁপাবেন- এমন স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছেন ফুটবলপ্রেমীরা।

তাদের সেই স্বপ্নপূরণে কাজ শুরু করে দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। ইংলিশ প্রবাসী এ ফুটবলারকে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে জড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। হামজা চৌধুরীর বন্ধু জায়ান ইতোমধ্যে বাংলাদেশে খেলার আগ্রহ দেখিয়ে পাসপোর্ট করার জন্য আনুষঙ্গিক কাগজপত্র পাঠিয়েছেন বাফুফের কাছে। লেস্টারে জন্ম নেওয়া জায়ানের ক্যারিয়ারের শুরুটা ছিল আরও উজ্জ্বল। ২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের তৃতীয় টায়ারের ক্লাব ম্যান্সফিল্ড টাউনের মধ্য দিয়ে পেশাদার ফুটবলে যাত্রা তার। উচ্চতা ও খেলায় আক্রমণাত্মক উপস্থিতির কারণে ডিফেন্ডারদের ছাড়িয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারেন জায়ান। আগামী ৯ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ সামনে রেখে আলোচনায় চলে আসা জায়ানই হতে পারেন বাংলাদেশের ফুটবলের পারফেক্ট নম্বর নাইন। জায়ানের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক তার নানার হাত ধরে। তার নানার বাড়ি নোয়াখালী, তিনি বিয়ে করেছেন স্প্যানিশ নারীকে। জায়ানের মা বিয়ে করেছেন অ্যান্টিগার এক নাগরিককে। বাবার সূত্র ধরে ২০২৩ সালে অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারমুডার হয়ে দুটি ম্যাচ খেলেছিলেন। একই সঙ্গে বারমুডা অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে সাত ম্যাচ খেলে গোল করেছেন চারটি।

ফিফার নিয়মে থেকে নানার পরিচয়ে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারবেন জায়ান। এ জন্য তাকে পার হতে হবে বেশ কয়েকটি ধাপ। শুরুতে হবে জন্ম নিবন্ধন। এরপর তার ইংল্যান্ড ও বারমুডার ডুয়েল সিটিজেনশিপ সার্টিফিকেটের পর বাংলাদেশের পাসপোর্ট তৈরির কাজ শুরু হবে। পাসপোর্ট হলে ইংল্যান্ড এফএ, ক্লাব ও ফিফা থেকে ছাড়পত্র লাগবে। প্রক্রিয়া যেভাবে এগোচ্ছে, তাতে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে বাংলাদেশি হয়ে যেতে পারেন জায়ান। হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচেই রয়েছে তার অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা। সংবাদ মাধ্যমের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাফুফের সিনিয়র সহসভাপতি ও জাতীয় দল ব্যবস্থাপনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান, ‘জায়ান হাকিমের পাসপোর্ট করার জন্য সব কাগজপত্র আমরা হাতে পেয়েছি। সে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে রাজি।’

মন্তব্য

সারা দেশ
Most Jersey Sales Messi is also of a Bangladeshi descent

সবচেয়ে বেশি জার্সি বিক্রি: মেসির সঙ্গে আছেন এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতও

লিওনেল মেসির সঙ্গে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলার কাভান সুলিভান
সবচেয়ে বেশি জার্সি বিক্রি: মেসির সঙ্গে আছেন এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূতও

২০২৩ সালের মাঝামাঝিতে লিওনেল মেসি ইন্টার মায়ামিতে নাম লেখানোর পর যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবল অর্থনীতি আমূল্য বদলে গেছে। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে টিকিট বিক্রিও।

প্রত্যাশিতভাবে মেসির জার্সিও বিক্রির শীর্ষে। সব মিলিয়ে টানা তিন মৌসুম আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের জার্সি সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। গত রাতে এমএলএসের ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এমএলএস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০২৫ মৌসুমে ১ জানুয়ারি থেকে ১ মে পর্যন্ত লিগটিতে খেলা ফুটবলারদের মধ্যে মেসির জার্সি সবচেয়ে বেশি কিনেছেন ভক্তরা। এ সময়ে এমএলএস স্টোর থেকে বিক্রি হওয়া জার্সির ওপর ভিত্তি করে র‍্যাঙ্কিং করেছে ক্রীড়া সামগ্রীর ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ফ্যানাটিকস। এ মৌসুমে মেসির পর সবচেয়ে বেশি জার্সি বিক্রি হয়েছে তার সতীর্থ লুইস সুয়ারেজের। শীর্ষ বিশে এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফুটবলারও আছেন। তিনি কাভান সুলিভান। ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নের ১৫ বয়সি এই মিডফিল্ডার সবচেয়ে বেশি জার্সি বিক্রির তালিকায় ১৮তম। ফ্রান্সের বিশ্বকাপজয়ী সাবেক স্ট্রাইকার ও বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেস এফসিতে খেলা অলিভিয়ের জিরুর (১৯) চেয়েও কাভান সুলিভানের জার্সি বেশি বিক্রি হয়েছে। লিগে সবচেয়ে কম বয়সি ফুটবলারদের মধ্যে কাভানের জার্সিই সমর্থকেরা বেশি কিনেছেন। চলমান ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে খেলতে থাকা ইন্টার মায়ামি ও সিয়াটল সাউন্ডার্সের চারজন করে মোট আট ফুটবলারের নাম আছে শীর্ষ ২৫-এর তালিকায়। সব মিলিয়ে ১২টি ক্লাবের ফুটবলার শীর্ষ ২৫-এ জায়গা করে নিয়েছেন।

এমএলএস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘মেজর লিগ সকার ভক্তদের মন জয় করেই চলেছেন মেসি। টানা তৃতীয় মৌসুমে এমএলএস জার্সির সর্বাধিক বিক্রীত তালিকায় তিনি শীর্ষে।’

সবচেয়ে বেশি জার্সি বিক্রির তালিকায় মেসি ও সুয়ারেজের নাম শীর্ষ দুইয়ে থাকাটা ইন্টার মায়ামির জন্য বড় সুখবর। তবে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে মাঠ থেকে মেসির সমর্থকদের জন্য ভালো খবর বয়ে আনতে পারেননি। গত রোববার টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে মিসরীয় ক্লাব আল আহলির সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে মায়ামি। ‘এ’ গ্রুপের আরেক ম্যাচে এফসি পোর্তো-পালমেইরাসও ড্র করার পর মায়ামি নেমে গেছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে। গতকাল রাতে এফসি পোর্তোর বিপক্ষে ম্যাচের আগে ট্রেনিং ক্যাম্প থেকে এসেছিল আরেক দুঃসংবাদ। অনুশীলনের সময় বাম পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে টান অনুভব করেন মেসি। সেই মুহূর্তে মায়ামি কোচ হাভিয়ের মাচেরানোর সঙ্গে একান্তে আলাপ করতে দেখা যায় মেসিকে। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই ভক্তদের মনে তৈরি হয় উৎকণ্ঠা। তবে ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাচেরানো মজা করে বলেছেন, ‘একজন মানুষ আরেক জনকে মাঝে মধ্যে স্পর্শ করতেই পারে।’ এরপর সমর্থকদের মন থেকে উৎকণ্ঠা দূর করেছেন, ‘লিওনেল ভালো আছে। সে পুরো সময় অনুশীলন করেছে। পোর্তোর বিপক্ষে খেলবে।’

মন্তব্য

সারা দেশ
Shakib in the Caribbean Premier League after two seasons

দুই মৌসুম পর ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সাকিব

দুই মৌসুম পর ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে সাকিব

দুই মৌসুম পর আবার ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) খেলার হাতছানি সাকিব আল হাসানের সামনে। ত্রয়োদশ আসরের জন্য বাংলাদেশের অলরাউন্ডারকে দলে নিয়েছে অ্যান্টিগা অ্যান্ড বারবুদা ফ্যালকন্স। প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে গত বুধবার সাকিবকে নিয়েছে টুর্নামেন্টের নবীনতম ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। জ্যামাইকা তালাওয়াহসের জায়গায় গত আসর দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে দলটি। এই দলে সতীর্থ হিসেবে সাকিব পাচ্ছেন ইমাদ ওয়াসিম, জাস্টিন গ্রেভস, জেডেন সিলস, রাকিম কর্নওয়ালদের। এখন পর্যন্ত সিপিএলের পাঁচটি আসরে সাকিব খেলেছেন তিনটি দলের হয়ে- বারবাডোজ ট্রাইডেন্টস, জ্যামাইকা তালাওয়াহস ও গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্স। সবশেষ ২০২২ আসরে খেলেছেন গায়ানার জার্সিতে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে সব মিলিয়ে ৩৬ ম্যাচে ১০৯ দশমিক ৫ স্ট্রাইক রেটে তার রান ৪৪৮। সর্বোচ্চ ইনিংস ৫৪। বাঁহাতি স্পিনে উইকেট ৩৭টি।

গত বছরের ১ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টের শেষ দিনের পর বাংলাদেশের জার্সিতে আর দেখা যায়নি সাকিবকে। চলতি বছরের গত মাসে ভারত ও পাকিস্তানের সংঘাতে পিএসএল স্থগিত হওয়ার পর নতুন করে শুরু হলে বদলি হিসেবে তিনি জায়গা পান লাহোর কালান্দার্সে। দলটির হয়ে আসরে তিনটি ম্যাচ খেলে যদিও ভালো করতে পারেননি ৩৮ বছর বয়সি ক্রিকেটার। এবারের সিপিএল শুরু হবে আগামী ১৪ আগস্ট। চলবে ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

মন্তব্য

p
উপরে