রাজশাহীর তানোর উপজেলায় একটি প্রশিক্ষণ বিমান আছড়ে পড়েছে।
উপজেলার লালপুর ও আড়াদীঘি গ্রামের মাঝামাঝি স্থানে আলুর ক্ষেতে মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে বিমানটি আছড়ে পড়ে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।
বিমানে একজন পাইলট ও একজন প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন। তারা দুজনই সুস্থ আছেন।
সেসনা-১৫২ মডেলের এই বিমানটি বাংলাদেশ ফ্লাইং ক্লাবের।
রাজশাহীর হজরত শাহ মখদুম (রহ.) বিমানবন্দর ব্যবহার করে বাংলাদেশ ফ্লাইং ক্লাব প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালায়।
মঙ্গলবার দুপুরে এই বিমানবন্দর থেকেই বিমানটি ওড়ে। তানোরে গিয়ে সেটি আলুক্ষেতে আছড়ে পড়ে। বিমানটি সেখানে উপুড় হয়ে পড়ে আছে।
বাংলাদেশ ফ্লাইং ক্লাবের রাজশাহীর প্রশিক্ষক ক্যাপ্টেন মাহফুজুর রহমান বিমানে ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন ক্যাডেট নাহিদ এরশাদ।
ক্যাপ্টেন মাহফুজুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা সুস্থ আছি। ঘটনাস্থলেই আছি। কীভাবে, কেন দুর্ঘটনা ঘটেছে সেসব বিষয়ে পরে কথা বলা যাবে।’
২০১৫ সালের ১ এপ্রিল রাজশাহী শাহ মখদুম বিমানবন্দরে ফ্লাইং একাডেমির একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে প্রাণ হারান তামান্না রহমান নামে এক প্রশিক্ষণার্থী পাইলট। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন সেসনা-১৫২ বিমানের প্রশিক্ষক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ কামাল।
চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি রাজশাহীর হজরত শাহ মখদুম (রহ.) বিমানবন্দরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে গ্যালাক্সি ফ্লাইং একাডেমির একটি প্রশিক্ষণ বিমান। ওই দিন বেলা তিনটার দিকে বিমানবন্দরের রানওয়েতে এই ঘটনা ঘটে। তবে কেউ আহত হননি।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সুপারভাইজার আবদুল মতিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গ্যালাক্সি ফ্লাইং একাডেমির একটি বিমান বেলা তিনটার দিকে প্রশিক্ষণের জন্য উড়াল দেয়। এতে পাইলট ছিলেন মশিউর রহমান আর প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন রায়হান গফুর। কিছুক্ষণ পর বিমানটি বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করে।
বিমানটির সামনের একটি ও পেছনের একটি চাকা খুলে যায়। এ সময় সেটি রানওয়েতে মুখ থুবড়ে পড়ে। এতে বিমানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার পরপরই রাজশাহী দমকল বিভাগের একটি ইউনিট বিমানবন্দরে পৌঁছায়। তবে তার আগেই বিমানবন্দরকর্মীরা উদ্ধার কাজ শেষ করেন।
আরও পড়ুন:লিবিয়ার উপকূলে সুদানি শরণার্থীবাহী একটি নৌকায় আগুন লাগার ঘটনায় অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৪ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, ওই দুর্ঘটনার সময় নৌকাটিতে ৭৫ জন শরণার্থী ছিলেন।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
আইওএম জানিয়েছে, দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ২৪ জনকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি এক্স-এ পোস্ট করে বলেছে, সমুদ্রপথে এমন মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
এর আগেও সমুদ্রপথে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। গত মাসে ইয়েমেন উপকূলে একটি নৌকা ডুবে অন্তত ৬৮ শরণার্থী ও অভিবাসীর মৃত্যু হয়, নিখোঁজ হয় আরও অনেকে।
আইওএম-এর তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত বছরই ভূমধ্যসাগরে ২ হাজার ৪৫২ অভিবাসী বা শরণার্থী প্রাণ হারিয়েছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণঘাতী সমুদ্রপথগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।
২০১১ সালে লিবিয়ার সাবেক নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে দেশটি আফ্রিকা থেকে ইউরোপগামী শরণার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট রুটে পরিণত হয়েছে। গাদ্দাফির আমলে আফ্রিকার বহু মানুষ লিবিয়ায় কাজ করলেও তাঁর পতনের পর দেশটিতে বিভিন্ন মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সংঘাতে স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়।
গত আগস্টে ইতালির লাম্পেদুসা দ্বীপের কাছে দুটি নৌকা ডুবে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়। তার আগে জুন মাসে লিবিয়া উপকূলে দুটি জাহাজডুবিতে অন্তত ৬০ জনের মৃত্যু হয় বা নিখোঁজ হন।
মানবাধিকার সংস্থা ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা বলছে, লিবিয়ায় আটক শরণার্থী ও অভিবাসীরা নিয়মিতভাবে নির্যাতন, ধর্ষণ ও অর্থ আদায়ের শিকার হচ্ছেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন অভিবাসন ঠেকাতে লিবিয়ার কোস্টগার্ডকে সরঞ্জাম ও অর্থসহায়তা দিয়েছে। কিন্তু ওই কোস্টগার্ডের সঙ্গে নির্যাতন ও অপরাধে জড়িত মিলিশিয়ার সম্পর্ক থাকার অভিযোগ উঠেছে।
এনজিওগুলো বলছে, সরকারি সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ কার্যক্রম কমিয়ে দেওয়ায় এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সীমিত করায় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়া অভিবাসীদের জীবন আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফলে যুদ্ধ, সংঘাত ও নির্যাতন থেকে পালিয়ে আসা বহু মানুষ লিবিয়ায় আটকে পড়ছেন এবং অমানবিক অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন।
সমস্যাগ্রস্ত শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে বিশেষ বোর্ড সভা শেষে এ তথ্য জানান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মো. আরিফ হোসেন খান। সভায় গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড সদস্যরা।
সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র জানান, সমস্যাগ্রস্ত শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ‘ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ’ অনুযায়ী পরিচালিত এই মার্জার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগবে দুই বছর। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে শিগগিরই কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও জানান, এই একীভূতকরণ প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য পাঁচ সদস্যের একটি প্রশাসক টিম গঠন করা হবে। তবে ব্যাংকের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা টিম। প্রতিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাদের পদে বহাল থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ব্যাংকগুলোর পর্ষদ (বোর্ড) বাতিল করা হবে না। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা ধীরে ধীরে নিষ্ক্রিয় হয়ে যাবে। প্রশাসক টিম নিয়মিত তাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি ও আপডেট বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত টিমকে জানাবে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংককে একীভূত করে গঠন করা হবে একটি নতুন রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক, যার সম্ভাব্য নাম হবে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’। নতুন এ ব্যাংকটির জন্য লাইসেন্স ইস্যু করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি পরিলক্ষিত হয়েছে যে, কিছু কিছু গণমাধ্যমে ভুয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। ওই সংবাদগুলোর প্রতি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের গেজেট প্রকাশ এবং ভাতাসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের এম.আই.এস ভুক্ত যে তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে ইতোমধ্যে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
জুলাই শহীদ এবং জুলাই যোদ্ধার তালিকায় যে সকল ভূয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল তাদের নাম যাচাই বাছাই করে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ইতোমধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
এছাড়াও গণমাধ্যমে যে সকল ভুয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের নাম প্রকাশিত হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর তা পুনরায় যাচাই-বাছাই করছে।
কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
ভুয়া প্রমাণিত হলে জুলাই যোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গতকাল মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. এনায়েত হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি পরিলক্ষিত হয়েছে যে, কিছু কিছু গণমাধ্যমে ভুয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধা শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছে। ওই সংবাদগুলোর প্রতি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের গেজেট প্রকাশ এবং ভাতাসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হতে জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের এম.আই.এস ভুক্ত যে তালিকা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে ইতোমধ্যে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
জুলাই শহীদ এবং জুলাই যোদ্ধার তালিকায় যে সকল ভূয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল তাদের নাম যাচাই বাছাই করে তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ইতোমধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে।
এছাড়াও গণমাধ্যমে যে সকল ভুয়া জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের নাম প্রকাশিত হয়েছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর তা পুনরায় যাচাই-বাছাই করছে।
কোনো প্রকার ভুয়া প্রমাণিত হলে তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে গেজেট প্রকাশ এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জুলাই শহীদ ও জুলাই যোদ্ধাদের সঠিক তালিকা প্রণয়নে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করতে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব চান নির্বাচন কমিশনের নিজস্ব কর্মকর্তারা। গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানানো হয়। বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মনির হোসেন জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি নিয়ে নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত হবে সারা দেশের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সম্মেলন।
তিনি আরো বলেন, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে কমিশনকে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
কমিশন তা আমলে নিয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকেও ভালো নির্বাচনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে তিনটি দাবির পাশাপাশি সুন্দর নির্বাচন আয়োজনে কমিশনকে বেশ কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়।
কর্মকর্তাদের সুপারিশগুলোর মধ্যে আরো আছে—পদ সৃজন, আপগ্রেডেশন এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিকসহ প্রস্তাবিত অর্গানোগ্রাম অনুমোদনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ; জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন, ২০২৩ বাতিল করে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম নির্বাচন কমিশনের কাছে ন্যস্তকরণ।
এ সময় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যসচিব মোহাম্মদ মতিয়ুর রহমান, উপজেলা, থানা ও সমমান ইলেকশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক আশফাকুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি প্রতিবেশী দেশ—শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালে তরুণদের নেতৃত্বে গণবিক্ষোভের মুখে সরকার পতনের ঘটনায় ভারতের নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার বেশ উদ্বিগ্ন। এই ধরনের আন্দোলনের আশঙ্কায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ভারতে ১৯৭৪ সালের পর যত আন্দোলন হয়েছে, তার ইতিহাস, কার্যকারণ এবং গতিপ্রকৃতি নিয়ে গবেষণার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভবিষ্যতে ‘স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ব্যাপক আন্দোলন’ ঠেকানোর পদক্ষেপ হিসেবে অমিত শাহ ভারতের পুলিশ গবেষণা ও উন্নয়ন ব্যুরোকে (বিপিআরঅ্যান্ডডি) একটি ‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর বা এসওপি’ তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই কাজের জন্য বিপিআরঅ্যান্ডডি-কে ভারতের স্বাধীনতার পর, বিশেষ করে ১৯৭৪ সালের পরে সংঘটিত সব আন্দোলন নিয়ে গভীরভাবে অধ্যয়ন করতে বলা হয়েছে। এর মাধ্যমে আন্দোলনের কারণ, ‘আর্থিক দিক’, ‘চূড়ান্ত ফলাফল’ এবং ‘পর্দার অন্তরালের ক্রীড়নকদের’ বিশ্লেষণ করা হবে। গত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে নয়াদিল্লিতে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) আয়োজনে দুদিনব্যাপী ‘ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্ট্র্যাটেজিস কনফারেন্স-২০২৫’-এ অমিত শাহ এই নির্দেশনা দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘বিপিআরঅ্যান্ডডি-কে বিশেষভাবে বলা হয়েছে এসব আন্দোলনের কারণ, ধরন এবং ফলাফল বিশ্লেষণ করতে, যাতে পেছনের খেলোয়াড়দের চিহ্নিত করা যায়। এর মাধ্যমে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর তৈরি করে ভবিষ্যতে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী দ্বারা সংগঠিত বড় আন্দোলন রোধ করা সম্ভব হবে।’
শাহের এই নির্দেশনার পর, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিপিআরঅ্যান্ডডি-এর একটি দল গঠন করা হচ্ছে, যা রাজ্য পুলিশ বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করবে। এর মধ্যে পুরোনো মামলার নথিপত্র এবং সেসব সম্পর্কে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টের (সিআইডি) প্রতিবেদন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
অপর এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শাহ বিপিআরঅ্যান্ডডি-কে নির্দেশ দিয়েছেন যে তারা আর্থিক তদন্ত সংস্থা যেমন এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি), ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট-ইন্ডিয়া (এফআইইউ-আইএনডি) এবং সেন্ট্রাল বোর্ড অব ডাইরেক্ট ট্যাক্সেস-কে (সিবিডিটি) অন্তর্ভুক্ত করে আন্দোলনের ‘আর্থিক দিক’ বিশ্লেষণ করবে।
এছাড়া, সন্ত্রাসী অর্থায়ন নেটওয়ার্ক নির্মূল করার লক্ষ্যে, ইডি, এফআইইউ-আইএনডি এবং সিবিডিটি-কেও এসওপি তৈরি করতে বলা হয়েছে। এই সংস্থাগুলো অজানা সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক শনাক্ত করতে, তাদের সংযোগ এবং পরিকল্পনা চিহ্নিত করতে আর্থিক অনিয়ম বিশ্লেষণ করবে। আরও জানা গেছে, অমিত শাহ বিপিআরঅ্যান্ডডি-কে রাজ্য পুলিশ বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে বিভিন্ন ধর্মীয় সমাবেশ নিয়ে একটি গবেষণা পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে ‘পদদলিত হয়ে মৃত্যুর’ মতো বিষয়গুলো বোঝা যায়। এর ভিত্তিতে সমাবেশ পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের এসওপি তৈরি করা হবে।
সূত্র আরও জানিয়েছে যে, অমিত শাহ ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ), বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এবং নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোকে (এনসিবি) আলাদা কৌশল তৈরি করতে বলেছেন। এই এসওপি খালিস্তানি উগ্রবাদ এবং পাঞ্জাবে সাধারণ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় প্রযোজ্য হবে।
এ বিষয়ে অপর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে এমন একটি দল গঠন করতে হবে, যারা পাঞ্জাব সংক্রান্ত বিষয়গুলোর পটভূমি ভালোভাবে জানেন। যাতে বিভিন্ন সমস্যার মোকাবিলায় ভিন্ন ধরনের কৌশল তৈরি করা যায়।’ তিনি আরও বলেন, এনআইএ-এর উচিত সন্ত্রাস-অপরাধ সংযোগের দেশীয় দিকগুলো ভেঙে ফেলার জন্য নতুন, উদ্ভাবনী কৌশল তৈরি করা, যার মধ্যে জেল থেকে নেটওয়ার্ক পরিচালনা প্রতিহত করতে সেই অপরাধীদের অন্য জেলাগুলোতে স্থানান্তর করাও অন্তর্ভুক্ত।
বাংলাদেশে তীব্র গরমের কারণে প্রতি বছর বিপুল কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে। আর্থিক দিক থেকেও এই ক্ষতির পরিমাণ বিশাল। বিশ্বব্যাংকের এক নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান তাপজনিত অসুস্থতায় শুধু ২০২৪ সালেই প্রায় ২৫ কোটি কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন থেকে ১ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার, যা জিডিপির প্রায় ০.৩ থেকে ০.৪ শতাংশ। টাকার অংকে এই ক্ষতির পরিমাণ ২১ হাজার কোটিরও বেশি।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে 'অ্যান আনসাসটেইনেবল লাইফ: দ্য ইমপ্যাক্ট অব হিট অন হেলথ অ্যান্ড দ্য ইকোনমি অব বাংলাদেশ' শীর্ষক এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, যখন তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে যায়, তখন কর্মীদের উৎপাদনশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। গরম বেড়ে যাওয়া বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
১৯৭৬ থেকে ২০২৩ সালের তাপমাত্রা ও আর্দ্রতার তথ্য বিশ্লেষণ এবং ২০২৪ সালে ১৬ হাজার মানুষকে নিয়ে করা দুই দফা জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে অনভূত তাপমাত্রা বেড়েছে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর ফলে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, অবসাদসহ নানা শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিচ্ছে। পাশাপাশি বিষণ্নতা ও উদ্বেগের মতো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যাও বাড়ছে।
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ১৯৮০ সালের পর থেকে দেশের গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেড়েছে ১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর এ সময়ে ঢাকায় বেড়েছে ১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ, ঢাকার তাপমাত্রা জাতীয় গড়ের চেয়ে প্রায় ৬৫ শতাংশ বেশি।
বিশ্বব্যাংক বলছে, তাদের প্রতিবেদন শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতার সঙ্গে তাপের সম্পর্ক পর্যালোচনা করেছে। এতে উদ্বেগজনক চিত্র পাওয়া গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া জনগণের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কাশির সমস্যা সবচেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। শীতে যেখানে কাশিতে আক্রান্ত হওয়ার হার ৩.৩ শতাংশ, গ্রীষ্মে আক্রান্তের হার বেড়ে ৬ শতাংশ হয়েছে। ৬৬ বছরের বেশি বয়সিদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি কাশির প্রবণতা বেশি। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা থাকলে, দীর্ঘমেয়াদি কাশির হার ২২.৭ শতাংশ বেড়ে যায়।
জরিপে অংশগ্রহণকারী ২.৬ শতাংশ ব্যক্তির মধ্যে তাপজনিত ক্লান্তি দেখা গিয়েছিল। ৩৬ বছর থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম জনগণের এবং ৬৬ বছরের বেশি বয়সি প্রবীণদের মধ্যে গ্রীষ্মকালে তাপজনিত ক্লান্তি সবচেয়ে বেশি ছিল। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায়, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায়, তাপজনিত ক্লান্তির সম্ভাবনা ২৬.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায় বলে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রীষ্মকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার হার ৪.৪ শতাংশ ছিল, শীতকালে এটি ছিল ১.৮ শতাংশ। এই রোগে সবচেয়ে বেশি ভূক্তভোগী হয় নারী ও ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায়, ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপর তাপমাত্রায় ডায়রিয়ার সম্ভাবনা ৪৭.৭ শতাংশ বেড়ে যায়।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে উষ্ণায়ন মানসিক স্বাস্থ্যেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। জরিপে দেখা গেছে, শীতে যেখানে বিষণ্নতায় ভোগার হার ১৬.২ শতাংশ থাকে, গ্রীষ্মে তা বেড়ে ২০ শতাংশ হয়। একইভাবে শীতে যেখানে অস্থিরতা বা উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যার হার ৮.৩ শতাংশ পাওয়া গেছে, গ্রীষ্মে তা বেড়ে ১০ শতাংশ হয়েছে। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম তাপমাত্রার তুলনায় ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় এই দুই সমস্যা যথাক্রমে ২৩.৮ শতাংশ এবং ৩৭.১ শতাংশ বেড়ে যায়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন—পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য) ডা. মো. সায়েদুর রহমান। এই আয়োজনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অপারেশনস অফিসার ইফফাত মাহমুদ এবং সিনিয়র হেলথ স্পেশালিস্ট ওয়ামেক এ. রাজা।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশনাল ডিরেক্টর জাঁ পেসমে, সাউথ এশিয়া হেলথ নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্র্যাকটিস ম্যানেজার ড. ফেং ঝাও।
মন্তব্য