কাপ্তাই লেকের মাছের প্রধান চারটি প্রজননস্থলের (চ্যানেল) মধ্যে দুইটি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে এখন কার্পজাতীয় মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। পলি মাটি জমার পাশাপাশি পানির স্থায়িত্ব কমে যাওয়াসহ নানা কারণে প্রজননস্থলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৮ সালে কাপ্তাই লেকের জীববৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা করেন বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবুল বাশার। তার গবেষণায়ও চারটি চ্যানেল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
নষ্ট হয়ে যাওয়া প্রজননস্থলগুলো হচ্ছে চেঙ্গী চ্যানেল ও রীংকং চ্যানেল।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) রাঙ্গামাটি নদী-উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিএম শাহিনুর রহমান বলেন, চেঙ্গী চ্যানেল ও রীংকং চ্যানেল পুরোপুরি ভরাট হয়ে গেছে, চ্যানেল দুইটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। কাসালং চ্যানেল ও বরকল চ্যানেলও নষ্ট হয়ে যাওয়ার পথে।
তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এখন বৃষ্টি কম হচ্ছে। আগে পাহাড়ে এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে অক্টোবর পর্যন্ত বৃষ্টি হতো। টানা ৬ থেকে ৭ মাস বৃষ্টি হলে লেকে পর্যাপ্ত পানি থাকত। এখন আগের মতো বৃষ্টি হচ্ছে না। লেকে পর্যাপ্ত পানি হচ্ছে না। ফলে লেকে পানির স্থায়িত্ব কমে গেছে। প্রজননস্থলগুলো নষ্ট হওয়ার এটিও একটি কারণ।
বিএম শাহিনুর রহমান বলেন, কাপ্তাই লেকের পাড়ে পাহাড় রয়েছে। জুম পদ্ধতিতে চাষের জন্য এসব পাহাড় থেকে গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। তাতে করে ভূমিধস হচ্ছে। প্রতিবছর পাহাড়ের মাটি ধসে লেকে পড়ছে। আর পলি মাটিতেই প্রজননস্থলগুলো ভরে যাচ্ছে, তাতে নষ্ট হচ্ছে সেগুলো।
দেড় যুগের ব্যবধানে কার্পজাতীয় মাছের উৎপাদন কমেছে ৮০ শতাংশ
প্রজননস্থলগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে কাপ্তাই লেক থেকে কার্পজাতীয় মাছের আহরণ কমে যাচ্ছে। বিএফআরআই থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০০২-০৩ অর্থবছরে কাপ্তাই লেক থেকে ২৫৮ দশমিক ৭৫ টন কার্পজাতীয় মাছ আহরণ করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মাত্র ৫৩ দশমিক ২ টন কার্পজাতীয় মাছ আহরণ করা হয়েছে। ১৮ বছরের ব্যবধানে লেক থেকে কার্পজাতীয় মাছের আহরণ কমেছে ৮০ শতাংশ।
বিএফআরআইর ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, আমরা মাঠপর্যায়ে গবেষণা করে এই তথ্য তুলে ধরেছি। পলি জমে লেকের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি প্রবাহ কমে গেছে। পানি প্রবাহ না থাকলে কার্পজাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে না। তাই আগের মতো মাছের প্রজনন হচ্ছে না। প্রজননস্থল নষ্ট, হ্রদের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় গভীর জলাশয়ের অভাবে মাছ বড় হতে পারছে না। এ ছাড়া শুষ্ক মৌসুমে হ্রদে পোনা ছাড়লেও পানিস্বল্পতার কারণে জেলেদের কেচকি জালে কার্পজাতীয় মাছের পোনা ধরা পড়ে যায়।
তিনি বলেন, শুধু কার্পজাতীয় মাছ নয়, প্রজননস্থল নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে অন্য বেশ কিছু মাছও কমে যাচ্ছে লেক থেকে। ইতিমধ্যে লেক থেকে বিলুপ্ত হয়েছে সিলন, দেশি সরপুঁটি, বাগাড়, মোহিনী বাটা ও দেশি পাঙাশ মাছ। আর বিপন্নপ্রায় মাছের মধ্যে রয়েছে দেশি মহাশোল, মধু পাবদা, পোয়া, ফাইস্যা, গুলশা ও সাদা ঘনিয়া। এ ছাড়া ক্রমহ্রাসমান মাছের মধ্যে রয়েছে রুই, কাতলা, মৃগেল, বাচা, পাবদা ও বড় চিতল।
লেকের পাড়ে জুম চাষে নিরুৎসাহিত করছে সরকার
রাঙ্গামাটির বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জিএম মোহাম্মদ কবির বলেন, পাহাড়ের ঢালে বন উজাড় করে ও তা আগুনে পুড়িয়ে জমি চাষের উপযোগী করার মাধ্যমে যে চাষাবাদ করা হয় তারই নাম জুম চাষ। লেকের পাশের পাহাড়গুলো খাড়া। গাছের শেকড় পাহাড়গুলোর মাটি ধরে রাখে। কিন্তু জুম পদ্ধততি চাষের জন্য পাহাড়ের বন উজাড় বা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়।
তিনি বলেন, বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাহাড়গুলোর মাটি বালুর মতো যা বৃষ্টির পানির সঙ্গে সহজেই দুর্বল হয়ে ধসে পড়ে। বর্ষা মৌসুমের প্রথম কয়েক দিনের বৃষ্টিতে মাটিগুলো নরম হয়ে যায়, পরবর্তী সময়ে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে পাহাড়ের ফাটল দিয়ে পানি প্রবেশ করে পাহাড়ের অভ্যন্তরে চাপ ও ওজন বৃদ্ধি করে পরবর্তী সময়ে ধসে পড়ে। তখন সরাসরি মাটি লেকে পড়ে ভরাট হয়ে যায়।
জিএম মোহাম্মদ কবির বলেন, জুম নিয়ন্ত্রণে আমরা সচেনতা ক্যাম্পেইন চালাচ্ছি। লেকের পাড়ে জুম পদ্ধতিতে চাষ না করার জন্য নিরুৎসাহিত করছি। ইতিমধ্যে আমরা ফলাফল পেয়েছি। লেকের পাড়ে জুম চাষ কমে আসছে।
কাপ্তাই লেকের জীববৈচিত্র্য নিয়ে বিএফআরআইর বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবুল বাশারের গবেষণায় বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার, প্রজনন মৌসুমে পোনা ও মা মাছ নিধনও কার্পজাতীয় মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। গবেষণায় কার্পজাতীয় মাছের হার বাড়াতে লেকের তলদেশ খনন, প্রজননস্থলগুলো পুনরায় খননের মাধ্যমে সংরক্ষণ এবং এগুলোকে অভয়াশ্রম ঘোষণা করার সুপারিশ করা হয়েছে।
অতি তীব্র দাবদাহের মধ্যে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।
সীমান্তবর্তী জেলাটিতে শুক্রবার বেলা তিনটায় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জেলায় অতি তীব্র দাবদাহে ওষ্ঠাগত জনজীবন। গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ পান করছেন ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর পানীয়।
তীব্র গরমে চুয়াডাঙ্গার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে গরমজনিত রোগী। এতে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ।
পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম। তা ছাড়া অতি গরমে নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, ‘এই তাপে মাঠে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। ভ্যাপসা গরমে কৃষিকাজ করা যাচ্ছে না।
‘ধানের জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। ধানে বেশি সেচ লাগছে, কিন্তু সেচ পাম্পে ঠিকমতো পানিও উঠছে না।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ অব্যাহত রয়েছে। আগামী তিন দিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।’
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানায়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায় একটি নির্জন বাঁশবাগানের ভেতর থেকে এক নারী পোশাকশ্রমিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আশুলিয়ার কাঠগড়া নয়াপাড়া এলাকার বাঁশবাগান থেকে শুক্রবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো আনজু খাতুন আশুলিয়ার নরসিংহপুরের হা-মীম গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা সদর থানার ঘাগুয়া ইউনিয়নে।
পুলিশের ভাষ্য, বাঁশবাগানের ভেতর নারী পোশাকশ্রমিকের মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ওই নারীর গলায় ঝোলানো পরিচয়পত্রে দেখা যায়, তিনি হা-মীম গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার অপারেটর।
হা-মীম গ্রুপের টিআইএসডব্লিএল-১ কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আনজু খাতুন নামে এক নারী শ্রমিক গতকাল রাত ৯টা ১৫ মিনিটের পরে কারখানা থেকে বাসায় যায়, কিন্তু আজ সকালে তিনি আর কারখানায় আসেননি।
‘পরে লাইনের সুপারভাইজার আনজুকে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।’
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভজন চন্দ্র বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে কেউ তাকে (পোশাকশ্রমিক) হত্যা করে ফেলে রেখে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২২) নামের বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংগী বিজিবি ক্যাম্পের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলার এলাকায় শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও যুবকের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকজন রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান আবুল কালাম ডাকু। গরু নিয়ে ফেরার পথে শুক্রবার ভোররাতে বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ডাকু গুরুতর আহত হলে সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে বাংলাদেশ সীমান্তে। পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালাংগী ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে একজন যুবক নিহত হয়েছেন। পাটগ্রাম থানা পুলিশ পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
নিহত যুবকের মা মমতা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। কী অপরাধের জন্য বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করল জানি না। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাইদ বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক আবুল কালাম ডাকুকে পরিবারের সদস্যরা পাটগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যান। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় একটি ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা করা হবে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৫০) ও ছানোয়ার হোসেন (৪৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজির ব্যবসা করতেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়ত থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন, কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম নিহত হন এবং গুরুত্ব অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:উৎসবমুখর পরিবেশে বৃহস্পতিবার উদযাপন করা হয়েছে ১৩৭তম বন্দর দিবস।
এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে বন্দর ভবন চত্বরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ও বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলন করেন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
ওই সময় বোর্ড সদস্য (প্রকৌশল) কমোডর মোহাম্মদ মাহবুবুবর রহমানসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পতাকা উত্তোলনকালে চট্টগ্রাম বন্দরে অবস্থানরত সব জলযান ও জাহাজ থেকে একনাগাড়ে এক মিনিট হুইসেল বাজানো হয়। এরপর বন্দর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সোহায়েল উপস্থিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে বন্দর দিবসের কেক কাটেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
ওই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বন্দর অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্মচারী পরিষদ, বন্দরের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডার ও অন্যান্য সংগঠনের নেতারা।
কর্ণফুলীর মোহনায় ১৩৬ বছর আগে ২৫ এপ্রিল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর। ইংরেজ শাসনামলের প্রথম দিকে ইংরেজ ও দেশীয় ব্যবসায়ীরা বার্ষিক এক টাকা সালামির বিনিময়ে নিজ ব্যয়ে কর্ণফুলী নদীতে জেটি নির্মাণ করেন। পরে ১৮৬০ সালে প্রথম দুটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়। ১৮৭৭ সালে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার গঠিত হয়।
১৮৮৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে দুটি মুরিং নির্মাণ হয়। একই বছরের ২৫ এপ্রিল চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার কার্যকর হয়। এরপর ১৮৯৯ থেকে ১৯১০ সময়ের মধ্যে চট্টগ্রাম পোর্ট কমিশনার এবং আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে যুক্তভাবে চারটি স্থায়ী জেটি নির্মাণ করে। ১৯১০ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে রেলওয়ের সংযোগ সাধন হয়।
১৯২৬ সালে চট্টগ্রাম বন্দরকে মেজর পোর্ট ঘোষণা করা হয়। সেই থেকেই চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা রেখে আসছে।
আরও পড়ুন:শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বন্য হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো ৬০ বছর বয়সী হাজী উমর আলী একই গ্রামের বাসিন্দা।
নালিতাবাড়ী থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া জানান, প্রায় তিন-চার দিন ধরে নালিতাবাড়ী উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বাতকুচি গ্রামের পাহাড়ি ঢালে বোরো ধান ক্ষেতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি বন্য হাতি নেমে আসে। বৃহস্পতিবার রাতে হাতির পালটি বাতকুচি গ্রামের ধান ক্ষেতে যায়। এ সময় উমর আলি ও গ্রামবাসীরা তাদের ফসল বাঁচানোর জন্য মশাল জ্বালিয়ে ডাক ও চিৎকার শুরু করেন।
একপর্যায়ে বন্যহাতির পালটি একটু পিছিয়ে যায়। পরে বাড়িতে যাওয়া সময় পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা হাতির পালটি উমর আলিকে ঘিরে ফেলে ও পা দিয়ে পিষ্ট করে।
বন বিভাগের ময়মনসিংহ মধুটিলা ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে নিহত উমর আলির পরিবারকে বন বিভাগের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’
থানার ওসি মনিরুল আলম ভুইয়া বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
আরও পড়ুন:সিলেটে মধ্যরাতে খোলা মাঠ থেকে একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার কম্পিউটার ইনচার্জের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নগরের হাজারিবাগ এলাকার পেছনের মাঠ থেকে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো অমিত দাস শিবু স্থানীয় দৈনিক উত্তরপূর্বর কম্পিউটার ইনচার্জ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শিবুর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জে। তিনি নগরের বাগবাড়ি নরসিংটিলা এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন।
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) এয়ারপোর্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দেবাংশু কুমার দে এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতে কাজ শেষে অফিস থেকে বাসায় ফিরছিলেন অমিত। তার মৃত্যু রহস্যজনক মনে হচ্ছে। পাশেই তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রাখা ছিল।’
তিনি জানান, রাত ২টার দিকে স্থানীয় লোকজন মরদেহ দেখে থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়।
এসএমপির উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসি। তার মরদেহের পাশে মোটরসাইকেলটি চাবি লাগানো অবস্থায় রাখা ছিল, তবে মোবাইল ফোন পাওয়া যায়নি। কিন্তু তার মোবাইলের শেষ লোকেশন ঘটনাস্থলেই দেখাচ্ছে।’
আজবাহার বলেন, ‘অমিতের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। এরপরও ঘটনাটিকে রহস্যজনক ধরে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য