কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের শরণার্থী শিবির ছেড়ে চতুর্থ দফায় ভাসানচর যাচ্ছে সাড়ে তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গা।
তারা কক্সবাজারের উখিয়া ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে রোববার ও সোমবার রওনা হবে।
ভাসানচরে পাঠানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে শনিবার বিকেলে কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে আনা হয়েছে।
আরও কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাকে রোববার সকালে অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে আনার কথা রয়েছে।
সেখান থেকে রেজিস্ট্রেশন শেষ করে প্রতিবারের মতো বাসে করে তাদের চট্টগ্রামের পতেঙ্গা নৌ-ঘাঁটির অস্থায়ী ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখান থেকে নৌবাহিনীর বিশেষ জাহাজে সমুদ্রপথে নোয়াখালীর হাতিয়ার ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে রোহিঙ্গাদের।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউজবাংলাকে অতিরিক্ত শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছুর-দ্দৌজা নয়ন বলেন, ‘এখন পর্যন্ত স্বেচ্ছায় ৬ হাজার ৭০০ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর ভাসানচরে নেয়া হয়েছে। চতুর্থ দফায় যাবে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা।’
ভাসানচর যেতে নিবন্ধন করতে আসা টেকনাফ চাকমারকুল রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আই-ব্লকের বাসিন্দা ফয়েজুল হক বলেন, ‘ক্যাম্পের ঘিঞ্জি বস্তির চেয়ে ভাসানচরের জীবনমান অনেক ভালো। তাই ভাসানচর চলে যাচ্ছি।’
কথা হয় উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্পের জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে ক্যাম্পে বসবাস করতে খুবই কষ্ট হয়। তা ছাড়া ছোট্ট ঝুপড়িঘরে বউ-বাচ্চা নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি। একটু উন্নত পরিবেশের জীবনযাপনের জন্য ভাসানচরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খোরশেদ আলম জানান, চতুর্থ ধাপে রোহিঙ্গাদের গ্রহণের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন রোহিঙ্গারা ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
নিজ দেশের সেনাবাহিনীর হাতে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়ে অনেক বছর ধরে বাংলাদেশে আসছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা। তবে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে বড় ঢল আসা শুরু হয় ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট।
ওই সময় সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর চাপের মুখে পড়েও রোহিঙ্গাদের ফেরত নিচ্ছে না মিয়ানমার। উল্টো রোহিঙ্গাদের তাদের দেশের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
অন্যদিকে রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে মেঘনা নদীর নোয়াখালী অংশে ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
এ জন্য নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। প্রায় ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গার বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রাম করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আজ পরিকল্পনা কমিশনে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল শুরুর হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী।
রবিবার দুপুরে কক্সবাজার বিমানবন্দর পরিদর্শন শেষে এ কথা জানান তিনি।
চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকী বলেন, 'আমরা আজকে বিমানবন্দরের দ্বিতীয় টার্মিনাল ও সাগরের বুকে নির্মিত হওয়া রানওয়ের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছি। তাতে মনে হয়েছে আগামী অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে আংশিকভাবে কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করা সম্ভব হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, 'কত শতাংশ কাজ শেষে তা বলা না গেলেও তবে মাঝামাঝি সময়ে শুরু করা সম্ভব। যার জন্য আমাদের প্রস্তুতি শেষের পথে।
পরিদর্শনকালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইউনূছ ভুঁইয়া, বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক গোলাম মোর্তজা হাসানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারের ঘরে এবার বাজতে যাচ্ছে বিয়ের শানাই। তবে বোন সারা টেন্ডুলকার নয়, প্রথমেই আংটি বদল করলেন ছেলে অর্জুন টেন্ডুলকার। ২৫ বছর বয়সেই বাগদান সম্পন্ন করেছেন তিনি। পাত্রী ভেটেরিনারি চিকিৎসক সানিয়া চান্দোক।
গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, পারিবারিকভাবে সম্পন্ন হওয়া এই বাগদান অনুষ্ঠানে দুই পরিবারের ঘনিষ্ঠজনরা উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরেই অর্জুন-সানিয়ার সম্পর্ক ছিল। এর আগে একাধিকবার অর্জুনের ম্যাচে দেখা গেছে সানিয়াকে। সারার সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্ব রয়েছে।
সানিয়া চান্দোক ভারতের খ্যাতনামা ব্যবসায়ী রবি ঘাইয়ের নাতনি। তাদের হোটেল ও আইসক্রিম ব্যবসা রয়েছে। পশু চিকিৎসক হওয়ার পাশাপাশি সানিয়া একজন উদ্যোক্তাও। তার নিজস্ব পোষা প্রাণীর স্কিন কেয়ার ও স্পা সেন্টার পরিচালনা করেন তিনি। বয়সে তিনি অর্জুনের চেয়ে এক বছরের বড়।
অর্জুন অবশ্য বাবার মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নাম করতে পারেননি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি নিয়মিত খেলছেন গোয়ার হয়ে। ২০২৩ সালে আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে অভিষেক হয় বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের। এখনও পর্যন্ত আইপিএলে তিনি খেলেছেন ৫ ম্যাচে নিয়েছেন ৩ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১৭ ম্যাচে সংগ্রহ করেছেন ৫৩২ রান ও নিয়েছেন ৩৭ উইকেট। ঘরোয়া ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ম্যাচ সংখ্যা ৪২।
আইপিএল থেকে অর্জুনের আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। বর্তমানে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের কাছ থেকে তিনি বছরে ৩০ লাখ টাকা পান। ঘরোয়া ক্রিকেট থেকে আসে আরও প্রায় ১০ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে বছরে প্রায় ৪০ লাখ টাকার মতো আয় করেন তিনি।
তবে পারিবারিক সূত্রেই অর্জুনের সম্পদ এখন প্রায় ২২ কোটি টাকা। বর্তমানে তিনি থাকেন মুম্বাইয়ের সেই বাড়িতে, যেটি ২০০৭ সালে শচীন কিনেছিলেন প্রায় ৩৯ কোটি টাকায়। ছোটবেলা থেকেই বিলাসবহুল পরিবেশে বেড়ে ওঠা অর্জুনের জীবনযাত্রা তাই নিজের আয়ের সঙ্গে তুলনামূলক নয় বলেই মনে করছে গণমাধ্যম।
ধানমন্ডি ৩২ থেকে আটক রিকশাচালক মো. আজিজুর রহমানকে (২৭) হত্যা মামলার আসামি করা হয়নি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আজ রোববার ডিএমপির মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস কর্মকর্তা মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিএমপির মিডিয়া সেলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকা থেকে মো. আজিজুর রহমান (২৭) নামের এক রিকশাচালককে গত ১৫ আগস্ট আটক করা হয়। এর পরদিন সন্দেহজনক একটি মামলার আসামি হিসেবে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে মো. আজিজুর রহমানের গ্রেপ্তার ও মামলা নিয়ে অহেতুক ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে, যা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আটক মো. আজিজুর রহমানকে যে মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে আদালতে পাঠানো হয়েছে, তা পেনাল কোডের একটি নিয়মিত মামলা। কিন্তু অনেকেই বিষয়টিকে হত্যা মামলা হিসেবে প্রচার করছেন, যা পুরোপুরি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক।
এ বিষয়ে কোনোরকম বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে বিরত থাকার জন্য বিবৃতিতে অনুরোধ করে হয়।
জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ, সমন্বিত ও সংশোধিত খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
খসড়াটি সম্পর্কে যে কোনো মতামত আগামী ২০ আগস্ট বিকেল ৪টার মধ্যে কমিশনের কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।
গতকাল (শনিবার) রাতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
খসড়া সনদটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এতে একটি পটভূমি, সংস্কার কমিশনসমূহ গঠন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন ও এর কার্যকলাপের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি, ঐকমত্যে উপনীত হওয়া বিষয়সমূহ এবং জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আট দফা অঙ্গীকারনামা রয়েছে।
পটভূমিতে বলা হয়েছে, '১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে বর্ণিত সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের নীতিকে ধারণ করে সংঘটিত মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠনের আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে তৈরি হয়েছিল, দীর্ঘ ৫৩ বছরেও তা অর্জন করা যায়নি। কারণ, শাসন ব্যবস্থায় গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও সংস্কৃতি বিকাশের ধারা বারবার হোঁচট খেয়েছে।'
বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের নানা কর্মকাণ্ড উল্লেখ করে এতে আরও বলা হয়েছে, 'বিগত ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন একটি দলীয় সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে ক্রমান্বয়ে অবশিষ্ট গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে জলাঞ্জলি দিয়ে অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী চরিত্র ধারণ করতে থাকে। তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও সমালোচকদের গণতান্ত্রিক ও মানবাধিকার হরণ, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুম, খুন, নিপীড়ন-নির্যাতন, মামলা, হামলার মাধ্যমে একটি নৈরাজ্যকর ও বিভীষিকাময় ত্রাস ও ভীতির রাজত্ব কায়েম করে।'
খসড়ায় সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে সংসদের নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোট, জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিধান যুক্তকরণ, জরুরি অবস্থাকালীন সময়ে নাগরিকের জীবনের অধিকার ও ৩৫ অনুচ্ছেদে বর্ণিত মৌলিক অধিকারসমূহ খর্ব না করা, রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হওয়ার সময় কোনো ব্যক্তি কোনো রাষ্ট্রীয়, সরকারি বা রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের পদে না থাকা, একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী পদে যত মেয়াদ বা যত বারই হোক সর্বোচ্চ ১০ বছর থাকতে পারবেন এবং প্রধানমন্ত্রী পদে আসীন ব্যক্তি একইসঙ্গে দলীয় প্রধানের পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন না - এই বিধান সংবিধানে যুক্তকরণ- ইত্যাদি বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে এসেছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, 'মেয়াদ অবসানের কারণে অথবা মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙ্গে যাওয়ার পরবর্তী নব্বই (৯০) দিনের মধ্যে সংসদ সদস্যদের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধানের ৫৮ (খ) সংশোধনপূর্বক সংসদের মেয়াদ অবসান হওয়ার ১৫ দিন পূর্বে এবং মেয়াদ অবসান ব্যতীত অন্য কোনো কারণে সংসদ ভেঙ্গে গেলে ভঙ্গ হওয়ার পরবর্তী পনের (১৫) দিনের মধ্যে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ হবে অনধিক ৯০ দিন। তবে দৈব-দুর্বিপাকজনিত কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আরও সর্বোচ্চ ৩০ দিন দায়িত্ব পালন করতে পারবে।'
রাষ্ট্রভাষা, নাগরিকত্ব ও সংবিধান, রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংক্রান্ত, আইনসভা, বিচার বিভাগ, নির্বাচনব্যবস্থা, রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ও মৌলিক অধিকার ইত্যাদি বিষয়ের মোট ৮৪টি প্রস্তাবিত দফা উল্লেখ করে এতে সুনির্দিষ্টভাবে ঐকমত্য, ও নোট অভ ডিসেন্টসহ কোন রাজনৈতিক দলের কি মতামত সেটি উল্লেখ করা হয়েছে।
সবশেষে রয়েছে 'জুলাই জাতীয় সনদ,২০২৫' বাস্তবায়নের আট দফা অঙ্গীকারনামা।
অঙ্গীকারনামার শুরুতেই বলা হয়েছে, 'যেহেতু বাংলাদেশের সাংবিধানিক কনভেনশনের অংশ হিসেবে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর পর্যন্ত দেশে কার্যত কোনো সংবিধান না থাকা সত্ত্বেও ওই সময়ের সব কার্যাবলী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মহান শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৭২ সালের সংবিধানে সন্নিবেশিত করে এর আইনি ও সাংবিধানিক বৈধতা প্রদান করা হয় এবং একইভাবে যেহেতু ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণঅভ্যুত্থানোত্তর সময়ে প্রধান বিচারপতি পদত্যাগ করে উপ-রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ গ্রহণ, অতঃপর অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি পদের দায়িত্ব গ্রহণ এবং পরবর্তীকালে প্রধান বিচারপতি পদে ফিরে যাওয়া সংক্রান্ত কোনো আইনি কাঠামো না থাকা সত্ত্বেও রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহের রূপরেখা ও অঙ্গীকারের ভিত্তিতে ওই ধরনের কার্যাবলীকে বৈধতা দিয়ে পরবর্তী সংসদ গণ-অভ্যুত্থানে প্রদত্ত জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়ে সাংবিধানিক কনভেনশন এবং গণতন্ত্রকে সংহত করে; সুতরাং উল্লেখিত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, জনগণের ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং সাংবিধানিক কনভেনশন বজায় রেখে ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জনগণের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে স্বাক্ষরকারীরা এই অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করবেন।'
সমন্বিত খসড়ায় থাকা অঙ্গীকারগুলো হলো-
১) জনগণের অধিকার ফিরে পাওয়া এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার সুদীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে হাজারো মানুষের জীবন ও রক্তদান এবং অগণিত মানুষের সীমাহীন ক্ষয়ক্ষতি ও ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত সুযোগ এবং তৎপ্রেক্ষিতে জন-আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলন হিসেবে দীর্ঘ ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রণীত ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে গৃহীত নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দলিল হিসাবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করব।
২) এই রাষ্ট্রের মালিক জনগণ; তাদের অভিপ্রায়ই সর্বোচ্চ আইন এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনগণের অভিপ্রায় প্রতিফলিত ও প্রতিষ্ঠিত হয় রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে। এমতাবস্থায় আমরা রাজনৈতিক দল ও জোটসমূহ সম্মিলিতভাবে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে জনগণের অভিপ্রায়ের সুস্পষ্ট ও সর্বোচ্চ অভিব্যক্তি হিসাবে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ প্রণয়ন করেছি বিধায় এই সনদের সকল বিধান, নীতি ও সিদ্ধান্ত সংবিধানে অন্তর্ভুক্তকরণ নিশ্চিত করব এবং বিদ্যমান সংবিধান বা অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর কিছু থাকলে সেই ক্ষেত্রে এই সনদের বিধান/প্রস্তাব/সুপারিশ প্রাধান্য পাবে।
৩) এই সনদের কোনো বিধান, প্রস্তাব বা সুপারিশের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত যে কোনো প্রশ্নের চূড়ান্ত মীমাংসার এখতিয়ার বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ওপর ন্যস্ত থাকবে।
৪) ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ ’-এর প্রতিটি বিধান, প্রস্তাব ও সুপারিশ সাংবিধানিক ও আইনগতভাবে বলবৎ হিসেবে গণ্য হবে বিধায় এর বৈধতা, প্রয়োজনীয়তা, কিংবা জারির কর্তৃত্ব সম্পর্কে কোনো আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না।
৫) ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ এ বাংলাদেশের সামগ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা তথা সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশি ব্যবস্থা ও দুর্নীতি দমন ব্যবস্থার বিষয়ে যেসব প্রস্তাব/সুপারিশ লিপিবদ্ধ রয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন, পরিমার্জন, লিখন ও পুনর্লিখন এবং বিদ্যমান আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধন, পরিবর্তন, পরিমার্জন, লিখন, পুনর্লিখন বা নতুন আইন প্রণয়ন, প্রয়োজনীয় বিধি প্রণয়ন বা বিদ্যমান বিধি ও প্রবিধির পরিবর্তন বা সংশোধন করব।
৬) আমরা ঐকমত্যে স্থির হয়েছি যে, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম এবং বিশেষত; ২০২৪ সালের অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক তাৎপর্যকে সাংবিধানিক তথা রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
৭) আমরা সম্মিলিতভাবে ঘোষণা করছি যে, রাষ্ট্র ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনে ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।
৮) আমরা এই মর্মে একমত যে, জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ এর যে সকল প্রস্তাব/সুপারিশ অবিলম্বে বাস্তবায়নযোগ্য বলে বিবেচিত হবে সেগুলো কোনো প্রকার কালক্ষেপণ না করেই পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সরকার ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে, জুলাই জাতীয় সনদের আইনী বাধ্যবাধকতা নিশ্চিত করা এবং তা বাস্তবায়নের পদ্ধতি কী হবে তার উপায় খুঁজে বের করার লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞজনের সাথে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এদের মধ্যে রয়েছেন দেশ-বিদেশের সংবিধান ও আইন বিশেষজ্ঞরা।
রাজধানীর লালবাগের শহীদনগর এলাকায় গণপিটুনিতে তৌফিকুল ইসলাম নামে এক যুবকের (২৬) মৃত্যু হয়েছে। তিনি স্থানীয়ভাবে ‘কিলার বাবু’ ওরফে ‘টেরা বাবু’ নামেও পরিচতি।
রোববার সকাল পৌনে ৮টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় সেনা সদস্যরা ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
লালবাগ থানার ওসি মোস্তফা কামাল খান সমকালকে বলেন, ‘নিহত বাবুর বিরুদ্ধে চুরি ও মাদকের ১০-১২টি মামলা রয়েছে। তিনি এলাকার চিহ্নিত চোর এবং মাদক চোরাকারবারী। শনিবার রাত ২টার পরে শহীদ নগর এলাকায় লোকজন তাকে গণপিটুনি দেয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তার মৃত্যু হয়।’
কক্সবাজার বিমানবন্দরে ক্রিকেট ব্যাট থেকে পাঁচ সহস্রাধিক ইয়াবাসহ দুইজনকে আটক করেছে বিমানবন্দরের কর্মিরা; যাদের মধ্যে একজন বিমানবন্দরের চাকুরিচ্যুত কর্মি।
রোববার সকাল সোয়া ১০ টায় বিমানবন্দরে মালামাল তল্লাশীর সময় তাদের আটকের এ ঘটনা ঘটে বলে জানান, কক্সবাজার সদর থানার ওসি ইলিয়াস খান।
আটকরা হল, মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা জাকির হোসেন (২৬) এবং বরিশাল জেলার বাসিন্দা তানভীর আহমদ (৩০)। এদের মধ্যে তানভীর বিমানবন্দরেক চাকুরিচ্যুত কর্মি।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টদের বরাতে ইলিয়াস খান বলেন, আটকরা বেলা ১১ টা ২৫ মিনিটের কক্সবাজার থেকে ঢাকাগামী ইউএস বাংলা নামের বিমান পরিবহন সংস্থার একটি ফ্লাইটের যাত্রী ছিলেন। তারা ফ্লাইটে উঠতে সকাল সোয়া ১০ টার দিকে বিমানবন্দরে আসেন। এসময় বিমানবন্দরের কর্মিরা যাত্রীদের মালামাল তল্লাশী কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন।
এতে ব্যাগ ও মালামাল স্কেনিং করার সময় ক্রিকেট ব্যাটের ভিতরে বিশেষ কৌশলে লুকানো অবস্থায় ৫ হাজার ১০০ টি ইয়াবা পাওয়া বলে জানান ওসি।
ইলিয়াছ জানান, আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে কক্সবাজার সদর থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মন্তব্য