রংপুর জেলার প্রায় দেড় হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসানোর জন্য বরাদ্দ প্রায় তিন কোটি টাকার কোনো হদিস মিলছে না।
বিদ্যালয়গুলো উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ) প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের গাইডলাইন অনুসারে কোনো স্কুলের জন্য বরাদ্দ অর্থ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধানের যৌথ হিসেবে থাকার কথা। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
জেলার আট উপজেলায় এক হাজার ৪৫৮টি বিদ্যালয়ে স্লিপ ফান্ডের বরাদ্দ থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র কেনার কথা ছিল। এর মধ্যে মাত্র তিনটিতে কেনা হয়েছে এই যন্ত্র। অন্য স্কুলগুলোতে বরাদ্দের অর্থ প্রধান শিক্ষকরা ব্যক্তিগত কাজে খরচ করেছেন।
২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর রংপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় স্লিপ ফান্ডের বরাদ্দ থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র কেনার নির্দেশ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্লিপ ফান্ডের গাইডলাইন অনুযায়ী, ২০০ শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা ও ২০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থীর স্কুলে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সেই হিসেবে ২০ কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকার বরাদ্দ আসে।
এর মধ্যে বায়োমেট্রিক যন্ত্র কেনার জন্য প্রতিটি স্কুল ২০ হাজার টাকা করে পায়। সেই হিসেবে এক হাজার ৪৫৫টি বিদ্যালয় পায় দুই কোটি ৯১ লাখ টাকা। কিন্তু ওই অর্থবছর শেষ হওয়ার পরও যন্ত্র বসেনি সব স্কুলে।
স্লিপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের গাইডলাইনের ২০.৩ ধারায় বলা হয়েছে, বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে সরকারি ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে বরাদ্দের অর্থ থাকবে। কিন্তু রংপুরের স্কুলগুলোতে হাজিরা যন্ত্র কেনার জন্য বরাদ্দ অর্থের কোনো হিসাব নেই জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের কাছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ‘এক অর্থবছরের টাকা খরচ না হলে অন্য অর্থবছরে তা ফেরত দিতে হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। না হলে গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয় টাকা দেয় না। কিন্তু তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা প্রধান শিক্ষকরা খরচ করেছেন।’
রংপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যন্ত্রগুলো কেনা হয়েছে কি না জানি না।... কোনো প্রধান শিক্ষক যদি সরকারি টাকা সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিজ অ্যাকাউন্টে রাখে সেটি অপরাধ।… টাকা খরচ না হলে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে। ওই টাকা কী করল তা জানাতে হবে।’
বরাদ্দের টাকা কোথায়, জানতে চাইলে সদর উপজেলার উত্তম বারঘড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আশেক আলী বলেন, ‘আমি এই টাকার কিছু জানি না। যৌথ অ্যাকাউন্টে থাকলে তো আমি অবশ্যই জানতাম। ম্যাডামরা টাকা কী করেছে তা জানি না।’
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মেহের বানু বলেন, ‘সে সময় মেশিন কেনার নির্দেশনা ছিল তাই টাকা তুলেছি। আমার কাছেই আছে, এখনও খরচ করিনি।’
তবে সরকারি টাকা নিজের কাছে কীভাবে রেখেছেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি টাকার হিসাব রেখেছি। প্রয়োজন হলে নিজের টাকা দেব।’
সদরের মনোহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের দাবি, স্থানীয় শিক্ষা অফিসকে জানিয়েই তারা বরাদ্দের অর্থ খরচ করেছেন। আলম নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরা পারভীন জানান, বরাদ্দের টাকা তার কাছে ‘রক্ষিত’ আছে।
পীরগাছা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান আতিক জানান, তার উপজেলায় ১৭৮টি বিদ্যালয়ের কোনোটিতেই ওই যন্ত্র কেনা হয়নি। পাঁচটি বিদ্যালয়ে বিভাগীয় প্রশাসনের দেয়া হাজিরা যন্ত্র লাগানো আছে। স্লিপ ফান্ডের হাজিরা যন্ত্র কেনার টাকা ভিন্নখাতে খরচ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মিঠাপুকুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয়ের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যন্ত্র কেনা হয়নি।
ভুলটি কী? জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, হাজিরা যন্ত্র কেনার নির্দেশনা পাওয়ার পর প্রধান শিক্ষকরা সেই প্রক্রিয়াও শুরু করেন। এর পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের থেকে হাজিরা যন্ত্র কেনার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকদের চাপ দিতে থাকে। এই বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে হাজিরা যন্ত্র আপাতত না কেনার জন্য আরেকটি চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়। তবে কিছুদিন পরই আবার যন্ত্র কিনতে লিখিত নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর মধ্যেই তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থবছর শেষ হয়ে যায়; শুরু হয় চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যক্রম। এ কারণে সময়মতো হাজিরা যন্ত্রগুলো কেনা হয়নি বলে জানান ওই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
তাহলে বরাদ্দের টাকা কোথায় খরচ হলো এর জবাবে সদর উপজেলার উত্তম হাজিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের অনেকেই ওই টাকা অন্য খাতে ব্যয় করেছেন। আমরা কেউ কেউ এখনও খরচ করি নাই। আবার যখন বলা হবে তখন কেনা হবে।’
এ বিষয়ে রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাজাহান সিদ্দিক বলেন, ‘স্লিপের টাকায় কী কী করা যাবে তার নির্দেশনা আছে। টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে তা জানতে আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছি। তারা উত্তর দিলে আমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাব।
এর পর মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দিবে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান শিক্ষা কর্মকর্তা শাজাহান।
আরও পড়ুন:শিক্ষার ভিত্তিপ্রস্তর হিসেবে বিবেচিত প্রাথমিক শিক্ষা খাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাপক সংস্কার ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে একাধিক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
চলতি বছরে সারাদেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৬ হাজার ২৪৭টি অতিরিক্ত শ্রেণিকক্ষ, ১৫ হাজার ১৪৪টি ওয়াশব্লক, ৪ হাজার ২৬১টি সীমানা প্রাচীর এবং ৬ হাজার ১৪০টি নলকূপ স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে ৩০টি নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হবে।
কক্সবাজারে দশতলা বিশিষ্ট একটি লিডারশীপ ট্রেনিং সেন্টারের নির্মাণ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে শিগগিরই কার্যক্রম শুরু হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শিক্ষক নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও বড় ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নতুন নিয়োগ বিধিমালা ২০২৫ চূড়ান্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। সহকারী শিক্ষক, শারীরিক শিক্ষা ও সংগীত বিষয়ে মোট ১৬ হাজার ২৭টি পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
প্রধান শিক্ষকের ২ হাজার ৩৮২টি পদে বিসিএস (নন-ক্যাডার) থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে গ্রেডেশন তালিকা সফটওয়্যারে হালনাগাদ করা হবে এবং মামলা নিষ্পত্তির পর সহকারী প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান করা হবে।
চলতি অর্থবছরে ৭ হাজার ১১৫ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। শিক্ষার্থীদের শিখন অবস্থা মূল্যায়নের জন্য বেইজলাইন সার্ভে পরিচালনা করা হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৫ সাল থেকে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা পুনরায় চালু করেছে। বৃত্তি পরীক্ষার আওতায় ৮২ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হবে, যার মধ্যে ৩৩ হাজার ট্যালেন্টপুল এবং ৪৯ হাজার ৫০০ জন সাধারণ বৃত্তির অন্তর্ভুক্ত। প্রস্তাবিত বৃত্তির হার ট্যালেন্টপুলে জনপ্রতি ৭ হাজার ৭০০ টাকা এবং সাধারণ বৃত্তিতে ৫ হাজার ৯০০ টাকা।
এদিকে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে ৯ কোটি ২০ লাখ পাঠ্যবই বিতরণ করা হয়েছে। ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে দেশের ১ কোটি ৮৬ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮ কোটি ৪২ লাখ পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণে ৬২২ কোটি ৭৬ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
১৫০টি উপজেলায় স্কুল ফিডিং কার্যক্রমে চালু করা হবে সেপ্টম্বরে, যা শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত ও বিদ্যালয়ে উপস্থিতি বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। বাকি ৩৪৯টি উপজেলায় স্কুল ফিডিং কার্যক্রম সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এতে প্রায় ১ কোটি শিক্ষার্থী উপকৃত হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন ও স্থায়িত্ব রক্ষায় চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি৪) ধারাবাহিকতায় পঞ্চম কর্মসূচি (পিইডিপি৫) শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১৩টি নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে জরাজীর্ণ বিদ্যালয়ের পুনঃনির্মাণ, মডেল বিদ্যালয় গঠন, মাঠ উন্নয়ন, চা বাগান এলাকায় বিদ্যালয় স্থাপন, সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ, শিশুদের জন্য আকর্ষণীয় শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ এবং আইসিটি সক্ষমতা বৃদ্ধি।
উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় চলতি অর্থবছরে ১ কোটি ১৪ লাখ শিক্ষার্থী উপকৃত হবে এবং এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা। শিক্ষার্থীদের শতভাগ ইএফটি'র মাধ্যমে উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে।
প্রি-সার্ভিস প্রশিক্ষণ চালু করে ভবিষ্যৎ শিক্ষকদের পেশাগত প্রস্তুতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ১০টি পিটিআই-তে ১ বছর মেয়াদী কোর্স চালু করা হবে।
একীভূত শিক্ষাকে সামনে রেখে পাঠ্যপুস্তক পর্যালোচনা, এসিস্টিভ ডিভাইস নীতিমালা হালনাগাদ, গারো ও সাদরি ভাষায় প্রশিক্ষণ এবং সেন্ড ম্যানুয়ালসহ ২৭ হাজার শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষায় পাঠদানে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় মনিটরিং ও শ্রেণিকক্ষ সজ্জা, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকদের প্রশিক্ষণসহ বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
এ ছাড়াও এডুকেশন ইন ইমারজেন্সি খাতে ২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ এবং বিদ্যালয়ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় ৬৫ হাজার ৩৫৭টি বিদ্যালয়ের জন্য ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ৩ হাজার ইন্টারএকটিভ ফ্ল্যাট প্যানেল (আইএফপি) সরবরাহ, ডিজিটাল কন্টেন্ট স্টুডিও নির্মাণ, সার্ভার স্টেশন উন্নয়ন এবং মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আইএমডি এর জনবল এবং আইপিএমএস সফটওয়্যার ব্যবস্থাও উন্নত করা হবে।
পিইডিপি৪-এর আওতায় শিক্ষার্থীদের আইকিউ টেস্ট চালু করা হবে। এটি ৫ ধাপে বাস্তবায়িত হবে এবং প্রথম দুই ধাপে ব্যয় হবে এককোটি টাকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহায়তায় এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাদরি ও গারো ভাষায় পূর্বে প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের সহায়ক হিসেবে বাংলায় উচ্চারণসহ ডিজিটাল কনটেন্ট প্রস্তুত করা হবে, যাতে মাতৃভাষায় পাঠদান সহজতর হয়।
মাঠ পর্যায়ের মনিটরিং কার্যক্রম আরও কার্যকর করতে ই-মনিটরিং অ্যাপস হালনাগাদ ও ইউজার ফ্রেন্ডলি করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
২০২৫-২৬ অর্থবছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে ৩৫ হাজার ৪০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং সকল শিশুর জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার যে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
উদ্যোক্তা সংস্কৃতি বিকাশের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের অধীনে বাস্তবায়নাধীন উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প (আইডিয়া) কর্তৃক বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস)-এ অদ্য ০৪ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি., সোমবার সকাল ১০:০০ টায় রাজধানীর বারিধারার ডিপ্লোমেটিক জোন সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব ক্যাম্পাসের রত্নগর্ভা তাহমিনা রহমান মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন আইটি বিভাগের প্রভাষক জনাব এনি চৌধুরী।
প্রথমেই কোরান তেলোয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান আরম্ভ করা হয়। দিনব্যাপী এ আয়োজনে তিনটি পৃথক সেশন অনুষ্ঠিত হয়। এগ্রোশিফট টেকনোলজিস লিমিটেড এর কো ফাউন্ডার এবং সিনিয়র অপারেশন অফিসার দিপ্ত সাহা এন্টারপ্রেনারশিপ মাস্টারক্লাস সেশনটি সফলভাবে পরিচালনা করেন। পিচ ডেক তৈরির কৌশল এবং আইডিয়া প্রি-সিড গ্র্যান্টে আবেদন করার পদ্ধতি বিষয়ক দুটি সেশন পরিচালনা করেন আইডিয়া প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক জনাব সিদ্ধার্থ গোস্বামী। উল্লেখ্য সেশনগুলোতে অংশ নেন ইউনিভার্সিটি অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি এন্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস)-এর তরুণ উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবকেরা। কর্মসূচির মাধ্যমে তারা স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম সম্পর্কে বাস্তবভিত্তিক ধারণা, প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ এবং নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগ লাভ করেন। তারা পিচিং সেশনের মাধ্যমে তাদের নিজস্ব স্টার্টআপ আইডিয়া পেশ করে। শিক্ষার্থীদের এই পিচিং সেশন এর বিচারক হিসেবে ছিলেন আইডিয়া প্রকল্পের জ্যেষ্ঠ পরামর্শক জনাব সিদ্ধার্থ গোস্বামী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম সচিব ও আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান এবং আইডিয়া প্রজেক্টের রিসার্চ এন্ড ইনোভেশন বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার রাজীব মজুমদার।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবু হাসান ভুইয়া। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সাদিয়া জাহান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিরেক্টর অফ আইকিউএসি মো.শাফায়েত হোসেন। আয়োজনটিতে সমাপনী বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম সচিব ও আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জনাব মুর্তুজা জুলকার নাঈন নোমান।
অনুষ্ঠানের সম্মানীয় অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল ইসলাম। এছাড়াও আরো বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার জনাব মো. কামরুল ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব আল ইমতিয়াজ এবং আইটি বিভাগের সকল শিক্ষকবৃন্দ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনার সার্বিক তত্তাবধানে ছিলেন আইটি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
অনুষ্ঠান শেষে এই আয়োজনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন আমাদের মাননীয় অতিথিবৃন্দ।
দেশের সব ইবতেদায়ি মাদ্রাসায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি পরীক্ষা আবার চালু হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বরেই এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আওতাধীন মাদ্রাসাগুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা পাঁচটি বিষয়ের ওপর পরীক্ষায় অংশ নেবে। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ইবতেদায়ি বৃত্তি পরীক্ষা আগামী ২১, ২২, ২৩, ২৪ ও ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার বিষয় হিসেবে থাকবে কুরআন মাজিদ এবং আকাইদ ও ফিকহ (একত্রে), আরবি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র (একত্রে), বাংলা, ইংরেজি এবং গণিত ও বিজ্ঞান (একত্রে)। প্রতিটি বিষয়ের জন্য ১০০ নম্বর করে বরাদ্দ থাকবে। মোট নম্বর হবে ৫০০।
শুধু বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কোডভুক্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা ও সংযুক্ত ইবতেদায়ি শাখার শিক্ষার্থীরাই পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
প্রতিটি মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত মোট শিক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত সিলেবাস ও মানবণ্টন বোর্ড থেকে শিগগিরই প্রকাশ করা হবে বলে নির্দেশনায় জানানো হয়েছে।
বিদ্যালয়ে হঠাৎ শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল ব্যাগ নিয়ে হাজির হলেন ইউএনও। এতে প্রতিটি শিশু শিক্ষার্থীর মুখেই হাসি আর মনে অপার আনন্দ ফুটে উঠলো। ইউএনওর হাত থেকে ব্যাগ উপহার পেয়ে সকলে উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন।
আজ বুধবার (৬ আগষ্ট) সকালে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মাসুম বিল্লাহ বিদ্যালয়টির ২শত ৫০ জন শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেন নতুন স্কুল ব্যাগ।
এ সময় সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহজাহান সিরাজ, পল্লী উন্নয়ন অফিসার আবু তাহের হেলাল, সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব বিশ্বাস, বিদ্যালয়ের পিটিএ কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান শেখ জুয়েল, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকবৃন্দ।
বিদ্যায়লয়টির দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী শ্রেষ্ঠা রত্ন বলেন, এতোদিন একই রংয়ের শার্ট-প্যান্ট, জুতা, টাই পড়ে শিক্ষার্থীরা স্কুলে এলেও ব্যাগগুলো ছিল আলাদা আলাদা। আবার কারো কারো স্কুল ব্যাগ ছিলো না। শ্রেণি কক্ষে কেমন যেন বৈষম্য মনে হতো। আমরা ভাবতাম ইস যদি সকলের ব্যাগ একই হতো তাহলে খুব মজা হতো। আজ আমাদের সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন ইউএনও স্যার।
নতুন স্কুল ব্যাগ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী রাফি বলেন, ‘আমার পুরনো ব্যাগ ছিঁড়ে গিয়েছিল। আজ নতুন ব্যাগ পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।’
এদিকে,অভিভাবকদের প্রতিক্রিয়া ছিল ইতিবাচক। তারা জানান, গ্রামে অনেক পরিবারই দরিদ্র। স্কুল ব্যাগ বা টিফিন বক্স কেনা অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। ইউএনও’র এই উদ্যোগে তাদের সন্তানরা নতুন উদ্যমে স্কুলে যাচ্ছে। উপস্থিতিও বেড়েছে।
চরকাটিহারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরব আলী বলেন,’এই সহায়তা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের সৃষ্টি করেছে। আগে কেউ কেউ ছেঁড়া ব্যাগ নিয়ে আসত, অনেকের স্কুল ব্যাগও ছিলোনা। এখন তারা গুছিয়ে স্কুলে আসছে।
সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা বাসুদেব বিশ্বাস বলেন,’ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে এই উপহার বিতরণ শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করে তুলবে। এতে এ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা আরও এগিয়ে যাবে।’
ইউএনও মোঃ মাসুম বিল্লাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে এবং পড়ালেখায় আগ্রহ বাড়াতে এই সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা চাই, কেউ যেন শুধু অভাবে স্কুলছুট না হয়।
তিনি আরও বলেন’ প্রাথমিক শিক্ষার মাধ্যমে শিশুদের স্কুল জীবন শুরু হয়। প্রাথমিক শিক্ষাকে এগিয়ে নিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস। শিক্ষা উপকরণ বিতরণের এই উদ্যোগ একটি চলমান প্রক্রিয়ার অংশ এবং ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত আকারে এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন প্রকাশ করা হয়েছে। পাঁচটি বিষয়ে মোট ৪শ’ নম্বরের পরীক্ষা হবে। পরীক্ষার সময় থাকবে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (নেপ) সোমবার এক চিঠিতে এসব তথ্য জানায়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বৃত্তি পরীক্ষার ২০২৫ সালের প্রশ্নপত্রের কাঠামো ও নম্বর বিভাজন প্রকাশ করা হয়েছে। নতুন নিয়মাবলী সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা হবে পাঁচটি বিষয়ের ওপর। এর মধ্যে তিনটি বিষয়ের প্রতিটিতে ১০০ নম্বর করে এবং দুটি বিষয় একত্রে ৫০ নম্বর করে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, বাংলা, ইংরেজি ও প্রাথমিক গণিত-এই তিনটি বিষয়ের ওপর ১০০ নম্বর করে প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হবে। আর প্রাথমিক বিজ্ঞান ও বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়-এই দুটি বিষয়ের ওপর ৫০ নম্বর করে, মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হবে।
পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। প্রশ্নপত্রে ডোমেইনভিত্তিক জ্ঞানমূলক, অনুধাবনমূলক, প্রয়োগমূলক এবং উচ্চতর দক্ষতাভিত্তিক প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনকে (বাহা) লাল কার্ড প্রদর্শন করলো বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (৩ আগষ্ট) সকালে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত বাকৃবির পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা অনুষদের ফটকে তালা দিয়ে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। পরবর্তীতে তারা সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন করিডোরে এসে বাহা'কে লাল কার্ড প্রদর্শন করে।
এসময় শিক্ষার্থীরা 'মানতে হবে কম্বাইন্ড', 'দিতে হবে কম্বাইন্ড', 'এক দফা, এক দাবি, কম্বাইন্ড কম্বাইন্ড' সহ নানান স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশন (বাহা) এবং অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদ যৌথ এক বিবৃতিতে জানান, "অদ্য ৩১ জুলাই বেলা ১১টায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক কমপ্লেক্সে বাংলাদেশ অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও মহাসচিবসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি অনুষদের ডিন মহোদয়সহ শিক্ষক মন্ডলী ও ছাত্র-ছাত্রীদের সমন্বয়ে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় অনুষদের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ কর্তৃক ক্লাস-পরীক্ষাসহ অনুষদের স্বাভাবিক কার্যক্রম বিঘ্ন ঘটার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। শিক্ষার্থীদের এহেন কার্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত আইন ও শান্তি-শৃঙ্খলা পরিপন্থী। এই কার্যক্রমে অনুষদের সকল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নেই। অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য একটি বিশেষ মহলের প্ররোচনায় কতিপয় বিপথগামী শিক্ষার্থী উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রফেশনকে হেয় করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। উপস্থিত সকলে এ কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানায় এবং এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের আহবান জানায়। সভায় অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি প্রফেশনের বিরাজমান সমস্যাসমূহ সমাধানে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্বান্ত গৃহীত হয়।"
এ বিষয়ে বাকৃবির পশুপালন অনুষদের আন্দোলনরত শিক্ষার্থী হিমেলের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, 'গত ৩১ জুলাই বাহা কম্বাইন্ড ডিগ্রীর দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের 'কতিপয় বিপথগামী' এবং 'চলমান আন্দোলনটি কয়েকজন শিক্ষার্থীর কুপ্ররোচনায় হচ্ছে এবং এই আন্দোলনে সকল শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ নেই' বলে আখ্যায়িত করে একটি বিবৃতি প্রদান করে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে কুরুচিপূর্ণ শব্দচয়নের মাধ্যমে বিবৃতি প্রদানের প্রতিবাদে আমরা পশু পালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা বাহা'কে লাল কার্ড প্রদর্শন করেছি এবং বাহার বিবৃতি প্রত্যাখান করেছি।'
উল্লেখ্য, গত ২৮ এপ্রিল থেকে ভেটেরিনারি সায়েন্স ও পশু পালন অনুষদকে একসঙ্গে করে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে বাকৃবির পশু পালন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।
ইউআইটিএস-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শরৎকালীন সেমিস্টার ২০২৫-এর শিক্ষার্থীদের প্রি-অরিয়েনটেশন অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত তথ্যপ্রযুক্তি ও বিজ্ঞানভিত্তিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস)-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শরৎকালীন সেমিস্টার ২০২৫ শিক্ষার্থীদের প্রি-অরিয়েনটেশন গত ০৩ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি., রবিবার সকাল ০৯:০০ টায় রাজধানীর বারিধারার ডিপ্লোমেটিক জোন সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব ক্যাম্পাসের রত্নগর্ভা তাহমিনা রহমান মাল্টিপারপাস হলে অনুষ্ঠিত হয়। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মোঃ মহিউদ্দিন আহমেদ-এর সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবু হাসান ভূঁইয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাদানের জন্য সকল ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বিদ্যমান এবং আমরা ইতোমধ্যে একটি ভালো অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছি। আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজেদের মতো করে গড়ে তুলছি এবং প্রতিনিয়ত উন্নতির পথে এগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, সময়ানুবর্তিতা একজন শিক্ষার্থীর সফলতার মূল চাবিকাঠি। সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে পারলে জীবনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব। তাই সময়ের যথাযথ ব্যবহার করার জন্য নবীন শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানান।
তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও স্বাগত জানান এবং এই আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইউআইটিএস-এর মাননীয় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ্দীন আহমেদ, সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম, অ্যাডজানক্ট ফ্যাকাল্টি অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার ড. মোহাম্মদ রাশিদুল হাসান, সহকারি অধ্যাপক জনাব মোঃ হাসান ইমাম। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মঞ্জুরুল হাসান সাজিদ। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সৈয়দ ও সাজিয়া পারভেজ সুপ্তি এবং নবীন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন মোঃ ফজলে রাব্বি ও মারজিয়া মেহেজাবিন রহমান।
উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এলামনাই, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিভিল ক্লাবের সদস্য-সহ নবীন শিক্ষার্থীবৃন্দ। উক্ত অনুষ্ঠানে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।
মন্তব্য