স্লিপ ফান্ডের বিধিমালা অনুযায়ী, বরাদ্দের টাকা থাকার কথা বিদ্যালয় কমিটির প্রধান ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ অ্যাকাউন্টে। রংপুরের বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা সেই অর্থ তুলে নিয়েছেন।
রংপুর জেলার প্রায় দেড় হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসানোর জন্য বরাদ্দ প্রায় তিন কোটি টাকার কোনো হদিস মিলছে না।
বিদ্যালয়গুলো উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ) প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের গাইডলাইন অনুসারে কোনো স্কুলের জন্য বরাদ্দ অর্থ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধানের যৌথ হিসেবে থাকার কথা। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
জেলার আট উপজেলায় এক হাজার ৪৫৮টি বিদ্যালয়ে স্লিপ ফান্ডের বরাদ্দ থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র কেনার কথা ছিল। এর মধ্যে মাত্র তিনটিতে কেনা হয়েছে এই যন্ত্র। অন্য স্কুলগুলোতে বরাদ্দের অর্থ প্রধান শিক্ষকরা ব্যক্তিগত কাজে খরচ করেছেন।
২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর রংপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় স্লিপ ফান্ডের বরাদ্দ থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র কেনার নির্দেশ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্লিপ ফান্ডের গাইডলাইন অনুযায়ী, ২০০ শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা ও ২০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থীর স্কুলে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সেই হিসেবে ২০ কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকার বরাদ্দ আসে।
এর মধ্যে বায়োমেট্রিক যন্ত্র কেনার জন্য প্রতিটি স্কুল ২০ হাজার টাকা করে পায়। সেই হিসেবে এক হাজার ৪৫৫টি বিদ্যালয় পায় দুই কোটি ৯১ লাখ টাকা। কিন্তু ওই অর্থবছর শেষ হওয়ার পরও যন্ত্র বসেনি সব স্কুলে।
স্লিপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের গাইডলাইনের ২০.৩ ধারায় বলা হয়েছে, বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে সরকারি ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে বরাদ্দের অর্থ থাকবে। কিন্তু রংপুরের স্কুলগুলোতে হাজিরা যন্ত্র কেনার জন্য বরাদ্দ অর্থের কোনো হিসাব নেই জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের কাছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ‘এক অর্থবছরের টাকা খরচ না হলে অন্য অর্থবছরে তা ফেরত দিতে হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। না হলে গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয় টাকা দেয় না। কিন্তু তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা প্রধান শিক্ষকরা খরচ করেছেন।’
রংপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যন্ত্রগুলো কেনা হয়েছে কি না জানি না।... কোনো প্রধান শিক্ষক যদি সরকারি টাকা সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিজ অ্যাকাউন্টে রাখে সেটি অপরাধ।… টাকা খরচ না হলে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে। ওই টাকা কী করল তা জানাতে হবে।’
বরাদ্দের টাকা কোথায়, জানতে চাইলে সদর উপজেলার উত্তম বারঘড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আশেক আলী বলেন, ‘আমি এই টাকার কিছু জানি না। যৌথ অ্যাকাউন্টে থাকলে তো আমি অবশ্যই জানতাম। ম্যাডামরা টাকা কী করেছে তা জানি না।’
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মেহের বানু বলেন, ‘সে সময় মেশিন কেনার নির্দেশনা ছিল তাই টাকা তুলেছি। আমার কাছেই আছে, এখনও খরচ করিনি।’
তবে সরকারি টাকা নিজের কাছে কীভাবে রেখেছেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি টাকার হিসাব রেখেছি। প্রয়োজন হলে নিজের টাকা দেব।’
সদরের মনোহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের দাবি, স্থানীয় শিক্ষা অফিসকে জানিয়েই তারা বরাদ্দের অর্থ খরচ করেছেন। আলম নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরা পারভীন জানান, বরাদ্দের টাকা তার কাছে ‘রক্ষিত’ আছে।
পীরগাছা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান আতিক জানান, তার উপজেলায় ১৭৮টি বিদ্যালয়ের কোনোটিতেই ওই যন্ত্র কেনা হয়নি। পাঁচটি বিদ্যালয়ে বিভাগীয় প্রশাসনের দেয়া হাজিরা যন্ত্র লাগানো আছে। স্লিপ ফান্ডের হাজিরা যন্ত্র কেনার টাকা ভিন্নখাতে খরচ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মিঠাপুকুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয়ের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যন্ত্র কেনা হয়নি।
ভুলটি কী? জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, হাজিরা যন্ত্র কেনার নির্দেশনা পাওয়ার পর প্রধান শিক্ষকরা সেই প্রক্রিয়াও শুরু করেন। এর পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের থেকে হাজিরা যন্ত্র কেনার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকদের চাপ দিতে থাকে। এই বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে হাজিরা যন্ত্র আপাতত না কেনার জন্য আরেকটি চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়। তবে কিছুদিন পরই আবার যন্ত্র কিনতে লিখিত নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর মধ্যেই তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থবছর শেষ হয়ে যায়; শুরু হয় চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যক্রম। এ কারণে সময়মতো হাজিরা যন্ত্রগুলো কেনা হয়নি বলে জানান ওই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
তাহলে বরাদ্দের টাকা কোথায় খরচ হলো এর জবাবে সদর উপজেলার উত্তম হাজিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের অনেকেই ওই টাকা অন্য খাতে ব্যয় করেছেন। আমরা কেউ কেউ এখনও খরচ করি নাই। আবার যখন বলা হবে তখন কেনা হবে।’
এ বিষয়ে রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাজাহান সিদ্দিক বলেন, ‘স্লিপের টাকায় কী কী করা যাবে তার নির্দেশনা আছে। টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে তা জানতে আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছি। তারা উত্তর দিলে আমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাব।
এর পর মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দিবে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান শিক্ষা কর্মকর্তা শাজাহান।
সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া একদিন বয়সী সামিউলকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। ছবি: নিউজবাংলা
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় শিশু চোর চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে, যাদের পাঁচজনই নারী।
সিরাজগঞ্জে হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ দুই শিশুকে পাওয়া গেছে জেলার আলোকদিয়া গ্রামের এক বাড়িতে। তবে শিশু দুটির একটি মারা গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় শিশু চোর চক্রের ছয় সদস্যকে আটক করা হয়েছে, যাদের পাঁচজনই নারী।
সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে শনিবার চুরি হওয়া একদিন বয়সী সামিউলকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।
আর চার দিন আগে সিরাজগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু মাহিনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ২৩ দিন।
সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী নিউজবাংলাকে জানান, আলোকদিয়ার একটি ঘর থেকে রাত পৌনে ১১টার দিকে সামিউল ও মাহিনকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় শিশু চোর চক্রের পাঁচ নারী ও এক পুরুষ সদস্যকে আটক করা হয়।
আটক ছয়জন হলেন সলঙ্গা থানার সয়রন বিবি, তার মেয়ে আলপনা খাতুন, ছেলে রবিউল ইসলাম ও তার স্ত্রী ময়না খাতুন এবং একই গ্রামের খাদিজা খাতুন ও মিনা খাতুন।
সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সাখাওয়াত এইচ মেমোরিয়াল হাসপাতাল থেকে শনিবার বিকেল সোয়া চারটার দিকে শিশু সামিউলকে চুরি করা হয়।
শিশুটি তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ গ্রামের আব্দুল মাজেদ ও সবিতা খাতুন দম্পতির প্রথম ছেলে সন্তান। এক যুগ অপেক্ষার পর এই সন্তান আসে তাদের ঘরে।
এ ঘটনায় হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজের কয়েকটি ক্লিপ নিউজবাংলার হাতে আসে। প্রায় দেড় মিনিটের ফুটেজে দেখা যায়, শিশুটির নানীর সঙ্গে কথা বলছেন খয়েরি রংয়ের বোরকা পরা এক নারী। এক পর্যায়ে শিশুকে কোলে নেন তিনি। কয়েক ঘণ্টা তাকে কোলে নিয়ে হাসপাতালের বারান্দায় পায়চারী করেন। এর পর সুযোগ বুঝে কৌশলে নবজাতককে নিয়ে সটকে পড়েন।
মঙ্গলবার দুপুরে সিরাজগঞ্জে ২৫০ শয্যার বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল থেকে শিশু মাহিনকে চুরি করা হয়।
হাসপাতালের ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বোরকা পরা দুই নারী শিশুটিকে কোলে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু হিজাবে মুখ ঢাকা থাকায় এবং সিসিটিভির ফুটেজ স্পষ্ট না হওয়ায় তাদের চেহারা বোঝা যাচ্ছে না।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা চয়ন ইসলাম পাঁচ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেন। পরে সন্দেহভাজন এক জনকে আটক করে পুলিশ।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) হাসিবুল আলম জানান, শনিবার শিশু সামিউল চুরি হওয়ার পর তারা ওই হাসপাতাল ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন। ওইসব ভিডিও বিশ্লেষণ করে তারা আলোকদিয়ার শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পাশাপাশি ২৩ ফেব্রুয়ারি চুরি যাওয়া শিশুটির মৃতদেহও সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, আটকদের শনিবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রোববার এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
পঞ্চগড়ে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আহত একজনকে তোলা হচ্ছে অ্যাম্বুলেন্সে। ছবি: নিউজবাংলা
বিস্ফোরণে নিহত ইউনুস আলীর বাড়ি গাইবান্ধায়। দুর্ঘটনায় তার ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শরীরও ঝলসে যায়।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় বেলুনে গ্যাস ভরার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ইউনুস আলী নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে শিশুসহ আরও চারজন।
উপজেলার চৌরাস্তা বাজারের একটি দোকানে শনিবার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বিস্ফোরণে নিহত ইউনুস আলীর বাড়ি গাইবান্ধায়। দুর্ঘটনায় তার ডান পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। শরীরও ঝলসে যায়।
এ ছাড়া আহত চারজন হলেন ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার রাউদনগর এলাকার হাফিজুল, তেঁতুলিয়া সদর ইউনিয়নের ডাঙার পাড়ার আব্দুর রহমানের ছেলে ফয়সাল হোসেন, ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বাবুল হোসেনের ছেলে সাব্বির হোসেন ও নওগাঁর আব্দুস সালামের ছেলে রাব্বি।
তাদের মধ্যে সাব্বিরের ডান চোখ ও হাফিজের বাম চোখে গুরুতর আঘাত লেগেছে।
স্থানীয়রা জানায়, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের কয়েকজন চৌরাস্তা বাজারে একটি দোকান ভাড়া নিয়ে বেলুনে গ্যাস ভরে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করত। দুপুরে ওই দোকানে বেলুনে গ্যাস ভরার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে হতাহতের এ ঘটনা ঘটে।
তারা আরও জানান, বিস্ফোরণের পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের সহযোগিতায় আহতদের উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাদের রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রাতে মারা যান ইউনুস আলী।
পাঁচ মাস আগে রূপাটি গ্রামের রাজু মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় সালমার। বিয়ের পর থেকে বাবার বাড়িতে আসা-যাওয়া নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হয়।
মাগুরা সদর উপজেলার শ্বশুরবাড়ি থেকে সালমা খাতুন নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার জগদাল ইউনিয়নের রুপাটী গ্রাম থেকে শনিবার বিকেলে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার পর থেকে ওই গৃহবধূর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আত্মগোপন করেছেন। সালমার পরিবারের সদস্যদের দাবি, সালমার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তারা জানান, পাঁচ মাস আগে রূপাটি গ্রামের রাজু মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় সালমার। বিয়ের পর থেকে বাবার বাড়িতে আসা-যাওয়া নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে মনোমালিন্য শুরু হয়।
সালমার দাদা পিকুল হোসেন জানান, শনিবার সকাল ৮টার দিকে ফোন করে তাদেরকে জানানো হয়, সালমা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। পরে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে সালমার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান তারা।
তিনি আরও জানান, তারা গিয়ে ওই বাড়িতে সালমার স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির কাউকে পাননি।
সালমাকে হত্যার পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে রাখা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে কথা বলতে সালমার স্বামী রাজুকে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন জানান, মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা জানা যাবে।
মেঘনা নদীতে দুই মাস নিষিদ্ধ করা হয়েছে সব ধরনের মাছ শিকার। ছবি: নিউজবাংলা
জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস নদীতে সব ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরে জাটকা সংরক্ষণ করে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস মেঘনা নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
জেলা মৎস্য অফিস জানায়, লক্ষ্মীপুর জেলায় প্রায় ৬৫ হাজার জেলে রয়েছে। এসব জেলে মেঘনা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করে। জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস নদীতে সব ধরনের জাল ফেলা ও মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুরের রামগতির আলেকজান্ডার থেকে চাঁদপুরের ষাটনল এলাকার একশ কিলোমিটার পর্যন্ত মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার।
এই একশ কিলোমিটার মেঘনা নদী এলাকাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় সব রকমের ইলিশ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাত ও মজুদ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
জেলামৎস্য কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন জানান, ইলিশের উৎপাদন ও জাটকা সংরক্ষণের জন্যই দুই মাস নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে নদীতে মৎস্য বিভাগ, উপজেলা-জেলা প্রশাসন, নৌপুলিশ ও কোস্টগার্ডের সমন্বয়ে প্রতিদিন অভিযান পরিচালনা করা হবে জানান তিনি।
বাঁধন ও নিলয় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পাকেরহাট বাজার থেকে মোটরসাইকেলে সৈয়দপুরে যাচ্ছিলেন। পথে পুলহাট বাজারে পৌঁছালে পেছন থেকে আসা একটি ট্রাক্টর ওই মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়।
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় ট্রাক্টরের ধাক্কায় বাঁধন ইসলাম নামের এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।
এ দুর্ঘটনায় নিলয় ইসলাম নামের আরেক মোটরসাইকেল আরোহী আহত হয়েছেন।
শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের পুলহাট বাজারে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বাঁধন ইসলামের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার রাবেয়া মোড়ের বানিয়াপাড়ায়।আহত নিলয় ইসলামের বাড়িও একই এলাকায়।
গোয়ালডিহি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আইনুল হক শাহ জানান, বাঁধন ও নিলয় খানসামা উপজেলার পাকেরহাট বাজার থেকে মোটরসাইকেলে সৈয়দপুরে যাচ্ছিলেন। পথে পুলহাট বাজারে পৌঁছালে পেছন থেকে আসা একটি ট্রাক্টর ওই মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা বাঁধন ও নিলয়কে উদ্ধার করে সৈয়দপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক বাঁধনকে মৃত ঘোষণা করেন। নিলয় ওই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কামাল হোসেন জানান, এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।
খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ। ছবি: নিউজবাংলা
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খুলনার মহাসমাবেশে কর্মীদের আসতে পথে পথে বাধা দিয়েছে। তারপরও হাজার হাজার জনতা সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সরকার পতনের ডাক দিয়েছে। তিনি বলেন, এ বছরই সরকারের শেষ সময়।
আওয়ামী লীগ কোনোদিন জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে পারেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ব্যারিষ্টার শাহজাহান ওমর।
শনিবার বিকেলে নগরীর কে ডি ঘোষ রোড বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের বীরউত্তম খেতাব বাতিলের ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রতিবাদ ও দলীয়ে চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে দেশের ছয় সিটিতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের নেতৃত্বে এ মহাসমাবেশ হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভাইস-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নিতাই রায় চোধুরী ও যুগ্ম-মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
প্রধান বক্তা ছিলেন বরিশাল সিটির মেয়র প্রার্থী মো. মজিবর রহমান সরোয়ার, রাজশাহীর মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, চট্টগ্রামের ডা. শাহাদাত হোসেন, ঢাকা উত্তরের তাবিথ আওয়াল ও ঢাকা দক্ষিণের ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি এ মহাসমাবেশের আয়োজন করে।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, খুলনার মহাসমাবেশে কর্মীদের আসতে পথে পথে বাধা দিয়েছে। তারপরও হাজার হাজার জনতা সমাবেশে উপস্থিত হয়ে সরকার পতনের ডাক দিয়েছে। তিনি বলেন, এ বছরই সরকারের শেষ সময়।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করেছে। ১৬ কোটি মানুষ ভোট দিতে পারছেন না। রাতের অন্ধকারে জনগণের ভোট ছিনিয়ে নিয়ে দলের এমপি বানিয়েছেন। তারাই ব্যাংক লুট করছেন। শেয়ারের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও পুলিশ প্রশাসন দেশকে সর্বনাশের দিকে নিয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, সমাবেশ পণ্ড করার জন্য পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়-ভীতি এবং দুদিনে ৩১ জন কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের খাবার হোটেলে পুলিশ তালা দিয়েছে। খেয়াঘাট-বাস বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরও মহাসমাবেশ সফল করেছে।
তিনি আগামীতে নির্বাচনকে অর্থবহ করতে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের দাবি জানান।
মহাসমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক হুইপ মশিউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুজ্জামান খান শিমুল, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সাংসদ সোহরাব উদ্দীন, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবৃদ শামীমুর রহমান শামীমসহ অনেকে।
সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, নগর বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, জেলা শাখার শেখ আবু হোসেন বাবু ও নগরের আসাদুজ্জামান মুরাদ।
এর আগে, সকাল থেকে খুলনায় ছিল পুলিশের বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ থেকে ২৪ ঘণ্টার জন্য বন্ধ হয়ে যায় বাস চলাচল। সকাল থেকে বন্ধ হয় লঞ্চ ও ট্রলার চলাচল। সব মিলে আটকা পড়ে বিভিন্ন কাজে খুলনায় আসা সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে খুলনার বাইরে যারা নিয়মিত অফিস করেন, তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের দুর্ভোগও ছিল চরমে। তবে, সমাবেশ শেষে সন্ধ্যার পর থেকে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে।
জয়পুরহাট শহরের বাজলা স্কুলের সামনে পৌরসভা নির্বাচনের সরঞ্জামবাহী একটি ভটভটির সঙ্গে একটি ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ভ্যান চালক নাসির উদ্দিন নিহত হয়েছেন।
শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে বাজলা স্কুল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন জয়পুরহাট সদর থানার আলমগীর জাহান।
নিহত নাসির উদ্দিন সদর উপজেলার মাধায়নগর গ্রামের ছুমির উদ্দিন ছেলে।
ভ্যানযাত্রীদের বরাত ওসি আলমগীর জানান, আগামীকাল জয়পুরহাট সদর পৌরসভা নির্বাচন। এ নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার দুপুরে নির্বাচনি সরঞ্জাম নিয়ে একটি ভটভটি তালিমুল ইসলাম একাডেমি কেন্দ্রে যাচ্ছিল। পথে সদর রাস্তার পাশের বাজলা স্কুলের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ভ্যানচালক নাসির মারা যান।
মরদেহটি জয়পুরহাট জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
মন্তব্য