রংপুর জেলার প্রায় দেড় হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র বসানোর জন্য বরাদ্দ প্রায় তিন কোটি টাকার কোনো হদিস মিলছে না।
বিদ্যালয়গুলো উন্নয়ন পরিকল্পনা (স্লিপ) প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের গাইডলাইন অনুসারে কোনো স্কুলের জন্য বরাদ্দ অর্থ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রধানের যৌথ হিসেবে থাকার কথা। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেই টাকা তুলে নেয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
জেলার আট উপজেলায় এক হাজার ৪৫৮টি বিদ্যালয়ে স্লিপ ফান্ডের বরাদ্দ থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র কেনার কথা ছিল। এর মধ্যে মাত্র তিনটিতে কেনা হয়েছে এই যন্ত্র। অন্য স্কুলগুলোতে বরাদ্দের অর্থ প্রধান শিক্ষকরা ব্যক্তিগত কাজে খরচ করেছেন।
২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর রংপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় স্লিপ ফান্ডের বরাদ্দ থেকে বায়োমেট্রিক হাজিরা যন্ত্র কেনার নির্দেশ দেয় প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়। স্লিপ ফান্ডের গাইডলাইন অনুযায়ী, ২০০ শিক্ষার্থীর বিদ্যালয়ে ৫০ হাজার টাকা ও ২০০ থেকে ৫০০ শিক্ষার্থীর স্কুলে ৭০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সেই হিসেবে ২০ কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকার বরাদ্দ আসে।
এর মধ্যে বায়োমেট্রিক যন্ত্র কেনার জন্য প্রতিটি স্কুল ২০ হাজার টাকা করে পায়। সেই হিসেবে এক হাজার ৪৫৫টি বিদ্যালয় পায় দুই কোটি ৯১ লাখ টাকা। কিন্তু ওই অর্থবছর শেষ হওয়ার পরও যন্ত্র বসেনি সব স্কুলে।
স্লিপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের গাইডলাইনের ২০.৩ ধারায় বলা হয়েছে, বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের যৌথ স্বাক্ষরে সরকারি ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে বরাদ্দের অর্থ থাকবে। কিন্তু রংপুরের স্কুলগুলোতে হাজিরা যন্ত্র কেনার জন্য বরাদ্দ অর্থের কোনো হিসাব নেই জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের কাছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, ‘এক অর্থবছরের টাকা খরচ না হলে অন্য অর্থবছরে তা ফেরত দিতে হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। না হলে গাইডলাইন অনুযায়ী পরবর্তীতে অর্থ মন্ত্রণালয় টাকা দেয় না। কিন্তু তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা প্রধান শিক্ষকরা খরচ করেছেন।’
রংপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আখতারুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যন্ত্রগুলো কেনা হয়েছে কি না জানি না।... কোনো প্রধান শিক্ষক যদি সরকারি টাকা সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিজ অ্যাকাউন্টে রাখে সেটি অপরাধ।… টাকা খরচ না হলে সেই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিতে হবে। ওই টাকা কী করল তা জানাতে হবে।’
বরাদ্দের টাকা কোথায়, জানতে চাইলে সদর উপজেলার উত্তম বারঘড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি আশেক আলী বলেন, ‘আমি এই টাকার কিছু জানি না। যৌথ অ্যাকাউন্টে থাকলে তো আমি অবশ্যই জানতাম। ম্যাডামরা টাকা কী করেছে তা জানি না।’
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মেহের বানু বলেন, ‘সে সময় মেশিন কেনার নির্দেশনা ছিল তাই টাকা তুলেছি। আমার কাছেই আছে, এখনও খরচ করিনি।’
তবে সরকারি টাকা নিজের কাছে কীভাবে রেখেছেন তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি টাকার হিসাব রেখেছি। প্রয়োজন হলে নিজের টাকা দেব।’
সদরের মনোহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদের দাবি, স্থানীয় শিক্ষা অফিসকে জানিয়েই তারা বরাদ্দের অর্থ খরচ করেছেন। আলম নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরা পারভীন জানান, বরাদ্দের টাকা তার কাছে ‘রক্ষিত’ আছে।
পীরগাছা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান আতিক জানান, তার উপজেলায় ১৭৮টি বিদ্যালয়ের কোনোটিতেই ওই যন্ত্র কেনা হয়নি। পাঁচটি বিদ্যালয়ে বিভাগীয় প্রশাসনের দেয়া হাজিরা যন্ত্র লাগানো আছে। স্লিপ ফান্ডের হাজিরা যন্ত্র কেনার টাকা ভিন্নখাতে খরচ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
মিঠাপুকুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয়ের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে যন্ত্র কেনা হয়নি।
ভুলটি কী? জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জানান, হাজিরা যন্ত্র কেনার নির্দেশনা পাওয়ার পর প্রধান শিক্ষকরা সেই প্রক্রিয়াও শুরু করেন। এর পর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের থেকে হাজিরা যন্ত্র কেনার জন্য শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকদের চাপ দিতে থাকে। এই বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে হাজিরা যন্ত্র আপাতত না কেনার জন্য আরেকটি চিঠি দেয় মন্ত্রণালয়। তবে কিছুদিন পরই আবার যন্ত্র কিনতে লিখিত নির্দেশ দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর মধ্যেই তৃতীয় প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির অর্থবছর শেষ হয়ে যায়; শুরু হয় চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যক্রম। এ কারণে সময়মতো হাজিরা যন্ত্রগুলো কেনা হয়নি বলে জানান ওই উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
তাহলে বরাদ্দের টাকা কোথায় খরচ হলো এর জবাবে সদর উপজেলার উত্তম হাজিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমাদের অনেকেই ওই টাকা অন্য খাতে ব্যয় করেছেন। আমরা কেউ কেউ এখনও খরচ করি নাই। আবার যখন বলা হবে তখন কেনা হবে।’
এ বিষয়ে রংপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ এম শাজাহান সিদ্দিক বলেন, ‘স্লিপের টাকায় কী কী করা যাবে তার নির্দেশনা আছে। টাকা কীভাবে খরচ হয়েছে তা জানতে আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের চিঠি দিয়েছি। তারা উত্তর দিলে আমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠাব।
এর পর মন্ত্রণালয় যে নির্দেশনা দিবে সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান শিক্ষা কর্মকর্তা শাজাহান।
আরও পড়ুন:এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে সন্তুষ্ট না হওয়া শিক্ষার্থীদের খাতা চ্যালেঞ্জ বা ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার থেকে আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শুধু টেলিটক সিম ব্যবহার করে ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে পারবেন শিক্ষার্থীরা। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের জন্য নির্ধারিত আবেদন ফি লাগবে ১৫০ টাকা।
পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে- RSC<Space> Board Name (First 3 letters)<Space>Roll<Space>Subject Code লিখে পাঠিয়ে দিতে হবে ১৬২২২ নাম্বারে। একাধিক Subject Code Type এর ক্ষেত্রে কমা (,) ব্যবহার করতে হবে। যেমন-১০১,১০২,১০৩।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে। এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যায় বড় ধরনের অবনতি লক্ষ করা গেছে। গত বছরের শতভাগ পাস করা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এবার সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক-তৃতীয়াংশেরও নিচে।
ফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মাত্র ৯৮৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন। অথচ, গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৯৬৮টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কমেছে ১ হাজার ৯৮৪টি।
অন্যদিকে, ১৩৪টি প্রতিষ্ঠানের কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। গতবছর শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৫১টি। সে হিসেবে শতভাগ ফেল করা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে ৮৩টি।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে ফল প্রকাশ করেছে।
বিগত বছরগুলোর মতো এবার ফল প্রকাশ ঘিরে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা রাখা না হলেও সার্বিক বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকার সভাকক্ষে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কথা বলেন বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দকার এহসানুল কবির।
এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয়েছিল গত ১০ এপ্রিল। পরীক্ষা শেষ হয় ১৩ মে। চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি পরীক্ষায় ১৪ লাখ ৯০ হাজার ১৪২ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ছাত্র ৭ লাখ ১ হাজার ৫৩৮ জন এবং ছাত্রী ৭ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৪ জন।
এ ছাড়াও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ২ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩১৩ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় এক লাখ পরীক্ষার্থী কম ছিল। এবার ফল তৈরি হয়েছে বাস্তব মূল্যায়ন নীতিতে।
এ বছর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮টি কেন্দ্রে বিদেশি পরীক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন, পাসের হার ৮৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ।
৮টি কেন্দ্র থেকে মোট ৪২৭ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে ৩৭৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন আর অনুত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী ৫৪ জন। ১টি প্রতিষ্ঠানের শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর ও ময়মনসিংহ এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড।
এবার সারাদেশে মোট পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন এক লাখ ৩৯ হাজার ৩২ জনে। গত বছর পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। আর জিপিএ ফাইভ পেয়েছিল এক লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন।
এ বছর সারা দেশের ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৯ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। মোট উপস্থিতি ছিল ১৯ লাখ আট হাজার ৮৬ জন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তেরো লাখ তিন হাজার ৪২৬ জন।
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৯ শতাংশ। এ বোর্ডে সারাদেশে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৯ হাজার ৬৬ জন।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে এ ফল প্রকাশ করা হয়।
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা গেছে, এ বছর দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গত বছর অর্থাৎ, ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। সে হিসাবে পাসের হার অনেক কমেছে।
ছাত্রীদের পাসের হার ৭১.০৩ শতাংশ এবং ছাত্রদের পাসের হার ৬৫.৮৮ শতাংশ। সেই হিসাবে এবারও পাসের হারে এগিয়ে রয়েছেন ছাত্রীরা। এ নিয়ে টানা ১০ বছর এসএসসিতে পাসের হারে এগিয়ে ছাত্রীরা।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি (SEU) সামার সেমিস্টার ২০২৫-এ ভর্তি হওয়া নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ২ ও ৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস দুইদিনব্যাপী নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন একাডেমিক স্কুলের উদ্যোগে চারটি পৃথক সেশনের মাধ্যমে আয়োজিত এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক যাত্রাকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২ জুলাই প্রথম সেশনে সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (SSE) এর অধীনে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) বিভাগের শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানো হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডেটাসফট সিস্টেমস বাংলাদেশ লিমিটেড-এর প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মঞ্জুর মাহমুদ। একই দিনে দ্বিতীয় সেশনে SSE-এর আওতাধীন আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE), এবং টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়। এ সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (IEB)-এর টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিভিশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মোহিউদ্দিন আহমেদ (সেলিম)।
৩ জুলাই তৃতীয় সেশনে স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (SASS) অর্থনীতি, ইংরেজি ও বাংলা বিভাগের নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানায়। এ সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর এবং SANEM-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক বাজিউল হক খোন্দকার।
সেদিনই চতুর্থ ও শেষ সেশনে সাউথইস্ট বিজনেস স্কুল (SBS) তাদের বিবিএ ও এমবিএ প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য ওরিয়েন্টেশন আয়োজন করে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মো. মাহবুবুর রহমান, এফসিএ, অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং সিটি ব্যাংক পিএলসি-এর সিএফও। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা এবং নেতৃত্বের গুনাবলী অর্জনের আহ্বান জানান।
সবগুলো সেশনে সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম। এছাড়া প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. মোফাজ্জল হোসেন এবং রেজিস্ট্রার মেজর জেনারেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, SUP, ndu, psc (অব.) শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। বিভিন্ন সেশনে সংশ্লিষ্ট স্কুলের ডিন ও বিভাগের চেয়ারম্যানগণও উপস্থিত ছিলেন।
এই ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামগুলোর মূল লক্ষ্য ছিল নতুন শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ, মূল্যবোধ ও বিভিন্ন সুবিধার সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দেওয়া, যাতে তারা একটি প্রাণবন্ত বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু করতে পারে।
৪৫তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ভাইভা শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই থেকে। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায় বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন পিএসসি।
এবার চাকরি প্রত্যাশীরা তাদের আবেদনের পছন্দক্রম পরিবর্তন করতে পারবেন কিংবা আবেদনের ক্রমও বহাল রাখতে পারবেন সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করার আগে। তবে পছন্দক্রম পরিবর্তনের ফরমটি তাৎক্ষণিক চাকরিপ্রার্থীদের সরাসরি হাতে সরবরাহ করা হবে এবং তা পূরণ করে সাক্ষাৎকার বোর্ডে জমা দিতে হবে।
৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষায় সাময়কিভাবে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ২০৬ জন, সাধারণ ও কারিগরি /পেশাগত উভয় ক্যাডারে ১৮১ জন এবং শুধু কারিগরি/পেশাগত ক্যারের পদগুলোর ৬৫ জনসহ মোট ৪৫২ জন প্রার্থীর সাক্ষাৎকারের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে, যা কমিশনের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
বাংলাদেশে চীন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা প্রতিনিধিদলের সঙ্গে চীন সফরে যোগদান করবেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। আগামী ৬ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত (ভ্রমণ সময় ব্যতীত) মোট ৬ দিনের সফরে যাচ্ছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গত পহেলা জুলাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ভ্রমণ সংক্রান্ত সকল খরচ বাংলাদেশে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন দূতাবাস বহন করবেন। এতে বাংলাদেশ সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও আর্থিক সম্পৃক্ততা থাকবেন না। মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে ভ্রমণ শেষে দেশে ফিরে কর্মস্থলে যোগদান করবেন। ভ্রমণের একটি প্রতিবেদন তাঁর প্রত্যাবর্তনের ১৫ (পনের) কার্যদিবসের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এছাড়া উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ইয়াকুব আলী উপাচার্যের নিয়মিত দায়িত্ব পালন করবেন।
ইবি উপাচার্যের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) গোলাম মাহফুজ মঞ্জু জানান, উপাচার্যের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আগামী ৬ তারিখে উপাচার্যের সফরে যাবেন। তিনি উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির চেয়ারম্যানের অধীনে একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন।
ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ জানান, ‘উচ্চশিক্ষা বিষয়ক ইউজিসির অধীনে একটা বড় প্রতিনিধিদল নিয়ে চীন সফরে যাওয়া হচ্ছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি), সিলেট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাস্ট) উপাচার্যগণ সঙ্গে থাকবেন।
মন্তব্য