দিনাজপুরের চিরিরবন্দরে বিয়ে না দেয়ায় সোহেল রানা নামে এক কিশোর আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার অমরপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাসুদেবপুর গ্রাম থেকে পুলিশ গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে।
মৃত সোহেল রানা (১৭) ওই গ্রামের দবিরুল ইসলামের ছেলে। সে পেশায় টাইলস মিস্ত্রি ছিল।
চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার পরিবারের বরাত দিয়ে জানান, সোহেল বেশ কয়েক মাস ধরে বাবা-মার কাছে নিজের বিয়ের জন্য বায়না ধরে আসছিল। কিন্তু উপযুক্ত বয়স না হওয়ায় তারা তাকে বিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানান।
বুধবার সন্ধ্যায় এ নিয়ে সোহেল বাবা-মায়ের সাথে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়।
পড়ে গভীর রাতে এলাকাবাসী সোহেলের বাড়ির পাশের একটি জাম গাছে তার মরদেহ ঝুলতে দেখে পুলিশকে জানায়।
সোহেলের পরিবার ময়নাতদন্ত না করার আবেদন করলে মরদেহ স্বজনের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
এ ঘটনায় চিরিরবন্দর থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে জানান ওসি।
শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় বাড়িতে ফিরেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
গত দুই দিন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
শামীম ওসমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম শনিবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি নিউজবাংলাকে জানান, চিকিৎসকের পরার্মশে শুক্রবার তিনি (শামীম ওসমান) বাড়িতে চলে গিয়েছেন, তবে বর্তমানে বাড়িতে বিশ্রামে আছেন।
আর আগে শাহ নিজাম জানিয়েছিলেন, ‘খাদ্য গ্রহণে অনিয়ম, ঠিকমতো না ঘুমানোর কারণে শামীম ওসমান অসুস্থ হয়ে পড়েছে।’
শামীম ওসমানের ব্যক্তিগত সহকারী হাফিজুর রহমান মান্নান বলেন, ‘এমপি সাহেবের (শামীম ওসমান) শারীরিক অবস্থান এখন ভালো। তিনি অনেকটা সুস্থতা বোধ করায় বাড়িতে চলে এসেছেন, তবে চিকিৎসকের পরার্মশে আছেন।’
বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংসদের সহধর্মিণী সালমা ওসমান লিপি ও ছেলে ইমতিনান ওসমান অয়ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে শামীম ওসমানের সুস্থতা কামনায় পরিবারের পক্ষ থেকে সবার দোয়া চান।
অয়ন নিউজবাংলাকে জানান, তার বাবা (শামীম ওসমান) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই সময় তিনি সবার কাছে তার বাবার দ্রুত সুস্থতা কামনায় দোয়া চেয়েছেন।
এর আগে সালমা ওসমান লিপি ফেসবুকে লিখেন, ‘সংসদ সদস্য শামীম ওসমান গতকাল (বুধবার) রাত থেকে অসুস্থ। তিনি বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আপনারা সবাই উনার দ্রুত সুস্থতার জন্য দোয়া করবেন। সবার কাছে দোয়া কামনা করছি।’
দিনাজপুর-রংপুর মহাসড়কের সদর উপজেলার দরবারপুর নামকস্থানে সোমবার সন্ধ্যায় বিআরটিসি বাস ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় পিকআপের চালক ফয়জার রহমানসহ ৩ জন নিহত হন। পরিবারের একমাত্র আয়ের মানুষের হঠাৎ মৃত্যুতে পথে বসেছে ফয়জারের পরিবারটি। তিন সন্তানকে দিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন নিহত ফয়জারের স্ত্রী নাসরিন আক্তার।
গত সোমবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় থেকে রংপুর অভিমুখী বিআরটিসির একটি বাস দশমাইল মোড়ে থামে। এরপর রংপুরের উদ্দেশ্যে দ্রুতগতিতে যাত্রা শুরু করে। পথে দরবারপুর নামকস্থানে দিনাজপুরমুখী পুরাতন ব্যাটারী বোঝাই করা একটি পিকআপের উপরে উঠে যায় বিআরটিসি বাসটি। এতে ঘটনাস্থলে পিকআপ চালক ফয়জার রহমান, যাত্রী সোহান ও মোস্তাকিম নিহত হন।
পরে ফায়ার সার্ভিস, হাইওয়ে থানা ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিআরটিসির নিচে চাপা পড়া পিকআপটিকে অন্য একটি ট্রাক্টর দিয়ে টেনে বের করে। পরে পিকআপের সামনের অংশ মরদেহ উদ্ধার করা হয়। দুর্ঘটনার পর ওই বিআরটিসি বাসটির চালক ও স্টাফরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনাকবলিত পিকআপ ও বিআরটিসি বাসটি হাইওয়ে থানা পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নেয়।
বিআরটিসি বাসের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতদের স্বজনেরা। তবে দুর্ঘটনার সময় গুড়িগুড়ি বৃষ্টিপাত, প্রশস্তকরনের জন্য রাস্তা খুড়া ও যানবাহনের দ্রুতগতিকে দায়ী করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে থানা পুলিশ। তবে আর যেন এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে সেই জন্য প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ভুক্তভোগীর পরিবার।
দুর্ঘটনায় ফয়জার রহমান চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর সাতনালা গ্রামের বাসিন্দা, নিহত সোহান ও মোস্তাকিম রানীরবন্দর এলাকার বাসিন্দা। তাদের মৃত্যুর পর থেকে তাদের পরিবারের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে নিহত ফয়জারের পরিবারে। তিন সন্তানকে নিয়ে কীভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে ফয়জারের স্ত্রী নাসরিন আক্তার।
ফয়জারের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মৃত্যুকালে ফয়জার রহমান ৩ সন্তানের জনক ছিলেন। বড় মেয়ে ফারহানা আক্তার তিথি আলোকডিহি জেবি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীতে পড়ে, ছোট ছেলে ফুয়াদ হোসেন ডোমারের একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসা পড়ে এবং ছোট মেয়ে ১৫ মাস বয়সী ফাবিয়া আক্তার। ছোট মেয়ে ফাবিয়াকে ম্যাজিষ্ট্রেট বানানোর স্বপ্ন ছিল ফয়জারের।
নিহত ফয়জারের স্ত্রী নাসরিন আক্তার বলেন, ‘বিআরটিসি বাসটি আমার স্বামীর প্রাণ কেড়ে নিল। তার উপর নির্ভর করে আমাদের পরিবারটি চলছি। এখন আমরা কীভাবে চলব, কীভাবে খাব। আমার তিনটা সন্তানকে নিয়ে আমি কীভাবে চলব?’
প্রত্যক্ষদর্শী সুবহান আলী বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে একটু দুরেই আমার বাসা। সন্ধ্যা বিকট আওয়াজ পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দেখি বিআরটিসি বাস পিকআপের উপরে চড়ে আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে একটি ট্রাক্টর দিয়ে টেনে পিকআপকে বিআরটিসির নিচ থেকে বের করে। বিআরটিসি বাস বেপরোয়া গতি ছিল বলেই পিকআপের উপরে উঠে গেছে।’
নিহতের চাচা আব্দুর রউফ বলেন, ‘আমার ভাবি, ভাতিজা, ভাতিজার বউ আর ৩ সন্তান নিয়ে তাদের সুখের সংসার চলছি। আমার ভাতিজা দীর্ঘদিন ধরে পিকআপ চালায়। সে কোন দিন দুর্ঘটনা ঘটায় নাই। দুর্ঘটনার দিন পুরাতন ব্যাটারী নিয়ে রানীরবন্দর থেকে দিনাজপুর শহরে যাচ্ছিল। কিন্তু বেপরোয়া বিআরটিসির কারণে তিন তিনটি তাজা প্রাণ শেষ হয়ে গেল। এটার দায় কে নিবে। ভাতিজার মৃত্যুর পর তার পরিবারটি দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তিন সন্তানকে কীভাবে মানুষ করবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে পরিবারটি।’
প্রতিবেশী বাবলু রহমান বলেন, ‘দশমাইল থেকে রংপুরের রাস্তায় যত্রতত্রভাবে বাস দাড়িয়ে যায়। যেখানে যাত্রী পাবে তারা সেখানে হঠাৎ করে ব্রেক করে দেয়। আবার অন্য বা তাদের ওভারটেক করলে তারা যাত্রী পাবার আশায় বেপেরোয়া হয়ে পড়ে। এই রাস্তায় বেপরোয়া গাড়ির কারণে বহু সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু এসবের দায় কে নিবে?’
দিনাজপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মঞ্জিল হক বলেন, ‘দুর্ঘটনার সময় গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি, রাস্তা প্রশস্তকরনের জন্য খোড়া ও যানবাহনের বেপরোয়া গতির কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। দুর্ঘটনার পর পিকআপটিকে বাসের নিচ থেকে টেনে বের করা হয়েছে। বিআরটিসি বাসটি পিকআপের উপরে উঠে গেছিল।’
দশমাইল হাইওয়ে থানার ইনচার্জ ননী গোপাল বর্মন বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে তিন জনের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। মূলত দ্রুতগতির কারণেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। দুর্ঘটনার পর দুর্ঘটনাকবলিত দুটি গাড়ি আমাদের হেফাজতে রয়েছে।’
আরও পড়ুন:একাকীত্ব ঘোচাতে ৭০ বছর বয়সে বিয়ে করা বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার হুড়কা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত কলেজ শিক্ষক হাওলাদার শওকত আলী বলেছেন, বিয়ে না করা যৌক্তিক কাজ হতে পারে না।
গত শনিবার দুপুরে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে জেলার মোংলা উপজেলার মিঠাখালী এলাকার ৩৫ বছর বয়সী শাহেদা বেগম নাজুকে বিয়ে করেন শওকত।
নিজ বাড়িতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে পরিবারের সম্মতিতে এই বিয়ে হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে মেয়ের পক্ষের লোকজন আসেন শওকত আলীর বাড়িতে।
আলোচিত এ বিয়েতে খুশি হাওলাদার শওকত আলী ও শাহেদা বেগম নাজু।
বিয়ে নিয়ে হাওলাদার শওকত আলী বলেন, ‘জীবনের শুরু থেকে মানুষের কল্যাণে কাজ করেছি। ভাই-বোন ও এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের প্রতিষ্ঠিত করাই ছিল আমার একমাত্র লক্ষ্য, যার কারণে বিয়ে তো দূরের কথা, নিজের করা জমিতে একটি ভবনও করিনি। আল্লাহ আমার আশা পূরণ করেছেন। আমার সব ভাই-বোনেরা শিক্ষিত হয়েছেন। সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।
‘স্বজনদের চাপ থাকলেও ভাই-বোনদের দায়িত্ব ও স্বাধীনতা হারানোর ভয়ে বিয়ে করিনি, কিন্তু শেষ বয়সে এসে নিজেকে খুব একা মনে হতে থাকে, যার কারণে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিই। এতে পরিবারের সবাই খুবই খুশি হয়। পরবর্তী সময়ে সবার সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন হয়।’
বিয়ের এক সপ্তাহ পার হয়ে গেল। এখন কেমন আছেন জানতে চাইলে হাওলাদার শওকত আলী বলেন, ‘খুবই ভালো আছি। বিয়ের পরে এখনও শ্বশুরবাড়িতে যাইনি, তবে স্ত্রীকে নিয়ে নদীতে স্পিডবোটসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি।
‘শ্বশুরবাড়ি যাব একটু সময়, সুযোগ হলে। সবকিছু জেনেই নাজু আমাকে বিয়ে করেছে। আমিও নাজুকে আপন করে নিয়েছি। জীবনের বাকিটা সময় একসাথে কাটাতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিয়ে না করা কোনো যৌক্তিক কাজ হতে পারে না। সবার উচিত বিয়ে করা। বিয়ে করার ধর্মীয়, সামাজিক, পারিবারিক ও শারীরিক গুরুত্ব অনেক। জীবনের ঝামেলার জন্য সময়মতো না হলেও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিয়ে করে নেয়া উচিত।’
শাহেদা বেগম নাজু বলেন, ‘একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী হিসেবে আমি এই বিয়েতে অনেক খুশি। সবার কাছে দোয়া চাই, বাকি জীবন যেন সুখ-শান্তিতে কাটাতে পারি।’
শাহেদা বেগম নাজু এর আগে বিয়ে করেছিলেন। সেই ঘরে একটি মেয়ে আছে তার। ওই মেয়েরও দায়িত্ব নিয়েছেন হাওলাদার শওকত আলী।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের বোন নার্গিস আক্তার ঝর্না বলেন, ‘ভাইয়ার দেখাশোনা করার জন্য ছেলেকে নিয়ে তার বাড়িতে থাকি। ভাই-বোনরা সবসময় চাইতাম, ভাইয়ার একটা সংসার হোক, সে সুখে শান্তিতে থাকুক।
‘আমাদের জন্যে তো অনেক করেছে। শেষ বয়সে এসে ভাইয়া বিয়ে করেছে, এ জন্য আমরা সবাই খুশি।’
আরও পড়ুন:নিখোঁজের দুইদিন পর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের গাড়িচালকের বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর সাদীপুর ঘাটে টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ির মধ্য থেকে শনিবার সকাল ৮টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহসিন হোসাইন জানান, শনিবার সকালে সাদীপুর ঘাট এলাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় সাদা রঙের একটি টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ির ভেতর থেকে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
নিহত যুবক মো. সম্রাট পাবনা জেলার ঈশ্বরদী থানার আলাস ক্যাম্প এলাকার বাসিন্দা। তিনি পাবনার ঈশ্বরদী রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত রাশিয়ান NIKIMT কোম্পানির পরিচালক ইউরি ফেদারোপ ব্যবহৃত ল্যান্ড ক্রুজার গাড়ি চালাতেন।
গত দুইদিন যাবত সাদিপুর ঘাটের কাছে পরিত্যক্ত অবস্থায় গাড়িটি পড়ে ছিল। সকালে গাড়ি থেকে দুর্গন্ধ বের হলে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দেয়। পরে কুমারখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে গাড়ির ভেতর থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় গাড়ির ড্রাইভার সম্রাটের মরদেহ উদ্ধার করে। মরদেহ ও গাড়ি পাবনার ঈশ্বরদী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সম্রাট গত দুইদিন যাবত নিখোঁজ ছিলেন। এ বিষয়ে তার পরিবার গত ২৩ মার্চ পাবনার ঈশ্বরদী থানায় একটি জিডি করে। এরই প্রেক্ষিতে নিহত সম্রাটের বন্ধু মোমিনকে না পেয়ে তার স্ত্রী সীমাকে জিজ্ঞাসাবাদের থানায় নিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে কুমারখালী ওসি মহাসিন হোসেন জানান, সম্রাট ও মোমিন দুইজন গাড়ি চালক ছিলেন রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে। পরে দুই বন্ধুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠে। কোনো টাকা-পয়সা লেনদেন থাকার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।
তাকে ঈশ্বরদী এলাকায় হত্যা করে গাড়িসহ মরদেহ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর সাদিপুর ঘাট এলাকায় রেখে যায় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন:বান্দরবানের থানচি বাজারে ভয়াবহ আগুনে ৫০টি দোকান পুড়ে ছাই হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ২ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সাব স্টেশন অফিসার মো. ইসমাইল মিয়া নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে থানচি বাজারের টিএন্ডটি পাড়ার একটি চা দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা যাচ্ছে। এ সময় থানচি বাজারে ১০০টি দোকানের মধ্যে ৫০টি দোকান পুড়ে যায়।
স্থানীয় ও ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিটের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আগুনে কত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিরুপন করা যায়নি।
থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াই হ্লা মং মারমা জানান, বাজারের দক্ষিণ কোণ থেকেই আগুনের সুত্রপাত হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে বাজারের কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, এতে ব্যবসায়ীরা নি:স্ব হয়ে পড়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থানচি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মার্মা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মো: আবুল মনসুরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
গত ২৩ মার্চ থানচির বলিপাড়া ইউনিয়নের বলি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই অগ্নিকাণ্ডে বলিপাড়া বাজারের ৪৫টি দোকান ও ভাসমান কাঁচাবাজারসহ মোট ৫২টি দোকান পুড়ে কয়েক কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এই ব্যাপারে থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মো: আবুল মনসুর বলেন, ‘আনুমানিক ৫০টির বেশি দোকান পুড়ে যায়, ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তা দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
২০২০ সালের ২৭ এপ্রিল থানচি বাজারে আগুনে ২০০টি দোকান পুড়ে অন্তত ১০কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন:গোপালগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে এক এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
কাশিয়ানী উপজেলার খায়েরহাট এলাকার রেলক্রসিংয়ে শনিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
১৬ বছর বয়সী মুন্নী খানম ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার বড়ভাগ এলাকার পান্নু শেখের মেয়ে। মালা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল মুন্নী।
মুন্নীর পরিবারের বরাত দিয়ে কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফিরোজ আলম জানান, মুন্নী পাশ্ববর্তী আলফাডাঙ্গা উপজেলার বড়ভাগ থেকে কাশিয়ানী উপজেলার খায়েরহাট মদিনাপাড়ায় বোনের বাড়িতে যাচ্ছিল। বেলতলা রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় গোপালগঞ্জ হতে রাজশাহীগামী টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
বসন্তের হাওয়া বইছে চারদিকে। গাছে গাছে গজিয়েছে নতুন পাতা, ফুটেছে ফুল। ঠিক ৫৩ বছর আগে এমন দিনে বাংলাদেশ নামক এক রাষ্ট্রেরও জন্ম হয়েছিল। ৯ মাসের লড়াই শেষে অভ্যুদয় ঘটেছিল দেশটির। আর সেই লড়াইয়ের আনুষ্ঠানিক শুরুটা ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণার মধ্য দিয়ে।
প্রতিবছর এ দিনটিকেই স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করে পুরো জাতি। মুক্তিযুদ্ধের শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জড়ো হয়ে শ্রদ্ধা জানায় সর্বস্তরের মানুষ। অন্যান্য বছরের মতো এবারও এ দিনটিকে ঘিরে প্রস্তুত করা হয়েছে সৌধ প্রাঙ্গণ ও এর আশপাশের এলাকা। পরিচ্ছন্ন হয়ে সেজেছে সৌধ।
২৫ মার্চ দিনে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে দেখা যায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ এরইমধ্যে শেষ হয়েছে। সৌধস্তম্ভের চূড়া থেকে শুরু করে শহীদ বেদি, পায়ে চলার সড়ক সবখানে ধুয়ে মুছে চকচকে করা হয়েছে। প্রয়োজন মতো করা হয়েছে রঙ। সৌধের মূল ফটক থেকে বেদি পর্যন্ত হাটা পথে লাল ইটের মধ্যে সাদা রংয়ের ছোঁয়া ছড়াচ্ছে শুভ্রতা।
চত্বরজুড়ে শোভা পাচ্ছে লাল, নীল, বেগুনি, হলুদ, সাদাসহ বিভিন্ন রঙের, বর্ণের ফুলের গাছ। সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়েছে এসব গাছেরও। নির্দেশক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে একেকটি ঝাউগাছ। সৌধ বেদির সামনের অংশে গাছ দিয়ে বানানো হয়েছে জাতীয় পতাকা। লেকের পানিতে নতুন করে রোপন করা হয়েছে লাল শাপলা। পুরো জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভেতর ও বাইরে আলোকসজ্জার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
গণপূর্ত বিভাগের সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, মহান স্বাধীনতা দিবস ঘিরে বিগত এক মাস ধরেই আমরা স্মৃতিসৌধ এলাকায় কাজ করছি। এজন্য গত ১২ মার্চ থেকে সৌধ এলাকায় সর্বসাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই ধোয়ামোছা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষে সৌধ এলাকাকে ফুলে ফুলে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। রাতের বেলার জন্য লাল-সবুজ আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ পুরোপুরি প্রস্তুত আছে।
তিনি আরও জানান, ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাবেন। এ ছাড়া স্পীকার, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, কূটনৈতিক, রাজনৈতিক ও সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ ফুল দিয়ে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে সৌধ এলাকা।
এদিকে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান ঘিরে সৌধ ও এর আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসিটিভির পাশাপাশি বসানো হয়েছে অস্থায়ী ওয়াচ টাওয়ার।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জানান, এই দিবসকে ঘিরে স্মৃতিসৌধের আয়োজন ঘিরে আমরা এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়েছি। এখানে চার স্তুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য শুধু স্মৃতিসৌধ নয় সাভার ও আশুলিয়া এলাকা আমরা সিসিটিভির আওতায় আমরা রেখেছি। এর বাইরে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। এ ছাড়া স্মৃতিসৌধের আশপাশের এলাকার বাসিন্দাদের নতুন করে কাউকে বাড়িতে আশ্রয় দিতে নিষেধ করা হয়েছে। আত্মীয়স্বজন আসার ক্ষেত্রেও নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য