চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জে জমে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় খেজুরের গুড়ের হাট। গুড় কিনতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন ব্যাপারীরা। বেচাকেনার জন্য এই হাটের ঐতিহ্য কয়েক শ বছরের।
জেলার সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের সরোজগঞ্জে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ আঞ্চলিক মহাসড়ক ঘেঁষে স্থানীয় সরোজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এ হাট বসে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। সপ্তাহে সোমবার ও শুক্রবার বসে এ হাট।
প্রতি সপ্তাহে প্রায় দুই কোটি টাকার গুড় কেনাবেচা হয় এখানে। মাটির হাড়ি বা ভাড়ের আকার ও ওজন ভেদে দাম ওঠানামা করে। এক ভাড় গুড় ৭০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। স্বাদে ও গন্ধে এখানকার গুড় অতুলনীয়। অন্যান্য বারের তুলনায় এখানকার খেজুরের গুড়ের চাহিদা বেশি থাকায় দামও বাড়ছে।
সম্প্রতি এ হাটে গিয়ে দেখা যায়, হাটজুড়ে সাজানো গুড়ভর্তি মাটির ভাড় ও ছোট ছোট ধামা-কাঠায় নলেন পাটালি। ক্রেতা-বিক্রেতারা তা দাঁড়িয়ে দেখছেন। দরদাম ঠিক হলে ওজন করে ভর্তি করা হচ্ছে ট্রাক। আবার কেউ কেউ নিজের বাড়ি বা আত্মীয়ের বাড়ি পাঠানোর জন্য কিনছেন গুড়।
হাটের প্রবেশপথের দুইধারে বসে কৃষকেরা ধামা-কাঠায় করে তাদের বাড়িতে তৈরি পাটালি বিক্রি করছেন। পাটালির দোকান পার হয়ে ভেতরে যত যাওয়া যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ততই চোখে পড়ে সারি সারি সাজানো গুড়ের ভাড়। হাটের একাধিক স্থানে দাঁড়িপাল্লায় গুড় মেপে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা।
সরোজগঞ্জ গুড়ের হাটে গুড় বিক্রি করতে আসা চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কালুরপোল গ্রামের গাছি জহুরুল হক বলেন, ‘গত বিশ বছর ধরি এই হাটে গুড় নিয়ে আসচি। আমাদের কাছ থেকি দেশের মেলা জাগায় থেকি ব্যাপারীরা গুড় কিনি নি যায়। ভাড় প্রতি গুড় ৯০০ থেকে ১৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। ভাড়ের দাম বেড়িচে। এ কারণে অনেক সময় কম লাভ হয়।’
স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর শীত মৌসুমে সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি খেজুরের গুড় বেচাকেনা হয় এ হাটে। মৌসুমের প্রায় পুরোটা সময় হাজারো ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে জমজমাট থাকে এই হাট।
বাজার কমিটির সভাপতি এম আবদুল্লাহ শেখ জানান, এ হাট থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয় গুড়। প্রতি হাটের দিন গড়ে ২৫০ টন খেজুরগুড় বিক্রি হয়। যার মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা।
তিনি দাবি করেন, সরোজগঞ্জ হাটে বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ গুড়ই এলাকার কৃষকেরা বাড়িতে যত্নের সঙ্গে তৈরি করেন। এতে চিনি বা কোনো রাসায়নিক নেই। কিছুটা খয়েরি রঙের হলেও এসব গুড় পুরোটাই খাঁটি।
স্থানীয় পাইকাররা জানান, আগের তুলনায় গুড়ের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ১২ থেকে ১৪ কেজি ওজনের এক জোড়া গুড়ের ভাড় প্রায় এক হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকার কারওয়ান বাজার থেকে গুড় কিনতে আসা শহীদ হাসান জানান, দেশের অন্যান্য হাটে এখানকার চেয়ে কম দামে গুড় পাওয়া যায়। তবে, সেসব গুড়ে চিনি মেশানো থাকে বলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা কেউ তা কেনেন না। বেশি দাম জেনেও ব্যাপারীরা ভালো গুড় কিনতে চুয়াডাঙ্গার সরোজগঞ্জেই ছুটে আসেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বর্তমানে এ জেলায় ২ লাখ ৫০ হাজারের মতো খেজুরগাছ রয়েছে। যার প্রায় অর্ধেকই সদর উপজেলায়। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে গুড়ের মৌসুম। প্রতি মৌসুমে গড়ে আড়াই হাজার মেট্রিক টন গুড় উৎপাদিত হয়।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী হাসান জানান, মৌসুমে প্রতিটি গাছ থেকে অন্তত ১০ কেজি গুড় পাওয়া যায়। সে হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদিত হয়।
আষাঢ়-শ্রাবণে যে বৃষ্টির অপেক্ষা করেছে রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ তার মিললো আশ্বিনে এসে। প্রতি বছর আষাঢ় কিংবা শ্রাবণ মাসে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। কিন্তু এ বছর গত কয়েক মাস ধরেই প্রত্যাশিত বৃষ্টি হয়নি রাজশাহীতে। অবশেষে সেই বৃষ্টির দেখা মিলেছে।
রোববার বিকেলের ঝুম বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে রাজশাহীতে। মাঝারি মাত্রার এই বর্ষণে শহরের বেশিরভাগ ড্রেন উপচে পানি চলে আসে রাস্তায়। শহরের নিচু এলাকাগুলোতে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা। দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। অবশ্য সন্ধ্যার পর বেশিরভাগ এলাকার জলাবদ্ধতা কমে আসে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজিব খান জানান, রোববার রাজশাহীতে ৪৫ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে সকালে হয়েছে ৪ দশমিক ৮ মিলিমিটার। বাকিটা হয়েছে বিকেলে প্রায় দুই ঘণ্টার মধ্যে। চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে একদিনে এটিই সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
সন্ধ্যার পর বৃষ্টি কমে গেলেও আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, রাজশাহীতে সোমবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বৃষ্টির পানিতে রোববার বিকেলে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বিশেষ করে যেসব এলাকায় ছোট ড্রেন রয়েছে সেগুলো উপচে পানি ছড়িয়ে পড়ে প্রধান প্রধান সড়কে। নগরীর সাহেব বাজার, বর্ণালী মোড়, লক্ষ্মীপুর, উপশহর, ছোট বনগ্রাম, দড়িখড়বোনা, রেলগেট এলাকার সড়কে হাঁটুসমান পানি জমে যায়।
এছাড়া নগরীজুড়ে প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জলাবদ্ধতা দেখা যায়। বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলোতে জলাবদ্ধতায় দেখা দেয় জনদুর্ভোগ।
আরও পড়ুন:সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ এলাকায় বিষ পানে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।
এ ঘটনায় গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন একজন।
উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামে রোববার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো তিনজন হলো ১৫ বছরের কিশোরী সাকিবা বেগম, ১৩ বছরের কিশোর তামবির হোসেন ও পাঁচ বছরের শিশু সাহেদ মিয়া।
তিন শিশুর মা ৩৫ বছর বয়সী যমুনা বেগম আশঙ্কাজনক অবস্থায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জামালগঞ্জ থানার ওসি দিলীপ কুমার দাস বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন যমুনা বেগম ফেনারবাঁক ইউনিয়নের শান্তিপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী। যমুনা বেগম আশঙ্কাজনক অবস্থায় বেঁচে থাকলেও তিন সন্তানই মারা গেছে।’
যমুনা বেগমের একাধিক স্বজন জানান, স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে বিষ পান করেন যমুনা। মিষ্টির সঙ্গে বিষ মিশিয়ে তিন সন্তানকে খাইয়ে দেন তিনি। পরবর্তী সময়ে মা ও সন্তানসহ সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাদের জামালগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখানে চিকিৎসক অবস্থার অবনতি দেখে তাদের সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠান। সদর হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিন ছেলে-মেয়েকে মৃত বলে জানান। তাদের মা যমুনা বেগম গুরুতর অবস্থায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
ফেনারবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। গিয়ে যা জানতে পারলাম, তা খুবই মর্মান্তিক। মূলত পারিবারিক কলহের জের ধরে ঘটনাটি ঘটেছে।’
আরও পড়ুন:বরিশালে র্যাবের অভিযান ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে মাধ্যমে লাইভ (সরাসরি) প্রচার করায় এক ছাত্রকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত। ওই ছাত্রকে সামাজিক ও জনকল্যানমূলক কর্মকাণ্ড করতে নির্দেশ দিয়ে প্রবেশন কর্মকর্তার জিম্মায় জামিন দেয়া হয়েছে।
রোববার বরিশালের সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক গোলাম ফারুক এ আদেশ দিয়েছেন বলে জানান বেঞ্চ সহকারী নুরুল ইসলাম কাকন।
অর্থদণ্ডে দণ্ডিত কিন্তু প্রবেশন জামিন পাওয়া ২০ বছর বয়সী মারুফ মুন্সী ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার পুটিয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা এবং বরিশাল নগরীর বেসরকারী ইনফ্রা পলিটেকনিকের ছাত্র।
মামলার বরাত দিয়ে বেঞ্চ সহকারী কাকন বলেন, ‘২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি র্যাব-৮ এর একটি দল জিয়া সড়ক মসজিদ গলিতে অভিযান করে। মারুফ তার ফেইসবুক পেজ ডিপ্রেশন ও চ্যানেল টিভি নামের ইউটিউব চ্যানেল থেকে তা সরাসরি প্রচার করে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে এ তথ্য জানতে পেরে র্যাব মারুফকে আটক করে।
‘এ ঘটনায় ২২ জানুয়ারি কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা করে র্যাবের ডিএডি জিএম আনসার আলী। একই বছরের ৩০ জুন একমাত্র মারুফকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয় কোতয়ালী মডেল থানার এসআই সাইদুর রহমান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসামি মারুফ তার দোষ স্বীকার করেছে। তাই বিচারক তাকে জরিমানা ও প্রবেশনে জামিন মঞ্জুর করেছেন।’
সংবাদ প্রকাশের জেরে দৈনিক প্রথম আলোর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধির ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
চবির দ্বিতীয় কলা অনুষদের সামনে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
মারধরের শিকার ওই সাংবাদিকের নাম মোশাররফ শাহ। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সদস্য।
মারধরকারীরা চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের অনুসারী ও সিএফসি গ্রুপের কর্মী বলে অভিযোগ করেন মোশাররফ শাহ।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মোশাররফ শাহ বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আমি উপাচার্যের কার্যালয়ে যাচ্ছিলাম বক্তব্য নেওয়ার জন্য। এ সময় দ্বিতীয় কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সামনে ১৫ থেকে ২০ জন ছাত্রলীগের কর্মী আমাকে আটকায়। আমাকে লাঠিসোটা দিয়ে উপর্যুপরি মারধর করে আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। পরে সেখান থেকে রব হলে নিয়ে গিয়ে দ্বিতীয় দফা মারধর করে।’
তিনি বলেন, “মারধরের সময় নেতা–কর্মীরা আমাকে পরবর্তী সময়ে আর ছাত্রলীগ নিয়ে প্রতিবেদন না ছাপানোর হুমকি দেন। তাঁরা বলেন, ‘আর নিউজ করিস, তারপর দেখব তোরে কে বাঁচাতে আসে। ছাত্রলীগকে নিয়ে কোনো নিউজ হবে না।’”
আহত মোশাররফকে শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। বুক ও হাতে আঘাত থাকায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মো. আবু তৈয়ব বলেন, ‘মোশাররফের কপালে চার সেলাই দিতে হয়েছে। তার হাতেও আঘাত আছে। এক্সরে করাতে হবে। এ ছাড়া উন্নত চিকিৎসা জন্য চমেকে পাঠানো হয়েছে।’
এ বিষয়ে সিএফসি গ্রুপের একাংশের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘আমি এই ঘটনা শুনেছি। খোঁজখবর নিচ্ছি৷ যারা এই ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
চবি প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদার বলেন, ‘আমি ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়েছি। তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:রাজশাহীর বাঘা ও চারঘাট এলাকার সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা। রোববার দুপুরে রাজশাহী আদালত চত্বরে এই বিক্ষোভ ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
কর্মসূচির ব্যানারে লেখা ছিলো “বাঘা-চারঘাটের সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম কর্তৃক আর কত নির্যাতন সইব?’ আয়োজনে: নির্যাতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীবৃন্দ।”
কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন বাঘা পৌরসভার মেয়র ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আক্কাছ আলী। নেতাকর্মীরা আগামী জাতীয় নির্বাচনে শাহরিয়ার আলমের বিকল্প প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানান।
বিক্ষোভ সমাবেশে আক্কাছ আলী বলেন, ‘রাজশাহী-৬ আসনের এমপি ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের নির্দেশে বিভিন্ন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা আমাদের নামে মামলা করছে। বর্তমানে এক শ’ নেতাকর্মী বিনা দোষে মামলার আসামি। অজ্ঞাত আরও তিন শ’ আসামী রয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতারা যখন আমাদের নামে মামলা করেন তবে বুঝেন কেননে থাকি। আমরা চাই এই ধরনের লোককে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে নেতৃত্বে দেয়া হোক।’
আক্কাছ আরও বলেন, ‘শাহরিয়ার আলম বাঘা ও চারঘাট এলাকার সব স্থানীয় নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে কাজ করেছেন। তিনি অন্য মতাদর্শীদের নির্বাচনে বিজয়ী হতে সহযোগিতা করেছেন। উপরন্তু বাঘা ও চারঘাট এলাকার ত্যাগী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। এলাকার জনগণ শাহরিয়ার আলমের ওপর ব্যাপকভাবে ক্ষিপ্ত। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পুনরায় তাকে এই আসনে মনোনয়ন দিলে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হবে না।’
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাঘা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মোকাদ্দেস আলী, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সানোয়ার হোসেন সুরুজসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা রাজশাহী আদালত এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন।
উত্তরের জেলা দিনাজপুরে কয়েক দিন ধরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ভারি বৃষ্টিপাতের ফলে দিনাজপুরের অধিকাংশ রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। সেই জমিতে রোপা আমনের ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
এদিকে জেলার প্রধান তিনটি নদী পুনর্ভবা, আত্রাই ও ইছামতীর পানি সমতল বাড়ছে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলায় ১৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
এদিকে টানা বর্ষণে অন্যান্য দিনের তুলনায় রোববার অনেক কম যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।
দিনাজপুর আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের আবহাওয়া সহকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান আসাদ জানান, শুক্রবার দিনাজপুরে ২০ মিলিমিটার, শনিবার ২৩ মিলিমিটার ও রোববার সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৫৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
এ রকম বৃষ্টিপাত বুধবার পর্যন্ত থাকতে পারে, তবে এখনও পর্যন্ত বন্যার পূর্বাভাস দেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুরের তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে।
জেলার পুনর্ভবা নদীর বিপৎসীমা ৩৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার, যেখানে বর্তমান এ নদীর পানি সমতল ৩১ দশমিক ৯৬ সেন্টিমিটার। আত্রাই নদীর বিপৎসীমা ৩৯ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার। আর রোববার সকালে এ নদীর পানি সমতল রেকর্ড করা হয় ৩৭ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার।
জেলার আরেক নদী ইছামতীর বিপৎসীমা ২৯ দশমিক ৫০ সেন্টিমিটার। সেখানে রোববার সকালে পানি সমতল ২৮ দশমিক ০০ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়।
এসব নদীর পানি রোববার সন্ধ্যার মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
আরও পড়ুন:নাটোরের গুরুদাসপুরে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ৫৫ বছর বয়সী আসাদ আলী নামের এক কৃষককে শিকলবন্দি করার ঘটনায় মুল অভিযুক্ত আবদুল আজিজকে আটক করেছে পুলিশ।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শনিবার রাতব্যাপী অভিযানের একপর্যায়ে তাকে আটক করা হয়।
আবদুল আজিজ বলেন, ‘অনেক দিন হলো পাওনা টাকা ফেরত চেয়েও সেই টাকা আসাদ আলী দিতে পারেনি। তাই তাকে নিয়ে এসে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছে, যেন সে পালিয়ে যেতে না পারে।’
পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠালে কাউকেই পাওয়া যায়নি। পরে রাতভর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আবদুল আজিজকে আটক করা হয়।
এসপি আরও জানান, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক আসাদ আলীর স্ত্রী শাহানারা খাতুন বাদী হয়ে আবদুল আজিজের নামে থানায় মামলা করেছেন।
তিন বছর আগে নাটোরের গুরুদাসপুরের বাহাদুরপাড়া গ্রামের আবদুল আজিজের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ধার নেন আসাদ আলী। এরপর দুই বছরে ২০ হাজার টাকা সুদ ও আসলসহ ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তিনি। বাকি ৫০ হাজার টাকা চলতি বছরের শুরুতে দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু হঠাৎ অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়ায় বাকি টাকা আজিজকে দিতে পারেননি তিনি।
এরই জেরে শনিবার সকালে আবদুল আজিজ ও তার বাবা আফজাল হোসেনসহ কয়েকজন ব্যক্তি আসাদকে তার বাড়ি থেকে তুলে আনেন। পরে আজিজের বাড়ির বারান্দায় কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। টাকা পরিশোধ করতে না পারলে হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকি দেয়া হয় তাকে।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ওসি মোনায়ারুজ্জামান বলেন, ‘সন্ধ্যার পর খবর পেয়ে পুলিশ পাঠালে ঘটনাস্থলে কাউকেই পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য