নরসিংদীর বেলাব উপজেলার জংগুয়ায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে বাস ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনি জন নারীসহ চার জন নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার বিকাল চারটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতদের সবাই প্রাইভেটকারে ছিলেন। এ দুর্ঘটনায় আরও ১০ জন আহত হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ঢাকা থেকে সিলেটগামী আল মোবারাকা পরিবহনের একটি বাস জংগুয়ায় পৌঁছালে ভৈরব থেকে আসা ওই প্রাইভেটকারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাইভেটকারটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। দুর্ঘটনাস্থলেই চার জনের মৃত্যু হয়। এক জনকে মুমূর্ষু অবস্থায় ভৈরব হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ভৈরব হাইওয়ে ও বেলাব থানার পুলিশ যৌথভাবে দুর্ঘটনাকবলিত বাস ও প্রাইভেটকার উদ্ধার করে। এরপর ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাইভেটকারের ভেতরে থাকা নিহত ব্যক্তির মানিব্যাগে মো. নওয়াব আলী নামের পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে। তার বাড়ি গাজীপুর। পরিচয়পত্রে লেখা: তিনি ঢাকা বিজিং ড্রায়িং অ্যান্ড উইভিং ইন্ডাস্ট্রিজর জেনারেল ম্যানেজার। অন্যদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঐতিহ্যবাহী নাটোরের কাঁচাগোল্লার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নিবন্ধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে নাটোর জেলা প্রশাসন।
এ উপলক্ষে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে নিবন্ধনের আবেদন পাঠানো হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। খবর বাসসের
এফিডেভিটের মাধ্যমে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) বরাবর নাটোরের কাঁচাগোল্লার আবেদন প্রক্রিয়া পাঠানো হয়েছে। নাটোরের ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার এই প্রক্রিয়ায় সহায়তা দিচ্ছে।
কথিত আছে, কাঁচাগোল্লা সৃষ্টির পেছনে আছে মজাদার ইতিহাস। অর্ধ বঙ্গেশ্বরী খ্যাত নাটোরের রানি ভবানীর প্রিয় খাদ্যের তালিকায় ছিল মিষ্টি। তার রাজপ্রাসাদে নিয়মিত মিষ্টি সরবরাহ করতেন শহরের লালবাজারের মিষ্টি বিক্রেতা মধুসূদন পাল। একদিন মধুসুদন পালের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সব কর্মচারী অসুস্থ হয়ে গেলেন।
মিষ্টি তৈরির জন্যে দুই মণ ছানা সংগ্রহ করা ছিল। ছানাগুলো নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে মধুসূদন ছানার সঙ্গে চিনি মিশিয়ে উনুনে তাপ দেন। কারিগর ছাড়াই এলোমেলো এই আয়োজনে তৈরি হয় নতুন এক মিষ্টি। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় নতুন এই মিষ্টিই পাঠিয়ে দেন রানি ভবানীর রাজবাড়িতে।
রানি ভবানী এই মিষ্টি খেয়ে প্রশংসা করেন এবং এর নাম জানতে চান। মধুসূদন পাল তখন কাঁচা ছানা থেকে তৈরি বলে এর নাম দেন কাঁচাগোল্লা। এই হচ্ছে কাঁচাগোল্লা সৃষ্টির ইতিহাস। এই গল্প বেঁচে আছে শত-শত বছর ধরে মানুষের মুখে- মুখে।
নাম গোল্লা হলেও এটি দেখতে গোল নয়, মুখ্য উপকরণ ছানা আর চিনির সংমিশ্রণে এক প্রকার সন্দেশ। কাঁচাগোল্লার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নাটোরবাসীর আবেগ ও ভালোবাসা। তাই ২৫০ বছর আগে কাঁচাগোল্লা আবিষ্কৃত হয়ে আজও সুনাম বজায় রেখেছে। নাটোরের বিয়ে, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও অতিথি আপ্যায়নে সরবরাহ করা হয় কাঁচাগোল্লা। শুধু দেশে নয়, সারাবিশ্বেই নাটোরের কাঁচাগোল্লা প্রসিদ্ধ।
জেলা প্রশাসক বলেন, নাটোরে সৃষ্টি কাঁচাগোল্লা সারাদেশে প্রসিদ্ধ। ইতিহাস সমৃদ্ধ হওয়ার কারণে জিআই নিবন্ধনের কাজ শুরু করেছি আমরা। আশা করছি অল্প দিনের মধ্যে জিআই পণ্যের মর্যাদা লাভ করবে নাটোরের কাঁচাগোল্লা।
জিআই তালিকাভুক্তির মধ্য দিয়ে নাটোরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের পাশাপাশি দেশ-বিদেশে কাঁচাগোল্লার ব্র্যান্ডিং ও চাহিদা আরো বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।
সিলেটে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে আতিক হোসেন খান নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
সিলেটের সিনিয়র দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী বৃহস্পতিবার সকালে এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের কুশলী অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন আহমদ জানান, সকল সাক্ষ্য প্রমাণে আতিকুর রহমান দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
তবে, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ২৭ মার্চ সকালে গোলাপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামে বাড়ির সামনের গাছ কাটা নিয়ে আতিক হোসেন খানের সঙ্গে ঝগড়া হয় তার বাবা করিম খান ও মা মিনারা বেগমের সঙ্গে। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আতিক উত্তেজিত হয়ে হাতে থাকা কোদাল ও দা দিয়ে বাবা ও মায়ের ওপর হামলা করে।
স্থানীয়রা তাদের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে ছেলে আতিক পালিয়ে যান। এ সময় ঘটনাস্থলেই করিম খান মৃত্যুবরণ করেন। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা মিনারা বেগমকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় আতিকের ভাই দেলোয়ার হোসেন গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
আরও পড়ুন:ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে এক ইজিবাইক চালকের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উপজেলার কৈচাপুর ইউনিয়নের আতকাপাড়া সেতুর পাশ থেকে বৃহস্পতিবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো ২৮ বছর বয়সী বাদশা মিয়া একই ইউনিয়নের পশ্চিম বালিচান্দা গ্রামের মো. মোস্তফার ছেলে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান খান জানান, গত ২৯ মার্চ ইফতারি শেষে ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন বাদশা মিয়া। কিন্তু রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। বৃহস্পতিবার সকালে আতকাপাড়া সেতুর পাশে গলা কাটা মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহের পকেটে থাকা গাড়ির ব্যাটারির রশিদ দেখে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
তিনি আরও জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ইজিবাইক ছিনতাই করতে চালককে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
মেহেরপুরে ছেলের মৃত্যুর ১০ দিনের মাথায় আম গাছ থেকে মায়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা ছেলের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে মা বছিরন খাতুন আত্মহত্যা করেছেন।
জেলার মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া গ্রামের একটি আম গাছের ডাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ।
৩ সন্তানের জননী ৫০ বছর বয়সী বছিরন খাতুন ওই একই এলাকার মাছ ব্যবসায়ী রমজান আলীর স্ত্রী।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্বজনরা জানান, নিহত বছিরনের ছোট ছেলে রাসেল ১০দিন আগে বাড়ির কাজ-কর্ম নিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে অভিমানে নিজ বাড়িতে থাকা আগাছানাশক কীটনাশক পান করেন।
পরে পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে প্রথমে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়।
এ সময় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে সেখানে থাকা চিকিৎসক তাকে মেহেরপুর ও পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বুধবার তার মৃত্যু হয় এবং বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
ছেলের দাফনের পর মা বছিরন খাতুন বাড়ির বাহিরে গিয়ে চলে আসে, এরপরে রাতে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও পরিবারের লোকজন তাকে আর খুঁজে পায়নি।
পরে স্থানীয়রা ভোরে একটি আম গাছে বছিরনের ঝুলন্ত মরদেহ দেখে পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়।
মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী রাসেল আরও জানান, মরদেহটি একটি আম গাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা প্রাথমিক ধারণা করছি ছেলের মৃত্যুর শোক সইতে না পেরে হয়তো বছিরন খাতুন গলায় শাড়ি পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আরও পড়ুন:কিশোরগঞ্জে মাটির নিচ থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করছে পুলিশ। যুবকের পরিবারের সদস্যরা মরদেহটি শনাক্ত করলেও তার পরিচয় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে পুলিশ।
সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের উলুহাটি এলাকায় বিলের পাড় থেকে বুধবার বিকেল ৫টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
মৃত ২৩ বছর বয়সী সোহান আহমেদ আলিফ পেশায় দর্জি। তিনি রশিদাবাদ ইউনিয়নের বেরুয়াইল (কলাপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম বাচ্চুর ছেলে।
রশিদাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাহেদুল ইসলাম জানান, যুবকের মা হাওয়া বেগম মরদেহটি দেখে তার ছেলে আলিফের বলে শনাক্ত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাতে কিশোরগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ও রশিদাবাদ ইউনিয়নের বিট কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ২০ মার্চ বিকেলে তার নিজ বাড়ি বেরুয়াইল থেকে বের হন আলিফ। পরে আর বাড়ি ফিরে আসেননি। তার স্বজনরা বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান পাননি।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে আলিফের মা হাওয়া বেগম কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। বৃহস্পতিবার সকালে মুষলধারে বৃষ্টি হলে বিলপাড় থেকে মাটি সরে যায়। ওই স্থানে কাক ও শিয়ালের বিচরণ দেখে স্থানীয়রা সেখানে ছুটে যায়। লোকজন সেখানে মাটিচাপা দেয়া মরদেহের অংশ বিশেষ দেখতে পায়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ উদ্ধার হওয়া মরদেহটি আলিফের কি না, সে ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন।
তিনি জানান, পরিবারের লোকজন একেক সময় একেক কথা বলছে। এ অবস্থায় মরদেহটি আলিফের কি না, এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছেনা।
তিনি আরও জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:র্যাব হেফাজতে নওগাঁয় ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে নওগাঁয় মানববন্ধন হয়েছে।
নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে শহীদ মিনারের পাশে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) জেলা কমিটির আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন হয়।
মানববন্ধনে সুজন নওগাঁর সহসভাপতি অধ্যক্ষ আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জেলার সাধারণ সম্পাদক একে সাজু, আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিনহাজুল ইসলাম এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি মিজানুর রহমান।
মানববন্ধনে এক বক্তা বলেন, ‘সুলতানা জেসমিন অন্যায় করে থাকলে আইনের ধারা অনুযায়ী তার বিচার করা হবে। শুধু অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছিল, যা মানবাধিকার এবং গণতান্ত্রিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। আইনের শাসনের প্রতি তারা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছেন।
‘রাজশাহী বিভাগের যুগ্ম সচিব এনামুল তার ব্যক্তিগত আক্রোশ মিটাতে আইনকে ব্যবহার করেছেন। তার ন্যায্য বিচার হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। অনতিবিলম্বে এই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানাই।’
সুলতানা জেসমিন নওগাঁ পৌরসভা ও চণ্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত ছিলেন। তিনি শহরের জনকল্যাণ মহল্লার ভাড়া বাসায় থাকতেন। এ বাসা থেকে নিয়মিত অফিস যাতায়াত করতেন।
২২ মার্চ সকালে অফিসে যাওয়ার পথে শহরের মুক্তির মোড় এলাকা থেকে তাকে আটক করে র্যাব। ২২ মার্চ দুপুর ১২টার পর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন সুলতানা নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়।
রামেকে জেসমিন আইসিইউতে ছিলেন। ২৪ মার্চ সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। ২৫ মার্চ রামেকে ময়নাতদন্ত শেষে, বিকেলে নওগাঁ সরকারি কবরস্থানে মরদেহ দাফন সম্পন্ন করা হয়। এরপরই র্যাবের বিরুদ্ধে জেসমিনকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করে মেরে ফেলার অভিযোগ তোলেন তার স্বজনরা।
আরও পড়ুন:বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) ক্যাম্পাসে নতুন শিক্ষার্থীদের নিজ দলে ভেড়ানো নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৮ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
শজিমেক ছাত্রাবাসে বুধবার রাত ১০টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ছাত্রবাসের নিচতলার অন্তত পাঁচটি কক্ষ ভাংচুর করেছে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা।
পুলিশ জানায়, সম্প্রতি মেডিক্যাল কলেজটিতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া নবাগত ছাত্রদের নিজ গ্রুপে ভেড়ানোকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন, শজিমেক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আসিফের অনুসারী দ্রুব, অনিক, শুভ ও হৃদয়। এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন রনির অনুসারী ইমতিয়াজ, রেজা,ফুয়াদ ও অমিও।
বর্তমানে তারা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
শজিমেক ছাত্রবাসে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানান, ২০২৩ সালে মেডিক্যালে সুযোগ পাওয়া (৩২ ব্যাচের) শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ভর্তি হতে এসেছে। তাদের নিজ নিজ গ্রুপে ভেড়ানোকে কেন্দ্র করে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীদের মধ্যে বুধবার সন্ধ্যা থেকে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।
দ্বন্দ্বে জড়ানো সবাই ভর্তি হতে আসা ৩২ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ইমিডিয়েট সিনিয়র ৩১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রাত ১০টার দিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে প্রথমে হাতাহাতি ও পরে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় ছাত্রাবাসের নিচতলার অন্তত পাঁচটি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়৷
বগুড়া শজিমেক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর আসিফ বলেন, ‘জুনিয়ররা ক্যাম্পাসে আসার পর তাদের থাকা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। তবে সাধারণ সম্পাদকের অনুসারীরা আমার কর্মীদের ওপর অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছেন। এতে চারজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এদের মধ্যে তিনজন গুরুতর জখম হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় আমি ক্যাম্পাসে ছিলাম না৷’
বগুড়া শজিমেক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন রনি জানান, সভাপতির গ্রুপের নেতা-কর্মীরা প্রথম আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। পরে শিক্ষকরা এসে আমাদের উভয় পক্ষকে নিয়ে মীমাংসা করে দিয়েছেন। এই নিয়ে দ্বন্দ্বের কিছু নেই। জুনিয়রদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে এর সূত্রপাত হয়েছে। ঘটনার সময় তিনি সেখানে ছিলেন না। তার চার কর্মী আহত অবস্থায় হাসপাতালে আছেন।
বগুড়া ছিলিমপুর মেডিক্যাল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আনিছার রহমান জানান, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বুধবার রাতে সংঘর্ষ হয়েছিল। এখন ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত আছে ৷ এ ঘটনায় আহতরা শজিমেক হাসপাতালেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য