অজানা নয় পরিচয়। বাবা-মা স্বজনরা চাইছেন তাদের মেয়ের সৎকার হোক। কিন্তু তিন সপ্তাহ ধরেও হচ্ছে না তা। হাসপাতালের হিমঘরে শুয়ে আছে মেয়েটি।
১৫ বছর বয়সেই থেমে গেল লাকিং মে চাকমার জীবনের চাকা। এরপর যে কী শুরু হলো, তা তার জানার কথা নয়।
পরিবারটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। বাবা মা চাইছেন লাকিং মের সৎকার করতে। কিন্তু স্বামী দাবি করে বাধ সেধেছেন এক যুবক। তার দাবি, ওই কিশোরী মুসলমান হয়েছেন। তাই মুসলিম ধর্মীয় রীতিতে হবে সৎকার।
এই অবস্থায় প্রশাসন পড়েছে বেকায়দায়। ঘটনাটি এখন গড়িয়েছে আদালতে।
মেয়েটির পরিবার বলছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে তাকে বাসা থেকে তুলে নেয়া হয়েছিল। এ নিয়ে মামলাও হয়। তবে তদন্ত শেষে পিবিআই জানায়, মেয়েটি অপহৃত হয়নি। সে নিজের ইচ্ছায় পালিয়ে বিয়ে করেছে। আর সে মুসলমান হয়েছে।
এখন মেয়েটির কথিত স্বামীর পরিবার তাকে নিয়ে যেতে চাইছে। যদিও স্বামী দাবি করা যুবকের হদিস মিলছে না।
তবে মেয়েটির বাবা এই তদন্তে নারাজি দিয়েছেন। তিনি বলছেন, ১৪ বছরের একটি মেয়ের বিয়ে হতে পারে না আইন অনুযায়ী।
লাকিং মে কক্সবাজার টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শিলখালী চাকমাপাড়ার লালা অং চাকমার মেয়ে। টেকনাফ শাপলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ছিল সে।
অপহরণ মামলা এবং বিয়ের দাবি
১০ ডিসেম্বর তার মৃত্যুর পর থেকে মরদেহ নিয়ে দুই পক্ষের টানাটানি শুরু। তবে ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি।
সেদিন সন্ধ্যার পর লাকিং মেকে বাসা থেকে স্থানীয় কয়েকজন যুবক অপহরণ করে নিয়ে যায় বলে টেকনাফ থানায় মামলা করতে যান বাবা লালা অং চাকমা।
কিন্তু মামলা নেয়নি থানা। পরে ১৭ জানুয়ারি কক্সবাজারের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে কয়েক জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত কয়েক জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
বিচারক তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন, পিবিআইকে।
ছয় মাস পর পিবিআই প্রতিবেদন দেয়। এতে বলা হয়, লাকিং মে অপহৃত হয়নি। নিজের ইচ্ছায় ঘর ছেড়েছে।
মেয়েকে না পেয়ে শোকাতুর পরিবারটি ১০ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানার এসআই আব্দুল হালিমের কাছ থেকে ফোন পায়। তবে পুলিশের তথ্যে শুরু হয় কান্না। তারা জানতে পারে, আদরের মেয়েটি আর নেই।
পুলিশ জানায়, লাকিং মে বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে আছে।
খবর পেয়ে বাবা মা ছুটে আসেন। বুকে জড়িয়ে ধরেন নিথর মেয়েকে। নিয়ে যেতে চান বাড়িতে।
তখনও বাধা। প্রশাসন জানায়, মেয়েকে নেয়া যাবে না।
কারণ হিসেবে বলা হয়, মেয়ে ধর্ম পাল্টে মুসলমান হয়েছেন। মেয়ের স্বামী আতাউল্যাহও তাকে নিয়ে যেতে আদালতে আবেদন করেছেন।
১৫ ডিসেম্বর বাবা পিবিআই এর তদন্ত প্রতিবেদনের নারাজি দেন আদালতে। তখন র্যাবকে ১৫ দিনের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন জমা দিতে বলে আদালত। তবে বুধবার যোগাযোগ করা হলে তদন্ত প্রতিবেদনের ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেননি র্যাবের কক্সবাজারের মুখপত্র।
লাকিং মের বাবা মা যা বলছেন
মেয়েটির বাবা লালা অং চাকমা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি অসহায়, আমার মেয়েকে বাঁচাতে পারিনি। আমার ছোট্ট মেয়েটিকে অপহরণ করেছে, এরপর হত্যা করেছে। মৃতদেহটা পর্যন্ত নিয়ে যেতে দিচ্ছে না। আমি আমার মেয়ের খুনি আতাউল্যার বিচার চাই।’
তিনি বলেন, ‘তাকে যখন অপহরণ করা হয়, তখন তার বয়স ছিল মাত্র সাড়ে ১৪ বছর। আমার শিশু মেয়ের কীভাবে বিয়ে হলো? তাকে জোর করে বাল্য বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছে।’
লাকিং মের মা কেছিং চাকমা বলেন, ‘সে চাকমা, মুসলমান নয়। অন্তত মেয়ের লাশটা ফিরে পেতে চাই।’
মর্গে লাকিং মে আছন কক্সবাজার সদর মডেল থানার এস আই আবদুল হালিমের তত্ত্বাবধানে।
আবদুল হালিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মেয়েটির বাবা-মা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী হলেও মেয়েটির স্বামীর পরিবার বলছে, বিয়ের সময় মেয়েটি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল।’
তিনি জানান, মেয়েটির বাবা লালা তার জন্ম নিবন্ধন সনদ জমা দিয়েছেন, যা অনুযায়ী মেয়েটির বয়স ১৪ বছর।
অন্যদিকে তার স্বামী আতাউল্যাহর পরিবারের পক্ষ থেকেও একটি এফিডেভিট করে বিয়ের সনদ দেয়া হয়েছে। যাতে উল্লেখ আছে যে মেয়েটি ধর্ম পাল্টেছিল।
তিনি বলেন, ‘লাশ কে পাবে, তা আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।’
কক্সবাজারের মানবাধিকার কর্মী ও আইনজীবী রফিক উদ্দিন সিরাজির ধারণা, পুলিশ এই মামলার তদন্তে অবহেলা করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমি অভিযুক্ত আতাউল্যার মা এবং ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে জানিয়েছে, অপহরণের মামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশ তাদের বাসায় যায়নি। আমার যেটা মনে হচ্ছে কিছু লোক আছে যারা এ পুরো বিষয়টাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে।’
খোঁজ নেই স্বামী দাবি করা যুবকের, কথা বলছেন তার ভাই
বেশ কয়েক দফা মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও আতাউল্যার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তার বড় ভাই মনির উদ্দিন বলেন, তার ভাইয়ের সাথে লাকিং মের বিয়ে হয়েছে, এই খবর তিনি বিয়ের পরে জানতে পারেন।
বলেন, ‘এ বছরের জানুয়ারিতে তাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর কর্মস্থল কুমিল্লায় তাকে নিয়ে আসে আতাউল্যা। সে সময় মেয়েটি ধর্মান্তরিত হয়েছে বলেও আমরা জানতে পারি।’
মেয়েটি কীভাবে মারা গেল- এমন প্রশ্নে মনির উদ্দিন দাবি করেন, গত ১০ ডিসেম্বর কথা কাটাকাটি জেরে লাকিং মে বিষ পান করে। পরে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে তিনি মেয়েটিকে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, ‘তার সুরতহাল করার পর আমরা জানতে পারি লাশ আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে না। কারণ তার বাবাও লাশের জন্য আবেদন করেছেন।’
বিয়ের পর লাকিং মের একটি সন্তান হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার হাকরইল গ্রামে ক্ষেতের পাশ খেকে কামরুল ইসলাম (৫০) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
কামরুল নাচোল উপজেলার সূর্যপুর গ্রামের প্রয়াত হোসেন আলীর ছেলে।
তিনি নাচোল ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
পুুলিশ শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, স্থানীয়দের দেয়া সংবাদের ভিত্তিতে কামরুল ইসলামের ধানক্ষেতের পাশে একটি নালা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে এটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই মনে হয়েছে।
ওসি আরও জানান, তিনি উচ্চ রক্তচাপের রোগী ছিলেন বলেও স্বজনরা জানিয়েছে। তার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার মেঘনা নদীতে মাছ ধরতে যাওয়ার পথে একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় দুই জেলের মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা।
২০ জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও এখনও নিখোঁজ দুই জেলে।
উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বুড়ির দোনা ঘাটের দক্ষিণে মেঘনা নদীতে শুক্রবার ভোররাতের দিকে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন বুড়িরচর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালির চলের প্রয়াত আবদুল আলীর ছেলে আবুল হাসেম (৫০) এবং একই এলাকার মো. মোস্তফার ছেলে মো. জুয়েল (২৭)। সম্পর্কে তারা মামা ও ভাগ্নে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, বুধবার রাতে ২৪ জন জেলে নিয়ে স্থানীয় রবিউল মাঝির একটি নৌকা হাতিয়ার বুড়ির দোনা ঘাটের দক্ষিণে মেঘনা নদীতে বেহুন্দী জাল বসাতে যায়। শুক্রবার ভোরে ডুবোচরের সঙ্গে ধাক্কা লেগে নৌকাটি উল্টে যায়। ওই সময় ২০ জন জেলে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও চারজন তা পারেননি।
পরে স্থানীয় জেলেরা নৌকার ভেতর থেকে আবুল হাসেম ও মো. জুয়েলের মরদেহ উদ্ধার করেন। দেলোয়ার ও ইরান নামে দুই জেলে এখনও নিখোঁজ।
এ ঘটনায় প্রাণ হারানো জেলেদের গ্রামের বাড়িতে মাতম চলছে।
নলচিরা নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ টিটু কুমার নাথ জানান, খবর পেয়ে নৌ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে যায়। প্রাণ হারানো জেলেদের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন:দিনাজপুরে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে দুই চালকসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আরও ২০ জন আহত হয়েছেন।
দিনাজপুর-পঞ্চগড় মহাসড়কের চকৈ মোড়ে শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান বীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল গফুর।
ওসি জানান, নিহত চারজনের মধ্যে বাস ও ট্রাকের চালক এবং দুই বাসযাত্রী রয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
তিনি জানান, আহত যাত্রীদের প্রথমে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পরে তাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি গফুর আরও বলেন, ‘ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পঞ্চগড়গামী একটি বাসের সঙ্গে ধানবোঝাই ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।’
বাংলাদেশ নিয়ে ভারত কোনো ষড়যন্ত্র করলে বিষদাঁত ভেঙে দিতে প্রস্তুত আছেন বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মাদারীপুর জেলা শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের লেকপাড়ের স্বাধীনতা অঙ্গনে আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
রেজাউল করিম বলেন, ‘বাংলাদেশকে নিয়ে যদি কোনো ষড়যন্ত্র করে থাকেন, তাহলে এ দেশের মানুষ সেই বিষদাঁত ভেঙে দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে অপেক্ষা করছে। শত শত মায়ের বুক খালি করা খুনি হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে।
‘ভারত বন্ধু রাষ্ট্র বললেও এখনও তারা বন্ধুর কোনো পরিচয়ই দিতে পারে নাই।’
দেশবাসীর উদ্দেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রধান বলেন, ‘সবাইকে সর্তক থাকতে হবে। আমাদের দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র চলছে। আওয়ামী লীগ যারা করেছে তাদের দলের বড় নেতারা কর্মীদের ফেলে টুন টুনা টুন টুন হয়ে গেছে।
‘এমন নেতাদের পেছনে নেমে বারবার জীবনকে ধ্বংস করবেন না। এদের মাধ্যমে আমাদের দেশে বারবার অশান্তি তৈরি করবে আর আমরা একটা গোলাম রাষ্ট্র হিসেবে বসবাস করব, এটা হতে পারে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন করার জন্য এ দেশের লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছেন। গত ৫ আগস্টও আপনারা দেখেছেন। এ দেশ আমার ও আমাদের।
‘এ দেশ রক্ষার জন্য যদি প্রয়োজন হয়, রক্ত দেব, জান দেব। দেশ রক্ষার জন্য রাজপথে নামব, এতে কোনো সন্দেহ নাই।’
আরও পড়ুন:পঞ্চগড় সদর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আনোয়ার হোসেন (৩৬) নামের এক বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন।
উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া ও ভারতের শিংপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১ এর ৮/৯ নম্বর সাব পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় শুক্রবার ভোরে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
প্রাণ হারানো আনোয়ারের বাড়ি তেতুঁলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের দেবনগর এলাকায়। তিনি ওই এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে।
নীলফামারী ৫৬ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ব্যাটালিয়ন সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারসহ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক বৃহস্পতিবার রাতে ভারতে যান। ভোরের দিকে ফেরার পথে ভারতীয় সীমান্তের ভেতরে বিএসএফের ৯৩ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে। পরে গুলি চালায় বিএসএফ। ওই সময় ঘটনাস্থলে নিহত হন আনোয়ার। তার মরদেহও নিয়ে যায় বিএসএফ সদস্যরা।
বিজিবি আরও জানায়, সীমান্তে গুলির শব্দ পেয়ে চোরাকারবারিদের প্রতিহত করার জন্য আটটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন ঘাগড়া বিজিবি ক্যাম্প সদস্যরা।
নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ বদরুদ্দোজা বলেন, ‘পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে নিহতের মরদেহ ফেরত আনা হবে। এ ছাড়া এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হবে।
‘ঘটনার পর বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকা থেকে চোরাচালানের একটি গরু জব্দ করে বিজিবি।’
আরও পড়ুন:বরিশালে কীর্তনখোলা নদীতে নোঙর করে রাখা বালুবাহী বলগেট ও যাত্রীবাহী স্পিডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন স্পিডবোটের তিন যাত্রী।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার বিশ্বাসের হাট সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর মোহনায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
বরিশাল নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘ভোলা থেকে যাত্রী নিয়ে স্পিডবোটটি বরিশাল নৌ-বন্দরের দিকে আসছিল। স্পিডবোটটি দুর্ঘটনাকবলিত এলাকায় পৌঁছলে নদীতে নোঙর করে থাকা বালুবাহী বলগেটের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে স্পিডবোটে থাকা চার যাত্রী নিখোঁজ হন। বাকি চারজন সাঁতরে তীরে উঠে আসেন।
‘এলাকাবাসী নিখোঁজদের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করে বরিশাল সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক ওই যাত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন।’
ওসি জানান, নিখোঁজ যাত্রীদের উদ্ধারে কাজ করছে পুলিশ। বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানালেও রাত ৮টা পর্যন্ত ঘটনাস্থলে কোনো উদ্ধারকারী দল পৌঁছায়নি।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়ককে দুই লেন থেকে ছয় লেনে উন্নীতকরণের কাজ চলছে। উন্নয়ন কাজের জন্য সড়ক জুড়েই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যানবাহনের চালক ও যাত্রীদের। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ সিলেট নগরের প্রবেশমুখে।
সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের চণ্ডিপুল থেকে হুমায়ুন রশীদ চত্বর পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার পাড়ি দিতে যানবাহনগুলোর চালকদের রীতিমতো যুদ্ধ করতে হয়। চরম ভোগান্তির শিকার হন যাত্রীরা।
চণ্ডিপুল থেকেই সিলেট নগরের শুরু। আর হুমায়ুন রশীদ চত্বরে এসে বাস থেকে নেমে যাত্রীরা নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যান। এই তিন কিলোমিটার সড়ক পুরোটাই খানা-খন্দে ভরা।
যানজট নিরসনে পুরনো সড়কের বদলে সিলেট নগরে প্রবেশের জন্য এই বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা হয়। তবে ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ভরা সড়কের এই অংশে প্রায় সময়ই লেগে থাকছে যানজট। ঘটছে দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা যায়, চণ্ডিপুল থেকে হুমায়ুন রশীদ চত্বর পর্যন্ত সড়ক জুড়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আগের রাতে বৃষ্টি হওয়ায় এসব গর্তে জমে আছে পানি। ফলে গাড়ি চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছেন চালকরা।
জানা যায়, গত বর্ষায় অতিবৃষ্টিতে সড়কের এমন দুরবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও এখনও সংস্কার হয়নি সড়ক। ফলে দুর্ভোগের শেষ হচ্ছে না।
এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সিলেট-হবিগঞ্জ বাস সার্ভিসের চালক লিটন আহমদ বলেন, ‘পুরো সড়কের মধ্যে এখানে এলেই ভয় পেয়ে যাই। এই তিন কিলোমিটার এলাকা পার হতে প্রাণ বেরিয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। যাত্রীরাও আল্লাহর নাম জপতে থাকেন। দুর্ঘটনাও ঘটে নিয়মিত।’
মোটরসাইকেল চালক কায়সার আহমদ বলেন, ‘ভাঙাচোরা সড়কের কারণে প্রায়ই বাইকের যন্ত্রপাতি ভেঙে যায়। আর সবসময়ই যানজট লেগে থেকে। বৃষ্টি হলে তো অবস্থা আরও খারাপ হয়। সড়কের সব গর্তে ময়লা পানি জমে থাকে। ভিজে একাকার হতে হয়।’
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াতকারী ব্যাংকার হোসেন আহমদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির এমন দুরবস্থা। সামান্য জায়গা, অথচ তা সংস্কার করা হচ্ছে না। ফলে আমাদের প্রতিনিয়ত দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, ‘এই সড়কের দুরবস্থা নিয়ে অনেক যাত্রীই অভিযোগ করেন। সড়কটির অবস্থান নগরের ভেতরে হলেও এটি সড়ক ও জনপথের আওতাধীন। তাই তাদেরই সংস্কার করতে হবে।’
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আমির হোসেন বলেন, ‘সড়কটি সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ হলেই সংস্কার কাজ শুরু হবে।’
মন্তব্য