গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকার দলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলার রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি জানিয়েছে তার পরিবার। লিটনের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীর আগের দিন এ দাবি জানায় তার পরিবার।
২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর নিজ বাড়িতে ঘাতকের গুলিতে নিহত হন লিটন। সেই হত্যাকাণ্ডের চার বছর পূর্তি আজ।
এ উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাসুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গা সাহাবাজ মাস্টারপাড়ায় লিটনের কবরে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান । এ ছাড়া কোরআন তেলাওয়াত, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ হত্যাকাণ্ডের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ও অর্থের যোগানদাতা জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) ডা. কাদের খাঁন। ইতিমধ্যে এ মামলায় কাদের খাঁনসহ সাত আসামির ফাঁসির রায় দিয়েছে বিচারিক আদালত। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী রায়ের বিপক্ষে আপিল করেন হাইকোর্টে।
বিচারিক আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে হাইকোর্টেও তা বহালের দাবি করেন এমপি লিটনের স্ত্রী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি।
তিনি বুধবার স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ‘অধিকতর তদন্ত, সাক্ষ্য প্রমাণ ও আসামিদের দেয়া জবানবন্দির পর আদালত ফাঁসির রায় দেয়। এরপর এ রায় হাইকোর্টে পাল্টানোর কোনো সুযোগ নেই বলে আমি মনে করি।’
‘বিচারিক আদালতের রায়ে আমরা খুশি। আশা করছি, এ রায় হাইকোর্টও বহাল থাকবে। আমরা রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিও জানাচ্ছি।’
হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১ জানুয়ারি অজ্ঞাত ৫-৬ জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন লিটনের ছোট বোন ফাহমিদা বুলবুল।
তাহমিদা বুলবুল বলেন, ‘আসামিদের বিরুদ্ধে সঠিক রায় হয়েছে। হাইকোর্ট দ্রুত আপিলের রায় ঘোষণা করবেন এমনটাই দাবি আমার।’
দণ্ডিত কাদের খান ২০০৮ সালে মহাজোটের সমর্থনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করে এমপি হন। তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপরহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপরহাটি (খানপাড়া) গ্রামের বাসিন্দা।
প্রথমদিকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ভেবে সন্দেহ করা হয় লিটনের স্ত্রীকে। কিন্তু পরবর্তীতে হত্যার মোড় ঘুরে যায় অন্যদিকে। একই উপজেলার ধোপাডাঙ্গায় একটি ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লিটন হত্যার রহস্য উন্মোচন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ছিনতাইয়ের ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিদের স্বীকারোক্তিতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কাদের খানের সম্পৃক্ততা পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে কয়েক দিন তাকে নজরদারিতে রাখা হয়। এরপর ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া শহরের কাদের খানের স্ত্রীর মালিকানাধীন গরীব শাহ ক্লিনিক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
একই বছরের ৩০ এপ্রিল মামলার অধিকতর তদন্ত শেষে কাদের খানসহ আট জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল থেকে আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। যা চলে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এ মামলার বাদিসহ ৫৯ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন।
২০১৯ সালের ২৮ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন গাইবান্ধা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক। রায় ঘোষণার সময় অভিযুক্ত আট আসামির মধ্যে ছয় জন উপস্থিত ছিলেন। এক জন কারাগারে অসুস্থ হয়ে মারা যান ও অপর আসামি পলাতক রয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, সাবেক এমপি আব্দুল কাদের খাঁন, তার পিএস শামছুজ্জোহা, গাড়িচালক হান্নান, ভাতিজা মেহেদি, গৃহকর্মী শাহীন, রানা ও চন্দন কুমার। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আট আসামির মধ্যে কসাই সুবল কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় মারা যান। আর চন্দন কুমার ভারতে পলাতক রয়েছেন।
এ ছাড়া লিটন হত্যার ঘটনায় অস্ত্র আইনের আরেক মামলায় ২০১৯ সালের ১১ এপ্রিল কাদের খানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।
এ বিষয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল হামিদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে তার মক্কেল কাদের খানকে ফাঁসানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করা হয়েছে। পর্যবেক্ষণে হাইকোর্টের রায়ে কাদের খানসহ বাকি আসামিরা খালাস পাবেন।’
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারিক আদালতের দেয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, আধিপত্য বিস্তার, রাজনৈতিক কোন্দল ও এমপি হওয়ার লোভ থেকেই পরিকল্পিতভাবে লিটনকে হত্যার ছক আঁটেন কাদের।
‘হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া কিলারদের এক বছর অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণসহ অর্থ ও নানা প্রলোভন দেন তিনি (কাদের)। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই এমপি লিটনকে খুনের পরিকল্পনাসহ নানা প্রেক্ষাপট তৈরি করেন কাদের। যা ৫৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে।’
কেন টার্গেটে পরিণত হলেন লিটন:
২০১২ সালে তৎকালীন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন বিভিন্ন অনিয়ম-দুনীতির কারণে কাদের খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ করেন। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের পর কাদেরের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এসব অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে কাদের রাজনীতিতে যেমন কোনঠাসা হয়ে পড়েন। ঠিক তেমনি জনসম্পৃক্ততা কমে যাওয়ায় তিনি এলাকায় হয়ে পড়েন জনবিচ্ছিন্ন।
এদিকে, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের কাছে পরাজিত হন কাদের।
ওই সময় তরুণ-উদীয়মান ব্যারিষ্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। এরপর নিজ এলাকা সুন্দরগঞ্জে চালাতে থাকেন ব্যাপক রাজনৈতিক তৎপরতা। এর ফলে কাদের খান আরও কোনঠাসা হয়ে দিক হারিয়ে ফেলেন।
আর এসব কারণেই এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম কাদের খাঁনের প্রথম টার্গেটে পরিণত হয়েছেন। শুধু তাই নয়, লিটনের পর দ্বিতীয় টার্গেটে শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে হত্যার পরিকল্পনাও আঁটেন কাদের খান। যা মামলার রায়ের বিবরণে বলেছে আদালত।
সেখানে আরও বলা হয়, মূলত লিটনকে সরিয়ে উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে এমপি হওয়ার স্বপ্নে হত্যার পরিকল্পানা করেন কাদের খান। সে অনুযায়ী বাকি সাত আসামিকে অর্থ-বিত্তসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে এক বছর অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণও দেন তিনি।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীতে ফিশিং বোটের ইঞ্জিন বিস্ফোরণে চারজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পতেঙ্গা থানাধীন ১৫ নম্বর ঘাটে নোঙর করা একটি ফিশিং বোটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
দগ্ধরা হলেন- ৫৫ বছর বয়সী জামাল উদ্দিন, ৪৫ বছর বয়সী মাহমুদুল করিম ও মফিজুর রহমান এবং ২৮ বছর বয়সী এমরান। এদের মধ্যে প্রথম তিনজনের শরীরের ৮০-৮৫ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গিয়েছে। অন্যজনের শরীর পুড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ।
চমেক হাসপাতালে বার্ন ও ক্যাজুয়ালটি ইউনিটের প্রধান ডা. রফিক উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আহত চারজনের মধ্যে তিনজনের বড় ধরনের বার্ন হয়েছে। এই ধরনের রোগীদের অবস্থা ভালো থাকে না।’
চট্টগ্রাম সদরঘাট নৌ-থানার ওসি একরাম উল্লাহ বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারে ইঞ্জিন থেকে সৃষ্ট আগুনে ৪ জন দগ্ধ হয়েছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ প্রকাশ্যে দুর্নীতি করার ঘোষণা দিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে লালপুর উপজেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যের এক পর্যায়ে দুর্নীতি করার ঘোষণা দেন এ সংসদ সদস্য।
তার বক্তব্যের অংশবিশেষের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।
প্রকাশিত ওই ভিডিওতে আবুল কালাম আজাদকে বলতে শোনা যায়, ‘পাঁচটা বছর (২০১৪-২০১৮) বেতন ভাতার টাকা ছাড়া আমার কোনো সম্পদ ছিল না; আগামীতেও থাকবে না। এবার (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ) নির্বাচনে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সেই টাকা আমি তুলব। যেভাবেই হোক তুলবই। এতটুক অনিয়ম আমি করবই। এটুকু অন্যায় করব, আর করব না।’
প্রকাশ্যে সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলাজুড়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আখতার। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। উনার বক্তব্য উনি বলেছেন, এখানে আমার কোনো কথা নেই।’
বক্তব্যর বিষয়ে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমার বক্তব্যে এটা বোঝাতে চেয়েছি যে, অনেকেই এরকম করে। আমার বক্তব্য বিকৃত করে প্রচার করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সরকারি অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে একজন সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্য খুব দুর্ভাগ্যজনক। সংসদ সদস্যের এমন বক্তব্যে তার সহকারী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। এটা একদিকে যেমন পরিষ্কারভাবে শপথের লংঘন, অন্যদিকে নির্বাচনি বিধিরও লংঘন।
‘নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারকাজে একজন সংসদ সদস্য ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারেন না।’
সংসদ সদস্যের কাছে গঠনমূলক বক্তব্যেরও প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পূর্ব পূয়ালী গ্রামের আব্দুর রহিম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে রাব্বি হাওলাদার।
২৫ বছর বয়সী রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট। ডাক্তারের পরামর্শ তার কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে। বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
রাব্বির কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য এতো টাকা লাগবে শোনার পর থেকেই তার কৃষক বাবা সাহায্যের জন্য ছুটছেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ স্থানীয় বিত্তবানদের কাছে। কেন না তার সবকিছুই বিক্রি করে দিলেও এক থেকে দেড় লাখ টাকার বেশি জোগাড় করার সামর্থ্য হচ্ছে না।
রাব্বি বর্তমানে ঢাকার মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন অবস্থায় কৃষক বাবা তার সন্তানকে বাঁচাতে দেশবাসীর কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। দেশের বিত্তবানরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেই হয়ত বেঁচে যাবে তার সন্তান।
রাব্বির পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাব্বি হাওলাদার কয়েক মাস আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (সেবাচিম) হাসপাতালে নিয়ে যান তার পরিবার। সেখানে চিকিৎসক তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন রাব্বির দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত চিকিৎসা চলছিল রাব্বির, কিন্তু কিছুদিন আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে মিরপুর কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরই মধ্যে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ওপরে শুধু হাসপাতাল ও ওষুধের বিল দিতে হয়েছে। দরিদ্র এই পরিবারটি আত্মীয়স্বজনসহ সবার সহায়তায় ওই বিল দেয়া সম্ভব হয়।
রাব্বির মা রেভা বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘এভাবে আর কয়দিন চিকিৎসা করাতে পারব জানি না। কারণ আমাদের সামর্থ্য শেষ হয়ে এসেছে। শুধু টাকার অভাবে তাকে ভালো কোনো হাসপাতালেও নিতে পারছি না, কিন্তু কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য অপারেশনের ধকল সহ্য করার মতো সুস্থ অবস্থায় আনা খুব জরুরি।’
রাব্বির বাবা আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে অনুরোধ করা হচ্ছে আপনাদের ভালোবাসা ও সাহায্য আমাদের খুব প্রয়োজন। কারণ শুধু টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় আমার একমাত্র ছেলে অকালে ঝরে যাবে তা আমার জীবন থাকতে মানতে পারছি না।’
তাকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে ০১৯৯৭-২২৮৯৭৫ ও ০১৯৮৭-৩৬৬৫৬৮ (বিকাশ-পার্সোনাল) নাম্বারে পাঠাতে পারেন ও যোগাযোগ করতে পারেন।
আরও পড়ুন:ফরিদপুর সদরে যৌনপল্লি থেকে দুই তরুণীকে উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই পল্লির এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বুধবার রাতে এসব তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত পারুল বেগম ওরফে পারু (৪৮) জেলার রথখোলা যৌনপল্লির বাসিন্দা।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন আপন (৩০), জহির (৩০) ও ববি (৩৮)।
গ্রেপ্তার না হওয়া এ তিনজনের মধ্যে ববি যৌনপল্লির সর্দারনি হিসেবে পরিচিত। আপন ও জহিরের পূর্ণাঙ্গ পরিচয় পাওয়া যায়নি।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পার্লারে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকা থেকে এক তরুণীকে গত ১০ মার্চ ঢাকায় নিয়ে আসেন আপন। দুই দিন সেখানে রেখে তাকে (তরুণী) তিন ব্যক্তির হাতে তুলে দেন তিনি। ওই তিন ব্যক্তি ১৩ মার্চ সন্ধ্যায় তরুণীকে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। পরের দিন একটি সাদা কাগজে তরুণীর স্বাক্ষর নিয়ে জানানো হয়, এখন থেকে তিনি যৌনপল্লির লাইসেন্সধারী সদস্য।
এতে আরও বলা হয়, মেয়েটিকে পারুর বাসায় রেখে ববি ও অন্যদের মাধ্যমে জোর করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করা হয়। এর মাঝে মেয়েটি বাড়িতে যোগাযোগের জন্য একজন খদ্দেরকে তার ছোট বোনের মোবাইল নম্বর দেন। পরে ওই খদ্দেরের মোবাইল কলের মাধ্যমে মেয়েটির সন্ধান পায় তার পরিবার। এরপর তার মা ও ফুফা রথখোলায় এসে তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশকে জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পুলিশ যৌনপল্লিতে অভিযান চালানোর পর ফেনীর পূর্ব ছাগলনাইয়ার আরেক তরুণীও তাকে উদ্ধারে পুলিশের সাহায্য চান। ওই তরুণী জানান, তাকেও চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রথমে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এক রাত রেখে রথখোলা যৌনপল্লিতে এনে পারুর কাছে বিক্রি করা হয়।
কোতোয়ালি থানার ওসি হাসানুজ্জামান জানান, যৌনপল্লিতে তরুণীকে নেয়ার ঘটনায় তার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফাহিম ফয়সাল মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে অভিযান চালিয়ে পারুল বেগম ওরফে পারুকে গ্রেপ্তার করে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
নোয়াখালীর কবিরহাটে পুকুরের পানিতে ডুবে সহোদর দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
উপজেলার চাপরাশিরহাট ইউনিয়নের রামেশ্বপুর গ্রামের ছর আলী মাঝি বাড়ির পুকুরে বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো দুই শিশু হলো সাত বছর বয়সী বিবি ফাতেমা বেগম ও তার চার বছরের ভাই আবিদ হোসেন। শিশুদ্বয় ছর আলী মাঝি বাড়ির আবদুল হাইয়ের সন্তান।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি হুমায়ন কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘দুই ভাই-বোন সকালে ঘরের পাশে পুকুরে দাঁত ব্রাশ করতে যায়। এ সময় হাত-মুখ ধোয়ার সময় একজন পুকুরে পড়ে গেলে আরেকজন উদ্ধার করতে পানিতে নামে।
‘পরে দুজনই পানিতে ডুবে যায়। একপর্যায়ে পরিবারের সদস্যরা দুজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানান।’
তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য