রংপুর বদরগঞ্জ পৌরসভায় ভোটের আগের রাতেও তুমুল আলোচনা আওয়ামী লীগ তার ঘর ঠিক রাখতে পারবে কি না। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে চ্যালেঞ্জ করা আওয়ামী লীগ নেতা কত ভোট পান, তার ওপর নির্ভর করতে পারে জয় পরাজয়।
এই পৌরসভায় মেয়র পদে প্রার্থী চার জন। নৌকা নিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল, ধানের শীষ নিয়ে বিএনপির ফিরোজ আহমেদ, হাতপাখা নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের মাসুদ রানা (হাতপাখা) এবং দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে লড়াই করা আওয়ামী লীগেরই নেতা আজিজুল ইসলাম।
এই এলাকায় বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি ও জনসমর্থন বেশি ছিল না কখনও। তবে এবার তারা এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে। জাতীয় পার্টির শক্তিশালী অবস্থান থাকলেও এবার দলটির প্রার্থী না থাকার সুফল ঘরে তুলতে চায় দলটি। বিএনপি মনে মনে জাতীয় পার্টির তৃণমূলের সমর্থকরা সরকারবিরোধী। আর তারা ভোট দেবেন তাদেরকেই।
যদিও বিএনপি প্রার্থী অনেকটা নিষ্ক্রিয়। তার দাবি, সরকারি দলের বাধাই এর কারণ।
এই পৌরসভায় সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৬ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ জন প্রার্থী হয়েছেন।
পৌরসভায় মোট ভোটার ১৯ হাজার ৭৮২ জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ৭২২ জন আর নারী ১০ হাজার ৬০ জন।
নৌকা মার্কার প্রার্থী রংপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের ছোট ভাই। তাকে দলের ভেতর থেকে চ্যালেঞ্জ করা আজিজুল ইসলাম ১৯৮৫ থেকে ৮৭ সাল পর্যন্ত ছিলেন বদরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত রংপুর কারমাইকেল কলেজের নির্বাচিত জিএস, ১৯৮৮ সাল থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত রংপুর জেলা ছাত্রলীগের সহসাধারণ সম্পাদক, ৯২ সাল থেকে ৯৫ সাল পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক। ২০০৮ সাল পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
কিন্তু পদ পদবি নিয়ে অভিমান করে জাতীয় পার্টিও সাবেক সংসদ সদস্য আনিসুর রহমান মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ হয়ে তিনি সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দলে যোগ দেন। পরে ফিরে আসেন।
আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘জনগণের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সে কারণেই তারা আমার লোকজনকে হুমকি দিচ্ছে। শুধু সুষ্ঠু ভোট হওয়ার অপেক্ষায়। সুষ্ঠু ভোট হলে আমি শতভাগ নিশ্চিত। এর আগের নির্বাচনেও আমাকে কৌশলে মাত্র ১ হাজার ভোটের ব্যবধান দেখিয়ে পরাজিত করেছে।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী আহসানুল হক চৌধুরী টিটুল বলেন, ‘সরকার আমাদের। এমপি আমাদের। আমাদের সরকার ব্যাপক উন্নয়ন করছে। আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হলে আরও উন্নয়ন করব। আমি মনে করি, লোকজন আমাকে ভোট দেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।’
বিএনপি প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে তার আশঙ্কা আছে।
এই পৌরসভা গত ২০ বছর ধরেই আওয়ামী লীগের দখলে। তবে এলাকায় যেসব সমস্যা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আলোচনা, তার অনেক কিছুরই সমাধান হয়নি। সড়ক ভাঙা, ড্রেন নির্মাণ হয়নি, পানি নিষ্কাশন আলোর পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। প্রতিবারই নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়, কিন্তু ভোটের পরে খবর নেই।
পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কুতুবপুর গ্রামের ভ্যানচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হামরা ভোট দিয়ে কী করি। হামার বাড়ির আস্তার (রাস্তার) উপর নদী। সেডি একনা পুল আছে, সেটাও ঠিক করে না। এ্যাকনা ভ্যান নিয়ে যামো তাও যায় না। ভাঙা সড়ক দিয়ে কষ্ট করি ভ্যান নিয়ে যাই। কাইও আস্তা (রাস্তা) ঠিক করে না। হামরাই ঠিক করি যাওয়া আইসে করি। যাই হামাক আস্তা (রাস্তা) ঠিক করি দিবে, তাকে ভোট দেমো। হামরা আস্তা ভালো হলেই হয়।’
সাত নং ওয়ার্ডের স্কুল শিক্ষক জুহুরুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার তো অনেক উন্নয়ন করছে। আমরা সরকারের লোককে ভোট দিব। ...বৃষ্টি হলেই রাস্তায় এখনো পানি জমে, ড্রেন ঠিক নাই। পানি যায় না ঠিক মতো। এগুলো দ্রুত সমাধান করা দরকার।’
বয়োবৃদ্ধ ব্রজেন চন্দ্র রায় বলেন, ‘ভালো কাম করবে সেমন লোক চাই, কাইও তো ভালো কাম করে না বাহে। ভোট আইসলে ভোট চায়, এটা দেমো সেটা দেমো কিছু তো দেয় না বাহে। বিপদে কাকো পাওয়া যায় না। হামারগুলের পাশোত যাই দাঁড়াইবে তাকেই ভোট দেমু। দেকি কাই কি কয়, কী দিবের চায়, তারপর ভাবিচিন্তি ভোট দেমো।’
পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হারুন অর রশিদ বলেন, ‘আসলে স্থানীয় নির্বাচনে মানুষ দল দেখে না, দেখে বিপদে, উপকারে কাকে পাশে পায় তাকেই খোঁজে মানুষ। আমরাও তাই করছি’।
নারী ভোটার শেফালী বেগম বলেন, ‘বাহে ভোট গেইলে তো কাইও আর খোঁজ নেয় না। ডাকেও পাওয়া যায় না। এলা ভোট আইচচে সবাই আসোছে। হামার দাদির জন্যে একনা বিধবা কার্ড করি চাচি, কাইও দেয় না। যাই গরিবের জন্যে কাজ করবে তাহে ভোট দিমো। মার্কা টার্কা বুজি না।’
জেলা নির্বাচন অফিসার দেলোয়ার হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী আজিজুল ইসলাম আমাদেরকে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। নির্বাচন নিয়ে কোন চাপ নেই। সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি’।
আরও পড়ুন:বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য নতুন করে রাজনীতিতে প্রশ্নবোধক চিহ্ন তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয় আইন-আদালত বা সরকারি সিদ্ধান্ত নয়, এই সিদ্ধান্ত নেবে দেশের জনগণ। গণহত্যাকারী, গুম-খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আজহার-শফিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের বিচারের জন্য বিএনপি সোচ্চার। গণহত্যাকারী যারা আদেশ দিয়েছে, তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী হোক আর অতি উৎসাহী যেই হোক– বিএনপি বারবার বলেছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ। আইন-আদালত করবে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত, বিএনপির বক্তব্য পরিষ্কার। সব সময়ই তা বলে এসেছি।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এত কথা বলে, কিন্তু তাদের ২৪-এর গণহত্যা নিয়ে কোনও অনুশোচনা নেই। আয়নাঘর, লুটপাট যারা করেছে, প্রতিহিংসা যারা করেছে, দিনের ভোট রাতে যারা করেছে, তাদের কোনো অনুশোচনা আছে? তাদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগকে নিঃশর্তভাবে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে, তাদের ক্ষমা করবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত জনগণ নেবে।
ডা. জাহিদ বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের একটি সম্ভাবনা রয়েছে, আমরা চাই সেটা হোক। জনগণ দীর্ঘদিন ধরে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারেনি। নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচনের সেই সুযোগটা আসুক।
তিনি আরও বলেন, আমাদের ভাবতে হবে এই সমাজটা আমাদের সবার। এই ভাবনাটা যদি না আসে তাহলে কিন্তু ইনক্লুসিভনেস তৈরি হবে না। আর তা তৈরি না হলে সমাজে সাস্টেনেবিলিটি আসবে না। সমাজের প্রবীণ মানুষদের জন্য আলাদা উইন্ডো তৈরি করার জন্য একটা চিন্তা দরকার। তাদের জন্য সামান্য বাজেট রাখা দরকার।
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ ৫ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দফায় ১২ দিনের যুগপৎ আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নতুন কর্মসূচি হিসেবে ৫ দফা গণদাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে গণসংযোগ পালন করা হবে। এ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা, গোলটেবিল বৈঠক, সেমিনার ইত্যাদি আয়োজন করা হবে। ১০ অক্টোবর রাজধানীসহ সকল বিভাগীয় শহরে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে এবং ১২ অক্টোবর সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ করা হবে।
জামায়াতের ৫ দফা দাবি হলো:
১. জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে।
২. নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে।
৩. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।
৪. গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হতে হবে।
৫. বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের বিচার করতে হবে এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোমাইন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগর উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মূসা প্রমুখ।
হেফাজতে ইসলামের অসুস্থ এক নেতার খোঁজখবর নিয়েছে বিএনপির নেতারা।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এবং জামিয়া কাসিমিয়া আশরাফুল উলুম ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল খতিবে বাংলার আল্লামা জুনায়েদ আল হাবীবের শারীরিক খোঁজখবর নিতে রোববার হাসপাতালে যান বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য (দপ্তরে সংযুক্ত) মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।
বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেইজে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ও জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফয়েজ উল্লাহ ইকবালের নির্দেশক্রমে ফরিদপুর মহানগর জিয়া মঞ্চের নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুরের জিয়ার সৈনিক, ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকারের হামলা-মামলা ও নির্যাতনের শিকার মোহাম্মদ কাইয়ুম মিয়াকে আহ্বায়ক ও এনামুল করিমকে সদস্য সচিব করে ২২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রোববার জিয়া মঞ্চ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দপ্তর সম্পাদকের চলতি দায়িত্বে থাকা ইঞ্জিনিয়ার মো. জামাল হোসেনের স্বাক্ষরীত এক পত্রে ফরিদপুর মহানগর জিয়া মঞ্চের ২২ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।
কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবর রহমান দিলীপ, যুগ্ম আহ্বায়ক নাইম আক্তার মুকুল, মাহবুবুর রহমান আজাদ, মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, ফরিদ হোসেন, কিবরিয়া জামান, সম্রাট আলম, আসাদুজ্জামান, ডা. মোফাজ্জুল হোসেন চৌধুরী, সদস্য মোহাম্মদ নাসির মিয়া, উজ্জল মিয়া, শেখ আব্দুল আলীম মুক্তি, মাসুদ খান, নয়ন শেখ, তুষার আহমেদ, আব্দুর রহিম, মোস্তাফিজুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আসাদুজ্জামান আরিফ, ইউসুফ শেখ ও শহীদ আলম চৌধুরী ফরহাদ।
এদিকে জিয়া মঞ্চ ফরিদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন মহানগর জিয়া মঞ্চের নতুন কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, তারুণ্যদীপ্ত নতুন এই কমিটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আর্দশকে বুকে ধারণ করে আগামীর রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করে তোলবে। এবং নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির নির্বাচনব্যবস্থা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, কোনো রাজনৈতিক দলের অবৈধ ও অসাংবিধানিক আবদার মেনে জাতিকে সংকটে ফেলা যাবে না। সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো দাবি মেনে নিলে তা দেশের স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট বার মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ব্রিটিশ ল স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্সের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
পিআর পদ্ধতি কার্যকর হলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত হবে বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, পিআর মানে হচ্ছে, ‘পারমানেন্ট রেস্টলেসনেস’ (স্থায়ী অস্থিরতা)।
উদাহরণ টেনে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পিআর চালুর পর দেখা গেছে, সরকার গঠন করতে দীর্ঘ সময় লেগেছে। কোথাও এক বছর বা দেড় বছর পর সরকার গঠিত হয়েছে। আবার সরকার গঠনের পর তা টেকসই হয়নি। কয়েক মাস বা এক বছরের মধ্যেই সরকার ভেঙে গেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বাংলাদেশে পিআর পদ্ধতি চালুর মূল উদ্দেশ্য স্রেফ সংসদীয় আসনের সংখ্যা বাড়ানো নয়, বরং ঘন ঘন রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করা। এতে লাভবান হবে সেই শক্তি, যারা চায়, দেশ সব সময় অনিশ্চয়তায় থাকুক।
পিআর নিয়ে যেসব জরিপ প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৬ শতাংশ মানুষ পিআর বোঝে না। আবার অন্য জরিপে দাবি করা হয়েছে, ৭০ শতাংশ মানুষ পিআর চায়। এটা জাতিকে বিভ্রান্ত করার শামিল।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জনগণ যদি আগে থেকে জানতে না পারে, তাদের ভোটে কোন প্রার্থী নির্বাচিত হবেন, তাহলে জনগণের সরাসরি গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ কোথায় রইল? এতে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জবাবদিহি দুর্বল হয়ে পড়বে।
সংবিধান ও আইনের শাসনের বাইরে গিয়ে কোনো সংস্কার দেশের জন্য শুভ হবে না বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিকতায় থাকতে চাই। কোনো রাজনৈতিক দলের অবৈধ, অসাংবিধানিক আবদার মেনে জাতিকে সংকটে ফেলা যাবে না।’
ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সংস্কার প্রসঙ্গে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমদ।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল ও রাগিব রউফ চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক ওয়াসি পারভেজ তাহসিন।
নিউইয়র্কে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে কেউ লাঞ্ছিত করেননি বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, নিউইয়র্কে মির্জা ফখরুলকে কেউ লাঞ্ছিত করেননি। তাকে নিয়ে নানা অপপ্রচার শুরু হয়েছে। সবকিছু মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সকালে নবনির্বাচিত পিরোজপুর জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এ কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, নিউইয়র্কে অন্তর্বর্তী সরকার দক্ষতা দেখাতে পারলে ফ্যাসিবাদের দোসররা এমন কর্মকাণ্ড ঘটানোর সাহস পেত না। সরকার কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় দোসরদের প্রেতাত্মারা দেশে নামতে পারছে, বিদেশের মাটিতে কার্যক্রম চালাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের দোসরদের সঙ্গে বিএনপির কোনো আতাঁত নেই।
ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের প্রতীক শেখ হাসিনা। বহু ধরনের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাস্টারপ্ল্যান চলছে। জুলাই শহীদদের রক্ত যেন বৃথা না যায়।
বিএনপির এই নেতা বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এখনো অর্থ লুটপাটকারীদের টাকা দেশে ফেরত আনতে পারেনি, বিচারও করতে পারেনি।
বিএনপির পক্ষ থেকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য কোনো আসনে বা কোনো প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
সম্প্রতি ‘প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দিচ্ছে বিএনপি’ সংবাদ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম। রিজভী জানিয়েছেন, সবুজ সংকেত সংক্রান্ত প্রতিবেদনগুলোকে মনগড়া।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান রুহুল কবির রিজভী।
নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তিনি বলেন, ‘বিএনপির মনোনয়নের নামে নাম প্রকাশ করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে বিভ্রান্ত তৈরির চেষ্টা করছে একটি মহল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। উপযুক্ত সময়েই দলের নির্ধারিত প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই যাচাই-বাছাই করে যোগ্য ও সর্বোপরি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য জনপ্রিয় প্রার্থীকেই বেছে নিয়ে তাদের নাম প্রকাশ করা হবে।’
প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে রিজভী বলেন, ‘যেকোনো নির্বাচনে দলের প্রার্থী মনোনয়নের দায়িত্ব পার্লামেন্টারি বোর্ড পালন করে এবং এ ব্যাপারে বোর্ডের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গণ্য হয়।
তাই তফসিল ঘোষণার পরেই দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তথা বিএনপির কেন্দ্র থেকে ঘোষণা ব্যতিত পত্রিকায় প্রকাশিত কোন মনগড়া সংবাদে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য সারা দেশের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
মন্তব্য