বগুড়ার ধুনটে পুরনো বিরোধের জেরে শিশু তাবাসসুমকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঞা।
নিজ কার্যালয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
গত ১৪ ডিসেম্বর ধুনটের নশরতপুর গ্রামের একটি বাঁশঝাড়ে পাওয়া যায় আট বছরের তাবাসসুমের বিবস্ত্র মরদেহ। পরদিন তার বাবা বেলাল হোসেন খোকন ধুনট থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি আশরাফ জানান, ওই গ্রামের তোজাম্মেল হকের সঙ্গে পারিবারিক পর্যায়ে অনেকদিনের বিরোধ ছিল বেলালের। এর জেরে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন তোজাম্মেলের ছেলে বাপ্পি আহমেদ।
তিনি জানান, ১৪ ডিসেম্বর রাতে দাদা-দাদি ও ফুপুদের সঙ্গে গ্রামের ওয়াজ মাহফিলে যায় তাবাসসুম। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছিলেন বাপ্পি এবং তার তিন বন্ধু কামাল পাশা, শামীম রেজা ও লাবলু শেখ।
সেখানেই পরিকল্পনা করে বাদাম দেয়ার কথা বলে তাবাসসুমকে হাজী কাজেম জুবেদা টেকনিক্যাল কলেজে নিয়ে ধর্ষণ করেন কামাল, শামীম ও লাবলু। পরে তাকে গলা টিপে হত্যা করেন বাপ্পি। মরদেহ ফেলে রাখেন পাশের একটি বাঁশঝাড়ে।
মামলা তদন্তে বেলাল ও তোজাম্মেলের বিরোধের বিষয়টি সামনে এলে বাপ্পি ও তার বন্ধুদের নজরদারিতে রাখা হয় বলে জানান এসপি। পরে শুক্রবার শামিমকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যে আটক করা হয় অন্যদের।
জিজ্ঞাসাবাদে চার জনই ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তাদের গ্রেপ্তার করে বগুড়ার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান এসপি।
সাভারের আশুলিয়ায় ভাড়া বাসার ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রী ও শিশুকে গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। টাকাপয়সার লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এ ঘটনায় সাগর ও ঈশিতা নামে দুজনকে আটক করে র্যাব। তারা পরস্পর স্বামী-স্ত্রী।
র্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সোমবার রাতে নিউজবাংলাকে এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার ব্রিফিং করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
শনিবার রাত ১০টার দিকে আশুলিয়ায় ইউনিক ফকিরবাড়ী মোড় এলাকায় মেহেদী হোসেনের মালিকানাধীন পাঁচতলা বাড়ির চতুর্থ তলা থেকে শিশুসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হলেন- বাবুল হোসেন, তার স্ত্রী সহিদা বেগম ও তাদের ১২ বছর বয়সী ছেলে মেহেদী হাসান জয়।
সে সময় নিহতের পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া গার্মেন্টস কর্মীী আঁখি আক্তার জানান, বাবুল স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে ৭-৮ বছর ধরে দুই রুমের ওই ফ্ল্যাটটিতে ভাড়া থাকতেন। তারা দুজনই পৃথক দুটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। ফ্ল্যাটের অন্যদের সঙ্গে তেমন পরিচয় বা মেলামেশা ছিল না তাদের।
শনিবার সন্ধ্যায় চতুর্থ তলার বাবুলদের ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ পান পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া। এ সময় তাদের ফ্ল্যাটের বাইরের দরজা ভেড়ানো অবস্থায় ছিল। পরে ভেতরে গিয়ে একটি কক্ষের বিছানায় মা ও তার ছেলে জয়ের এবং আরেকটি কক্ষে বাবুলের হাত বাঁধা গলাকাটা মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়।
তিনি বলেন, ‘আমিই প্রথম পুলিশে খবর দেই।’
আরেক ভাড়াটিয়া আফরোজা বেগম বলেন, ‘আমরা তেমন কিছু জানি না। আজ দুর্গন্ধ পেয়ে সবাই এসে দেখে এই অবস্থা। প্রথমে জয় ও তার মায়ের লাশ সবাই দেখতে পেলেও পরে আরেক কক্ষে জয়ের বাবা বাবুলের লাশ পাওয়া যায়।’
আরও পড়ুন:নাটোরের গুরুদাসপুরে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ৫৫ বছর বয়সী আসাদ আলী নামের এক কৃষককে শিকলবন্দি করার ঘটনায় মুল অভিযুক্ত আবদুল আজিজকে আটক করেছে পুলিশ।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শনিবার রাতব্যাপী অভিযানের একপর্যায়ে তাকে আটক করা হয়।
আবদুল আজিজ বলেন, ‘অনেক দিন হলো পাওনা টাকা ফেরত চেয়েও সেই টাকা আসাদ আলী দিতে পারেনি। তাই তাকে নিয়ে এসে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছে, যেন সে পালিয়ে যেতে না পারে।’
পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠালে কাউকেই পাওয়া যায়নি। পরে রাতভর অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত আবদুল আজিজকে আটক করা হয়।
এসপি আরও জানান, এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষক আসাদ আলীর স্ত্রী শাহানারা খাতুন বাদী হয়ে আবদুল আজিজের নামে থানায় মামলা করেছেন।
তিন বছর আগে নাটোরের গুরুদাসপুরের বাহাদুরপাড়া গ্রামের আবদুল আজিজের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা ধার নেন আসাদ আলী। এরপর দুই বছরে ২০ হাজার টাকা সুদ ও আসলসহ ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন তিনি। বাকি ৫০ হাজার টাকা চলতি বছরের শুরুতে দেয়ার কথা ছিল, কিন্তু হঠাৎ অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়ায় বাকি টাকা আজিজকে দিতে পারেননি তিনি।
এরই জেরে শনিবার সকালে আবদুল আজিজ ও তার বাবা আফজাল হোসেনসহ কয়েকজন ব্যক্তি আসাদকে তার বাড়ি থেকে তুলে আনেন। পরে আজিজের বাড়ির বারান্দায় কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। টাকা পরিশোধ করতে না পারলে হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকি দেয়া হয় তাকে।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানার ওসি মোনায়ারুজ্জামান বলেন, ‘সন্ধ্যার পর খবর পেয়ে পুলিশ পাঠালে ঘটনাস্থলে কাউকেই পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আরও পড়ুন:বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্দান ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের একটি মাদক বিক্রির সঙ্গে জড়িত চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ২৩ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সড়কের পাশ থেকে ওই শিক্ষকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের ওই মাদক ও ক্ষতিকর পটাশিয়াম সায়ানাইডসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। তারা এই ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ অর্থাৎ স্কোপোলামিন মাদক বিক্রি করতেন হতাশাগ্রস্তদের কাছে। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এই চক্রের সদস্যরা অনলাইনে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলবের নারায়ণপুর গ্রামের ৩০ বছর বয়সী শাকিল আহমদ ও বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ থানার ৩২ বছর বয়সী রাকিব হোসেন।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল রোববার সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, রাজধানী উত্তরা থেকে নিখোঁজের একদিন পর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলের ২০ নম্বর সেক্টরের সড়কের পাশ থেকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্দান ইউনিভার্সিটির শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে ওই সময় তিনি কীভাবে মারা গেছেন সে রহস্য অজানাই থেকে যায়। অসুস্থতার কারণে তিনি মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত ছিলেন। তাই আগের দিন সকালে ইউনিভার্সিটি থেকে একটি হাসপাতালে যাওয়ার কথা ছিল মামুনের। অথচ তার মরদেহের সন্ধান মেলে রূপগঞ্জে।
তদন্তের নানা বিষয় তুলে ধরে এসপি বলেন, “নিহতের ঘটনায় তার ভাই মামলা করলে তদন্তে নামে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর নিহত শিক্ষকের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করলে একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। মূলত এই চক্রের দুই সদস্য শাকিল আহমদ ও রাকিব অনলাইনে ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের একটি মাদক বিক্রি করে। এ ছাড়া ক্ষতিকর পটাশিয়াম সায়ানায়েড সরবরাহ করেন তারা।”
পুলিশের ভাষ্য, এই নেশা সেবনকারীরা জ্ঞান হারিয়ে ফেলার পাশাপাশি হতাশাগ্রস্ত হলে বেছে নেয় আত্মহত্যার পথ। এমনকি মারাত্মক ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে তারা। অনেক সময় তারা আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে অন্যের ওপর। ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামের এই মাদক বিক্রি চক্রের সদস্যরা অনলাইনে তাদের বাছাই করা লোকজনের কাছে মাদক বিক্রি করে থাকে। এ ছাড়া আত্মহত্যা বা কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে চায় এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সখ্য গড়ে তোলে চক্রের সদস্যরা।
পুলিশ জানায়, শনিবার রাতে চাঁদপুর থেকে শাকিল আহমদ ও রাজধানীর টিকাটুলি থেকে রাকিবকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে পটাশিয়াম সায়ানাইড, স্কোপোলামিন, ক্লোরোফর্ম উদ্ধার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে বেড়িয়ে আসে তাদের অপরাধের নানা চিত্র।
জেলা পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ বিক্রি চক্রের দুই সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্য কারো তথ্য পাওয়া গেলে তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হবে। পাশাপাশি শিক্ষক মামুন হত্যা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে একটি ভবনে বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় তিনজনের মৃত্যু হলো।
সর্বশেষ প্রাণ হারানো ৪৫ বছর বয়সী সোহান শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক তরিকুল ইসলাম জানান, সোহান চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার রাত আড়াইটার দিকে মারা যান। তার শরীরে ১০০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। এ নিয়ে তিনজনের মৃত্যু হলো।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে হাসপাতালে হাসিনা মমতাজ নামের একজন চিকিৎসাধীন, যার অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
নারায়ণগঞ্জে একটি ভাড়া বাসায় শুক্রবার রাতে বিস্ফোরণের ঘটনায় একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হন। পরে রাত সাড়ে তিনটার দিকে তাদের হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুজনের মৃত্যু হয়।
প্রাণ হারানো দুজন হলেন ৩৯ বছর বয়সী খাদিজা নিপা ও ৪০ বছর বয়সী সায়মা আক্তার চায়না।
খাদিজার মৃত্যু হয় শনিবার সকাল পৌনে আটটার দিকে। তার শরীরের প্রায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ ছিল। আর দুপুরের দিকে মৃত্যু হয় সায়মার, যার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় বৃহস্পতিবার লাগেজ থেকে উদ্ধার হওয়া খণ্ডিত লাশের পরিচয় মিলেছে।
লাশটি জেলার বাঁশখালী উপজেলার ৬২ বছর বয়সী মোহাম্মদ হাসানের। হত্যার রহস্যও উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, সম্পত্তি লিখে না দেয়ায় স্ত্রী ও সন্তানরা হাসানকে খুন করে। এ ঘটনায় তার স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও বড় ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে আটক করেছে পিবিআই।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছোট ছেলে ও তার স্ত্রী পলাতক রয়েছে।
হাসানের স্ত্রী ও বড় ছেলে খুনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন, তবে লাশের আরও কিছু অংশ পাওয়া গেলেও মাথা এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পিবিআই।
নগরীর পতেঙ্গা বোট ক্লাবের কাছাকাছি ১২ নম্বর গেটে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে একটি ট্রলিব্যাগে হাসানের মস্তকবিহীন খণ্ড-বিখণ্ড লাশ পাওয়া যায়। কফি রঙের ট্রলিব্যাগে ছিল মানব শরীরের দুটি হাত, দুটি পা, কনুই থেকে কাঁধ ও হাঁটু থেকে ঊরুর অংশ। এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল কাদির বাদী হয়ে এক বা একাধিক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
হত্যাকাণ্ডটির ছায়াতদন্ত শুরু করে পিবিআই। সংস্থাটি আঙুলের ছাপ নিয়ে নিহত ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করে। পরে তার স্ত্রী ছেনোয়ারা ও ছেলে মোস্তাফিজুরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পিবিআই জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি প্রায় ২৭ বছর ধরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কার্যত নিখোঁজ অবস্থায় ছিলেন। সম্প্রতি পরিবারের কাছে ফিরে আসার পর সম্পত্তি লিখে দেয়ার জন্য তাকে চাপ দেয়া শুরু করে তার পরিবার। তাতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রী-সন্তানেরা ঠান্ডা মাথায় তাকে খুন করে লাশ টুকরো টুকরো করে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দেন, যাতে হত্যাকাণ্ডের তথ্যপ্রমাণ গোপন থাকে।
পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, ‘গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানার আকমল আলী সড়কের পকেট গেট এলাকায় হাসানকে খুন করা হয়। ওই বাসায় হাসানের ছোট ছেলে তার স্ত্রী-সন্তানসহ থাকেন। ওই বাসার আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহর পর পুরো বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘হত্যার পর শরীরের অংশবিশেষ বস্তায় ভরে বের করার বিষয়টি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। আর এটা বের করছিলেন হাসানের ছোট ছেলে।
‘তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ওই বাসায় হাসানের স্ত্রী ও বড় ছেলে ছিলেন। হাসানের অবস্থানও রাতে সেখানে ছিল।’
পিবিআই পুলিশ সুপার (এসপি) নাইমা সুলতানা বলেন, ‘আটক স্ত্রী ও সন্তান হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা জানান, হাসান দীর্ঘদিন ধরে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। কোথায় ছিলেন, সেটা তার স্ত্রী-সন্তানরা জানতেন না। এ কারণে তারা হাসানকে মৃত দেখিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নেন। সম্প্রতি তিনি ফিরে আসেন। এতে তারা বিপাকে পড়ে যান। এ জন্য তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
‘স্ত্রী, দুই ছেলে ও ছোট ছেলের স্ত্রী মিলে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হয়। ঠান্ডা মাথায় লাশ কেটে টুকরো করে ট্রলিব্যাগে আট টুকরো রাখা হয়। মাথা এবং বুকসহ শরীরের আরও কিছু অংশ বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলা হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’
এসপি নাইমা বলেন, ‘ছোট ছেলেই তার বাবার শরীরের টুকরোগুলো বিভিন্ন স্থানে ফেলেন।’
আরও পড়ুন:সিলেটে সিএনজি ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণে দগ্ধ আরও একজনের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাত দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
প্রাণ হারানো ৪৭ বছর বয়সী নজরুল ইসলাম মুহিন সিলেট নগরের পশ্চিম পীরমহল্লা এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি ওই সিএনজি ফিলিং স্টেশনের শিফট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
মুহিনের আত্মীয় আব্দুল মুকিত অপি বলেন, ‘আজ মুহিনের মরদেহ সিলেট আনা হবে।’
এ নিয়ে সিলেটে সিএনজি ফিলিং স্টেশনে বিস্ফোরণের ঘটনায় পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর আলাদা সময়ে সিলেট সদর উপজেলার জাঙ্গাঈল গ্রামের ৩২ বছর বয়সী তারেক আহমদ ও সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কাদিরগাঁও গ্রামের ৪০ বছর বয়সী বাদল দাস রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
গত ১১ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট বিমানবন্দর থানার কোরবানটিলা এলাকার বাসিন্দা রুমেল সিদ্দিক ও ১২ সেপ্টেম্বর বিকেলে টুকেরবাজার এলাকার ইমন আহমদ শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
প্রাণ হারানো সবারই শরীরের ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
গত ৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিরতি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের কম্প্রেসর কক্ষের একটি সেফটি বাল্ব বিস্ফোরিত হয়। এতে ওই কক্ষে আগুন লেগে নয়জন দগ্ধ হন। দগ্ধদের মধ্যে ৭ জন ওই ফিলিং স্টেশনে কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং দুইজন পথচারী ছিলেন।
পরে হতাহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর দগ্ধ নয়জনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।
ঘটনার পরদিন ৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে, তবে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে পর পর ৫ জন মারা গেলেও এখন পর্যন্ত কোনো মামলা করা হয়নি।
আরও পড়ুন:টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে সাংবাদিক আবু সায়েম আকন্দের মা সুলতানা সুরাইয়া হত্যার ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সিরাজগঞ্জ থেকে মঙ্গলবার তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
চুরি করতে গিয়ে চিনে ফেলায় সুলতানাকে গলা কেটে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন আসামিরা।
গ্রেপ্তার দুইজন হলেন সিরাজগঞ্জের লাবু ও টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরের আল আমিন।
ঘটনার পাঁচ দিন পর বুধবার বেলা ১১টার দিকে পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সিরাজ আমিন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘১৫ তারিখে মরদেহ উদ্ধারের পর পিবিআই তদন্তকাজ শুরু করে। এরপর পিবিআইয়ের একটি চৌকস দল তথ্যপ্রযুক্তি ও বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।
‘জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানায়, চুরি করার উদ্দেশ্যে ওই বাসায় গেলে সুলতানা তাদের দেখে ফেললে তারা লাইলনের সুতা ও চাকু দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে তাকে। ওই সময় নগদ ১২ হাজার টাকা ও দুইটি মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায় আসামিরা।’
আসামিদের ভুঞাপুর থানায় হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এর আগে ১৫ তারিখ পশ্চিম ভূঞাপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে সুলতানা সুরাইয়ার গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রাণ হারানো সুলতানা ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের (টিবিএস) নিউজ এডিটর আবু সায়েম আকন্দের মা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রহিম আকন্দের স্ত্রী।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য