শীত আসার আগে সবজির উচ্চমূল্য যেভাবে পোড়াচ্ছিল ভোক্তাদের, শীত আসার পরে তা ভোগাচ্ছে কৃষকদের। কারণ, দাম পড়ে গেছে একবারেই।
শীতের আগে দাম বেশি থাকায় চাষিদের ধারণা ছিল, এবার মুনাফা হবে ভালোই। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।
উত্তরের বিশাল হাটগুলো থেকে কেবল ওই অঞ্চলে নয়, রাজধানীতেও পাঠানো হয় সবজি। কদিন আগে যেখানে হাটগুলো ছিল ফাঁকা, এখন সেগুলো পণ্যে ঠাসা।
রাজধানীর কাঁচাবাজারের দাম দেখলে কৃষকের দুর্গতি বোঝার উপায় নেই।
সরবরাহ বাড়লে যা হওয়ার তাই হয়েছে। পাইকারি বাজারে মুলার দাম নেমেছে কেজিপ্রতি এক থেকে তিন টাকা। আর ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিন টাকা করে।
অথচ কয়েক কিলোমিটার দূরে শহরের বাজারগুলোতেই এই সবজি বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০ গুণ বেশি দামে।
বগুড়া শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে সবচেয়ে বড় সবজির হাট মহাস্থানগড়। দাম পড়ে যাওয়ায় কারণে সবজি ফেলে দেয়ার অবস্থা কৃষকদের।
জেলায় এ বছর শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৮১৩ হেক্টর। চাষ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। উৎপাদনও হয়েছে ব্যাপক। আর এটি কাঁটা হয়েছে কৃষকের। বিশেষ করে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মুলার দাম অর্ধেকেরেও বেশি কমে গেছে।
হাটে দুই সপ্তাহ আগেও ফুলকপি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। সেই ফুলকপির দর এখন নেমেছে প্রতি মণ ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৭০ টাকায়। অর্থাৎ সর্বনিম্ন আড়াই টাকা কেজি দরে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে।
মুলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা মণ। দুই সপ্তাহ আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। প্রতিটি লাউ ছয় থেকে আট টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
সদরের লাহেরিপাড়া ইউনিয়নের কৃষক শহিদুল ইসলাম মুলা বিক্রি করার জন্য হাটে এসেছিলেন। বলেন, ‘এখানে সবজি পাঁচ টাকা কেজি বিক্রি হলেও ঢাকায় তা ১০ গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ কৃষকেরা চোখে অন্ধকার দেখছেন।’
একই গ্রামের আরেক কৃষক বুলু মিয়া বলেন, ‘শীতকালে সবজির দামের ক্ষেত্রে প্রতি বছরই তো এমন হয়। এটা তো নতুন নয়। তবে হঠাৎ করে সবজির বাজারে এমন ধস হলেও চাষিরা সমস্যায় পড়েন। এখন সবজির দাম অনেক কম। কিন্তু তারপরও জমি খালি করার জন্য মাঠ থেকে সবজি তুলতে হচ্ছে।’
বাজারে অন্তত ১৫ বছর ধরে কাঁচামালের ব্যবসা করছেন পাইকারি ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা। তিনি নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে সবজি বিক্রি করেন। বলেন, ‘কিছুদিন আগেও সবজির আকাল ছিল। কিন্তু এখন হাটে প্রচুর সবজি। আমদানি বেশি হওয়ার কারণে দাম কম।’
খুচরা পর্যায়ে সবজির তাহলে এত বেশি কেন-এমন প্রশ্নে মোস্তফা বলেন, ‘প্রথম বিষয় হলো, ঢাকায় নেয়ার পথে পচে যায়, ওজন কমে। আবার এক ট্রাক সবজি ঢাকায় নেয়ার পথে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। প্রতিটি জেলার পুলিশের টাকা টাকা দিয়ে গাড়ি নিতে হয়।’
শিবগঞ্জ উপজেলা কাঁচামাল আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতিবাবুল মিয়া বাবু বলেন, ‘সবজির অবস্থা একেবারে খারাপ অবস্থা। চারদিকে সবজির উৎপাদন বাড়ার কারণেই হয়তো দাম এত কম এখন।’
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দুলাল হোসেন জানান, এ বছর চারবারের বন্যার ফলে জমিতে প্রচুর পলি জমে যাওয়ায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। লোকসান কমাতে হিমাগার তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গাইবান্ধা
উত্তরের এই জেলায় এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চাষ হয়েছে শীতকালীন সবজি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। পাইকারি হাটে এক টাকা কেজিতেও ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না চাষিরা। দুই থেকে তিন টাকা দামেও দেখা নেই ফুলকপি-বাঁধাকপির ক্রেতার।
সবজি ভাণ্ডারখ্যাত সাদুল্যাপুর উপজেলার ধাপেরহাট বন্দরের পাইকারি হাট থেকে প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ কয়েক জেলায় সরবরাহ করা হয় সবজি। পাইকারি ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান বলেন, ‘১০ দিনের ব্যবধানে সব সবজির দাম কমেছে। তবে বেশি কমেছে মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম। এ বাজারে এক টাকায় মুলা, দুই থেকে তিন টাকায় ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে। তবুও অবিক্রিত থাকছে এই তিন সবজি।’
মুলা চাষি তন্ময় কুমার সাহা বলেন, ‘জমি থেকে মুলা তুলে বাজারজাত পর্যন্ত ভ্যান ভাড়া আর শ্রমিক খরচের টাকাও উঠছে না। তাই বাধ্য হয়ে মুলা গবাদি পশুকে খাওয়াচ্ছি।’
পলাশবাড়ির কিশোরগাড়ী থেকে ধাপেরহাটে ফুলকপি বিক্রি করতে এসেছেন সাগর মিয়া। তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহে এ হাটে ফুলকপি কেনাবেচা হয়েছে প্রতি মণ হাজারের ওপরে। অথচ ফুলকপির বর্তমান মণ বিক্রি দেড় থেকে দুইশ টাকা। তারপরেও দিনভর বসে থেকেও ক্রেতা মিলছে না।’
সাদুল্যাপুর উপজেলার বিভিন্ন আড়তে চাষিরা বিক্রি করতে পারছেন না মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি। তবে বেগুন ও সিমের চাহিদা অনেকটাই বেশি আড়তে।
এই আড়তের পাইকারি ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে এমন মুলার আমদানি দেখিনি। মুলার বস্তা রাখার জায়গা নেই।’
সবজির ক্রেতা আনোয়ার হোসেন মনজু বলেন, ‘পাইকারি বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম পান না চাষিরা। তবে খুচরা বাজারে এক পিস ফুলকপি ১০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মাসিদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভালো ফলনের কারণে আমদানি বেশি হয়েছে। তবে এক সঙ্গে আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে ওঠায় দ্রুত কমছে দাম।’
যশোর
মৌসুমের শুরুতে কৃষকের মুখের হাসি মুছে গেছে।
জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার সদরের সাতমাইল, মনিরামপুরের মনিরামপুর বাজার, খাটুরা বাজার, রাজগঞ্জ বাজার, কেশবপুরের কেশবপুর বাজার, বাঘারপাড়ার খাজুরা বাজার। সব জায়গায় একই চিত্র।
কৃষক মিলন হোসেন বলেন, ‘দাম কমছেই। এভাবে চলতে থাকলে লাভের মুখ আর দেখা হবে না।’
রাজগঞ্জ বাজারে ঢাকা থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী সিদ্দিক হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, এখানে দাম কম হলেও ঢাকায় নিয়ে লাভ করা কঠিন। কারণ, পথে পথে টাকা দিতে হয়।
ঘাটের জ্যামে থাকলে সবজি পচে যায়। আবার বাসি হয়ে গেলে দাম পাওয়া যায় না, তখন লোকসানে পড়তে হয়।
মহাসড়কে পথে পথে ২০ থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা দিতে দিতে দেখা যায় খরচ হয়ে গেছে ৫০০ টাকার বেশি। আবার তিন টনের একটি ট্রাকের ভাড়া আছে ১০ হাজার টাকা, বাজারের টোল ৫০০ টাকা, ঢাকার কারওয়ানবাজারে দুই হাজার টাকা দিতে হয়।
ঢাকার পাইকারি বাজারে যে দরে বিক্রি হয়, তার সঙ্গে খুচরা বাজারে অনেক বেশি পার্থক্যের কারণ এই ব্যবসায়ী জানেন না।
রাজগঞ্জ বাজারের আড়ৎদার তোফায়েল হোসেন তোফা জানান, কৃষকদের কাছে থেকে পণ্য কিনে মণে ৫০ থেকে ৭০ টাকা লাভে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন তিনি।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে করতোয়া নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে যৌথবাহিনীর অভিযানে একজনকে দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) রাত ৯টার দিকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ধুলাঝাড়ি বাজারের করতোয়া নদীসংলগ্ন এলাকায় অভিযানটি চালানো হয়।
দেবীগঞ্জ সেনা ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার মেজর জুবায়ের হোসেন সিয়ামের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সমন্বয়ে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বালু উত্তোলনের কাজে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক্টরসহ চালক রাজু ইসলাম ও শান্ত আহমেদকে আটক করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন।
আদালতের রায়ে রাজু ইসলামকে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ধারা লঙ্ঘন করায় দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন বিচারক। তবে রাজু ইসলাম অর্থদণ্ডের অর্থ পরিশোধ করায় ট্রাক্টর দুটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় প্রশাসন জানায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন রোধে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
মন্তব্য