শীত আসার আগে সবজির উচ্চমূল্য যেভাবে পোড়াচ্ছিল ভোক্তাদের, শীত আসার পরে তা ভোগাচ্ছে কৃষকদের। কারণ, দাম পড়ে গেছে একবারেই।
শীতের আগে দাম বেশি থাকায় চাষিদের ধারণা ছিল, এবার মুনাফা হবে ভালোই। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।
উত্তরের বিশাল হাটগুলো থেকে কেবল ওই অঞ্চলে নয়, রাজধানীতেও পাঠানো হয় সবজি। কদিন আগে যেখানে হাটগুলো ছিল ফাঁকা, এখন সেগুলো পণ্যে ঠাসা।
রাজধানীর কাঁচাবাজারের দাম দেখলে কৃষকের দুর্গতি বোঝার উপায় নেই।
সরবরাহ বাড়লে যা হওয়ার তাই হয়েছে। পাইকারি বাজারে মুলার দাম নেমেছে কেজিপ্রতি এক থেকে তিন টাকা। আর ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিন টাকা করে।
অথচ কয়েক কিলোমিটার দূরে শহরের বাজারগুলোতেই এই সবজি বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০ গুণ বেশি দামে।
বগুড়া শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে সবচেয়ে বড় সবজির হাট মহাস্থানগড়। দাম পড়ে যাওয়ায় কারণে সবজি ফেলে দেয়ার অবস্থা কৃষকদের।
জেলায় এ বছর শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৮১৩ হেক্টর। চাষ লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। উৎপাদনও হয়েছে ব্যাপক। আর এটি কাঁটা হয়েছে কৃষকের। বিশেষ করে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও মুলার দাম অর্ধেকেরেও বেশি কমে গেছে।
হাটে দুই সপ্তাহ আগেও ফুলকপি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। সেই ফুলকপির দর এখন নেমেছে প্রতি মণ ১০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৭০ টাকায়। অর্থাৎ সর্বনিম্ন আড়াই টাকা কেজি দরে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে।
মুলা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৫০ টাকা মণ। দুই সপ্তাহ আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। প্রতিটি লাউ ছয় থেকে আট টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
সদরের লাহেরিপাড়া ইউনিয়নের কৃষক শহিদুল ইসলাম মুলা বিক্রি করার জন্য হাটে এসেছিলেন। বলেন, ‘এখানে সবজি পাঁচ টাকা কেজি বিক্রি হলেও ঢাকায় তা ১০ গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। অথচ কৃষকেরা চোখে অন্ধকার দেখছেন।’
একই গ্রামের আরেক কৃষক বুলু মিয়া বলেন, ‘শীতকালে সবজির দামের ক্ষেত্রে প্রতি বছরই তো এমন হয়। এটা তো নতুন নয়। তবে হঠাৎ করে সবজির বাজারে এমন ধস হলেও চাষিরা সমস্যায় পড়েন। এখন সবজির দাম অনেক কম। কিন্তু তারপরও জমি খালি করার জন্য মাঠ থেকে সবজি তুলতে হচ্ছে।’
বাজারে অন্তত ১৫ বছর ধরে কাঁচামালের ব্যবসা করছেন পাইকারি ব্যবসায়ী মো. মোস্তফা। তিনি নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামে সবজি বিক্রি করেন। বলেন, ‘কিছুদিন আগেও সবজির আকাল ছিল। কিন্তু এখন হাটে প্রচুর সবজি। আমদানি বেশি হওয়ার কারণে দাম কম।’
খুচরা পর্যায়ে সবজির তাহলে এত বেশি কেন-এমন প্রশ্নে মোস্তফা বলেন, ‘প্রথম বিষয় হলো, ঢাকায় নেয়ার পথে পচে যায়, ওজন কমে। আবার এক ট্রাক সবজি ঢাকায় নেয়ার পথে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। প্রতিটি জেলার পুলিশের টাকা টাকা দিয়ে গাড়ি নিতে হয়।’
শিবগঞ্জ উপজেলা কাঁচামাল আড়ৎদার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতিবাবুল মিয়া বাবু বলেন, ‘সবজির অবস্থা একেবারে খারাপ অবস্থা। চারদিকে সবজির উৎপাদন বাড়ার কারণেই হয়তো দাম এত কম এখন।’
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক দুলাল হোসেন জানান, এ বছর চারবারের বন্যার ফলে জমিতে প্রচুর পলি জমে যাওয়ায় উৎপাদন ভালো হয়েছে। লোকসান কমাতে হিমাগার তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
গাইবান্ধা
উত্তরের এই জেলায় এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চাষ হয়েছে শীতকালীন সবজি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। পাইকারি হাটে এক টাকা কেজিতেও ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না চাষিরা। দুই থেকে তিন টাকা দামেও দেখা নেই ফুলকপি-বাঁধাকপির ক্রেতার।
সবজি ভাণ্ডারখ্যাত সাদুল্যাপুর উপজেলার ধাপেরহাট বন্দরের পাইকারি হাট থেকে প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ কয়েক জেলায় সরবরাহ করা হয় সবজি। পাইকারি ব্যবসায়ী আনিছুর রহমান বলেন, ‘১০ দিনের ব্যবধানে সব সবজির দাম কমেছে। তবে বেশি কমেছে মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম। এ বাজারে এক টাকায় মুলা, দুই থেকে তিন টাকায় ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে। তবুও অবিক্রিত থাকছে এই তিন সবজি।’
মুলা চাষি তন্ময় কুমার সাহা বলেন, ‘জমি থেকে মুলা তুলে বাজারজাত পর্যন্ত ভ্যান ভাড়া আর শ্রমিক খরচের টাকাও উঠছে না। তাই বাধ্য হয়ে মুলা গবাদি পশুকে খাওয়াচ্ছি।’
পলাশবাড়ির কিশোরগাড়ী থেকে ধাপেরহাটে ফুলকপি বিক্রি করতে এসেছেন সাগর মিয়া। তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহে এ হাটে ফুলকপি কেনাবেচা হয়েছে প্রতি মণ হাজারের ওপরে। অথচ ফুলকপির বর্তমান মণ বিক্রি দেড় থেকে দুইশ টাকা। তারপরেও দিনভর বসে থেকেও ক্রেতা মিলছে না।’
সাদুল্যাপুর উপজেলার বিভিন্ন আড়তে চাষিরা বিক্রি করতে পারছেন না মুলা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি। তবে বেগুন ও সিমের চাহিদা অনেকটাই বেশি আড়তে।
এই আড়তের পাইকারি ব্যবসায়ী ইয়াছিন আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত পাঁচ বছরে এমন মুলার আমদানি দেখিনি। মুলার বস্তা রাখার জায়গা নেই।’
সবজির ক্রেতা আনোয়ার হোসেন মনজু বলেন, ‘পাইকারি বাজারে ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম পান না চাষিরা। তবে খুচরা বাজারে এক পিস ফুলকপি ১০ টাকার নিচে পাওয়া যায় না।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মাসিদুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভালো ফলনের কারণে আমদানি বেশি হয়েছে। তবে এক সঙ্গে আগাম শীতকালীন সবজি বাজারে ওঠায় দ্রুত কমছে দাম।’
যশোর
মৌসুমের শুরুতে কৃষকের মুখের হাসি মুছে গেছে।
জেলার সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার সদরের সাতমাইল, মনিরামপুরের মনিরামপুর বাজার, খাটুরা বাজার, রাজগঞ্জ বাজার, কেশবপুরের কেশবপুর বাজার, বাঘারপাড়ার খাজুরা বাজার। সব জায়গায় একই চিত্র।
কৃষক মিলন হোসেন বলেন, ‘দাম কমছেই। এভাবে চলতে থাকলে লাভের মুখ আর দেখা হবে না।’
রাজগঞ্জ বাজারে ঢাকা থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী সিদ্দিক হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, এখানে দাম কম হলেও ঢাকায় নিয়ে লাভ করা কঠিন। কারণ, পথে পথে টাকা দিতে হয়।
ঘাটের জ্যামে থাকলে সবজি পচে যায়। আবার বাসি হয়ে গেলে দাম পাওয়া যায় না, তখন লোকসানে পড়তে হয়।
মহাসড়কে পথে পথে ২০ থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা দিতে দিতে দেখা যায় খরচ হয়ে গেছে ৫০০ টাকার বেশি। আবার তিন টনের একটি ট্রাকের ভাড়া আছে ১০ হাজার টাকা, বাজারের টোল ৫০০ টাকা, ঢাকার কারওয়ানবাজারে দুই হাজার টাকা দিতে হয়।
ঢাকার পাইকারি বাজারে যে দরে বিক্রি হয়, তার সঙ্গে খুচরা বাজারে অনেক বেশি পার্থক্যের কারণ এই ব্যবসায়ী জানেন না।
রাজগঞ্জ বাজারের আড়ৎদার তোফায়েল হোসেন তোফা জানান, কৃষকদের কাছে থেকে পণ্য কিনে মণে ৫০ থেকে ৭০ টাকা লাভে পাইকারদের কাছে বিক্রি করেন তিনি।
আরও পড়ুন:নওগাঁর ধামইরহাটে রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল নামে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দেয়া এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দিলেও তিনি আসলে তা নন, প্রতারণার স্বার্থে ভুয়া পরিচয় ধারণ করেছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার রুপনারায়নপুর গ্রাম থেকে তিনি গ্রেপ্তার হন।
২৫ বছর বয়সী রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বগুড়ার আদমদিঘী উপজেলার ছাতিয়ান গ্রামের বাসিন্দা।
ভুক্তভোগী ম্যানুয়েল তপন জানান, ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে তিনি (পিয়াল) তার কাছ থেকে ২৯ হাজার ৫৩৮ টাকা গ্রহণ করেন এবং আরও টাকা দাবি করলে স্থানীয় জনতা তাকে চ্যালেঞ্জ করে। এরপর সংশ্লিষ্ট থানায় খবর দেয়া হয়। পরে থানা পুলিশ গিয়ে প্রতারক পিয়ালকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
তপন বলেন, ‘বেশকিছু দিন ধরে আমার মতো এলাকার অন্য লোকজনের কাছেও বিভিন্ন ফন্দি এঁটে প্রতারণা করে আসছে এই প্রতারক।’
বিষয়টি নিশ্চিত করে ধামইরহাট থানার ওসি মো. বাহাউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘প্রতারক রেজওয়ানুল আহমেদ পিয়াল বিভিন্ন সময় বিভিন্ন এলাকায় নিজেকে সিআইডি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করতেন। ইতোমধ্যে একজনের কাছে থেকে ২৯ হাজার টাকা নিয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাও নিতেন তিনি।
‘এদিনও প্রতারণা করতে গেলে জনগণ তাকে আটক করে রাখে। এরপর পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ মামলা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে পাঠানো হবে।’
আরও পড়ুন:নোয়াখালীর হাতিয়ায় ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মো. সুলতান নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাৎক্ষণিক এই হত্যাকাণ্ডের কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১১৬ নম্বর ক্লাস্টার থেকে পুলিশ সুলতানের মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারের বাসিন্দা ছিলেন।
ভাসানচর থানার ওসি কাওসার আহমেদ এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয়দের বরাতে ওসি বলেন, সুলতান ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৭৮ নম্বর ক্লাস্টারে বসবাস করতেন। ১১৬ নম্বর ক্লাস্টারের খালি জায়গায় তিনি সবজি চাষ করতেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলে তার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে যান। সেখানে গিয়ে বাবাকে দেখতে না পেয়ে তার ছেলে ওই ক্লাস্টারে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার বাবার গলা কাটা মরতেজ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার দেন। এ সময় অন্য ক্লাস্টারের লোকজন এগিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে।
ওসি কাওসার আহমেদ জানান, পেছনের দিক থেকে গলা কেটে এই রোহিঙ্গা নাগরিককে হত্যা করা হয়। শুক্রবার সকালে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। পুলিশ হত্যার রহস্য উদঘাটনে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন:নাটোরের সিংড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেনকে অপহরণ ও মারধরের অভিযোগে অপর প্রার্থী মো. লুৎফুল হাবিবকে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান বৃহস্পাতবার অভিযুক্তকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের ৮ মে অনুষ্ঠেয় নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে ইচ্ছুক দেলোয়ার হোসেন ও তার ভাইসহ তিনজনকে অপহরণের সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এ ঘটনায় আপনি লুৎফুল হাবীবকে দায়ী করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বর্ণিত বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা থেকে প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। এছাড়া সব জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচিত্র বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে।
উল্লেখিত প্রতিবেদন ও পত্রিকান্তে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণ হয়েছে। এরূপ ঘটনার জন্য কেন আপনার প্রার্থিতা বাতিল অথবা আপনার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সে বিষয়ে লিখিত জবাবসহ নির্বাচন কমিশনে ২২ এপ্রিল সোমবার বিকেল ৪টা ১০ মিনিটে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেয়ার নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোমবার অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর নাটোর জেলা নির্বাচন অফিসে গেলে দেলোয়ার হোসেনকে গাড়িতে তুলে নিয়ে আহত অবস্থায় তাকে তার বাড়ির পাশে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগী প্রার্থীর পরিবার এ ঘটনার জন্য আরেক প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল ও তার সমর্থকদের দায়ী করেছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবীব তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক। দেলোয়ার হোসেন মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে লুৎফুল হাবীব ছিলেন একক প্রার্থী।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে টিউবওয়েল বসানোর জন্য স্থাপন করা পাইপে পানির পরিবর্তে উঠে আসছে এক ধরনের তরল। অনেকটা ডিজেলের মতো গন্ধযুক্ত এই তরল নিয়ে জনমনে সৃষ্টি হয়েছে কৌতূহল।
উপজেলার ভোলামোড় এলাকায় এক বাড়িতে ঘটেছে এই ঘটনা। বাড়ির মালিক আব্দুল আওয়াল বলেন, ‘পানীয় জলের জন্য তিন বছর আগে এখানে মোটর বসানো হয়। এটি উপজেলা পরিষদ থেকেই বসানো হয়েছিল। কয়েক মাস থেকে মোটরটি দিয়ে পানি উঠছে না। কারণ জানার জন্য বুধবার সকালে মিস্ত্রি ডেকে আনা হয়।
‘মিস্ত্রি কাজ করার সময় মোটরের সঙ্গে যুক্ত পাইপ দিয়ে মাটির নিচ থেকে পানির পরিবর্তে তেলের মতো এক ধরনের তরল উঠে আসে। তা দেখে মনে হয়েছে ডিজেলের মতো। বিষয়টি আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি, যাতে তারা এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেন।’
স্থানীয় সংবাদকর্মী মনিরুল ইসলাম জানান, ফেসবুকে ঘটনাটি দেখার পর তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। এ সময় পাইপ দিয়ে উঠে আসা তরলে তিনি কাগজ চুবিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করলে তাতে আগুন ধরে যায়। তার প্রশ্ন- পানি হলে তো ভেজা কাগজে আগুন ধরতো না। তাহলে এই তরল কি খনিজ তেল?
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা সরকার জানান, তিনিও বিষয়টি ফেসবুকে দেখেছেন। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর করবেন বলে জানান তিনি।
গাইবান্ধায় ভাঙারির দোকানে চুরি করা রেলপাত (রেললাইন) বিক্রির সময় এক অটোচালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এসময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের ব্রিজ রোড এলাকার আশা ভাঙারি দোকানে সরকারি এসব রেলপাত বিক্রির সময় তাদের হাতেনাতে আটক করে গাইবান্ধার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)।
এ সময় চুরি করে বিক্রি করতে নিয়ে আসা রেলপাত এবং সেসব পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশাও জব্দ করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সদর উপজেলার পশ্চিম দুর্গাপুর এলাকার ৩০ বছর বয়সী সাগর মিয়া, ফুলছড়ি উপজেলার উত্তর কঞ্চিপাড়া এলাকার ৪০ বছর বয়সী ওয়াহেদ মিয়া ও আশা ভাঙারি দোকানের শ্রমিক সদর উপজেলার বালুয়া বাজারের পাকারখুটি এলাকার ৩৩ বছর বয়সী মোকলেছুর রহমান। এদের মধ্যে ওয়াহেদ মিয়ার অটোরিকশায় এসব মালামাল পরিবহন করা হয়েছিল।
নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশের ওসি খাইরুল ইসলাম তালুকদার।
তিনি বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের ব্রিজ রোডের একটি ভাঙারির দোকানে সরকারি রেলপাত অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয়কালে তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় দোকান মালিক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এ সময় তাদের কাছ থেকে খণ্ড খণ্ড তিন ফুট দৈর্ঘ্যের ৯ টুকরা রেললাইনের পাত উদ্ধার করা হয়, যা সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেয়া হবে।’
রেলপাতগুলো বালাসিঘাটের পরিত্যক্ত রেলপথ থেকে খুলে আনা হয়েছে বলে জানান রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
এ সময় এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আটককৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে ক্রয়-বিক্রয় ও পরিবহন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে। এছাড়া এদের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।’
অপহরণের ৬ ঘণ্টার মধ্যে সিরাজগঞ্জ থেকে তামিম হোসেন নামের ৭ বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এ সময় এ মামলার আসামি আল-আমিন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার ভোরে বেলকুচি উপজেলার চন্দনগাতী গ্রাম থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে র্যাব ১২-এর একটি দল। বুধবার দুপুর তিনটার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলার হানুরবাড়াদি গ্রাম থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।
অপহৃত তামিম হোসেন চুয়াডাঙ্গার হানুরবাড়াদি গ্রামের মো. সুন্নত আলীর ছেলে। অপরদিকে গ্রেপ্তার হওয়া ২৯ বছর বয়সী আল-আমিন কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানায় মেষতলী বাজারের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব ১২-এর অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ মারুফ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, অপহরণের পর শিশুটির বাবা সুন্নত আলী চুয়াডাঙ্গা থানায় মামলা করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিষয়টি র্যাবকে জানালে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নির্ণয় করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
তিনি জানান, তামিমের বাবার সঙ্গে আল আমিনের দুই মাস আগে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। বন্ধুত্বের সুযোগ নিয়েই সুকৌশলে তামিমকে অপহরণ করা হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মুক্তিপণের জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় হস্তান্তর করার আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান র্যাবের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
মন্তব্য