কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে নয় হাজার ৩৫০টি ইয়াবাসহ এক রোহিঙ্গা মাদক কারবারিকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পরে এক মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে র্যাব-১৫ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী এ তথ্য জানান।
মাদক কারবারি মাহমুদুল হাসান (৩৮) উখিয়ার কুতুপালং ২ নম্বর ক্যাম্পের বাসিন্দা।
সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ জানান, বুধবার বিকেলে ইয়াবা বেচা কেনার গোপন খবরে টেকনাফের হোয়াইক্যং বাজারের দক্ষিণ পাশের সেতু এলাকা থেকে নয় হাজার ৩৫০টি ইয়াবা, সাড়ে তিন হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোনসহ মাহমুদুলকে আটক করা হয়।
মামলার পর জব্দ করা ইয়াবাসহ মাহমুদুলকে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা আবদুল্লাহ।
সিলেটের ছয়টি আসনের ৪৭ প্রাথীর মধ্যে ১৪ জনের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। আর স্থগিত করা হয়েছে দুই প্রার্থীর মনোনয়ন।
মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রোববার সিলেট জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান এ ঘোষণা দেন।
এ ১৬ জন ছাড়া বাকিদের মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।
সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের ড. এ কে আবদুল মোমেন, জাকের পার্টির মো. আবদুল হান্নান, ইসলামী ঐক্যজোটের ফয়জুল হক, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. সোহেল আহমদ চৌধুরী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের।
আসনটিতে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আবদুল বাছিতের মনোনয়ন বাতিল ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ইউসুফ আহমদের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে।
সিলেট-২ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের শফিকুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির ইয়াহিয়া চৌধুরী, তৃণমূল বিএনপির মো. আবদুল মান্নান খান, জাকের পার্টির মো. ছায়েদ মিয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আলতাফুর রহমান সোহেলের।
এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহিয়া চৌধুরীর আয়কর রিটার্নের কাগজ জমা না দেয়ায় সকালে তার মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র উপস্থাপন করায় বিকেলে জেলা রিটার্নিং অফিসার তার মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেন।
আসনটিতে মনোনয়ন স্থগিত রয়েছে জাতীয় পার্টির মাহবুবুর রহমান চৌধুরী ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মনোয়ার হোসেনের। আর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে বর্তমান সংসদ সদস্য ও গণফোরামের প্রার্থী মোকাব্বির খান, তৃণমূল বিএনপির মো. আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির, স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহিবুর রহমান, ইকবাল হোসেন ও মোশাহিদ আলীর।
মোকাব্বির খানের মনোনয়ন বাতিল প্রসঙ্গে রিটার্নিং কর্মকর্তা শেখ রাসেল হাসান বলেন, প্রার্থী মোকাব্বির খান গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি হিসেবে তার মনোনয়নপত্রে নিজেই সই করেন, কিন্তু তিনি যে দলের নির্বাহী সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন, তার কোনো প্রমাণ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে উপস্থাপন করতে পারেননি, যে কারণে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ অনুযায়ী মেয়র পদে থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার বিধান না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশ্বনাথ পৌরসভার মেয়র মুহিবুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
সিলেট-৩ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির আতিকুর রহমান আতিক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আনোয়ার হোসেন আফরোজ, ইসলামী ফ্রন্টের শেখ জাহেদুর রহমান মাসুম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কফিল আহমদ চৌধুরীর। মনোনয়ন বাতিল হয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএমএর মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, মো. ফখরুল ইসলাম ও ইসলামী ঐক্যজোটের মো. মইনুল ইসলামের।
সিলেট-৪ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে আওয়ামী লীগের ইমরান আহমদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মো. নাজিম উদ্দিন কামরান, জাকের পার্টির মো. আলী আকবরের। স্থগিত হয়েছে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেনের।
সিলেট-৫ আসনে মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে আওয়ামী লীগের মাসুক উদ্দিন আহমদ, জাতীয় পার্টির শাব্বীর আহমদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মো. খায়রুল ইসলাম, তৃণমূল বিএনপির কুতুব উদ্দিন শিকদার, স্বতন্ত্র প্রার্থী আঞ্জুমানে আল ইসলাহর সভাপতি মোহাম্মদ হুছামুদ্দিন চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আহমদ আল কবীর ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. বদরুল আলমের।
মনোনয়ন স্থগিত হয়েছে তৃণমূল বিএনপির কয়ছর আহমদ কাওসারের।
সিলেট-৬ আসনের সবার মনোনয়ন বৈধ ঘোষাণা করা হয়েছে। এ আসনে বৈধ প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের নুরুল ইসলাম নাহিদ, জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন, তৃণমূল বিএনপির শমসের মবিন চৌধুরী, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের আতাউর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের সাদিকুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সরওয়ার হোসেন।
আরও পড়ুন:আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২১ জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক কার্যালয় মিলনাতনে রোববার দুপুরে প্রার্থী-সমর্থনকারীদের উপস্থিতিতে মনোনয়নপত্র যাচাই শেষে এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার রেহেনা আকতার।
এ সময় আওয়ামী লীগের মানিকগঞ্জ-১ আসনে আব্দুস সালাম, মানিকগঞ্জ-২ আসনে মমতাজ বেগম এবং মানিকগঞ্জ-৩ আসনে জাহিদ মালেকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ২১জন প্রার্থীর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ঋণ খেলাপি ও কাগজপত্রে স্বাক্ষরে গড়মিল থাকায় জাতীয় পার্টিসহ অন্য দলের ১২জন প্রার্থীকে বাতিল ঘোষনা করা হয়।
জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং অফিসার রেহেনা আকতার বলেন, ‘কাগজপত্রে ভুল বা ঋণ খেলাপি অথবা অন্য কারণে যাদের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে, তারা আপিল করতে পারবেন। আইনগতভাবে তাদের আপিলের সুযোগ আছে।’
নোয়াখালী
নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এ তথ্য জানান।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী ঋণ খেলাপি হওয়ায় মামুনুর রশিদ কিরনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
নোয়াখালী-৩ আসনে মোট ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। এরমধ্যে নৌকার প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরনসহ চারজনের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। অন্যরা হলেন জাসদের জয়নাল আবদীন, স্বতন্ত্র আবুল কাশেম ও মনিরুল ইসলাম।
এ আসনে বৈধ প্রার্থী জাকের পার্টির মো. বাহার উদ্দিন, স্বতন্ত্র মিনহাজ আহমেদ, স্বতন্ত্র ডা. এবিএম জাফর উল্যাহ, সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. সুমন আল হোসাইন ভূঁইয়া।
এ ছাড়া বিভিন্ন কারণে তিনজনের মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে। তারা হলেন স্বতন্ত্র আক্তার হোসেন ফয়সাল, জাতীয় পার্টির ফজলে এলাহী সোহাগ ও সাম্যবাদী দলের মহিউদ্দিন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, ৩০ নভেম্বর মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিনও বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) রিপোর্ট অনুযায়ী মামুনুর রশিদ কিরন একজন ঋণ খেলাপি ছিলেন। তাই তার মনোনয়নপত্র আইন অনুযায়ী অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মামুনুর রশিদ কিরন বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ হালনাগাদ করা আছে। সব কাগজপত্র দেয়ার পরও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মনোনয়ন বাতিল করেছেন। আমি নির্বাচন কমিশন বরাবর আপিল করব।
কক্সবাজার
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদসহ পাঁচজনের মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
রোববার দুপুর ১২টার দিকে যাচাই-বাচাইয়ের প্রথম পর্ব শেষে কক্সবাজারের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের লালদীঘি শাখা থেকে ফিস প্রিজারভারস নামের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে সালাহউদ্দিন আহমদসহ অন্য পরিচালকরা প্রায় অর্ধ শত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। যা পরবর্তীতে খেলাপি হয়।
এরপর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তন হলেও ব্যাংকের শর্ত অনুযায়ী সালাহউদ্দিন আহমদ এখনো সেই ঋণের একজন জামিনদার।মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী সালাহ উদ্দিন আহমদ একজন ঋণখেলাপি ছিলেন।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যে অজুহাতে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে সেটি আদালতের মাধ্যমে স্টে করা ছিল। কেন মনোনয়ন বাতিল করা হলো আমি জানি না। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করব।
এদিকে কক্সবাজার-১ আসনে ৯ জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রেসিডিয়াম সদস্য এ এইচ সালাহউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, মহাসচিব আবদুল আউয়াল মামুন, ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ বশিরুল আলম, জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত প্রার্থী হোসনে আরা, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য জাফর আলম ও জাফর আলমের ছেলে তানভীর আহমদ সিদ্দিকী তুহিন।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, যাচাই-বাছাইয়ে শেষে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম, শাহনেওয়াজ চৌধুরী, কমেডিয়ান কমর উদ্দিন আরমান ও শামসুদ্দিন মুহাম্মদ ইলিয়াছের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কমেডিয়ান কমর উদ্দিন মুকুলসহ বাকি চারজনের মনোনয়ন কেন বাতিল করা হয়েছে সেটি তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শিমুল শর্মা বলেন, দ্বিতীয় পর্বে কক্সবাজার ৩ ও ৪ আসনের প্রার্থীদের মনোনয় যাচাই-বাচাই করা হবে। যাদের বিবেচনায় রাখা হয়েছে তাও জানানো হতে পারে।
এ ছাড়া কক্সবাজার- ২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ বাদশা ও কক্সবাজার-২ আসনের কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহীমের মনোনয়ন বিবেচনায় রাখা হয়েছে।
টানা তিন বার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ফেল করা মো. আবদুল আলী বেপারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়তে চাইছেন, তবে যাচাই-বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গেছে। এতে ভেঙে পড়েছেন তিনি, দিয়েছেন ‘আত্মহত্যার হুমকিও’।
রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের মনোনয়নপত্র যাচাই শেষে তার প্রার্থিতা বাতিল করেন জেলা প্রশাসক ও রির্টানিং অফিসার রেহেনা আকতার।
প্রার্থিতা বাতিলের কথা শুনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে মাটিতে কান্নায় লুটিয়ে পড়েন আবদুল আলী বেপারি। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য এসে তাকে শান্ত্বনা দেন এবং প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিলের পরার্মশ দেন।
হলফনামাপত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ৬০ বছর বয়সী মো. আবদুল আলী বেপারি মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বেড়াডাংগা এলাকার কিয়ামুদ্দিনের ছেলে। পেশায় তিনি একজন কৃষক। কৃষিকাজের মাধ্যমে বার্ষিক আয় ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং তার কাছে নগদ ২ লাখ টাকা ও এক ভরি স্বর্ণালংকার রয়েছে। আলীর শিক্ষাগত সার্টিফিকেট না থাকলেও তিনি স্বশিক্ষিত।
পরিবারিক সূত্রে জানা যায়, আবদুল আলী বেপারি ২০১১, ২০১৬ ও ২০২১ সালে ঘিওর উপজেলার সিংজুরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন এবং নির্বাচনে পরাজিত হন। এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
কান্নায় ভেঙে পড়া আবদুল আলী বেপারি বলেন, ‘আমি এখন আমার ভোটারদের মুখ দেখাব কেমনে, আমি আর বাঁচুম না। আমি ভোট দিতে না পারলে মরুম, আমার জীবন রাখুম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আবেদন, আমার ভোট আমাকে দিয়ে যেন মরতে পারি। আমার বিশ্বাস আছে, মানুষ আমাকে ভোট দেবে। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাব। যেকোনো চক্রান্তের মাধ্যমে আমার নমিনেশন বাদ দেয়া হয়েছে। আমি এই চক্রান্ত বিশ্বাস করি না। আমাকে আমার ভোট দেয়ার সুযোগ দেয়া হোক।’
আরও পড়ুন:দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে ব্যাখা দিতে নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির সামনে হাজির হলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান।
রোববার সকাল ১১টার দিকে অনুসন্ধান কমিটিতে নারায়ণগঞ্জ আদালতের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী ইয়াছিন হাবীবের কাছে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দেন তিনি।
সেখান থেকে বের হয়ে সাংবাদকিদদের শামীম ওসমান বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে তারা সুষ্ঠু সুন্দর নির্বাচন করতে সক্ষম। যারা নির্বাচন বানচাল করতে অগ্নিসংযোগ করছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, যেহেতু পুলিশ নির্বাচন কমিশনের আন্ডারে, তারা যেন মানুষের শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেয়া নিশ্চিত করতে পারে। আমরা এমনই নির্বাচন কমিশন চেয়েছিলাম। নির্বাচন কমিশন সক্ষম।
শামীম ওসমান বলেন, বিএনপি জামায়াত জ্বালাও-পোড়াও করছে। মানুষকে হত্যা করছে। ধ্বংসযজ্ঞ করছে। সেটার প্রতিবাদে আমাদের নেতা-কর্মীরা পাড়া মহল্লায় শান্তি মিছিল করেছে। নৌকা হলো শান্তির প্রতীক। আমরা অন্য সময় মিছিলের সময়ও নৌকার স্লোগান দেই। সে কারণেই হয়ত দিয়েছে।
তিনি বলেন, তবে আমি গর্ববোধ করি। অনেকের মুখে চুনকালি দিয়ে নির্বাচন কমিশন প্রমাণ করেছে তারা স্বাধীন। অনেকে দেশে বিদেশে নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন করে। আমি এত নির্বাচন করেছি, কখনও দেখিনি পত্রিকার খবরে প্রার্থীকে তলব করা হয়। যে মিছিলে আমি ছিলামও না।
বাংলাদেশের নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের বক্তব্যের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, জাতিসংঘ বলেছে সবার অংশগ্রহণ, দেখতে হবে জনগণ অংশগ্রহণ করছে কি না। পত্রিকা ইনিয়ে বিনিয়ে বিএনপি জামায়াতের অংশগ্রহণ করার কথা বলেছে।
তিনি বলেন, আমি এই মুহূর্তে মনোনয়ন ছেড়ে দেব জাতিসংঘ তিনটা কাজ করতে পারলে। ফিলিস্তিনে যে ধ্বংসযজ্ঞ চলছে সেটা যদি জাতিসংঘ বন্ধ করতে পারি, তাদের যদি নিজের ভূমিতে ফিরিয়ে দিতে পারে আর যদি ইউক্রেনের যুদ্ধ বন্ধ করতে পারে।
বাংলাদেশকে শবক দেয়ার আগে আমি জাতিসংঘকে অনুরোধ করব রোহিঙ্গাদের অবিলম্বে তাদের দেশে ফেরানোর ব্যাবস্থা করুন। রাজনৈতিক দল কাকে বলে, যারা পাঁচ শ মানুষ আগুনে পুড়িয়ে মেরেছে। এখনও ওরা আগুন সন্ত্রাস করছে। ওদের কী রাজনৈতিক সংগঠন বলবেন, না সন্ত্রাসী সংগঠন বলবেন।
শামীম ওসমান বলেন, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমাদের তরুণরা প্রমাণ করবে বাংলাদেশ কারও সামনে মাথানত করার দেশ না।
এর আগে ২ ডিসেম্বর শামীম ওসমানকে চিঠি দেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির সভাপতি যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ কাজী ইয়াসিন হাবীব।
চিঠিতে বলা হয়, গত শুক্রবার শহরের তল্লা এলাকাসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় আপনার পক্ষে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে মিছিল ও পথসভা করা হয়। এতে ওই এলাকায় যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।
এতে বলা হয়, এ ধরনের কার্যক্রম সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০০৮-এর ৬(ঘ) এবং ১২ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এ বিষয়ে ৩ ডিসেম্বর নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কার্যালয়ে লিখিত ব্যাখ্যাসহ কারণ দর্শানোর জন্য আপনাকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।
নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।
রোববার দুপুরে যাচাই-বাছাই শেষে তার মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদনে ঋণ খেলাপির হওয়ায় আবদুল মান্নানের মনোনয়ন বাতিল করা হয়।
আবদুল মান্নানের প্রতিনিধি মো. আবু সুফিয়ান খান বলেন, আমাদের প্রার্থীর সব মামলা স্থগিত এবং ঋণ হালনাগাদ রয়েছে। মনোনয়ন বাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করা হবে।
এর আগে সকাল থেকে জেলার আরও দুটি আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
নোয়াখালী-৪ আসনে মোট ৯ জন প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেন। এর মধ্যে মেজর (অব.) আবদুল মান্নানসহ চার জনের মনোনয়ন বাতিল হয়।বাতিল হওয়া অন্যরা হলেন গণতন্ত্রী পার্টির সারওয়ার ই দীন, জাসদের এস এম রহিম উল্যাহ ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের মো. জিহাদ চৌধুরী।
এ আসনে বৈধ প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী একরামুল করিম চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন, জাতীয় পার্টির মোবারক হোসেন আজাদ, জাকের পার্টির মো. সোহরাব উদ্দিন ও ইসলামী ফ্রন্টের মো. আবদুল আলীম।
পাবনা-২ (সুজানগর-বেড়ার একাংশ) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম)-এর প্রার্থী সংগীতশিল্পী ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পাবনা জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মু. আসাদুজ্জামান তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন।
তিনি বলেন, ‘ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত খেলাপি ঋণের কারণে ডলি সায়ন্তনীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে ডলি সায়ন্তনী বলেন, ‘কার্ডের বিষয়টি আমার নলেজে ছিল না। বিষয়টি আমি দ্রুত সমাধান করে আপিল করবে। আপিলে আমার মনোনয়নপত্র ফিরে পাব বলে আশা প্রকাশ করছি।’
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর বিকেল ৪টার দিকে পাবনা জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিজেই উপস্থিত হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন ডলি সায়ন্তনী।
সেদিন তিনি বলেন, ‘আমার জন্ম পাবনা শহরের সোনাপট্টি এলাকায়। দাদার বাড়ি সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ভায়না গ্রামে। সেখানে আমার চাচারা থাকেন। এজন্য আমি সেখানে প্রার্থী হয়েছি। আশা করি পাবনা-২ আসনের মানুষ আমার পাশে থাকবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য