বগুড়া শহরের বনানী গোল চত্বরের ভাস্কর্য ‘বীর বাঙালি’ সংস্কার করে বিকৃত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এটি মৌলবাদী গোষ্ঠীর পরিকল্পিত কাজ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি স্বাধীনতার বিরোধী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্র বলে মনে করছেন এর ভাস্করও।
রণাঙ্গনে যুদ্ধ শেষে বিজয়-সন্ধিক্ষণে কাঁধে রাইফেল নিয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধা ডান হাত দিয়ে শান্তির পায়রা উড়িয়ে দিচ্ছেন, এমন থিমের ভাস্কর্যটি রড-সিমেন্ট-বালু দিয়ে তৈরি। প্রায় নয় ফুট উঁচু মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ১৯৯১ সালে বগুড়া শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় স্থাপন করেছিল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। ধূসর বর্ণের ভাস্কর্যটি ছিল যুবক মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি।
পরে বগুড়া শহরের রাস্তা সংস্কার করতে গিয়ে ভাস্কর্য সরিয়ে নেয়া হয় শহরের বনানী এলাকায়। ২০১৬ সালে ‘ট্রাকের ধাক্কায়’ ভাস্কর্যটি ভেঙে যাওয়া নিয়ে ফের শুরু হয় তুমুল বিতর্ক। বগুড়া পৌরসভা ভাস্কর্যটি ‘পুনর্গঠন’ করে। এর মাধ্যমে ‘বীর বাঙালি’ ভাস্কর্যের বিকৃতি ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে।
নতুন ভাস্কর্যের হাতে শান্তির পায়রার জায়গায় স্থান পায় ‘হাঁস’। খালি পায়ে পরানো হয় বুট। পরনের পোশাক আর কাঁধে রাইফেলের বেল্ট বদলে যায়। চেহারাতেও বিকৃতি ঘটে। এতে ‘বীর বাঙালি’র জায়গায় চলে এসেছে এক জন পাকিস্তানি সেনার আদল।
বীর মুক্তিযোদ্ধা, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতা রেজাউল করিম মন্টু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িক, মুক্তচিন্তা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারকদের কাছে ‘বীর বাঙালি’ ভাস্কর্যটির পাদদেশ ছিল আন্দোলনের মিলনস্থল। নব্বই দশকের শুরুতে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে গণআদালতের আন্দোলনসহ সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী সব ছাত্র আন্দোলনের সমাবেশস্থল ছিল এই ‘বীর বাঙালি’ ভাস্কর্যের পাদদেশ।
‘ভাস্কর সুলতানুর ইসলাম ওই ভাস্কর্যটি নির্মাণ করে বিসিক শিল্প নগরীতে রাখেন। পরে তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার প্রয়াত ইলিয়াস হোসেন সাতমাথায় নিয়ে আসেন। পরে এটির নাম রাখা হয় ‘বীর বাঙালি’। ১৯৯৩ সালে গণআদালতকে কেন্দ্র করে জামায়াত বগুড়ায় হরতাল ডাকলে ছাত্রসমাজ প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। সাতমাথায় দিনব্যাপী দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।’
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম মন্টু নিউজবাংলাকে আরও জানান, জামায়াতের হরতালের সময় ভাস্কর্যের হাত ভেঙে নিয়ে যায়। শহরের কামারগাড়ী থেকে উদ্ধার করে আবার হাতটি প্রতিস্থাপন করা হয়। পরে ভাস্কর্যটির বিষয়ে সবাইকে অবহিত করার জন্য লিফলেট প্রকাশ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছিল।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের তখনকার সভাপতি ফিরোজ হামিদ খান রেজভী বলেন, ‘মৌলবাদীরা সদূরপ্রসারী চিন্তা থেকে ভাস্কর্যটি বিকৃত করতে পারে। তাদের সুপরিকল্পিত বিষয় এটা। ‘বীর বাঙালি’ নাম নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতির মাধ্যমে শান্তির পায়রা বহন করছে এটা মৌলবাদীরা হয়তো চায়নি। এ কারণে এটাকে বিকৃতি করে খেলনা জিনিসে পরিণত করা হয়েছে। আর খেলনা জিনিসের তেমন আবেদন থাকে না। তখন মনে হতে পারে তাহলে এমন ভাস্কর্য রাখার দরকার কী?’
মূলত ভাস্কর্য দেখাশোনা করে বগুড়া পৌরসভা। সাবেক ছাত্রনেতা রেজভী বলেন, ‘পৌরসভার উদাসীনতার কারণে এমন হয়েছে। একজন ভাস্কর যখন ভাস্কর্যটি তৈরি করেন তখন সেটা অনেক গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু যেনতেনভাবে এটা সংস্কার করা হটকারী সিদ্ধান্ত। এর মধ্যে একটা ষড়যন্ত্র আছে বলেও আমার মনে হয়।
‘নব্বইয়ের দশকে ভাস্কর্য ভাঙচুরের দিন সাবেক মেয়র রেজাউল করিম মন্টু ভাইয়ের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছিল মৌলবাদীরা। করা হয় মামলাও। এতে আমিসহ জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস জামান মুকুল, সাবেক মেয়র ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রেজাউল করিম মন্টু, তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুর রহমান দুলু, তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগে সাধারণ সম্পাদক বর্তমান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদাৎ আলম ঝুনুকে আসামি করা হয়।’
ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদৎ আলম ঝুনু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভাস্কর্য বিকৃতি স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির চক্রান্ত হতে পারে। বিষয়টি খুব গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা দরকার। একই সঙ্গে ভাস্কর্যটি স্বরূপে দৃশ্যমান স্থানে প্রতিস্থাপিত হোক। যেহেতু ভাস্কর সুলতান এখনো বেঁচে আছেন। তাকে দিয়ে আবার তৈরি করা হোক। একই সঙ্গে এই বিকৃতির বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।’
‘বীর বাঙ্গালি’র ভাস্কর সুলতানুর ইসলাম জানান, ‘আমার বাড়ি বগুড়ার গাবতলীর দুর্গাহাটায়। আমি বগুড়ার সন্তান। আমাকে বললে আগের সব অবয়ব ঠিক রেখে ভাস্কর্য তৈরি করে দিতে পারব। আমি বাণিজ্যিকভাবে ওই ভাস্কর্য তৈরি করিনি। অনুভূতি এবং চেতনা থেকেই বিসিক শিল্প নগরীতে তৈরি করেছিলাম। ভাস্কর্য বিকৃতির বিষয়টি শুনেছি। এটা আমার জন্য কষ্টদায়ক।’
বগুড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী আবু জাফর মো. রেজা জানান, ২০০৫ সালে সড়ক সম্প্রসারণের সময় সড়ক ও জনপথ ভাস্কর্যটি নিয়ে বনানী এলাকার প্রতিস্থাপন করে। তখনও মেয়র ছিলেন একেএম মাহবুবুর রহমান। পরে ২০১৬ সালে গাড়ির ধাক্কায় ভাস্কর্যটি ভেঙে গেলে পৌরসভা থেকে মাত্র আট হাজার টাকা খরচ করে আবার বসানো হয়। তখন প্রকৌশলীর দায়িত্বে ছিলেন আমিনুল হক ও মেয়রও ছিলেন মাহবুবুর রহমান। তবে আমার জানা মতে, কোনো ভাস্কর দিয়ে বীর বাঙালি মেরামত করা হয়নি।’
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বগুড়ার পৌর মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপারসের উপদেষ্টা মাহবুবুর রহমানের মোবাইলে ফোন করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক জানান, ‘এই ভাস্কর্য আগের আদলে নেই বলে বিভিন্নভাবে উঠে এসেছে। এটি আগের অবয়বে করার গণদাবি উঠেছে। আমি পৌরসভা মেয়রের সঙ্গে কথা বলে ভাস্কর্য আগের অবয়বে নিয়ে আসার জন্য কাজ করব।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে ২৭,২৪৯ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে। বিগত ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের একই মাসে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ ছিল ২১,৯১৬ কোটি টাকা। জুলাই-২০২৫ মাসে বিগত জুলাই-২০২৪ মাসের তুলনায় ৫,৩৩৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে। জুলাই ২০২৫ মাসে রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২৪.৩৩%।
জুলাই’২৫ মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক থেকে। এ খাত থেকে আদায় হয়েছে ১১,৩৫২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায়ের পরিমান ছিল ৮,৫৭১ কোটি টাকা। জুলাই ২০২৫ মাসে স্থানীয় পর্যায়ের মূসক আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ৩২.৪৫%।
আয়কর ও ভ্রমন কর খাতে জুলাই’২৫ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬,২৯৫ কোটি টাকা যা জুলাই’২০২৪ মাসের একই খাতে আদায়কৃত ৫,১৭৫ কোটি টাকার চাইতে ১,১২০ কোটি টাকা বেশি। আয়কর ও ভ্রমন করের ক্ষেত্রে জুলাই ২০২৫ মাসের আদায়ের প্রবৃদ্ধির হার ২১.৬৫%।
২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসে আমদানি ও রপ্তানি খাতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৯,৬০২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের জুলাই’২৪ মাসে এই খাতে আদায় ছিল ৮,১৭০ কোটি টাকা, প্রবৃদ্ধির হার ১৭.৫২%।
রাজস্ব আদায়ের এ ধারা ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখার জন্য আয়কর, মূল্য সংযোজন কর এবং কাস্টমস শুল্ক-কর আদায়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রচেষ্টা আরো জোরদার করার জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নানাবিধ কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
সম্মানিত করদাতাগণ আইনের যথাযথ পরিপালন নিশ্চিত করে যথাযথ পরিমান কর পরিশোধের মাধ্যমে দেশ গড়ার কাজের অন্যতম অংশীদার হবেন মর্মে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আশাবাদী।
কুমিল্লা নাঙ্গলকোটে ইউপি সদস্য আলাউদ্দিনকে বাড়ির সামনে থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় প্রধান আসামিকে ঢাকার হাতিরঝিল রেল মগবাজার রেলগেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযানটি শেষ করে র্যাব।
গ্রেফতারকৃত আসামী শেখ ফরিদ (৪৫) নাঙ্গলকোট উপজেলার বক্সগঞ্জ আলীয়ারা গ্রামের আবুল খায়েরের ছেলে।
শনিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে কুমিল্লা অশোকতলা এলাকায় র্যাব অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন
র্যাব ১১ এর কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মেজর সাদমান ইবনে আলম।
মেজর সাদমান জানান, নাঙ্গলকোটের আলিয়ারা গ্রামে দুই পরিবারের মধ্যে বংশপরম্পরায় একটি বিরোধ চলে আসছিল। গেল গেল ২৫ জুলাই গরুর ঘাস খাওয়া কে কেন্দ্র করে দুই পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
সেদিন দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত হয়।
এ ঘটনার রেশ ধরে গেলো ৩ আগস্ট দুপুরে আলিয়ারা গ্রামের বাসিন্দা আলাউদ্দিন তার চাচাতো ভাইয়ের জানাজার নামাজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে একটি সিএনজিতে তুলে নিয়ে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে এ ঘটনায় ৫ আগস্ট নিহতের ছেলে বাদী হয়ে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা বিপদসীমা অতিক্রম করায় নির্ধারিত সময়ের আগেই খোলা হয়েছে কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সব জলকপাট। সোমবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টা ২ মিনিটে হঠাৎ পানি বাড়তে থাকায় জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়।
কর্ণফুলি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, রাতে লেকের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুট ছুঁয়ে গেলে বিপদসীমা অতিক্রম করে। এতে প্রতি সেকেন্ডে ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলি নদীতে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, “প্রথমে সোমবার (৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা পরের দিন মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জলকপাট খোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। কিন্তু হঠাৎ অতিরিক্ত পানি প্রবাহের কারণে নির্ধারিত সময়ের আগেই সোমবার রাতেই জলকপাট খুলে দিতে হয়। তবে পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, কাপ্তাই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট বর্তমানে সচল রয়েছে, যেগুলোর মাধ্যমে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি লেক থেকে কর্ণফুলিতে গিয়ে পড়ছে। সবমিলিয়ে পানি নিঃসরণের হার এখন প্রতি সেকেন্ডে ৪১ হাজার কিউসেক।
ভাটি এলাকার জনসাধারণের উদ্দেশে তিনি বলেন, “পানি প্রবাহ বাড়লেও আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে, এবং প্রয়োজনে আমরা আগেভাগেই ব্যবস্থা নেব।”
স্থানীয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও এ বিষয়ে আগেই অবহিত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন কর্তৃপক্ষ।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে শপথ গ্রহণ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী আয়োজিত ‘লাখো কণ্ঠে শপথ পাঠ’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে কালীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শনিবার (২৬ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে এক ভাবগম্ভীর পরিবেশে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই মাসে নিহত শহীদদের স্মরণে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রার্থনা করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ। তিনি উপস্থিত সকলকে শপথ বাক্য পাঠ করান। দেশের সংবিধান ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখা, দুর্নীতি ও সামাজিক অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এবং দেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন অংশগ্রহণকারীরা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউএনও তনিমা আফ্রাদ বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ কেবল একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের চেতনার বাতিঘর। সেই শহীদদের আত্মত্যাগ থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে হবে। আজকের এই সম্মিলিত শপথ হোক দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেদের উৎসর্গ করার একটি নতুন অঙ্গীকার। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক পর্যন্ত সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে।"
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসনিম উর্মি, কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলাউদ্দিন, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা নেতৃবৃন্দ সহ উপজেলায় কর্মরত গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
বক্তারা জুলাইয়ের শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করে দেশের উন্নয়নে একযোগে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রশাসনের এই সফল আয়োজনে সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে এক নতুন মাত্রা দেয়। এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি কালীগঞ্জের মানুষের মধ্যে দেশ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ এবং নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আয়োজকরা।
ফেনীতে বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে দেখা দিয়েছে নতুন এক আতঙ্ক। বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতে মানুষের বাড়িঘরে আশ্রয় নিয়েছিল নানা প্রজাতির সাপ। এখন ঘরে ফিরলেও সাপ আতঙ্ক বিরাজ করছে স্থানীয়দের মাঝে। এরই মধ্যে পরশুরামে বিষধর সাপের কামড়ে রোকেয়া আক্তার রিনা (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে ফেনীর পরশুরামের পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রিনা পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম শহীদের স্ত্রী। তার এক ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি শুকিয়ে গেলে রান্না করার জন্য রান্নাঘরে গেলে সেখানে একটি অজ্ঞাত বিষধর সাপ রিনাকে কামড় দেয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এরপর ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের স্বামী শফিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার বিকাল ৫টার দিকে রিনা রান্না ঘরে যায়। এ সময় রান্নাঘরের একটি গর্ত থেকে বিষধর একটি সাপ বের হয়ে তার পায়ে কামড় দেয়। তার চিৎকার শুনে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্রেক্স নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার কোনো চিকিৎসা না হওয়ায় ফেনী সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার রেদোয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, হাসপাতালে আনার আগেই ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছিল।
টানা ৩ দিনের বৃষ্টিতে বেনাপোল বন্দর এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বন্দর অভ্যন্তরের অনেক স্থানে হাটু পানি জমায় মারাত্বক ভাবে ব্যহত হচ্ছে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া। যানবাহন ও নিরাপত্তাকর্মীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ায় বন্দরের ৯.১২.১৫.১৬ ও ১৮ নম্বর সেড থেকে লোড আনলোড বন্ধ হয়ে আছে।
ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বন্দরে হাটু পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে থাকে। কয়েক বছর ধরে এ দূর্ভোগ হলেও নজর নাই বন্দর কর্তৃপক্ষের। তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছেন, রেলকর্তৃপক্ষ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় পানি নিষ্কাসনে বাধা গ্রুস্থ্য হচ্ছে।
তবে এসব শেড ও ওপেন ইয়ার্ড অধিকাংশই দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তৈরী হয়নি। বন্দর সড়কের উচ্চতার চেয়ে পণ্যগারগুলো নিচু হওয়ায় একটু বৃষ্টিপাত বেশি হলে পানি নিষ্কাষনের অভাবে পণ্যগার ও ইয়াডে জলবদ্ধতা তৈরী হয়। এতে পানিতে ভিজে যেমন পণ্যের গুনগত মান নষ্ট হয় তেমনি চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। তবে আজ সকাল থেকে সেচ যন্ত্র চালিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক শামিম হোসেন জানান, বন্দরের জলবদ্ধতা প্রতি বছরে তৈরী হয়। বিশেষ করে রেল বিভাগ কালভাট না রেখে মাটি ভরাট করায় সমস্যার সন্মুখিন হতে হচ্ছে। বন্দরের পানি নিষ্কাসন ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে পড়েছে। তবে দ্রুত এ অবস্থা কাটিয়ে তুলতে পাশ্ববর্তী হাওড়ের সাথে বন্দরের ড্রেন তৈরীর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রেরক: রাশেদুর রহমান রাশু, বেনাপোল যশোর ।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত রোববার (৬ জুলাই) মালুমঘাট বাজার থেকে পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এক যুবক পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়া সে যুবক সাজ্জাদ হোসেন (২০) কে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ কলাতলীর একটি আবাসিক হোটেল থেকে আটক করে।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দিবাগত রাত তিনটায় কক্সবাজারের একটি আবাসিক হোটেল (ওয়ার্ল্ড বিচ রিসোর্ট) অভিযান পরিচালনা করে কক্সবাজারের ডিবি পুলিশ। রাত প্রায় তিনটায় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।
চকরিয়া থানা পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও কক্সবাজারের গোয়েন্দা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে আসামি সাজ্জাদ হোসেন কে আটক করতে সক্ষম হয় কক্সবাজার ডিবি পুলিশ।
এবিষয়ে চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পলাতক আসামি সাজ্জাদ কে কক্সবাজার ডিবি পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিকভাবে সদর মডেল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর চকরিয়া থানায় নিয়ে আসা হবে। তার বিরুদ্ধে একটি পুলিশ এসল্ট মামলা করা হয়েছে।
মন্তব্য