রাজশাহীর বেসরকারি শাহমখদুম মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষার্থীদের মারপিটের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার দুই জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শনিবার দুপরে আসামিদের মহানগর আমলি আদালতে নেয়া হয়। শুনানি শেষে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক মাহবুবুর রহমান।
শুক্রবার রাতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মনিরুজ্জামান স্বাধীনের স্ত্রী বিউটি খাতুন ও ভাই মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে মনিরুজ্জামান স্বাধীনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে রাজশাহীর চন্দ্রিমা থানায় মামলা করেন আহত ছাত্র আশিকুর রহমান। মামলায় নয় জনের নাম উল্লেখ করেন বাদী।
এদিকে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুসারে শনিবার সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি দল কলেজ পরিদর্শন করেছে। এ সময় তারা শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। পরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অন্য প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজে তাদের মাইগ্রেশন প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানান তারা।
এর আগে শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে জেলার বেসরকারি শাহমখদুম মেডিকেল কলেজ চত্বরে সাত শিক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে।
ওসি সিরাজুম মুনীর জানিয়েছিলেন, শিক্ষার্থীরা থানায় এসে অভিযোগ করেন কলেজ কর্মচারীরা তাদের ওপর হামলা করেছে। যদিও মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছিল, শিক্ষার্থীরা পরিকল্পিতভাবে এ বিশৃঙ্খলা ঘটিয়েছে।
শাহমখদুম মেডিক্যাল কলেজে ২২৫ শিক্ষার্থী রয়েছে। গত ২ নভেম্বর স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রাণলয় কলেজটি বন্ধের নির্দেশ দেয়। এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানান কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের অন্য যেকোনো মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। মন্ত্রণালয় এই আবেদন গ্রহণ করেছে।
ওসি সিরাজুম মুনীর জানিয়েছিলেন, করোনার কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ। দুপক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়।
প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীন বলেন, ‘দুপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। তবে এটি শিক্ষার্থীদের পরিকল্পিত ঘটনা। শনিবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটি দল আসছে বলেই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। মূলত পরিস্থিতি ঘোলাটে করার উদ্দেশ্য নিয়ে শিক্ষার্থীরা বন্ধ ক্যাম্পাসে যান।’
ঘটনার পর শুক্রবার রাতে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চন্দ্রিমা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন:সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এন্ডোস্কপির মাধ্যমে মোতালেব হোসেনের পেট থেকে আরও ৮টি কলম বের করেছেন চিকিৎসকরা।
সোমবার বিকেলে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এন্ডোসকপি করে তার পেট থেকে আরও ৮টি কলম বের করা হয়।
এ নিয়ে দুই দফায় অস্ত্রোপচার ছাড়াই মোট ২৩টি আস্ত কলম বের করা হলো ওই রোগীর পেট থেকে।
এর আগে ২৫ মে ওই রোগীর পেট থেকে ১৫টি কলম বের করা হয়।
ওই যুবক মোতালেব হোসেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার খুকনি আটার দাগ গ্রামের প্রয়াত আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। মোতালেব ৪ থেকে ৫ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে এসব কলম আস্ত গিলে খেয়েছেন বলে চিকিৎসকদের ধারণা।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে শুরু করে প্রায় এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় এন্ডোস্কপির মাধ্যমে তার পেট থেকে আরও ৮টি কলম বের করা হয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম তার পেটে আর ৪টি কলম আছে। কিন্তু আজ বের করার সময় দেখি ৮টি। বর্তমানে তার পেটে আর কোনো কলম নেই এবং এখন তিনি সুস্থ আছেন। কাল থেকে তাকে মুখ দিয়ে খাবার দেয়া হবে এবং ৪ থেকে ৫ দিনের মধ্যেই তাকে হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়ে দেয়া হবে।’
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, ‘রোগীটি প্রথমে পেটে ব্যথা নিয়ে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিল। পরে মেডিসিন ওয়ার্ডের চিকিৎসকরা এক্সরে ও আলট্রাসনোগ্রাম করেও পেটে কি সমস্যা সেটা শনাক্ত করতে পারছিলেন না। পরে কনসালটেন্ট হিসেবে রোগীটি আমার কাছে পাঠানো হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এন্ডোস্কপির মাধ্যমে পরীক্ষা করে তার পেটের ভেতর এতগুলো কলম দেখে প্রথমে চমকে যাই, এটা কীভাবে সম্ভব। পরে এন্ডোস্কপির মাধ্যমেই অপারেশন ছাড়াই আমরা কলমগুলো বের করার সিদ্ধান্ত নেই। আসলে বিষয়টি মোটেও সহজ ছিল না, আমাদের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জিং ছিল কাজটা।
কলমগুলো একে একে পাকস্থলীতে সেট হয়ে গিয়েছিল। কলমগুলো বের করতে আমাদের প্রথমে মাথায় চিন্তা ছিল, কলমগুলো যেন কোনোভাবেই শ্বাসনালিতে গিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ না হয়ে যায়। এ ছাড়াও রক্তক্ষরণের একটা চিন্তাও মাথায় ছিল। অতঃপর প্রায় তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আমরা কলমগুলো বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হই। সেদিন ১৫টি কলম বের করা হলেও আমাদের ধারণা ছিল তার পেটের মধ্যে আরও চারটি কলাম রয়ে গেছে। কিন্তু সোমবার আমরা কলমগুলো বের করার সময় দেখি চারটি নয়, তার পেটে আরও আটটি কলম রয়েছে। আমরা সেই আটটি কলম সোমবার বের করতে সক্ষম হয়েছি। এখন রোগী ভালো আছেন।’
মোতালেবের মা লাইলী বেগম বলেন, ‘এক বছর ধরে আমার ছেলের পেটের ব্যথায় ভুগছিল। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করার পরও সে সুস্থ হয়নি। ১৫ দিন আগে সমস্যা আরও বাড়ে তার। তখন সে খেতে পারতো না, খালি বমি করতো। এ কারণে তাকে এ হাসপাতালে আনা হয়। এখানে আনার পর তাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেটের মধ্য থেকে কলমগুলো বের করে এনেছেন চিকিৎসকরা।
তিনি আরও বলেন, ‘১২ বছর ধরে আমার ছেলে মানসিক রোগী। তাকে মানসিক চিকিৎসকও দেখানো হয়েছে। সে কলমগুলো না বুঝেই খেয়ে ফেলেছে।’
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রথমদিন তার পেট থেকে ১৫টি কলম বের করা হলেও সোমবার আরও ৮টি কলম বের করা হয়েছে। আমরা অত্যাধুনিক ভিডিও এন্ডোস্কপি মেশিনের মাধ্যমে এবং আমাদের দক্ষ ডাক্তার দ্বারা অপারেশন ছাড়াই শুধু এন্ডোস্কপির মাধ্যমে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষের পেট থেকে মোট ২৩টি কলম বের করে আনতে সক্ষম হয়েছি।’
আরও পড়ুন:প্রায় ১৮ বছর আগে গণমাধ্যমের খবরে দেশের মানুষ প্রথম জানতে পারে তাদের সম্পর্কে। সুশিক্ষিত দুই বোনের স্বেচ্ছা ঘরবন্দি জীবন ও তাদের আচার-আচরণ অবাক করে সবাইকে। কৌতূহলী পাঠকের আগ্রহ দেখে মিডিয়ায়ও একের পর এক খবর প্রকাশ হতে থাকে।
জানা যায়, আরও কয়েক বছর আগে থেকেই তারা স্বেচ্ছায় নিজেদের চার দেয়ালের ভেতর বন্দি করে নিভৃত জীবনযাপন করে আসছেন।
মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ওই বোন হলেন রিতা ও মিতা। তাদের মধ্যে নুরুন নাহার মিতা প্রকৌশলী এবং আইনুন নাহার রিতা চিকিৎসক। তারা দু’জনই সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত।
দীর্ঘ সময় পেরিয়ে বর্তমানে তারা শারীরিকভাবে আগের তুলনায় অনেকটাই সুস্থ। তবে মানসিক অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপচারিতায় এমনটিই জানিয়েছেন তাদের বড় বোন কামরুননাহার হেনা। বর্তমানে তার ধানমণ্ডির বাসাতেই থাকেন তারা।
২০০৫ সালের ৭ জুলাই রাজধানীর মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের ১ নম্বর বাড়ি থেকে রিতা ও মিতাকে উদ্ধার করে একটি মানবাধিকার সংগঠন। সে সময় বাড়িটি ‘ভূতের বাড়ি’ নামেই পরিচিত ছিল।
বাসার দরোজা-জানালা বন্ধ করে থাকতেন তারা। কারও সঙ্গে মিশতেন না, কথাও বলতেন না। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে থাকা মা বিনা চিকিৎসায় মারা যান। দুই বোন মায়ের লাশ ঘরেই রেখে দেন। কাউকে না জানিয়ে মধ্যরাতে হারিকেনের আলোয় তারা ঘরের বাইরে মায়ের লাশ কবর দেয়ার উদ্যোগ নেন। আর তা দেখে ফেলেন প্রতিবেশীরা। এভাবেই পুরো বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়।
মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত দুই বোনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। দিনের পর দিন ঘরবন্দি অবস্থায় থেকে তাদের শরীরের বর্ণ হয়ে গিয়েছিল ফ্যাকাশে। পুরো দেহ হয়ে উঠেছিল অস্থিচর্মসার। শরীরও প্রচণ্ড দুর্বল।
চিকিৎসায় দুই বোন কিছুটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। বেশ কিছুদিন তাদের নিয়ে কোনো আলোচনাও ছিল না। ২০১৩ সালে কাউকে না বলে তারা বগুড়ায় চলে গেলে ফের আলোচনা শুরু হয়। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে এনে রাখা হয় বড় বোন কামরুন নাহার হেনার বাসায়।
‘কেমন আছেন সেই রিতা-মিতা’ শিরোনামে ২০২১ সালের ৩১ মে নিউজবাংলায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপর আবার তাদের সবশেষ অবস্থা জানতে সম্প্রতি নিউজবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় বড় বোন কামরুন নাহার হেনার সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘আল্লাহন রহমতে এখন ওরা আগের তুলনায় ভালো আছে। আগে যেমন একটু বেশি উচ্ছৃখল ছিলো, এখন তা কিছুটা কম। তবে আর যাই করুক এখন ওরা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়াটা করে। আগে তো বেছে বেছে খাবার খেতো। বলতো- এটা খাবো না, সেটা খাবো না। কিন্তু তেমনটা অনেক কম করে।
‘অবশ্য ওদের আচরণটা এখনও আগের মতোই রয়ে গেছে। অনেকটা বাচ্চাসুলভ। কখনও ভালো ব্যবহার করে আবার কখনো উল্টোপাল্টা শুরু করে দেয়। এই ধরুন, ইচ্ছা হলো তো গান গাইতে শুরু করল। আবার ইচ্ছা জাগলে কুরআন শরীফ পড়ে। আর ঘর সব সময় অন্ধকার করে রাখে।
কামরুন নাহার বলেন, ‘বড় সমস্যাটা হলো যে ওরা দুজনই ঠিকমতো ওষুধ খেতে চায় না। আমি খাওয়ার জন্য ওষুধ দিয়ে এলে ওরা জানালা দিয়ে ফেলে দেয়। পাশের বাড়ি থেকে মানুষ দেখে ফেলে তারা আমাকে আবার সেই খবর জানিয়ে দেয়।
‘তখন আমি ওদের জিজ্ঞাসা করি ওষুধ কেন ফেলছো। তখন আবার ওরা কোনো কথা বলে না। এজন্য অনেক সময়ই আমি বুদ্ধি করে ওদের খাবারের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে দেই। কোনোদিন ডালের সঙ্গে মিশিয়ে দেই; আবার আরেক হয়তো অন্য কোনো খাবারের সঙ্গে। অবশ্য মাঝে মাঝে দেখি ওরা নিজের ইচ্ছায়ই ওষুধ খেয়ে ফেলে।’
হেনা বলেন, ‘আগে আমার একমাত্র মেয়ে ওর দুই খালার দেখাশোনা করতো। বেশ কিছুদিন হলো সে ব্যারিস্টারি পড়তে লন্ডনে আছে। এখন আমাকেই ওদের দেখতে হয়। আমি ছাড়া তো ওদের আর কেউ নেই। ওরা শারীরিকভাবে অসুস্থ হোক আর মানসিকভাবে অসুস্থ হোক, অন্য কেউ তো ওদের নিতে চাইবে না।
আমি ওদের একমাত্র বড় বোন। আমি কি ওদের ফেলে দিতে পারি? আমি মায়ের মতোই ওদেরকে দেখে রাখি। আমার স্বামীও ওদের দিকে খেয়াল রাখে। সাথে আমার একটা কাজের লোক আছে। সেও ওদের দেখভাল করে।’
রিতা-মিতা কী খেতে পছন্দ করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে হেনা বলেন, ‘ওরা আইসক্রিম আর রেস্টুরেন্টের খাবার খেতে পছন্দ করে। এই ধরুন ওদের মনে হলো এখন আইসক্রিম খাবে। তখনই আইসক্রিম কিনে দিতে হবে। অন্যথা হলেই খুব জেদ করে। তাই আমি বাসার ফ্রিজে আইসক্রিম কিনে রাখি। রিতা একটু সহনশীল হলেও মিতা আগে থেকেই একটু জেদী। ও-ই জেদ বেশি করে। তখন আবার রিতা ওর সঙ্গে তাল মেলায়।
‘আবার অল্প পরিমাণ আইসক্রিম দিলে ওরা খাবে না। কম দিলে বা না দিলে অনেক চিৎকার-চেঁচামেচি করে। হাতের কাছে কিছু পেলে সেটা ছুড়ে মারে। অথচ ডাক্তার ওদের আইসক্রিম কম খেতে বলেছেন।
‘করোনা মহামারির সময়ে আইসক্রিম নিয়ে ওরা বেশি ভুগিয়েছে। ওই সময়টাই ঠাণ্ডা কিছু খাওয়ার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই চিকিৎসকরা নিষেধ করতেন। কিন্তু ওদের আইসক্রিম চাই-ই চাই। সে সময়টাতে এই অসুস্থ দুই বোনকে নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় ছিলাম। তবে আল্লাহর রহমতে ওদের করোনা হয়নি।’
রিতা ও মিতা অন্ধকার রুমে দিন-রাত কী করে- এমন প্রশ্নের জবাবে বড় বোন হেনা বলেন, ‘ওরা একেক সময় একেকটি বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকে। কোনো সময় ধ্যানে বসে, কোনো সময় বিড় বিড় করে কী যেন বলে। আবার কোনো সময় গান গায়। বিশেষ করে হিন্দি গান। আবার কোনো সময় কুরআন শরীফ পড়ে।
‘আসলে আমরা এখন এগুলো নিয়ে বেশি মাথা ঘামাই না। ওরা ওদের মতো করে থাকে, আমরা আমাদের মতো কাজ করি। মানসিক আচরণটা ওদের এই ভালো এই খারাপ। মোট কথা ওদের আচরণ আগের মতোই আছে। বাইরে বের হয় না। বাইরের কারো সঙ্গে মেশেও না। ওরা সব সময় অন্ধকার ঘরে থাকতেই পছন্দ করে।’
হেনা আরও বলেন, ‘রিতা-মিতাকে যে ডাক্তার দেখাই তিনি বলেছেন ওদের নিয়ে চিন্তা না করতে। ডাক্তার বলেছেন, ওরা যদি ঠিকমতো খাওয়া দাওয়া করে তাহলে কোনো সমস্যা হবে না। ওদের স্বাস্থ্যও এখন ভালো আছে।’
কামরুন নাহার হেনার একমাত্র মেয়ে সামিনা তুন নুরের সঙ্গে দুই বছর আগে কথা হয়েছিল নিউজবাংলার। সে সময় তিনি বলেন, ‘খালারা ওষুধ খেলে ছয়-সাত মাস ভালো থাকে। খাওয়া ছেড়ে দিলে আবার আগের মতো মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে; উল্টোপাল্টা কথা বলে।’
উল্টোপাল্টা কী বলেন- এমন প্রশ্নে তখন সামিনা বলেন, ‘এই যেমন বলে- আমি তো পুরা বাংলাদেশের মালিক। আমিই এই দেশ চালাব। এই পুরা বিশ্বব্রহ্মাণ্ড আমার। আমাদের কাছে আল্লাহর বাণী আসছে।
‘তারা বসে বসে শুধু বিভিন্ন কোড বানায় আর বিড় বিড় করতে থাকে। এসব আমরা বুঝি না। তবে তারা দিনে সময় করে কুরআন তেলাওয়াত করে এবং বাংলায় অর্থসহ পড়ে।’
তিনি বলেন, ‘তারা এতটাই উল্টোপাল্টা বলে যে মাঝে মাঝে আমাকেই বলে- তুমি তো আগে ছেলে ছিলা, এখন মেয়ে হলা কীভাবে? আমার বাবা-মাকে বলে- তোদের ছেলে কই? এই মেয়ে কে? অথচ আমার কোনো ভাই নেই, আমিই বাবা-মার একমাত্র মেয়ে।’
কেন তারা ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন জানতে চাইলে সামিনা বলেন, ‘গত বছর হঠাৎ করেই দুই খালা বলে বসে- আমরা ওষুধ খাব না। আল্লাহর ওহি আমাদের কাছে আসছে। আমাদের ওষুধ খেতে নিষেধ করা হয়েছে।
‘শুধু ওষুধ নয়, তারা মাঝে মাঝে খাওয়া-দাওয়াই বন্ধ করে দেয়। আল্লাহর ওহিতে নাকি তাদের সব খাওয়া-দাওয়া বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়। তারপর আমরা সবাই মিলে জোর করে ধরে খাওয়াই।’
রিতা-মিতার এই ভাগনি বলেন, ‘রাতের বেলা যখন আমি পানি খেতে উঠি, তখন মাঝে মাঝে দেখি খালাদের রুম থেকে আওয়াজ আসছে। তারা তখন রুমের লাইট বন্ধ করে দিয়ে গান গায়। পুরনো দিনের বাংলা সিনেমার গান গায়। দুজনে মিলে হাসিঠাট্টা করে। তারা আমাদের সামনে তেমন কথা না বললেও নিজেদের মধ্যে অনেক গল্প করে, গান গায়।’
সামিনা বলেন, ‘তারা ডিকশনারি পড়ে। একেকটা করে ওয়ার্ড মুখস্ত করে। আর তাদের মাথায় যা আসে সেটা ফিজিক্সের কোডের মতো করে লেখে। উল্টোপাল্টা যা মনে আসে তাই লেখে। একজন সাধারণ মানুষ সেই লেখা দেখলে কিছুই বুঝতে পারবে না।
‘আমরা এতোটা কাছে থেকেও তাদের লেখা বুঝতে পারি না। খালারা আগে নিয়মিত টিভি দেখত। এখন আর টিভি দেখে না। এখন তারা কাউকেই পছন্দ করে না। যেই কাছে যায় তাকে গালাগালি করা শুরু করে।’
ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র অগ্রভাগ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির আবহাওয়াবিদ শরিফুল নেওয়াজ কবির রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এ আবহাওয়াবিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে শুরু করেছে। এর বড় অংশটি অতিক্রম শুরু করলে ঝড়বৃষ্টিসহ বড় পরিসরে প্রভাব বোঝা যাবে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় (১৮.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ৬টায় (১৪ মে, ২০২৩) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি কক্সবাজার-মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে।
“এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (১৪ মে, ২০২৩) বিকাল/সন্ধ্যা নাগাদ সিট্টুয়ের (মিয়ানমার) নিকট দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।”
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ১৯৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।’
আরও পড়ুন:প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে জানিয়ে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, ঝড়টি বাংলাদেশের দক্ষিণপূর্ব এবং মিয়ানমারের উত্তর উপকূল অতিক্রম করতে পারে রোববার দুপুরের মধ্যে।
ভারতের রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি ওই দিন বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের সিট্টুয়ের কাছে কিয়াউকপিয়ুর মাঝামাঝি উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এ সময় ঘণ্টায় বাতাসের একটানা গতিবেগ ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার হতে পারে, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ১৭৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার গভীর রাতে দেয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১২.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি বৃহস্পতিবার গভীর রাত ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও আরও ঘনীভূত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ নিয়ে বলা হয়, ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।’
উপকূলে সতর্ক সংকেত নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে দুই নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
‘উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সাথে তাদের গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হলো।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের সালনায় রাবেয়া আক্তার নামে এক কলেজ ছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা এবং নিহতের মা ও বোনকে গুরুতর আহত করার ঘটনায় মামলার একমাত্র আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানিয়ে বলেন, আসামি সাইদুল ইসলামকে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
প্রসঙ্গত, বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রাবেয়া আক্তারকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে সোমবার সন্ধ্যায়। এ সময় ওই কলেজছাত্রীর মা এবং বোনও গুরুতর আহত হয়েছেন। অভিযোগ ওঠে যে সাইদুল ইসলাম নামে স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।
স্বজনদের বরাত দিয়ে গাজীপুর সদর মেট্রোপলিটন থানার ওসি জানান, আবদুর রউফ গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায় স্ত্রী ও চার মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন। তিনি ছোট দুই মেয়েকে কোরআন শিক্ষার জন্য স্থানীয় টেকিবাড়ি জামে মসজিদের ইমাম মো. সাইদুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। তাদের পড়ানোর জন্য বাসায় যাওয়া-আসার সুবাদে বড় মেয়ে কলেজছাত্রী রাবেয়া আক্তারের দিকে সাইদুলের কুনজর পড়ে। তিনি রাবেয়াকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা সরাসরি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা হয়। সাইদুল এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়াকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন।
সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সাইদুল বাড়িতে ঢুকে রাবেয়াকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। তার চিৎকারে মা ও বোন এগিয়ে এলে তাদেরকেও কুপিয়ে আহত করে পালিয়ে যান সাইদুল।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাবেয়া মারা যান। গুরুতর আহত মা ও ছোট বোনকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে সাইদুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেন।
আরও পড়ুন:কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার মধ্যম মাঝিগাছা এলাকায় প্রেমের জের ধরে মাহিন নামে এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা হলেন- প্রেমিকার বাবা রওশন মিয়া ওরফে মুজা মিয়া ও তার ভাই এজাহারনামীয় আসামি জাহাঙ্গীর মিয়া।
সোমবার বেলা আড়াইটায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ কুমিল্লার কোম্পানি মেজর মোহাম্মদ সাকিব হোসেন।
মেজর সাকিব জানান, প্রেমিকার বাবা ও চাচার পিটুনিতে অসুস্থ হয়ে যুবকের মৃত্যু হয়। ছেলের মৃত্যু সংবাদের বিষয়ে কথা বলার সময় জেলার আদর্শ সদর উপজেলার মধ্যম মাঝিগাছা গ্রামের বাসিন্দা হিরন মিয়াও হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ঘটনা হওয়ায় র্যাব ছায়াতদন্ত শুরু করে। পরে এ ঘটনায় মামলা হওয়ার ৪ ঘণ্টার মধ্যে রোববার রাতে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সোমবার দুপুরে তাদেরকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোর্শেদ জানান, গ্রেপ্তার দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার (৪ মে) রাতে প্রেমের জেরে মাহিন নামে এক তরুণকে বেধড়ক পেটান প্রেমিকার চাচা ও বাবা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার মাহিন মারা যান। ছেলের মৃত্যুর খবর শুনে বাবা হিরণ মিয়াও মারা যান।
আরও পড়ুন:চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুরে কাপড়ের দোকানে দর কষাকষিকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে দুই যুবককে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন নিহত মামুন অর রশিদের বড় ভাই স্বপন আলী। মামলায় সদর উপজেলার হুচুকপাড়ার আলা উদ্দিনের ছেলে আকাশ আলীকে প্রধান আসামি করে আরও ১৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে।
চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ্ আল মামুন জানান, মঙ্গলবার রাতে ভালাইপুরে কাপড়ের দোকানে দর কষাকষিকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে দুই যুবককে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় মামলা হয়েছে। এর আগে সকালে ওই ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে। তারা হলেন-সদর উপজেলার হুচুকপাড়ার খবির উদ্দিনের ছেলে মিঠু মিয়া ও আব্দুল খালেকের ছেলে মানিক মিয়া। তাদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার ভালাইপুর মোড়ে একটি কাপড়ের দোকানে দর কষাকষিকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে সজল আলী ও মামুন অর রশিদ নামে দুই যুবককে হত্যা করা হয়।
মন্তব্য