আজকের এই দিনে আমি গভীরভাবে স্মরণ করছি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যিনি বিমা পেশায় ছিলেন বলেই আজকের এই দিনটি বিমা পেশাজীবিরা পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনাকেও ধন্যবাদ তার সাহসী নেতৃত্বে দিবসটিকে ‘খ’ শ্রেণি থেকে ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত করায়।
বিমা দিবসের শপথ হোক দ্রুত বিমা দাবি পরিশোধ করব আমরা। বিমা দিবস সব বিমা পেশাজীবীদের একটি আনন্দের দিন। ঈদ ও পূজার দিনের মতো আজ প্রতিটি মোবাইলে বিমার গুরুত্বের এসএমএস পাওয়া যায়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিবসটি উদ্বোধনের পর প্রতিটি বিভাগে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে র্যালি ও আলোচনা সভা হবে। এই কাজটি সব বিমা কোম্পানি মিলে ১০০ কোটি টাকা খরচ করলেও করা যেত না, যা সরকারের একটি নির্বাহী আদেশে হয়েছে। বিমা দিবসের ফলে জাতীয় পত্রিকায় ক্রোড়পত্র বের হচ্ছে। টিভিতে টকশো হচ্ছে ও সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমগুলোতে ব্যাপক প্রচার হচ্ছে।
বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে জাতি বিমার সুফল পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শিক্ষা বিমা সব বিমা কোম্পানিকে বিক্রি করার সুযোগ দেয়া হয়েছে। যে কোম্পানি যত দ্রুত দাবি পরিশোধ করবে সে কোম্পানি আগামী দিনে বীমা খাতের নেতৃত্ব দেবে। বাংলাদেশে গ্রুপ বিমার অপার সম্ভবনা রয়েছে।
বছরে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার গ্রুপ বিমাতে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করা সম্ভব। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিমার জনপ্রিয়তাও বাড়ছে। বর্তমানে দেশ স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাওয়ার কারণে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রিমিয়াম আদায় করা সম্ভব হচ্ছে। একই সঙ্গে বিমা গ্রাহকরা ঘরে বসে ব্যাংকের পাশাপাশি বিইএফটিএন ও মোবাইল ব্যাংকিং যেমন: বিকাশ, রকেট ও নগদে দ্রুত ও সহজে সুবিধা পাওয়ায় বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের নিকট দিন দিন গ্রাহক পর্যায়ে অভিযোগ হ্রাস পাচ্ছে।
আপনারা জেনে খুশি হবেন যে, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড শুরু থেকেই আন্তরিকতার সঙ্গে বিমা দাবি পরিশোধ করে আসছে। জেনিথ ইসলামী লাইফ প্রায় ১৬ কোটি টাকারও অধিক বিমা দাবি ইতোমধ্যে পরিশোধ করেছে।
আমরা গ্রুপ বিমাসহ অনলাইনে ইআরপি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ৭ কর্মদিবসে দাবি পরিশোধ করে থাকি। বিমার আস্থা ফিরে আসার জন্য বিমা দাবি পরিশোধের বিষয়ে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিমার সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য পঞ্চম শ্রেণি হতে পাঠ্যসূচিতে বিমা বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
লেখক: জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল
প্রয়োজনে কোম্পানির সম্পত্তি বিক্রি করে হলেও বিমা দাবি পরিশোধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী।
ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) নিজস্ব কার্যালয়ে ‘সিএমজেএফ টক’ অনুষ্ঠানে বুধবার তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সবাই বিমা করে সময় শেষে যেন টাকাগুলো বুঝে পায়, কিন্তু সমস্যা হচ্ছে সঠিক সময়ে গ্রাহক টাকা পাচ্ছে না। এ বিষয়ে একটা সেল গঠন করা হয়েছে। সেল কমিটির কাছে প্রচুর অভিযোগ আসে, সরাসরি কিংবা মেইল বা অন্যান্য মাধ্যমে। এ অভিযোগগুলো নিয়ে আমরা কাজ শুরু করছি। প্রয়োজনে কোম্পানির সম্পত্তি বিক্রি করে হলেও এসব বিমা দাবি পরিশোধের জন্য কাজ করছি।’
জয়নুল বারী বলেন, ‘এতদিন আমরা কমপ্লায়েন্স না মানলে শুধু কোম্পানিকে জরিমানা করেছি। এখন ব্যক্তিকেও অর্থাৎ অভিযুক্ত কর্মকর্তাকেও জরিমানা করা হবে। এসব সমস্যা সমাধানে আমরা বেশ কিছু আইন প্রনয়ণ করেছি, আরও কিছু আইন প্রনয়ণে কাজ করছি।’
তিনি বলেন, ‘কিছু কোম্পানি অতিরিক্ত টাকা খরচ করেছে। কেউ ম্যানেজমেন্ট খরচ বেশি করেছে। কেউ জমি কিনেছে বেশি দামে, এসব জমি বিক্রি করতে গেলে দেখা যায় কেনা দামের কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। এজন্য চাইলেও বিক্রি করা যাচ্ছে না। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যৌক্তিক দামে বিক্রি করতে, তাহলে গ্রাহকের টাকাগুলো পরিশোধ বড় ভূমিকা রাখবে।’
আইডিআরএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে ৭টা কোম্পানির বোর্ডকে ডেকেছি এবং তাদের অবস্থান তুলে ধরেছি। তাদের প্রিমিয়াম কেমন এবং কি ধরনের সম্পদ আছে তা দেখেছি। সব শেষ যাতে পলিসি যেগুলো মেচুয়েট হয় সেগুলো কিভাবে পরিশোধ করবে সেই পরিকল্পনা চেয়েছি। এসব তথ্যগুলো দিলে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিব।’
বিমা খাতে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কোনটা বলে মনে করেন এমন প্রশ্নের জবাবে জয়নুল বারী বলেন, ‘নন কমপ্লায়েন্স বড় চ্যালেঞ্জ। কোম্পানির অনিয়ম বন্ধ হলেই অনেক কিছু সমাধান হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডেল্টা লাইফের অবস্থা পেয়েছি খুবই খারাপ। আইন অনুযায়ী দুইটা বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমে হয়তো বোর্ড ভেঙে দেয়া। অথবা কোম্পানি বন্ধ করে দেয়া যায়, কিন্তু আমরা ভেবে দেখলাম কোম্পানিটি ভালো ছিল, তাই চেষ্টা করেছি কীভাবে পুনরায় দাঁড় করানো যায় সে কাজ শুরু করলাম। এরপর আদালত থেকে একটা রায় হয়। সব মিলে তাদের স্টোকহোল্ডারদের মতামতের ভিত্তিতে আমরা কিছু শর্ত দিয়ে আদালতে পাঠালাম। আদালতের রায়ের পর তাদের কার্যক্রমের বিষয়ে অনুমোদন করেছি।’
বিমা খাতের প্রচারের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, কত টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে পারবে সেটা বলা নেই।
ব্যয়ের পরিমাণ কত হতে পারে এই বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে জয়নুল বারী বলেন, ‘বিমা খাত ছড়িয়ে দেয়ার জন্য নতুন নতুন জায়গায় যেতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে নন লাইফ বিমা কোম্পানির সঙ্গে একটা বৈঠক করেছি এবং তাদের কিছু দিক নির্দেশনা দিয়েছি। প্রচারণায় গুরুত্ব রাখে বীমা খাতের ব্যাপ্তি বাড়াতে। এসব কাজে যেন অতিরিক্ত খরচ না হয় সেটা আমরা দেখব।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে জয়নুল বারী বলেন, ‘কোনো কাজ যেমন হুটহাট করা সম্ভব নয় ঠিক তেমনি রাতারাতি বিমা খাতের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। আপনারা দেখবেন আমরা দুর্নীতি করছি কি না। আমরা সমস্যা সমাধানে কাজ করছি কি না। সব কিছু দেখে আলোচনা সমালোচনা করবেন। তবে যৌক্তিক আলোচনা বা সমালোচনাকে আমি পছন্দ করি। আমরা যেমন বীমা খাতের উন্নয়নে কাজ করছি আপনারাও সে কাজে সহযোগিতা করবেন বলে আশা করছি।’
সিএমজেএফ সাধারণ সম্পাদক আবু আলীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি জিয়াউর রহমান।
আরও পড়ুন:ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিগুলোকে কারও চাপের কাছে নতি স্বীকার না করার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে ইন্স্যুরেন্সের টাকা দিতে হবে। যথাযথভাবে তদন্ত না করে কারও চাপে পড়ে কোনো টাকা দেবেন না।’
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার ‘জাতীয় বিমা দিবস-২০২৩’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘দাবিদার দাবি করবে বড় একটা। তার প্রকৃত ক্ষতিটাকে যাচাই-বাচাই করেই অর্থ দেবেন। সেটা কেন করা হয় না?
‘আমি মনে করব, যারা তদন্ত করতে আসে তারাও কি এর ভাগিদার? তাদেরও নিশ্চয়ই হাত আছে? সেটাও আমার সন্দেহ হচ্ছে।’
অতীতের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একসময় দেখা যেত গার্মেন্টসে শুধু আগুন লাগত। হঠাৎ কোনো এক গার্মেন্টসে আগুন লাগে। তারপর ইন্স্যুরেন্সের টাকা চায়। এবার মোটা অঙ্কের একটা টাকা চাইল। তখন আমি ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিকে বললাম যে, আপনারা এখন টাকা দেবেন না, আমি তদন্ত করব।
‘তদন্ত করে দেখা গেল, ওই গার্মেন্টসের এক মেয়ে শ্রমিককে ২০ হাজার টাকা দিয়ে আগুন দিয়ে তারপর ইন্স্যুরেন্সের মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করা হয়। যেখানে কিছু নেই, যেখানে তারা বসে খাওয়া-দাওয়া করত, সেখানে আগুন দেয়া হয়েছিল। ওই মহিলাকে যখন ধরা হলো তখন সে স্বীকার করল তাকে দিয়ে এটা করা হয়েছে। এত ঘন ঘন আগুন একটা জায়গায় লাগবে কেন? সে ক্ষেত্রে বিমা কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকা দরকার।’
আগুনে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের পরামর্শ দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আগুনে কতটুকু ক্ষতি হলো সেটা যথাযথভাবে তদন্ত করা দরকার। যথাযথভাবে তদন্ত না করে, কারও চাপে পড়ে কোনো টাকা দেবেন না। একটা ফ্ল্যাটে কী সম্পদ থাকতে পারে যে, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি তাকে ৪০ কোটি টাকা দেবে? আপনাদের কাছে এর জবাব আছে? তাহলে কীভাবে গেল সাধারণ বিমা থেকে।
‘আমার কাছে এই ধরনের একটা ঘটনা এসেছে সামনে। আমি এটাও তদন্ত করাব। কত সম্পদ একটা ফ্ল্যাটের মালিকের কাছে আছে যে, তার ৪০ কোটি টাকা খরচ হয়ে গেল আর বিমা থেকে টাকা নিয়ে গেল? যার ঘরটা সবচেয়ে বেশি পুড়ল তার বিমাও নেই। সে কিছু পেল না। এসব বিষয়ে সকলের একটু নজর দিতে হবে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বিমা পলিসি মানুষ যাতে গ্রহণ করে তার জন্য আপনাদের প্রচার করতে হবে। সেই প্রচারটা ব্যাপকভাবে করতে হবে। আগে অনেক যুবসমাজ বিমার এজেন্ট হিসেবে কাজ করে অর্থ উপার্জন করত।
‘সেই এজেন্ট নিয়োগ করা এবং তাদের দিয়ে কাজ করানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এতে কর্মসংস্থানেরও একটা সুবিধা হবে। বেকার যুবকরা এই পেশায় যাতে আরও বেশি আসে, তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। পরিবহনের ব্যাপারটা আমি দেখব।’
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিমার যোগসূত্র নিয়ে তার কন্যা বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে ইন্স্যুরেন্সের একটা যোগসূত্র রয়ে গেছে। জীবন-জীবিকার জন্য আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে দায়িত্ব নেন, তবে এটা বেশি দিন টেকেনি। কারণ ১৯৬২ সালে আমার বাবাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
বাবার ইন্স্যুরেন্সে চাকরি করার সময়টা জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কারণ বাবা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে চাকরি করেছেন, গাড়ি পেয়েছেন; আমরাও বেশ ভালোভাবে আছি। এই সময়টা বাবা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির সঙ্গে আমাদের একটা আত্মার যোগাযোগ আছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বসেই ছয় দফা প্রণয়ন করেছিলেন বাবা। পুরো জিনিসটা টাইপ করেছিলেন মোহাম্মদ হানিফ। পরে এটা একজন বিজ্ঞ ব্যক্তিকে দিয়ে ট্রান্সলেশন করা হয়।
‘আমাদের যে স্বাধীনতা অর্জন বা ছয় দফা প্রণয়ন, ছয় দফার ভিত্তিতে সত্তরের নির্বাচন, সবই কিন্তু ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে বসেই করা হয়। তাই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে ইন্স্যুরেন্সের এক যোগসূত্র রয়ে গেছে।’
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ। এতে আরও বক্তব্য দেন বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী ও বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন।
বিমা দিবস উপলক্ষে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
আরও পড়ুন:জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের গ্রাহক আব্দুর রহিম প্রামাণিকের মৃত্যু দাবির ৯৮ হাজার ১৮৯ টাকার চেক নমিনি তার ছেলে নাজমুল হোসাইনের কাছে হস্তান্তর করেন কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান।
সাভারের আশুলিয়ার পলাশবাড়ীতে লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিটির উন্নয়ন সভায় এ চেক হস্তান্তর করা হয়।
কোম্পানিটি জানায়, আব্দুর রহিম প্রামাণিকে মাসিক এক হাজার টাকা কিস্তি দিয়ে মারা যান।
জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডের ডিজিএম মশিউর রহমান এর সঞ্চালনায় ও জিএম মুকুল গাজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম নুরুজ্জামান এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- সিনিয়র জিএম মো. জিয়াউর রহমান, মোটর শ্রমিক লীগ ঢাকা জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. শওকত আলী প্রমুখ। এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে কোম্পানিটির বাছাইকৃত শতাধিক উন্নয়ন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।
শেখ কবির হোসেন আবারও শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল।
রোববার প্রতিষ্ঠানটির ২২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) আগামী দুই বছরের জন্য তাদের এই পদে নির্বাচিত করা হয়।
ডিজিটাল প্লাটফর্মে ২২তম এজিএমে শেয়ারধারীদের সর্বসম্মতিক্রমে ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশও অনুমোদন করা হয়।
সিডিবিএল বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। ডিপোজিটরি আইন ১৯৯৯, ডিপোজিটরি প্রবিধানমালা ২০০০, ডিপোজিটরি (ব্যবহারিক) প্রবিধানমালা, ২০০৩ এবং সিডিবিএল বাই লজ অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংক, বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিদেশি ব্যাংক, ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অফ বাংলাদেশ (আইসিবি), তালিকাভুক্ত কোম্পানি, বিমা কোম্পানি, ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের সহায়তায় ২০০০ সালে গঠন হয় সিডিবিএল। তবে প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে ২০০৩ সালে।
বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ইলেকট্রনিক ফর্মে সংরক্ষণ, ইলেকট্রনিক পদ্ধতির মাধ্যমে শেয়ার হস্তান্তর এবং স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন করা সব শেয়ারের নিষ্পত্তি করে থাকে সিডিবিএল।
সংস্থার চেয়ারম্যান শেখ কবির হোসেনের সভাপতিত্বে এজিএমে পরিচালক তপন চৌধুরী, আজম জাহাঙ্গীর চৌধুরী, ইউনুসুর রহমান, আসিফ ইব্রাহীম, সাঈদ বেলাল হোসেন, নাসের এজাজ বিজয় এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও শুভঙ্কর কান্তি চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:বিশেষ ছাড় পাওয়া ২৬ বিমা কোম্পানি পুঁজিবাজারে কতটুকু বিনিয়োগ করেছে সেটি যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
বুধবার এ নিয়ে আলোচনার জন্য কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।
বিকাল সাড়ে তিনটায় কমিশনের মাল্টিপারপাস হলে ডাকা এই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন বিএসইসির কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এতে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যানকেও থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘তাদেরকে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে বিশেষ ছাড় দেয়া হয়েছিল। তাদের মূলধনের ২০ শতাংশ এখানে বিনিয়োগ করার কথা ছিল। সেটা তারা কতটা করেছে সে বিষয়ে জানব আমরা। আবার যারা এখনও আইপিওতে আসেনি তাদের কোনো সহায়তা দরকার আছে কি না, সেটি নিয়েও আলোচনা হবে।’
২৬টি বিমা কোম্পানিকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির জন্য ছাড় দিয়ে ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে বিএসইসি। প্রজ্ঞাপন অনুসারে কোম্পানিগুলো ফিক্সড প্রাইস পদ্ধতির আইপিওর মাধ্যমে ন্যূনতম ১৫ কোটি টাকার তহবিল তুলতে পারবে।
এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে তাদের ইক্যুইটির ন্যূনতম ২০ শতাংশ অর্থ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে হবে।
দেশে বর্তমানে ৮১টি বিমা কোম্পানি রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫টি জীবন বিমা ও ৪৬টি সাধারণ বিমা কোম্পানি। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৫৫টি।
ছাড়ের ঘোষণার পরে নতুন করে দুটো বিমা কোম্পানি পুঁজিবাজারে এলেও রাষ্ট্রায়ত্ত জীবন বিমা করপোরেশন ও সাধারণ বিমা করপোরেশন ছাড়াও ২৪ কোম্পানি তালিকাভুক্তির বাইরে।
সরকারি দুটি কোম্পানির তালিকাভুক্তির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় ও সরকারের উদ্যোগের প্রয়োজন হবে।
বেসরকারি ২৪টি কোম্পানি বিশেষ এই ছাড়ের আওতায় আছে।
যেসব কোম্পানিকে ডাকা হয়েছে
যেসব কোম্পানিকে ডাকা হয়েছে সেগুলোর মধ্যে জীবন বিমা কোম্পানিগুলেঅ হলো: হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গোল্ডেন লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সানফ্লাওয়ার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বায়রা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বেস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, চার্টার্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রোটেক্টিভ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আলফা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্স, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মার্কেন্টাইল ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, স্বদেশ লাইফ ইন্স্যুরেন্স ও ট্রাস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলো হলো এলআইসি (বাংলাদেশ), মেঘনা ইন্স্যুরেন্স, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স, সাউথ এশিয়া ইন্স্যুরেন্স, ইসলামী কমার্শিয়াল ইন্স্যুরেন্স, ইউনিয়ন ইন্স্যুরেন্স, দেশ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, সেনাকল্যাণ ইন্স্যুরেন্স ও সিকদার ইন্স্যুরেন্স।
আরও পড়ুন:পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেডকে সার্বিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য তিন বছর মেয়াদি পরিকল্পনা জমার নির্দেশ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।
সোমবার আইডিআরএ’র সঙ্গে পদ্মা ইসলামী লাইফের পরিচালনা পর্ষদের এক সভায় এ নির্দেশনা দেয়া হয়। আইডিআরএ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারীর সভাপতিত্বে সভায় নিয়ন্ত্রক সংস্থার সব সদস্য ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, পদ্মা ইসলামী লাইফের সব পরিচালক এবং মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
আইডিআরএ’র নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিমার প্রিমিয়াম আয়, রিনিউয়াল হার, ব্যবস্থাপনা ব্যয়, লাইফ ফান্ডের পরিমাণ, বিনিয়োগ, অনিষ্পন্ন বিমা দাবির পরিমাণ, পরিশোধিত বিমা দারির পরিমাণ ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়।
সভায় কোম্পানির সার্বিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য তিন বছর মেয়াদি সময়ভিত্তিক পরিকল্পনা আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও দ্রুত বিমা দাবি পরিশোধ ও কর্তৃপক্ষের জারি করা সব নির্দেশনা ও অনুশাসন পরিপালনের নির্দেশ দেয়া হয়।
মন্তব্য