× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

মতামত
Jail Murder Bangabandhus beloved Kamaruzzaman
google_news print-icon

জেল হত্যা: বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য একজন কামারুজ্জামান

জেল-হত্যা-বঙ্গবন্ধুর-স্নেহধন্য-একজন-কামারুজ্জামান
প্রতি বছর ৩ নভেম্বর ফেরে! শোকার্ত অনুভবে বাবার ওই দুই মায়াবী চোখের মাঝে দৃষ্টি দিলেই প্রদীপ ভাসে। যে প্রদীপের শক্তি আমাকে বাংলাদেশের জন্য রাজনীতি করতে তাগিদ দেয়। আমার পরিবারে সেই রক্ত, যে রক্ত বেঈমানি করতে জানে না।

‘দেশপ্রেমিক রাজনীতিকেরা সবসময় দেশের জন্য মৃত লাশ হতে প্রস্তুত থাকে, কিন্তু কখনোই হত্যার আদেশ দিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার বন্দোবস্তে যায় না’- এমন উক্তিকে ধারণ করেই ৫১ বছরের বাংলাদেশকে যে কেউ একবার দেখে নিতে পারেন তৃতীয় চোখ দিয়ে।

একদিকে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার নিথর দেহ পড়ে থাকা এবং তা সে লাল সবুজের বাংলাদেশের জন্যই। অন্যদিকে প্রতিবিপ্লবকারীদের হত্যা করার উৎসবে শাসকশ্রেণি হয়ে পড়ার অযাচিত প্রেক্ষাপট… কষ্ট তাই পাই।

আজও ভুলিনি, ভুলতে পারব না। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত জাতির জনক, আমার বাবা এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও পিতৃতুল্য তিন চাচা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও মনসুর আলীর পৃথিবী থেকে বিদায় নেয়ার এমন নৃশংস কু-উদ্যোগের জবাব দিতে ইচ্ছে করে। মনকে স্বান্তনা দেয়ার অযুতবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হলো। বাঙালির ভাষা ললাটে ধূসর অস্ত্রের আমদানিতে জাতি নির্বাক হয়ে যখন সবকিছু অবলোকন করছে, ঠিক একই ধারাবাহিকতায় পঁচাত্তরের ৩ নভেম্বরের প্রথম প্রহরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে হত্যা করা হয়।

অনভিপ্রেত এবং অতি অবশ্যই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়ে এমন পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসেই বিরল। সারা পৃথিবীর রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের মধ্যে এমন কালো অধ্যায়ের জন্ম নেয়া নিয়ে উন্নত দেশগুলো বা সংস্থাগুলোর কথিত মানবাধিকার চাইবার দাবি নিয়মিত সংস্কৃতির অংশও হতে পারেনি।

৩ নভেম্বর, ১৯৭৫। উপলক্ষতাড়িত ট্র্যাজিক দিবস হিসেবে আমরা কেউ কেউ জেলহত্যা ইস্যু নিয়ে কলম ধরছি। অভিমানের উচ্ছ্বাসে রাজনৈতিক ধারাভাষ্য দিয়ে ইতিহাস সংকলনের একটা চেষ্টা!

আমি কী লিখব? সন্তান হিসাবে কী বলব? বঙ্গবন্ধু ও তার তনয়ার আদর্শের সৈনিক হিসেবে রাজনৈতিকভাবে কী লিখব? ফলত, জানা নেই।

আমার স্মৃতির পাতায় জেল হত্যা এক বেদনাবিধুর ঘটনা। আমার বাবা এ এইচ এম কামারুজ্জামান যেদিন শহীদ হলেন, আমি ও আমার ছোট ভাই স্বপন তখন কলকাতায় রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে লেখাপড়া করছি। বাবার মৃতদেহটি দেখার কোনো সুযোগ আমরা পাইনি।

বাবা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এক অতন্ত্র সৈনিক। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ তার জীবনভাবনার মূল সোপান ছিল। সারাটা জীবন তিনি সেই আদর্শ ভাবনাকে অবিচল নিষ্ঠা এবং সাধনায় ব্রত হয়ে পালন করে গেছেন। নিমগ্ন থেকেছেন সত্য ও নীতির পথে। বঙ্গবন্ধুর নিঃস্বার্থ সহযোদ্ধা হিসেবে আপস করেননি ১৫ আগস্টের হত্যাকারী খুনীচক্রের সঙ্গে। শুধু আমার বাবা নন, অন্য তিন জাতীয় নেতাও ছিলেন একই রকমের ইস্পাতসম মনোবলের অধিকারী।

মায়ের কাছে শুনেছি, সেদিনের নিকষ কালো তিমির রাত্রি করে ঢাকার রাজপথে ছুটে চলা একটি জলপাই রঙের জিপ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে দাঁড়িয়ে গেল। লাফিয়ে নামল কয়েকজন কালো পোশাক পরা অস্ত্রধারী। কারারক্ষীদের গেট খোলার নির্দেশ দিলো তারা।

কারারক্ষীরা শীর্ষ নির্দেশ ছাড়া গেট খুলবেন না। অগত্যা বঙ্গভবনে ফোন করল খুনিরা। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে যে নির্দেশ এসেছিল সেটা আমাদের সবার জানা। বঙ্গভবনের নির্দেশ পেয়ে গেট খুলে দিলো কারারক্ষীরা।

ভেতরে ঢুকে তাদের আবদার অনুযায়ী জাতীয় চারনেতা তাজউদ্দিন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, আমার বাবা এইচ এম কামারুজ্জামানকে ১নং সেলে একসঙ্গে জড়ো করার আদেশ দেয়া হলো। অস্ত্রের মুখে বাধ্য হয়ে কারারক্ষীরা সে নির্দেশ পালন করলেন। খুনি মোসলেম বাহিনী সেই ১নং সেলে ব্রাশফায়ারে নিভিয়ে দিলো জাতির সূর্য সন্তানদের জীবন প্রদীপ। সেকেন্ডের ব্যবধানে হারিয়ে গেল বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর অন্যতম চার নেতার প্রাণ স্পন্দন।

বিশ্বাস করি, বাংলাদেশের জন্য ও ইতিহাসের সঙ্গে যাদের নিবিড় সম্পর্ক, সেই গুণী মানুষগুলো হারিয়ে গেলেও হারায়নি তাদের অমর কৃতিত্ব ও অসীম অবদান। তারা গণমানুষের অকুণ্ঠ ভালোবাসা ও সমর্থন পেয়েছিলেন বলেই আজও আমরা তাদের সন্তান হিসেবে মানুষের কাছে পৌঁছুতে পেরেছি।

দেশবাসী অবগত আছেন, আল্লাহর অশেষ রহমত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার অশেষ স্নেহ ও নির্দেশনায় এবং প্রিয় রাজশাহীবাসী ভালোবাসায় আমি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। দেশের শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য হতে পেরেছি। জাতির পিতা ও আমার বাবার রেখে যাওয়া কাজগুলো সমাধান করার প্রয়াসে দেশসেবায় আত্মনিয়োগের সুযোগ পেয়েছি।

বাবার অনেক স্বপ্ন ছিলো রাজশাহীকে নিয়ে। তিনি যখনই সুযোগ পেয়েছেন রাজশাহীর কথা জাতীয় পর্যায়ে পেশ করে এর উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছেন। রাজশাহীতে খেলাধুলার পরিবেশ তৈরির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। তিনি জানতেন, খেলাধুলার মাধ্যমে গড়ে উঠবে সুস্থ ও সুন্দর যুব সমাজ। তিনি বেশ কিছুদিন রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সমিতির সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন।

বাবা বেশ ধর্মভীরু ছিলেন। ছোটবেলায় তাকে নিয়মিত নামাজ আদায় ও পবিত্র কোরআন শরিফ তিলাওয়াত করতে দেখেছি। তিনি এত দ্রুত কোরআন তিলাওয়াত করতেন যে, তাকে কোরআনের হাফেজ বলে মনে হতো।

পরের দিকে, বিশেষ করে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দেশের জন্য তিনি অত্যন্ত ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। ফলে তাকে আমরা বাসায় তেমন দেখতে পেতাম না। যতক্ষণ বাসায় থাকতেন সর্বক্ষণ নেতা-কর্মীদের দ্বারা সন্নিবেষ্টিত হয়ে থাকতেন। এর ফলে আমরা তেমন বাবার সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ পেতাম না। আমরা সব ভাই-বোনই বেশ মিস করতাম তাকে। এজন্য আমাদের মাঝে মাঝে রাগও হতো।

বাবা অত্যন্ত নরম স্বভাবের মানুষ ছিলেন। তাই বলে আমরা তাকে ভয় পেতাম না, এমন নয়। তার চোখের দিকে তাকানোর সাহস আমাদের ছিল না। কোনো অপরাধ করলে শুধু নাম ধরে ডাকলেই আমাদের অবস্থা খারাপ হয়ে যেত।

বাবার বড় এবং ছোটমেয়ে উভয়েই খুব প্রিয় ছিল। বড় আপা পলিকে বাবা বেশি ভালবাসতেন। মায়ের সংস্পর্শেই আমরা বড় হয়েছি। আমার মায়ের ছিল অসীম ধৈর্য। তিনি বাবার রাজনৈতিক সঙ্গীদের যথেষ্ট সম্মান করতেন। মায়ের ওই উদারতা ও সহায়তা না থাকলে বাবার পক্ষে অত বড় নেতা হওয়া হয়ত সম্ভব ছিল না।

প্রচলিত একটি কথা আছে, প্রত্যেক সফল পুরুষের পেছনে কোনো না কোনোভাবে একজন নারীর অবদান আছে। এ কথাটা আমার মায়ের ক্ষেত্রে দারুণভাবে প্রযোজ্য বলে আমাদের মনে হয়। বিশেষ করে স্বাধীনতার নয় মাস ছোট ছোট ছেলে-মেয়েসহ তিনি যে কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে দিন কাটিয়েছেন সেটা সম্ভব না হলে বাবার পক্ষে মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সম্ভব হতো কিনা বলা মুশকিল। বলাবাহুল্য, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেসাও ছিলেন অসীম ধর্যের অধিকারী। তিনিও আজীবন বঙ্গবন্ধুর সব কাজের প্রেরণা ছিলেন।

বাবা ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৬২ সালে তিনি প্রথম নির্বাচনি রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। তার প্রথম নির্বাচনে অংশগ্রহণ ও তার বাবা আবদুল হামিদের সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে এক চমকপ্রদ ঘটনার কথা আমরা শুনেছি। ওই ঘটনাটি তখনকার দিনের রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে আজও অনুসরণীয় আদর্শ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

বলে রাখা জরুরি যে, আমার দাদা আবদুল হামিদ রাজশাহী অঞ্চল থেকে দীর্ঘদিন মুসলিম লীগের প্রার্থী হিসেবে আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছিলেন। ১৯৬২ সালের নির্বাচনে তার ছেলে কামারুজ্জামান নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চাইলে আবদুল হামিদ নির্বাচন থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন।

বাবা জানতেন পিতা প্রতিদ্বন্দ্বী হলে তার পক্ষে নির্বাচনে জয়লাভ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। তাই তিনি মায়ের কাছে আবদার করলেন, বাপজানকে বুঝিয়ে যেন নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে চেষ্টা করেন! অগত্যা আবদুল হামিদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন।

নির্বাচনি এলাকা সফরে গিয়ে ভিন্ন চিত্র প্রত্যক্ষ করলেন আমার বাবা। এলাকার মুরুব্বিদের বক্তব্য হলো, দীর্ঘদিন মুসলিম লীগের প্রতি সমর্থন করতে অভ্যস্ত বিধায় তারা হারিকেন (মুসলিম লীগের নির্বাচনি প্রতীক) ছাড়া অন্য কোনো মার্কায় ভোট দিতে পারবেন না। আবদুল হামিদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বাবাকে দায়ী মনে করে তারা তাকে সমর্থন দেয়া থেকে বেঁকে বসলেন।

অবস্থা বেগতিক দেখে বাবা বহু চেষ্টা করে অন্তত একটা জায়গায় রফা করতে সমর্থ হলেন যে, আবদুল হামিদ সাহেব যদি এলাকায় এসে তার পক্ষে ভোট চান, তাহলে তারা বাবাকে ভোট দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন।

এমন একটি পরিস্থিতিতে বাবা তার বাপজানের কাছে কথাটা বলতে সাহস না পেয়ে মায়ের কাছে বায়না ধরলেন, পিতা যেন তার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু আবদুল হামিদের কাছে কথাটা বলতেই তিনি প্রচণ্ড রেগে গেলেন। একটা দলের সভাপতি হয়ে তিনি অন্য দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না, সে যেই হোক, এটা তার সাফ কথা।

বাবা হতাশ হয়ে এক রকম প্রচার বন্ধ করে দিয়ে বাড়িতে বসে রইলেন। পিতার সহযোগিতা ছাড়া নির্বাচনি বৈতরণী পার হওয়া কিছুতেই সম্ভব নয় এটা তিনি বুঝতে পারছিলেন। সুতরাং মাঠে গিয়ে লাভ কী? তাই তিনি জানিয়ে দেন পিতা তার পক্ষে কাজ না করলে তিনি আর নির্বাচন করবেন না।

এভাবেই কিছুদিন চলে গেল। সত্যি সত্যিই ছেলে নির্বাচনি কাজে অংশগ্রহণে বিরত থাকায় পিতা আবদুল হামিদ নিজেই চিন্তায় পড়ে গেলেন। ছেলের জীবনের প্রথম নির্বাচনে ভরাডুবির আশঙ্কায় তিনি নিজেও বিচলিত হয়ে পড়লেন। অগত্যা রাজশাহী জেলার মুসলিম লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক নাটোরের মধু চৌধুরীকে ডেকে তিনি তার হাতে দলের সভাপতি ও সাধারণ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগের আবেদনপত্র দুটি ধরিয়ে ঘটনা খুলে বললেন। এরপর পুত্রের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারে নেমে তাকে বিজয়ী করতে সক্ষম হলেন।

বাবার সেই বিজয় প্রথম হলেও আর কখনও তিনি কোনো নির্বাচনে পরাজিত হননি। তবে দাদা আবদুল হামিদের এ রাজনৈতিক নৈতিকতার ঘটনা সব সময়ের জন্যই বিরল দৃষ্টান্ত তাতে সন্দেহ নেই। বিশেষ করে আজকের রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য এ ঘটনা শিক্ষার বার্তা বয়ে আনতে পারে। সেই অসাধারণ ব্যক্তিত্ব আমার দাদা আবদুল হামিদের সুযোগ্য সন্তান এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও তার নাতিদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আজও জাতীয় নেতার আসনে রয়েছেন।

আমার বাবা তার আদর্শভিত্তিক নীতিনিষ্ঠ রাজনীতির কারণে ১৯৬২ থেকে ১৯৭৫ এই ১৩ বছরের মধ্যে অনুষ্ঠিত কোনো নির্বাচনেই কখনও পরাজিত হননি। এটা সম্ভব হয়েছিলো তার অসাধারণ কর্মদক্ষতা, গণমুখী সাংগঠনিক তৎপরতা আর চূড়ান্ত রাজনৈতিক সততার কারণে।

এরই ফলে তিনি রাজশাহীবাসীকে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে সামিল করতে পেরেছিলেন। তার এই দক্ষতা ও যোগ্যতাই তাকে তৎকালীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির মতো দলের সর্বোচ্চ পদে সমাসীন করেছিল।

৩ নভেম্বর সকালেই বাবার মৃত্যু সংবাদ জানতে পারেন আমাদের মা। মা অত্যন্ত ভেঙে পড়েন। অনেক চড়াই উৎরাই পার হয়ে যে মানুষটি কখনও আশাহত হননি সেই মানুষটি বাবার মৃত্যু সংবাদে মুষড়ে পড়েছিলেন! এ সময় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী আর আত্মীয়-স্বজনে ভরে যায় আমাদের বাড়ি।

মা চাচ্ছিলেন বাবার লাশটা রাজশাহীতে এনে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করতে। কিন্তু খুনিরা তাতে বাধ সাধে। মা তার সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন। বাধ্য হয়ে বাবার মৃতদেহ রাজশাহীতে আনার অনুমতি দেয় ঘাতকচক্র। তবে বাবার লাশ কাউকে দেখতে দেয়া হয়নি। এই হৃদয়বিদারক ঘটনার করুণ বেদনা ও দহন সহ্য করেই আমার মা এবং আমরা জীবনসংগ্রাম করেছি।

মায়ের কাছে শুনেছি, বাবার রক্তমাখা লাশটার বুকের ওপর চালচাপা দেয়া ছিল। মুখটা দেখে মনে হয়, কী নিদারুণ কষ্টে তার জীবন প্রদীপ নিভিয়ে দেয়া হয়েছে। কী অপরাধ ছিল বাবার, যার জন্য তাকে হত্যা করা হলো? এর জবাব কে দেবে? কারও কাছে আছে?

মাত্র ৫২ বছরের জীবনে তিনি অর্ধেকটাই কাটিয়েছেন আন্দোলন আর সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে অন্যান্য জাতীয় নেতাসহ বাংলাদেশকে স্বাধীন করার কাজে তিনি জীবন উৎসর্গ করেছেন। নিজের স্ত্রী-সন্তানের দিকে তাকাবার ফুরসৎ পাননি, সেই মানুষটাকে হত্যা করা হলো! কেন করা হলো, তা বলার সময়ও হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর আমার বাবাসহ অপরাপর তিন নেতা বেঁচে থাকলে সবকিছু রাজনৈতিক অপশক্তির ইচ্ছায় হতে পারত না। কারণ জাতীয় ওই চার নেতার দেশ ও দল পরিচালনা করার ক্ষমতা ছিল।

একবার কি এই প্রজন্ম চিন্তা করতে পারে, শেখ হাসিনা যদি আমার বাবাদেরকেও ১৯৮১ সালের পরে পেয়ে যেতেন, আওয়ামী লীগকে কী রোধ করা যেত? সামরিক শাসকেরা যত্রতত্র ক্ষমতার মসনদে বসতে পারত? ক্ষমতার বিরাজনীতিকরণ হতে পারত? গণতন্ত্রের জায়গায় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হতে পারত?

জিয়া নামের এক শাসককে কী বলা যায়? ঘাতক, নাকি স্বৈরাচার? হ্যাঁ কিংবা না ভোটের প্রচলনের মাধ্যমে কে গণতান্ত্রিক আবহে স্বৈরতন্ত্রকে পরিচিত করে তুলেছিলেন? আমার বাবারা বেঁচে থাকলে মোশতাক- জিয়া-এরশাদদের কথিত শাসন চলত না এই বাংলায়।

এদিকে ১৯৮১ সালের ১৯ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা তার প্রিয় জন্মভূমিতে ফিরে এসে তার পিতা বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের খুনিদের বিচারের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচারের দাবিতেও সোচ্চার ছিলেন। তার শাসনামলে বিচার হয়েছে। জাতি কলংকমুক্ত হয়েছে।

১৯৮১ সালের ১৯ মে থেকেই জননেত্রী শেখ হাসিনা চার জাতীয় নেতার পরিবারের সদস্যদের অতি আপনজনের মতো আগলে রেখেছেন। বড় বোনের স্নেহ দিয়ে তিনি আমাদের নির্মাণে সদা সহযোগিতা করে চলেছেন। আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। আমি মহান আল্লাহর দরবারে তার সুস্থতা কামনা করি। তিনি বেঁচে থাকলেই বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য হয়ে বিশ্বকে জানান দিতে পারবে, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি! এগিয়ে যেতেই হবে।

প্রতি বছর ৩ নভেম্বর ফেরে! শোকার্ত অনুভবে বাবার ওই দুই মায়াবী চোখের মাঝে দৃষ্টি দিলেই প্রদীপ ভাসে। যে প্রদীপের শক্তি আমাকে বাংলাদেশের জন্য রাজনীতি করতে তাগিদ দেয়। আমার পরিবারে সেই রক্ত, যে রক্ত বেঈমানি করতে জানে না।

বাবা বঙ্গবন্ধুর জন্য আনুগত্যের ঘড়্গ নিয়ে দেশপ্রেমকে স্বাগত জানিয়ে জীবনই দিয়ে গেছেন। আমি তারই কন্যা শেখ হাসিনার ভাই হিসাবে তার জন্য জীবন সঁপে দেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি। বাবার সৎ আত্মা আমার পিছু নেয়। তাগিদ রেখে বলেন, ‘তুমি এগিয়ে যাও। বাংলাদেশের জন্য, আওয়ামী লীগের জন্য সেরাটা দাও।‘

এক ফালি চাঁদের দিকে তাকিয়ে থাকি প্রায়শই। বাবার চিরপ্রস্থানকে মেনে নিতে পারিনি, পারব না। উইনস্টন চার্চিলের বিখ্যাত মতবাদ আমার অহোরাত্রগুলোকে অনুসন্ধানী ও সত্যান্বেষী করে বলে, ‘যখন ভিতরে কোনো শত্রু থাকে না, তখন বাইরের শত্রুরা তোমাকে আঘাত করতে পারে না।‘

জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু! জয় শেখ হাসিনা! বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।

লেখক: সভাপতিমণ্ডলির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও মেয়র, রাজশাহী সিটি করপোরেশন।

আরও পড়ুন:
জেলহত্যা দিবসের স্মৃতিকথা
জিয়া ছিলেন মোশতাকের ডান হাত: প্রধানমন্ত্রী
চার নেতার ১০ খুনির সাজা কার্যকর হয়নি এখনও
জেল হত্যার অনেক রহস্য উন্মোচন হয়নি: কাদের
ইতিহাসবিরোধী ভয়াল কালরাত

মন্তব্য

আরও পড়ুন

মতামত
Vending machine installation and awareness workshops are underway at the university nationwide by the initiative of Fresh Ananya Sanitary Napkin

ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর উদ্যোগে দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনা এবং সচেতনতামূলক কর্মশালা

ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর উদ্যোগে দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ভেন্ডিং মেশিন স্থাপনা এবং সচেতনতামূলক কর্মশালা

ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮-এর তথ্যানুসারে, বাংলাদেশে মাত্র ২৯ শতাংশ নারী স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে। অর্থাৎ প্রায় ৭১ শতাংশ নারী এখনও স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে না। পিরিয়ডের সময় অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহার করার ফলে সার্ভিক্যাল ইনফেকশন হতে পারে। এছাড়াও অস্বাস্থ্যকর কাপড় ব্যবহারের ফলে পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব এমনকি ক্যান্সার-এরও ঝুঁকি থাকে। এর জন্য প্রয়োজন জনসচেতনতা।

এ লক্ষ্যে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই)-এর জনপ্রিয় ব্র্যান্ড ‘ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন’ দেশব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিশেষ ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে। ‘এক্সিলেন্স বাংলাদেশ’-এর সাথে যৌথ উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ে এই ক্যাম্পেইন চালানো হচ্ছে। ক্যাম্পেইন-এর অংশ হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে বিভিন্ন সচেতনতামূলক ওয়ার্কশপ ও সেশন। এর বাইরে কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের নারীদের জন্য সহজে ও সুলভ মূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন সংগ্রহরে সুবধর্িাথরে জন্য ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন করছে ফ্রেশ অনন্যা।

ফ্রেশ অনন্যা-ই বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র স্যানিটারি ন্যাপকিন, যাতে রয়েছে ডাবল লেয়ারড অ্যাডভান্সড অ্যাবজর্পশন টেকনোলজি। সুবিধা ও উপযোগিতার কথা বিবেচনায় রেখে, ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এ ব্যবহার করা হয়েছে এয়ারলেইড পেপার এবং এডিএল লেয়ার। যা নিশ্চিত করে আরও দ্রুত শোষণ এবং সুরক্ষা। তাই পিরিয়ডের দিনগুলো কাটে আরও বেশি স্বস্তিতে।

ফ্রেশ অনন্যা স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা সুবিধাবঞ্চিত নারীদের মাঝে পিরিয়ডকালীন পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে রয়েছে দেশব্যাপী স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম, ভেন্ডিং মেশিন স্থাপন ইত্যাদি।

মন্তব্য

মতামত
Tribute

জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার

জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে আজ সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ
শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

৫৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বুধবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

তিনি সকাল ৬টা ১১ মিনিটে স্মৃতিসৌধের বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

ওই সময় তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কয়েক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল তাকে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায়। ওই সময়ে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়।

শ্রদ্ধা নিবেদনকালে প্রধান বিচারপতি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা, তিন বাহিনীর প্রধান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধান উপদেষ্টা স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।

পরে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য জাতীয় স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন:
স্টারলিংকের ইন্টারনেট বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
দেশবিরোধী আন্দোলনে উসকানিদাতাদের গ্রেপ্তার করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা
গণহত্যা দিবস উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ে নানা কর্মসূচি গ্রহণ
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের কিছু প্রস্তাব দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হবে : প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

মতামত
On the occasion of Independence Day the chief adviser released the postage stamp

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়। 

চলতি বছরের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে একটি স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় এ ডাকটিকিট অবমুক্ত করা হয়।

এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব ড. মুশফিকুর রহমান ও ডাক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএম শাহাবুদ্দিন।

প্রধান উপদেষ্টার গণমাধ্যম শাখা থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনই আসল সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
হাসান আরিফের জানাজায় শরিক হলেন প্রধান উপদেষ্টা
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
মালয়েশিয়া বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে
ডি-৮ সম্মেলনে যোগ দিতে রাতে মিসর যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

মন্তব্য

মতামত
The Chief Advisor to the Freedom Award

স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা

স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: বাসস
মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সাত বিশিষ্ট ব্যক্তির হাতে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ তুলে দিয়েছেন।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেশের সর্বোচ্চ জাতীয় বেসামরিক এ পুরস্কার প্রদান করেন তিনি।

এবার স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আবদুর রশীদ পুরস্কার বিতরণ পর্বটি সঞ্চালনা করেন। তিনি পুরস্কার বিজয়ীদের সাইটেশন পাঠ করেন।

আরও পড়ুন:
জাতীয় মৎস্য পদক দেয়া হলো ২২ ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকে
মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজার শ্রদ্ধা
শ্রদ্ধায় সিক্ত জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদি
গৌরবদীপ্ত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস আজ

মন্তব্য

মতামত
The Chief Advisor will pick up the Freedom Award on Tuesday

প্রধান উপদেষ্টা স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেবেন মঙ্গলবার

প্রধান উপদেষ্টা স্বাধীনতা পুরস্কার তুলে দেবেন মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: বাসস
গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মঙ্গলবার স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫ তুলে দেবেন।

ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ পুরস্কার দেওয়া হবে।

তথ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সাতজন বিশিষ্ট ব্যক্তি ২০২৫ সালের স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন।

গত ১১ মার্চ রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ পুরস্কারের জন্য মনোনীতদের তালিকার প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

যেসব ব্যক্তি এবার স্বাধীনতা পুরুস্কার পাচ্ছেন তারা হলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অধ্যাপক জামাল নজরুল ইসলাম (মরণোত্তর), সাহিত্যে মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ (মরণোত্তর), সংস্কৃতিতে নভেরা আহমেদ (মরণোত্তর), সমাজসেবায় স্যার ফজলে হাসান আবেদ (মরণোত্তর), মুক্তিযুদ্ধ ও সংস্কৃতিতে মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান ওরফে আজম খান (মরণোত্তর), শিক্ষা ও গবেষণায় বদরুদ্দীন মোহাম্মদ উমর এবং প্রতিবাদী তারুণ্যে আবরার ফাহাদ (মরণোত্তর)।

আরও পড়ুন:
পুলিৎজার পুরস্কার দেয়া হচ্ছে আজ
কিউবার রাষ্ট্রীয় পদক পেলেন বাংলাদেশের দুই চিকিৎসা বিজ্ঞানী
‘ট্রি অফ পিস’ পুরস্কার নিয়ে যা বলল ইউনূস সেন্টার
মহান স্বাধীনতা দিবসে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও ভুটানের রাজার শ্রদ্ধা

মন্তব্য

মতামত
April 7 announced the holiday

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন

৩ এপ্রিল ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন ট্রেনযাত্রীদের পটভূমিতে রেখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের লোগো। গ্রাফিক্স: বাসস
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. কামরুজ্জামান রবিবার যে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন, তাতে বলা হয়, ‘সরকার আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ৩ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করল। ছুটিকালীন সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে।

‘তবে জরুরি পরিষেবা, যেমন: বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাক সেবা এবং এ সংশ্লিষ্ট সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।’

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘হাসপাতাল ও জরুরি সেবা এবং এ সেবার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মীরা এই ছুটির আওতা-বহির্ভূত থাকবে। চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীরা এবং ওষুধসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি বহনকারী যানবাহন ও কর্মীগণ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।

‘জরুরি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত অফিসসমূহ এই ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে। ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে। আদালতের কার্যক্রমের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন।’

আরও পড়ুন:
ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে যেসব পদক্ষেপ ডিএমপির
ঈদুল ফিতর ২০২৫-এ ঢালিউডে মুক্তির অপেক্ষায় যে সকল বাংলাদেশি সিনেমা
টানা ৯ দিন ছুটি পাচ্ছেন সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীরা
ঈদযাত্রাকে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে রেলওয়ের নানা উদ্যোগ
ঈদে ট্রেনযাত্রায় প্রতারণা এড়াতে অ্যাপ বা কাউন্টার থেকে টিকিট কেনার পরামর্শ

মন্তব্য

মতামত
If the family gives courage to women the state will also be on the side Environment Advisor

পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও পাশে থাকবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও পাশে থাকবে: পরিবেশ উপদেষ্টা বার্তা সংস্থা বাসসের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। ছবি: বাসস
উপদেষ্টা বলেন, ‌‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, নারীর ক্ষমতায়নে সবার আগে পরিবার থেকে নারীকে সাহস দিতে হবে। যেকোনো সংকটে নারীর পাশে ঢাল হয়ে থাকতে হবে।

তিনি বলেন, পরিবার পাশে না থাকলে রাষ্ট্রের পক্ষে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে। পরিবার নারীকে সাহস দিলে রাষ্ট্রও নারীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে পারে।

উপদেষ্টা বলেন, ‘নারীর প্রতিবন্ধকতা কখনও শেষ হয় না। সমাজে একটা গোষ্ঠী আছে, যারা নারীকে ক্ষমতায়িত করতে চায় না। দুর্বল নারীকে যত পছন্দ করে, সবলচিত্তের নারীকে তারা পছন্দ করে না। এটাই বাস্তবতা।’

আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে (৮ মার্চ) সামনে রেখে জাতীয় বার্তা সংস্থা বাসসকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাতকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এসব কথা বলেন।

এবারের নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।

উপদেষ্টা বলেন, ‌‘একজন নারীকে দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা হলে সে দেশের কাজে ভূমিকা রাখতে পারে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও দায় রয়েছে। নারীর চলার পথ পুরুষের পাশাপাশি নির্বিঘ্ন ও নির্ভরতার হতে হবে।’

তিনি বলেন, “নারী এখন যে অবস্থানে রয়েছে, সে অবস্থানে থেকে নারী বলে বিতর্কিত নয়, কাজে সে বিতর্কিত হোক, অদক্ষ বলে বিতর্কিত হোক, শুধু নারী বলেই ভূল, নারী বলেই অদক্ষ, এ কথাটা বলা যাবে না। আমি বলব ‘স্কাই ইজ দ্য লিমিট।

“তাই তার চিন্তার গন্ডিটাকে তার পারিপার্শ্বিকতার নেতিবাচক মনোভাবে আটকে না রেখে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে তাদের পাশে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। অভিভাবককে বুঝতে হবে, ছেলে ও মেয়ে দুজনই পরিবারের সম্পদ। পরিবারের উচিত নারীকে ক্ষমতায়িত করা।”

আরও পড়ুন:
নির্ধারিত ভাড়ার বেশি নিলে লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
শ্রম আইনকে বিশ্বমানের করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
রমজান উপলক্ষে জীবনের সর্বস্তরে সংযমের বার্তা প্রধান উপদেষ্টার
দলীয় নয়, অপরাধ বিবেচনায় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করার সর্বোত্তম সুযোগ ক্রান্তিকালে: শিরীন হক

মন্তব্য

p
উপরে