১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেল হত্যাকাণ্ডের পর সুদীর্ঘ ৪৭টি বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু কারাগারের নিরাপত্তা হেফাজতে চার জাতীয় নেতাকে কীভাবে কেন হত্যা করা হয়েছিল, কারা এই ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছিল, এর কুশীলব ও পেছনের সূত্রধর কারা ছিল- এসব রহস্যের আজও সুস্পষ্ট কিনারা হয়নি।
স্মরণ করা যেতে পারে, স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তির মদদে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে আকস্মিক অভ্যুত্থানে জাতির পিতা, তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে।
একই রাতে স্ত্রী-সন্তানসহ হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি ও তার মন্ত্রিসভার পানিসম্পদ মন্ত্রী আবদুর রব সেরনিয়াবাত এবং ভাগ্নে ও বাকশালের অন্যতম সম্পাদক শেখ ফজলুল হক মণিকে।
এটা সুস্পষ্ট, জাতির পিতা ও তার বংশধারা নিশ্চিহ্ন করে দেয়াই ছিল অভ্যুত্থানকারীদের মূল লক্ষ্য। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা এ সময় বিদেশে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যাওয়ায় খুনিদের সুদূরপ্রসারী অসদুদ্দেশ্য শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে যায়।
বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার আটদিন পর ২৩ আগস্ট গ্রেপ্তার হন তার দক্ষিণহস্ততুল্য চার শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমদ, মুহাম্মদ মনসুর আলি ও আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামারুজ্জামান।
সৈয়দ নজরুল ইসলাম ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা গ্রেপ্তার করার পর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সে বছরের ১৭ এপ্রিল গঠিত মুজিবনগর সরকারে তিনি উপ-রাষ্ট্রপতি হন এবং শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা লাভের পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদে তিনি শিল্পমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি বাকশালের ভাইস-চেয়ারম্যান হন।
তাজউদ্দীন আহমদ মুজিবনগর সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন এবং মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিপরিষদে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
মুহাম্মদ মনসুর আলী মুজিবনগর সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সরকারের স্বরাষ্ট্র ও যোগাযোগমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বঙ্গবন্ধু বাকশাল প্রতিষ্ঠার পর তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হন।
এ এইচ এম কামারুজ্জামান মুজিবনগর সরকারের স্বরাষ্ট্র, কৃষি এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত সরকারেও একই দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
তখনকার পরিস্থিতিতে তাদের গ্রেপ্তার হওয়াটা অবধারিতই ছিল। কারণ কোনো প্রলোভনেই তারা যে অভ্যুত্থানকারীদের সঙ্গে হাত মেলাবেন না সেটা সবাই জানত। অথচ তখন দলের দ্বিতীয় সারির নেতা খন্দকার মোশতাক আহমদ খুনিদের সঙ্গে আঁতাত করেন এবং তার নেতৃত্বে একটি সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে।
খন্দকার মোশতাকের মন্ত্রিসভার সব সদস্যই ছিলেন হত্যাকারীদের সঙ্গে হাত মেলানো আওয়ামী লীগার এবং এটা ছিল একটা আধা-সামরিক সরকার। অভ্যুত্থানকারী মেজর-ক্যাপ্টেনরাই এ সরকারের ওপর ছড়ি ঘোরাত। এ সরকারের পেছনে সেনা সমর্থন থাকলেও, বঙ্গভবনের ওপর তাদের পুরোপুরি কর্তৃত্ব ছিল না। সে সময়ে বঙ্গভবন পাহারার দায়িত্বে ছিল ৪৬ ব্রিগেডের দুটি কোম্পানি, যার নেতৃত্বে ছিলেন কর্নেল শাফায়াত জামিল।
২৪ আগস্ট তখনকার সেনাপ্রধান কে এম শফিউল্লাহকে সরিয়ে জিয়াউর রহমানকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়। তখনকার চিফ অফ জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) খালেদ মোশাররফ আগের পদেই বহাল থেকে যান। কিন্তু ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী ৮০ দিনের মাথায় সিজিএস খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সংঘটিত হয় এক পাল্টা অভ্যুত্থান। শাফায়াত জামিল তার ব্রিগেড নিয়ে ২ নভেম্বর মধ্যরাতেই অভ্যুত্থান শুরু করে দেন।
৩ নভেম্বর অভ্যুত্থানের কোনো কোনো অংশগ্রহণকারী ও সমর্থক পরে প্রচার করেছেন, তারা ১৫ আগস্টের অভ্যুত্থান ও জাতির পিতাকে হত্যার বদলা নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এ দাবি ভিত্তিহীন বলেই মনে হয়। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পাল্টে গিয়েছিল। ৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থানকারীরা ১৫ আগস্টের আগের অবস্থায় ফিরে যেতে চাইলে মুজিবপন্থি একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিতে পারতেন। এ জন্য তারা জেলবন্দি চার শীর্ষ নেতাকে বের করে এনে তাদের হাতে এ সরকার গঠনের ভার দিতে পারতেন। কিন্তু চার নেতার কথা তাদের দূরতম চিন্তা বা পরিকল্পনাতেও ছিল, এমন মনে করার কোনো প্রমাণ তখন দেখা যায়নি।
হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী পুরো একদিনেরও বেশি সময় কেটে যাওয়ার পরই কেবল তারা জানতে পারেন, চার নেতা জেলখানার ভেতরে নিহত হয়েছেন। জানার পরও এ নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা বা উচ্চবাচ্য করতে দেখা যায়নি।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, তাদেরকে দিয়ে যদি সরকার গঠন করার সদিচ্ছা থাকত, তাহলে তো প্রথম কাজটিই হওয়া উচিত ছিল তাদের নিরাপত্তার সুব্যবস্থা করা এবং তাদেরকে বঙ্গভবনে আনার উদ্যোগ নেয়া। সে রকম কিছুই কিন্তু তখন দেখা যায়নি। বরং স্বজনরা দোয়েল চত্বরের কাছে তিন নেতার মাজার প্রাঙ্গণে চার নেতাকে কবরস্থ করার উদ্যোগ নিলে তাদের সে অনুমতিও দেয়া হয়নি।
লক্ষণীয়, ৩ নভেম্বরের পাল্টা অভ্যুত্থানকারীরা ১৫ আগস্টের অভ্যুত্থানের খলনায়কদের ৩ নভেম্বর রাতেই নিরাপদে দেশত্যাগের সুযোগ দেয়। এর কারণ হিসাবে বলা হয়, গৃহযুদ্ধ বাধুক সেটা তারা চায়নি। দুই পক্ষের মধ্যে এই আপস-মীমাংসায় মধ্যস্থতা করেছিলেন তখনকার রাষ্ট্রপতি খোন্দকার মোশতাক, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল (অব.) এম এ জি ওসমানী এবং চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ মেজর জেনারেল খলিলুর রহমান।
এর ঠিক দুদিন পর ৫ নভেম্বরই মোশতাককে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক অভ্যুত্থানকারীরা। এভাবে চিরকালের জন্য ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হন বাংলার ইতিহাসের দ্বিতীয় মীরজাফর খন্দকার মোশতাক।
তারপরও একটা জিজ্ঞাসা থেকেই যায়, চার নেতাকে কেন খুন করা হয়েছিল। তারা তখন কারাবন্দি ছিলেন, ৩ নভেম্বরের পাল্টা অভ্যুত্থানকারীদের পরিকল্পনায়ও তারা ছিলেন না। তাহলে কেন হঠাৎ করে তাদের হত্যা করা হল? এর পেছনে কি অন্য কোনো মহলের অন্য কোনো পরিকল্পনা ছিল?
স্মরণ করা যেতে পারে, পাল্টা অভ্যুত্থানের পরদিন ৪ নভেম্বর ঢাকায় বাকশালের ছাত্রসংগঠনের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে একটি শোকমিছিল বের করা হয়েছিল। খালেদ মোশাররফের মা এবং ভাইও সে মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। মিছিলের আয়োজকেরা কিন্তু তখনও জানতেন না, এর আগেই জেলের ভেতরে চার নেতাকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাহলে কেন, কিসের ভরসায় তারা এমন মিছিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন?
আরেকটি জিজ্ঞাস্য হল, পাল্টা অভ্যুত্থানকারীরা জেলহত্যার আশঙ্কা বা পরিকল্পনার কথা কি আগেভাগে কিছুমাত্র টের পাননি? ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের অভ্যুত্থান দুটি ঘটিয়েছিল সেনাবাহিনীর মধ্যস্তরের কর্মকর্তাদের দুটি গ্রুপ। তাদের পারস্পরিক সম্পর্কে তেমন কোনো দ্বন্দ্ব বা মতবিরোধের কথা জানা যায়নি। হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে মোশতাক ও জিয়াউর রহমানের দিকে আঙুল তোলা হলেও সংশ্লিষ্ট আরও অনেককেই সন্দেহের বাইরে রাখা যায় না।
জেলহত্যার বিচার শুরু হয় হত্যাকাণ্ডের ২৯ বছর পর ২০০৪ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের শাসনামলে। ওই বছরের ২০ অক্টোবর দেয়া আদালতের রায়ে তিনজন পলাতক সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড, ১২ সেনা কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়া হয়। তবে অভিযুক্ত বিএনপির চারজন সিনিয়র নেতাসহ পাঁচজনকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়।
আরও চার বছর পর ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলে হাইকোর্ট জেলহত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছয়জন সামরিক কর্মকর্তাকে বেকসুর খালাস দিয়ে দেয়। তবে তাদের মধ্যে চারজন সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, বজলুল হুদা এবং এ কে এম মহিউদ্দীন আহমেদকে বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১০ সালে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।
খালাসপ্রাপ্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির আবেদন জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেছে, যার চূড়ান্ত রায় এখনও পাওয়া যায়নি।
বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসে গভীরতম শোক ও কলঙ্কের মসীলিপ্ত দুটি দিন হলো ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস। পাকিস্তানপন্থি স্বাধীনতাবিরোধী সামরিক-বেসামরিক চক্র এ দুই দিনে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদাতা বঙ্গবন্ধুকে, তার রক্তসম্পর্কিতদেরকে এবং তার প্রধান সহায়ক চার নেতাকে হত্যা করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদকে সমূলে বিনাশ করতে চেয়েছিল।
এ দুই দিনে তারা আমাদের শিরদাঁড়ায় যে মারণ আঘাত হেনেছিল, তার জের এখনও আমরা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। এরপর দীর্ঘ দুই দশক ধরে তারা আমাদের অবনত করে রেখেছিল, রাজাকার-আলবদরদের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছিল, খুনিদের পুনর্বাসিত করেছিল, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে তাদের বিচারের পথ বন্ধ করে দিয়েছিল।
বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতি আজ ফিনিক্স পাখির মতো পুনরায় ভষ্মস্তূপ থেকে মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু খুনিদের অপচ্ছায়া এখনও বাংলার ভাগ্যাকাশ থেকে সম্পূর্ণ দূরীভূত হয়নি। এখনও জাতীয় পতাকা বার বার খামচে ধরতে চায় পুরনো শকুনেরা। ১৯৭৫ সালের দুটি তারিখ ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বর এখনও আমাদের চেতনায় কালো ছায়া বিস্তার করে থাকে।
আমরা চাই, প্রধানমন্ত্রী খুনিদের আর খুনের মদদদাতাদের মধ্যে যাদের পরিচয় এখনও জনসমক্ষে উদ্ঘাটিত হয়নি, তাদের প্রত্যেককে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় এনে জাতির ভবিষ্যতকে শঙ্কামুক্ত ও বিবেককে ভারমুক্ত করুন।
১৫ আগস্ট আর ৩ নভেম্বরের মতো ভয়াল দিনের মুখোমুখি জাতিকে আর কখনও যেন হতে না হয়, তা যেকোনো মূল্যে নিশ্চিত করার মাধ্যমে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সভ্য জাতি হিসাবে বিশ্ব সমাজে আমাদের উঁচু মাথা অনাগত দিনগুলোতে আরও উঁচু করতে হবে।
লেখক: কলামিস্ট, শিক্ষাবিদ, গবেষক, ফোকলোরিস্ট; অধ্যাপক, ইংরেজি বিভাগ ও সাবেক উপ-উপাচার্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
আরও পড়ুন:রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
বাংলাদেশের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রাখাইনের সঙ্গে শেয়ার করছে বাংলাদেশ। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ কোনো ধরনের কৌশলগত পদক্ষেপ নিচ্ছে কিনা বা প্রস্তুতি রয়েছে কিনা?- এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘পুরো পরিস্থিতি আমরা খুবই গভীরভাবে মনিটর করছি। সার্বিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রধান উপদেষ্টা উচ্চপদস্থ একজন প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি গভীরভাবে এটা মনিটর করবেন। যারা যারা অংশীজন আছেন তাদের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।’
প্রেস সচিব বলেন, ‘আগামী বছর আমাদের একটা বড় কাজ হবে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করা। এর ভেন্যু ও অন্যান্য বিষয় মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে ঠিক করে ফেলব। আশা করছি, এই সম্মেলনটা হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের দিকে।’
বিশ্বের সব দেশ এতে অংশ নেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশেষ করে জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, চীনসহ রোহিঙ্গা ইস্যুতে যারা খুবই আগ্রহী তারা সবাই থাকবে।’
জাতিসংঘের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে অনেকবার কথা হয়েছে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘ সম্মেলনে অংশগ্রহণের সময় এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন।’
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, চলতি বছরের ৫ আগস্ট থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত সংখ্যালঘু সম্পর্কিত ঘটনায় মোট ৮৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ, নরসিংদী, চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর সাম্প্রতিক হামলার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ওইসব জায়গায় নতুন কিছু ঘটনা ঘটলে গ্রেপ্তার ও মামলার সংখ্যা বাড়বে। এসব মামলার বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
আরও পড়ুন:পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. ফজলুল কাদের।
পিকেএসএফ-এর ১২তম ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মঙ্গলবার তাকে আগামী তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেয় পিকেএসএফ পরিচালনা পর্ষদ।
মো. ফজলুল কাদের ১৯৯০ সালের ১ অক্টোবর ম্যানেজমেন্ট এক্সিকিউটিভ হিসেবে পিকেএসএফ-এ তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ২০২১ সালের ৮ আগস্ট পিকেএসএফ-এর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পদোন্নতি পান। গত ২২ আগস্ট থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় পরামর্শক হিসেবে তিনি জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান, সৌদি আরব, বাহরাইন, জর্ডান ও মরক্কোয় কাজ করেছেন।
মো. ফজলুল কাদের ১৯৭৯ সালে তৎকালীন মোমেনশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসএসি ও ১৯৮১ সালে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচএসএসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তিনি ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং ১৯৮৮ সালে আইবিএ-তে এমবিএ ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
ফজলুল কাদের যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, থাইল্যান্ডের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, টেমেনস ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পেশাগত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সর্বসম্মতিক্রমে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের (ইউএনএইচআরসি) ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হয়েছে। জাতিসংঘের এই সংস্থা বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার জোরদার ও সুরক্ষার লক্ষ্যে কাজ করে।
মঙ্গলবার ঢাকায় প্রাপ্ত এক বার্তায় বলা হয়েছে, সোমবার বিকেলে মানবাধিকার কাউন্সিলের সাংগঠনিক অধিবেশনে ২০২৫ সালের কর্মকাণ্ড নির্ধারণী বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে জেনেভায় জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত মানবাধিকার কাউন্সিলের ব্যুরোতে কাজ করবেন।
মানবাধিকার কাউন্সিলের কার্যালয়ে একজন প্রেসিডেন্ট এবং চারজন ভাইস প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘের পাঁচটি আঞ্চলিক গ্রুপের প্রতিনিধিত্ব করেন।
ভাইস প্রেসিডেন্টের জন্য নির্বাচন প্রক্রিয়া ২০২৪ সালের অক্টোবরে শুরু হয়েছিল। বাংলাদেশ এশিয়া-প্যাসিফিক গ্রুপের (এপিজি) প্রতিনিধিত্বকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে সংস্থায় কাজ করার সময় এ বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল।
এপিজি সর্বসম্মতিক্রমে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য বাংলাদেশের প্রার্থিতা সমর্থন করে এবং কাউন্সিলের বৃহত্তর সদস্যপদ বিবেচনার জন্য মনোনয়ন দেয়।
অবশেষে প্রক্রিয়াটি সফলভাবে সমাপ্ত হয়, যখন বাংলাদেশ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য কাউন্সিল সদস্যদের সর্বসম্মত সমর্থন অর্জন করে।
২০০৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মানবাধিকার কাউন্সিল প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো জাতিসংঘের এই মর্যাদাপূর্ণ মানবাধিকার সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এ নির্বাচন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মদ ইউনূসের বিচক্ষণ নেতৃত্বের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আস্থা ও বিশ্বাস এবং বহুপাক্ষিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সক্রিয় ভূমিকা ও ক্রমবর্ধমান প্রভাবের স্বীকৃতির আরেকটি উদাহরণ।
জ্ঞানের নানা শাখায় অবদান বিবেচনায় নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০ ব্যক্তির তালিকা করেছে প্রভাবশালী বিজ্ঞান বিষয়ক ব্রিটিশ সাময়িকী ‘নেচার’। ২০২৪ সালের এই তালিকায় স্থান পেয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সাময়িকীটি সোমবার ‘দ্য রেভ্যুলিউশনারি ইকোনমিস্ট হু বিকাম দ্য আনলাইকলি লিডারস অফ বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জ্ঞান-বিজ্ঞানে অবদান রাখা তালিকাভুক্ত ১০ ব্যক্তির তালিকায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক সপ্তাহ বিক্ষোভের পর ৫ আগস্ট বাংলাদেশের স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। এরপর ছাত্রনেতারা শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে দেশের নেতৃত্ব গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান। নেতৃত্বের কাজটি ড. ইউনূসের জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার ছয় দশকের কর্মজীবনে দারিদ্র্য বিমোচনে লড়াই করার জন্য ধারণার মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন। তার কাজের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সমস্যা নির্ধারণ করে তা সমাধানের জন্য গবেষণা করা।
ড. ইউনূসের সঙ্গে ৩০ বছর ধরে কাজ করা অ্যালেক্স কাউন্টস বলেছেন, ‘তার বয়স আশির কোটায়। তবে তার শারীরিক ও মানসিক শক্তি এখনও অটুট। তিনি একজন সহানুভূতিশীল মানুষ এবং তার যোগাযোগ পদ্ধতিও দুর্দান্ত।
বাংলাদেশের চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ড. ইউনূস। এরপর পড়াশুনার জন্য ১৯৬০-এর দশকে পাড়ি দেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে তিনি পরিবেশগত অর্থনীতির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা নিকোলাস জর্জেসকু-রোগেনের অধীনে পড়াশোনা করেন। তার অন্যতম লক্ষ্য ছিল অর্থনীতি ও পরিবেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝা।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানের কাছ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশে ফিরে আসেন ইউনূস। দেশ গঠনে নিজের ভূমিকার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন তিনি। ক্ষুদ্রঋণ বা মাইক্রোক্রেডিটের জন্য পরিচিত পেয়েছেন ড. ইউনূস। ওই ক্ষুদ্রঋণের পরিমাণ ১০০ ডলার বা তার চেয়ে কম। তিনি দেখিয়েছেন ক্ষুদ্রঋণ সমাজের প্রান্তিক মানুষের ভাগ্য বদলে কেমন ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির অধ্যাপক থাকাকালীন ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ শুরু করেন ড. ইউনূস। তিনি একটি মডেল তৈরি করেন যেখানে ব্যবসার মাধ্যমে নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে খুব অল্প পরিমাণ ঋণ দেয়া হয়।
এর ধারাবাহিকতায় ১৯৮৩ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ ব্যাংক। এর মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে এই ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থার প্রসার ঘটে। বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়েছে তার এই উদ্ভাবন। তবে এর অনেক সমালোচকও রয়েছে।
তবে গ্রামীণ ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা এবং ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশের সংস্কারে নেতৃত্ব দেয়ার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ড. ইউনূস কি ছাত্রদের সংস্কারের দাবি পূরণে সক্ষম হবেন? বিশেষ করে দুর্নীতির অবসান, নাগরিকদের অধিকার, কর্মসংস্থান ও শিক্ষার সম-অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি কি সফল হবেন?
কার্যত সবাই এখন এ প্রশ্নটি করছে। এসবের পাশাপাশি ড. ইউনূস গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের পরিবারের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারবেন কি না সে বিষয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে অবৈধভাবে অবস্থানকারী বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্কতা জারি করেছে।
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরীর সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সতর্কতা জারি করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘বিভিন্ন সূত্রে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে যে, অনেক ভিনদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন এবং অবৈধভাবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।’
যেসব বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন বা কর্মরত আছেন, তাদের অবিলম্বে বাংলাদেশে অবস্থানের বা কর্মরত থাকার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বৈধতা অর্জনের জন্য বিজ্ঞপ্তিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তর/প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের জন্যও অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় অবৈধভাবে অবস্থানকারী এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সাবেক শিক্ষা সচিব ও পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য সোলেমান খানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে শিক্ষা সচিব ছিলেন সোলেমান খান। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর তাকে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে বদলি করা হয়। পরিকল্পনা কমিশন সদস্যের পদটি সচিব পদমর্যাদার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সোলেমান খানের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং সরকার জনস্বার্থে তাকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেয়া প্রয়োজন বলে বিবেচনা করে। তাই সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৪৫ ধারায় দেয়া ক্ষমতাবলে তাকে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেয়া হল। তিনি বিধি অনুযায়ী অবসরজনিত সুবিধা পাবেন।
সরকারি চাকরি আইনের ৪৫ ধারা অনুযায়ী সরকার যে কাউকে কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরি থেকে অবসরে পাঠাতে পারে। তবে তার আগে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিতে হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার এর আগে আরও কয়েকজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র ১১তম দ্বিপাক্ষিক সামরিক সংলাপ শুরু হচ্ছে আগামীকাল বুধবার। দু’দিনব্যাপী এর সামরিক সংলাপ যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইতে অনুষ্ঠিত হবে।
মঙ্গলবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, এই সামরিক সংলাপে বাংলাদেশ থেকে একটি সামরিক প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের অপারেশনস ও পরিকল্পনা পরিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আলীমুল আমীন।
সামরিক সংলাপ দুই দেশের পারস্পরিক সামরিক সহযোগিতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এই সংলাপে উভয় দেশের সামরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
উল্লিখিত সংলাপে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি, দুর্যোগ মোকাবিলা, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ, পরিদর্শন, যৌথ অনুশীলন ও মহড়া, কর্মশালা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয় আলোচিত হবে।
প্রতিনিধি দলে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী ছাড়াও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা রয়েছেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য