× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

মতামত
Prospects and future of Bangladesh India Integrated Economic Partnership Agreement
google_news print-icon

বাংলাদেশ-ভারত সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির সম্ভাবনা ও ভবিষ্যৎ

বাংলাদেশ-ভারত-সমন্বিত-অর্থনৈতিক-অংশীদারত্ব-চুক্তির-সম্ভাবনা-ও-ভবিষ্যৎ
উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীল উন্নতি অর্জন করায় এখন দুটি দেশই সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ভাবছে, যাকে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট বা সেপা হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে। এ চুক্তির পর বাংলাদেশে ভারতের অবাধ বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত হবে। ফলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত হবে।

গত এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব বিস্তৃত করার ভিত্তি তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর বাণিজ্যিক অংশীদার ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের প্রধান বাণিজ্য অংশীদার বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ধীরে ধীরে বেড়েছে। গত এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়ে তিন গুণ হয়েছে।

উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীল উন্নতি অর্জন করায় এখন দুটি দেশই সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে ভাবছে, যাকে কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা) হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।

এ চুক্তির পর বাংলাদেশে ভারতের অবাধ বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত হবে। ফলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত হবে। পণ্য রপ্তানির পাশাপাশি সেবা রপ্তানির সুযোগ পাবে বাংলাদেশ। ভারতের বিশাল বাজারে এই সুবিধা পেলে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে লাভবান হতে পারবে।

বাংলাদেশে চীনা বিনিয়োগ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ সাল থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে সেপা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। দক্ষিণ এশীয় মুক্ত বানিজ্য অঞ্চলের (সাফটা) মতো আঞ্চলিক মুক্তবাণিজ্য চুক্তির অকার্যকারিতার কারণেও এটি আলোচিত হতে থাকে। পরবর্তী সময়ে ২০১৯ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে সেপার সম্ভাবনা যাচাইয়ের জন্য একটি যৌথ কমিশন গঠন করা হয়, যার কাজ ছিল ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে সমীক্ষা প্রতিবেদন প্রণয়ন করা।

এর মধ্যে ২০২১ সালের মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময়ে দুই দেশই নিজেদের মধ্যকার বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে সম্মত হয়। সে সময় যৌথ বিবৃতিতে ট্যারিফমুক্ত বাণিজ্যের প্রয়োজনীয়তা, বাণিজ্য সংক্রান্ত নীতি ও প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং বাংলাদেশ থেকে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের সফরের ব্যাপারগুলো উঠে আসে।

এই চুক্তিতে পণ্য, সেবা ও বিনিয়োগ— এই তিনটি দিক অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির আওতায় ভারতে এখন শুধু পণ্য রপ্তানি হয়ে থাকে। সেপার পর সেবা রপ্তানি উন্মুক্ত হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। বিশেষ করে ব্যাংক ও বিমা সার্ভিসের পরিধি বাড়বে।

সেপার প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার বিশাল বাণিজ্য ঘাটতির লাগাম টানা এবং নতুন অর্থনৈতিক সুবিধাগুলো উন্মোচন করা, যার মধ্যে আছে সংযোগ, নতুন বাজার, সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব। এ ছাড়া উপআঞ্চলিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বহুমুখী সংযোগ ও সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। এ চুক্তির ফলে অ্যান্টি ডাম্পিং ও রুলস অব অরিজিন শুল্ক বসিয়ে বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করার সুযোগ থাকবে না। ফলে দুই দেশই সেপার মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিকভাবে লাভবান হবে।

ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য অনুযায়ী ব্যবসা সহজ করতে রেলওয়ে, সড়ক ও বন্দর অবকাঠামো উন্নয়ন, সীমান্ত হাট ও বহুমুখী যোগাযোগের মাধ্যমে আঞ্চলিক সংযোগ চুক্তির আওতায় পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ছাড়া এই চুক্তির আওতায় পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তথ্য-প্রযুক্তি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর মতো নতুন ক্ষেত্রগুলোর উন্নতিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। সেপার মাধ্যমে নতুন নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। এটি দ্বিমুখী বাণিজ্যের প্রভূত উন্নতি সাধন করবে। এ ছাড়াও বাংলাদেশ-ভারত অংশীদারত্ব শক্তিশালী করার জন্য এই চুক্তি চারটি দিকে ফোকাস করে। এগুলো হলো যোগাযোগ ও নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন বজায় রাখা, প্রতিরক্ষা সামগ্রীর যৌথ উৎপাদন, বিনিয়োগের সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো উন্মোচন এবং ভ্যাকসিন ও অন্যান্য ওষুধ সামগ্রীর যৌথ উৎপাদন।

সেপার সম্ভাবনা

দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেপা সম্ভাবনার নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। চুক্তির প্রথম বছরেই দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়বে ৫ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার। চুক্তিটি ব্যবসা-বাণিজ্য, সাপ্লাই চেইন ও উৎপাদনের বিকাশে যৌথভাবে কাজ করার ফলে আমদানি, রপ্তানি ও ব্যবসা সম্পর্কিত নিয়ম-কানুনের সংস্কারসহ দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে নতুন গতির সূচনা হবে।

পরিবহন খরচ কম ও সময় সাশ্রয়ের কারণে বাংলাদেশি আমদানিকারকরা একই পণ্যের জন্য দূরপ্রাচ্যের দেশগুলোর বদলে ভারতমুখী হবে। সেপা বাস্তবায়ন হলে এর দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্ভাবনা হবে ৪০ বিলিয়ন ডলার। ভারতের সেবা ও বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির শক্তিশালী সম্ভাবনা সেপা বাস্তবায়ন হওয়ার জন্য যথেষ্ট।

বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশের জন্য সেপা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ। আঞ্চলিক সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব (আরসিইপি) থেকে সরে আসার পর থেকে ভারত প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার চেষ্টা করছে।

দ্বিতীয়ত, এ চুক্তি দ্বিপক্ষীয় ও উপআঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধি করবে যা বাংলাদেশ তাদের পলিসি ইনিশিয়েটিভের মধ্যে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সংযোগই সমৃদ্ধি। সেপা বেশ কিছু দিক দিয়ে যোগাযোগের উন্নতি ঘটাবে, যা ভবিষ্যৎ এশিয়ান হাইওয়ে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দেবে।

বিবিআইএন, বিসিআইএম এবং বিমসটেক ভারত ও বাংলাদেশকে পেট্রাপোল-বেনাপোল, ফুলবাড়ী-বাংলাবান্ধা ও ডওকি-তামাবিল পয়েন্টে সংযুক্ত করেছে। এ ছাড়াও আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগের মাধ্যমে সংযোগ ঘটেছে। এ চুক্তি বাস্তবায়ন হলে ব্যক্তিগত, যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী কার্গো বাহনগুলো সীমান্ত অতিক্রম করতে পারবে। এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যাবে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে, যেখানে পণ্যের দাম অন্তত ৪.৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাবে।

ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও ট্রানজিট নতুন নতুন অর্থনৈতিক কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করবে, যার ফলে মানুষের আয় বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ও ভোক্তাদের ব্যয় কমে আসবে।

এই সংযোগের মাধ্যমে আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুফল আসবে। যেমন: বিমসটেক চুক্তির মাধ্যমে থাইল্যান্ডের র‌্যানং বন্দরের সঙ্গে চেন্নাই, বিশাখাপাটনাম ও কলকাতা বন্দর সংযুক্ত হবে। বিমসটেকের নৌ-পরিবহন চুক্তি ও মুক্তবাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে ২ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সংযুক্ত হবে। ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের মাধ্যমে এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের সঙ্গে পিটিএ ও এফটিএ সম্পাদনের পথ তৈরি করবে। ইতোমধ্যে থাইল্যান্ড ও নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি সম্পাদনের পরিকল্পনা করছে বাংলাদেশ।

তৃতীয়ত, এই চুক্তির মাধ্যমে সহযোগিতা ও অংশীদারত্বের নতুন জায়গা তৈরি হবে এবং যৌথ উৎপাদন হাব ও নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেইন তৈরির সুযোগ তৈরি হবে। এটি উভয় দেশের জন্য নতুন বাজার তৈরি করবে ও নতুন নতুন বিনিয়োগ আসতে থাকবে।

বাংলাদেশ এরই মধ্যে ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য তিনটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করেছে এবং ভারতীয় কোম্পানিগুলো টেলিযোগাযোগ, ওষুধ, এফএমসিজি ও অটোমোবাইলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে।

সেপা বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে এবং এ ধরনের বিনিয়োগ নতুন মাত্রা পাবে। এ চুক্তি বাস্তবায়ন হলে ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোর জন্য বাংলাদেশের রাসায়নিক সার, পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত মৎস্য পণ্য ও তৈরি পোশাক সহজলভ্য হবে।

চতুর্থত, অনুন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের মর্যাদা লাভের জন্য বাংলাদেশকে যেসব ক্ষেত্রে উন্নতি সাধন করতে হবে, এই চুক্তি সেসব ক্ষেত্রগুলোতে নতুন সুযোগ তৈরি করবে।

দুই দেশের স্থলভাগ ও জলসীমায় সংযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশেরই আয় বৃদ্ধি পাবে। পণ্য, সেবা ও জনসাধারণের বিনিময় বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটন ও অন্যান্য শিল্পের বিকাশ ঘটবে, যা দুই দেশেই কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও মানবসম্পদের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। দুই দেশেরই ওষুধ শিল্প সমৃদ্ধ হওয়ায় যৌথ ওষুধ পণ্য ও প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদনের ফলে উভয়ই লাভবান হবে।

করণীয় কী

ভারত-বাংলাদেশ উভয়ের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে সেপা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এই চুক্তির পূর্ণ সফলতার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রথমত, যেকোনো অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তির পূর্ণ ফলাফল পাওয়ার জন্য অবকাঠামোগত অবস্থা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাণিজ্য, যোগাযোগ ও বিনিময়ের পূর্বশর্তই এটি।

দ্বিতীয়ত, দুই দেশের মধ্যকার অর্থনৈতিক সম্পর্ক একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য যাবতীয় অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে।

তৃতীয়ত, দুই দেশের মধ্যকার পরিবহন নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করার মাধ্যমে যোগাযোগ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে।

চতুর্থত, পারস্পরিক লাভের জন্য ট্যারিফ ও নন ট্যারিফের বাধ্যবাধকতা ও রুলস অফ অরিজিন উঠিয়ে দিতে হবে। পাটজাত পণ্যের ডাম্পিং ও অ্যান্টি ডাম্পিং শুল্ক, কাস্টমসের বিড়ম্বনা, নো ম্যান্স ল্যান্ডে পণ্যের লোডিং ও আনলোডিংয়ের সমস্যাগুলোকে বিবেচনা করতে হবে।

পঞ্চমত, ভারতীয় কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতাপূর্ণ খাতগুলোর উন্নতিতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

ষষ্ঠত, আইনি বাধ্যবাধকতাও এটি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য অংশীদার দেশগুলোর মধ্যে অন্তত ৯০ শতাংশ পণ্য ও সব ধরনের সেবা পরিবহনে সমস্ত বর্ডার ডিউটি ও বিধিনিষেধ উঠিয়ে নিতে হবে।

সপ্তমত, মুক্তবাণিজ্যের পূর্ণ সফলতা পেতে হলে একটি দেশের রপ্তানি খাতের বৈচিত্র্য থাকতে হবে, যা দিয়ে সে বৈদেশিক বাণিজ্যে ভারসাম্য আনতে পারে।

বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশই পোশাক পণ্যের দখলে এবং এগুলো মূলত উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে রপ্তানি হয়ে থাকে। ভারতের বাজারে এসব পণ্যের চাহিদা কম। তাই সেপার সফলতার জন্য রপ্তানি খাত আরও বৈচিত্র্যপূর্ণ করার উদ্যোগ নিতে হবে।

সর্বশেষ অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা সেপা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যেন কোনোরূপ প্রভাব না ফেলে তা খেয়াল রাখতে হবে। ২০১৮-১৯ সালে বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল আঞ্চলিক সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তিতে যোগদানে ভারতের বিরুদ্ধে সুপারিশ করেছিল।

দুই দেশের ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনার বিবেচনায় সেপা একটি গেম চেঞ্জিং চুক্তি হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের অভিযাত্রায় ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে যোগাযোগ এবং আর্থ-সামাজিক থেকে অবকাঠামো খাতে এই চুক্তি নতুন মাত্রা যুক্ত করবে।

বিস্তৃত উৎপাদন ব্যবস্থা ও আঞ্চলিক বাজার সৃষ্টির জন্য বাণিজ্য, পরিবহন ও বিনিয়োগের ত্রিমাত্রিক উন্নয়নে গঠনমূলক পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য একটি সময়োপযোগী পরিকল্পনা নেয়া ও সে অনুযায়ী কাজ করা জরুরি।

লেখক: স্বাধীন গবেষক ও কলামিস্ট

আরও পড়ুন:
যুক্তরাজ্যকে ছাড়িয়ে পঞ্চম বৃহৎ অর্থনীতি ভারত
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে নজর সম্পর্ক জোরদারে
যে কারাগারে বন্দিরা খান ‘পাঁচ তারকা হোটেলের’ খাবার
১১ সেপ্টেম্বর শুরু সাকিবদের ক্যাম্প
শেখ হাসিনাকে এবারও স্বাগত জানাবেন মোদি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

মতামত
From now on the dollar will be market based Governor

এখন থেকে ডলারের দাম হবে বাজারভিত্তিক: গভর্নর

জুনের মধ্যে আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়
এখন থেকে ডলারের দাম হবে বাজারভিত্তিক: গভর্নর

বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে উল্লেখ করে ডলার-টাকার বিনিময় হার এখন থেকে বাজারনির্ভরভাবে নির্ধারণের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।

এ সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বাংলাদেশ আগামী জুন মাসের মধ্যে ১৩৩ কোটি ডলারের ঋণ কিস্তি পাবে বলেও জানান তিনি।

ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের দর-কষাকষি চলছিল। মূলত সে কারণে আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড় করছিল না। এর মধ্যে গতকাল জানা যায়, বাংলাদেশ ডলারের বিনিময় আরও নমনীয় করতে রাজি হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলমান ৪৭০ কোটি ডলারে ঋণের দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করতে রাজি হয়েছে আইএমএফ।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, গত ৯ মাসে রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি করা হয়নি, তবুও বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে এবং তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। এ অবস্থায় বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে ব্যাংকারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, বাজারভিত্তিক করায় হঠাৎ করে ডলারের রেট অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। দীর্ঘদিন ধরে ডলারের রেট ১২২ টাকার আশপাশে রয়েছে এবং তা সেখানেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ডলারের রেট দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা-সরবরাহ অনুযায়ী নির্ধারিত হবে, বাইরের দেশের নির্দেশে নয়। বর্তমানে বাজারে ডলারের সরবরাহও পর্যাপ্ত রয়েছে।

তবে, তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দুবাইভিত্তিক কিছু সিন্ডিকেট বাজারে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক থাকবে এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, ড. মো. হাবিবুর রহমান, কবির আহমেদ, উপদেষ্টা আহসান উল্লাহ এবং নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

এদিকে গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরের জুনের মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির জন্য নির্ধারিত ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার একত্রে ছাড় করবে।

বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে সকল বিষয় সতর্কতার সাথে পর্যালোচনা করে উভয়পক্ষ রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, মুদ্রা বিনিময় হারসহ অন্যান্য সংস্কার কাঠামো বিষয়ে সম্মত হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা এবং বিনিময় হার ব্যবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে অধিকতর পর্যালোচনার লক্ষ্যে চতুর্থ রিভিউ সম্পন্ন হওয়ার পর উভয় রিভিউয়ের জন্য নির্ধারিত কিস্তির অর্থ একত্রে ছাড় করা হবে বলে বিগত তৃতীয় রিভিউয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ রিভিউয়ের সময় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত ব্যাংক-ফান্ড সভায় এবিষয়ে আলোচনা চলমান ছিল।

এ ছাড়া বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি, এআইআইবি, জাপান এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা জুন মাসের মধ্যে পাবে বলে বাংলাদেশ প্রত্যাশা করছে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এ অর্থ পাওয়া গেলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে। ফলে মুদ্রার বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয় যে, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা গ্রহণের ক্ষেত্রে যেসকল সংস্কার কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব বিবেচনায় পরিকল্পিত এবং জাতীয় স্বার্থে গৃহীত। এ সকল সংস্কার কর্মসূচির ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগীদের কার্যক্রম শুধুমাত্র কারিগরি সহায়তা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

মন্তব্য

মতামত
The United States and China agree to reduce tariffs

শুল্ক কমাতে একমত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

শুল্ক কমাতে একমত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

বাণিজ্যযুদ্ধের তীব্রতা কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। পরস্পরের ওপর আরোপ করা পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য শুল্ক ৯০ দিনের জন্য ব্যাপক পরিসরে কমাতে একমত হয়েছে দুই দেশ। গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা কমাতেই এই চুক্তি হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের আগে চীনের ওপর মার্কিন শুল্ক ছিল ২০ শতাংশ। পরে নতুন শুল্ক যখন ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন তখন তিনি বলেছিলেন তিন মাস সবার জন্য বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক হার প্রযোজ্য হবে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুপক্ষের মধ্যে আলোচনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, গঠনমূলক ও দৃঢ় আলোচনার পর উভয় দেশ ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত করতে রাজি হয়েছে। এর আওতায় দেশ দুটি পারস্পরিক শুল্ক ১১৫ শতাংশ কমাবে।

চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত বর্তমান ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। অন্যদিকে চীন মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপ করা ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। উভয় দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, আগামী ১৪ মে থেকে শুল্কের এই কাঁটছাট কার্যকর হবে।

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে স্কট বেসেন্ট বলেন, আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে এসেছি যে, আমাদের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। দুই পক্ষের প্রতিনিধিদলই একমত হয়েছে যে তারা বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় না। মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশই নিজেদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে পেরেছে। আমাদের লক্ষ্য ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যের পথে অগ্রসর হওয়া এবং এটি তারই সূচনা।

প্রথম দফায় শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ববাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল এবং বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কাও জোরালো হয়েছিল। তবে এবার এই চুক্তির ঘোষণায় বিশ্ব শেয়ারবাজারে তাৎক্ষণিক ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

শুল্ক কমানোর চুক্তির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববাজারে চাঙাভাব দেখা দেখা গেছে। হংকংয়ের প্রধান সূচক ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ স্টক ফিউচারের উত্থান হয়েছে। এছাড়া বাড়তি শুল্ক স্থগিতের খবরে চীনা মুদ্রা ইউয়ানের দর বেড়ে ছয় মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইউরোপীয় শেয়ারবাজারগুলোও উচ্চমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু করে এবং মার্কিন বাজারগুলোও ২ থেকে ৩ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, এই সময়সীমার মধ্যে চীনের উচিত হবে ফেন্টানিল নামক ভয়াবহ মাদকের অবৈধ রপ্তানি বন্ধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া। এ বিষয়ে চীনের সদিচ্ছা দেখে ওয়াশিংটন আশাবাদ প্রকাশ করেছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিলের প্রবেশ ঠেকাতে চীন পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না এমন অভিযোগ তুলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।

মন্তব্য

মতামত
NBR will form special units to prevent money smuggling

টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করবে এনবিআর

টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করবে এনবিআর
টাকার পাচার রোধে এনবিআর তিনটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছে। প্রথমত, আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা ও ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাচার ঠেকাতে দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে বিশেষায়িত একটি ইউনিট গঠন করা যেতে পারে। এই ইউনিটের সদস্যরা প্রতারণা হয় বা হতে পারে- এমন বিল অব এন্ট্রিগুলো তদারকি ও তদন্ত করবেন। এই ইউনিট গঠন হলে একদিকে টাকা পাচার বন্ধের পাশাপাশি এনবিআরের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির সক্ষমতা বাড়বে।

টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মূলত বাণিজ্যের আড়ালে যে বিদেশে টাকা পাচার হয়, তা প্রতিরোধ করতেই এমন উদ্যোগ। দুই প্রক্রিয়ায় টাকা পাচার হয় বলে মনে করে এনবিআর। এগুলো হলো-আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা এবং ট্রান্সফার প্রাইসিং। এসব কারণে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব লোকসান হয় বলে মনে করে এনবিআর।

সম্প্রতি এনবিআর মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল নামে ১০ বছরের একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। সেখানে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।

গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির (জিএফআই) উদ্ধৃতি দিয়ে এনবিআরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্যের আড়ালে (মিথ্যা ঘোষণা) ৭০ শতাংশ অর্থ পাচার হয়ে থাকে।

টাকার পাচার রোধে এনবিআর তিনটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছে। প্রথমত, আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা ও ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাচার ঠেকাতে দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে বিশেষায়িত একটি ইউনিট গঠন করা যেতে পারে। এই ইউনিটের সদস্যরা প্রতারণা হয় বা হতে পারে- এমন বিল অব এন্ট্রিগুলো তদারকি ও তদন্ত করবেন। এই ইউনিট গঠন হলে একদিকে টাকা পাচার বন্ধের পাশাপাশি এনবিআরের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির সক্ষমতা বাড়বে।

সাধারণত আমদানিকালে তুলনামূলক বেশি দাম দেখিয়ে অর্থ দেশের বাইরে পাচার করা হয়। মূলত মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এভাবে টাকা পাচার করা হয়। দুই বছর আগে এনবিআর পাচার টাকা ফেরত আনার সুযোগ দিলেও কেউ তা নেননি।

এনবিআরের দ্বিতীয় সুপারিশ হলো, বিদেশি কূটনীতিক মিশনে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তাদের জন্য এটাশে পদ সৃষ্টি করা। এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্যের আড়ালে মিথ্যা ঘোষণা এবং ট্রান্সফার প্রাইসিং ইস্যুটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। যেসব দেশ থেকে পণ্য আসে, সেখানে পণ্যের মূল্য কত, তা জানা সম্ভব হয় না। আবার নানাভাবে বিভিন্ন দেশে টাকা পাচার হয়। এনবিআর বলছে, বিভিন্ন দূতাবাসে, বিশেষ করে বাংলাদেশে বড় বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোতে রাজস্ব খাতে কর্মকর্তাদের জন্য এটাশে পদ সৃষ্টির সুপারিশ করেছে এনবিআর। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাপান, ভারতের মতো দেশ এমন পদ সৃষ্টি করেছে বলে এনবিআরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এনবিআরের তৃতীয় সুপারিশ হলো, পাচার টাকা ফেরত আনতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। যেমন দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া; যেসব দেশে পাচার হয়, সেখানে তদারকি ও পর্যবেক্ষণ বৃদ্ধি; আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করা। এসব করা হলে পাচার টাকা চিহ্নিত করে ফেরত আনা সহজ হবে। এ ছাড়া টাকা পাচারে সহায়তাকারীদের শাস্তির আওতায় আনার কথাও বলেছে এনবিআর।

এনবিআরের একজন কর্মকর্তা বলেন, টাকা পাচারের কারণে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারায় সরকার। টাকা পাচার বন্ধ করতে পারলে অর্থনীতি আরও চাঙা হবে। এ ছাড়া সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে এর পরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের রাঘববোয়াল (ক্রীড়নক), আমলা ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এই পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটি রিপোর্টস (জিএফআইআরএস) এবং কিছু নির্দিষ্ট পূর্বানুমানের ভিত্তিতে টাকা পাচারের হিসাব করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।

দেশ থেকে কারা, কীভাবে, কোথায় টাকা পাচার হয়েছে- সেই চিত্র তুলে ধরে শ্বেতপত্রে বলা হয়, টাকা পাচারের জন্য দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের ক্রীড়নক, আমলাদের মধ্যে এক ধরনের অনৈতিক চক্র গড়ে ওঠে। ঘুষ-দুর্নীতি, আর্থিক অপরাধ, মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে বাণিজ্য, ব্যাংক থেকে চুরি করা টাকা, খেলাপি ঋণের অর্থ, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে দেখানো, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, কর ফাঁকি- এসব কর্মকাণ্ডের অর্থ পাচার করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ করের অভয়ারণ্য নামে পরিচিত ছোট ছোট দেশে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়েছে। মূলত বাড়ি কিনে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করে টাকা পাচার করা হয়।

মন্তব্য

মতামত
Signature of Memorandum of Understanding and agreement between Dhaka Bejing

ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

ঢাকা-বেইজিংয়ের মধ্যে ৯ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। ছবি: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং
সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে দুই দেশের কালজয়ী সাহিত্য ও শিল্পকর্মের অনুবাদ ও সৃজন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও খবর আদান-প্রদান, গণমাধ্যম, ক্রীড়া এবং স্বাস্থ্য খাতে বিনিময় সহযোগিতা। এর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ বিষয়ে সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়েছে।

বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তি এবং আটটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার চার দিনের চীন সফরের তৃতীয় দিন শুক্রবার দুই দেশের মধ্যে এ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি ও স্মারকগুলো স্বাক্ষর হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, সমঝোতা স্মারকগুলোর মধ্যে রয়েছে দুই দেশের কালজয়ী সাহিত্য ও শিল্পকর্মের অনুবাদ ও সৃজন, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও খবর আদান-প্রদান, গণমাধ্যম, ক্রীড়া এবং স্বাস্থ্য খাতে বিনিময় সহযোগিতা। এর পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার দ্বিপক্ষীয় চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে পাঁচ বিষয়ে সহযোগিতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়েছে।

এগুলো হলো বিনিয়োগ আলোচনা শুরু করা, চীনের বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল চালু, মোংলা বন্দরের আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণ, একটি রোবট ফিজিওথেরাপি ও পুনর্বাসন কেন্দ্র নির্মাণ এবং একটি কার্ডিয়াক সার্জারি গাড়ি অনুদান।

আরও পড়ুন:
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে তুলসি গ্যাবার্ডের বক্তব্যের প্রতিবাদ সরকারের
ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবকের মরদেহ হস্তান্তর
ভারতের অভ্যন্তরে ‌খাসিয়াদের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত
ইরান থেকে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়াবে চীন
ভারতে বিমানের ফ্লাইটের জরুরি অবতরণ, যাত্রীরা অক্ষত

মন্তব্য

মতামত
Positive response to reduce loan interest rates assured Chinas water resources management
ইউএনবিকে প্রেস সচিব

ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস

ঋণের সুদহার কমাতে ইতিবাচক সাড়া চীনের, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতার আশ্বাস প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং। কোলাজ: নিউজবাংলা
ড. ইউনূসের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্টের বৈঠককে অত্যন্ত সফল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ইউএনবিকে বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি বিষয় উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশকে দেওয়া চীনা ঋণের সুদের হার কমানো ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় দেশটির সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়টি ছিল।’

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশের উত্থাপিত বিষয়গুলো চীন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।

স্থানীয় সময় শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে চীনা প্রেসিডেন্ট এ কথা জানান।

ড. ইউনূসের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্টের বৈঠককে অত্যন্ত সফল উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ইউএনবিকে বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি বিষয় উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশকে দেওয়া চীনা ঋণের সুদের হার কমানো ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় দেশটির সহযোগিতা চাওয়ার বিষয়টি ছিল।’

তিনি বলেন, ‘বৈঠকে আলোচনা অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ, গঠনমূলক ও ফলপ্রসূ হয়েছে।’

প্রেস সচিব বলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও অধ্যাপক ইউনূসের প্রতি তার সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার এটি ছিল প্রথম দ্বিপক্ষীয় বিদেশ সফর। এখন পর্যন্ত এটি একটি বড় সফলতা।’

প্রেসিডেন্ট শির বক্তব্যের বরাতে শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও কারখানা স্থাপনে চীন তার দেশের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করবে।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট শি ফুজিয়ান প্রদেশের গভর্নর থাকাকালীন দুইবার বাংলাদেশ সফর করেছেন এবং ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে তিনি পড়াশোনা করেছেন। সে কথাও উল্লেখ করেছেন চীনের রাষ্ট্রপ্রধান।

প্রেসিডেন্ট শির উদ্বৃতি দিয়ে শফিকুল আলম বলেন, তিনি বাংলাদেশি আম ও কাঁঠাল খেয়েছেন। এগুলো সুস্বাদু। আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশ আগামী মৌসুমে এ দুটি ফল চীনে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি করবে।

চীনা প্রেসিডেন্ট ও প্রধান উপদেষ্টা চীনের পিপলস গ্রেট হলে করা বৈঠকে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

তারা দুই দেশের সম্পর্ককে জোরদার করা ও ঢাকা-বেইজিংয়ের পারস্পরিক ও কৌশলগত স্বার্থকে এক নতুন উচ্চতায় নেওয়ার উপায় নিয়েও আলোচনা করেন।

আরও পড়ুন:
২৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল রিজার্ভ
সমৃদ্ধ এশিয়া গড়তে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
চীনের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়লেন প্রধান উপদেষ্টা
জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা প্রধান উপদেষ্টার
স্টারলিংকের ইন্টারনেট বাণিজ্যিকভাবে চালু করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ

মন্তব্য

মতামত
Rivo brings C12 electric bikes with state of the art technology in the country market

দেশের বাজারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সি৩২ ইলেকট্রিক বাইক আনল রিভো

দেশের বাজারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সি৩২ ইলেকট্রিক বাইক আনল রিভো সি৩২-এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য শক্তিশালী ১৮০০ ওয়াট মোটর, যা ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। ছবি: রিভো
সি৩২-এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য শক্তিশালী ১৮০০ ওয়াট মোটর, যা ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। বাইকটির ইকো মোডে গতি ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা এবং একবার চার্জে এটি ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে।

বাংলাদেশের বাজারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সি৩২ ইলেকট্রিক বাইক এনেছে বৈশ্বিক ব্র্যান্ড রিভো। অত্যাধুনিক ৭২ ভোল্ট ২৬ অ্যাম্পিয়ার সম্পূর্ণ গ্রাফিন ব্যাটারি পরিচালিত এই ইলেকট্রিক বাইকের উদ্বোধন ঘোষণা করেন রিভো বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ভেন নি।

ফিচার

সি৩২-এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য শক্তিশালী ১৮০০ ওয়াট মোটর, যা ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। বাইকটির ইকো মোডে গতি ৩০ কিলোমিটার/ঘণ্টা এবং একবার চার্জে এটি ৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে পারে।

অন্যদিকে স্পোর্ট মোডে সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার/ঘণ্টা এবং এক চার্জে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে।

সি৩২ ইলেকট্রিক বাইকে উন্নত ৭২ ভোল্ট ২৬ অ্যাম্পিয়ার গ্রাফিন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে, যা পাঁচ শতাধিক চার্জিং সাইকেল সাপোর্ট করে এবং প্রতিটি পূর্ণ চার্জে মাত্র ২.০৮ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খরচ করে।

ব্যাটারিটি সম্পূর্ণ চার্জ হতে ১০.৬ ঘণ্টা সময় নেয়, যা রাতে চার্জ দিয়ে দিনব্যাপী ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত।

নিরাপত্তা এবং আরামকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে রিভো সি৩২। এতে রয়েছে সামনে ডিস্ক ব্রেক এবং পিছনে ড্রাম ব্রেক সিস্টেম, যা সর্বোচ্চ স্টপিং পাওয়ার নিশ্চিত করে।

ফ্রন্ট ও রিয়ার হাইড্রোলিক সাসপেনশন থাকার ফলে রাইডাররা মসৃণ ও আরামদায়ক রাইড উপভোগ করতে পারেন। এমনকি অপ্রশস্ত বা অসমান রাস্তাতেও।

রাতে নিরাপদ যাত্রার জন্য সি৩২-এ রয়েছে পূর্ণ এলইডি লাইটিং সিস্টেম, যার মধ্যে এলইডি হেডলাইট, টেইললাইট এবং টার্ন সিগন্যাল অন্তর্ভুক্ত।

রিভো সি৩২ শুধু শক্তিশালী পারফরম্যান্সই দেয় না, এটি ডিজাইনেও বেশ কার্যকর। ১৪০ কেজি ওজনের মজবুত অথচ হালকা ফ্রেম এবং সামনে ও পিছনে ৯০/৮০-১২'' ভ্যাকুয়াম টায়ার যুক্ত বাইকটি দুর্দান্ত গ্রিপ এবং স্থিতিশীলতা প্রদান করে।

২০৫ এমএম পর্যন্ত গ্রাউন্ড ক্লিয়ারেন্স থাকায় এটি যেকোনো ধরনের রাস্তার জন্য উপযোগী। সিট বাকেটে ২৪ লিটার স্টোরেজ স্পেস রয়েছে, যা ব্যক্তিগত জিনিসপত্র বহনের জন্য আদর্শ।

ব্যবহারকারীবান্ধব ডিজাইন এবং আরামের সমন্বয়ে এটি শহরের যাতায়াতকারী এবং দূরপাল্লার রাইডারদের জন্য একটি পারফেক্ট পছন্দ।

এখন থেকে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যে বাংলাদেশের সব শোরুমে পাওয়া যাচ্ছে।

সি৩২ যাতায়াতকে সহজ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব করতে উন্নত প্রযুক্তি, শক্তিশালী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করছে, যা প্রতিদিনের যাত্রীদের পাশাপাশি পরিবেশ সচেতন রাইডারদের জন্য আদর্শ হতে পারে।

আরও পড়ুন:
মহাসড়কে মোটরসাইকেল চলবে
পদ্মা সেতুতে বাইক এখনই নয়
‘মোগো ওপর দিয়া বাস চালাইয়া যাউক’
হানিফ ফ্লাইওভারে বাইক দুর্ঘটনায় তিতুমীর কলেজের ছাত্রী নিহত
মাস্টার চাবি বানিয়ে ৫০০ বাইক চুরি

মন্তব্য

মতামত
Three tonnes of potatoes went to Nepal through Banglabandha

বাংলাবান্ধা দিয়ে নেপালে গেল আরও ১০৫ টন আলু

বাংলাবান্ধা দিয়ে নেপালে গেল আরও ১০৫ টন আলু আলুবোঝাই ট্রাক। ছবি: বাসস
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারিনটিন ইন্সপেক্টর উজ্জল হোসেন জানান, বুধবার বিকেলে স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচটি ট্রাকে ১০৫ টন আলু নেপালে গেছে।

আলু রপ্তানিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর। এ স্থলবন্দর দিয়ে নতুন করে আরও ১০৫ টন আলু গিয়েছে নেপালে।

এ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে ১ হাজার ৫৫৪ টন আলু নেপালে রপ্তানি করা হলো।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারিনটিন ইন্সপেক্টর উজ্জল হোসেন জানান, বুধবার বিকেলে স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচটি ট্রাকে ১০৫ টন আলু নেপালে গেছে।

তিনি জানান, আলুগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। এগুলো রপ্তানি করছে থিংকস টু সাপ্লাই ও ফাস্ট ডেলিভারি নামে দুটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে থিংকস টু সাপ্লাই ৪২ ও ফাস্ট ডেলিভারি ৬৩ টন রপ্তানি করে। এ ছাড়াও বন্দরটি দিয়ে হুসেন এন্টারপ্রাইজ, ক্রসেস এগ্রো, সুফলা মাল্টি প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং লোয়েড বন্ড লজিস্টিক নামের কয়েকটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানও নেপালে আলু রপ্তানি করছে।

উজ্জ্বল হোসেন বলেন, রপ্তানিকারকরা প্রয়োজনীয় নথিসহ অনলাইনে আবেদন করলে উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের ল্যাবে পরীক্ষা করার পর ফাইটোসেনেটারি সার্টিফিকেট ইস্যু করা হয়। রপ্তানিকৃত আলুগুলো স্টারিজ এবং লেডিও রোজেটা জাতের।

আরও পড়ুন:
গজারিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি, আলু পরিবহন বন্ধ
নেপালে সড়ক দুর্ঘটনায় আটজন নিহত
নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানিতে ঢাকা-দিল্লি-কাঠমাণ্ডু চুক্তি সই
নেপালে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৯৩
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি শুরু

মন্তব্য

p
উপরে