× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

মতামত
The 63 year path of the Awami League a despairing assessment
google_news print-icon

আওয়ামী লীগের ৭৩ বছরের পথচলা: একটি নির্মোহ মূল্যায়ন 

আওয়ামী-লীগের-৭৩-বছরের-পথচলা-একটি-নির্মোহ-মূল্যায়ন 
আগামী ২৫ জুন পদ্মা মহাসেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এ সবই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিশনারি ভিশনারি নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অর্জন করতে পেরেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে, তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল এবং আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

আজ ২৩ জুন। ১৯৪৯ সালে এদিনে পুরান ঢাকার টিকাটুলীর কেএম দাস লেন রোডের রোজ গার্ডেন প্যালেসে দুদিনব্যাপী একটি সংগঠনের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২৪ তারিখ সম্মেলন শেষে জন্ম নেয় একটি নতুন রাজনৈতিক দলের। নামকরণ করা হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ । কেউ তখন ভাবতে পারেনি এই সংগঠনটি পাকিস্তান নামক সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রের পতন ঘটিয়ে পূর্ব বাংলার জনগণের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ইতিহাসের প্রধান রাজনৈতিক দলে পরিণত হবে এবং দলটির নেতৃত্বে একটি মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত করার মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠিত হবে। স্বাধীনতার পর রাজনৈতিক নানা উত্থান পতনের মধ্য দিয়েও দলটি বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নিরন্তর সংগ্রামে নেতৃত্ব প্রদান করছে। আজ সেই দলের ৭৩ বছরপূর্তি।

ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে যে দলটির জন্ম সেই দলটি ইতিহাসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এই গৌরবোজ্জ্বল রাজনৈতিক দলটির নাম এখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। উপমহাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে আওয়ামী লীগ শুধু অন্যতম পুরাতন রাজনৈতিক দলই নয়, একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তার সংগ্রামে লড়াইরত প্রতিষ্ঠানও। সেকারণে এই দলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের ইতিহাস। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে আওয়ামী লীগ থেকে আলাদা করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগকেও বাংলাদেশ রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন করার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ ইতিহাসের প্রয়োজনীয়তাকে উপলব্ধি শুধু করেনি, বাস্তবায়ন ঘটাতে রাজনৈতিক সব ঝুঁকি, বিপদ, কষ্ট, নির্যাতন, সহ্য করে ক্রমাগত বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করেছে। অবশেষে ১৯৭১ সালে সফল হয়েছে। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্রের আদর্শে পুনর্গঠন করার জন্য দলটি একইভাবে নিরন্তর লড়াই ও কাজ করে চলছে। এখানেই এই রাজনৈতিক দলের বিশেষত্ব। দলটির প্রয়োজনীয়তা তাই আদৌ ফুরিয়ে যায়নি। বরং অধিকতর গুরুত্ব বেড়েই চলছে।

১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারত উপমহাদেশ দ্বিখণ্ডিত হয়ে পাকিস্তান নামক যে রাষ্ট্রটি জন্ম নেয় তার পূর্বাঞ্চলে পূর্ব বাংলাকে যুক্ত করা হয়েছিল। সাম্প্রদায়িকতার জটিল রাজনৈতিক কূটচালের শিকার হলো পূর্ব বাংলার জনগণ। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান জনগণ ধরে নিয়েছিল যে পাকিস্তান রাষ্ট্রে তাদের সুখ শান্তি অবারিত হবে। ধর্মের পরিচয়ে অন্য একটি বড় জনগোষ্ঠী পাকিস্তানে সংখ্যালঘুতে পরিণত হলো। ভারত প্রজাতন্ত্রেও অনুরূপ সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘুতে নাগরিকরা পরিচিত হওয়ার বাস্তবতায় পড়ে গেল। পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের জনগণ ভাষার প্রশ্নে রাষ্ট্রের বৈরী আচরণের মুখে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পড়ে । উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার কথা আগে থেকেই উচ্চারিত হতে থাকে। তখনই ধীরে নতুন এই রাষ্ট্রের চরিত্র উন্মোচিত হতে থাকে। পাকিস্তান পূর্ব বাংলার জনগণের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক অধিকারকে রক্ষার পরিবর্তে বিলুপ্তির দিকে অগ্রসর হতে থাকে। পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী পূর্ব বাংলার জনগণের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ এবং দৃষ্টিভঙ্গি শুরু থেকেই প্রকাশ করতে থাকে। এর ফলে পূর্ব বাংলার জনগণের অধিকার রক্ষার তাগিদ থেকে সচেতন তরুণ এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ধীরে ধীরে সংগঠন গড়ে তোলার পথে অগ্রসর হতে থাক। অথচ এই তরুণ এবং রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই কয়েকমাস আগেও পাকিস্তানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিল। কিন্তু তাদের সেই স্বপ্ন অচিরেই ভেঙে যায় । সেখান থেকেই ১৯৪৭ সালের ৬ ও ৭ সেপ্টেম্বর তারিখে পাকিস্তান আন্দোলনে পুরোভাগের যুবকর্মীরা ঢাকায় অনুষ্ঠিত পূর্ব বাংলা কর্মী সম্মেলনে মিলিত হয়ে গণতান্ত্রিক যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। শামসুল হক এই সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন। এই সংগঠনের সঙ্গে তরুণ কমরুদ্দিন আহাম্মদ, শামসুল হক, শেখ মুজিবুর রহমান, তাজউদ্দীন আহমদ, শামসুদ্দিন আহাম্মদ, মোহাম্মদ তোয়াহা, নুরুদ্দিন আহম্মদ, আবদুল ওদুদ প্রমুখ জড়িত ছিলেন। এরপর আরও কয়েকটি সংগঠন ভাষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে থাকে।

১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি শেখ মুজিবকে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক হল মিলনায়তনে এক সভায় ‘নিখিল বঙ্গ মুসলিম ছাত্রলীগ’ সংগঠনটি ‘পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ’ নামে পুনর্গঠিত হয়। পূর্ব বাংলায় তখন থেকে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় তরুণ ও যুবসমাজ, ভাষা আন্দোলন এবং অন্যান্য আন্দোলন গড়ে তুলতে থাকে। ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানের স্বৈরতান্ত্রিক আচরণের বিরুদ্ধে রাজনীতির একটি মেরুকরণ সংগঠিত হতে থাকে। সরকার এই শক্তি দমনে সর্বাত্মক শক্তি প্রয়োগ করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের একটি আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করতে গিয়ে ১৯৪৯ সালের ১৯ মার্চ শেখ মুজিবসহ কজনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ২৬ এপ্রিলে টাঙ্গাইল উপনির্বাচনে খুররম খান পন্নীর বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক যুবলীগের প্রার্থী সভাপতি শামসুল হক বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। মুসলিম লীগের প্রথম পরাজয় দৃশ্যমান হয়। জয় পরাজয়ের এই অবস্থান থেকেই বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের প্রগতিশীল অংশের নেতৃবৃন্দ নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে অগ্রসর হন। কলকাতায় অবস্থানরত সোহরাওয়ার্দী নতুন এই রাজনৈতিক সম্ভাবনার পক্ষে অবস্থান নেন। এরই মধ্যে ১৫০ মোগলটুলির শওকত আলীর বাসভবনকে কেন্দ্র করে পূর্ববঙ্গ কর্মী শিবির গড়ে ওঠে। জেলে অবস্থানকারী শেখ মুজিবুর রহমানও এই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এর একটি সাংগঠনিক কমিটিও গঠিত হয়। মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে সভাপতি এবং ইয়ার মুহম্মদ খানকে সম্পাদক করে এই কমিটি প্রাথমিকভাবে তৈরি হয়। এই কর্মী শিবিরই ২৩ ও ২৪ জুন রোজ গার্ডেনে দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে প্রদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বেশ কিছু নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সম্মেলনে উপস্থিত থাকেন। ২৪ তারিখ মওলানা ভাসানীকে সভাপতি, আতাউর রহমানসহ কয়েকজন সহসভাপতি, শামসুল হককে সাধারণ সম্পাদক, শেখ মুজিবকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ইয়ার মোহম্মদ খানকে কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচিত করা হয়। আওয়ামী লীগ গঠনের সঙ্গে তখন তাজউদ্দীন আহমেদ, শওকত আলী, আনোয়ারা খাতুন, ফজলুল কাদের চৌধুরী, আবদুল জব্বার খদ্দর, মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ, আলী আমজাদ খান, শামসুদ্দীন আহমদ (কুষ্টিয়া), ইয়ার মুহম্মদ খান, মাওলানা শামসুল হক, মাওলানা এয়াকুব শরীফ, আবদুর রশিদ প্রমুখ যুক্ত ছিলেন। নবগঠিত দলের কর্মসূচি হিসেবে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন, বাংলা ভাষাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা, গণতন্ত্র ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ৪২টি দাবি গ্রহণ করা হয়। ২৬ জুন তারিখ শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান। আওয়ামী লীগ সংগঠন গড়ে তোলার প্রস্তুতি গ্রহণ করলে দলটির ওপর সরকারি নির্যাতন শুরু হয়। মওলানা ভাসানী, শামসুল হক, শেখ মুজিবুর রহমানসহ অনেকেই বিভিন্ন মামলায় কারাভোগ করেন। সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক সরকারি নির্যাতনে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। জেল থেকে মুক্তি পেয়ে শেখ মুজিবুর রহমান দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এবং আতাউর রহমান সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৩ সালে দলের দ্বিতীয় সম্মেলনে শেখ মুজিবুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ভাসানী সভাপতি পদে পুনর্নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালের ডিসেম্বরে যুক্তফ্রন্ট গঠিত হয়। ১৯৫৪ সালের ৮-১২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। আওয়ামী লীগ এককভাবে ১৪৩টি আসন পায়। আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা তখন অন্য সব দলকে ছাড়িয়ে যায় কয়েকগুণ। ১৯৫৫ সালে অনুষ্ঠিত দলের ৩য় সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে অসাম্প্রদায়িক আদর্শের রাজনৈতিক দলে পরিণত করা হয়। এরপরে ১৯৫৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত কাগমারী সম্মেলনে আওয়ামী লীগকে ত্যাগ করে মওলানা ভাসানীসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি গঠনের উদ্যোগ নেন। জুলাইয়ে ভাসানীর নেতৃত্বে ন্যাপ গঠিত হয়। আওয়ামী লীগ তখন কেন্দ্রীয় এবং প্রাদেশিক সরকারের দায়িত্ব পালন করছিল। কিন্তু এই বিভাজনটি পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের রাজনৈতিক আন্দোলনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।

১৯৫৮ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে এবং আওয়ামী লীগসহ সব রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ৬০-এর দশকে আইয়ুবের মৌলিক গণতন্ত্র ও প্রসিডেন্ট নির্বাচনের বিরুদ্ধে বৃহত্তর জোট গঠন করে। তবে ১৯৬৫-এর পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের পর ১৯৬৬ সালে শেখ মুজিব ৬ দফা পেশ এবং মার্চে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ৬ দফা গ্রহণ, শেখ মুজিবকে সভাপতি এবং তাজউদ্দীন আহমদকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠনের পর ৬ দফা আন্দোলন সর্বত্র ছড়িয়ে দেয়া হয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জেলে আটক রাখার পরও আন্দোলন দুর্বল করা যায়নি।

সরকার আওয়ামী লীগ ভাঙার চেষ্টা করলে সেটিও ব্যর্থ হয়। এরপর ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় শেখ মুজিবকে ১ নম্বর আসামি করে একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়। ১৯৬৮ সালের শেষদিকে এই মামলার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও ছাত্র ঐক্য গড়ে ওঠে। ফলে ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হয় সেকারণে সরকার বাধ্য হয় মামলা প্রত্যাহার করে রাজবন্দিদের মুক্তি প্রদান করতে। এর মধ্য দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত হন। পাকিস্তানের রাজনীতিতে শেখ মুজিব এবং পূর্ব বাংলা তখন পশ্চিম পাকিস্তানিদের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রভাব বিস্তারের নিয়ামক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে। কিন্তু ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ষড়যন্ত্র থেকেই বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ ও ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধের সূচনা হয়। আওয়ামী লীগ সফলভাবে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করে এবং পাকিস্তানিদের পরাজিত করে। বাংলাদেশ স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়।

বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশ পুনর্গঠনে সফলভাবে নেতৃত্ব প্রদান করছিলেন। কিন্তু দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, ক্ষমতা দখল, জেলের অভ্যন্তরে চার জাতীয় নেতাকে হত্যা এবং পুরোপুরি সামরিক স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশকে পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান আওয়ামী লীগ ভেঙে দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করার পথে হাঁটছিলেন। ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনাকে দলের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তিনি ৬ বছর পর দেশে ফিরে আসেন এবং আওয়ামী লীগের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেই সময় সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান অভ্যুত্থানে নিহত হলে দেশের রাজনীতিতে ঘোলাটে পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর সামরিক বাহিনীর প্রধান এরশাদ ক্ষমতা গ্রহণ করেন এবং দেশে পুনরায় সামরিক শাসন জারি হয়।

১৯৯০ সালে সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে নির্বাচনের পথে দেশকে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের বিশেষ ভূমিকা ছিল। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায়। আওয়ামী লীগকে নানা ষড়যন্ত্রের মোকাবিলা করতে হয়।

সর্বশেষ ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। শেখ হাসিনা সরকার গঠন এবং বাংলাদেশকে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে পরিবর্তনের রূপরেখা বাস্তবায়ন শুরু করেন। এই সময়ে দেশ বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে, ডিজিটাল হওয়ার সুযোগ পায়, ৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়, দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক সুরক্ষার নানা প্রকল্প বাস্তবায়িত হতে থাকে। বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পদার্পণ করে।

২০২১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করে। আগামী ২৫ জুন পদ্মা মহাসেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এ সবই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিশনারি ভিশনারি নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অর্জন করতে পেরেছে। বঙ্গবন্ধু মেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে, তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল এবং আত্মমর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। ৭৩ বছরে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশকে স্বাধীনতা, উন্নয়ন, আত্মমর্যাদা, গৌরবময় অহংকারের অনেক কিছু দিতে পেরেছে।

লেখক: গবেষক, অধ্যাপক।

মন্তব্য

আরও পড়ুন

মতামত
14 BNP leaders in jail in Moulvibazar

মৌলভীবাজারে বিএনপির ১৪ নেতাকর্মী কারাগারে

মৌলভীবাজারে বিএনপির ১৪ নেতাকর্মী কারাগারে ছবি: নিউজবাংলা
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।

মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।

মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।

মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।

মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

মন্তব্য

মতামত
BNP leaders have become disinterested Kader

বিএনপি নেতারা হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন: কাদের

বিএনপি নেতারা হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন: কাদের আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এমনকি জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।’

ক্ষমতায় আসার জন্য মরিয়া বিএনপি নেতারা হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। এমনকি জনগণকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় যাওয়ার অপচেষ্টা করছে।’

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বোধগম্য হয় না যে আওয়ামী লীগ জনগণের কাতারে দাঁড়িয়ে রাজনীতি করে, জনকল্যাণে পরিকল্পনা গ্রহণ ও কর্মসূচি নির্ধারণ করে। তাই জনগণকে হাতিয়ার করে নয়, জনকল্যাণের রাজনীতি করে জনগণের মন জয় করেই তাদেরকে ক্ষমতায় যেতে হবে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে আসছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে তারা শাসন-শোষণ ও অত্যাচারের স্টিমরোলার চালিয়েছিল। সন্ত্রাস ও উগ্র-জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তারা সারাদেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ব্যর্থ। দলটি দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বাধ্যগ্রন্ত করার লক্ষ্যে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মাধ্যমে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে।

‘সংসদ নির্বাচন বানচালের নামেও তারা অগ্নি-সন্ত্রাসের মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করেছে। আর দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও আদালত জনগণের নিরাপত্তা এবং শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পদক্ষেপ নিলে বিএনপি নেতারা সেটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপচেষ্টা চালান।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি প্রকৃতপক্ষে একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া তাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত।

‘সরকার জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে বদ্ধপরিকর।

আরও পড়ুন:
উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা না সরলে ব্যবস্থা: কাদের
নির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের চক্রান্তে দেশি-বিদেশি শক্তি: কাদের
বিএনপির অবস্থা টালমাটাল: কাদের
উপজেলা নির্বাচন চলাকালে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন সম্মেলন বন্ধ: কাদের
উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের হস্তক্ষেপ বন্ধে কঠোর আওয়ামী লীগ: কাদের

মন্তব্য

মতামত
EC orders more vigilance in polling in hilly upazilas

পার্বত্য উপজেলাগুলোতে ভোটে অধিক সতর্কতার নির্দেশ ইসির

পার্বত্য উপজেলাগুলোতে ভোটে অধিক সতর্কতার নির্দেশ ইসির
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেন, ‘জেলায় জেলায় কোর কমিটি মিটিং করে জানালে সে অনুযায়ী অতিরিক্ত ফোর্স দেয়া হবে। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা যেভাবে নিরপেক্ষতা, সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন, তা যেন অব্যাহত থাকে।’

পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিক সতর্কতা অবলম্বনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। একইসঙ্গে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালনেরও নির্দেশনা দিয়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাচন ভবনে মাঠ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পুলিশ প্রধানের সঙ্গে কমিশনের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

ইসি সচিব বলেন, ‘প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ জেলায় কী সমস্যা আছে তা বলেছেন। পার্বত্য জেলাগুলোতে যেখানে হেলিকপ্টার সাপোর্ট দেয়া হয়, সেখানে তিনদিনের পরিবর্তে পাঁচদিনের সম্মানী ভাতা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য তারা বলেছেন। কমিশন তাতে সম্মত হয়েছে।

‘পার্বত্য উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোটগ্রহণের দিন প্রতিটি ইউনিয়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলায় দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত জনবল দেয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকরা বলেছেন যে ভোটের দিন সকালে ব্যালট গেলে অতিরিক্ত বাজেটের প্রয়োজন হবে। কমিশন সেটা বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে। মূলত মাঠ প্রশাসনে যাতে সমন্বয়ের মাধ্যমে সুষ্ঠু-সুন্দর নির্বাচন উপহার দেয়া যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।’

ইউপি চেয়ারম্যানরা স্বপদে থেকে নির্বাচন করতে পারবেন বলে আদালত নির্দেশ দিয়েছে। কমিশন বিষয়টি নিয়ে আপিল করবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, ‘আদেশের কপি এখনও আমরা পাইনি। পেলে আপিল করা হবে।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জেলায় জেলায় কোর কমিটি মিটিং করে জানালে সে অনুযায়ী অতিরিক্ত ফোর্স দেয়া হবে। নির্দেশনা দেয়া হয়েছে- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা যেভাবে নিরপেক্ষতা, সততা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন, সেই ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে।’

জাহাংগীর আলম বলেন, ‘কর্মকর্তারা চ্যালেঞ্জের কথা বলেননি। তারা বলেছেন- স্থানীয় নির্বাচনে যেহেতু প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকে তাই সেখানে প্রতিযোগিতাটা বেশি হবে। এজন্য তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে দেয়ার জন্য বলেছেন। সহিংসতার আশঙ্কা করেননি। এ বিষয়টা গোয়েন্দা রিপোর্টে থাকে। কোথাও কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পার্বত্য জেলার উপজেলাগুলোতে নির্বাচনে অধিক সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।’

নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের প্রভাব খাটানো নিয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘আচরণবিধি যাতে সবাই যথাযথভাবে প্রতিপালন করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেছেন। কমিশনও আশ্বস্ত করেছে যে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলবে।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, পুলিশের আইজি, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, আগামী ৮ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত চার ধাপে দেশের পৌনে পাঁচ শ’ উপজেলা পরিষদের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন:
উপজেলা ভোটে প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
ইউপি চেয়ারম্যানরা পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন
ভোটের মাঠে উপজেলা প্রতি থাকছে ২-৪ প্লাটুন বিজিবি
থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলার ভোট স্থগিত
মুন্সীগঞ্জ সদরে ৩ ও সাঘাটায় ১ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত

মন্তব্য

মতামত
Expulsion of 64 BNP leaders with show cause notice 5
উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ

বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, বহিষ্কার ৫

বিএনপির ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ, বহিষ্কার ৫
বিএনপির নেতাদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কারণ দর্শানো নোটিশ সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তাকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জনের দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ৬৪ নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ইতোমধ্যে পাঁচ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় সূত্রের উল্লেখ করে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, নির্বাচনে অংশ নেয়া নেতাদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ২৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

দলটির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলছেন, কারণ দর্শানো নোটিশের সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হওয়া নেতাদের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির একজন সহ-দপ্তর সম্পাদক জানান, মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত বিএনপির ৬৪ জন নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে যেকোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপির হাইকমান্ড।

এদিকে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ইতোমধ্যে পাঁচ নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

সংগঠনটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পৌরসভা নির্বাচনে অংশ নেয়ায় নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলা বিএনপির সভাপতি ফাহমিদ ফয়সল চৌধুরীকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সহ-সভাপতি সাদেক আলী, উত্তর চট্টগ্রামের চিকনন্দী ইউনিয়নের সহকারী আহ্বায়ক রাশেদ আলী মাহমুদ, কক্সবাজার জেলা বিএনপি নেতা জহুরুল আলম ও কক্সবাজার জেলা মৎস্যজীবী দলের নেতা এম হান্নান মিয়াকে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে।

আরও পড়ুন:
দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে প্রার্থী হলেন সাবেক মন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফুফাতো ভাই

মন্তব্য

মতামত
Assault on chairman candidate in Juri arrested 1
উপজেলা নির্বাচন

জুড়ীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর হামলা, আটক ১

জুড়ীতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর ওপর হামলা, আটক ১ হামলায় রক্তাক্ত জখম হন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেন। ছবি: নিউজবাংলা
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আহত আলী হোসেন বলেন, ‘কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে সাইদুল, মুহিব, সোহেলদের নেতৃত্বে আমার ওপর এই হামলা হয়েছে। ‌এ সময় আমাকে অপহরণেরও চেষ্টা করা হয়।’

মৌলভীবাজার জেলার জুড়ীতে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে নির্বাচনি প্রচারণার সময় এ ঘটনা‌ ঘটে।‌ এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।

হামলায় আহত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে প্রথমে জুড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।‌ অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে আহত আলী হোসেন বলেন, ‘কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে সাইদুল, মুহিব, সোহেলদের নেতৃত্বে আমার ওপর এই হামলা হয়েছে। ‌এ সময় আমাকে অপহরণেরও চেষ্টা করা হয়।’

ভাইরাল হওয়া অপর এক ভিডিওতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনকে জোর করে গাড়িতে তোলার চেষ্টা করার দৃশ্য দেখা যায়।‌

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, চেয়ারম্যান প্রার্থী আলী হোসেনসহ আরও তিনজন ঘোড়া প্রতীক চেয়েছিলেন। প্রতীক বরাদ্দের দিন বিষয়টি নিয়ে অনেক হট্টগোল হয়।‌ একাধিক প্রার্থী হওয়ায় লটারির মাধ্যমে আলী হোসেন ঘোড়া প্রতীক পান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আনফর আলীর নির্দেশে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলার বিষয়ে বক্তব্য জানতে কাপ-পিরিচ প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কিশোর রায় চৌধুরী মনির মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জুড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির বলেন, হামলার এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন‌।

আরও পড়ুন:
উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা না সরলে ব্যবস্থা: কাদের
ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচন ৫ জুন
উপজেলা নির্বাচন: চতুর্থ ধাপে ভোটগ্রহণ ৫ জুন
উপজেলা ভোটে প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
ইউপি চেয়ারম্যানরা পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন

মন্তব্য

মতামত
Relatives of Minister MPs do not simplify the system from the upazila elections Kader

উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা না সরলে ব্যবস্থা: কাদের

উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা না সরলে ব্যবস্থা: কাদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে  নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।’

উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনরা সরে না দাঁড়ালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।

‘নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এ বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে দলে; সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না, এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হবে।’

চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল। সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।’

বিএনপির সমাবেশের দিনে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সন্ত্রাস থেকে জনগণকে রক্ষায় কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি একতরফা সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে।

‘আমরা মাঠে থাকলে তারা এসব অপকর্ম করতে মানসিকভাবে চাপে থাকবে। সে জন্য আমরা কর্মসূচি দিই। বিএনপির চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করতে জনগণের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি থাকা উচিত।’

আরও পড়ুন:
ঝিনাইদহ-১ আসনে উপনির্বাচন ৫ জুন
উপজেলা নির্বাচন: চতুর্থ ধাপে ভোটগ্রহণ ৫ জুন
উপজেলা ভোটে প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
ইউপি চেয়ারম্যানরা পদে থেকেই উপজেলা নির্বাচন করতে পারবেন
ভোটের মাঠে উপজেলা প্রতি থাকছে ২-৪ প্লাটুন বিজিবি

মন্তব্য

মতামত
Prime Minister leaves Dhaka for Thailand

থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ

থাইল্যান্ডের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ত্যাগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে ছয় দিনের সরকারি সফরে বুধবার সকালে ব্যাংককের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি। খবর বাসসের

প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ব্যাংককের ডন মুয়াং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানটির অবতরণের কথা রয়েছে।

২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার থাইল্যান্ড সফর উপলক্ষে সোমবার তার মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি একটি দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় উভয় সফর।’

তিনি বলেন, এই সফর উভয় পক্ষের জন্যই তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এতে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের (বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড) মধ্যে সহযোগিতার নতুন জানালা উন্মোচিত হবে।

গত জানুয়ারিতে সরকার গঠনের পর এটিই প্রধানমন্ত্রীর প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফর।

সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন এবং জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসক্যাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনার অভিপ্রায়পত্রসহ বেশ কিছু সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করবে।

বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড সরকারী পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি, শক্তি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য পর্যটন খাতে সহযোগিতা এবং শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আরও দুটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করার সম্ভাবনা রয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই সফর বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আমদানি-রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য ‘মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি’ পর্যালোচনার সুযোগ তৈরি করবে।

সফরকালে হাছান বলেন, আসিয়ানের ‘সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার’ হওয়ার জন্য বাংলাদেশের আবেদনের বিষয়টি ঢাকা জোরালোভাবে উত্থাপন করবে।

তিনি বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান রাজনৈতিক সংঘাতের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হিসেবে থাইল্যান্ডের প্রতি তার তাগিদ পুনর্ব্যক্ত করবে।

তিনি বলেন, যেহেতু থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার উভয়ই আসিয়ানভুক্ত, তাই রোহিঙ্গা ইস্যুটি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

হাছান বলেন, উচ্চ পর্যায়ের সফরে বিনিয়োগ, পর্যটন, জ্বালানি, স্থল ও সমুদ্র সংযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড যৌথ কার্যক্রমের মাধ্যমে পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারে এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন, বৌদ্ধ সার্কিট কর্মসূচি প্রচারের পাশাপাশি ভ্রমণ ও অবকাশ শিল্পে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দক্ষতা বিনিময় করতে পারে।

মন্ত্রী বলেন, পর্যটন শিল্পে এই সহযোগিতা উভয় দেশে উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে।

২৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে থাই প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন স্বাগত জানাবেন এবং তাকে একটি আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে গভর্নমেন্ট হাউসে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) একান্ত দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন, নথিতে স্বাক্ষরে উপস্থিত থাকবেন, একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং এরপর সেখানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে থাই প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া একটি রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেবেন।

সফরকালে, প্রধানমন্ত্রী রাজপ্রাসাদে থাইল্যান্ডের রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন ফ্রা ভাজিরাক্লাওচাওয়ুহুয়া এবং রানী সুথিদা বজ্রসুধাবিমলালক্ষণের রাজকীয় দর্শকদের সঙ্গে থাকবেন।

প্রধানমন্ত্রী ২৫ এপ্রিল ইউএনএসক্যাপ-এর ৮০ তম অধিবেশনে যোগদান করবেন এবং সেখানে ভাষণ দেবেন।

একই দিনে জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল এবং এসক্যাপের নির্বাহী সচিব আরমিদা সালসিয়াহ আলিসজাবানা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

‘লিভারেজিং ডিজিটাল ইনোভেশন ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৮০তম অধিবেশনটি টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ডিজিটাল উদ্ভাবনকে কাজে লাগাতে অঞ্চলব্যাপী সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ জোরদার করার একটি সুযোগ হবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ডিজিটাল উদ্ভাবন কীভাবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলকভাবে অবদান রাখতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করতে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সরকারি নেতা ও মন্ত্রী এবং অন্যান্য মূল অংশীজনদের এই অধিবেশনে একত্রিত করা হবে।

মন্তব্য

p
উপরে