× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

মতামত
Unnecessary debate on the declaration of independence of Bangladesh
google_news print-icon

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা নিয়ে অহেতুক বিতর্ক

বাংলাদেশের-স্বাধীনতা-ঘোষণা-নিয়ে-অহেতুক-বিতর্ক
স্বাধীনতার ‘ঘোষক’ এবং ‘ঘোষণা-পাঠক’ এক কথা নয়। এর মধ্যে ব্যবধান বিস্তর। এত বিস্তর যে পার্থক্য নিরূপণ প্রায় অসম্ভব। তা ছাড়া যে কেউ চাইলে স্বাধীনতার ঘোষণাও দিতে পারেন না।

উড়ে এসে জুড়ে বসে কেউ একটা দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারে না। মেজর জিয়া সেদিন বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা ‘পাঠ করেছিলেন’। এ জন্য তাকে কোনোভাবে খাটো করা যায় না। কারণ পরিস্থিতির কারণে তাকে দিয়ে তখন স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করানো হয়েছিল। নিজের জীবদ্দশায় তিনি নিজেকে কখনোই স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেননি। সে সময় তার এই ঘোষণা পাঠ চট্টগ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে টানটান উত্তেজনার মধ্যে মানুষকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছিল, কিন্তু তার মৃত্যুর পর এ নিয়ে একটা অহেতুক বিতর্কের সৃষ্টি করা হয়। সেদিন যারা এ কাজটা মেজর জিয়াকে দিয়ে করিয়েছিলেন, তারাও তাদের ভুলটা পরে বুঝতে পেরেছিলেন।

আকস্মিক যেমন কোনো দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়া যায় না, তেমনি যে কেউ স্বাধীনতার ঘোষণা দিতেও পারে না। এটাই স্বতঃসিদ্ধ কথা। একটা দেশের স্বাধীনতার ডাক বা ঘোষণা দেয়ার পূর্বে তার পেছনে যথেষ্ট যুক্তিসংগত প্রেক্ষাপট বা ভূমিকা থাকতে হয় এবং এর জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতিও থাকতে হয়। সেটা আলোচনায় না আসার অর্থই হলো সত্যকে আড়াল করা এবং ইতিহাসকে বিকৃত করার অপপ্রয়াস।

১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান যেদিন স্বাধীন হয়, সেদিন থেকেই পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ধরেই নিয়েছিল যে, পূর্ব পাকিস্তানকে তারা তাদের একটা উপনিবেশ হিসেবে ব্যবহার করবে এবং বাঙালিদের শাসন ও শোষণের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তানকে গড়ে তুলবে। পরবর্তী সময়ে আমরা তেমনটাই দেখতে পাই। এমনকি তারা আমাদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক ভাবতেও দ্বিধাবোধ করেনি। পাকিস্তানের প্রথম ছাপানো মুদ্রা ও ডাকটিকিটে উর্দু এবং ইংরেজিকে স্থান দেয়া হলেও বাংলাকে স্থান দেয়া হয়নি।

তার পরের ইতিহাস আমাদের সবারই কম-বেশি জানা। আটচল্লিশ থেকে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা ষড়যন্ত্র করে ভেঙে দেয়া, আটান্নর সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন, ছেষট্টির ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের জাতীয় নির্বাচন এবং সব শেষে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ—সব ক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ ও কারিশম্যাটিক নেতৃত্ব সমগ্র বিশ্বের মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। তাই তো তাকে চে গেভারা, ফিদেল কাস্ত্রো, হুগো চাভেজ, নেলসন ম্যান্ডেলা, আব্রাহাম লিংকন, মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক পাশার সঙ্গে তুলনা করা হয়।

একবার কিউবার বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর দেখা হয়। সে সময় কাস্ত্রো বলেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, তবে শেখ মুজিবকে দেখেছি।

‘ব্যক্তিত্ব ও সাহসে এই মানুষটি হিমালয়ের সমান। এভাবে হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতাই লাভ করলাম।’

অধিকার, স্বাধিকার এবং সর্বোপরি স্বাধীনতার জন্য নেতার থাকতে হবে সে দেশের মানুষের চিন্তা, চেতনা ও ভাবনাকে একই সুতোয় গেঁথে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করার গুণ। স্বাধীনতা কোনো সুনির্দিষ্ট মিনিট, ঘণ্টা বা দিনের সময় ধরে আসে না। এটা একটা ইতিহাস। এর জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিতে হয়। দানবদের হাতে তুলে দিতে হয় অনেক অমূল্য জীবন।

নেতাকে অত্যাচারীদের অত্যাচার, নির্যাতন, অনাচার সহ্য করতে হয়। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য বারবার জেল-জুলুম খাটতে হয়। সর্বজন নন্দিত নেতা হতে হয়; জনতার মনের কথা পড়ার মতো সক্ষমতা থাকতে হয়। জনগণের আদালতে বারবার দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে হয়।

এ ধরনের সব গুণে গুণান্বিত একজন সর্বজনস্বীকৃত মহান নেতারই শুধু এখতিয়ার রয়েছে এ ধরনের স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার। এসব কিছুরই মুখোমুখি হতে হয়েছিল বঙ্গবন্ধুকে। এগুলো তার সংগ্রামী জীবনের খণ্ড খণ্ড কাহিনী। অথচ এমন এক মহানায়কের বিপরীতে একজন স্বাধীনতার ঘোষণা-পাঠককে ‘ঘোষক’ হিসেবে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা শুরু করা হয়।

একজন ধীশক্তি ও দূরদর্শী নেতার কণ্ঠে ৭ মার্চের ভাষণই স্বাধীনতার প্রকৃত ডাক বা স্বাধীনতার ঘোষণা। সেদিন তিনি সব কূল রক্ষা করে যেভাবে ভাষণটি দিয়েছিলেন, তা ছিল বিশ্বের বিস্ময়। তার সেই ভাষণ আজ বিশ্ববাসীর কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ঐতিহাসিক দলিল।

বিপরীতে দুই দিন আগেও যার ওপর পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক জান্তার জন্য পাকিস্তান থেকে সোয়াত জাহাজে করে আনা অস্ত্র-শস্ত্র খালাসের দায়িত্ব অর্পিত ছিল, তিনি কীভাবে হঠাৎ করে স্বাধীতার ঘোষক হয়ে ওঠেন? স্বাধীনতার নেপথ্যে তার কী এমন ভূমিকা ছিল যে, রাতারাতি তিনি স্বাধীনতার ঘোষক হয়ে উঠলেন? তাহলে তাকে আপনি কী বলবেন? তাকে বড়জোর আপনি বাংলাদেশের মহানায়কের পক্ষে একজন স্বাধীনতার ঘোষণা-পাঠক বলতে পারেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে এটাও কিন্তু কম কথা নয়।

সে ক্ষেত্রেও বড় সমস্যা আছে। তৎকালীন চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নানকেই স্বাধীনতার প্রথম ঘোষণা-পাঠক বলতে হয়। কারণ তিনি সাবেক মেজর জিয়ার একদিন আগে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন এবং বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের সপক্ষে সহায়তা চেয়েছিলেন।

২৫শে মার্চের গভীর রাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামক অভিযানের মাধ্যমে পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ শুরুর আগে আগে বঙ্গবন্ধু তার ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাসায় আওয়ামী লীগ নেতা তাজ‌উদ্দীন আহমদ, ব্যারিস্টার কামাল হোসেন এবং ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলামকে বলেন, ‘যে মুহূর্তে পাকিস্তানি বাহিনী আমাদের লোকের ওপর আক্রমণ করবে, সেই মুহূর্ত থেকে আমরা স্বাধীন। এ কথাটা আমাদের নেতা ও সংশ্লিষ্টদের জানিয়ে দিন।’

বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে তার বাসভবন ত্যাগের আগেই ওই নেতারা বিষয়টি বেশ কিছু রাজনৈতিক নেতা ও সংবাদ সংস্থাকে জানিয়ে দেন। পরবর্তী সময়ে ড. কামাল হোসেন বিবিসি বাংলা বিভাগের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এগুলো বলেন।

২৬ মার্চের (শুক্রবার) প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে আটকের আগেই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে ‘স্বাধীন’ ঘোষণা করে দেশবাসীর উদ্দেশে একটি তারবার্তা পাঠান‌। ইপিআরের ওয়ারলেস বার্তায় প্রচার করা হয় তার স্বাধীনতার ঘোষণা, যার কপি তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রামেও পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে পাকিস্তানের তৎকালীন পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজির জনসংযোগ কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক সালিক তার ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ বইয়ে লিখেন, ‘যখন প্রথম গুলিটি ছোড়া হলো, ঠিক সেই মুহূর্তে পাকিস্তান রেডিওর সরকারি তরঙ্গের কাছাকাছি একটি তরঙ্গ থেকে ক্ষীণস্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের কণ্ঠস্বর ভেসে এলো। ওই কণ্ঠের বাণী আগেই রেকর্ড করে রাখা হয়েছিল। তাতে শেখ মুজিব পূর্ব পাকিস্তানকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ ঘোষণা করেছেন।’

তিনি আরও লিখেন, ‘ঘোষণায় বলা হয়, এটাই হয়তো আমার শেষ বার্তা। আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের মানুষ যে যেখানে আছেন, আপনাদের যা কিছু আছে, তাই নিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করার জন‍্য আমি আহ্বান জানাচ্ছি।

‘পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর শেষ সৈন‍্যটিকে বাংলাদেশের মাটি থেকে উৎখাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আপনাদেরকে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।’
২৫ মার্চ ১৯৭১। তখনও চট্টগ্রাম সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং ইপিআরের নিয়ন্ত্রণে। নিয়ন্ত্রণ করছিলেন ইপিআরের সাবেক ক‍্যাপ্টেন রফিক। চট্টগ্রামের সকলে তখন ঢাকার পরিস্থিতি অত‍্যন্ত মনোযোগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে‌।

আমি তখন চট্টগ্রাম কলেজে এইচএসসির একজন পরীক্ষার্থী। তখন খবরাখবর সংগ্রহের জন‍্য আমার একমাত্র সম্বল ছিল ভাঙা একটি ট্রান্সজিস্টর। চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতারা ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধুর তারবার্তা পেয়ে তা বাংলা ও ইংরেজিতে ছাপিয়ে ২৬ তারিখ সকাল থেকে মাইকিং ও লিফলেট আকারে বিতরণ করা শুরু করেন। চট্টগ্রামে অনেকে সেই মাইকিং শুনেছেন।

২৬ তারিখ সন্ধ‍্যার পর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ভেসে এলো চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নানের কণ্ঠে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা-পাঠ ও তার ভাষণ। আবার পরের দিন সন্ধ‍্যার পর মেজর জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে ভেসে এলো বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা-পাঠ। চট্টগ্রামে তৎকালীন রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত রেডিও স্টেশনটি ছিল আগ্রাবাদে‌। সেখান থেকে তা স্থানান্তর করে সাময়িকভাবে কালুরঘাটে স্থাপন করা হয়। সেই রেডিও স্টেশনটির অন‍্যতম সংগঠক ছিলেন বেলাল মোহম্মদ। তার সহায়তায় তৎকালীন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার সকল ঘোষণা পাঠ করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে তিনি বিবিসি বাংলাকে কী বলেছিলেন, তা শোনা যাক: ‘২৬ মার্চ সকালবেলা আমরা একটা মাইকিং শুনতে পেয়েছি যে গত রাতে ঢাকায় আকস্মিকভাবে পাকিস্তান আর্মি নিরস্ত্র জনপদে আক্রমণ করেছে এবং খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ চলছে। এই অবস্থায় আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা ড. আনোয়ার আলী দুপুরে আমাকে একটা কাগজ দিলেন। উনি নিজে বললেন একটা তারবার্তা এসেছে ঢাকা থেকে। আমরা এটার অনুবাদ করে এখন লিফলেট আকারে ছেড়েছি আর মাইকিং করছি।’

বিবিসি বাংলার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ‘সেদিন সন্ধ‍্যা ৭টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর সেই ঘোষণা প্রথম সম্প্রচার করি, যা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে পাঠ করেন এম এ হান্নান এবং তার ভিত্তিতে তিনি একটা বক্তৃতা দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৭ মার্চ সন্ধ‍্যাতেও দ্বিতীয়বারের মতো অনুষ্ঠান সম্প্রচারে সক্ষম হই। সেদিনের অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন মেজর জিয়াউর রহমান।’

বঙ্গবন্ধুর বাঙালি জাতির উদ্দেশে স্বাধীনতার ঘোষণা ২৭ মার্চ ১৯৭১ বিশ্বের অন্তত ২৫টি দেশের পত্রিকা বা সংবাদ সংস্থার খবরে বিষয়টি প্রকাশিত হয়। তা ছাড়া সিবিএস নিউজ এবং এনবিসি নিউজ এ বিষয়টির ওপর সরাসরি সংবাদ সম্প্রাচার করে।

এ বিষয়ে প্রকাশিত ওই সকল সংবাদপত্র খোঁজ করে কোথাও মেজর জিয়াউর রহমানের নাম একটি বারের জন‍্যেও দেখা পায়নি। শুধু ব্রিটেনের দ‍্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় বলা হয়, পাকিস্তান থেকে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার ভাষণের পরপরই একটি গোপন রেডিও থেকে শেখ মুজিবুর রহমান পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। এ ক্ষেত্রে গোপন রেডিও থেকে হয় সাবেক মেজর জিয়াউর রহমান বা চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের নেতা মরহুম আব্দুল হান্নান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ওই ঘোষণা পাঠ করে থাকতে পারেন, তবে এটি আব্দুল হান্নান সাহেব হওয়ার সম্ভাবনাই শতভাগ। কারণ ২৭ তারিখ রাতের সংবাদ ২৭ তারিখ সকালের পত্রিকায় প্রকাশ করা যে একেবারে অসম্ভব।

জিয়াউর রহমান সাহেব বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন ২৭ মার্চ, ১৯৭১ সন্ধ্যায় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সম্প্রচার শুরু করার পর। আর মো. আবদুল হান্নান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন ২৬ মার্চ ১৯৭১ তারিখ সন্ধ্যায়। তাই চট্টগ্রাম থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার প্রথম ঘোষণা-পাঠক হচ্ছেন এম এ হান্নান। তা ছাড়া ততক্ষণে সারা বিশ্বের মানুষ জেনে গেছে কে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা। তাই কে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করল না করল, তা আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রগুলোর কাছে মোটেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল না; বরং বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা এবং ঘোষণাপত্রে কী ছিল, সেটাই ছিল সব পত্রিকার প্রতিবেদন লেখার জন‍্য গুরুত্বপূর্ণ।

সেদিন ছাত্রলীগের এক নেতা, নাম সম্ভবত আবদুর রউফ, তিনিও স্বাধীনতার পক্ষে এক জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়েছিলেন। তিনিও তার বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণার কথা উল্লেখ করেছিলেন, কিন্তু এখন আর তার নাম ইতিহাসের তেমন কোথাও একটা খুঁজে পাওয়া যায় না বা আমার চোখে পড়ছে না, কিন্তু আমি আমার কৈশোরের স্মৃতিকে তো আর অস্বীকার করতে পারি না। তার অবদানও আমি জিয়াউর রহমান সাহেব এবং হান্নান সাহেবের পাশাপাশি স্মরণ করছি।

যা হোক, বঙ্গবন্ধু তখন স্বাধীনতার স্বপক্ষে যে ঘোষণাপত্রটি তারবার্তা করে পাঠিয়েছিলেন, তা ছিল নিম্নরূপ:

Declaration of Independence
"THIS MAY BE MY LAST MESSAGE. FROM TODAY BANGLADESH IS INDEPENDENT. I CALL UPON THE PEOPLE OF BANGLADESH WHEREVER YOU MIGHT BE AND WITH WHATEVER YOU HAVE, TO RESIST THE ARMY OF OCCUPATION TO THE LAST. YOUR FIGHT MUST GO ON UNTIL THE LAST SOLDIER OF THE PAKISTAN OCCUPATION ARMY IS EXPELLED FROM THE SOIL OF BANGLADESH AND FINAL VICTORY IS ACHIEVED."

বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণাপত্র আমাদের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলে অন্তর্ভুক্ত করা রয়েছে। তা ছাড়া এ বিষয়ে কিছু রেকর্ডপত্র ঢাকার শেরে বাংলা নগরে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।

উপসংহারে এইটুকুই বলব, স্বাধীনতার ‘ঘোষক’ এবং ‘ঘোষণা-পাঠক’ এক কথা নয়। এর মধ‍্যে ব‍্যবধান বিস্তর। এত বিস্তর যে পার্থক‍্য নিরূপণ প্রায় অসম্ভব। তা ছাড়া যে কেউ চাইলে স্বাধীনতার ঘোষণাও দিতে পারেন না। সে জন্য প্রয়োজন দেশের প্রতি তার ত‍্যাগ ও তিতীক্ষার দীর্ঘ ইতিহাস, দেশের অধিকার আদায়ে তার সংগ্রামী ভূমিকা, দেশের মানুষকে এক সুতায় বেঁধে অভীষ্ট লক্ষ‍্যের দিকে এগিয়ে নেয়ার মতো সক্ষমতা, তথা দেশের জনগণকে তার কথায় আন্দোলিত করার মতো ক্ষমতা। বিষয়গুলো একবার বিবেচনায় আনা গেলে স্বাধীনতার ঘোষক বিষয়ে বিতর্ক থেকে সহজেই বেরিয়ে আসা যাবে।

শামসুল ইসলাম চৌধুরী মামুন: সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা

আরও পড়ুন:
স্বাধীনতার ৫১ বছরে বৈষম্যহীন সমাজের প্রত্যাশা
গণতন্ত্র, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব: ফখরুল
নতুন প্রজন্মের কাছে স্বাধীনতার গৌরবগাঁথা পৌঁছাতে হবে: খাদ্যমন্ত্রী
সুশাসনের জন্য দলবাজি মোকাবিলা করতে হবে: ইনু
চবির সব মুক্তিযোদ্ধার নাম নেই স্মরণ স্মৃতিস্তম্ভে

মন্তব্য

আরও পড়ুন

মতামত
Shakib Tamim Jyoti Happy New Year to the countrymen

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা সাকিব জ্যোতি তামিমদের

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা সাকিব জ্যোতি তামিমদের সাকিব আল হাসান, নিগার সুলতানা জ্যোতি ও তামিম ইকবাল। কোলাজ: নিউজবাংলা
নতুন বছরের আগের দিন শনিবার রাতে ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে সাকিব লিখেন, ‘শুভ নববর্ষ! আশা করি আমাদের সবার জীবনে এই নতুন বছর অঢেল সুখ, শান্তি এবং আনন্দ নিয়ে আসবে।’

পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশের আলোচিত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল ও নিগার সুলতানা জ্যোতি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তারা বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান।

নতুন বছরের আগের দিন শনিবার রাতে ফেসবুকে ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে সাকিব লিখেন, ‘শুভ নববর্ষ! আশা করি আমাদের সবার জীবনে এই নতুন বছর অঢেল সুখ, শান্তি এবং আনন্দ নিয়ে আসবে।’

নিজ ভেরিফায়েড পেজে ‘শুভ নববর্ষ ১৪৩১’ লেখা একটি পোস্টার শেয়ার করে ওপেনার তামিম ইকবাল এক বাক্যে লিখেন, ‘সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা।’

এ দুই তারকা ছাড়াও অনেকেই নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

ডানহাতি পেসার তাসকিন আহমেদ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেন, ‘নববর্ষে নবরূপ রাঙিয়ে দিক প্রতিটি মুহূর্ত। সুন্দর সমৃদ্ধ হোক আগামীর দিনগুলো। শুভ নববর্ষ সকলকে।’

নিজ ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ লিখেন, ‘আনন্দ, উন্নতি ও শুভকামনার বার্তা নিয়ে নতুন বছরের সূচনায় ভরে উঠুক সকলের জীবন। সবাইকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা। শুভ নববর্ষ ১৪৩১।’

জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি লিখেন, ‘নববর্ষে নবরূপ রাঙিয়ে দিক প্রতিটি মুহূর্ত। সুন্দর সমৃদ্ধ হোক আগামীর দিনগুলো। শুভ নববর্ষ।’

আরও পড়ুন:
‘কী কথা, কাহার সনে’, লাইভে জানাবেন তামিম
বেটিং তদন্তে উঠে এল সাকিবের বোনের নাম
ওয়ানডে অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান হারালেন সাকিব
সব ফরম্যাটে অধিনায়ক শান্ত, বিসিবির একাধিক পদে পরিবর্তন
চোখের চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন সাকিব

মন্তব্য

মতামত
A two day Baisakhi fair in Kamalganj on the occasion of Bengali New Year

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কমলগঞ্জে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কমলগঞ্জে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলায় বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সব পণ্যের পসরা সাজানো হয়েছে। ছবি: নিউজবাংলা
পহেলা বৈশাখের দিন রোববার থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে সোমবার পর্যন্ত। মেলায় উঠেছে হরেক রকমের পণ্য।

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ বাংলা নববর্ষ-১৪৩১ উদযাপন উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করে হয়েছে।

উপজেলার পতনঊষার ইউনিয়নের শহীদনগর বাজারে রোববার নববর্ষ উদযাপন কমিটি ও শাপলা সবুজ সংঘের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী ৩১তম বৈশাখী মেলা শুরু হয়।

বর্ষবরণ উপলক্ষে কমলগঞ্জে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রা শেষে মাইজগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশুদের নিয়ে দিনব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কমলগঞ্জে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা

বর্ষবরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নববর্ষ উদযাপন কমিটির সভাপতি পতনঊষার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অলি আহমদ খান সভাপতিত্ব করেন। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পতনঊষার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার তওফিক আহমদ বাবু, বিশিষ্ট লেখক ও সাংবাদিক আবদুল হান্নান চিনু, আবুল ফজল চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিছবাউর রহমান চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম, পতনঊষার ইউপি সদস্য তোয়াবুর রহমান তবারক, শাপলা সবুজ সংঘের সভাপতি নারায়ণ মল্লিক সাগর, শহীদনগর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল বশর জিল্লুল, প্রবাসী ইমদাদুল হক ইমরান, নববর্ষ উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাকসহ অনেকে।

এদিকে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী বৈশাখী মেলায় বাঙালির ঐতিহ্যবাহী সব পণ্যের পসরা সাজানো হয়েছে।

পহেলা বৈশাখের দিন রোববার থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে সোমবার পর্যন্ত। মেলায় উঠেছে হরেক রকমের পণ্য।

মেলা দেখতে ভিড় করেছে শিশু, কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সীরা। দীর্ঘদিন পর মেলা হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে আগত দর্শনার্থীরা।

আরও পড়ুন:
লাউয়াছড়া উদ্যান সংলগ্ন টিলায় ফের আগুন
মৌলভীবাজারে আসামি ধরতে গিয়ে আহত ৪ পুলিশ
কমলগঞ্জে আগুনে পুড়ল বসতঘর গবাদি পশু
শ্রীমঙ্গলে জাল টাকা ও ভারতীয় রুপিসহ একজন গ্রেপ্তার
ডোবার পানিতে ভাসছিল দুই শিশুর মরদেহ

মন্তব্য

মতামত
Bengali welcomes the New Year with a colorful Mars procession

বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাংলা নতুন বছরকে বরণ

বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রায় বাংলা নতুন বছরকে বরণ চারুকলা অনুষদ থেকে শুরু হয় বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
উৎসাহী অংশগ্রহণকারীদের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা শাহবাগ, ঢাকা ক্লাব এবং শিশু পার্কের মতো ঐতিহাসিক স্থান হয়ে ঢাকার ব্যস্ত রাস্তা অতিক্রম করে। বর্ণিল পোশাকে সজ্জিত ও প্রতীকী নিদর্শন সম্বলিত শোভাযাত্রাটি বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিধ্বনি করে এবং আনন্দ-উল্লাসে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়

পহেলা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা হয়েছে।

ঐক্য, সাংস্কৃতিক গর্ব ও স্থিতিস্থাপকতার প্রতীক শোভাযাত্রাটি ঐতিহ্যবাহী শিল্পীসত্তা ও চেতনার মন্ত্রমুগ্ধকর প্রদর্শনীর মধ্যে দিয়ে রোববার সকাল ৯টা ১৮ মিনিটে আরম্ভ হয়। খবর ইউএনবির

উৎসাহী অংশগ্রহণকারীদের নেতৃত্বে মঙ্গল শোভাযাত্রা শাহবাগ, ঢাকা ক্লাব এবং শিশু পার্কের মতো ঐতিহাসিক স্থান হয়ে ঢাকার ব্যস্ত রাস্তা অতিক্রম করে। বর্ণিল পোশাকে সজ্জিত ও প্রতীকী নিদর্শন সম্বলিত শোভাযাত্রাটি বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতিধ্বনি করে এবং আনন্দ-উল্লাসে নতুন বছরকে স্বাগত জানায়

সৃজনশীলতা ও শৈল্পিক প্রকাশের লালনের জন্য পরিচিত চারুকলা অনুষদ সাংস্কৃতিক তাৎপর্যের সূচনা স্থান। অনুষদের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের আয়োজিত এই আয়োজনে বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যের প্রচার ও সংরক্ষণে প্রতিষ্ঠানটির অঙ্গীকারের দৃষ্টান্ত ফুটে ওঠে।

শোভাযাত্রাটি টিএসসিতে সমাপ্তির পথে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সেখানকার বাতাস হর্ষধ্বনি, সংগীত এবং অংশগ্রহণকারী ও দর্শকদের সম্মিলিত উল্লাসে অনুরণিত হয়। মঙ্গল শোভাযাত্রা শুধু বাংলা নববর্ষের আগমনই উদযাপন করে না, প্রতিকূলতার মধ্যেও বাঙালি মানুষের সহনশীলতা ও চেতনার সাক্ষ্য বহন করে।

আধুনিক বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে এই জাতীয় আয়োজন ঐক্য, স্থিতিস্থাপকতা ও একাত্মতার বোধকে লালন করার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গুরুত্ব নিশ্চিত করে।

মন্তব্য

মতামত
New Year will inspire the fight against evil forces against the Liberation War Prime Minister

মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে নববর্ষ: প্রধানমন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে নববর্ষ: প্রধানমন্ত্রী বাংলা নববর্ষের আগের দিন শনিবার এ উপলক্ষে বাণী দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালির প্রতিটি ঘরে, জনজীবনে এবং আর্থ-সামাজিক সংস্কৃতিতে পহেলা বৈশাখ এক অনন্য উৎসব। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে হালখাতার পাশাপাশি যাত্রাগান, পালাগান, পুতুলনাচ, অঞ্চলভিত্তিক লোকসংগীত, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন পসরা নিয়ে মেলার বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে যেমন লোকজ-সংস্কৃতি প্রাণ ফিরে পায়, তেমনি দেশের অর্থনীতি তথা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমৃদ্ধ হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসে।’

বাংলা নতুন বছর ১৪৩১ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলা নববর্ষের আগের দিন শনিবার এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা বাসসের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা নতুন বছর ১৪৩১ আমাদের জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, উগ্রবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রেরণা জোগাবে।’

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘শুভ নববর্ষ, ১৪৩১। উৎসবমুখর বাংলা নববর্ষের এই দিনে আমি দেশবাসীসহ সকল বাঙালিকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।’

তিনি বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ বাংলা সনের প্রথম দিন। এটি সর্বজনীন উৎসব। এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেয়া হয় নতুন বছরকে। আবহমান কাল ধরে নববর্ষের এই উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমগ্র জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণ স্পন্দনে, নব অঙ্গীকারে। সারা বছরের দুঃখ-জরা, মলিনতা ও ব্যর্থতাকে ভুলে বাঙালি রচনা করে সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য, আনন্দ ও ভালোবাসার মেলবন্ধন।’

পহেলা বৈশাখ উদযাপনের ইতিহাস তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যে পহেলা বৈশাখ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। বাংলা নববর্ষ পালনের সূচনা হয় মূলত মোঘল সম্রাট আকবরের সময় থেকে। কৃষিকাজের সুবিধার্থে সম্রাট আকবর ‘ফসলি সন’ হিসেবে বাংলা সন গণনার যে সূচনা করেন, তা কালের পরিক্রমায় সমগ্র বাঙালির কাছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার স্মারক উৎসবে পরিণত হয়েছে।

“পহেলা বৈশাখ বাঙালিয়ানার প্রতিচ্ছবি। এই উদযাপন আমাদের শেকড়ের সন্ধান দেয়। এর মধ্য দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায় জাতিসত্তার পরিচয়।”

বৈশাখের প্রথম দিনকেন্দ্রিক উৎসবের বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালির প্রতিটি ঘরে, জনজীবনে এবং আর্থ-সামাজিক সংস্কৃতিতে পহেলা বৈশাখ এক অনন্য উৎসব। পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে হালখাতার পাশাপাশি যাত্রাগান, পালাগান, পুতুলনাচ, অঞ্চলভিত্তিক লোকসংগীত, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন পসরা নিয়ে মেলার বর্ণিল আয়োজনের মাধ্যমে যেমন লোকজ-সংস্কৃতি প্রাণ ফিরে পায়, তেমনি দেশের অর্থনীতি তথা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমৃদ্ধ হয়, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আসে।’

আরও পড়ুন:
দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
রাষ্ট্রপতির ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় হবে বঙ্গভবনে, গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর
কিশোর গ্যাং মোকাবিলায় দুই মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা
বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
বুয়েটের ছাত্রলীগমনা ২১ শিক্ষার্থীর প্রধানমন্ত্রীকে খোলা চিঠি

মন্তব্য

মতামত
I am very healthy in my old age because of playing stick

‘বয়স অনেক, সুস্থ আছি লাঠি খেলার কারণে’

‘বয়স অনেক, সুস্থ আছি লাঠি খেলার কারণে’ নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড়ে শুক্রবার লাঠি খেলার আয়োজন করে বাউল আখড়া বাড়ি। ছবি: নিউজবাংলা
লাঠি খেলা দেখতে আসা ভীমপুর এলাকার বাসিন্দা মুমিন সরদার (৩৫) বলেন, ‘গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলাটি এখন আর দেখতেই পাওয়া যায় না। বিভিন্ন সংগঠন প্রতি বছর এ খেলার আয়োজন করে বলে আমরা যুবসমাজ দেখতে পারি।  গ্রামীণ খেলাগুলো টিকিয়ে রাখতে আমাদের সবাইকে চেষ্টা করা উচিত।’

‘আমার বয়স অনেক হয়েছে, তবুও আমি সুস্থ আছি নিয়মিত লাঠি খেলার কারণে। আমার যারা ওস্তাদ ছিল, সবাই মারা গেছে। তাদের শেখানো লাঠি খেলা দেখিয়ে গ্রামের মানুষকে আনন্দ দিয়ে থাকি।’

কথাগুলো বলছিলেন নওগাঁ সদর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের সাহাজ আলী সরদার। ৬০ বছর বয়সী এ ব্যক্তি শুক্রবার বিকেলে জেলা শহরের মুক্তির মোড়ে অংশ নেন লাঠি খেলায়।

বাউল আখড়া বাড়ির চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এ খেলার আয়োজন করা হয়।

লাঠি খেলা দেখতে আসা ভীমপুর এলাকার বাসিন্দা মুমিন সরদার (৩৫) বলেন, ‘গ্রাম-বাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলাটি এখন আর দেখতেই পাওয়া যায় না। বিভিন্ন সংগঠন প্রতি বছর এ খেলার আয়োজন করে বলে আমরা যুবসমাজ দেখতে পারি।

‘গ্রামীণ খেলাগুলো টিকিয়ে রাখতে আমাদের সবাইকে চেষ্টা করা উচিত।’

শহরের পোস্ট অফিসপাড়ার মীম বলেন, ‘আমরা সবাই এখন ভিডিও গেইমের প্রতি আসক্ত হয়ে যাচ্ছি দিন দিন। তাই গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো দেখলে অন্যরকম ভালো লাগে।

‘বেড়াতে এসেছিলাম। ঢোলের শব্দ শুনে এসে দেখি লাঠি খেলা হচ্ছে। খুব ভালো লাগছে অনেক পুরোনো লাঠি খেলা দেখে।’

লাঠি খেলার দলের সদস্য আবদুস সামাদ (৫৫) বলেন, ‘আমার বয়স যখন ১৩ বছর, তখন আমার বাবার কাছ থেকে লাঠি খেলা শিখেছি। একসময় প্রচুর খেলা দেখানোর জন্য দাওয়াত পেতাম।

‘এখন আর পাই না, তবে এটা ভেবে ভালো লাগে যে, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এখনো লাঠি খেলাকে টিকিয়ে রেখেছেন।’

দারিয়াপুর গ্রামের সাহাজ আলী সরদার (৬০) বলেন, ‘একটা সময় ছিল প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে দাওয়াত পেতাম, তবে এখন আর আগের সময় নেই।

‘সবাই বিভিন্ন ধরনের অনলাইন গেইম নিয়ে ব্যস্ত। গ্রামীণ খেলাগুলোর মাধ্যমে যুবসমাজ বিভিন্ন ধরনের নেশা থেকে বিরত থাকবে বলে আমি মনে করি।’

আয়োজনের বিষয়ে বাউল আখড়া বাড়ির সভাপতি সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘লাঠি খেলা হলো গ্রামীণ ঐতিহ্য। এটি যেন বিলীন না হয়ে যায়, সে জন্য আমরা আয়োজন করেছি, যাতে মানুষেরা গ্রামীণ সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মূলত এখানে বাউল গানের আয়োজন করা হয়েছে, কিন্তু আমরা গ্রামীণ সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে বাদ দিয়ে কিছু করতে পারি না। কারণ লাঠি খেলাও আমাদের ঐতিহ্য। আমরা প্রতি বছর লাঠিখেলা ধরে রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।’

আরও পড়ুন:
নওগাঁ সীমান্তে গুলিতে নিহত বাংলাদেশির মরদেহ হস্তান্তর
নওগাঁয় গৃহবধূ হত্যা: স্বামী, শাশুড়ি ও দেবর ঢাকায় গ্রেপ্তার
নওগাঁয় কষ্টি পাথরের মূর্তি উদ্ধার, আওয়ামী লীগ নেতা আটক
নওগাঁয় এনজিও কর্মকর্তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার 
নওগাঁয় সড়কের পাশ থেকে মরদেহ উদ্ধার

মন্তব্য

মতামত
Eid congregation at 1 thousand 300 places in Naogaon

নওগাঁয় ১ হাজার ৩০০টি স্থানে ঈদের জামাত

নওগাঁয় ১ হাজার ৩০০টি স্থানে ঈদের জামাত নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ছবি: নিউজবাংলা
জেলায় সুষ্ঠুভাবে ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্য ও গোয়েন্দাদের নজরদারি বাড়ানো হয়।

যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে নওগাঁর এক হাজার ৩০০টি স্থানে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শহরের নওজোয়ান মাঠে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন নওগাঁ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের প্রেস ইমাম মুফতি রেজওয়ান আহম্মেদ।

ওই জামাতে স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যরিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন, জেলা প্রশাসক গোলাম মওলা, পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

এদিকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদ উৎসব উদযাপনের জন্য জেলা প্রশাসন বেশ কিছু নির্দেশনা দেয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সব সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ভবনে সঠিক মাপ ও নিয়মে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, পটকা ও আতশবাজি বন্ধ, সরকারি শিশু পরিবার, এতিমখানা, জেলখানা ও হাসপাতালে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন। এ ছাড়াও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ঈদের দিন ও পরবর্তী সময়ে তরুণদের বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল চলাচল রোধ করার পদক্ষেপ নেয়া হয়।

জেলায় সুষ্ঠুভাবে ঈদুল ফিতর উদযাপনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্য ও গোয়েন্দাদের নজরদারি বাড়ানো হয়।

আরও পড়ুন:
দেশবাসীকে সাকিব জ্যোতি তামিমদের ঈদের শুভেচ্ছা
শোলাকিয়ায় ‘স্মরণকালের বৃহত্তম’ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত
ঈদের সকালে লিচু বাগানে ট্রাক ড্রাইভারের মরদেহ, নারী আটক
দেশজুড়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন
জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত

মন্তব্য

মতামত
Eid in different districts of the country in accordance with Saudi

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করলেন তারা

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করলেন তারা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে কুড়িগ্রামের একটি গ্রামে ঈদ উদযাপন। ছবি: নিউজবাংলা
বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ঈদ উদযাপন হবে বৃহস্পতিবার, তবে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এবারও ঈদ উদযাপন হয়েছে বিভিন্ন জেলায়।

মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা শেষে বুধবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মুসলিমরা।

বাংলাদেশের আকাশে মঙ্গলবার চাঁদ দেখা না যাওয়ায় ঈদ উদযাপন হবে বৃহস্পতিবার, তবে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে এবারও ঈদ উদযাপন হয়েছে বিভিন্ন জেলায়।

দেশের নানা প্রান্তে ঈদ উদযাপনের খবর জানিয়েছেন আমাদের প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা।

কুড়িগ্রাম

জেলার রৌমারী, রাজীবপুর ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার চারটি গ্রামে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। আলাদা আলাদা ঈদ জামাতে পাঁচ শতাধিক মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

সকালে রৌমারী উপজেলার শৈলমারী ইউনিয়নের গয়টাপাড়া গ্রাম, রাজিবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব করাতিপাড়া গ্রাম ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকডাঙ্গা ও পাইকেরছড়া গ্রামে ঈদের এসব জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করলেন তারা

ঈদের জামাত আদায় করা রৌমারী উপজেলার শৈলমারী ইউনিয়নের গয়টাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মোত্তালেব বলেন, ‘আমরা প্রায় পাঁচ বছর ধরে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রমজানের রোজা রাখা, ঈদের নামাজ আদায় ও ঈদ উৎসব পালন করে আসছি।’

কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার আল আসাদ মোহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘জেলা পুলিশের নিরাপত্তায় পূর্ণ উৎসবমুখর পরিবেশে কুড়িগ্রামের চারটি গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নাগরিক সেবায় জেলা পুলিশ সবসময় নিবেদিত।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ

জেলা সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার তিন শতাধিক মানুষ বুধবার ঈদ উদযাপন করেছেন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর ইউনিয়নের মোমিন টোল ও বাগানপাড়া এলাকায় সকালে দুটি ঈদের জামাতে দুই শতাধিক মুসল্লি অংশ নেন।

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করলেন তারা

অন্যদিকে শিবগঞ্জ উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের রাধানগর ও ছিয়াত্তর বিঘি এলাকার বিভিন্ন পরিবারের শতাধিক সদস্য সকালে ঈদের নামাজ আদায় করেন ছিয়াত্তর বিঘি আম বাগানে।
গত কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখার পাশাপাশি ঈদ উদযাপন করে আসছেন এসব গ্রামের লোকজন।

মৌলভীবাজার

জেলার শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা ঈদের জামাতে অংশ নিয়েছেন।

সকাল সাতটায় মৌলভীবাজার শহরের সার্কিট হাউস এলাকার আহমেদ শাবিস্তা নামক বাসায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
নামাজে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নারী ও পুরুষ মুসল্লিরা অংশ নেন। এতে ইমামতি করেন উজান্ডির পির আলহাজ আব্দুল মাওফিক চৌধুরী।

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করলেন তারা

তিনি বলেন, ‘কোরআন ও হাদিস অনুসারে পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় চাঁদ দেখা গেলে রোজা এবং ঈদ করতে হয়। সেই অনুসারে আমরা আজ ঈদের নামাজ আদায় করলাম।’

ময়মনসিংহ

জেলার গৌরীপুরের বাহাদুরপুর নূরমহল সুরেশ্বর দরবার শরিফে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন হচ্ছে।

সকাল ৯টায় ঈদের জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা মো. ইব্রাহিম। এ জামাতে ময়মনসিংহ সদর, ঈশ্বরগঞ্জ, নান্দাইল, ফুলপুর, হালুয়াঘাট, শম্ভুগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েক শ আশেকান, মুরিদ ও ভক্ত অংশ নেন। নারীদের জন্য আলাদা জামাতের ব্যবস্থা করা হয়।

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করলেন তারা

সুরেশ্বর দরবার শরিফের পীর সৈয়দ শাহ্ নূরে আফতাব পারভেজ নূরী বলেন, ‘সৌদি আরবের সঙ্গে চাঁদের মিল রেখেই প্রতি বছর এখানে ঈদুল ফিতর উদযাপন করা হয়। তাই এবারও আমরা বাংলাদেশে এক দিন আগে থেকে রোজা রাখা শুরু করি এবং ঈদুল ফিতর উদযাপন করি।’

শেরপুর

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে শেরপুরের ছয়টি গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপন হয়েছে।

গ্রামগুলো হলো সদর উপজেলার উত্তর চরখারচর ও দক্ষিণ চরখারচর, নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী পশ্চিমপাড়া ও গোবিন্দনগর ছয়আনি পাড়া, নকলা উপজেলার চরকৈয়া এবং ঝিনাইগাতী উপজেলার বনগাঁও চতল।

স্থানীয় লোকজন ছাড়াও জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকেও মুসল্লিরা ওইসব গ্রামে ঈদের নামাজ আদায় করতে যান।

প্রতি বছর সদর উপজেলার বামনেরচর গ্রামে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও এবার সেখানকার বেশ কিছু মুসল্লি নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী পশ্চিমপাড়া এলাকায় ঈদের নামাজ আদায় করেন।

সকাল সাতটা থেকে ১০টার মধ্যে এসব গ্রামে ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেকটি জামাতে ২০০ থেকে ২৫০ জন মুসল্লি অংশ নেন। এসব জামাতে পুরুষ মুসল্লিদের পাশাপাশি নারীরাও অংশ নেন।

টাঙ্গাইল

জেলার দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের শশীনাড়া গ্রামে সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে অর্ধশতাধিক পরিবার উদযাপন করছে ঈদুল ফিতর।

সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদযাপন করলেন তারা

সকাল আটটায় স্থানীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। তাতে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও অংশ নেন।

গত ১২ বছর ধরে ওই এলাকার লোকজন সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ ও রোজা পালন করে আসছেন।

ঝালকাঠি

সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে জেলার রাজাপুর উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের ডহরশংকর গ্রামে বুধবার ঈদ উদযাপন করেন স্থানীয়রা।

এ গ্রামের বসবাসরত বাসিন্দাদের একটি অংশ রোজাও রাখেন এক দিন আগে থেকে। তাদের মতে, যেকোনো দেশে চাঁদ দেখা গেলে রোজা রাখা ও ঈদ উদযাপন করা যাবে।

ডহরশংকর গ্রামের প্রায় ৫০টি পরিবারের ২০০ মুসল্লি প্রতি বছর এভাবে ঈদ উদযাপন করে আসছেন। বেশ কয়েক বছর আগে এ নিয়ে এলাকার অন্য মুসল্লিদের সঙ্গে হট্টগোল হলেও বর্তমানে তারা নির্বিঘ্নে ঈদ উদযাপন করছেন।

সকাল আটটায় মঠবাড়ি ইউনিয়নের ডহরশংকর গ্রামের নাপিতের হাট এলাকায় দারুস সুন্নাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে ঈদের জামাত আদায় করা হয়। এতে পৃথক স্থানে নারীরা একই জামাতে অংশ নেন। জামাতে ইমামতি করেন মাওলানা মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম।

ঈদ উদযাপনকারী মুসল্লি মোনাসেফ মৃধা বলেন, ‘আমরা পূর্বপুরুষ থেকেই সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালন করে আসছি। গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার এক যুগ যাবত মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে ঈদের নামাজে উপস্থিত হচ্ছেন।’

আরও পড়ুন:
দেশের যেসব জায়গায় ঈদ হচ্ছে আজ
চাঁদপুরের ৪০ গ্রামে ঈদ উদযাপিত হচ্ছে আজ
ঈদযাত্রার শেষ দিনে চাপ নেই বঙ্গবন্ধু এক্সপ্রেসওয়েতে
শেষ কর্মদিবসে সদরঘাট ছেড়েছে যাত্রীভর্তি লঞ্চ
ঈদ উপলক্ষে ডিএমপির ট্রাফিক নির্দেশনা

মন্তব্য

p
উপরে