× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য ইভেন্ট শিল্প উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ কী-কেন ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও ক্রিকেট প্রবাসী দক্ষিণ এশিয়া আমেরিকা ইউরোপ সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ শারীরিক স্বাস্থ্য মানসিক স্বাস্থ্য যৌনতা-প্রজনন অন্যান্য উদ্ভাবন আফ্রিকা ফুটবল ভাষান্তর অন্যান্য ব্লকচেইন অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

মতামত
That is why Masood Rana is popular
google_news print-icon

মাসুদ রানা জনপ্রিয় যে কারণে

মাসুদ-রানা-জনপ্রিয়-যে-কারণে
স্পাই চরিত্র মাসুদ রানার জনপ্রিয়তার জোয়ার শুরু হয়েছিল পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ড ও রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। ওই সময় মার্কিনিবাদ বা আমেরিকানিজম পদ্ধতিগতভাবে বাংলাদেশে বিকশিত হয়েছে। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের সময়টাতে নাগরিকত্বের সামরিকায়ন এবং মার্কিনবাদিতা একটা স্বপ্নবলয়ের মতো রচিত হতে থাকে। এর অবধারিত অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে নতুন কল্পিত এক যৌবন, যার অবধারিত অনুষঙ্গ পৌরুষ। মাসুদ রানা সেখানে অধিকল্পনার মূর্ত অধীশ্বর হিসাবে পুনর্জাগরিত হয়েছেন।

মাসুদ রানার কি গোঁফ ছিল? মাসুদ রানার পাঠক হিসাবে আমার যোগ্যতা এত কম যে মনে করে বলতে পারব না যে তার গোঁফ কখনও আনোয়ার সাহেব (বা তার ভূতলেখকবৃন্দ) বানিয়েছিলেন কিনা। তবে এসবে সোহেল রানার সামান্যই ক্ষতিবৃদ্ধি হয়েছে। তিনি যখন প্রযোজক মাসুদ পারভেজ হিসাবে নিজেকে মাসুদ রানা ছায়াছবির নায়ক নিয়োজিত করলেন, তখন নিজের প্রাকৃতিক গোঁফ হঠানোর কোনো কারণ খুঁজে পাননি।

এটা ঠিকই, তার চুল হঠানোর তুলনায় গোঁফ হঠানো অধিক কসরৎ ও মনোবেদনার কারণ হতে পারত। বাস্তবে তিনি পর্দা-উপস্থিতিতে কখনই দুটোর কোনোটাকে অনুপস্থিত করেননি। পর্দায় একমাত্র ‘মাসুদ রানা’ সোহেল রানার গোঁফের উপর ভর করেই হাজির হলেন। তখনও বাংলাদেশের আম-মানুষজন গোঁফওয়ালা জাতীয় নেতা হিসাবে কেবল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেই চেনেন; জিয়াউর রহমানকে চিনে সারেননি। তবে কেবল গোঁফের কারণে মাসুদ রানাকে কোনোভাবে নিন্দিত হতে হয়েছে বলে শোনা যায়নি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের যতটুকু দর্শকতৃপ্তির ইতিহাস জানা যায় তাতে নিজের গোঁফ ও নাইলনের চুলসমেত সোহেল রানাই মাসুদ রানার সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য পর্দা-দাবিদার বলে বিবেচিত হয়েছেন।

মাসুদ রানাকে নিয়ে কিছু বলতে শুরু করার পর লোকে যদি জিজ্ঞাসা করে বসেন যে ‘কয়টা পড়ছ বই’, তাহলে খুবই বিপদে পড়ে যাব। জানা মতে, মাসুদ রানার খণ্ড শ’ চারেকের কাছে। আর স্মৃতিমতে আমার আস্ত পড়া কেবল পিশাচ দ্বীপ। সেটা কেন ও কীভাবে বাসাতে পেয়েছিলাম, তা ধারণা নাই। তবে আমার মামাদের দুজনের একজন সংগ্রাহক হতে পারেন। এর বাইরে আমি নিজে নিয়মিত লাইব্রেরিতে যাতায়াত শুরু করলে মাসুদ রানার বিপুল সম্ভার আমাকে কখনও টানে নাই। কুয়াশা বা দস্যু বনহুর-ও দু’চারটা খণ্ড পড়েছি, মাসুদ রানা একেবারেই নয়। সামনে পড়ে আছে, খুলে দু’পাতা পড়লাম – এরকম কিছু পরিস্থিতি বাদে। একেকবার মনে হয়, আমার শুচিতাবাদী মনের কারণে। কিন্তু ভেবেচিন্তে সেই অনুসিদ্ধান্ত বাদ দিতেই হয়। কারণ অশুচিতাবাদী যৌনতার অনেক সাহিত্যই আমি পড়েছি। চূড়ান্ত বিচারে হয়তো চুপচাপ তীক্ষ্ণ শার্লক হোমসের প্রতি আমার অনুরাগ সাঁই সাঁই ধরনের মাসুদ রানার প্রতি বিরাগের কারণ হয়ে থাকবে।

মাসুদ রানা জনপ্রিয় যে কারণে

জেমস বন্ডের ছায়ায় গড়ে উঠেছেন মাসুদ রানা। ছবি: সংগৃহীত

গোয়েন্দা বনাম স্পাই

বাংলা সাহিত্যের (আধুনিক) ইতিহাসে গোয়েন্দা অনেক। অপেক্ষাকৃত পরিচিতরা হলেন কিরীটী রায়, ব্যোমকেশ বক্সী, ফেলুদা। ঘনাদা বা স্বপন কুমার সম্ভবত ঠিক একই বর্গে পড়বেন না। কিন্তু গোয়েন্দারা গুপ্তচর নন। বাংলা সাহিত্যের গোয়েন্দারা কমবেশি শার্লক হোমসের বিদ্যাবুদ্ধির প্রচ্ছায়াতে গড়ে উঠেছেন। তাতে কেউ ধুতি পরতে পারেন, কেউ চুরুট খেতে পারেন, কেউ শাল গায়ে চড়াতে পারেন, কেউ সনাতনী বাংলায় দীর্ঘ কেইস-বিবরণী সবাইকে গোল করে বসিয়ে দিতে পারেন, আরেকজন ইংরাজি সঙ্গীতমুগ্ধ থাকতে পারেন। এরকম নানান ভিন্নতা সত্ত্বেও এরা সকলেই গোয়েন্দা, কিংবা ব্যোমকেশের ভাষায় সত্যান্বেষী। এসব ভিন্নতা সত্ত্বেও এরা শার্লকের উত্তরসূরী। ওদিকে গোয়েন্দা আর গুপ্তচরেই কেবল মামলা ফিনিস হয়ে যাচ্ছে না। আরো আছে অ্যাডভাঞ্চারাস কম্যুনিস্টসম ঝোড়ো চরিত্র। যেমন কিনা দস্যু বনহুর। দস্যু বনহুরকে মেলাতে হলে মেলাতে হবে রবিন হুডের সাথে। তুলনায় কুয়াশা বরাবরই কুয়াশাচ্ছন্ন। তবে যদি বলতেই হয়, মাসুদ রানার থেকে কুয়াশা অনেক বেশি গোয়েন্দা। মাসুদ রানা বরাবরই স্পাই, শুরু থেকেই। কুয়াশা খানিকটা আলাদীনের দৈত্যের মতো ভোজভাজি করে ফেলতে পারেন।

তাহলে দুই বাংলার মেলা মেলা গোয়েন্দা থাকলেও গুপ্তচর বা স্পাই আসলে ভালমতো কেবল মাসুদ রানাই। যদি গোয়েন্দাদের দল বিকশিত হয়ে থাকেন শার্লকের বুদ্ধিরূপের উপর দাঁড়িয়ে, তাহলে আমাদের স্পাই মাসুদ রানা দাঁড়িয়েছেন আরেক জগদ্বিখ্যাত স্পাই জেমস বন্ডের উপর ভর করে। এগুলো সাধারণ জানাশোনাই সকলের। তবে অতি সম্প্রতি জানতে পারলাম পশ্চিম বাংলায় মাসুদ রানা ততটা তেমন জনপ্রিয় হন নাই কখনও। জানতাম আসলে। তবে তথ্যটাতে অত গুরুত্ব দিই নাই কখনও। কিন্তু এ দফা জানার পর দুইটা বিষয় মনে হলো। একটা চিরপরিচিত। বাংলাদেশের কোনো পুস্তকই বা ইন্ডিয়ার বাংলাভাষীরা যত্ন করে গ্রহণ করেছেন! আর দ্বিতীয়টা নীতিসঙ্গত (বা রাজনীতিসঙ্গত) বিষয়। কেন বা কীভাবে ভারতের নাগরিকেরা পাকিস্তান বা বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর একজন কুঁদে-বেড়ানো সামরিক কর্মকর্তার জৌলুস গ্রহণ করবেন!

পর্দায় ধাঁই-ধাঁই স্পাই

যার মনে যাই থাকুক, সোজা-সরল সত্য হলো বাংলাদেশে জেমস বন্ডের মুখ্য কনজাম্পশন হয়েছে পর্দায়, বইতে নয়। যে সময়ের কথা হচ্ছে তখন বাংলাদেশে হাজারের উপরে প্রেক্ষাগৃহ ছিল। সঠিক হিসাব দেবার জন্য বাংলাদেশে মহাফেজখানার হাল আরও ভাল হতে হতো। তবে সেইসব হাজার প্রেক্ষাগৃহের অনেকগুলোতেই ইংরাজি ছবি প্রদর্শিত হতো। কোনো হলই কেবল ইংরাজির জন্য তালিকাভুক্ত ছিল না। কিন্তু কিছু প্রেক্ষাগৃহে ইংরাজি অপেক্ষাকৃত বেশি হারে দেখানো হতো। এ ছাড়া মফস্বলের হলগুলোতে প্রায়শই ছুটির দিনের আগের দিন, প্রথমে শনিবার, পরে বৃহস্পতিবার, এক টিকেটে দুই ছবির এক ধরনের চর্চা ছিল। ছুটির আগের দিনে মুক্তি পাক আর না পাক, ছুটির দিনটাতে তা চলতোই। হংকং কিংবা হলিউডের নরম-পর্নোগ্রাফিগুলো এই কাতারে থাকত। এসব ছবির দর্শকেরা ‘যেন বা লুকিয়ে’ দেখে আসতেন। কিন্তু, জেমস বন্ড এই লুকোছাপা চরিত্রের ছিলেন না। তা তিনি যতই প্রেমঘন দৃশ্যে হাজির হোন না কেন। কথিত আছে যে, জেমস বন্ড বা অন্যান্য ইংরাজি ছবির প্রণয়দৃশ্যগুলো সেন্সর বোর্ড ঠিকঠাক মতো কেটে দিতেন। তবে ‘এক টিকেটে দুই ছবি’র ওই নরম-পর্নোগুলোর বেলায় সেন্সর বোর্ডের কর্তারা কী করতেন তা জানা যায় না। জেমস বন্ড বলতে বাংলাদেশে, যদি ঠিক মনে পড়ে, শ্যেন কনোরি আর রজার ম্যুর বিরাজ করতে পেরেছিলেন। মানে সেলুলয়েড জমানার কথা হচ্ছে, সাম্প্রতিক ডিজিটাল ড্যানিয়েল ক্রেইগ নয়।

জেমস বন্ড চিরকালই পিটাপিটি করেন। করতেই হয়। মাসুদ রানাও অনেক পিটাই করে থাকেন। তবে শেষের দিকের বন্ড, প্রযুক্তির সাথে তাল মেলাতে গিয়ে বহু হাইটেক পিটাই করে থাকেন। শেষেরটাতে তো দেখলাম বন্ড প্রায় সংসারই পেতে বসেছেন। নো টাইম টু ডাই দেখার পর সহদর্শকদের বললাম যে অপুর সংসার-এর আদলে ছায়াছবিটার নাম ‘জেমসের সংসার’ বা ‘বন্ডের বন্ধন’ হতে পারত। এদিক থেকে মাসুদ রানা গুরুতরভাবে অগ্রসর বিবাহনিরপেক্ষ মানুষ। ৪০০ খণ্ডেও তিনি খণ্ডীকৃত হয়ে বিবাহ এবং/বা বান্ধাপ্রণয়ে বান্ধা পড়েননি। বাস্তবে সিনেমার পর্দায় যে স্পাইকে ধাঁই-ধাঁই বহু লোকে দেখে উঠে সারেননি, তারাই পাতায় পাতায় শব্দে-শব্দে মনশ্চক্ষে দেখেছেন সেই স্পাইকেই, মাসুদ রানার মাধ্যমে। ‘দেশে’র জন্য নিবেদিতপ্রাণ এক উর্দিহীন মিলিটারি!

নেতাদের প্রতিকৃতি বা আইকন

জাতীয় নেতা বলতে যদি রাজনীতি-জাতীয় নেতা বোঝাই তাহলে নিশ্চয়ই কোনো অন্যায্য কাজ হয় না। এখন শেরে বাংলা বা ভাসানীর যেসব ছবি প্রতিকৃতি সম্প্রচার করা হয়, কিংবা তাদের বিষয়ে যেসব বাণীমালা ভেসে বেড়ায় পাঠ্যপুস্তকে বা রাজনীতি-আলাপে, তাতে তাদেরকে ‘সিনেমাটিক হিরো’ হিসাবে গ্রহণ করা খুবই কঠিন। সিরাজ শিকদার হয়তো হতে পারতেন। তাকে নিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের সম্প্রচার নাই বললেই চলে। চললেও তিনি অধিকতর দস্যু বনহুর ধাঁচের হতেন, অবশ্যই কম মাসুদ রানা ধাঁচের। রইলেন বাকি তিনজন। কিন্তু মাসুদ রানার জব ডেসক্রিপশনের দুইটা অন্তত আমাদের বিবেচনায় রাখা দরকার। তার মধ্যে মিলিটারিত্বই যথেষ্ট, কারণ বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রশাসকের সাথে মাসুদ রানার কিছুমাত্র বনিবনা না হবার। আর থাকে (হেটারোসেক্সুয়াল) প্রণয়োদ্ভাস। দিকে দিকে, ক্ষণে ক্ষণে, এমনকি জনে জনে। মাসুদ রানার ব্যক্তিত্বের সব থেকে আকর্ষণীয় অংশই এটা, আমার জন্য বলছি। এটাকে হিসাব মানলে স্বাধীন বাংলাদেশে নেতাদের মধ্যে এরশাদের থেকে বড় দাবিদার কেউই থাকেন না। কিন্তু এরশাদ দুর্ভাগাও বটে। তিনি মানসপটে এসে হাজির হবার বহু আগেই মাসুদ রানা প্রতিষ্ঠিত এমনকি বিদারিত (স্যাটুরেইটেড)। তা ছাড়া, কোনো এক রহস্যজনক কারণে এরশাদ একজন ড্যাশিং হিরো হিসাবে আবির্ভূত হতেই পারেন নাই – স্ট্যাটিসটিকস, এইসথেটিক্স (এবং পোয়েটিক্স) যতই তার পক্ষে থাকুক না কেন।

তাহলে জিয়াই ছিলেন মাসুদ রানার সব চেয়ে নিকটজন। মিলিটারি হিসাবে তো বটেই, তুখোড় বুদ্ধিমান হিসাবে; সর্বোপরি ‘হিরো’র প্রতিকৃতি বা আইকন হিসাবে। মাসুদ রানা ছেঁড়া গেঞ্জি না পরতে পারেন, খালও না কাটতে পারেন, কিন্তু মনশ্চক্ষে যদি কোনো রাষ্ট্রনায়ককে ‘যেন বা মাসুদ রানা’ ভাবতে চান, তাহলে অনায়াসে জিয়াকেই ভাবতে পারা ঠিক হবে। এতে জিয়ার নিজস্ব গোঁফ যদি মনশ্চক্ষে অশান্তি উৎপাদন করে, কাজী আনোয়ার হোসেনকে গোঁফওলা মাসুদ রানা পয়দা করতে বলা যেতে পারত। তা ছাড়া, জিয়া ময়দানে আসার আগেই, যেমনটা বললাম, সোহেল রানা নিজের গোঁফ মাসুদ রানাকে দিয়ে দিয়েছিলেন। ছবিটাকে ঠিক ফ্লপও বলা যাবে না, রীতিমত হিটই ছিল জানা যায়। যদিও এই ছবির দর্শকসংখ্যা আর মাসুদ রানার পাঠকসংখ্যার মধ্যে কোনো কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন তুলনা সম্ভব নয়।

রুচিবান-শুচিবান যারা

বাংলার সাহিত্য-গোয়েন্দাগণ সকলেই অতিশয় রুচিবান। এমনকি শুচিবান; অতিশয় শুচিবান। তাদের শুচির মাত্রা এতটাই যে পাঠকদের পক্ষে তাদের অযৌন কল্পনা করা অত্যন্ত বিবেচনাপ্রসূত হবে। এদের মধ্যে কার থেকে কার রুচি বেশি, বা কার শুচি শক্ত তা নিশ্চিত হওয়া যায় না। কারণ এদের কস্ট্যুম, কাল, সঙ্গীতরুচি বেশ স্বতন্ত্র পরস্পরের থেকে। তবে ফেলুদা অপেক্ষাকৃত নবীন ও পাশ্চাত্যনিষ্ঠ হবার কারণে তিনি অধিক সম্ভাবনাময় ছিলেন শুচিগিরি ছাড়তে। এর মানে এই নয় যে, আমি পাশ্চাত্যীয় রুচিকে অশুচি বলছি। তা তো বলছিই না, উপরন্তু যৌনতাকে শুচি বা অশুচিতা দিয়ে আমি নিজে বোঝারও আগ্রহ বোধ করি না। আমার বক্তব্য এই যে, গড়ে পাশ্চাত্যের যে ইমেজ পাঠক-মনোজগতে বিরাজ করতে থাকে আর যৌনতা যেরকম অশুচিময় কাঠামোতে বন্দি, তাতে ফেলুদা অপেক্ষাকৃত যৌনমনস্ক থাকতে পারতেন; ও সেই সুবাদে ‘অশুচি’। কিন্তু তিনি এমনকি তার স্রষ্টা সত্যজিতের থেকেও কঠোর ব্রহ্মচর্য অনুশীলন করে গেছেন। ‘সচ্চরিত্র’ চরিত্র সৃষ্টিতে বাংলা অঞ্চলের লেখকেরা দুর্দান্ত অবদান রেখে গেছেন। সমরেশ বসুর জন্ম না হলে উত্তরকালের নায়ক-নায়িকাদের হয়তো চৈতন্যদেবের মতো গলায় উত্তরীয় দিয়ে নদীয়া অঞ্চলে ঘুরে বেড়াতে হতো।

যা হোক, মাসুদ রানাকে নিয়ে বলতে গিয়ে এত লোকের কথা চলে এসেছে। মাসুদ রানা এই নিখিল বঙ্গীয় অযৌন পুরুষ অ্যাডভাঞ্চারাস ‘হিরো’দের ব্রহ্মচর্য থেকে ঐতিহাসিক মুক্তি এনে দিয়েছেন। তাতে পূর্বসূরী গোয়েন্দাদের মন ভাল হয়েছে কিনা জানার কোনো সুযোগ নাই। তবে ওটিটির একটা ছায়াছবিতে কিরীটী রায়কে একজন বান্ধবী সহযোগে সম্প্রতি দেখা গেল। মোবাইল ফোন আর বান্ধবী এই দুইটা সংযোজন ঘটেছে। অভিনয় ও চিত্রনির্মাণ নিয়ে আজকে আলাপ না করাই উত্তম, আসলে কখনই আলোচনা না করা ভাল। মাসুদ রানা যে তার পূর্বতন ভার্চুয়াস/সচ্চরিত্র নায়কদের থেকে সরতে পারলেন, এই যোগ্যতার কারণে তিনি পাঠকদের, বিশেষত পুরুষ পাঠকদের, কাছে অনেক গ্রহণযোগ্য হতে পেরেছিলেন। আর প্রণয়কালে তাকে ঠিক মিলিটারির সামাজিক ইমেজসুলভ লাগেও না। চলতি ভাষায় যাকে রোমান্টিক বলা হয়ে থাকে, সেই যোগ্যতাই বরং তিনি বহন করে চলেছিলেন।

তদুপরি আমেরিকানিজম ও ইয়্যুথ

উর্দিহীন হলেও মাসুদ রানা মিলিটারি। তিনি কখনই মিলিটারিগিরির বাইরে থাকতেন না। সোহানা প্রমুখের সাথে একটু আরাম-আয়েশ করার সময়েও তার মাথা থাকত কিলবিল ইন্টেলিজেন্সের মাথা। অবশ্যই মাসুদ রানার জাতীয়তা বদলাতে হয়েছে। তিনি পাকিস্তানি ইন্টেলিজেন্সের কর্মকর্তা ছিলেন, পরে বাংলাদেশের গোয়েন্দা বিভাগের চর হলেন। এই জাতীয়তা বদলের বিষয়ে তার নিজের কিছুই করার ছিল না। কারণ, তিনি রাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর চাকরিজীবী ছিলেন। এখন রাষ্ট্র বদলে গেলে তিনি কী করতে পারেন! কিন্তু ভাবুন, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর যত বুদ্ধিমান কর্মকর্তাই হোন না কেন, যিনি ধরাধামে আবির্ভূত হন ১৯৬৬ সালে, তখন কি তার জন্য ঢাকা খুব আরামদায়ক জায়গা? নিখিল বাংলাদেশ কোনো আরামদায়ক জায়গা? আবার কাজী আনোয়ার হোসেন যতই দেশপ্রেমিক হোন না কেন, মাসুদ রানার কারিগর হিসাবে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর এক কর্মচারীকে তিনি তো আর ছয় দফা আন্দোলনের সৈনিক বানাতে পারেন না। সেটা বানাতে হলে তার দস্যু বনহুর কিসিমের কিছু লিখতে হতো। ফলে দুর্দান্ত ক্ষিপ্র সেমিবন্ড দেশিবন্ড জন্মাবধি বাংলা পাঠকের ‘জাতীয় মুক্তির স্বপ্ন’তে (বা মতান্তরে জাতীয়তাবাদী স্বপ্নতে) এক বেখাপ্পা ‘হিরো’ হিসাবে থাকার কথা। বিচিত্র নয় যে, তিনি আরো আরো জনপ্রিয় হলেন ১৯৭৫-এর পরবর্তী বাংলাদেশে।

এখন কেউ যদি আমাকে প্রমাণ করতে বলেন, আমি হাত-পা ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করব। কোনো জনপ্রিয়তার মাপনযন্ত্র আমার কাছে নাই; বাংলাদেশে নাই মহাফেজখানার কোনো চর্চা। কিন্তু এটা অনুভব করার জন্য এমনকি আমার ১৯৭৫ সালে গুরুতর বয়স্ক লোকও হতে হয় নাই। বস্তুত এটা আমার ১৯৭৫ সালের আবিষ্কার নয়। পরেরই। পঁচাত্তর হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের সামরিকমনস্কতার গুরুতর সব বদল ঘটতে থাকে। এটা ভোজভাজির মতো এক রাত্রিতেই হয়নি তা সত্য। কিন্তু মার্কিনিবাদ বা আমেরিকানিজম পদ্ধতিগতভাবে বাংলাদেশে বিকশিত হয়েছে। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিকভাবে, সর্বমোট ছয় বছরও ক্ষমতায় ছিলেন না। বস্তুত তিনি চার বছরই ছিলেন। কিন্তু সেই সময়টাতে মার্কিনবাদিতা একটা স্বপ্নবলয়ের মতো রচিত হতে থাকে, বিকশিত হতে থাকে। সর্বোপরি, জনমানসে প্রোথিত হতে থাকে। এর অবধারিত অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে নতুন কল্পিত এক যৌবন/ইয়্যুথ, যার অবধারিত অনুষঙ্গ পৌরুষ। তাহলে পৌরুষদীপ্ত এক তারুণ্যময়তা দিয়ে মার্কিনি জীবনযাপনের অধিকল্পনা (ফ্যান্টাসি) এই সময়কালের মনোজগত বুঝতে খুবই জরুরি। অন্তত আমার প্রস্তাব সেটাই। মাসুদ রানা সেখানে অধিকল্পনার মূর্ত অধীশ্বর হিসাবে পুনর্জাগরিত হয়েছেন।

বাংলা সাহিত্যের কোনো গোয়েন্দাই ‘দেশমাতা’র সেবক হিসাবে বিকশিত নন। তারা মাইক্রো-ইভেন্টের ‘হিরো’; মাসুদ রানা ম্যাক্রো ইভেন্টের। ঠিক এই সময়কালটাতেই যে সারা বাংলাদেশের চাকরিজীবী মধ্যবিত্ত তাদের (পুরুষ) বাচ্চাদের সেনা অফিসার বানানোর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন সেই বাস্তবতাটাকে এর সাথে মিলিয়ে পাঠ করা যায়। যায় তো বটেই! কিন্তু আজকেই তা করে ফেলতে হবে তা তো নয়। আজকে উর্দিহীন মাসুদ রানাতেই শেষ করি আমরা! উর্দিহীন, তথাপি মিলিটারি, তথাপি রাষ্ট্রের পতাকাবাহী, কাঁধে করে নিয়ে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন। মাসুদ রানার ‘দেশাত্ম’বোধ তাই সামরিক-সীলমোহরসম্পন্ন রাষ্ট্রচৈতন্য।

মানস চৌধুরী: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক

আরও পড়ুন:
‘মাসুদ রানা’ উপন্যাসের বাকি অংশ শেষ করবেন কাজীদার ছেলে
মায়ের কবরে সমাহিত কাজীদা
কাজীদার শেষ শয্যা বনানীতে
বিদায় কাজীদা
মাসুদ রানার ২৬০ বইয়ের লেখক আব্দুল হাকিম

মন্তব্য

আরও পড়ুন

মতামত
The jute field is burning

দাবদাহে নষ্ট হচ্ছে পাটক্ষেত

দাবদাহে নষ্ট হচ্ছে পাটক্ষেত বৈশাখের তপ্ত রোদে পাটক্ষেত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। ছবি: নিউজবাংলা
কৃষকরা জানান, এবার প্রতি বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ টাকার মতো। যা গতবারের চেয়ে অন্তত দুই হাজার বেশি। এরপরে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য সেচ দিচ্ছেন তারা। ফলে আরও বাড়তে পারে উৎপাদন ব্যয়।

দাবদাহ আর বৃষ্টিহীনতায় পুড়ছে মাদারীপুরের পাটক্ষেত। বৈশাখের তপ্ত রোদে পাটক্ষেত নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পাটের জমিতে ঘন ঘন সেচ দেয়ায় যেমন উৎপাদন খরচ বাড়ছে, তেমনি খরায় জমির আগাছা পরিষ্কার করতে পারছেন না কৃষকরা।

এমনটা চলতে থাকলে উৎপাদন অনেকটা হুমকির মুখে পড়বে বলেও আশঙ্কা কৃষকদের।

সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের মধ্যচক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দিনের তীব্র দাবদাহে পাট গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেতেই মরে যাচ্ছে পাট গাছ। কোথাও শুকিয়ে মাঠ ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে ঘন ঘন সেচ দিয়েও গাছের আশানুরূপ পরিবর্তন আনতে পারছেন না।

অনাবৃষ্টির কারণে পাট গাছের বৃদ্ধি না হওয়ায় জমিতে আগাছার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে দ্বিগুণ হারে।

কৃষকরা জানান, এবার প্রতি বিঘা পাট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১৯ হাজার ৫০০ টাকার মতো। যা গতবারের চেয়ে অন্তত দুই হাজার বেশি। এরপরে গাছ শুকিয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য সেচ দিচ্ছেন তারা। ফলে আরও বাড়তে পারে উৎপাদন ব্যয়।

খোয়াজপুরের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কয়েকদিনের প্রচণ্ড গরমে মাঠ ফেটে চৌচির। পাটগাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। একটুখানি বড় হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন চললে এবার পাট আবাদ ধসে পড়বে। অনেকেই সেচ দিলেও এক দুই দিন পরে আবার শুকিয়ে যায়। এতে মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে উঠছে।’

আর মাদারীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এবার ৩৭ হাজার ৪০২ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এরই মধ্যে অধিকাংশ জমিতে বপন কাজ শেষ হয়েছে এবং অনেক স্থানে চারা বড় হয়ে গেছে, কিন্তু রোগের কারণে পাটের ক্ষতি হওয়ায় চাষিদের বিকেলে পানি সেচ দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আবদুল মতিন বিশ্বাস বলেন, ‘এই গরমে পাটের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে সেটা অস্বীকার করার উপায় নেই, তবে কৃষকদের বলছি, যেন বিকেলে সেচের মাধ্যমে পাট গাছ জীবিত রাখে। এতে গাছ মরবে না।’

মাদারীপুর জেলায় অন্যতম অর্থকরী ফসল হিসেবে পাটের অবস্থান শীর্ষে। গত বছর পাটের মূল্য ভাল পাওয়ায় কৃষকরাও এবার বেশি জমিতে পাট চাষ করেছেন।

আরও পড়ুন:
দাবদাহ: ৭ দিন বন্ধ স্কুল কলেজ
‘১০০ কেজি বেগুন ৫০০ টাকায় বিক্রি করি’
বেগুনে পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক, ‘সেক্স ফেরোমন ফাঁদ’ পাতার পরামর্শ
১৫২ কৃষক পেলেন কোটি টাকার বেশি ঋণ
দিল্লি অভিমুখে লক্ষাধিক কৃষক, আটকাতে সড়কে কংক্রিটের দেয়াল

মন্তব্য

মতামত
The child fell from the roof while playing and died

খেলতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে শিশু নিহত

খেলতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে শিশু নিহত প্রতীকী ছবি
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মহম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশুটির মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে খিলগাঁও থানার সাথে কথা হয়েছে।

রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানে খেলতে গিয়ে একটি ভবনের ছাদ থেকে পড়ে এক শিশু নিহত হয়েছে।

শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে পাঁচ তলা ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে নিহত হয় সে।

নিহত শিশুর নাম খাদিজা আক্তার (৫)। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শিশুটির ফুফা মোহাম্মদ ইসহাক মিয়া (২০ বছর)।

খাদিজার বাবা মোহাম্মদ ফয়সাল আহমাদ জানান, দুপুরে পাঁচ তলার ছাদে খাদিজা খেলাধুলা করার সময় ছাদ থেকে নিচে পড়ে যায়। এ সময় খাদিজার ফুফা দৌড়ে ধরতে গেলে তিনিও নিচে পড়ে যান।

তিনি জানান, পরে তাদেরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খাদিজা রাত সাড়ে ৮টার দিকে মারা যায় এবং ফারিয়ার ফুফাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার কাঠালিয়া থানা এলাকায়। খিলগাঁওয়ের গোড়ান নবাবীর মোড় বতর্মানে১৪৮ /১ রায়হান সাহেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমরা।

ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ মহম্মদ বাচ্চু মিয়া বলেন, শিশুটির মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে বলে খিলগাঁও থানার সাথে কথা হয়েছে।

মন্তব্য

মতামত
The temperature in Pabna has exceeded 42 degrees

৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে পাবনার তাপমাত্রা

৪২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে পাবনার তাপমাত্রা ছবি: নিউজবাংলা
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রায় পাবনা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। অসহনীয় দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন-চার দিন তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও শুক্রবার চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।

এদিন পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রবিবার (২১ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে প্রথমবার ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অতি তীব্র তাপদাহে পাবনার মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ইটভাটার শ্রমিকসহ দিনমজুরদের জন্য অসহ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ।

আরও পড়ুন:
তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে
চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২.৭ ডিগ্রি, মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ

মন্তব্য

মতামত
The robber who killed the driver to rob a rickshaw is in jail

রিকশা ছিনতাই করতে চালককে খুন, ছিনতাইকারী কারাগারে

রিকশা ছিনতাই করতে চালককে খুন, ছিনতাইকারী কারাগারে ফাইল ছবি
বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে আশরাফ আলী কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। তিনি এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন।

গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।

৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।

নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।

ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’

মন্তব্য

মতামত
Even if the heat wave remains it may rain

তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে

তাপপ্রবাহ থাকছেই, বৃষ্টি হলেও হতে পারে গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন, নগরীতে পানিতে লাফাচ্ছে শিশুরা। ছবি: নিউজবাংলা
রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন স্থানে যেভাবে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকতে পারে। এর মধ্যে কোথাও কোথাও বৃষ্টিরও সম্ভাবনা রয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এতে বলা হয়, রাজশাহী, চুয়াডাঙ্গা ও পাবনা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, বগুড়া, বাগেরহাট, যশোর, কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগসহ ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা অবস্থা অব্যাহত থাকতে পারে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।

অধিদপ্তর বলছে, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজমান থাকতে পারে।

আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। আগামী পাঁচ দিনেও আবহাওয়াও প্রায় একই থাকতে পারে।

শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়া ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত শেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের কোথাও বৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

মন্তব্য

মতামত
Dhaka Bangkok will work together on the Rohingya issue

রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক

রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক বাংলাদেশ ও থাই প্রধানমন্ত্রী মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। ছবি: বাসস
মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাই প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এক সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

বাংলাদেশ ও থাই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক থেকে বেরিয়ে ব্যাংককে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি শুক্রবার এ কথা জানান। খবর বাসসের

মন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাই প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে এক সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।’

দুপুরে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গভর্নমেন্ট হাউজে উভয় নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত একান্ত বৈঠক শেষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব তথ্য জানান। সন্ধ্যায় ঢাকায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়েছে।

ড. হাছান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রেথা থাভিসিনের মধ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথমে তারা একান্তে কথা বলেন, এরপর দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যাসহ বহু বিষয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।

থাইল্যান্ডের সাথে বাংলাদেশের যে ভ্রাতৃপ্রতিম ও বন্ধুপ্রতিম সম্পর্ক, সেটা আরও জোরদার, বহুমাত্রিক ও বিস্তৃত করার ব্যাপারে দুই প্রধানমন্ত্রী গভীর আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন, বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে এ সময় অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত চুক্তি, জ্বালানি, পর্যটন ও শুল্ক সংক্রান্ত পারস্পরিক সহযোগিতা বিষয়ক তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং মুক্ত বণিজ্য চুক্তির আলোচনা শুরুর জন্য একটি লেটার অভ ইন্টেন্ট স্বাক্ষরিত হয়।

দেশের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ব্যাংককে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল হাই এবং থাইল্যান্ডের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. প্রাণপ্রী বাহিদ্ধা নুকারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি বর্ণনা করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ১০০টি ইকোনমিক জোন ও আইটি ভিলেজে থাই বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা চাইলে প্রয়োজনে বাংলাদেশে তাদের জন্য বিশেষ ইকোনমিক জোন করার কথাও বলেছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত হয়ে আসা প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। তাদের জন্য বাংলাদেশে যেসব সমস্যা উদ্ভূত হচ্ছে বৈঠকে সে বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলেও জানান ড. হাছান।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ডেও অনেক রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছেন, এখনো অনেকে আসছেন। থাইল্যান্ডও এই পালিয়ে আসা মানুষদের ভারে জর্জরিত। এই সমস্যা সমাধানে উভয় প্রধানমন্ত্রী দুই দেশের একসাথে কাজ করার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।

এদিন গভর্নমেন্ট হাউজে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রদত্ত রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অফ অনার প্রদানকালে থাই প্রধানমন্ত্রী সাথে ছিলেন। শেখ হাসিনা তার সৌজন্যে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আয়োজিত রাষ্ট্রীয় মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখেন।

থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ব্যাংককে পৌঁছান। তিনি বৃহস্পতিবার ব্যাংককে জাতিসংঘ সম্মেলন কেন্দ্রে জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশনের (ইউএনএসকাপ) ৮০তম অধিবেশনে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে দেওয়া ভাষণে সব ধরনের আগ্রাসন ও নৃশংসতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে এবং যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান জানান।

সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীর আগামী ২৯ এপ্রিল দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

মন্তব্য

মতামত
3 bank officials in jail on charges of irregularities of Tk 10 crores

দশ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে

দশ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে ৩ ব্যাংক কর্মকর্তা কারাগারে ছবি: নিউজবাংলা
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে ওই শাখার তিন কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ সেদিন রাতেই তাদের তিনজনকে আটক করে।

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।

ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’

আরও পড়ুন:
পাবনায় অগ্রণী ব্যাংকের ভল্ট থেকে ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মন্তব্য

p
উপরে