× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

মতামত
In the lonely clich of the crime thriller genre
google_news print-icon

ক্রাইম থ্রিলার জনরার ‘নিঃসঙ্গ নারী’ ক্লিশে

ক্রাইম-থ্রিলার-জনরার-নিঃসঙ্গ-নারী-ক্লিশে
নেটফ্লিক্সের নতুন বছরের জনপ্রিয় সিরিজ ‘দ্য উওম্যান ইন দ্য হাউজ অ্যাক্রস দ্য স্ট্রিট ফ্রম দ্য গার্ল ইন দ্য উইন্ডো’। বোঝাই যায়, এরকম উদ্ভট নাম আসলে সচেতনভাবে রাখা হয়েছে। সমসাময়িক ক্রাইম থ্রিলার বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার জনরাকে প্যারোডি করার উদ্দেশ্যে এই নামকরণ। কিন্তু প্যারোডি করতে গিয়ে সিরিজটা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে?

সমসাময়িক পশ্চিমা সাহিত্যের ক্রাইম থ্রিলার জনরা এমন একটা গর্তে পড়েছে যে সেখান থেকে আর উঠতে পারছে না। সেটা বই বা উপন্যাসের ক্ষেত্রেই হোক, কি হোক টিভি সিরিজের ক্ষেত্রে। সেটারই ব্যবচ্ছেদ করার একটা উপলক্ষ তৈরি করে দিয়েছে নেটফ্লিক্সের নতুন বছরের একটি সিরিজ- দ্য উওম্যান ইন দ্য হাউজ অ্যাক্রস দ্য স্ট্রিট ফ্রম দ্য গার্ল ইন দ্য উইন্ডো

বোঝাই যায়, এরকম উদ্ভট নাম আসলে সচেতনভাবে রাখা হয়েছে। সমসাময়িক ক্রাইম থ্রিলার বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার জনরাকে প্যারোডি করার উদ্দেশ্যেই এই নামকরণ। প্যারোডির ব্যাপারটা একটু স্পষ্ট করি- নামটার দিকে ভালো করে নজর দিলেই দেখা যায় নামটা আসলে দুইটা জনপ্রিয় সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার উপন্যাসের নামের ম্যাশআপ। এর একটি এ জে ফিনের ২০১৮ সালের দ্য উওম্যান ইন দ্য উইন্ডো এবং অপরটি পলা হকিন্সের ২০১৪ সালের দ্য গার্ল ইন দ্য ট্রেইন। এই দুই উপন্যাস ভালোই জনপ্রিয় হয়েছিল এবং দুটি উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমাও হয়েছে, প্রথমটা থেকে ২০২১ সালে ও পরেরটা থেকে ২০১৬ সালে।

এই জনরার সমসাময়িক কাহিনীগুলিতে যেসব ক্লিশে, একঘেয়ে ও বিরক্তিকর জিনিস দেখা যায়, সেগুলির প্রত্যেকটাকে ধরে ধরে ব্যঙ্গ করা হয়েছে এই সিরিজটাতে।

এই সিরিজের কেন্দ্রীয় চরিত্র অ্যানা নামের এক উচ্চ মধ্যবিত্ত আমেরিকান নারী যে আবার ব্রিটিশ অ্যাকসেন্টে কথা বলে। সে ভিড় বা জনসমাগম খুব ভয় পায়। তার কাজ বা আয়ের উৎস কী সেটা পরিষ্কার না, কিন্তু সে থাকে শহরের বাইরে খুব বিলাসবহুল একটা বাড়িতে। অ্যানা তার একমাত্র মেয়েকে হারিয়েছে এবং সেই শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অতিরিক্ত মদ্যপানের মাধ্যমে সেই শোক ও একাকীত্বের যন্ত্রণা কাটানোর চেষ্টা করে সে আর খুব সন্দেহের চোখে প্রতিবেশীদের উপর নজর রাখে।

এরই মধ্যে খুব স্মার্ট ও আকর্ষণীয় এক লোক তার প্রতিবেশী হয়ে আসে। এই সব কিছুর মধ্যেই অ্যানার চোখের সামনে একটা খুনের ঘটনা ঘটে এবং সেই ঘটনা শুধুমাত্র সেই প্রত্যক্ষ করে। স্বাভাবিকভাবে মানুষজন কেউ অ্যানার কথা বিশ্বাস করে না। আনার একমাত্র এবং নিবেদিতপ্রাণ ‘বেস্টফ্রেন্ড’ এগিয়ে আসে তখন, তাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়। অ্যানার প্রতিবেশীদের মধ্যে তাকে নিয়ে বিভিন্ন গুঞ্জন চলতে থাকে। হত্যারহস্য উদঘাটন করতে গোয়েন্দা পুলিশের জড়িত হওয়া, সফট-কোর যৌনদৃশ্য, ডার্ক ফ্ল্যাশব্যাক, বোকা বোকা টুইস্ট – সব মিলিয়ে এই জনরার সমসাময়িক কাহিনীগুলির এমন কোনো ক্লিশে নেই, যেটা এই সিরিজে বাদ পড়েছে। সম্ভবত এই সিরিজের ক্রিয়েটর বা নির্মাতারা বেশ হোমওয়ার্ক করে ক্লিশেগুলির একটা বড় চেকলিস্ট তৈরি করে নিয়েছিলেন।

এখন এই ক্রাইম থ্রিলার ও সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার জনরাতে, এই ক্লিশেগুলি কীভাবে তৈরি হয়েছে এবং পরবর্তীতে আস্তে আস্তে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে এবং শেষ পর্যন্ত এসে একটা বিরক্তিকর কাঠামোতে পরিণত হয়েছে, সেটা দেখানোর জন্য আমি একটু পিছনের দিকে ফিরে যাব। আর কিছু উদাহারণ তুলে আনব।

আমরা সাহিত্যের যে নির্দিষ্ট জনরা নিয়ে কথা বলছি- সেই জনরাতে নর্ডিক থ্রিলার ও স্ক্যান্ডিনেভিয়ান থ্রিলার খুবই প্রসিদ্ধ, সমাদৃত ও জনপ্রিয়। এই জনরার ইংরেজি উপন্যাস ও সিরিজগুলিতেও স্ক্যান্ডিনেভিয়ান থ্রিলারের সরাসরি প্রভাব দেখা যায়। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান সিরিজগুলির ইংরেজি রিমেইকও হয় অনেক।

একটি বিখ্যাত ও জনপ্রিয় আমেরিকান টিভি সিরিজ আছে ২০১১ সালের – দ্য কিলিং। সেই সিরিজে সারাহ লিন্ডেন নামের এক ডিটেকটিভ- যে কিনা সিংগেল মাদার, বিভিন্ন জটিল খুনের রহস্য সমাধান করতে থাকে। দ্য কিলিং সিরিজটি ছিল ২০০৭ সালের একই নামের একটি ড্যানিশ টিভি সিরিজের রিমেইক। ২০১৩ সালের দ্য ব্রিজ নামের একটি আমেরিকান টিভি সিরিজ আছে, যেটার কেন্দ্রীয় চরিত্র এক ধরনের মানসিক ডিজঅর্ডারে ভোগা এক নারী ডিটেকটিভ। দ্য ব্রিজ সিরিজটাও ছিল একই নামের একটা সুইডিশ সিরিজের রিমেইক। এরকম আরও অনেক নর্ডিক বা স্ক্যান্ডিনেভিয়ান থ্রিলার সিরিজ পাওয়া যাবে, যেগুলির কেন্দ্রীয় চরিত্র একজন নারী ডিটেকটিভ, যে আবার কোনো ব্যক্তিগত বা পারিবারিক বা অন্য কোনো সমস্যার মধ্যে আছে। পুরো কাহিনীতেই সে একইসাথে হত্যারহস্যের সমাধান ও নিজস্ব সমস্যা ডিল করার জন্য স্ট্রাগল করতে থাকে। যেমন মিডনাটসোল (২০১৬), কোলাটেরাল (২০১৮), ডেডউইন্ড (২০১৮), চেস্টনাট ম্যান (২০২১), আর্কটিক সার্কেল (২০১৮) সহ এরকম আরও বেশ কয়েকটি ছবি।

এমনকি বিবিসির তৈরি করা নিউজিল্যান্ডের খুব জনপ্রিয় সিরিজ টপ অব দ্য লেইক (২০১৩) ও আইরিশ লেখিকা টানা ফ্রেঞ্চের উপন্যাস থেকে তৈরি ডাবলিন মার্ডারসও (২০১৯) প্রায় একই ধরনের।

আমার আসলে এতকিছু বলার উদ্দেশ্য হলো ক্রাইম থ্রিলার জনরাতে একটা কমন ফরম্যাট তৈরি হয়েছে এবং আস্তে আস্তে সেটা ছড়িয়ে পড়েছে। ফরম্যাটটা এরকম: কেন্দ্রীয় চরিত্র হবে একজন নারী, যে কোনো না কোনো সমস্যা, বিশেষ করে সাইকোলজিক্যাল কোনো সমস্যায় জর্জরিত। সেই নারী কোনো পারিবারিক সমস্যার মধ্যেও থাকতে পারে বা সে হতে পারে ভীষণ অ্যালকোহল আসক্ত। এই ফরম্যাটের অসংখ্য উদাহারণের মধ্যে সর্বশেষ সফল উদাহারণ হল কেট উইন্সলেট অভিনীত এইচবিওর মেয়ার অব ইস্টটাউন (২০২১)।

ক্রাইম থ্রিলার জনরার ‘নিঃসঙ্গ নারী’ ক্লিশে
এই দুই সিনেমার নামের প্যারোডি করে তৈরি করা হয়েছে নেটফ্লিক্সের নতুন সিরিজ

আমার হিসাবে, এই ফরম্যাটটাই কিছুটা বিবর্তিত ও রূপান্তরিত হয়ে থ্রিলার জনরার সাহিত্যে এসে একটা ভয়াবহ ক্লিশেতে পরিণত হয়েছে।

এখনকার সময়ের জনপ্রিয় আমেরিকান লেখিকা জিলিয়ান ফ্লিনের ২০০৬ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস শার্প অবজেক্ট-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র ক্যামিলি প্রিকার ছিলেন অ্যালকোহল আসক্ত, পারিবারিক সমস্যার কারণে মারাত্মকভাবে মানসিক অবসাদগ্রস্ত একজন সাংবাদিক। এই ক্যামিলি প্রিকারই এক জটিল সিরিয়াল কিলিংয়ের রহস্য সমাধান করেন। ফ্লিনের পরবর্তী উপন্যাস ২০০৯-এ প্রকাশিত ডার্ক প্লেসেস-এর কেন্দ্রীয় চরিত্র লিবি ডে-ও অনেকটা একই রকম – ট্রমাটাইজড একজন নারী। প্রথম উপন্যাসটি নিয়ে এইচবিও একটা সিরিজ করেছে এবং পরের উপন্যাসটা থেকে একটি সিনেমা তৈরি হয়েছে।

ফ্লিনের এই উপন্যাসগুলির উপাদান ও কাঠামো ব্যবহার করে পরবর্তী বছরগুলোতে বেশকিছু ক্রাইম থ্রিলার বা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার উপন্যাস রচিত হয়। সেগুলোরই একটা হল ২০১৫ সালের পলা হকিন্সের লেখা দ্য গার্ল অন দ্য ট্রেইন এবং ২০১৮ সালের এ জে ফিনের লেখা দ্য উওম্যান ইন দ্য উইন্ডো। এই উপন্যাস দুটি থ্রিলার বাজারে বেশ হাইপ তৈরি করে এবং পরবর্তীতে এগুলোর অনুকরণে আরও অনেক উপন্যাস আসে।

২০০৬ থেকে ২০১৯ – বিশেষ করে ২০১০ পরবর্তী সময়ে এই একই ফরম্যাটে বাজারে অনেক থ্রিলারই এসেছে, যেগুলো একটা থেকে আরেকটাকে আলাদা করা সম্ভব না। মনে হবে বিভিন্ন লেখক আসলে একই চরিত্র আর একই কাহিনীকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে একই লেখাই লিখছেন।

সম্ভবত এই ব্যাপারটাকে প্যারোডি ও মিমিক করার জন্যই তিনজন ক্রিয়েটর হিউ ডেভিডসন, ল্যারি ডর্ফ ও রাচেল রামরাস নেটফ্লিক্সের এই সিরিজটা তৈরি করেছেন অনেকটা ডার্ক কমেডির আদলে। এবং সেটা করতে গিয়ে ক্লিশে জিনিসগুলিকে এমনভাবে মিমিক করেছেন, প্রতিটা ক্লিশেকে এই কাহিনীতে এতো সিরিয়াসলি এনেছেন যে সহজেই মনে হতে পারে, তারা আসলে কোনো ব্যঙ্গ করেননি, বরং একটা মার্ডার মিস্ট্রি বা হত্যারহস্যের কাহিনিই তারা দেখাতে চেয়েছেন। কাহিনি এমনভাবে এগিয়েছে ও হত্যারহস্যের ব্যাপারটি এমনভাবে উন্মোচন হয়েছে, অনেক সময় মনে হতে পারে যেই জনরার ক্লিশেগুলোকে প্যারোডি করতে চেয়েছে এই সিরিজ, শেষপর্যন্ত তা সেই জনরারই আরেকটা জিনিসে পরিণত হয়েছে।

ক্রাইম থ্রিলার জনরার ‘নিঃসঙ্গ নারী’ ক্লিশে
নিঃসঙ্গ, অবসাদগ্রস্ত, অ্যালকোহলিক নারী পশ্চিমা থ্রিলারের নতুন ক্লিশে

কাহিনিতে রিয়ালিটি ও ফ্যান্টাসির মধ্যকার টেনশন ধরে রাখা, কাহিনীর রোমান্টিক ও সেক্সুয়াল দিক, মূল রহস্য শেষপর্যন্ত টান টান রাখার চেষ্টা করা, টুইস্ট – ফরমুলা অনুযায়ী সব মিলিয়ে একটা সিরিয়াস মার্ডার মিস্ট্রি সিরিজের সবই আছে এখানে। মূল চরিত্র অ্যানার ইমোশোনাল ভূগোলও কাহিনিতে খুব ভালোভাবে ছড়িয়েছে। তবে কাহিনীর মেলোড্রামাটিক বর্ণনাভঙ্গি, সন্দেহজনক প্রতিবেশী, ভয়ংকর এক থেরাপিস্ট, হাস্যকর টুইস্ট এবং আট পর্বের প্রতি পর্বেই মোটাদাগে একটা হাসির ব্যাপার – সব মিলিয়ে এটাকে একটা সিলি, অ্যাবসার্ড জিনিস ও সত্যিকারের প্যারোডি বানানোর চেষ্টার ব্যাপারেও কোনো কমতি নেই।

এখন প্রশ্ন আসে, একটা প্যারোডির চরিত্রদের সাথে দর্শকদের কোনো ইমোশনাল কানেকশন কি তৈরি হওয়া সম্ভব? বা প্যারোডির কাহিনী-প্লটকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার কিছু আছে কি? দুটি প্রশ্নের উত্তরই এখানে ‘না’।

প্যারোডি করতে গিয়ে এখানে দুটি ব্যাপার ঘটেছে: রহস্য ধরে আগাতে গিয়ে মাঝপথে কমেডি চলে এসেছে এবং কমেডি করতে গিয়ে মাঝখানে রহস্য চলে এসেছে। কখনও কখনও এটাও মনে হয় যে, সিরিজটার কমেডিই এই যে এখানে নাম ছাড়া আসলে কোনো কমেডি নেই।

কমেডি এখানে কাজ না করার আরেকটা উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে, সিরিজের কাহিনীর একটা ডার্ক বা অন্ধকার দিক। আগেই বলেছি, এখানে দেখা যায় অ্যানার একমাত্র মেয়ে মারা গেছে এবং অ্যানা এখনও সেই শোকের মধ্যে আছে। মেয়ের মৃত্যুর পরে অ্যানার বিয়ে ভেঙে গেছে, আর্টিস্ট হিসাবে তার ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গেছে। প্রশ্ন হলো, অ্যানার মেয়ে কীভাবে মারা যায়? মেয়েটার বাবা ছিল ফরেনসিক সাইকোলজিস্ট এবং মেয়েটা তার বাবার সাথে জেলখানার ভিতরে গিয়েছিল। তখন এক সিরিয়াল কিলার মেয়েটাকে খুন করে খেয়ে ফেলে। বীভৎস, তাই না? এই বীভৎস এবং অস্বস্তির বিষয়টা সিরিজে বারবার ঘুরেফিরে আসতে থাকে অ্যানার কাজকর্মে। আনা অযথাই স্কুলের গেটে চলে যায়। সে তার বেডরুমে তার মৃত মেয়েকে খেলতে দেখে, তখন তাকে চুমু খেতে বলে এবং সেই মৃত মেয়ে অস্বীকার করে যে ‘আমি চুমু দিতে পারব না, কারণ আমি মৃত’। এইসব কারণে সিরিজে একটা ডার্ক আবহ তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত এটা আর কমেডি হয়ে উঠতে পারে না।

অবশ্য গতানুগতিক প্যারোডির মতো সরাসরি কমেডিতে গেলে সম্ভবত এই সিরিজটার উদ্দেশ্য পূরণ হত না। শেষপর্যন্ত এই সিরিজটা আসলে যা করতে চেয়েছে তা সে করতে পেরেছে- এই জনরার অ্যাবসার্ড, হাস্যকর ও ক্লিশে জিনিসগুলিকে উন্মোচিত করা এবং তা নিজেকে অ্যাবসার্ড বানানোর মধ্য দিয়ে হলেও। উদ্দেশ্যের দিক দিয়ে সিরিজটাকে সফল বলা যায়। দর্শক বিচারেও হয়ত এটাকে সফল বলা যায়। কারণ, জানুয়ারির ২৮ তারিখে নেটফ্লিক্সে আসার পরে এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও সিরিজটা এখনও নেটফ্লিক্সের চার্টে সবার উপরে আছে।

আশরাফুল আলম শাওন: লেখক, আইটি প্রফেশনাল

মন্তব্য

আরও পড়ুন

মতামত
Mob Justice is not acceptable in any way
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মব জাস্টিস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়

মব জাস্টিস কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নুরুল হুদাকে আটকের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয় বলে জানিয়েয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনায় বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গতকাল সোমবার সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈরের মৌচাকে হর্টিকালচার সেন্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘গত রোববার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তারের যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয়; তাকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। গ্রেপ্তার হয়েছেন নুরুল হুদা।’

‘তবে তাকে গ্রেপ্তারের সময় যেভাবে মব জাস্টিজ করা হয়েছে তা কাম্য নয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে এ ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। এ ঘটনার তদন্ত হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কৃষি জমি দখল রোধে কৃষি জমি সুরক্ষা আইন করা হচ্ছে জানিয়ে উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘বিদেশি ফলের পাশাপাশি দেশীয় ফলের উৎপাদন বাড়াতে হবে, যেন এসব ফল হারিয়ে না যায়।’

পরিদর্শনের সময় গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী যাবের সাদেক, কালিয়াকৈর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ, হর্টিকালচার সেন্টারের এনামুল হকসহ পুলিশ ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় উপদেষ্টা হর্টিকালচার সেন্টারের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নানা দিক নির্দেশনা দেন।

মন্তব্য

মতামত
Provide education assistance to the district administration to 4 students of Netrokona

নেত্রকোনার ৪ শিক্ষার্থীকে জেলা প্রশাসনের শিক্ষা সহায়তা প্রদান

নেত্রকোনার ৪ শিক্ষার্থীকে জেলা প্রশাসনের শিক্ষা সহায়তা প্রদান

অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা জয় করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির জন্য নির্বাচিত নেত্রকোনার চারজন শিক্ষার্থীকে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৮০ হাজার টাকা শিক্ষা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। গত রোববার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভা শেষে তাদের হাতে এই অর্থ তোলে দেন জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস।

এই চারজন মেধাবী শিক্ষার্থীরা হলেন ইংরেজি বিভাগে মো. সাজ্জাদ আলী, অর্থনীতি বিভাগে মানব তালুকদার, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে রেশমা আক্তার এবং বাংলা বিভাগে বন্যা রানী সরকার।

জানা যায়, এই চারজন মেধাবী শিক্ষার্থী নিজেদের প্রচেষ্টা ও প্রতিভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য মনোনীত হন। তবে তাদের প্রত্যেকেই আর্থিক সংকটে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়লে খবর পেয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।

বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে এলে জেলা পরিষদের মাধ্যমে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে শিক্ষা সহায়তা প্রদান করা হয়, যাতে তারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারেন।

নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, ‘চারজন শিক্ষার্থী ভর্তি সহায়তার জন্য আবেদন করেছিলেন। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কলেজের মাধ্যমে যাচাই করে দেখা যায়, তারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হয়।’

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, “এই মেধাবী শিক্ষার্থীরা নিঃসন্দেহে আমাদের জেলার সম্পদ। ভবিষ্যতে যেন কেউ আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সে লক্ষ্যেই জেলা প্রশাসনের সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন, যাতে মেধার বিকাশে অর্থ কখনো বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।” এছাড়াও স্থানীয়ভাবে এই পদক্ষেপকে শিক্ষাবান্ধব প্রশাসনের একটি মানবিক দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের পরিবার ও অভিভাবকরাও এ সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

মন্তব্য

মতামত
Public Health and Environment in Public Health and Environment Plastic Waste

হুমকিতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ প্লাস্টিক বর্জ্যে নাকাল কর্ণফুলী

হুমকিতে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ প্লাস্টিক বর্জ্যে নাকাল কর্ণফুলী

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রাম প্রতিদিন তৈরি করছে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশজুড়ে রয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য। নগরজুড়ে উৎপন্ন এই প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের অভাবে সরাসরি নদী, খাল ও নালায় গিয়ে মিশছে। যা পরিবেশের জন্য এক ভয়াবহ হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), জার্মান সরকার এবং বাউস বিশ্ববিদ্যালয়ের এক যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, চট্টগ্রাম শহরে প্রতিদিন প্রায় ২৫০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি হয়। এর মধ্যে ১৪০ টন সরাসরি খাল ও নালার মাধ্যমে গিয়ে পড়ে কর্ণফুলী নদীতে। নদীতে জমা হওয়া এই প্লাস্টিক বর্জ্যে তৈরি হচ্ছে পলিথিন ও প্লাস্টিকের আস্তর। এর ফলে নদীর স্বাভাবিক গভীরতা দিন দিন কমে যাচ্ছে, ব্যাহত হচ্ছে কর্ণফুলী নদীতে জাহাজ ও নৌযান চলাচল। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে নদীর গভীরতা বাড়াতে সম্প্রতি প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হয়েছে। এই ব্যয় অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যান্য প্লাস্টিকের পাশাপাশি ওয়ান টাইম প্লাস্টিক সবচেয়ে বেশি পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, প্লাস্টিক মূলত তৈরি হয় পেট্রোলিয়াম থেকে। সুতরাং পরিবেশের ওপর এর একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব থেকে যায়। এছাড়া প্লাস্টিক পলিথিনের মান উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যেগুলোর প্রায় প্রতিটি পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক। বিশ্বে প্রতি বছর প্রায় ৪৮০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন হয়। ওয়ান টাইম প্লাস্টিক পরিবেশের উপর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।

চুয়েটের পরিবেশ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যদি শহরের বর্জ্য ঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে পারতাম তাহলে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ড্রেজিংয়ে খরচ হতো না। একইসঙ্গে পরিবেশ রক্ষায় আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।’ এক গবেষণায় দেখা যায়, কর্ণফুলী নদীতে প্রতিদিন গড়ে ৭৮৫ টন বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য গিয়ে পড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে একবার ব্যবহার করে ফেলে দেওয়া ওয়ান টাইম প্লাস্টিক, যা পরিবেশের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। গবেষকরা জানান, বন্দরে যেসব জাহাজ আসে সেগুলোও কম-বেশি প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে। এসব বর্জ্য যথাযথভাবে নিষ্কাশন না হলে তা শুধু নদী নয়, সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য এবং সামুদ্রিক পরিবেশেও মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।

এসসিআইপি প্লাস্টিক প্রজেক্টের পরিচালক ড. ফারজানা রহমান জুথি সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিদিনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা যথাযথভাবে করতে হবে। আর এটি করতে না পারলে নদী ও সমুদ্র উভয়ের পরিবেশই বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।’

জানা গেছে, বাংলাদেশ প্লাস্টিক দূষণের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দেশের মধ্যে একটি। নদীতে প্লাস্টিক দূষণ রোধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা। কারণ, এটি শুধু পরিবেশ নয়, জনস্বাস্থ্যের ওপরও দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলছে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের এক সমীক্ষায় কর্ণফুলী নদীর ৭৯টি স্থানে দূষণের চিত্র ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ৭৭টি স্থানে দূষণকে ভয়াবহ বলা হয়েছে। শিল্প-কারখানা, গৃহস্থালি, রাসায়নিক, কঠিন ও তরল বর্জ্য, পয়োঃবর্জ্য ও পলিথিন সরাসরি নদীতে ফেলার কারণে নদীর জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, চট্টগ্রাম শহরের ২৩টি স্থানে এবং ১৯টি খালের মাধ্যমে গৃহস্থালি ও শিল্প বর্জ্য কর্ণফুলীতে যাচ্ছে। শুধু নগরী নয়, রাঙ্গুনিয়া, বোয়ালখালী ও কর্ণফুলী উপজেলা থেকেও নদীতে ব্যাপক দূষণ হচ্ছে।

বিশেষভাবে কর্ণফুলী উপজেলায় অবস্থিত দেশের শীর্ষস্থানীয় সিমেন্ট, চিনি, তেল পরিশোধন, ফিশিং কমপ্লেক্স ও অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠান নদীতে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে। নগরীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা তেলের দোকান, খোলা টয়লেট, ডায়িং মিল, সার কারখানাসহ নানা প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য ড্রেন ও খালের মাধ্যমে গিয়ে মিশছে কর্ণফুলীতে। কৃষি কাজে ব্যবহৃত কীটনাশক ও রাসায়নিক সারও খালের মাধ্যমে নদীতে পৌঁছে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।ঢাকায় আয়োজিত এক সেমিনারে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. এম. ফিরোজ আহমেদ জানান, দেশে বছরে প্রায় ৯, ৭৭,০০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। এর মধ্যে ওয়ান টাইম প্লাস্টিক সবচেয়ে ক্ষতিকর। তিনি বলেন, ‘প্লাস্টিক মূলত পেট্রোলিয়াম থেকে তৈরি হয়। এটি পরিবেশে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে। এসব প্লাস্টিকের মান উন্নয়নের জন্য ব্যবহৃত কেমিক্যালগুলোও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।’ তিনি আরও বলেন, বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ৪৮০ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদিত হচ্ছে, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে।

মন্তব্য

মতামত
The Kushtia Gorai River is being occupied
হুমকিতে শহররক্ষা বাঁধ

বেদখল হয়ে যাচ্ছে কুষ্টিয়া গড়াই নদীর চর ও তীরবর্তী অঞ্চল

বেদখল হয়ে যাচ্ছে কুষ্টিয়া গড়াই নদীর চর ও তীরবর্তী অঞ্চল

গড়াইয়ের পানি প্রবাহের সঙ্গেই জড়িয়ে আছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৪ জেলার মানুষের ভালোমন্দ। তাদের ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত হয় গড়াইয়ের ওপর। একটু বলে রাখা দরকার, ১৯৫৪ সালে কুষ্টিয়া ও যশোর অঞ্চলে সেচ সুবিধা ও বন্যা থেকে ফসল ও জনপদ রক্ষার জন্য গঙ্গা কপোতাক্ষ পরিকল্পনা (জিকে) সেচ প্রকল্প নামে কার্যক্রম চালু হয়। জাতিসংঘের সহযোগিতায় চালু হওয়া সে প্রকল্পের আওতায় ফসল উৎপাদন বেড়ে যায় প্রায় তিনগুণ। এ প্রকল্পের মূল উৎস ছিল গড়াই। গড়াই নাব্য সংকটে থাকায় উৎসমুখের কাছে ভেড়ামারাতে পাম্প হাউস স্থাপন করে এ প্রকল্প টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল, তাও রক্ষা হয়নি। গড়াই শুকিয়ে যাওয়ার ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পরিবেশের ওপরও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

আর নানা কারণে কুষ্টিয়া শহরের গড়াই নদীর তীরবর্তী দুই পাড় দখলের কবলে পড়ছে। অবৈধ স্থাপনা ও বাধের দুইপাড় দখলের কারণে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে গড়াই নদীর শহর রক্ষা বাঁধ। স্বেচ্চাচারিভাবে নদী তীরে দোকান পাঠ, খামার, প্রতিষ্ঠান, এমনকি ঘর বাড়িও নির্মাণ করা হচ্ছে। নদীর কিছু কিছু জায়গায় ইতোমধ্যেই দখলদাররা বালু মহাল তৈরি করে পুরো চর দখল করে নিয়েছে। এমনকি নদীর তীরে মোটা বালি চিকন বালির বিশাল বিশাল বড় বড় গাদি করে ট্রলি ও ডাম ট্রাক এর মাধ্যমে এসব বালি বিক্রয় করছে। যা নদী রক্ষা বাঁধ ও তীর হুমকির মধ্যে পড়েছে। এছাড়াও নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে ক্ষমতাসীনদের ছত্র ছায়ায় বিভিন্ন মানুষকে টাকার বিনিময়ে জায়গা বিক্রয় করে তাদেরকে বসবাস করার অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে। এলাকাবাসীর দাবি এই দখলদাররা এলাকার উচ্চ পদের লোকদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে যার ফলে এদের কিছুই হচ্ছে না।

সরজমিনে দেখা যায়, অবৈধ দখলদারদের হাতে বেদখল হয়ে যাচ্ছে কুষ্টিয়া গড়াই নদীর চর ও তীরবর্তী অঞ্চল গুলো। কিছু অসাধু চক্র ক্ষমতার বড়াই দেখিয়ে একের পর এক দখল করে নিচ্ছে গড়াই নদীর পাড়। কুষ্টিয়া থানাপাড়া থেকে শশ্নান ঘাট পর্যন্ত ক্ষমতা দেখিয়ে নদী তীরে দোকান পাঠ, খামার এমনকি ঘর বাড়ি ও নির্মাণ করেছে ওইসব ভূমিদস্যুরা। কোথাও কোথাও পাকা দোতলা পর্যন্ত বাড়ি করা হয়েছে। শুধু তাই নয় কুষ্টিয়া হরিপুর ব্রিজের দুই পাশে দোকানপাট করেছে । এমনকি ব্রিজের পিলার দখল করে দোকান তৈরি করা হয়েছে। এতে হুমকিতে রয়েছে নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষ। এছাড়াও এইসব দখলবাজদের জন্য সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে কুষ্টিয়া গড়াই নদীর তীর। নষ্ট হচ্ছে নদীর পরিবেশ ও প্রকৃতি। নদী দখল হওয়া এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়া শহরসংলগ্ন জুগিয়ার নদী তীরবর্তী অঞ্চল, মঙ্গলবাড়িয়া বাঁধ সংলগ্ন, রেইনউক বাঁধ ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা, হরিপুর সংযোগ ব্রিজ এলাকা, হরিপুরের বিভিন্ন নদীর তীরসংলগ্ন এলাকা, বড়বাজার ঘোড়ার ঘাট এলাকা, শ্বশ্নান ঘাট, সৈয়দ মাসউদ রুমী সেতুসংলগ্ন এলাকা, কয়া বাজার ও কুমারখালী শহররক্ষা বাঁধ। খোকসা উপজেলাতেও চলছে নদী দখলের মহোৎসব। স্থানীয়দের অভিযোগ এই দখলদারিকে কেন্দ্র করে নদী তীরে বেশ কয়েকবার রক্তা রক্তির ঘটনাও ঘটেছে।

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রে জানা যায়, এসব অবৈধ স্থাপনা নিয়ে কাজ করছে তারা। অতি দ্রুতই এগুলো ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য

মতামত
Gambler

সাতক্ষীরায় গরমের তীব্রতায় বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ

সাতক্ষীরায় গরমের তীব্রতায় বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ

সাতক্ষীরায় গরমের তীব্রতায় নাভিশ্বাস উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষের। আষাঢ়ের শুরু থেকে গরমের তীব্রতা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় দুপুরের আগেই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। অসহনীয় কষ্ট বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষের। ভিড় বেড়েছে ডাব, শরবত আর আখের রসের দোকানে। গরমের তীব্রতা কাটাতে শহরের পৌরদিঘীতে দীর্ঘক্ষণ ধরে গোসল করছেন অনেকেই।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সাতক্ষীরার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আদ্রতা শতকরা ৫৪ ভাগ। অপরদিকে শনিবার সাতক্ষীরায় এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজমান ছিল। ওইদিন তাপমাত্রা ছিল ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাতক্ষীরায় গরমের তীব্রতায় নাকাল হয়ে পড়েছে মানুষ। গরমে বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে। মাঝে মধ্যে বৃষ্টির দেখা দিলেও ভ্যাপসা গরম আরো অসহনীয় লাগছে জনসাধারণের ।

ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভ্যান চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। রাস্তায় বের হলে মুখ পুড়ে যাচ্ছে গরমে। এছাড়া বাইরে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে ভাড়াও সেভাবে পাচ্ছিনা।’

শহীদ রাজ্জাক পার্কের শরবত বিক্রেতা ইনতাজ আলী জানান, অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় শরবত বিক্রি বেড়েছে। আগে যেখানে ৪০ থেকে ৫০ গ্লাস শরবত বিক্রি করতাম, এখন সেখানে ১০০ ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

সাতক্ষীরা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক কামরুন্নাহার বলেন, ‘সাতক্ষীরায় কখনো মৃদু আবার কখনো মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ ধারা জুন মাসের পুরোটা সময় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

মন্তব্য

মতামত
The name of the Sheikh family from 4 colleges in Barisal

বরিশালে ৫ কলেজ থেকে শেখ পরিবারের নাম বাদ

বরিশালে ৫ কলেজ থেকে শেখ পরিবারের নাম বাদ

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতিত আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার মা ও ফুফার নামে নামকরণ করা বরিশাল বিভাগের পাঁচটি কলেজের নতুন নামকরণ করা হয়েছে।

বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী জানান, সম্প্রতি নাম পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপণ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ।

নাম পরিবর্তন করা পাঁচ কলেজ হচ্ছে; বরিশাল নগরীর কাউনিয়া এলাকায় স্থাপিত শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি কলেজের নাম পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করা হয়েছে ‘কাউনিয়া সরকারি কলেজ’। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনা মহাবিদ্যালয়ের’ নাম পরিবর্তন করে ‘আলিমাবাদ সরকারি মহাবিদ্যালয়’, আগৈলঝাড়ার শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি ডিগ্রি কলেজের নামের পরিবর্তে ‘আগৈলঝাড়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’, নাজিরপুর উপজেলার ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়ের নতুন নাম হয়েছে ‘নাজিরপুর সরকারি মহিলা কলেজ’। ভোলার সরকারি ‘শেখ ফজিলাতুন্নেছা’ মহিলা কলেজের পরিবর্তে ‘ভোলা সরকারি মহিলা কলেজ’ নামকরণ করা হয়েছে।

শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়েছিলো। তালিকা পাঠানোর পর মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করেছে। বিষয়টি নোটিশ আকারে স্ব স্ব কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে নতুন নামের সাইনবোর্ড স্থাপন করেছেন।

মন্তব্য

মতামত
The walls were injured in the explosion in Keraniganj

কেরানীগঞ্জে বিস্ফোরণে দেয়াল ধস, আহত ৩

কেরানীগঞ্জে বিস্ফোরণে দেয়াল ধস, আহত ৩

কেরানীগঞ্জে গভীর রাতে বিস্ফোরণের ঘটনায় একটি পাঁচ তলা ভবনের নিচতলার দেয়াল ধসে পড়েছে এবং শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গত রোববার গভীর রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাড্যা খেজুরবাগ মন্দির এলাকার পাকিজা নামক ভবনের নিচতলায় এ বিস্ফোরণ ঘটে।

কেরানীগঞ্জ দক্ষিণ থানার এসআই তুষার জানান, আহতরা হলেন আল সামির (৮), তার বাবা ফারুক হোসেন (৪০) এবং মা শিউলি (৩০)। বিস্ফোরণের পর তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।

আহত ফারুক হোসেন জানান, ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি আমার স্ত্রীর হাত ও শিশুপুত্র সামিরের শরীর আগুনে পুড়ে গেছে। আমারও মুখের বাম পাশে ঝলসে যায়। তিনি আরও জানান, মাসখানেক ধরেই রুমের ফ্লোর অতিরিক্ত গরম হচ্ছিল। বিষয়টি বাড়ির মালিককে জানানো হলেও তখন তা মেরামত করা হয়নি। ভবনের মালিক সহিদ বলেন, ভবনের ফ্লোর গরম হওয়ার বিষয়টি জানার পর আমি দ্রুত দেশে ফিরে আসি। বিস্ফোরণের সময় পাশের রুমেই ছিলাম। বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে দেখি ভবনের নিচ তলার দেয়াল ভেঙে গেছে। ভবনটি রাজউকের অনুমোদন না থাকলেও তিনি ইউনিয়ন পরিষদের অনুমতি নিয়ে নির্মাণ করেছেন বলে দাবি করেন। ভবনটিতে মোট ১০টি পরিবার বসবাস করছে।

পরিদর্শন শেষে পোস্তগোলা ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আবু মুহাম্মদ সাজেদুল কবির জোয়ার্দার জানান, ভবনটি অনিয়মিত ও অপরিকল্পিভাবে ডোবা ভরাট করে তৈরি হওয়ার কারণে ধসে পড়তে পারে। অথবা গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকেও বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, ভবনটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে এবং এ বিষয়ে মালিকপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে বলেও তিনি জানান।

মন্তব্য

p
উপরে