বিএনপিকে বিপুল ভোটের ব্যবধানের হারিয়ে জামালপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের ছানোয়ার হোসেন ছানু।
রোববার সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যায় শহরের মির্জা আজম অডিটরিয়ামে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা ফল ঘোষণা করেন।
তিনি জানান, নৌকার প্রার্থী ছানোয়ার হোসেন ছানু পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৫৯৮ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন পেয়েছেন ২ হাজার ১৫৬ ভোট।
আরেক প্রার্থী ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি মোস্তফা কামাল পেয়েছেন ৬০১ ভোট।
পৌরসভাটিতে ৪৩ হাজার ৪৪২ ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হলেন ছানু।
১৮৬৯ সালে স্থাপিত ক শ্রেণির পৌরসভার ১১টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪১ জন ও ১২টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ৫নং ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে রাজিব সিংহ সাহা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
৫৩ দশমিক ২৮ বর্গকিলোমিটার আয়তনের জামালপুর পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের ৪২টি কেন্দ্রের ৩৪১টি বুথে ইলেক্ট্রিক ভোটিং সিস্টেমে (ইভিএম) শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণ হয়েছে। কোথায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
জামালপুর পৌরসভার মোট ভোটার ১ লাখ ৮ হাজার ৭২৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫২ হাজার ১৫১ জন এবং নারী ভোটার ৫৬ হাজার। তবে ভোট পড়েছে ৪৮ হাজার ৩৫৫ জন।
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। উপজেলা ভেদে দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হবে।
মঙ্গলবার সকালে নির্বাচন ভবনে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
ইসি সচিব বলেন, ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট দপ্তর, মন্ত্রণালয় সচিব, সিনিয়র সচিব ও দপ্তর প্রধানদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় বসেছিল কমিশন। সভার মূল বিষয় ছিল, যার যেটা করণীয় সেটা সবাই সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যেন যত্ন সহকারে করেন।
তিনি আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনী ও জনপ্রশাসনের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছেন তারা যাতে এই নির্বাচনটা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের চেয়ে আরও সুন্দর ও স্বার্থকভাবে আয়োজন করেন, এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে।
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম বলেন, উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্তের মধ্যে আমরা মূলত যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করে থাকি, এই নির্বাচনে তার চেয়ে অধিক পরিমাণে মোতায়েনের প্রচেষ্টা করা হবে। যেহেতু উপজেলা নির্বাচন চার ধাপে সম্পন্ন হবে, জেলা পর্যায়ে যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও জনপ্রশাসনের সদস্য রয়েছে, তারা ওখানেই ধাপে ধাপে দায়িত্ব পালন করবে। তারা বলেছে, তাদের জনবলের ঘাটতি হবে না।
জাহাংগীর আলম বলেন, উপজেলাভিত্তিক বিজিবি মোতায়েন করা হবে। উপজেলা ভেদে দুই থেকে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন থাকবে। জনবলের সংখ্যা উপজেলাভিত্তিক বাড়িয়ে দেয়া হবে।
বড় দল আসবে না, এর প্রভাব ভোটে থাকবে কি-না, এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের যে গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে, তারা যে প্রতিবেদন দিয়েছে তাতে নির্বাচনে কোনো ধরনের সহিংসতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে তারা উল্লেখ করেনি। দলীয় প্রতীক ছাড়া অনেক দল অংশ নিয়েছে তাই নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। একই দলের একাধিক প্রার্থী রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, যেসব দল নির্বাচন বর্জন করেছে তাদেরও কিছু কিছু অনুসারীরা এই নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাই কমিশন আশা করে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন থেকে শুরু করে সব কার্যক্রম নেয়া হবে যাতে নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তার পছন্দের ব্যক্তিকে ভোট দিয়ে সুষ্ঠুভাবে বাড়ি যেতে পারেন, যাতে নির্বাচনে তাদের মতামত প্রতিফলিত হয়।
অন্য এক প্রশ্নে ইসি সচিব বলেন, আইনিভাবে যার ভোটে অংশ নেয়ার যোগ্যতা রয়েছে তিনি ভোটে অংশ নিতে পারেন। এখানে কোনো আইনি বাধা নেই। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় জনপ্রতিনিধি যারা আগে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের নিকট আত্মীয়দের নির্বাচনে অংশ নিতে নিষেধ করা হয়েছে। এটা তো আইন না, একটি দলীয় ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তকে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একত্রিত করার কোনো সুযোগ নেই। আমরা চাই অধিক সংখ্যক প্রার্থী আসবে। জনপ্রশাসন সমন্বিতভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে। যত প্রার্থী আসবে স্থানীয় নির্বাচন তত সুষ্ঠু হবে বলে মনে করি।
পাহাড়ে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ বিরোধী যৌথ অভিযানের কারণে বান্দরবানের থানচি, রোয়াংছড়ি ও রুমা উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
মঙ্গলবার আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আমাদের পার্বত্য তিনটি উপজেলাতে বিশেষ করে বান্দরবানের থানচি, রুমা এবং রোয়াংছড়িতে যৌথ বাহিনীর অপারেশন চলমান রয়েছে। আপাতত এই তিনটি উপজেলা নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। পরে সুবিধাজনক সময়ে আয়োজনের চেষ্টা করব।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। থানচি, রোয়াংছড়িতে আগামী ৮ মে ও রুমায় ২১ মে ভোট হওয়ার কথা ছিল।
গত ২ এপ্রিল রুমার সোনালি ব্যাংকে ডাকাতি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অস্ত্র লুট করা হয়। এছাড়া ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করা হলেও পরে ছাড়া পান তিনি। পর দিন রুমায় সোনালি ও কৃষি ব্যাংকে দিন দুপুরে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
এ সব ঘটনায় কেএনএফ জড়িত বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। এরপর যৌথ বাহিনীর অভিযানে এখন পর্যন্ত ২১ নারীসহ ৭২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কেএনএফ-এর সদস্য অভিযানে নিহতও হয়েছেন।
নির্বাচন ভবনে আয়োজিত সভায় নির্বাচন কমিশন সদস্য, সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিভিন্ন দপ্তর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় গাইবান্ধার সাঘাটায় ও মুন্সীগঞ্জ সদরে নির্বাচনের আগেই চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন চারজন।
গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটের আগেই এমনকি প্রতীক বরাদ্দের আগেই চেয়ারম্যান নিশ্চিত হয়েছেন আইনজীবী এস এম সামশীল আরেফিন টিটু।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদের তিনজন প্রার্থীর মধ্যে অপর দুজন প্রার্থী নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
বিষয়টি মঙ্গলবার সকালে নিশ্চিত করেছেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধার জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মোত্তালিব।
তিনি জানান, এর আগে সোমবার বিকেলে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচন কর্মকতার কাছে লিখিতভাবে স্বেচ্ছায় নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহারপত্র দেন ওই দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। প্রার্থীতা প্রত্যাহার করা দুই প্রার্থী হলেন, হাসান মেহেদী বিদ্যুৎ এবং অপরজন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল আজাদ শীতল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল মোত্তালিব বলেন, ‘আজ প্রতীক বরাদ্দ শেষে দুপুরের পর তার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ঘোষণা করা হবে।’
নির্বাচনে সাঘাটা উপজেলায় চেয়ারম্যান পদ ছাড়াও সংরক্ষিত নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুইজন প্রার্থী এবং সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯ জনসহ ১১ জন প্রার্থীর চূড়ান্ত হয়েছে।
সাঘাটা উপজেলায় পুরুষ ভোটার এক লাখ ২০ হাজার ৬৫৩ জন এবং নারী এক লাখ ২১ হাজার ৫৮ জনসহ মোট ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৪১ হাজার ১২ জন। এ ছাড়া ১০৩ টি ভোট কেন্দ্র এবং বুথ রয়েছে ৬৬১টি। উপজেলায় অতি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৮। এ উপজেলায় ব্যালটে ভোটাররা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবেন।
মুন্সীগঞ্জে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত তিনজন
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আনিস উজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজমুল হাসান সোহেল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাসিনা গাজী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বিষয়টি সোমবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নিশ্চিত করেছেন মুন্সীগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী ছিলেন আনিস উজ্জামান। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে দুই জন করে প্রার্থী থাকলেও ওই পদগুলোতে একজন করে প্রার্থী নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।’
তিনি জানান, এতে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আনিস উজ্জামান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নাজমুল হাসান সোহেল এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে হাসিনা গাজী নির্বাচিত হয়েছেন।
এ কারণে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে না এবং যথাসময়ে তাদের গেজেট প্রকাশিত হবে বলে জানান তিনি।
ষষ্ঠ ধাপের এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে আগামী ৮ মে ১৫০ উপজেলায় ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে দুই হাজার ৫৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
রোববার মনোনয়নপত্র দাখিলের এ তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি বলেন, চেয়ারম্যান পদে ৭৩০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭৬৩ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫৬২ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
দ্বিতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় রোববার ছিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪ থেকে ২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।
এ ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি যেখানে সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।
এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। আপিল কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসক।
তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮মে। আপিল নিস্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে। এ ধাপে ৪৭ জেলার ১১২ উপজেলায় ভোট হবে।
এ ধাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত জেলা ও অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে।রিটার্নিং কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে নিষ্পত্তি করবেন জেলা প্রশাসক।
এদিকে প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী আপিল নিষ্পত্তি রোববার শেষ হয়েছে। মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে বৈধ প্রার্থী এক হাজার ৭৮৬ জন। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে।
আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।
আসন্ন তৃতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন কে দেবে তা দলগুলোকে জানাতে বলেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সংস্থাটির জনসংযোগ পরিচালক মো. শরিফুল আলম রোববার এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, আগামী ২৯ মে বিভিন্ন উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ১৫ এর উপবিধি (৩)(গ)(ইইই) অনুযায়ী চেয়ারম্যানভাইস চেয়ারম্যানমহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সভাপতি বা সাধারণ সম্পাদক বা সমপর্যায়ের পদাধিকারী বা তাহাদের নিকট হতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির স্বাক্ষরসহ তালিকা বর্ণিত বিধি অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারগণকে প্রেরণের জন্য এবং একই সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে পাঠাতে হবে।
তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে।
আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে। এই ধাপে ৪৭ জেলার ১১২ উপজেলায় ভোট হবে।
আরও পড়ুন:নাটোরের সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল হাবিব রুবেলকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
দলের এক জরুরি সভা থেকে শনিবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আইনজীবী ওহিদুর রহমান শেখ এ নির্দেশ দেন।
তিনি জানান, এর আগে প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশে সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে ‘কেন তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হবে না’ মর্মে ২২ এপ্রিলের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। এ ছাড়াও সভায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ, শ্রমিক লীগ এবং ছাত্রলীগের যে সব নেতা-কর্মী লুৎফুল হাবিব রুবেলের পক্ষে ১৫ এপ্রিল প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেন পাশাকে মারধর এবং অপহরণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের সংগঠন থেকে বহিষ্কারের পরামর্শ দিয়ে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়ে চিঠি প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী লুৎফুল হাবিব রুবেল জানান, তাকে দলের সভাপতি আইনজীবী ওহিদুর রহমান শেখ ফোনে জরুরি সভার সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন।
গত ১৫ এপ্রিল সিংড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিল করায় দেলোয়ার হোসেন পাশা এবং তার দুই সহযোগীকে অপহরণ এবং মারপিট করে বাড়িতে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় দেলোয়ার হোসেন পাশার ভাই মজিবুর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা করেন।
বাদী জানান, সিসিটিভির ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, লুৎফুল হাবিব রুবেলের সহযোগীরা এ কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন এবং অপহরণের কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসটির মালিকানাও লুৎফুল হাবিব রুবেলের।
সেই সঙ্গে গ্রেপ্তারকৃত দুজন আসামির একজন ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন, লুৎফুল হাবিব রুবেলের নির্দেশেই তারা এ কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
আরও পড়ুন:নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন কোনো রাজনৈতিক নির্বাচন নয়। কারণ বর্তমান সরকার দলীয় রাজনৈতিক দল স্থানীয় সরাকর নির্বাচনকে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। কাজেই স্থানীয় সরকার নির্বাচনে রাজনৈতিক কোনো ফ্লেভার নেই।
তিনি বলেছেন, তারপরও যাতে রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে যে কেউ নির্বাচনে দাঁড়াতে পারেন, সেটার অপশনও রাখা হয়েছে, অর্থাৎ ভোট ফ্লেক্সিবল করা হয়েছে। ইচ্ছে করলে স্বাধীনভাবে নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন; রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। আবার চাইলে অনেকে রাজনৈতিক পরিচয়েও নির্বাচন করতে পারবেন, তাতেও কোনো সমস্যা নেই।
শনিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের হলরুমে হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলার প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির উদ্দেশে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলেও তাদের অনেক সমর্থক-প্রার্থী আনঅফিশিয়ালি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। সুতরাং এটা বলার সুযোগ নেই যে, নির্বাচন অংশগ্রহণ মুলক নির্বাচন হচ্ছে না।’
ইসি আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচন অবশ্যই শান্তিপূর্ণ হতে হবে এবং কোনোমতেই যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি না হয়। অন্যায়ভাবে কেউ যাতে কোনো প্রার্থীকে প্রচারে ও ভোটদানে বাধা দিতে না পারে। সবাই যাতে সমানভাবে নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণা করতে পারে এবং ভোটরা যাতে স্বাধীনভাবে তার ভোট দিতে পারে। একইসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন নিয়ন্ত্রণে থাকে।’
নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে কার কোন আত্মীয় অংশ নিল বা কে অংশ নিল না- সেটা আমাদের বিষয় নয়; সেটা রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক বিষয়, কিন্তু আমাদের নির্বাচনি আইনে যদি কোনো ব্যক্তি ওই এলাকার ভোটার হয় এবং তার বিরুদ্ধে যদি কোনো আইনি ঝামেলা না থাকে, তাহলে তিনি নির্বাচনে দাঁড়াতে পারবেন। আমাদের আইনে আত্মীয়তার সঙ্গে কোনো সর্ম্পক নেই।’
এ সময় জেলা প্রশাসক রেহেনা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. তরিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার সুজন সরকার ও জেলা নির্বাচন অফিসার আমিনুর রহমান মিঞাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য