তৃতীয় দফার পৌরসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী সমর্থকদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নয়টি পৌরসভায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী।
কটিয়াদী
আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে এজেন্টদের মারধর, জোর করে সিল মারার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন ঘোষণা দেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী পৌরসভার বিএনপি মেয়র প্রার্থী মো. তোফাজ্জল হোসেন খান।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রগুলো থেকে আমার এজেন্টদের মারধর বের করে দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রশাসনের লোকজন আমার সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেছে। ন্যাক্কারজনক আচরণ করেছে।
‘এই প্রহসনের নির্বাচনের কোনো দরকার ছিল না। মাঠ খুব স্বচ্ছ হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার একটি পাতানো নির্বাচন করছে। আমি এই নির্বাচনের তীব্র নিন্দা জানাই।’
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শওকত উসমানের সমর্থকদের বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সালমা আনিকার।
এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন কিশোরগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম। তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং আমার নিকট কেউ অভিযোগও করেনি।
কটিয়াদীতে বিএনপি মেয়র প্রার্থী তোফাজ্জল হোসেন খান। ছবি: নিউজবাংলা
সিংড়া
আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সিল মারাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নাটোরের সিংড়া পৌরসভা নির্বাচনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী তায়জুল ইসলাম।
শনিবার দুপুর একটার দিকে সিংড়া পৌর বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘১২টা কেন্দ্রেই প্রকাশ্যে সিল মারছে আওয়ামী লীগ এজেন্টরা। এ ছাড়া বিএনপি এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। প্রশাসনকে বার বার বলার পরও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। ভোটের কোনো পরিবেশ নেই।’
তবে এমন অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই বলে জানিয়েছেন জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আছলাম। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এমন কোনো অভিযোগ লিখিত বা মৌখিকভাবে আমার কাছে আসেনি। সকাল থেকে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে কোনো ধরনের অনিয়মও দেখা যায়নি।’
নাটোরের সিংড়ায় ভোট বর্জনের ঘোষণা বিএনপি প্রার্থীর। ছবি: নিউজবাংলা
দর্শনা
ভোট কেন্দ্র থেকে নির্বাচনী এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগে নির্বাচন বর্জন করেছেন চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌরসভার বিএনপির প্রার্থী হাবিবুর রহমান।
শনিবার দুপুরে দর্শনা পুরাতন বাজারে নিজ নির্বাচনি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি। জানান, সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রগুলো থেকে পোলিং এজেন্টসহ তার প্রধান নির্বাচনি এজেন্টকে বের করে দেয়া হয়েছে।
হাবিবুর বলেন, ‘যে সেন্টারে পোলিং এজেন্ট গিয়েছে, তাকেই গলাধাক্কা দিয়ে খুন জখমের হুমকি দেখিয়ে সরকার দলীয় লোকজন ভোট সেন্টার হতে বের করে দিয়েছে। সরকার দলীয় লোকজন ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করার পর সকল বুথ দখল করে নির্দ্বিধায় তাদের মনোনীত প্রার্থীর মার্কায় সিল মারছে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থী মতিয়ার রহমান বলেন, কেউ কারও এজেন্ট বের করে দেয়নি। বিএনপির প্রার্থী মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা তারেক আহমেমদ জানান, ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণ চলছে। এজেন্ট বের করে দেয়ার বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি।’
কলারোয়া
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ তুলে সকালে ভোট বর্জন করেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী শরিফুজ্জামান তুহিন ও দলটির বিদ্রোহী প্রার্থী নার্গিস সুলতানা।
পৌরসভাটিতে মেয়র প্রার্থীই ছিলেন তিন জন। দুই জন সরে দাঁড়ানোয় এই পৌরসভায় এখন ভোটে আছেন শুধু আওয়ামী লীগ প্রার্থী মনিরুজ্জামান বুলবুল।
বিএনপি প্রার্থী শরিফুজ্জামান তুহিন বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে জানান, পৌরসভার ৩ ও ৮ নম্বর কেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে তাকে বাধা দেয়া হয়েছে। বহিরাগত যুবকরা তাকে লাঞ্ছিত করেছে।
দলটির বিদ্রোহী নার্গিস সুলতানাও প্রায় একই সময় সংবাদ সম্মেলন করে জানান, কোনো কেন্দ্রে তার এজেন্টদের ঢুকতে দেয়া হয়নি। ভোটেও ব্যাপক কারচুপি হয়েছে।
তবে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন জেলা নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা নাজমুল কবীর। জানান, কোনো প্রার্থী বা এজেন্টের কাছ থেকে এ ধরনের অভিযোগ পাননি তিনি।
কলারোয়ায় বিএনপির মেয়র প্রার্থীর ভোট বর্জনের ঘোষণা। ছবি: নিউজবাংলা
নলছিটি
ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভা নির্বাচনে ভোট বর্জন করেছেন বিএনপি মেয়র প্রার্থী মজিবুর রহমান ও আওয়মী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কেএম মাসুদ খান। দুজনেই অভিযোগ করে বলেছেন, ভোট কক্ষে মেয়র প্রার্থীর ব্যালট দেয়া হচ্ছে না।
বিএনপির মজিবুর রহমান জানান, সকাল থেকে কেন্দ্রগুলো তার এজেন্টদের ঢুকতেই দেয়নি ক্ষমতাসীন দলের নেতা কর্মীরা।
মাসুদ খান জানান, নির্বাচনের আগের দিন থেকে তার কর্মী সমর্থকদের জোর করে এলাকা থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। তার কোনো পোস্টার ব্যানার রাগাতে দেয়নি।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান বলেরন, ‘নলছিটি নির্বাচনের দুই প্রার্থীর ভোট বর্জনের কোনো লিখিত পত্র আমার হাতে এখনও আসেনি।’
সরিষাবাড়ি
জামালপুরের সরিষাবাড়ি পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী ফয়জুল কবির তালুকদার শাহীন নির্বাচন বর্জন করেছেন।
সরিষাবাড়ি বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে দুপুর ২টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
ফয়জুল কবির অভিযোগ করে বলেন, ‘পৌরসভার ১৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৭টি কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। ভোটাররা নিজের ভোট নিজে দিতে পারছেন না। ভোটারদের মেয়রের ব্যালট দেয়া হচ্ছে না, শুধু কাউন্সিলরদের ব্যালট দেয়া হচ্ছে।
‘এভাবে নির্বাচন হতে পারে না। তাই আমি সরিষাবাড়ির বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে স্থানীয় ও জেলার নেতাদের সঙ্গে কথা বলে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনির উদ্দিন মনির বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে। বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে এসব অভিযোগ করছেন তিনি।’
তৃতীয় ধাপে সরিষাবাড়ী পৌর নির্বাচনে ৯টি ওয়ার্ডের ১৮টি ভোটকেন্দ্রের ১১৭টি বুথে ভোট নেয়া হয়েছে। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনজন।
শিবগঞ্জ
বগুড়া শিবগঞ্জ পৌরসভায় নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী মতিয়ার রহমান মতিন।
শিবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে শনিবার বেলা ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সকালে ধানের শীষের এজেন্টদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে আওয়ামাী লীগের লোকজন। ভোটাররা ভোট দেয়ার আগেই বেলা ১১টার মধ্যে ছয়টি কেন্দ্রের ব্যালট পেপার শেষ হয়ে যায়। সবগুলো ভোট কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের কর্মীরা সবুজ টুপি পড়ে কেন্দ্র দখল করে রয়েছেন।’
জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আনিছুর রহমান রহমান বলেন, ‘বিএনপির মেয়র প্রার্থী ভোট বর্জনের কথা শুনেছি। তবে কেন্দ্র দখলের কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রশাসন বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নিচ্ছে। আর ব্যালেট পেপার শেষ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন। সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে।’
গৌরনদী
অনিয়ম ও আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকদের ভোট কক্ষে প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ এনে ভোট বর্জন করেছে গৌরনদী পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জহির সাজ্জাদ হান্নান।
শনিবার দুপুরে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নিজ বাস ভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
এ সময় তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রে ভোটারদের জোর করে নৌকায় ভোট দেয়ার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে। প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে কেন্দ্র থেকে কক্ষ পর্যন্ত। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বলেও কোনো লাভ হয়নি। তাদের সামনে বসে অনিয়ম হলেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি।’
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হারিছুর রহমান হারিছ বলেন, ‘ভোট সুষ্ঠভাবেই হচ্ছে। কারচুপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। ভোটাররা স্বতস্ফূর্তভাবে ভোট দিচ্ছে।’
ভালুকা
একই অভিযোগে ভালুকা পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাতেম খান ভোট বর্জন করেছেন।
দুপুর আড়াইটার দিকে ভালুকায় বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি বর্জনের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘নতুন করে নির্বাচন চাই। এই ভোট কোনোভাবেই মানি না।’
তৃতীয় দফায় ৬২ পৌরসভায় একযোগে ভোট নেয়া হয়। এই ধাপে ৬৪ পৌরসভায় তফসিল হলেও ভোট হচ্ছে না ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও কুমিল্লার লাকশাম পৌরসভায়।
ত্রিশালে এক মেয়র প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় সেখানে ভোট হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। আর কুমিল্লার লাকসাম পৌরসভায় মেয়র, সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে সবাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে সেখানে ভোট নেয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না।
প্রথম দফায় পৌর নির্বাচনে ভোট পড়ে ৬৫ শতাংশ, দ্বিতীয় ধাপে ৬২ শতাংশ। দুই দফায় ভোট হয়েছে মোট ৮৪ পৌরসভায়। এর মধ্যে বেশির ভাগ এলাকাতেই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হলেও কিছু এলাকায় ভোট নিয়ে অভিযোগও উঠে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো দাবির কারণে ভোট পিছিয়ে দেওয়া হবে না।
ঢাকায় ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ড. কমফোর্ট ইরোর নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা বলেন।
তিনি জানান, সরকার নির্বাচনের জন্য দুটি সম্ভাব্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে এবং নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা হবে না।
ভোটের তারিখের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে সীমিতসংখ্যক সংস্কার চায়, তাহলে নির্বাচন এ বছরের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের তারিখ পরিবর্তনের কোনো কারণ নেই। আসন্ন নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে।
দেশে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও যথাযথ প্রস্তুতি নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বুধবার এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি।
এর আগে গত ১৭ মার্চ প্রধান উপদেষ্টা মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কী ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন ও কী ধরনের সুবিধাগুলো পেয়ে থাকেন, তা নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।
আজকের বৈঠকে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উত্থাপিত বিষয়গুলোর সমাধান খুঁজে বের করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তাদের, বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবস্থার উন্নয়নে তাৎক্ষণিক বেশ কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার আজকের মূল নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুলিশে প্রচলিত ঝুঁকি ভাতার সিলিং তুলে দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা, পুলিশের জন্য নতুন ৩৬৪টি পিকআপ ও ১৪০টি প্রিজনার ভ্যান কেনার উদ্যোগ নেওয়া, পুলিশের চলমান নির্মাণ প্রকল্পের ৭০ শতাংশের নিচে সম্পাদিত হওয়া প্রকল্পগুলোতে অর্থ ছাড় করা, ভাড়াকৃত ভবনে অবস্থিত ৬৫টি থানার জমি অধিগ্রহণের জন্য অর্থ ছাড় করা এবং পুলিশের এসআই ও এএসআই পদবির কর্মকর্তাদের মোটরসাইকেল কেনার জন্য সুদমুক্ত ঋণের বিষয়টি বিবেচনা করা।
কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে জেলা পুলিশকে শ্রেণিবদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দেন প্রধান উপদেষ্টা। এ ছাড়াও তিনি নিম্ন কর্মদক্ষতার ইউনিটগুলোর কর্মক্ষমতা উন্নত করার লক্ষ্যে প্রচেষ্টা চালানোর ওপরও জোর দেন।
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনের সময়সূচি নির্ভর করবে সরকার গৃহীত প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের ওপর, যা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য বলে মনে করা হচ্ছে।
তিনি সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যদি সংস্কার কার্যক্রম আমাদের প্রত্যাশিত দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার প্রক্রিয়া প্রয়োজন হয়, তাহলে আমাদের আরও কয়েক মাস লাগতে পারে।’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর যখন তাকে দায়িত্ব নিতে বলা হয়, তখন তিনি ‘হতচকিত’ বোধ করেন।
বিবিসিকে ড. ইউনূস বলেন,‘আমি কখনও ভাবিনি যে আমি সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নেব। আমি আগে কখনও প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলাম না। তাই সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য আমাকে উপায়গুলো খুঁজে নিতে হয়েছে।
‘যখন বিষয়টি ঠিক হলো, তখন আমরা সংগঠিতভাবে কাজ শুরু করলাম।’
শান্তিতে নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘আমার কাছে দেশের জন্য আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার এবং অর্থনীতি পুনর্গঠন মূল অগ্রাধিকার ছিল।’
বিবিসির আজকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা এবং তার দল আওয়ামী লীগ এ নির্বাচনে অংশ নেবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়, যা অধ্যাপক ইউনূস এ বছরের শেষের দিকে আয়োজনের আশা করছেন।
মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
ঢাকার সরকারি বাসভবনে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইউনূস বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) সিদ্ধান্ত নেবে নির্বাচনে অংশ নিতে চায় কি না। আমি তাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না।’
অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন,‘নির্বাচন কমিশন ঠিক করবে কারা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘শান্তি ও শৃঙ্খলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পাশাপাশি অর্থনীতি। এটি একটি বিচূর্ণ অর্থনীতি, একটি বিপর্যস্ত অর্থনীতি।
‘এমন মনে হচ্ছে যেন গত ১৬ বছর ধরে কোনো ভয়ংকর টর্নেডো চলছে আর আমরা এখন সেই ধ্বংসস্তূপ থেকে টুকরোগুলো তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’
আরও পড়ুন:জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলনের প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ মত তুলে ধরেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘সারা দেশে জনপ্রতিনিধি না থাকায় জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এমনকি অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্তি পেতে তারাও দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান।’
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলেছি, জাতীয় নির্বাচন আগে হতে হবে, তারপর স্থানীয় সরকার নির্বাচন।’
অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন জনগণের দাবি উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, তারাও এ মতের পক্ষে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশে একটি বিশেষ পরিস্থিতি যাচ্ছে। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় জনপ্রতিনিধিরা নেই। তাদের দায়িত্বগুলো বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা পালন করছেন।
‘সেই জায়গা থেকে তাদের যে সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে, আজকের ডিসি সম্মেলনে আমরা সেগুলো শুনেছি এবং এগুলো অ্যাড্রেস করেছি।’
জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের সম্ভাবনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনারদের প্রত্যেকেই মূল দায়িত্বের বাইরে কিছু না কিছু অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসকদের অতিরিক্ত সময়ে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। সমস্যাটা হলো একজন অফিসার যখন নিজ দায়িত্বের বাইরে আরও দুই-তিনটা দায়িত্ব পালন করেন, তার পক্ষে কোনোটাই যথাযথভাবে পালন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না, যে কারণে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের আগেই স্থানীয় নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বে নিয়ে আসা উচিত।’
অন্তর্বর্তী সরকারের এ উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সর্বশেষ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মিটিংয়েও স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা এখনও চলমান আছে। চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত এখনও সরকার নেয়নি।
‘আশা করছি খুব দ্রুতই কোনো একটা সিদ্ধান্ত আসবে। হয় আমরা দ্রুতই জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করব, অন্যথায় প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে স্থানীয় সরকারের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের নাগরিকরা যেন কোনো বাধা বা হুমকি ছাড়াই অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সেই প্রক্রিয়া তৈরি করার ওপর জোর দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (ডব্লিউইএফ) প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ অভিমত দেন।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ডব্লিউইএফের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে ক্লাউস শোয়াব ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পটভূমি তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে বৈষম্য নিরসনের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছিল।’
তিনি উল্লেখ করেন, আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা ঢাকার দেয়ালগুলোতে গ্রাফিতি এঁকে তাদের আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন প্রকাশ করেছে।
ড. ইউনূস বলেন, গত ১৬ বছরে বাংলাদেশে যারা নতুন ভোটার হয়েছেন, তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগই হয়নি, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার এজেন্ডা তুলে ধরে ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ৮৪ বছর বয়সী এ অর্থনীতিবিদ বলেন, দেশের মানুষ কোন ধরনের নির্বাচন চায়, সেটি না জেনে সরকার নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, সরকার নির্বাচন আয়োজনের অপেক্ষায় রয়েছে, তবে এখন দেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে প্রক্রিয়াটি কেমন হবে। তারা কী ছোট পরিসরের সংস্কার কর্মসূচিতে যাবে, নাকি দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার চাইবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যদি মানুষ দ্রুত সংস্কার চায়, তাহলে আমরা এ বছরের শেষ নাগাদ নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েছি। আর যদি বলে, না আমাদের দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার দরকার, তাহলে আমাদের আরও ছয় মাস সময় লাগবে।’
বর্তমান প্রজন্মকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী প্রজন্ম আখ্যায়িত করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এ প্রজন্মের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তি বর্তমান প্রজন্মকে বদলে দেওয়ার কারণে তারা এখন শুধু বাংলাদেশি আর তরুণ নয়, বরং সারা বিশ্বের তরুণ প্রজন্মের অংশ হয়ে গেছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, এ প্রজন্ম পুরোনো বাংলাদেশে ফিরে যেতে চায় না। তাই একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তরুণদের কাজের প্রতিটি অংশে ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য একটি ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হচ্ছে। সব রাজনৈতিক দল এবং সুশীল সমাজের সংগঠনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ প্রস্তুত করা হবে।
আরও পড়ুন:নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, কাউকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নয়, নির্বাচন ব্যবস্থাকে দুর্নীতিমুক্ত করতেই সংস্কার কমিশন সুপারিশ করেছে।
কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন হলে দুর্নীতি অনেকাংশে কমে যাবে বলে প্রকাশ করেন তিনি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে মঙ্গলবার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারে দেওয়া প্রস্তাব ও তা বাস্তবায়নে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের করণীয় নিয়ে এ বিটের সাংবাদিকদের সংগঠনের (আরএফইডি) সদস্যদের সঙ্গে আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা ক্ষুণ্ন করা হয়নি; বরং এ সংস্থার ক্ষমতায়নে বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।’
ফেরারি আসামি, বিচারিক আদালতে দোষী হলেই অযোগ্য, গুম-খুনের সঙ্গে জড়িত বা অর্থ পাচারকারীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
বিষয়টি বিতর্কিত কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে বদিউল আলম বলেন, ‘হত্যাকারীরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না। এটা জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।’
নির্বাচন কমিশনকে জবাবদিহিতায় আনতে গিয়ে তাদের ক্ষমতা খর্ব হবে না বলেও মত দেন তিনি।
এদিকে আরেক অনুষ্ঠানে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এএসএম হুমায়ুন কবির বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের বায়োমেট্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেড় সপ্তাহের মধ্যে তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র। চোখ এবং আঙুলে ক্ষতিগ্রস্তদের ইসির নির্দেশনায় দেওয়া হবে এনআইডি। নতুন ভোটার ছাড়াও স্মার্ট কার্ড এবং ভুল সংশোধনের সুযোগও পাবেন আহতরা।
‘এ ছাড়াও সারা দেশের সব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আন্দোলনে আহত এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা পাবেন এ সেবা।’
আরও পড়ুন:অন্তর্বর্তীকালীন সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাছির উদ্দিন।
রাজধানীর আগারগাঁয়ের নির্বাচন ভবনে রবিবার এক অনুষ্ঠানে সিইসি এ কথা জানান।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। তবে কম সংস্কার হলে নির্বাচন ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে হতে পারে।
নির্বাচন ভবনের অনুষ্ঠানে সরকারঘোষিত সময়সীমার মধ্যে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি মাথায় রেখেই কাজ করছি।’
ওই সময় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির প্রধান বলেন, ভোটার তালিকা নিয়ে সব সন্দেহ দূর করতে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘সংশয় দূর করার জন্য আমরা এটা (ভোটার তালিকা হালনাগাদ) করছি। আমরা মাঠে অনেক মানুষকে সম্পৃক্ত করছি।’
সারা দেশে সোমবার থেকে শুরু হতে যাওয়া ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য কিছু উপকরণ সহায়তা দেয় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টিফেন লিলার ১৭৫টি ল্যাপটপ, ২০০টি স্ক্যানার ও ৪ হাজার ৩০০ ব্যাগ সিইসির কাছে হস্তান্তর করেন।
নাছির উদ্দিন জানান, তারা ছয় মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শেষ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ বিশাল এ কর্মসূচিতে কাজ করবেন।
তিনি বলেন, ‘এই ছয় মাসের মধ্যে কাজটি শেষ করার জন্য আমাদের প্রাণান্তকর চেষ্টা করতে হবে।’
চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে বিএনপির জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি জানান, তারা রাজনৈতিক বক্তব্য (বিতর্ক) করেন না এবং আইন ও বিধিবিধানের মধ্যে থাকবেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে চাই।’
ইউএনডিপির সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, তারা আমাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য