কিশোরগঞ্জ পৌরসভায় প্রচারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পিছিয়ে নেই কেউ। দিনভর নির্বাচনি এলাকায় গণসংযোগ, উঠান বৈঠক, বাড়ি বাড়ি বা লোকালয়ে লিফলেট বিতরণ শেষ হয়েছে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে। অপেক্ষা এখন ভোট দেয়ার।
সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন নির্বাচনে এই এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের এতটা উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়নি, যা দেখা যাচ্ছে পৌরসভার নির্বাচন ঘিরে।
এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী গতবারের নির্বাচনে বিজয়ী পারভেজ মিয়া, বিএনপির ইসরাইল মিয়া।
ইসলামী আন্দোলন এখানে হাতপাখা প্রতীক দিয়েছে দলের নেতা নজরুল ইসলামকে। আর ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি প্রার্থী করেছে স্বপন মিয়াকে। তবে এই দুই জনের সেভাবে জনসংযোগ চোখে পড়েনি।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল গণি ঢালী নৌকা প্রতীক না পেয়ে এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন। তবে তিনি নৌকায় সমর্থন জানিয়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তবে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় ব্যালটে তার নাম রয়ে যাবে।
ভোটকে ঘিরে কিশোরগঞ্জে সহিংসতা এর আগেও সেভাবে হয়নি। এবারও পরিবেশ নিয়েও কোনো পক্ষের কোনো অভিযোগ নেই।
জেলায় নিউজবাংলার প্রতিনিধি রাকিবুল হাসান রোকেল বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। প্রচারে কোনো দিক থেকেই পিছিয়ে নেই তারা। গত পৌর নির্বাচনে বিএনপি এভাবে মাঠে ছিল না।’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিভিন্ন আসনে উপনির্বাচন বা স্থানীয় নির্বাচনে ভোটারের খরা থাকলেও পৌর নির্বাচনে পাল্টে গেছে পরিস্থিতি।
গত ২৮ ডিসেম্বর প্রথম ধাপের নির্বাচনে কেন্দ্রগুলোতে ভোটারের দীর্ঘ লাইন দীর্ঘদিন পর উৎসবের আমেজ নিয়ে আসে। হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ আর দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে নির্ধারিত সময় বিকাল চারটার পরেও ভোট নিতে হয়।
২৩টি এলাকায় ওই দিন ভোট পড়ে ৬৫ শতাংশের কিছু বেশি এর মধ্যে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পড়ে ৮৫ শতাংশ।
এই নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে বিএনপি তিনটি পৌরসভা নির্বাচন বর্জন করে, একটির ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে, আরও একটি নিয়ে করে বিস্তর অভিযোগ।
বাকিগুলো নিয়ে নির্বাচনী এলাকা থেকে তেমন কোনো অভিযোগ আসেনি, যদিও বিএনপির কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, ভোট কারচুপি হয়েছে।
রংপুরের বদরগঞ্জে ভোটের পর বিএনপির এক নেতা বলেন, ভোট যে এমন হবে, সেটা তাদের ধারণা ছিল না। আজে বুঝলে তারা প্রচারে আরও বেশি সচেষ্ট হতেন।
ওই অভিজ্ঞতা পর ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ভোটকে কেন্দ্র করে ৬০টি পৌরসভায় ভোটের প্রচার আরও জমজমাট। অল্প কিছু ছাড়া বেশির ভাগ পৌরসভাতেই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকরা দিন রাত প্রচার চালিয়ে এখন ভোটের অপেক্ষায়।
শনিবার ভোটাররা রায় দেবেন। ভোট হওয়ার কথা ছিল ৬১টি এলাকায়। তবে নীলফামারীর সৈয়দপুরে এক মেয়র প্রার্থীর মৃত্যুতে সেখানে স্থগিত হয়েছে নির্বাচন।
জনসংযোগে নেতা-কর্মীদের বিপুল অংশগ্রহণের পর কিছু এলাকায় সংঘাত সহিংসতাও হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত সব সহিংসতাই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে।
নারায়ণগঞ্জের তাবারোতে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে মঙ্গলবার। বুধবার ঝিনাইদহের শৈলকূপায় সহিংসতায় এক কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাই নিহত হওয়ার পর নদী থেকে এক প্রার্থীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, সেটা এখনও নিশ্চিত নয়।
শীতল কুষ্টিয়ায় ভোটের উত্তাপ
দ্বিতীয় ধাপে কুষ্টিয়া জেলার চারটি পৌরসভায় ভোট হতে যাচ্ছে। এগুলো হলো- সদর, ভেড়ামারা, মিরপুর ও কুমারখালী।
সদরে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের আনোয়ার আলী, বিএনপির বশিরুল আলম চাঁদ; ভেড়ামারায় আওয়ামী লীগের সানাউল ইসলাম সানা, জাসদের আনোয়ারুল কবীর টুটুল, বিএনপির শামীম রেজা; মিরপুরে আওয়ামী লীগের এনামুল হক, বিএনপির রহমত আলী জব্বার ও স্বতন্ত্র আরিফুল ইসলাম এবং কুমারখালীতে আওয়ামী লীগের শামসুজ্জামান অরুণ ও বিএনপির আনিছুর রহমান লালু।
নিউজবাংলার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জাহিদুজ্জামান জানান, সবচেয়ে বেশি প্রচার আর প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস ভেড়ামারায়। এখানে হাসানুল হক ইনুর জাদসের বেশ শক্তিশালী অবস্থান আছে। আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুবউল আলম হানিফের বাড়িও এই এলাকায়। বিএনপির শক্তিতে পিছিয়ে নেই। তিন পক্ষই এখানে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে।
এখানে ভোটের প্রচারে উত্তেজনা, আওয়ামী লীগ ও জাসদ প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে। তাদের অভিযোগ পরস্পরের বিরুদ্ধে।
এই নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির প্রার্থী বা দলের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত কেউ করেনি।
কুষ্টিয়া সদর পৌরসভাতে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। তাদের কর্মী সমর্থকরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ক্যাম্প করে বাড়ি বাড়ি ভোট চেয়েছেন। বিএনপি প্রচারে সেই তুলনায় কিছুটা পিছিয়ে। তবে বিএনপির প্রার্থী বলেছেন এটা তাদের নির্বাচনী কৌশল।
তিনি বলেছেন, ‘পরিবেশ সুষ্ঠু আছে এখন পর্যন্ত। ভোটের দিন পরিবেশ ভালো হলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।’
মিরপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস ত্রিপক্ষীয়। জমজমাট নির্বাচনে তিন পক্ষই ব্যাপক গণসংযোগ করছে। তবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর এক বক্তব্য নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। তিনি জনসংযোগে তার সমর্থকদের তাকে প্রকাশ্যে এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদেরকে গোপন কক্ষে গিয়ে ভোট দিতে বলেছেন।
এই বিষয়টি ছাড়া ভোট নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীদের আর কোনো অভিযোগ নেই।
তবে কুমারখালীতে প্রচার চলছে একতরফা। আওয়ামী লীগ মাঠে থাকলেও বিএনপির প্রার্থী সেভাবে মাঠে নেই। কেবল জেলা বিএনপির নেতারা গত ১১ জানুয়ারি এলাকায় প্রচারে গিয়েছিলেন। সেদিনই বিএনপির প্রার্থীকে প্রথমবারের মতো গণসংযোগে দেখা যায়।
জাহিদুজ্জামান জানান, মেয়র প্রার্থীদের চেয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী ও তার সমর্থকরা আরও বেশি প্রচার চালাচ্ছেন। এ কারণে দীর্ঘদিন পর ভোট নিয়ে উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে তার জেলায়।
হবিগঞ্জে উৎসাহে জল ঢালল পেট্রল বোমা
প্রথম ধাপে সবচেয়ে বেশি ভোটার উপস্থিতি ছিল যেসব পৌরসভায় তার একটি হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে। এবার জেলায় ভোট হচ্ছে দুটি পৌরসভায়। একটি মাধবপুর, একটি নবীগঞ্জ।
মাধবপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শ্রীধাম দাস গুপ্ত, বিএনপির হাবিবুর রহমান মানিক। নবীগঞ্জে আওয়ামী লীগের গোলাম নেসুল রাহেল চৌধুরী ও বিএনটির ছাবির আহমেদ চৌধুরী।
কাজল সরকার বলেন, মাধবপুরে বিএনপির কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত নেই। তবে নবীগঞ্জে প্রচারে বাধার অভিযোগ করেছেন দলের প্রার্থী।
তবে নবীগঞ্জে অভিযোগ অন্য একটি ঘটনাকে ঘিরে। গত ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তন দিবসে সেখানে আওয়ামী লীগের একটি পথসভায় পেট্রল বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এর পরেই মূলত উত্তেজনার শুরু।
এই ঘটনায় নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মামলা করেন বিএনপির ১৭ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার হয়েছেন দুই হন।
তবে এই এলাকায় ভোটের প্রচারে কোনো সংঘাত সহিংসতা ঘটেনি, হামলা বা বাধা দেয়ার ঘটনা ঘটেনি।
কাজল সরকার বলেন, ‘দুই পক্ষই পথসভার পাশাপাশি উঠান বৈঠক, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চেয়েছে। গত কয়েক বছরের মধ্যে বিএনপির এত সক্রিয়তা দেখা যায়নি।’
দিনাজপুরের চিত্র যেমন
দিনাজপুর পৌরসভায় আওয়ামী লীগের রাশেদ পারভেজ, বিএনপির সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলমের পাশাপাশি ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন জাতীয় পার্টির আহমেদ শফি রুবেল।
বীরগঞ্জে আওয়ামী লীগের নূর ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী জামায়াত নেতা মো. হানিফের মধ্যেই প্রধান লড়াই হবে। এখানে বিএনপির শক্তি দুর্বল। ভোটের প্রচারে দলের প্রার্থীকে সেভাবে দেখা যায়নি।
বিরামপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী করেছে আক্কাস আলীকে, বিএনপি প্রতীক দিয়েছে হুমায়ুন কবিরকে।
নিউজবাংলা প্রতিনিধি কুরবান আলী জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত দুটি পৌরসভায় মেয়র প্রার্থীরা ভোটের পরিবেশ নিয়ে কোনো অভিযোগ করছেন না। তবে দিনাজপুর পৌরসভায় বিএনপির প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করছেন, সেখানে বহিরাহত দিয়ে ভর্তি হয়ে আছে।
ভোটের প্রচার শেষ হয়েছে। দিনাজপুর সদরে ভোটার এক লাখ ৩০ হাজারের ৮০৩ জন।
তিন পক্ষই গত তিন সপ্তাহে অসংখ্য মিছিল, পথসভা, মোটর সাইকেল শোডাউন, উঠান বৈঠক, বাড়ি বাড়ি বা বাজার, মহল্লা বা অন্য জমায়েতে লিফলেট বিতরণ করেছে।
কোরবান বলেন, ‘সাম্প্রতিককালে এই ধরনের কোনো নির্বাচন দেখা যায়নি এলাকায়। এমনকি জাতীয় নির্বাচনে এত উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা যায়নি। বিএনপি-জাতীয় পার্টিকে এত সক্রিয় দেখিনি আমরা।’
উল্টোচিত্র সিরাজগঞ্জে
সবচেয়ে বেশি পৌরসভায় ভোট হচ্ছে সিরাজগঞ্জে। সেখানকার পাঁচটি পৌরসভার মধ্যে কাজীপুরে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে গেছেন।
বাকি চার পৌরসভার মধ্যে সিরাজগঞ্জ সদরে আওয়ামী লীগের মুক্তা সিরাজী, বিএনপির সাইদুর রহমান বাচ্চু, বেলকুচিতে আওয়ামী লীগের বেগম আশানুর বিশ্বাস, বিএনপির আলতাফ হোসেন প্রামাণিক, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী সাজ্জাদুল হক রেজা।
উল্লাপাড়ায় আওয়ামী লীগের নজরুল ইসলাম, বিএনপির আবুল কালাম আজাদ, দলের বিদ্রোহী বেলাল হোসেন এবং রায়গঞ্জে আওয়ামী লীগের আবদুল্লাহ আল পাঠান, বিএনপির জাহিদুল ইসলাম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
সিরাজগঞ্জে নিউজবাংলার প্রতিনিধি গোলাম মোস্তফা রুবেল জানান, বেলকুচি ছাড়া বাকি তিন পৌরসভায় আওয়ামী লীগ ব্যাপক প্রচার চালিয়েছে। সমাবেশ, পথসভা, মিছিল, উঠান বৈঠক, লিফলেট বিতরণ করেছে তারা।
তবে বিএনপিকে সেভাবে সক্রিয় দেখা যায়নি। কারণ হিসেবে বিএনপির কর্মীরা ভোটের প্রচারে ব্যাপক বাধা পাওয়ার অভিযোগ এনেছেন।
বেলকুচিতে বেশ হাঙ্গামা হয়েছে। তবে ঝামেলা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যে। এখানে বিএনপির সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই।
গত ২৮ ডিসেম্বর শাহজাদপুরেও বিএনপির সমর্থকরা বাধা পাওয়ার অভিযোগ করেন। সেদিন ইভিএমেও মেয়র পদে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে বাধ্য করার অভিযোগ করেন বিএনপির প্রার্থী।
ভোটের ফলও ছিল একতরফা। ২৫টি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের মনির আক্তার খান তরু লোদীর নৌকায় পড়ে ২৯ হাজার ৮৭ ভোট। বিএনপির মাহমুদুল হাসান সজল ধানের শীষে পড়ে এক হাজার ৮৬৭ ভোট। এত ব্যবধান স্বাভাবিক নয় ওই এলাকার অতীতের ভোটের হিসাব ধরলে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অর্জনে অবদান রাখতে এবং দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু করছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি: স্ট্র্যাটেজি ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
সেনাপ্রধান বলেন, ‘মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা সবকিছুই করছি।’
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতির বাণী ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে আমরা সবকিছু করছি।’
জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘কূটনীতি যেকোনো ধরনের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বেসামরিক শক্তির সহায়তায় সেনাবাহিনী কীভাবে দেশে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড, দেশ-বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘যেখানেই সুযোগ আছে, তা প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, আমরা সুযোগ গ্রহণ করি এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সবকিছু করি।’
সামরিক কূটনীতির কথা বলতে গিয়ে জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরও সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ করে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা জানি কীভাবে এটা করতে হয়। কিন্তু আমাদের এটা করার সামর্থ্য থাকা উচিত।’
মিয়ানমার ইস্যু প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের কেউ কেউ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং এখানে নিজেদের সমস্যায় ফেলার ঝুঁকি রয়েছে।
‘এক বন্ধুকে খুশি করার জন্য আমরা আরেক বন্ধুর বিরোধিতা করতে পারি না। বেশকিছু বিষয় রয়েছে যা আমাদের খেয়াল করতে হবে। এসব ঘটনার প্রভাবও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং আমরা সঠিক পথেই রয়েছি।’
জেনারেল শফিউদ্দিন বলেন, দূর থেকে চালানো যায় এমন কিছু যানবাহন দেশেই তৈরি হচ্ছে যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বেশ উপকারে আসবে। আগে এসব যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হতো। তাই এখন আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কেবল যুদ্ধে লড়াই করাই শেখে না, বরং জাতীয় স্বার্থে কীভাবে যুদ্ধ প্রতিরোধ বা এড়াতে হয় তা-ও জানে। আমরা সঠিক পথেই আছি এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবো না।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। এটি তারা কখনও ভুলে যায় না এবং এ কাজে সবসময় তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
‘উদ্দেশ্য রাতারাতি পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু সক্ষমতা রাতারাতি পরিবর্তন হয় না। আজ আপনি আমার বন্ধু, আগামীকাল বন্ধু না-ও হতে পারেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ, মাতৃভূমি রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা থাকতে হবে- পররাষ্ট্রনীতির এই আদেশ আমাদের সবার জন্য সমান।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের অধীনে অন্যান্য সেক্টর কমান্ডারদের মতোই ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারী ছিলেন জিয়াউর রহমান। অথচ পরিতাপের বিষয়, সেই বিএনপি মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ দিবস ১৭ এপ্রিল পালন করে না।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে ‘নবম আওয়ার ওশান কনফারেন্সে’ যোগ দেয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১০টার দিকে নভোটেল এথেন্স হোটেল বলরুমে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানের।
মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের যে ভাষণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেই ৭ মার্চও বিএনপি পালন করে না। এ থেকেই স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধে বিএনপি কতটুকু বিশ্বাস করে তা প্রমাণ হয়।
মুজিবনগর দিবস স্মরণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার বৈদ্যনাথতলা অর্থাৎ বর্তমান মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের আগের মধ্যরাতে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের কলকাতা প্রেসক্লাবে সমবেত হতে বলা হয়। গোপনীয়তার মধ্যে তাদেরকে পরদিন সকালে মুজিবনগরে পৌঁছানো হয় যেখান থেকে তারা সংবাদ পরিবেশন করেন।
এ সময় গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশিদের আইনানুগ ও পরিশ্রমী জীবনের জন্য নিজের ও গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশংসার কথা জানিয়ে এই সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখতে ও সবাইকে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে আহ্বান জানান মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
সমবেতদের হর্ষধ্বনির মধ্যে তিনি জানান, গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার সাথে বৈঠকে জানিয়েছেন যে, গ্রিস আরও ৬টি দেশে দূতাবাস খোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
গ্রিস আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ ত্রিশটিরও বেশি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
গ্রিস আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান মাতুব্বরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল হাওলাদারের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ার্স মোহাম্মদ খালেদ, বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস নেতাদের মধ্যে গোলাম মওলা, হাজী আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল খালেক মাতুব্বর, আহসান উল্লাহ হাসান, শেখ আল আমিন, আব্দুল কুদ্দুস মাতুব্বর, রায়হান খান, মিজানুর রহমান আলফা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন।
দেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল। এ মাসে সাধারণত অন্য সময়ের চেয়ে বেশি থাকে গরম। চলতি বছরের এপ্রিলে তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে বিভিন্ন জেলায়, যার ফলে প্রচণ্ড অস্বস্তিতে ভুগছেন বিভিন্ন বয়সীরা।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানায়, দেশের ছয়টি জেলার ওপর দিয়ে বইছে তীব্র দাবদাহ।
এমন বাস্তবতায় অধিদপ্তরের এক আবহাওয়াবিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, এ সময়ে এমন গরম অস্বাভাবিক কি না। জবাবে খন্দকার হাফিজুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অ্যাবনরমাল (অস্বাভাবিক) কোন সেন্সে বলবেন? আমাদের দেশে ৪৫ ডিগ্রি তাপমাত্রারও রেকর্ড আছে কিন্তু। এখন তো গ্রীষ্মকাল। মার্চ, এপ্রিল, মে এই তিন মাস গ্রীষ্মকাল। এ সময়ে বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রাটা কম হবে।
‘বৃষ্টিপাত যখনই বন্ধ হবে, তাপমাত্রাটা বাড়বে, তবে এখন তাপমাত্রা যেটা স্বাভাবিক কথার কথা, তার চাইতে বেশি আছে। দিন এবং রাতের তাপমাত্রা দুইটাই বেশি আছে স্বাভাবিকের চাইতে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় তিন থেকে চার ডিগ্রি বেশি আছে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় এক থেকে দুই ডিগ্রি বেশি আছে।’
দুপুর দুইটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় অ্যাকুওয়েদার ডটকম নামের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৫১ শতাংশ।
একই সময়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাওয়া অঞ্চল চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ছিল ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যেখানে বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।
তাপমাত্রা অপেক্ষাকৃত বেশি হওয়ার বিষয়ে আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘জলবায়ুগতভাবে কিন্তু এপ্রিল মাসটা আমাদের উষ্ণতম মাস। এ সময়ে দিনের স্থায়িত্বটা বড় (বেশি)। সূর্য মাথার ওপর। তা ছাড়া বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। বৃষ্টিপাত যে এলাকাগুলোতে, সেখানে তাপমাত্রা কিছুটা কমছে।
‘আর যে জায়গাগুলোতে বৃষ্টিপাত নাই, সেই জায়গাগুলোতে কিন্তু আপনার তাপমাত্রার ইয়েটা বেশি হচ্ছে। গরমটা বেশি হচ্ছে।’
গরম বাড়ার পেছনে মনুষ্যসৃষ্ট কিছু কারণ তুলে ধরে এ আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আমাদের জলাশয়গুলো ভরাট হচ্ছে; গাছগাছড়া কমে যাচ্ছে। মানুষের এসি (এয়ার কন্ডিশনার), ফ্রিজ ব্যবহার বেশি হয়ে যাচ্ছে।’
তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের কোনো সম্পর্ক আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মানুষ ক্লাইমেট চেঞ্জে (জলবায়ু পরিবর্তন) অবদান রাখছে। ক্লাইমেট চেঞ্জ তো আছেই।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য