খাগড়াছড়ি পৌরসভায় ভোট গ্রহণের আগে চলছে মক ভোটিং। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে এই পৌরসভার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ করা হবে। ইভিএমে ভোট দেয়া ভোটারদের কাছে নতুন হওয়ায় মক ভোটিংয়ের ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত চলেছে এ ভোট গ্রহণ। এ ভোটে ইভিএম পদ্ধতি নিয়ে ভোটারদের প্রশ্ন, সংশয় দূর হবে বলে আশা করছেন নির্বাচনি কর্মকর্তারা। পাশাপাশি ভোটাররা ইভিএমে ভোট দিতে উৎসাহী হবে বলেও ধারণা তাদের।
দেশে দ্বিতীয় দফা পৌরসভার নির্বাচনে ১৬ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সকালে পৌরসভার তিনটি কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নির্বাচনি কর্মকর্তারা কেন্দ্রে ইভিএমের সরঞ্জাম স্থাপন করছেন। আর মক ভোট দিতে যারা আসছেন তাদের ইভিএমে ভোট দেয়ার পদ্ধতি শিখিয়ে দিচ্ছেন কর্মকর্তারা।
মক ভোট দেয়ার পর ভোটাররা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, এই পদ্ধতিতে ভোট প্রদান সহজ ও এতে জাল ভোট দেয়ার সম্ভাবনা নেই।
খাগড়াছড়ির মুসলিম পাড়া কেন্দ্রে মক ভোট দিতে আসেন মো. নুর নবী। তিনি জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর বা ভোটার নম্বর দিলেই নিজের ছবি সহ জাতীয় পরিচয়পত্রের চিত্র কর্মকর্তাদের মনিটরে ভেসে ওঠে। আঙুলের ছাপ দেয়ার পর, গোপন কক্ষে ভোট দিতে হয়।
একই কেন্দ্রের ভোটার আবদুল মান্না জানান, একই ব্যক্তি একাধিকবার ভোট দিতে পারেন না ইভিএমে। দ্বিতীয়বার ভোট দিতে চাইলে মেশিনে দেখায় ভোটার ইতিমধ্যে ভোট দিয়েছেন।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার নির্বাচনের রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা নির্বাচনি কর্মকর্তা রাজু আহমেদ জানান, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট দিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে মক ভোটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে চার জন, সংরক্ষিত তিনটি নারী কাউন্সিলর পদে ১০ জন ও আটটি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৪০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একটি সাধারণ কাউন্সিলর পদে একজন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন:ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৩৩টি থানাসহ সারা দেশের ৩৩৮টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বদলি করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অনুমোদনে পর ওসিদের এ বদলি কার্যক্রম শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারা দেশের ৩৩৮ থানার ওসিকে বদলির অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
গত ৩০ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে যেসব থানার ওসিদের বর্তমান কর্মস্থলে ছয় মাসের বেশি চাকরির মেয়াদ হয়েছে, তাদের অন্যত্র বদলি করতে চিঠি দেয় ইসি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ৩৩৮ থানার ওসির বদলির প্রস্তাব পাঠায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপর ওসি বদলির অনুমোদন দেয় নির্বাচন কমিশন।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার বাতিল করা মনোনয়ন ফিরে পেতে তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার ইসিতে আপিল করেছেন ১৫৫ জন প্রার্থী। এ নিয়ে গত তিন দিনে মোট আপিলের সংখ্যা ৩৩৮ হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব ও মুখপাত্র মো. জাহাংগীর আলম।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে নিয়ে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাতিল হওয়া ৭৩১ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রথম দিন আপিল করেছিলেন ৪২ জন, দ্বিতীয় দিন করেন ১৪১ জন আর তৃতীয় দিনে করেছেন ১৫৫ জন। সব মিলিয়ে আজ পর্যন্ত আপিল করেছেন ৩৩৮ জন।’
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন ৩৩৮ জন থানার ওসি বদলিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। একইসঙ্গে ইউওনদের বদলির ক্ষেত্রে তিন ধাপে প্রস্তাব এসেছিল; প্রথম ধাপে ৪৭ জন, দ্বিতীয় ধাপে ১১০ জন এবং তৃতীয় ধাপে ৪৮ জন। মোট ২০৫ জনের বদলির প্রস্তাবে নির্বাচন কমিশন সম্মতি দিয়েছে।’
এছাড়া ৪০তম বিসিএস থেকে উপজেলা থানা নির্বাচন অফিসার হিসেবে নন ক্যাডার ৮৩ জনকে নির্বাচন কমিশন নিয়োগ প্রদান করেছে। তারা ১২ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনে যোগদান করবেন বলে জানান তিনি।
দেশের সুবিধাবাদী বুদ্ধিজীবীদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘বিএনপিই দেশের প্রথম কিংস পার্টি। কারণ জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে সরকার গঠন করেছিলেন। তারপর তিনি সরকারের ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দল গঠন করেছিলেন।’
হাছান মাহমুদ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
রাজনীতিতে নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নাগরিক সমাজ সময়ে সময়ে যেসব কথাবার্তা বলে সেগুলো আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখি। কিন্তু দেশজুড়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে যে অগ্নিসন্ত্রাস পরিচালনা করা হচ্ছে, অনেক মানুষ এই অগ্নিসন্ত্রাসের বলি হয়েছে, সেই আওয়াজটা সচেতন নাগরিক, সাংবাদিক সমাজ এবং নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আসা প্রয়োজন। কিন্তু নাগরিক সমাজের কোনো বক্তব্য-বিবৃতি নেই। এটি খুবই দুঃখজনক।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি মনে করি, নাগরিক সমাজ বা বুদ্ধিজীবী বলে যারা পরিচিত তারা সময়ে সময়ে বিবৃতি দেন আর এখন নিশ্চুপ, তাদেরকে চিহ্নিত করা প্রয়োজন। এরা সুবিধাবাদী এবং এদের মুখোশ উন্মোচন হয়েছে।’
‘আওয়ামী লীগ দল ভাগানোর রাজনীতি করছে’- বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে মন্ত্রী হাছান বলেন, ‘আসলে বিএনপি থেকে সবাই পালিয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্র থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত নেতারা বিএনপি থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। বিএনপি নেতাদের কাছে আমার প্রশ্ন- এই দলটা কেন করেন, যে দল আপনাদেরকে সংসদ নির্বাচন, উপজেলা বা জেলা পরিষদ নির্বাচন তো দূরের কথা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনও করতে দেয় না?’
তিনি বলেন, ‘এক সময় রিজভী সাহেবরা দেখবেন যে ওনারা কয়েকজন ছাড়া আর কেউ নেই, ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। কারণ বিএনপির এই অপরাজনীতির সঙ্গে দলটির নেতারাই একমত নন। রিজভী সাহেবের মতো কিছু মানুষ আছেন- ইয়েস স্যার, হ্যাঁ স্যার, জি স্যার। তারাই তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে এই অগ্নিসন্ত্রাসের আহ্বান জানাচ্ছেন। এই অপরাজনীতি থেকে তাদের বের হয়ে আসা প্রয়োজন।’
বিএনপি অংশ না নিলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কি না- এ প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘একটি দল নির্বাচনে না এলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না এমন তো সংবিধানে লেখা নেই। পৃথিবীর কোনো আইনেও লেখা নেই। বাংলাদেশে বহু নির্বাচন হয়েছে যেখানে বহু দল অংশ নেয়নি। যেমন ১৯৭০ এর নির্বাচনেও অনেক বড় নেতার নেতৃত্বাধীন দল অংশগ্রহণ করেনি। কিন্তু মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিলো এবং সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’
‘এবার অনেকের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার পরও প্রতি আসনে প্রায় ৭ জন করে প্রার্থী আছেন। গ্রামে-গঞ্জে নির্বাচনের উৎসব শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং দেখতে পাবেন ৭ জানুয়ারির নির্বাচনেও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকবে।’
আরও পড়ুন:নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে অনুসন্ধান কমিটির শোকজের জবাব দিয়েছেন আলোচিত আইনজীবী স্বতন্ত্রপ্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে তিনি লিখিত ব্যাখ্যা দেন।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘রাজনীতিবিদ হিসেবে বা একজন প্রার্থী হিসেবে আমার আত্মপ্রকাশ মাত্র দু’সপ্তাহের, কিন্তু এর আগেই একজন ফুটবলার হিসেবে বা ফেসবুকের একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি হিসেবে আমি যেখানেই দাঁড়াই, সেখানেই কিছু মানুষ এসে যায়। পথসভার মাধ্যমে জনগণের চলাচলে বাধা সৃষ্টির অভিযোগের সঙ্গে আমি কোনোভাবেই জড়িত নই। আর যেহেতু ওখানে কোনো কর্মসূচি ছিল না, তাই পুলিশকে জানানো হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘আইনের মানুষ হিসেবে আমার সবসময়ই লক্ষ্য থাকে, যেন কোনো বিধি লঙ্ঘিত না হয়। আমি আমার ব্যাখ্যা দিয়েছি, এখন বাকিটা আদালতের বিষয়।’
গত ৪ ডিসেম্বর নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে হবিগঞ্জ-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমনকে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিলের নির্দেশ দেন ওই আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির প্রধান হবিগঞ্জ আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ সবুজ পাল।
নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির পত্রে বলা হয়, গত ২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় চুনারুঘাট উপজেলার আসামপাড়া বাজারে এক নির্বাচনি জনসভা করেন ব্যারিস্টার সুমন। প্রথমত, এটি একটি জনাকীর্ণ বাজার। দ্বিতীয়ত, উক্ত নির্বাচনি সমাবেশের জন্য বাজারের তিন রাস্তার মোড়সহ বাজারের ওপর দিয়ে চলাচলকারী প্রধান তিনটি সড়ক বন্ধ করে জনগণের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করা হয়। তৃতীয়ত, উক্ত নির্বাচনি সমাবেশের বিষয়ে স্থানীয় পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়নি। ফলে, সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮-এর বিধি ৬ (খ, গ, ঘ) ভঙ্গ করা হয়েছে বলে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে প্রতীয়মান হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর তারিখের মধ্যে ব্যারিস্টার সুমনকে এই কমিটির কাছে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়।
আরও পড়ুন:যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামনের বছর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দেড় কোটি ভোট পাওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
রিপাবলিকান দল থেকে প্রেসিডেন্ট পদে আবারও মনোনয়নপ্রত্যাশী ট্রাম্প স্থানীয় সময় বুধবার ফক্স চ্যানেল আয়োজিত এক ইভেন্টে দর্শক-সমর্থকদের সামনে এ কথা বলেন। খবর এনডিটিবির।
তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট থাকতে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে যা করেছি তা আর কাউকে করতে দেখিনি। আমি মনে করি ৭৫ লাখ নয়, দেড় কোটি ভোটার আমার সঙ্গে আছে।’
ট্রাম্প দর্শকদের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘নিরাপদ সীমান্ত, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী, কম ট্যাক্স ও কম খরচ সবারই চাওয়া, যা আমি করেছি এবং করব। আপনি নিশ্চয়ই খুব সহজে কম মূল্যে নিজের বাড়িটি কিনতে চাইবেন।’
২০২৪ এর নির্বাচনে ট্রাম জিতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র একজন স্বৈরাচারি শাসক পাবে বলে বেশ কয়েকদিন যাবত ভোটারদের সর্তক করে আসছেন বিরোধী ডেমোক্র্যাট ও তার দলের কিছু রিপাবলিকান রাজনৈতিক কর্মী ও বিশ্লেষকরা।
এ বিষয় তিনি ভোটারদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘আমি কখনোই স্বৈরশাসক হব না।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প রিপাবলিকান দলের প্রার্থী হিসেবে ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন কিন্তু পরবর্তী নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে হেরে যান।
দেশটির আইন অনুযায়ী একজন ব্যক্তি দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে থাকতে পারেন। তাই ট্রাম্পের আরও একবার এ পদে দায়িত্ব পালনের সুযোগ আছে।
আরও পড়ুন:মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ইউএনও পরিচয় দিয়ে মোবাইল ফোনে আসন্ন সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রে দায়িত্ব পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিকাশে টাকা দাবি করছে একটি প্রতারক চক্র।
উপজেলার ইউএনও উত্তম কুমার দাশ বুধবার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সরাসরি আমার নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে ০১৮৩৬৮৮১০৯০ নম্বার দিয়ে চক্রটি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ব্যাংকার ও সরকারি কর্মচারীদের আসন্ন নির্বাচনে নিকটবর্তী কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসারসহ নানা দায়িত্ব দেয়া ও সরকারি ল্যাপটপ উপহারের প্রলোভন দেখায়। এজন্য তারা বিকাশের মাধ্যমে ঘুষ হিসেবে টাকা দাবি করে।’
ইউএনও আরও বলেন, ‘নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজে নিয়োজিত এমন সবাইকে টার্গেট করেছেন প্রতারক চক্রটি। মঙ্গলবার সকাল থেকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে ওই চক্রটি এ প্রতারণার চেষ্টা করেছে। এ পর্যন্ত ৮ জন শিক্ষক আমার কাছে ফোন করে বিষয়টি জানিয়েছে।
‘চক্রটির বিষয়ে কালকিনি থানা পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। থানায় সাধারণ ডায়েরি (ডিজি) করেছি। কোনো প্রকার টাকা-পয়সা লেনদেন না করাসহ শিক্ষক, ব্যাংকার ও সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।’
কালকিনি থানার ওসি মো. নাজমুল হাসান বলেন, ‘ইউএনও পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের কাছে টাকা দাবি করা প্রতারক চক্রটি ধরতে আমাদের তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে চক্রটিকে ধরতে আমাদের পুলিশের একটি টিম কাজ করছে। নম্বরটি যার নামে রেজিস্ট্রেশন করা তাকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই চক্রটিকে আইনের আওতায় আনা হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর গুলশানে গোপনে বৈঠক করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি। বুধবার রাতে এ বৈঠক হয় বলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন।
নাছিম বলেন, ‘অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে জাতীয় পার্টি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক হবে এবং এই নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি সর্বশক্তি দিয়ে অংশগ্রহণ করবে এবং জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে জাতীয় সংসদে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে।’
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম; জাতীয় পার্টির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু প্রমুখ।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘কীভাবে শান্তিপূর্ণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তারা তাদের প্রার্থী দিয়েছে; আমরা আমাদের প্রার্থী দিয়েছি। আমরা আমাদের নির্বাচন করব। সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমরা চাই।’
এর আগে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বুধবার সকালে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, সন্ধ্যায় বা রাতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাদের বৈঠক হবে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও নিউজবাংলাকে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছিলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল একটি সূত্র।
কোথায় বৈঠক হবে সে বিষয়ে কোনো পক্ষই নিশ্চিত করে না জানালেও বলা হয়েছিলো যে বিকেল নাগাদ তা জানা যাবে। কিন্তু বিকেল গড়িয়ে রাত হলেও এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে কোনো তরফ থেকেই কিছু জানানো হয়নি। বরং দিনভর এ নিয়ে চলেছে লুকোচুরি।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনায় বসবে- এ কথা প্রথম জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। আর বুধবার সকালে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু তা নিশ্চিত করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে এবং সে নির্বাচনে আসন ভাগাভাগি নিয়ে শরিকদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে বৈঠক হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় অতীতের মহাজোটের সঙ্গী জাতীয় পার্টির সঙ্গেও বৈঠক হওয়ার কথা।
দুই দলের বৈঠক হচ্ছে এমন খবর চাউর হওয়ার পর বুধবার দিনভর গণমাধ্যমকর্মীরা সময় ও স্থান জানার চেষ্টা করেন। এই প্রতিবেদক বিকেল ও সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এবং আমির হোসেন আমুর সিদ্ধেশ্বরীর বাসায় সরেজমিনে গিয়ে কোনো বৈঠকের খবর পাননি। এমনকি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের কাছে খবর নেয়া হলে তারাও এ বিষয়ে কিছু জানেন না জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
বুধবার দুপুরের প্রেস ব্রিফিংয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে কখন ও কোথায় বসবে আওয়ামী লীগ- এমন প্রশ্নের জবাবে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা তো আমি বলবো না। বসব, যেখানেই বসি বসব। বসলে আপনারা খবর পাবেন। এটা গোপন থাকবে না।’
এদিকে জাপা মহাসচিব চুন্নু সকালের ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চায়। দলটির পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা বলছেন- নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে আমাদের সঙ্গে কথা বলতে চান। তাদের আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে আমাদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তারা যেহেতু কথা বলতে চান, আমরা বসব।’
মন্তব্য