বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৭ সালের সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ বলছে, দেশে নারী-পুরুষ মিলিয়ে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৬ কোটি ৩৫ লাখ। এদের মধ্যে শ্রমবাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ৬ কোটি ৮ লাখ। আবার কর্মক্ষম কিন্তু কাজ নেই– এমন বেকারের সংখ্যা ২৭ লাখ। অর্থাৎ দেশে বেকারত্বের হার ৪ দশমিক ২ শতাংশ।
২০১৭ সালের পর বিবিএসের আর কোনো শ্রমশক্তি জরিপ হয়নি।
করোনা ও দফায় দফায় লকডাউনের দেশে একদিকে প্রায় দেড় বছর ধরে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় সব ধরনের নিয়োগপ্রক্রিয়া বন্ধ।
অন্যদিকে করোনা ও লকডাউনের বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ নেতিবাচক প্রভাবে দেশে শিল্প খাতে উৎপাদন ও সেবা সরবরাহ ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। বাধাগ্রস্ত হয়েছে আমদানি-রপ্তানি। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতার কারণে বেসরকারি খাতে নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও কমে গেছে।
পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নিয়োগ তো দূরের কথা, উলটো কর্মীদের ছাঁটাই করছে। এ ছাড়া চাকরির বাইরে যারা ব্যবসা-বাণিজ্য বা অন্য কোনো খাতে সম্পৃক্ত থেকে আত্ম-কর্মসংস্থানমূলক উদ্যোগে ছিল, তাদের অনেকেই সক্ষমতা হারিয়ে বেকারের খাতায় নাম লিখিয়েছে। নতুন শিক্ষার্থীরাও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বেকারের তালিকায়। শিক্ষাজীবন শেষ হয়েছে, কিন্তু চাকরির সুযোগ হয়নি। এতে শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিতের পাশাপাশি দক্ষ-অদক্ষ বেকারের হারও এই সময়ে ঊর্ধ্বমুখী।
সব মিলিয়ে দেশে বেকারের মিছিল দীর্ঘ হয়েছে সবাই এমনটা ধারণা করলেও আক্ষরিক অর্থে এখন বেকারের প্রকৃত সংখ্যা কত, তার সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই সরকারি-বেসরকারি কোনো সংস্থার হাতে।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা তথ্য বলছে, দেশে মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী তরুণের এক-তৃতীয়াংশ বা ৩৩ দশমিক ৩২ শতাংশ পুরোপুরি বেকার। আর ১৮ দশমিক ১ শতাংশ পার্টটাইম বা খণ্ডকালীন কাজে নিয়োজিত।
শ্রমবাজারসংক্রান্ত বিবিএসের সর্বশেষ জরিপ আরও বলছে, প্রতিবছর দেশে ১৮ লাখ লোক শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) দাবি করছে, এ সংখ্যা ২০ লাখের কম নয়।
এ দিকে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশন (বিইএফ) জানিয়েছে, প্রতিবছর শ্রমবাজারে যে সংখ্যক লোক প্রবেশ করছে, তাদের মধ্যে সরকারি খাত কর্মসংস্থানের জোগান দিচ্ছে মাত্র ৪ শতাংশ, বাকি ৯৬ শতাংশেরই কর্মসংস্থান ঘটছে বেসরকারি খাতে, যেখানে অভ্যন্তরীণ বেসরকারি খাতের অবদান ৮০ শতাংশের বেশি। বাকি অংশ কাজের খোঁজে যাচ্ছে বিদেশে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সাবেক সভাপতি কামরান টি রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, অভ্যন্তরীণ শ্রমবাজারে কাজের উৎস্য দুটি: প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক। প্রাতিষ্ঠানিক খাতে বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৮৫ লাখ লোক কাজ করছে। এর বিপরীতে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করছে এমন লোকের সংখ্যা ৫ কোটি ২৩ লাখেরও বেশি। তবে যারা অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করছে, তাদের বেশির ভাগেরই চাকরির অনিশ্চয়তা, অপেক্ষাকৃত কম বেতন-ভাতা এবং সেটিও নিয়মিত পাওয়ার অনিশ্চয়তা আছে। মূলত এসব কারণেই প্রাতিষ্ঠানিক খাতে চাকরিপ্রত্যাশীদের ঝোঁক বেশি। তাই কর্মপ্রত্যাশায় উদ্গ্রিব বেকাররা একটি চাকরির বিজ্ঞপ্তির আশায় চাতক পাখির মতো তাকিয়ে শ্রমবাজারের দিকে।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক ড. নাজনীন আহমেদ এ প্রসঙ্গে নিউজবাংলাকে জানান, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বই একটা ক্রাইসিসের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। এরই প্রভাব পড়েছে সরকারি কিংবা বেসরকারি অর্থাৎ দেশের পুরো শ্রমবাজারে। পরিস্থিতিটাই আসলে প্রতিকূল। প্রতিটি নিয়োগের একটি প্রক্রিয়া আছে। এই পরিবেশে চাইলেই তো কিছু জায়গায় এখন নিয়োগটা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে সরকারের রেগুলার নিয়োগে যেমন কিছুটা সমস্যা হয়েছে, একইভাবে বেসরকারি খাতেও সেই সমস্যা হয়েছে। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। একই সঙ্গে ভালো সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।’
সরকারি চাকরির যে অবস্থা
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের গত ১৫ জুন প্রকাশিত সরকারি চাকরিজীবীদের তথ্যসংক্রান্ত ‘স্ট্যাটিসটিকস অব সিভিল অফিসার্স অ্যান্ড স্টাফস, ২০২০’ এর তথ্য মতে, দেশে এখন পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে মোট অনুমোদিত পদ রয়েছে ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ৮৬৮টি। এর মধ্যে বর্তমানে ১৫ লাখ ৪ হাজার ৯১৩ জন কর্মরত অবস্থায় সরকারি বেতন-ভাতার সুবিধা ভোগ করছেন। যেখানে নারী রয়েছেন ৪ লাখ ১৪ হাজার ৪১২ জন।
অর্থাৎ অনুমোদিত পদের বিপরীতে দেশে সরকারি চাকরিতে শূন্য পদ ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫টি। প্রথম শ্রেণির ৪৬ হাজার ৬০৩টি ও দ্বিতীয় শ্রেণির ৩৯ হাজার ২৮টি পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া তৃতীয় শ্রেণির শূন্য পদ ১ লাখ ৯৫ হাজার ৯০২টি এবং চতুর্থ শ্রেণির ৯৯ হাজার ৪২২টি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকারি চাকরির লোভনীয় পদগুলোর (প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি) কর্মকর্তা পদে নিয়োগ দেয়া হয় সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে। এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন দপ্তর-অধিদপ্তর কিংবা বিভাগ নিজেদের মতো করে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদগুলোতে নিয়োগ দেয়। এর বাইরে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি (বিএসসি) নিয়োগ দিয়ে থাকে রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা পদে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত এক বছর চার মাসে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ এসব পদে ৯৯ শতাংশেরও বেশি নিয়োগ অসম্পন্ন থেকে গেছে। করোনার কারণে এসব নিয়োগ আটকে গেছে অথবা নিয়োগ বিধিমালা চূড়ান্ত না হওয়া কিংবা মামলা জটিলতাসহ নানা কারণে সম্পন্ন করা যায়নি।
এতে করে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। একটি চাকরির আশায় দিন পার করতে গিয়ে ইতিমধ্যে দেশের প্রায় দেড় লাখ চাকরিপ্রত্যাশীর আবেদনের বয়স শেষ হয়ে গেছে বা শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন তথ্য মতে, ৪১তম বিসিএসে আবেদন করে পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে পৌনে ৫ লাখ বেকার। এর বাইরে শুধু খাদ্য অধিদপ্তরের ১৬৬টি পদের বিপরীতে নিয়োগ আবেদন জমা পড়েছে প্রায় ১৪ লাখ। প্রায় পৌনে ৭ লাখ বেকারের আবেদন জমা পড়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তরের ইউনিয়ন সমাজকর্মী হওয়ার আশায়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ১৪১টি পদে নিয়োগ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন ২ লাখের বেশি প্রার্থী। এর বাইরে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ৪ হাজার ৭৫০টি পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করে পরীক্ষার অপেক্ষায় আছেন ৬ লাখের বেশি প্রার্থী।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সংগঠন ও ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ) মো. লাইসুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘একটি বিশেষ পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে দেশ। এ কারণে সরকারি নিয়োগের বেশ কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যায়নি। তবে থেমেও ছিল না। করোনার মধ্যেই স্বাস্থ্য খাতে ডাক্তার, নার্সসহ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের কার্যালয় এবং বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, জনতা ব্যাংকসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে দু-একটি পদের বিপরীতে কিছুসংখ্যক প্রার্থীর নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে, যেগুলো আটকে আছে, সেগুলোও নিয়োগের প্রক্রিয়ার মধ্যেই রয়েছে।’
সরকারি খাতে কর্মসংস্থানের হার কী পরিমাণ বেড়েছে, জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা জানান, গত ১০ বছরে প্রায় ১০ লাখ নতুন পদ সৃজন করা হয়েছে।
নতুন সৃষ্টি করা পদগুলোয় কী পরিমাণ নিয়োগ হয়েছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘জনপ্রশাসনের কাজ পদ সৃজন করা। আগে যে কোনও নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানানো হতো, সম্মতি নেয়া হতো। এখন সেটি হয় না। প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নিজেরাই নিজেদের মতো করে নিয়োগ দেয়। বিচ্ছিন্নভাবে নিয়োগ হয় বলে নতুন কত নিয়োগ হলো, সেটি মন্ত্রণালয়ের হাতে নেই। তবে লকডাউন প্রত্যাহার হওয়ায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে চলেছে। নিয়োগ প্রক্রিয়াও ধীরে ধীরে শুরু করা হচ্ছে। চাকরিপ্রত্যাশীরা অচিরেই এর সুফল পাবে।’
কী অবস্থা বেসরকারি খাতে
করোনাকালে সরকারি চাকরির পাশাপাশি বেসরকারি নতুন চাকরিও ব্যাপক হারে কমেছে। গত বছরের মার্চে দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করলেও চলতি বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহে আবার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। এমন অবস্থায় গত ৫ এপ্রিল থেকে সরকার নিষেধাজ্ঞা (লকডাউন) জারি করে, যা শেষ হয় গত ২৩ জুলাই। আবারও লকডাউনে পড়ার আশঙ্কা নিয়ে এখন গত কয়েক দিন ধরে আবারও স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টায় বেসরকারি খাত।
কিন্তু গত প্রায় দেড় বছরে দেশের অর্থনীতিতে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে, তার প্রভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে গোটা বেসরকারি খাত। এতে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে চাকরির বাজার। বন্ধ রয়েছে নতুন নিয়োগ। অনেক কোম্পানি তাদের পুরাতন কর্মীদের ছাঁটাইও করেছে। ফলে বেড়েই চলেছে কর্মহীনদের সংখ্যা।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বেকারত্বের সংকট আছে। এটা দিন দিন বাড়ছে। সরকার স্কুল-কলেজগুলো বন্ধ রেখে এটাকে একটু কম দেখাচ্ছে। অনেকে মনে করছেন তারা এখনও পরীক্ষা দিচ্ছেন। প্রতিবছর ২০ লাখ লোক শ্রমবাজারে আসছে। সেটা হয়তো এখন ৪০-৫০ লাখে দাঁড়িয়েছে। নতুনভাবে চাকরিচ্যুত হচ্ছে। সব মিলিয়ে দেশে ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থানের একটা বিশাল সমস্যা তৈরি হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকার বলছে বেকারত্বের হার ৪ শতাংশ। এর মানে হচ্ছে, আমরা ইউরোপ-আমেরিকার চেয়ে ভালো আছি। এটা কি বিশ্বাসযোগ্য? কর্মসংস্থানের সুব্যবস্থা করতে হলে আগে প্রকৃত বেকারত্বের চিত্র তুলে আনতে হবে। এরপর পরিকল্পনা ধরে এগোতে হবে।’
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষণা তথ্য মতে, প্রাতিষ্ঠানিক খাতে চাকরি করে এমন ১৩ ভাগ মানুষ করোনায় কাজ হারিয়েছেন। তবে চাকরি আছে কিন্তু বেতন নেই, এমন মানুষের সংখ্যা আরো বেশি। আর ২৫ ভাগ চাকরিজীবীর বেতন কমে গেছে। সব মিলিয়ে করোনার প্রভাবে ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছেন।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘ট্যাকলিং দ্য কোভিড-১৯ ইয়ুথ এমপ্লয়মেন্ট ক্রাইসিস ইন এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ শীর্ষক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অধ্যায়ে বলা হয়েছে, ‘করোনার প্রভাবে বাংলাদেশে স্বল্প মেয়াদে কর্মসংস্থান হারাবে ১১ লাখ তরুণ। আর দীর্ঘ মেয়াদে এ সংখ্যা ১৬ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।’
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাতটি খাতে বেশি কাজ হারানোর আশঙ্কার উল্লেখ করে বলা হয়, এসব খাতে কাজ হারাতে পারে কর্মক্ষম যুবকদের ৭৫ দশমিক ৯ শতাংশ। খাতগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের কৃষি খাতে কাজ হারানো তরুণদের হার ২২ দশমিক ৯ শতাংশ, নির্মাণ খাতে কাজ হারাতে পারে এমন তরুণের হার ১২ দশমিক ৮ শতাংশ, বস্ত্র ও পোশাক খাতে ১৩ দশমিক ৬ শতাংশ ও খুচরা বাণিজ্যে ১২ দশমিক ১ শতাংশ। হোটেল ও রেস্টুরেন্টে ২ দশমিক ৬ শতাংশ, অভ্যন্তরীণ পরিবহন খাতে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ এবং অন্যান্য সেবা খাতে ৪ দশমিক ৫ শতাংশ।
গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের হিসেবে করোনার মধ্যে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ১০ হাজার পোশাক শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সাবেক সভাপতি কামরান টি রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা ঠিক, করোনায় দফায় দফায় লকডাউনের কারণে বেশির ভাগ শিল্প-কারখানা বন্ধ ছিল। উৎপাদনে থাকলেও শতভাগ সক্ষমতা ছিল না। এতে শিল্প পরিচালনায় সমস্যা ছিল। ফলে লোকজনও বেকার হয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে করোনার কারণে দেশে বিভিন্ন খাতে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ বেকার হয়েছে।
‘তবে এটাও শুনতে পাই, পরিস্থিতির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে তাদের অন্তত ৭০ শতাংশই আবার কাজে ফিরে এসেছে। কিন্তু যারাই ফিরে এসেছে, তাদের বড় একটা অংশ আগের কাজে ফিরতে পারেনি। তারা পেশা পরিবর্তন করেছে। যারা উৎপাদন ও সেবা খাতের সঙ্গে যুক্ত ছিল কেউ কেউ কৃষিকাজে যোগ দিয়েছে। এ কারণে তাদের আয়েও পরিবর্তন এসেছে।’
সংকটের কথা স্বীকার করলেও ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ দাবি করেন, ‘শ্রমবাজারে মহাপ্রলয় ঘটে যাওয়ার মতো এমন কোনো কিছু হয়নি। প্রতিবছর ২০ লাখ লোক শ্রমবাজারে প্রবেশ করে বলে করোনার কারণে কারো চাকরি হয়নি, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।’
তিনি বলেন, ‘নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে না তা নয়। প্রতিবছর এমনিতেই ১৩-১৪ লাখ নিয়োগ হয়। এর বাইরে বিদেশ যায় ২-৩ লাখ। তবে অবশ্যই এবার কিছুটা কম হয়েছে। কিন্তু কত কম হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান এখনও নেই।’
ড. নাজনীন দাবি করেন, ‘সব জায়গা কিন্তু বন্ধ ছিল না। কৃষি খাতে নিয়োগ হয়েছে। যেসব খাত ভালো করছে, যেমন আইটি সেক্টর, টেলিকম, ই-কমার্স খাত, ফার্মাসিউটিক্যালস, সেখানেও নিয়োগ হয়েছে। আমাদের গ্রোথ হয়েছে। যখন ইকোনমিতে গ্রোথ হয়, তখন বুঝতে হবে সেখানে নিশ্চয়ই নেতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। অতিদরিদ্র মানুষ কাজে ফেরত এসেছে। তারা বসে নেই। লকডাউনেও কাজ করেছে। সমস্যা কিছুটা হয়েছে নিম্ন মধ্যবিত্তের।’
জট খুলবে না গণটিকা ছাড়া
বিশ্ব থেকে করোনা সহজে যাবে না। কিছুদিন পর পর লকডাউন দিয়েও করোনা মোকাবিলা সম্ভব হবে না। আগামী কয়েকটি বছর করোনাকে সঙ্গী করেই আগামীর পথে হাঁটতে হবে। বাংলাদেশকেও এর বাস্তবতা মেনে করণীয় নির্ধারণের পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সাবেক সভাপতি কামরান টি রহমান মনে করেন, ‘আগের অবস্থায় ফিরে আসতে হলে শিল্প-কারখানার স্বাভাবিক উৎপাদন করতে হবে। এর জন্য লকডাউন থেকে বেরিয়ে মানুষের চলাফেরা স্বাভাবিক রাখতে হবে। সবাইকে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় আনতে হবে। এগুলো করা না গেলে শ্রমবাজারের পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি আশা করা যায় না।’
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘যত দিন পর্যন্ত না লকডাউন যাবে এবং মানুষকে ভ্যাক্সিনেশনের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে, তত দিন শ্রমবাজার পরিস্থিতির তেমন উন্নতির সম্ভাবনা দেখছি না।’
ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘যে সময়টা পার করছি, সেটি মেনে নেয়ার বিষয় আছে। তবে সরকারে প্রকল্পগুলো যদি ঠিকমতো বাস্তবায়ন হয়, ভ্যাক্সিনেশনটা হয়ে যায়, তাহলে আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসব। তখন চলমান সংকটেরও উত্তরণ সম্ভব হবে। তাই আমি বলব, সরকারের আগামী দিনের কর্মকাণ্ডের মূল ফোকাস হওয়া উচিত ভ্যাক্সিনেশন ও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি।’
আরও পড়ুন:স্টারকম বাংলাদেশ “স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৪ আল্ট্রা – সামারাইজ, জাস্ট লাইক দ্যাট!” ক্যাম্পেইনের জন্য ডিজিটাল ক্যাটাগরিতে যুক্তরাজ্যের ক্রিয়েটিভপুল ২০২৫ পুরস্কার পেয়েছে।
স্টারকম বাংলাদেশ যা গ্লোবাল স্টারকম নেটওয়ার্ক এবং বিটপী গ্রুপের একটি অংশ, দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া এন্ড কমিউনিকেশন এজেন্সি যা মিডিয়া প্ল্যানিং, বায়িং ও ৩৬০° মার্কেটিং সলিউশ্যনের জন্য সুপরিচিত।
এ বিষয়ে স্টারকম বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সারাহ আলী বলেন, "এই পুরস্কারটি বাংলাদেশের জন্য একটি গর্বের বিষয়। এটি শুধু আমাদের টিমের সৃজনশীলতাকে নয়, বরং শক্তিশালী গল্প বলার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করার ক্ষমতাকে প্রমাণ করে। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৪ আল্ট্রা ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করেছি যে বাংলাদেশ বিশ্বমানের ডিজিটাল উদ্ভাবন করতে পারে যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়।"
বিজয়ী ক্যাম্পেইনটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস২৪ আল্ট্রা এর এআই ফিচার প্রদর্শনের জন্য ইন্টারঅ্যাকটিভ ব্যানার বিজ্ঞাপন ব্যবহার করা হয়, যেখানে ব্যবহারকারীরা সংবাদ প্রতিবেদনগুলোর ৬০ শব্দের রিয়েল-টাইম সারাংশ দেখানো হয়।
এই ক্যাম্পেইনটি একটি সহজ প্রশ্নকে কেন্দ্র করে গড়ে তোলা হয়েছিল -“সংবাদের মূল বিষয়বস্তু কি পাঠকের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারে? বলেন স্টারকম বাংলাদেশের ডিজিটাল মিডিয়া ডিরেক্টর রবিউল হাসান সজিব। তিনি আরও জনান “এই পদ্ধতি ব্যাবহারের মাধ্যমে আমরা সৃজনশীল ভাবে ফোনটির বিশেষ ফিচারগুলো গ্রাহকের দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরেছি, এবং দেখিয়েছি ফোনটির উল্লেখযোগ্য এআই পাওয়ারড রিয়েল টাইম সামারাইজেশন এবং উন্নত প্রযুক্তির ব্যাবহার।“
স্টারকম বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আহমেদুন ফায়েজ, বলেন “আমরা কয়েক বছর ধরে স্থানীয় পর্যায়ে বেশ কিছু পুরষ্কার জিতেছি, এখন আমাদের লক্ষ্য হল আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিজেদের উপস্থিতি প্রতিষ্ঠা করা। এই পুরস্কারটি আমাদের প্রথম অর্জন এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে এমন অনেক পুরস্কার আমরা অর্জন করতে চাই।“
ক্রিয়েটিভপুল একটি আন্তর্জাতিক ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি নেটওয়ার্ক যারা সারা বিশ্বের এজেন্সি, ব্র্যান্ড এবং দক্ষ পেশাদারদের একত্রিত করে তাদের এই প্লাটফর্মের মাধ্যমে। প্রতি বছর এই ক্রিয়েটিভ ইন্ডাস্ট্রি বিজ্ঞাপন, ডিজাইন, ব্র্যান্ডিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, টেকসই উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য পুরস্কার প্রদান করে থাকে। কাজের স্বীকৃতির পাশাপাশি ক্রিয়েটিভপুলের এই আয়োজন উদ্ভাবন, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং বিশ্বব্যাপী পরিচিতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখানে বিজয়ীদের নির্বাচিত করা হয় বিশেষজ্ঞ বিচারকমণ্ডলী এবং সাধারণ মানুষের ভোটের মাধ্যমে।
ডিজিটাল ক্যাটাগরিতে এই বিজয়ী ক্যাম্পেইন সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন ঃ https://creativepool.com/annual/2025/winners/
দেশে ক্যাশলেস লেনদেনের সম্প্রসারণ ও গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে রাজশাহীতে অনুষ্ঠিত হলো ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ উদ্যোগ’ কর্মসূচি। লিড ব্যাংক হিসেবে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রাজশাহী কারা ট্রেইনিং একাডেমি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন ব্যবসায়ী, গ্রাহক, ব্যাংক কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সাধারণ মানুষ। দুদিনব্যাপী চলা এই কর্মসূচিতে সেমিনার, আলোচনা, প্রদর্শনী ও প্রচারণার মাধ্যমে বিশেষ করে বাংলা কিউআর-এর ব্যবহার ও অন্যান্য ডিজিটাল লেনদেনের সুবিধা তুলে ধরা হয়, যা ক্যাশ-টু-ডিজিটাল ইকোসিস্টেম গঠনের মাধ্যমে ক্যাশলেস বাংলাদেশ কার্যক্রম সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী সেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ এনডিসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী পরিচালক মো. আরিফ হোসেন খান, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক মো. শরাফত উল্লাহ খান এবং ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও তারেক রেফাত উল্লাহ খান। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের পরিচালক রাফেজা আক্তার কান্তা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ অপারেটিং অফিসার সাব্বির হোসেন।
দুদিনব্যাপী এই কর্মসূচিতে ডিজিটাল লেনদেনের নানান দিক নিয়ে সেশন পরিচালনার পাশাপাশি গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচার-প্রচারণা, ক্যাম্পেইন ও রোড-শো অনুষ্ঠিত হবে। গ্রাহকদের জন্য দ্রুত ও সুবিধাজনক ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিকাশে ক্যাশলেস লেনদেনের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন উদ্যোগের প্রশংসা জানিয়ে ভবিষ্যতেও এ ধরনের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। এই উদ্যোগে লিড ব্যাংক হিসেবে ব্র্যাক ব্যাংকের অংশগ্রহণ দেশে আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিকাশে ব্যাংকটির প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।
ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি.:
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) খাতের অর্থায়নে অগ্রাধিকার দেয়ার ভিশন নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি. ২০০১ সালে যাত্রা শুরু করে, যা এখন পর্যন্ত দেশের অন্যতম দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী একটি ব্যাংক। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ‘BRACBANK’ প্রতীকে ব্যাংকটির শেয়ার লেনদেন হয়। ১৯১টি শাখা, ১০০টি উপশাখা, ৩৩০টি এটিএম, ৪৪৬টি এসএমই ইউনিট অফিস, ১,১২১টি এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেট এবং দশ হাজারেরও বেশি মানুষের বিশাল কর্মীবাহিনী নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক কর্পোরেট ও রিটেইল সেগমেন্টেও সার্ভিস দিয়ে আসছে। ব্যাংকটি দৃঢ় ও শক্তিশালী আর্থিক পারফরম্যান্স প্রদর্শন করে এখন সকল প্রধান প্রধান মাপকাঠিতেই ব্যাংকিং ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষে অবস্থান করছে। বিশ লাখেরও বেশি গ্রাহক নিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক বিগত ২৪ বছরেই দেশের সবচেয়ে বৃহৎ জামানতবিহীন এসএমই অর্থায়নকারী ব্যাংক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও নিয়মানুবর্তিতায় অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।
আলিবাবা.কম বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বি-টু-বি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম সফলভাবে অংশগ্রহণ করেছে ২৪তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৫ আন্তর্জাতিক এক্সপোতে । সিইএমএস-গ্লোবাল ইউএসএ আয়োজিত এই মেলায় আলিবাবা.কম- এর বুথে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি রপ্তানিকারকদের যারা ডিজিটাল ট্রেডের মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণের সুযোগ খুঁজছে।
আলিবাবা.কম-এর গ্লোবাল পটেনশিয়াল মার্কেটস বিভাগের প্রধান ফনসেল ল্যান বলেন, “টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৫ আন্তর্জাতিক এক্সপোতে বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের সক্রিয় উপস্থিতি প্রমাণ করে যে তারা ডিজিটাল বাণিজ্যের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী ও প্রতিশ্রুতিশীল।” আমাদের লক্ষ্য হলো এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন টুলস, নির্দেশনা এবং বিশ্বব্যাপী এক্সপোজার দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে যুক্ত করে তাদের ব্যবসাকে আরও বড় ও সফল করার সুযোগ করে দেয়া।“
এক্সপো চলাকালীন সময়ে দর্শনার্থীরা মূলত মেম্বারশিপ প্যাকেজ, খরচ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ভেরিফিকেশন সময়সূচি এবং কার্যকরীভাবে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে কীভাবে পণ্য উপস্থাপন করতে হয় সে বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়েছেন। অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বিশ্বস্ত ক্রেতা খুঁজে পাওয়া, সক্রিয় বাজারে লক্ষ্য নির্ধারণ এবং নিরাপদ পেমেন্ট ব্যবস্থা ও লজিস্টিকস সলিউশনের মত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য।
এই বিষয়ে পাই সোর্সিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, "আমরা আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে পৌঁছাতে এবং ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধি করতে আলিবাবা.কম এর সফল ও স্বতন্ত্র সহায়তা পেয়েছি। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে আমরা মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহের পাশাপাশি দৃঢ় বৈশ্বিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছি।" ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, পাই সোর্সিং লিমিটেড একটি বাংলাদেশ-ভিত্তিক অন্যতম পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক কোম্পানি।
২৪তম টেক্সটেক বাংলাদেশ ২০২৫ আন্তর্জাতিক এক্সপো আবারও প্রমাণ করেছে যে এটি বাংলাদেশের টেক্সটাইল এবং অ্যাপারেল সেক্টরের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এক্সপোতে ৩৫টিরও বেশি দেশ থেকে ২৫ হাজারের অধিক শিল্প পেশাজীবীরা অংশগ্রহণ করেছেন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অ্যাপারেল রপ্তানিকারক হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান এই এক্সপোতে আরো শক্তিশালী হয়েছে। আলিবাবা. কম –এর এই সফল অংশগ্রহণ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ডিজিটাল প্রবৃদ্ধি এবং বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য নতুন পথ তৈরি করেছে।
এওয়ার্ড উইনিং পোভা সিরিজ বাংলাদেশে নিয়ে আসছে নতুন ৫জি স্মার্টফোন অভিজ্ঞতা
বিশ্বের অন্যতম প্রযুক্তি ব্র্যান্ড টেকনো, সর্বদা তাদের ডিভাইসে নতুনত্ব নিয়ে আসার ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে। যা ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন বুঝে তাদের জীবনকে সহজ করে। এখন ব্র্যান্ডটির বহুল প্রতীক্ষিত পোভা সিরিজ বাংলাদেশে আসছে, যেটি ইতোমধ্যে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। এই সিরিজটি দেশের প্রযুক্তিপ্রেমীদের জন্য উন্নতমানের পারফরম্যান্স, অত্যাধুনিক ফিচার এবং গেম-চেঞ্জিং প্রযুক্তি নিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে।
পোভা সিরিজ সম্প্রতি তাদের ডিজাইনের জন্য নিউ ইয়র্ক প্রোডাক্ট ডিজাইন অ্যাওয়ার্ডসে গোল্ডেন অ্যাওয়ার্ড এবং লন্ডন ডিজাইন অ্যাওয়ার্ডসে প্ল্যাটিনাম অ্যাওয়ার্ড জিতেছে। এই সিরিজের একটি মডেলকে বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা ফোন হিসেবেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
নতুন পোভা সিরিজটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যেন এটি ব্যবহারকারীদের জন্য দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি লাইফ, অত্যাধুনিক ডিজাইন এবং হাই পারফরম্যান্স সরবরাহ করতে পারে।
রবি আজিয়াটা এবং গ্রামীণফোনের বাণিজ্যিকভাবে ৫জি সেবা চালুর মাধ্যমে এ বছরের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ৫জি যুগে প্রবেশ করেছে। এই যাত্রাকে সম্পূর্ণ করতে টেকনো তাদের এই সিরিজ নিয়ে প্রস্তুত, যা একটি সম্পূর্ণ ৫জি লাইনআপ এবং পরবর্তী প্রজন্মের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য তৈরি।
যদিও টেকনো আনুষ্ঠানিকভাবে লঞ্চিং ডেট নিয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি, তবে ধারনা করা হচ্ছে শীগ্রই সম্পূর্ণ লাইনআপের বিস্তারিত ঘোষণা আসবে। আরও আপডেটের জন্য সামাজিক মাধ্যমে টেকনো বাংলাদেশ ফলো করুন এবং ভিজিট করুন ঃ www.tecno-mobile.com/bd
বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের আয়োজনে অনুষ্ঠিত দুই দিনব্যাপী “বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ এক্সিবিশন ২০২৫” ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি), ঢাকায় শেষ হয়েছে। এ প্রদর্শনীতে প্রিমিয়ার ব্যাংক একটি প্যাভিলিয়ন স্থাপন করে (হল-২, স্টল ৭৫ ও ৭৬)। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিন এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাবুর হোসেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)-এর অতিরিক্ত সচিব ও উইং প্রধান মিরানা মাহরুখ।
উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এস কে বশির উদ্দিন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁদের স্বাগত জানান প্রিমিয়ার ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. আরিফুর রহমান; স্বতন্ত্র পরিচালক ও রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মো. সাজ্জাদ হোসেন; ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ আবু জাফর; প্রিমিয়ার ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহেদ সিকান্দার; অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও গুলশান শাখার প্রধান নাসিম সিকান্দার; ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চিফ ফিনান্সিয়াল অফিসার সৈয়দ আবুল হাশেম, FCA, FCMA; ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও বনানী শাখার প্রধান অমলেন্দু রায়সহ ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩০ দশমিক ৮৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যালেন্স অব পেমেন্টস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট পজিশন ম্যানুয়াল (বিপিএম ৬) পদ্ধতি অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সর্বশেষ এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের হাই-টেক পণ্য উৎপাদন খাতে অনন্য এক মাইলফলক অর্জিত হলো। দেশের শীর্ষ ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের ব্র্যান্ড ওয়ালটন প্রথমবারের মতো আমেরিকাতে রপ্তানি শুরু করলো মাদারবোর্ড (পিসিবি ও পিসিবিএ)। ওয়ালটনের তৈরি বিশ্বমানের এই মাদারবোর্ড ব্যবহৃত হবে আমেরিকায় তৈরি অত্যাধুনিক সক্রিয় গানশট শনাক্তকরণ এবং জরুরি উদ্ধারকাজ পরিচালনা সিস্টেমের সিকিউরিটি ডিভাইসে। মানুষের জীবন রক্ষাকারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা সরঞ্জামে ওয়ালটন হার্ডওয়্যার ব্যবহৃত হওয়া বাংলাদেশের হাই-টেক পণ্য উৎপাদন খাতের জন্য অত্যন্ত গর্ব ও সম্মানের। আমেরিকাতে মাদারবোর্ড রপ্তানির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে বিশ্বমানের বাংলাদেশি প্রযুক্তিপণ্যের বিপুল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করলো ওয়ালটন।
এই উপলক্ষ্যে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫) রাজধানীতে ওয়ালটন করপোরেট অফিসে এক জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে জানানো হয়, বিশ্বের ৫০টিরও বেশি দেশে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ইলেকট্রনিক্স পণ্য রপ্তানি করা ওয়ালটন প্রাথমিকভাবে আমেরিকার উইসকনসিন প্রদেশে অবস্থিত তথ্যপ্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠান সেফপ্রো টেকনোলজিস ইনকরপোরেশন (ঝঅঋঊচজঙ ঞবপযহড়ষড়মরবং ওহপ.) এর অনুকূলে প্রায় ২,৫০০ পিসেরও বেশি মাদারবোর্ড রপ্তানি করছে, যা প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বাংলাদেশি টাকার সমপরিমাণ। জরুরি অবস্থায় আমেরিকার স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের মানুষের জীবন রক্ষায় কার্যকর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরবরাহে সেফপ্রো টেকনোলজিস ইনকরপোরেশনের ব্যাপক সুনাম ও অবদান রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ডিভাইসে এবার যুক্ত হলো বাংলাদেশের ওয়ালটনের হার্ডওয়্যার।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের একমাত্র পিসিবি (প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড) উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। মাদারবোর্ড হিসেবে পরিচিত প্রযুক্তিপণ্যের অন্যতম প্রধান যন্ত্রাংশ ওয়ালটনের পিসিবিএ দিয়ে তৈরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ নিরাপত্তা ডিভাইস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হবে। এই ডিভাইস তাৎক্ষণিক অবৈধ শুটিং সনাক্তকরণ, প্রতিরোধ, সতর্কীকরণ ও দ্রুত উদ্ধারকাজ পরিচালনা করায় সহযোগিতা করবে। এটি অডিও এবং ভিজ্যুয়াল সংকেতের মাধ্যমে সতর্ক করে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করবে, আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিপদ থেকে দ্রুততার সাথে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে এবং হুমকির প্রতি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সক্রিয়ভাবে সাহায্য করবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হিসেবে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী। অন্যদের মধ্যে আরো ছিলেন ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম, ম্যানেজিং ডিরেক্টর এস এম মঞ্জুরুল আলম অভি, ওয়ালটন মাইক্রো-টেক করপোরেশনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) নিশাত তাসনিম শুচি এবং রবি আজিয়াটার সহযোগী প্রতিষ্ঠান এক্সেনটেকের এমডি ও সিইও আদিল হোসেন নোবেল। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান সেফপ্রো টেকনোলজিস ইনকরপোরেশন-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট পল এল একারট (চধঁষ খ. ঊপশবৎঃ)।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব বলেন, যে দেশে সিলিকন ভ্যালী আছে, সেই দেশে আমরা মাদারবোর্ড রপ্তানি করছি। নিঃসন্দেহে এটি ওয়ালটন এবং বাংলাদেশের জন্য এক ঐতিহাসিক মাইলফলক।
তিনি জানান, পিসিবি এবং পিসিবিএ গ্লোবাল মার্কেট প্রায় ৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগামী ৫-৬ বছরে গ্লোবাল মার্কেট আরো ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পাবে। আমেরিকায় পিসিবিএ রপ্তানির মধ্য দিয়ে এই বিশাল গ্লোবাল মার্কেটে যাত্রা শুরু করেছে ওয়ালটন। প্রযুক্তি পণ্যের বৈশ্বিক বাজারে প্রতিযোগি সক্ষমতায় এগিয়ে যেতে ওয়ালটনকে হার্ডওয়্যার ডিভাইসের পাশাপাশি এআই প্রযুক্তি ভিত্তিক সফটওয়্যার পণ্য, নেটওয়ার্কিং ও সাইবার সিকিউরিটি ডিভাইস তৈরির মাধ্যমে এক শক্তিশালী ইকো-সিস্টেম গড়ে তোলার পরামর্শ দেন তিনি।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ও উন্নত দেশ আমেরিকা বাংলাদেশ থেকে মাদারবোর্ডের মতো উন্নত প্রযুক্তি পণ্য আমদানি করছে। এটা শুধু ওয়ালটনের জন্যই নয়; বাংলাদেশের জন্যও অত্যন্ত গর্বের এবং ঐতিহাসিক সাফল্য।
আমেরিকার সেফপ্রো টেকনোলজিস ইনকরপোরেশন এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট পল এল একারট বলেন, ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন খাতে ওয়ালটন ইনোভেশন, কোয়ালিটি ও আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে। ওয়ালটন প্রতিটি পণ্যের ডিজাইন, নতুন উদ্ভাবন এবং উৎপাদনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এটি ওয়ালটনকে অন্যদের চেয়ে স্বতন্ত্র অবস্থান গড়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে ওয়ালটন বিশ্ববাজারে সম্মানজনক স্থান করে নিয়েছে। ওয়ালটনের কাছ থেকে বিশ্বমানের মাদারবোর্ড নিতে পেরে আমরা সত্যিই আনন্দিত। ওয়ালটনের মাদারবোর্ড নিঃসন্দেহে আমাদের সিকিউরিটি ডিভাইসের মান আরো অনেক বৃদ্ধি করবে।
বাংলাদেশকে প্রযুক্তিপণ্যের হাব হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিত করায় তিনি ওয়ালটনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। সিকিউরিটি ডিভাইসসহ টেকসই প্রযুক্তির অন্যান্য ক্ষেত্রেও ওয়ালটন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে আমেরিকার এই উদ্যোক্তা উল্লেখ করেন ।
এস এম রেজাউল আলম বলেন, আমরা নিজস্ব প্রোডাকশন প্ল্যান্টে বিশ্বমানের পিসিবি ও পিসিবিএ তৈরি করছি যা ওয়ালটনের পণ্যসমূহে ব্যবহার করা হচ্ছে। নিজস্ব চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের বাজারেও দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি উদোক্তাদের জন্য পিসিবি ও পিসিবিএ সরবরাহ করে আসছে ওয়ালটন। সম্প্রতি ইউরোপিয়ান দেশ গ্রিসেও সাফল্যের সাথে ১০ হাজার পিসেরও বেশি পিসিবি ও পিসিবিএ রপ্তানি সম্পন্ন করেছে ওয়ালটন। বাংলাদেশেই উন্নতমানের পিসিবি ও পিসিবিএ উৎপাদনের ফলে একদিকে যেমন সাশ্রয় হচ্ছে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা, সেইসঙ্গে দ্রুততম সময়ে দেশীয় উদ্যোক্তাগণ পাচ্ছেন তাদের চাহিদামত পণ্য। পাশাপাশি অন্যান্য ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্যের মতো পিসিবি ও পিসিবিএ রপ্তানি করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার যোগানে উল্লেখ্যযোগ্য অবদান রাখতে সক্ষম হচ্ছে ওয়ালটন।
তিনি জানান, সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন নিয়ে আসার উদ্দেশ্যে একীভূত হচ্ছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি এবং ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। ইলেকট্রনিক্স এবং প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন খাতের শীর্ষ এই দুই প্রতিষ্ঠানের একীভূতকরণে দেশে ব্যাপক আকারে ইলেকট্রিক বাইক এবং লিথিয়াম ব্যাটারি উৎপাদনে যাওয়া সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে নতুন বাজারে আসা ওয়ালটনের দুই মডেলের পরিবেশবান্ধব তাকিওন ইলেকট্রিক বাইক বা ই-বাইকও উন্মোচন করেন অতিথিরা। আধুনিক ডিজাইন, শক্তিশালী মোটর, দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ এবং মাত্র ১০-১৫ পয়সা খরচে প্রতি কিলোমিটারে চলার সুবিধাযুক্ত ওয়ালটনের নতুন এই ই-বাইকগুলো নগর ও গ্রামীণ জীবনের স্মার্ট ও পরিবেশবান্ধব যাতায়াত সঙ্গী হয়ে উঠবে।
মন্তব্য