বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) ক্ষুদ্রঋণ, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, কৃষি, আইটিসহ নানামুখী উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে প্রায়ই দক্ষ কর্মীর খোঁজ করে। তাতে এন্ট্রি লেভেলের পদগুলোতে এইচএসসি বা স্নাতক পাস ফ্রেশারদের সুযোগ বেশি দেয়া হয়। ব্যবস্থাপক বা ঊর্ধ্বতন পদগুলোতে অভিজ্ঞদের প্রাধান্যই বেশি। এনজিওর কাজে যোগ দেবার প্রস্তুতি ও অন্যান্য বিষয়ে জানুন আজকের লেখা থেকে।
কর্মী নিয়োগে এগিয়ে যারা
বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রণের সরকারি সংস্থা মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অর্থরিটির (এমআরএ) বেসিক ইনফরমেশন অব এনজিও-এমএফআইএসের ৩০ জুন ২০১৯ তথ্যমতে, সারা দেশে মোট ৭৫৮টি সংস্থায় শুধু ঋণ কর্মসূচিতে নানান পদে কর্মরত রয়েছে ১,৬২,১৭৫ জন কর্মী।
ব্র্যাকের ২০১৬ সালের তথ্যমতে মোট কর্মীর সংখ্যা ৯৭,৭৪২ জন। ঋণ কার্যক্রম, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ নানামুখী উন্নয়নকাজে প্রতিবছর শিক্ষানবিশ বা এন্ট্রি লেভেলে কর্মী নিয়োগে ব্র্যাক সবচেয়ে এগিয়ে।
জুনিয়র শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা, দাবি, কর্মসূচি সংগঠক (প্রগতি) এবং (দাবি) এসব পদেই সবচেয়ে বেশি কর্মী নিয়োগ দেয় ব্র্যাক।
এমআরএর তথ্যমতে, আশায় ঋণ কার্যক্রমে কর্মরত আছে ২৪,৯২৬ জন। টিএমএসএসে নানান খাতে কর্মরত আছেন প্রায় ১৩,০৪৮ জন কর্মী।
ব্যুরো বাংলাদেশের রয়েছে ৯,৭৮২ জন কর্মী। অপরদিকে কর্মী নিয়োগে এগিয়ে আছেন সোসাইটি ফর সোশ্যাল সার্ভিস (এসএসএস), জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন, সাজিদা ফাউন্ডেশন, পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, উদ্দীপন, পল্লি মঙ্গল কর্মসূচি, শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিস-অ্যাডভানটেজড উইমেন, গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি (গাক), আরডিআরএস, ব্রিজ, পপীসহ এমআরএ সনদপ্রাপ্ত আরও বেশ কিছু সংস্থা।
প্রতিষ্ঠানভেদে যোগ্যতা
জুনিয়র শিক্ষানবিশ কর্মকর্তা (দাবি), কর্মসূচি সংগঠক (দাবি ও প্রগতি) এসব পদে সবচেয়ে বেশি লোকবল নিয়োগ দেয় ব্র্যাক।
জুনিয়র লোন অফিসার (জুএলও) পদে লোকবল বেশি নেয় আশা।
ব্যুরো বাংলাদেশ কর্মসূচি সংগঠক পদে, টিএমএসএস ক্রেডিট অফিসার পদে, সোসাইটি ফর সোশ্যাল সার্ভিস (এসএসএস) অ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (ক্রেডিট) পদে, শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিস-অ্যাডভানটেজড উইমেন ক্রেডিট অফিসার পদে এন্ট্রি লেভেলে লোকবল নিয়ে থাকে।
সাজিদা ফাউন্ডেশন ফিল্ড অফিসার পদে এবং জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন অফিসার পদে এন্ট্রি লেভেলে লোকবল নেয়।
এসব প্রতিষ্ঠানে কাজের যোগ্যতা চাওয়া হয় ন্যূনতম স্নাতক পাস।
কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট অফিসার পদে এন্ট্রি লেভেলে কর্মী নিয়ে থাকে মানবিক সাহায্য সংস্থা। যোগ্যতা থাকতে হয় স্নাতক।
উদ্দীপন ফাস্ট ক্রেডিট অফিসার পদে যোগ্যতা চেয়ে থাকে এইচএসসি পাস। মধ্যম লেভেলের অনেক প্রতিষ্ঠান এন্ট্রি লেভেলের পদগুলোতে এইচএসসি পাস ব্যক্তিদের সুযোগ দিয়ে থাকে। এ ছাড়া শাখা ব্যবস্থাপক, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য পদগুলোতে স্নাতকোত্তর পাসের পাশাপাশি কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতার দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে থাকে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ।
আবেদনের আগে ভাবুন
গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচির (গাক) পরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এন্ট্রি লেভেলে ঋণ সংস্থায় যোগদানের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাঠখড় পোড়ানোর কিছু নেই। স্নাতক পাসের সঙ্গে বেসিক জ্ঞানটা ভালো থাকলে সুযোগ মিলবে কাজের।
তবে সবচেয়ে বড় কথা, সত্যিকার অর্থেই কাজটাকে ভালোবেসে যোগদান করলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না।
কোথায় পড়ালেখা করে যোগদান করছেন তার চেয়েও বড় হলো, কাজটাকে কতটা আপন মনে করতে পেরেছেন। কাজের সুযোগ পাওয়াটা এখানে সহজ হলেও টিকে থাকা এবং এগিয়ে যাওয়াটাও তুলনামূলকভাবে কঠিন।
কারণ, এখানে নিত্যদিন চ্যালেঞ্জ নিয়ে টিকে থাকতে হয়। তাই আগে ঠিক করুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ক্যারিয়ার গড়তেই কি এই পেশায় আসতে চান? নাকি অন্য কোনো চাকরির সুযোগ না পেয়ে শুধু কিছু আয়-রোজগারে আশায় এই পেশায় আসতে চান।’
এন্ট্রি লেভেলে পরীক্ষা যেমন
টিএমএসএসের পরিচালক (এইচআর-এম অ্যান্ড অ্যাডমিন) শাহাজাদী বেগম জানান ‘এন্ট্রি লেভেলের পদে যোগ্য কর্মী বাছাই ও নির্বাচনে প্রতিষ্ঠানভেদে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়।
অনেক প্রতিষ্ঠান আবার শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমেই যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করে থাকে। এন্ট্রি লেভেলের লিখিত পরীক্ষায় আবার অনেকে রচনামূলক পদ্ধতিতে আবার অনেকে এমসিকিউ (শর্ট) পদ্ধতির পরীক্ষা নিয়ে থাকে।’
জানা যায় লিখিত পরীক্ষায় এনজিও-সম্পর্কিত বিষয়ে নানা ধরনের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। তবে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে কাজ করতে হবে, এমন পদগুলোতে ঋণ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার বিষয়েই বেশি প্রশ্ন আসে।
নিয়োগ কর্তৃপক্ষ ঋণ কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সাধারণত এক ঘণ্টার লিখিত রচনামূলক প্রশ্ন করে থাকে।
লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, সাধারণ গণিত, ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। বাংলা বিষয়ের গুরুত্বপূর্ণ নানান দিক, বিশেষ করে গদ্য, পদ্য, সাহিত্য এবং নাটক অংশ থেকে অনেক সময় প্রশ্ন করা হয়। এ ছাড়া ব্যাকরণের কমন কিছু অংশ থেকে প্রশ্ন করা হয়।
অনেকে ভাবসম্প্রসারণ, আবার অনেকে রচনা, পত্র ও দরখাস্ত লিখতে দিতে পারে। তাই এসব আগে থেকেই দখলে রাখতে হবে।
হিসাব-সংক্রান্ত কাজ বেশি করতে হবে তাই হিসাববিজ্ঞানের প্রাথমিক বিষয়েও ভালো প্রস্তুতি থাকতে হবে।
পাটিগণিতের শতকরা, শতাংশ, সরল, সুদকষা এসবের সঙ্গে হিসাববিজ্ঞানে খুঁটিনাটি বিষয়ে লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়।
ইংরেজি বিষয়ে আইকিউ যাচাইয়ে গ্রামার পার্টের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ থেকে প্রশ্ন করে থাকে।
সাধারণ জ্ঞানের নিজের দখল যত ভালো থাকবে তত বেশি নম্বর পাওয়া যাবে।
ভাইভা বোর্ডে করণীয়
মানবিক সাহায্য সংস্থার এইচআরএম বিভাগের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন জানান, ‘মৌখিক পরীক্ষায় একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, সাধারণ জ্ঞান, সাম্প্রতিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলি, সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার, ঋণ কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক, অর্থনীতির নানান দিক, হিসাবের বিভিন্ন দিক, আর্থসামাজিক বিষয়, দারিদ্র্য বিমোচন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু, আইকিউ, প্রেজেন্টেশন স্কিল, মাঠকর্মী হিসেবে কাজের বিষয়, নিজের সম্পর্কে এবং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। দেখা হয় নিয়মানুবর্তিতাও।
ঋণ কার্যক্রম প্রোগ্রাম বিষয়ে বেশি জানাশোনা থাকতে হবে। ভাইভা বোর্ডে আরও দেখা হয় কাজের আগ্রহ। কেন কাজ করতে চায়, কাজের মানসিকতা, যোগাযোগদক্ষতা, অন্যকে বোঝানোর ক্ষমতা, চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মানসিকতা, প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাসহ নানান দিক।’
সিনিয়র লেভেলের পদে করনীয়
রুরাল রিকনস্ট্রাকশন ফাউন্ডেশন (আরআরএফ) এর পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) অরুণ কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘শাখা ব্যবস্থাপক বা তর্ধোধ্ব পদগুলোতে সরাসরি ভাইভার মাধ্যমেই কর্মী নিয়োগ করে থাকে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ। তবে কোন কোন প্রতিষ্ঠান লিখিত পরীক্ষাও নিয়ে থাকে।
পরীক্ষার প্রস্তুতির বিষয়ে হিসাবরক্ষক, শাখা ব্যবস্থাপক, আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক, সহকারী পরিচালকসহ তর্ধোধ্ব পর্যায়ের পদগুলোতে ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম নিয়ে কাজ করেছেন এমন প্রার্থীদেরই নির্বাচন করা হয়।
কারণ এসব পদে অধিকতর যোগ্য ও দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেয়া প্রয়োজন। তাই যারা এ নিয়ে কাজ করেছেন তাদের কাজের অংশগুলোই আমরা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় যাচাই করি।
এসব পদের প্রার্থীদের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনার খুর্টিনাটি বিষয়গুলোর উপর স্বচ্ছ ধারণা রাখতে হবে।’
শাহজাদী বেগম জানান, ‘ম্যানেজার পর্যায়ের লিখিত পরীক্ষায় ঋণ কার্যক্রম, শাখার হিসাব নিকাশ, উন্নয়ন কার্যক্রম, সুপারভিশন, মনিটরিং, মাইক্রোফিন্যান্স, এমএফআই টার্মস, এনজিও নীতিমালা, পরিচালন, ব্যবস্থাপনা, ইংরেজি এবং সমসাময়িক ইস্যু বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়।
ম্যানেজার লেভেলের পদগুলোর জন্য ঋণ কার্যক্রমের সামগ্রিক বিষয়গুলোর উপর সব সময় ভাল দখল রাখতে হবে। নিয়োগ কর্তারা এখানে ঋণ সংশ্লিষ্ট গুরুত্বপূর্ণ অংশ থেকে প্রশ্ন করতে পারে। তেমনি ভাইভা বোর্ডে ঋণ কার্যক্রমের নানা দিক নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে কাজের দক্ষতা জানতে চাইবে। ভাইভা র্বোডেও ঋণ কার্যক্রমের সঠিক উত্তর দেয়ার জন্য মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে।’
বেতন-ভাতা যেমন হয়
প্রতিষ্ঠান ও খাত ভেদে বেতন ভাতা ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে এন্ট্রি লেভেলে শিক্ষানবিশকালে প্রতিষ্ঠান ভেদে মাসিক শুরু ন্যূনতম ১৫০০০ থেকে।
স্থায়ীকরণে প্রতিষ্ঠানভেদে বেতন পাওয়া যেতে পারে ২০-৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। মাসিক বেতন ছাড়াও উৎসব ভাতা, সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে বিধি অনুসারে সিটি ভাতা, জীবন বীমা ভাতা দেওয়া হবে।
এ ছাড়াও ঋণ কার্যক্রমের সাথে সংপৃক্ত কর্মীদের লোড অ্যালাউন্স, ক্রেডিট অ্যালাউন্স, ব্যাংকার অ্যালাউন্স, হাইপারফরম্যান্স বোনাসসহ বেশ কিছু সুবিধা দেয় অনেক প্রতিষ্ঠান।
আরও পড়ুন:বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. নিজাম উদ্দিনকে সচিব হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ও ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা-ট্রাস্টি মনসুর আহমেদ চৌধুরী ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি বিদায়ী চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের স্থলাভিষিক্ত হলেন।
আর টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন দুই সদস্য হয়েছেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার মনজুর হাসান এবং নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা ও সুশাসন বিশেষজ্ঞ তাহেরা ইয়াসমিন।
তাছাড়া টিআইবির অডিট কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন সংস্থাটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ফারুক আহমেদ। অডিট কমিটির অপর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত কম্পট্রোলার জেনারেল, ডিফেন্স ফাইন্যান্স মোতাহার হোসেইন।
টিআইবি’র নতুন চেয়ারপারসন মনসুর আহমেদ চৌধুরী বহুল আলোচিত ভাসমান হাসপাতাল ‘জীবন তরী’-এর উদ্যোক্তা। মানবাধিকার বিশেষ করে প্রতিবন্ধীদের অধিকারের নিশ্চয়তাসহ তাদের জীবন-মানের সার্বিক উন্নয়নে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করছেন।
‘জাতীয় প্রতিবন্ধী ফোরাম’ গঠনে মনসুর আহমেদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবন্ধীবিষয়ক কমিটির সদস্য হিসেবে (২০০৯-১২ মেয়াদে) দায়িত্ব পালন করেছেন।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি নিরাফাত আনাম মেমোরিয়াল ইনক্লুশন পদক, সিলেট রত্ন পদক, আজীবন সম্মাননা (সিঙ্গার বাংলাদেশ ও চ্যানেল আই) এবং সিনিয়র অশোকা ফেলোশিপ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন।
টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন সদস্য ব্যারিস্টার মনজুর হাসান বর্তমানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। টিআইবির প্রতিষ্ঠাকালীন নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও তিনি ব্র্যাকের ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০০৩ সালে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে ‘অফিসার অফ দ্য মোস্ট এক্সেলেন্ট অর্ডার অফ দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার (ওবিই)’ উপাধিতে ভূষিত হন।
বোর্ডের আরেক নতুন সদস্য তাহেরা ইয়াসমিন নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা এবং সুশাসন বিশেষজ্ঞ। তিনি অক্সফাম, কেয়ার এবং জিআইজেড-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে শীর্ষস্থানীয় পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জিআইজেড-এর রুল অব ল’র অপারেশন পরিচালক এবং অ্যাকসেস টু জাস্টিস ফর উইম্যান প্রোগ্রামের সিনিয়র অ্যাডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বেসরকারি সংস্থা ও উন্নয়ন খাতে স্ট্রাটেজিক প্ল্যানিং ও কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি সুখ্যাতি অর্জন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ট্রাস্টি বোর্ড টিআইবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম। বোর্ডের অন্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. তাসনিম আরেফা সিদ্দিকী, সাধারণ সম্পাদক; দ্য ডেইলি স্টার প্রকাশক ও সম্পাদক মাহফুজ আনাম, কোষাধ্যক্ষ।
সদস্যবৃন্দ হলেন- সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ আবুল মোমেন, অধ্যাপক ড. ফখরুল আলম, অ্যাডভোকেট সুস্মিতা চাকমা, সোসাইটি অফ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট (শেড)-এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ফিলিপ গাইন, মানবাধিকার ও সমাজকর্মী বনশ্রী পাল এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনাল-এর প্রাক্তন নির্বাহী পরিচালক ফারুক আহমেদ।
আরও পড়ুন:রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব করা হয়েছে।
রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
ড. নাসিমুল গনি বিসিএস ১৯৮২ ব্যাচের প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা। ২০০৯ সালে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়। চার বছর ওএসডি থাকার পর ২০১৩ সালে তাকে চাকরি থেকে অবসর দেয়া হয়।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের জনবিভাগে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়।
৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য নিয়োগ পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগবঞ্চিত এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক তাদেরকে দ্রুত নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্যে অপেক্ষমাণ চিকিৎসকরা সংবাদ সম্মেলন করে এই দাবি জানান।
‘৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য (লিখিত ও মৌখিক) উভয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও ক্যাডার পদে নিয়োগবঞ্চিত ১৯১৯ জন চিকিৎসককে ন্যায্য নিয়োগ’ শীর্ষক এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে।
সংবাদ সম্মেলনে নিয়োগবঞ্চিত চিকিৎসকরা বলেন, ২০২১ সালে ৪২তম বিসিএসের ফলাফলে পর্যাপ্ত পদ না থাকায় এক হাজার ৯১৯ জন চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগবঞ্চিত হয়ে আছেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তারা বৈষম্যের শিকার। স্বাস্থ্য অধিদফতর নীতিগতভাবে দ্রুত দু’হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা চাই এক্ষেত্রে ৪২তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ চিকিৎসকদের অগ্রাধিকার দেয়া হোক।
তারা বলেন, দেশে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে চরম চিকিৎসক সংকট রয়েছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তাদের মৌলিক অধিকার হিসেবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।
সাধারণ বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন, বর্তমানে ৪৪, ৪৫ ও ৪৬তম বিসিএস প্রক্রিয়াধীন। ৪২তম বিসিএসের পরে আর কোনো চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি। তাই দীর্ঘ প্রক্রিয়া এড়িয়ে দ্রুত নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসক সংকট নিরসনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও এবি পার্টির আহ্বায়ক মেজর (অব.) অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওহাব মিনার, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, ডা. ফারজানা সাথী, ডা. মো. রেজওয়ান কবীরসহ ৪২তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ চিকিৎসকরা।
সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি) ৪৭তম বিসিএসের আবেদনের নতুন তারিখ চূড়ান্ত করেছে। গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- আগামী ২৯ ডিসেম্বর সকাল ১০টা থেকে আবেদন করতে পারবেন প্রার্থীরা। তা চলবে আগামী ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। এবার প্রার্থীদের আবেদন ফি দুশ’ টাকা।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা এস এম মতিউর রহমান বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এর আগে বুধবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পরীক্ষাসহ সব ধরনের সরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষার আবেদন ফি সর্বোচ্চ ২০০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০ থেকে কমিয়ে ১০০ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
প্রসঙ্গত, ৪৭তম বিসিএসের আবেদন শুরুর একদিন আগে ৯ ডিসেম্বর (সোমবার) অনলাইনে আবেদন অনিবার্য কারণে স্থগিত করে পিএসসি।
সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা সংস্থানের বিষয় পর্যালোচনা করতে কমিটি গঠন করেছে সরকার। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মচারীদের জন্য প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগ প্রবিধি-৩ শাখা থেকে এ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করে অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের কর্মে নিয়োজিত জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫-এর আওতাভুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অনুকূলে ‘মহার্ঘ ভাতা’ সংস্থানের বিষয়টি পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের লক্ষ্যে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপ-সচিব সৈয়দ আলী বিন হাসানের সই করা আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিবকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মহাহিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সচিব, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের প্রবিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব।
কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, কমিটি মহার্ঘ ভাতার প্রযোজ্যতা ও প্রাপ্যতার বিষয় পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ দাখিল করবে। কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক কর্মকর্তাকে কো-অপ্ট করতে পারবে।
বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে বদলি ও রদবদলের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন জেলার ১২ পুলিশ সুপারকে (এসপি) একযোগে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখার উপসচিব আবু সাঈদের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এই বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশ অধিদপ্তরের (টিআর) পুলিশ সুপার আবু সাইমকে রংপুরের পুলিশ সুপার, গাইবান্ধার কমান্ড্যান্ট (পুলিশ সুপার) ইন সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার আবু সায়েম প্রধানকে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমকে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার জাকির হোসেনকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার শরিফ উদ্দীনকে বরিশালের পুলিশ সুপার, এসবির পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলামকে রাজশাহীর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এছাড়া পুলিশ অধিদপ্তরের পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেককে গাজীপুরের পুলিশ সুপার, এন্টি টেররিজম ইউনিটের ঢাকার পুলিশ সুপার ইয়াছমিন খাতুনকে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার, এপিবিএন সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার নিশাত অ্যাঞ্জেলাকে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার আসলাম শাহাজাদাকে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার, পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এহতেশামুল হককে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার এবং এসবির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ারকে নওগাঁর পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
জনস্বার্থে জারি করা এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মন্তব্য