পানির সংকটে ভুগছে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের পিসি কালচার হাউজিংয়ের সহস্রাধিক পরিবার। বেশ কয়েক বছর ধরেই এখানে পানির সংকট চলছে। গত দুই মাসে সেই সংকট তীব্র হয়েছে। আর গত দশদিন ধরে বলতে গেলে পানিই পাচ্ছে না এখানকার সহস্রাধিক পরিবার। তারা ঢাকা ওয়াসার গাড়ির পানি কিনেও ন্যূনতম চাহিদা মেটাতে পারছেন না।
ওয়াসা বলছে, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়া এবং গভীর নলকূপ নষ্ট হওয়ায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে একটি নলকূপ সংস্কার করা হয়েছে। তাতে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও সহসাই এ সংকট কাটছে না।
নগরে পানি সরবরাহের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানটি এখন তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে। তাদের আশা, প্রচুর বৃষ্টি হলে গরম কমবে; তাতে করে পানির চাহিদা কমে আসবে। শীত মৌসুমও বেশি দূরে নয়। তখন চাহিদা অনেকটা কমে এলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শেখেরটেকে অবস্থিত পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটিতে মোট ১৪টি সড়ক রয়েছে। এসব সড়ক সংলগ্ন প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই কমবেশি পানির সংকট রয়েছে। তবে ৪, ৫, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর সড়ক এলাকায় দুই মাস ধরে পানির সংকট প্রকট হয়ে উঠেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, গত পাঁচ ধরেই এ এলাকায় পানির সংকট বেড়েছে। বাড়তি টাকা খরচ করে ওয়াসার গাড়ির মাধ্যমে পানি নিতে হচ্ছে। কিন্তু এই সামান্য পানিতে প্রয়োজন মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এখন তো টাকা দিয়েও ওয়াসার পানির গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ ব্যবহারকারীদের নিয়মিতই দিতে হচ্ছে পানির বিল।
পানির এই সংকট নিয়ে কথা হয় পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটির ৫ নম্বর রোডের ৪৪ নম্বর বাড়ির বাসিন্দা আসমা সারমিন লিনার সঙ্গে।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ৫ বছর ধরেই পানির সংকটে আছি। দুই বছর ধরে তা তীব্র আকারে ধারণ করেছে। আর গত দুই মাস তো পানির দেখাই পাই না। অথচ প্রতি মাসেই পানির বিল দিতে হচ্ছে।
‘প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে ওয়াসা থেকে পানির গাড়ি কিনে কোনোরকমে চলছি। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তা-ও আবার নিয়মিত পাই না। আরেক সমস্যা হলো, ওয়াসার গাড়ি থেকে আমরা যে পানি পাই সেটাও ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত। এই পানি দিয়ে গোছল করায় শরীরে এলার্জি দেখা দিয়েছে।’
একই সড়কের ৭৮ নম্বর বাড়ির দারোয়ান আব্দুর গফুর বলেন, ‘বাবারে, এই রোডে সন্ধ্যার পর থেকেই হাহাকার লেগে যায়। অফিস থেকে ফেরার পর যখন পানি পায় না তখন সবাই রাস্তায় নেমে আসে।’
লিনা ও আব্দুর গফুরের মতোই ৪ নম্বর সড়কের বাসিন্দা আবুল বাশার, ৭ নম্বর সড়কের হাফিস মোল্লা ক্ষোভ প্রকাশ করে নিউজবাংলাকে বলে, ‘ভাই, আমরা অসহায়। এই গরমে পানি না থাকলে কিভাবে বেঁচে থাকা যায়? ওয়াসাকে বার বার বলেও লাভ হয়নি। আমরা এখন মাঝে মাঝেই আত্মীয়-স্বজনের বাসায় গিয়ে গোছল করে আসি। আর খাওয়া ও রান্নার জন্য বোতলজাত পানি কিনি। কী করবো, নিজের ফ্ল্যাট ছেড়ে চলে যেতেও পারি না।’
পানির এই সংকট নিয়ে কথা বলতে শ্যামলীতে অবস্থিত পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটির অফিসে গিয়ে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পাওয়া যায়নি।
অফিস সহকারী সুলতান আহম্মেদ বললেন, ‘আমাদের কাছে তো নিয়মিতই পানি নিয়ে অভিযোগ আসে। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। আমরা তো পানি সাপ্লাই দেই না। আমরা বার বার ওয়াসাকে বলেও কিছু করতে পারিনি। বিষয়টি নিয়ে কিছুদিন আগেও আমাদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ওয়াসার এমডির সঙ্গে মিটিং করেছেন। ওয়াসার এমডি বলেছেন যে তারা দ্রুতই ব্যবস্থা নেবেন। এখন দেখি তারা কী ব্যবস্থা নেয়।’
তিনি জানান, মূলত রোডের পেছনের দিকের বাড়িগুলোর বাসিন্দারা বেশি পানির কষ্টে আছেন। কারণ ওয়াসা থেকে যে সামান্য পরিমাণ পানি আসে প্রথম সারির বাড়িগুলো তা মোটর দিয়ে টেনে নেয়। তাই পেছনের বাড়িগুলো পানি পায়ই না বলা যায়। সব মিলিয়ে সোসাইটির দুই থেকে আড়াইশ’ ভবনে পানির সংকট প্রকট। এসব ভবনে হাজারের বেশি পরিবার বসবাস করে।
পিসি কালচার হাউজিং সোসাইটি এলাকাটি ওয়াসার মডস জোন-৩ এর আওতাধীন। এর কার্যালয় লালমাটিয়ায়। এই জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্ত সাহা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূলত গরম বেড়ে যাওয়ায় পানি চাহিদা বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় আমাদের সাপ্লাই কমে গিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে। তবে গত পরশু ওই এলাকায় আমাদের একটা নতুন কূপ চালু হয়েছে। এটা হওয়ার পর পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে সংকট পুরোপুরি কাটেনি।
‘পিসি কালচার এলাকায় মূলত ৪, ৫, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর সড়কে পানির সংকট আছে। কারণ ওই এলাকায় পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানির উৎপাদন কমে গেছে। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু শতভাগ করতে পারছি না। তবে আমরা একটা নতুন জায়গা ঠিক করেছি পাম্প বসানোর জন্য। এটা হয়ে গেলে আশা করি ওই এলাকায় পানির সংকট কেটে যাবে। আশার কথা হলো, গত দুদিন ধরে বৃষ্টি হওয়ায় পানির চাহিদা কিছুটা কমে আসবে। আর শীত মৌসুম চলে এলে তো চাহিদা আরও কমবে।’
পানি না দিয়েও ওয়াসা পানির বিল নিচ্ছে- সোসাইটির বাসিন্দাদের এমন অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওয়াসার এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযোগটি সঠিক নয়। কারণ বিলটা আসে মিটার দেখে। পানি ব্যবহার করলে বিল আসবে, না করলে বিল আসবে না।
‘ভালো করে খোঁজ নিয়ে দেখেন যাদের বিল আসছে তাদের বাসায় পানিও এসেছে। আর যদি সত্যিই এমনটা ঘটে থাকে তাহলে তারা যেন আমাদের রাজস্ব বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করে। কারণ পানির বিলের ব্যাপারটা আমাদের রাজস্ব বিভাগ দেখে।’
ওয়াসার গাড়ি থেকে কেনা পানিতেও ময়লা থাকার অভিযোগও অস্বীকার করেন জয়ন্ত সাহা। তিনি বলেন, ‘গভীর নলকূপ থেকে তুলে সরাসরি গাড়িতে এই পানি সরবরাহ করা হয়। এখানে ময়লা থাকার সুযোগ নেই। এখানে যেটা হয় বাড়ির মালিকরা দীর্ঘদিন পানির হাউজ পরিষ্কার করেন না। সেখানে জমে থাকা আয়রন মিশে পানি ময়লা হয়ে যায়।’
আরও পড়ুন:ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সেলিম (৪৫), রফিক (৪০), সাদ্দাম (৩০), উজ্জ্বল (৩২) ও শামীম (২৫)।
গতকাল সোমবার (৯জুন) মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১জন, মাদক মামলায় ১জন, দূস্যতার মামলায় ১জন এবং অন্যান্য মামলায় ২জন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী থানার মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম রাকিবুল হাসান সানি (২৯)। ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তার ও দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, সানি একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গেল রমজান মাসেও একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র তার ওপর হামলা চালিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এলাকায় পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
গতকাল শনিবার পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে বন্ধ থাকার পর আজ রোববার থেকে ফের চালু হয়েছে মেট্রোরেল। তবে মেট্রোতে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না।
রোববার সকাল ৮টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়।
ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে জানা যায়, আজ (রোববার) প্রতি ৩০ মিনিট পরপর ট্রেন চলছে। আগামীকাল সোমবার থেকে মেট্রোরেল সরকারি ছুটির দিনের সময়সূচি অনুযায়ী চলাচল করবে।
গত মঙ্গলবার ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মেট্রোরেলে কোরবানির পশুর চামড়া, কাঁচা বা রান্না করা মাংস পরিবহন করা যাবে না। মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে যাত্রীদের যথাযথভাবে তল্লাশি করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোনো যাত্রীর কাছে কাঁচা বা রান্না করা মাংস পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিক তার মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ আটকে দেওয়া হবে। মেট্রোরেলের নিরাপত্তা কর্মীদের এসব নির্দেশনা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতেও বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্য