পোশাক কারখানায় আসা ক্রেতাদের ব্যবহারের কথা বলে মাসিক চুক্তিতে ভাড়া নিতেন গাড়ি। পরে মালিকের অজান্তে ওই গাড়ির কাগজ জাল করে বিক্রি করতেন তিনি। লকডাউনে বিআরটিএ কার্যালয় বন্ধ থাকায় গাড়ির কাগজ যাচাই করতে পারতেন না ক্রেতারা। এ কারণে এ সময়কে টার্গেট করে প্রতারণায় নামেন তিনি। গত চার মাসে কয়েক কোটি টাকার মালিকও হয়েছেন।
এমন অভিনব প্রতারণার অভিযোগে আব্দুল কাইয়ুম ছোটন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একই সঙ্গে বিক্রি হওয়া সাতটি গাড়িও উদ্ধার করেছে সংস্থাটি।
সোমবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।
তিনি বলেন, ‘আব্দুল কাইয়ুম ছোটনের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ায়। তিনি কক্সবাজারে প্রত্যাশা নামে একটি এনজিওতে কাজ করতেন। প্রতারণার জন্য সেখান থেকে চাকরিচ্যুত হন। এরপর ঢাকায় এসে গাজীপুর বোটবাজার এলাকায় ‘একে ফ্যাশন’ নামে একটি পোশাক কারখানা চালু করেন।
বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর জানান, ছোটনের ওই পোশাক কারখানার মেশিনগুলো ভাড়া নেয়া ছিল। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তিনি প্রায় ২০০ শ্রমিক নিয়ে পোশাক কারখানাটি চালু করেন। ওই কারখানায় টিশার্ট, পোলো শার্ট, প্যান্ট ও জ্যাকেট তৈরি হতো।
তিনি বলেন, ‘তিন-চার মাস পরে ছোটন ফেসবুকের বিভিন্ন রেন্ট-এ-কারের পেজে গাড়ি ভাড়া নেবেন বলে বিজ্ঞাপন দিতে থাকেন। এর মধ্যে রেন্ট-এ-কার বিডি, রেন্ট-এ-কার গাজীপুর ও রেন্ট-এ-কার ঢাকা পেজে বেশি বিজ্ঞাপন দেন। পোশাক কারখানার ক্রেতাদের ব্যবহারের জন্য ভাড়া করা এসব গাড়ি নেয়া হবে বলে বিজ্ঞাপনে জানান ছোটন।
‘বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহী গাড়ির মালিকরা যোগাযোগ করলে তিনি তাদের গাজীপুরের পোশাক কারখানায় যেতে বলেন। সেখানে মালিকরা গেলে তাদের সঙ্গে ভাড়া ঠিক করা হয়। বিলাসবহুল দামি গাড়ি মাসিক ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেন ছোটন। তবে গাড়ির মালিকদের তিনি শর্ত দেন, ক্রেতাদের নিয়ে যেহেতু রাতে চলাচল করতে হবে, তাই গাড়িটি ছোটনের জিম্মাতেই থাকবে এবং চালকের ব্যবস্থাও ছোটন নিজেই করবেন। গাড়ির মালিকের চালক ছোটন নেবেন না।’
পুলিশ কর্মকর্তা মুক্তা ধর বলেন, ‘ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি ধরলে আসল কাগজপত্র দেখাতে হবে এমন অজুহাতে গাড়ির সব আসল কাগজপত্র রেখে দেন তিনি। ছোটনের কথায় রাজি হয়ে যেসব মালিক গাড়ি মাসিক ভাড়ায় দেন, তাদের প্রথম মাসে ঠিকমতো ভাড়া দিতেন ছোটন। তবে পরের মাস থেকে ভাড়া নিয়ে টালবাহানা শুরু করতেন তিনি। এরপর মালিকানা বদলির জাল স্ট্যাম্প তৈরি করে ওই গাড়িগুলো মালিককে না জানিয়েই বিক্রি করে দিতেন।
তিনি বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে আমরা জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছি, তিনি ২০ থেকে ৩০টি গাড়ি ভাড়া নিয়েছেন। গাড়ির কন্ডিশন দেখে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকায় ভাড়া নেন। সেগুলো পরে নকল কাগজপত্র তৈরি করে কম দামে বিক্রি করে দিয়েছেন। করোনা পরিস্থিতিতে বিআরটিএ অফিস বন্ধ থাকায় ক্রেতারা এসব কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে পারেননি।’
মুক্তা ধর বলেন, ‘আলমগীর নামে এক সহযোগী রয়েছে ছোটনের। তিনি এসব গাড়ি বিক্রি করতে সহযোগিতা করতেন। এ ছাড়া তুরাগ থানার নাজমুল অটোপার্টস সেন্টারও গাড়ি বিক্রি করে দিত। ১৯ লাখের গাড়ি ১৩ থেকে ১৪ লাখ টাকা বিক্রি করা হতো। এই প্রতারণা তারা মার্চ ও এপ্রিল মাসে বেশি করেন।
‘গাড়ি বিক্রির সময় ছোটন ক্রেতাদের বলতেন, পোশাক কারখানার শ্রমিকদের বেতন দিতে হবে, তাই গাড়ি বিক্রি করে দেবেন। এভাবে চার মাসে তিনি ২৫ থেকে ৩০টি গাড়ি বিক্রি করেছেন। পরে গাড়ি বিক্রির ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা নিয়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি।’
তিনি জানান, এসব ঘটনায় গাজীপুর ও ঢাকায় মামলা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা। সিআইডি তদন্তে নেমে চক্রের পুরো সিন্ডিকেটকে গ্রেপ্তার করেছে।
মুক্তা ধর জানান, ছোটনের সহযোগী আব্দুল হাই, আলমগীর, নাজমুল ও সানীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া চোরাই গাড়ি যারা কিনেছেন এদের মধ্যে রানা ও শামীম নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘অনেক ক্রেতা যখন জানতে পেরেছেন তারা চোরাই গাড়ি কিনেছেন, তখন তারা নিজেরাই থানায় জিডি করে এর মালিককে গাড়ি ফেরত দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন:নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার চারটি গ্রামের পাঁচ যুবকের অপহরণের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনো তাদের সন্ধান মেলেনি। অপহৃতদের কেউ বেঁচে আছেন কিনা, নাকি তাঁরা চিরতরে হারিয়ে গেছেন—সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি পরিবার, প্রশাসন কিংবা গোয়েন্দা সংস্থার কাছেও।
২০১৩ সালের ১৯ মে রাতে বড়াইগ্রামের গুরুমশৈল গ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অস্ত্রধারী ১০-১২ জনের একটি দল মাইক্রোবাসে এসে কৃষক কামাল হোসেনকে বাড়ির পাশ থেকে তুলে নেয়। একই রাতে একই কায়দায় অপহরণ করা হয় ওই গ্রামের দিনমজুর ইব্রাহিম তালুকদার এবং পার্শ্ববর্তী মহিষভাঙ্গা গ্রামের ভুটভুটি চালক তৈয়ব আলীকে।
অপহরণের সময় অস্ত্রধারীরা এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং অপহৃতদের মারধর করে তুলে নিয়ে যায়। এর ঠিক দুদিন আগে একই উপজেলার কালিকাপুর গ্রাম থেকে নিখোঁজ হন বিজিবি সদস্য রাসেল গাজী ও তার বন্ধু কাটাশকুল গ্রামের সেন্টু হোসেন। ছুটিতে বাড়ি এসে রাসেল তার বন্ধুর ফোন পেয়ে বের হওয়ার পর থেকেই নিখোঁজ হন দুজনই।
স্বজনরা জানান, অপহরণের পরপরই তারা থানায় জিডি ও মামলার পাশাপাশি প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। কিন্তু তৎকালীন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা দেখা যায়নি। গুরুমশৈল গ্রামের কামালের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এক যুগ হয়ে গেল, আমার ছেলের ছবি বুকে নিয়ে কাঁদি। কে নিল, কেন নিল, কোনো উত্তর নেই।’
নিখোঁজ ইব্রাহিম তালুকদারের মা বলেন, ‘ছেলেকে হারিয়ে আমরা পথে বসেছি। কোনো দিন কেউ খোঁজও নেয়নি।’ রাসেল গাজীর বাবা বলেন, ‘বিজিবির মতো চাকরিতে থেকেও যদি অপহৃত হয়, তবে সাধারণ মানুষের কী হবে?’
নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন বলেন, ‘এই ঘটনার বিষয়ে আমরা নতুন করে তদন্ত শুরু করেছি। ইতোমধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও হাতে এসেছে। আশা করছি, দ্রুতই রহস্য উদঘাটন এবং দায়ীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।’
অপহৃতদের স্বজনরা বলছেন, ‘বর্তমান সরকারের কাছে তারা আকুতি জানাচ্ছেন—তাদের প্রিয়জনেরা জীবিত না থাকলেও অন্তত কী ঘটেছে, কোথায় গেল তারা—সে রহস্য তো উন্মোচিত হোক।’
গৃহস্থদের কাছ থেকে ৭০০-৮০০ টাকায় ৪৫ কেজিতে এক মণ নাক ফজলি আম কিনছেন পাইকারি দোকানিরা। তারা সেই আম ১ হাজার ২০০ টাকায় ৪০ কেজিতে এক মণ বিক্রি করছেন। প্রতি মণ আমে নিচ্ছেন ৫ কেজি ধলতা। এতে গৃহস্থরা ওজনে আর খুচরা আম ক্রেতারা দামে ঠকছেন। পাইকারি বিক্রেতারা প্রতি মণে অর্ধেকেরও বেশি টাকা লাভ করছেন। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরে রেলগেট এলাকায় এভাবেই সিন্ডিকেট করে আম বেচাকেনা হচ্ছে। খুচরা ক্রেতারা ও গৃহস্থরা আম ক্রয়-বিক্রয়ে প্রশাসনের নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।
নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায় প্রচুর নাক ফজলি আমের উৎপাদন। বদলগাছির এই নাক ফজলি আম অনান্য এলাকার চেয়ে সুস্বাদুও। প্রতি বছর আমের মৌসুমে আক্কেলপুর পৌর শহরের কিশোর মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কে আমের পাইকারি বাজার বসে। এবারও আমের পাইকারি বাজার বসছে। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত আম বেচাকেনা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ও পাইকারিরা এসে আম কিনেন।
গৃহস্থ ও খুচরা আম ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে নাক ফজলি আম ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর নাক ফজলি আমের আমদানি বেড়েছে। এ কারণে আমের মণে ৬০০ থেকে ৪০০ টাকা দাম কমেছে। ৪০ কেজিতে মণ হলেও পাইকারিরা গৃহস্থদের কাছে ৪৫ কেজি মণে আম কিনছেন। পাইকারিরা দোকানে সেই আম ১ হাজার ২০০ টাকায় ৪০ কেজিতে মণ বিক্রি করছেন।
বদলগাছির ভাণ্ডারপুর গ্রামের গৃহস্থ মনোয়ার হোসেন বলেন, আক্কেলপুর বাজারে ৮০০ টাকা দরে তিন মণ আম বিক্রি করেছি। তিন মণ আমে আমাকে ১৫ কেজি আম বেশি দিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের কাছে ৪৫ কেজিতে পাইকারিরা আম কিনছেন। এটি চরম অন্যায়। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
খুচরা বিক্রেতা বেলাল হোসেন বলেন, রেলগেট এলাকার দোকান থেকে এক মণ নাক ফজলি আম ১ হাজার ২০০ টাকায় কিনলাম। দোকানিরা প্রতি মণে ৪০০-৫০০ টাকা লাভ করছে। আবার গৃহস্থদের কাছে নেওয়া ওজন দিচ্ছেন না। মৌসুমি আম বিক্রেতা হারুন বলেন, ৪৫ কেজিতে আম বিক্রি হয়। আমরা দূরে নিয়ে গিয়ে আম বিক্রি করি। তবে রেলগেট এলাকার দোকানিরা একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মামুন জমাদ্দার (৪০) নামে এক জেলের জালে ২৩ কেজি ওজনের বিশাল একটি সামুদ্রিক কোরাল মাছ ধরা পড়েছে। পরে মাছটি ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।
গতকাল রোববার সকালে কুয়াকাটা মাছ বাজারের মনি ফিস নামে মৎস্য আড়তে মাছটি বিক্রি করার জন্য আনা হয়। ডাকের মাধ্যমে ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি দরে ২৪ হাজার ১৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন কুয়াকাটা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজ।
জানা গেছে, পটুয়াখালীর মহিপুর সদর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের জেলে মামুন জমাদ্দার ১২ জুন রাতে সমুদ্রে জাল ফেলেন এবং ১৪ জুন রাতে জাল তুললে তিনি তার জালে এই বিশাল আকৃতির সামুদ্রিক কোরাল মাছটি পান।
জেলে মামুন জমাদ্দার বলেন, এত বড় মাছ পাব সেটা ভাবতেও পারিনি। প্রায় দুই মাস মাছ ধরতে পারিনি। কারণ মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল। এই অবরোধের পর মাছটি পেয়ে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছি। মাছটির ক্রেতা কুয়াকাটা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজ বলেন, আমাদের এলাকায় বড় বড় হোটেলগুলোতে সামুদ্রিক বড় কোরাল মাছের চাহিদা রয়েছে। আশা করছি মাছটি বিক্রি করে ভালো টাকা লাভ করতে পারব। তবে এলাকায় বিক্রি না হলে ঢাকায় পাঠিয়ে দেব।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই জেলেদের জালে বড় মাছ ধরা পড়বে। জেলেরা সঠিকভাবে নিষেধাজ্ঞা পালন করেছে বিধায় সামনের দিনগুলোতে তাদের জালে ভালো সংখ্যক মাছ ধরা পড়বে।
দুর্ভোগের আরেক নাম সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী গাবুরা খেয়াঘাটটি। দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ ঝুকি নিয়ে খোলপেটুয়া নদীটি পার হচ্ছে। সংস্কারের অভাবে শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা খেয়াঘাটের বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্থানীয়দের দুর্ভোগ দিনে দিনে চরম আকার ধারণ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটকে পারে, এমন টি জানিয়েছে ভুক্তভোগী মহল।
খোলপেটুয়া নদীর এই ঘাট দুটি বুড়িগোয়ালিনী ও গাবুরা ইউনিয়নে পারাপারের একমাত্র মাধ্যম।
স্থানীয়রা জানান, খেয়াঘাটের খুব খারাপ অবস্থা। প্রবীণ নারী-পুরুষ, গর্ভবতী নারী বা অসুস্থ রোগী ও শিক্ষার্থীদের পারাপারে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। বর্ষাকালে তাদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।
বোট মাঝি আলামিন বলেন, এই ঘাটে আমাদের বোট ধরতে (ঘাটে ভিড়াতে) বেশ সমস্যায় মধ্যে পড়তে হয়। ধরার জন্য ভালো কোন জায়গা নেই। বিশেষ করে ঝড় আর তুফানের সময় বেশ বেগ পেতে হয়। মোটরসাইকেল তোলা খুব কষ্টকর হয়ে যায়। ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম বলেন, নারীদের নৌকায় উঠতে বেশ সমস্যা হয়। কারো সাহায্য ছাড়া ওঠা সম্ভব নয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, বুড়িগোয়ালিনী পাড়ের খেয়াঘাটটি সম্পুর্ন ভাবে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এঘাট দিয়ে ওঠা নামা করার সময় প্রায় সাধারন মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। ওই এলাকার শতশত ভুক্তভোগী মহল বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা খেয়াঘাট সংস্কারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (১৬ জুন) ভোর রাতে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানাগেছে। দৌলতপুর থানার ডিউটি অফিসার এস আই পলাশ প্রতিবেদককে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
আস আই আরও বলেন, উপজেলার হোগলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডি গ্রামে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই মিন্টু চৌধুরীর বাড়ির এরিয়ায় রবিবার দিবাগত ভোর ৪ টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন।
পরিচালিত এ অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক নলয়ালা বন্দুকের ১টি বাট ও ১টি পাইপ, ৪০টি গুলির ঠোশ, ৬টি ফালা (বল্লভ), ৬টি রামদা, ১টি চাকু ও ১টি বন্দুকের পাইপ পরিষ্কার করার ব্রাশ উদ্ধার করা হয়। পরিচালিত অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকৃত অবৈধ দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় দৌলতপুর থানার ডিউটি অফিসার এস আই পলাশ বলেন, পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধারকৃত অবৈধ দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ দৌলতপুর থানায় জব্দ আছে এবং আইনি প্রক্রিয়ায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
ইসরায়েলে আরও এক দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান, এতে অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এ হামলার মধ্য দিয়ে ইসরায়েল-ইরানের চলমান উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৬ জুন) ভোরে এই হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলের জাতীয় জরুরি সেবার কর্মকর্তা মাগেন দাভিদ আদোম এই হতাহতের খবর নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া, এই হামলায় তেল আবিবের মার্কিন দূতাবাসের অবকাঠামোগত সামান্য ক্ষতি হলেও সেখানে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে সামাজিকমাধ্যম এক্সে নিশ্চিত করেছেন মার্কিন দূত মাইক হাকাবি।
এদিকে, ইসরায়েলে প্রায় ১০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার দাবি করেছে তেহরান। ইসরায়েলের চালানো হামলায় ইরানে এ পর্যন্ত ২২৪ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর জবাবেই ইসরায়েলে হামলার কথা জানিয়েছে তেহরান।
এদিকে, সোমবারের হতাহতের পর ইসরায়েলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এই হামলার জবাবে ইরানের কুদস বাহিনীর ১০টি কমান্ড সেন্টার জীবাণুমুক্ত করার জন্য আক্রমণ চালানোর দাবি করেছে তেল আবিব।
কুদস বাহিনী ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ইউনিট, যা বিদেশি অভিযান পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত।
এদিকে, ইরানের হামলায় তেল আবিবের নিকটবর্তী পেতাহ তিকভা শহরে স্থানীয়রা জানান, সেখানে একটি আবাসিক ভবনে সরাসরি আঘাতে কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্ট ও জানালা ভেঙে গেছে।
মাগেন দাভিদ জানান, নিহতদের মধ্যে দুইজন পুরুষ এবং দুইজন বুদ্ধ নারী, সঙ্গে আরও এক ব্যক্তি। এছাড়া আরও ৮৭ জন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে একজন নারী গুরুতর অবস্থায় রয়েছেন।
এর আগে, ইসরায়েল হামলা অব্যাহত রাখলে কোনো যুদ্ধবিরতির কথা বিবেচনা করবে না বলে আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারী কাতার ও ওমানকে স্পষ্ট জানিয়েছে ইরান। তবে অভিযান আরও কঠিন হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় ইসরায়েল। এর জবাবে ইরানও কঠোর প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তেহরান বলেছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তারা ‘নরকের দরজা খুলে দেবে’।
এদিকে, ইরানের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে দেশটিতে ইসরায়েলের হামলায় দুই শতাধিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ২০০ মানুষ।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে রানের রাজধানী তেহরানসহ একাধিক স্থানে হামলা চালায় ইসরায়েল। এই অপারেশনের নাম দেওয়া হয়েছে রাইজিং লায়ন। এর পর পরই পাল্টা হামলা শুরু করে ইরান।
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করে ইসরায়েল। ইরান যাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির শেষ ধাপ পর্যন্ত না পৌঁছাতে পারে, তা নিশ্চিত করতেই এই হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে তেল আবিব।
তবে এ অভিযানকে সম্পূর্ণরূপে বেসামরিক বলে আখ্যা দিয়েছে ইরান। এ ছাড়া, তেহরান পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে না বলে দাবি করেছে তারা।
বাংলাদেশে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রপ্তানি শুরু করেছে নেপাল। গত বছরের ৩ অক্টোবর নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে হওয়া ত্রিপক্ষীয় চুক্তি অনুযায়ী এই বিদ্যুৎ আসছে। গতকাল রোববার থেকে ভারতীয় ট্রান্সমিশন লাইন ব্যবহার করে নেপাল বাংলাদেশে এই বিদ্যুৎ রপ্তানি করছে।
চুক্তি অনুযায়ী, ১৫ জুন থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। ভারতীয় ট্রান্সমিশন চার্জসহ প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম পড়বে প্রায় ৭ টাকা।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান জানান, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ শীতকালে নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে। কারণ, শীতের সময় নেপালের নদীতে ভারী তুষারপাতের কারণে নেপালের জলবিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হয়।
শীতকালে দেশের বিদ্যুৎ ব্যবহার কমে যাওয়ায় নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ একই পরিমাণ বিদ্যুৎ নেপালে রপ্তানি করতে পারে। এতে দুই দেশের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ জ্বালানি বাণিজ্য গড়ে উঠবে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা শীতকালে বাংলাদেশ থেকে নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির প্রস্তাব পাঠাব।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য আমরা নেপালের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে চিঠি পাঠাব, যাতে সম্ভাব্য বিদ্যুৎ রপ্তানি নিয়ে আলোচনা শুরু করা যায়।
এর আগে ২০২৪ সালের ৩ অক্টোবর নেপাল থেকে ভারত হয়ে বিদ্যুৎ আমদানি চূড়ান্ত করতে কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিটি ও ভারতের এনটিপিসি বিদ্যুৎ ব্যবসা নিগম লিমিটেড একটি ত্রিপক্ষীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করে।
মন্তব্য