রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় চার লাখ পশু কোরবানি দেয়া হবে এবার। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পশু জবাই নিয়ে সিটি কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নিয়ে নগরীতে দুই ধরনের চিত্র দেখা গেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও মানুষের সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলা জানতে পেরেছে এবার উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোরবানির জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পশুর বর্জ্য সরানোর জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে দুই সিটি থেকেই। তবে দক্ষিণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্যোগ থাকলেও পশু কোরবানি দেয়ার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়নি।
অন্যদিকে নির্ধারিত স্থান থাকলেও সেখানে অনেকেই পশু নিয়ে যেতে চান না। আবার অভিজাত এলাকায় যেভাবে বর্জ্য সরানো হবে, ঠিক সেভাবে বস্তি বা নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসের এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থাকছে না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে ৩০৭টি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে কোরবানি দেয়ার জন্য। তবে অনেকেই এই বিষয়ে জানলেও তারা নিজেরাই নিজেদের ব্যবস্থাপনায় কোরবানি দিতে চান।
সিটি করপোরেশন থেকে জানান হয়েছে, ৩০৭টি স্থানে নগরবাসীর জন্যে পশু কোরবানি দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রাস্তার ওপর কিংবা ড্রেনের পাশে কোরবানি না করার জন্য বিশেষ সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তারা। এ ছাড়া কোরবানির জন্য সর্বমোট ২৫০ জন ইমাম ও ২৫০ জন মাংস প্রস্ত্ততকারীকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে তারা।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে পশু কোরবানি দেয়ার জন্য কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। তবে পশুর হাটগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সরেজমিনে মাঠপর্যায়ে তদারকির জন্য ১০টি টিম গঠন করা হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে এই টিমগুলো গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, ‘আমরা এবার এটি বাদ দিয়েছি। আমাদের কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। এটা আমাদের করপোরেশনের বোর্ড সভা থেকেই কাউন্সিলরবৃন্দ বাদ দিয়েছেন।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমাদের আগে এমন ব্যবস্থা ছিল। তবে সেখানে কোরবানদাতারা যান না। বরং এটা সমালোচনার খোরাক হয়। এখন এমন জায়গা বানানোর পর সেখানে না গেলে অর্থের অপচয় হয়। এই কারণে আমরা এটাকে বাদ দিয়েছি।’
উত্তর সিটি করপোরেশনে এমন উদ্যোগ থাকলেও বাসিন্দাদের অনেকেই জানিয়েছেন তারা সেখানে যাবেন না। এর কারণ হিসেবে কোরবানিদাতাদের অনেকেই জানিয়েছেন পশু জবাইয়ের সময় তারা পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্যে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এ জন্য অনেকেই বাসার আঙিনায় কোরবানি দিয়ে থাকেন।
রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে বুধবার কোরবানি দেয়া হবে। নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষের বাস এই বস্তিতে। একা একটি পশু কোরবানি দেয়ার সামর্থ্য না থাকলেও অনেকে মিলে ভাগাভাগি করে কোরবানি দেবেন তারা। আবার অনেকে আজই গরু জবাই করেছেন।
প্রশ্ন ছিল আজ ও কাল মিলিয়ে বস্তিতে এত বর্জ্য তৈরি হলে সেগুলো কীভাবে তারা সরাবেন।
কড়াইল বস্তিতে মঙ্গলবারও অনেকেই পশু জবাই করেছেন। এমন একজন জামাল হাসান। অনেকেই তার সঙ্গে রয়েছেন।
কীভাবে কোরবানি দেবেন জানতে চাইলে জামাল বলেন, ‘আমরা নিজেরাই কোরবানি দেব। মঙ্গলবার একটা গরু জবাই করেছি ভাগাভাগি করে।’
সিটি করপোরেশন থেকে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সেটি জানেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলনে, ‘আমরা জানি। তবে আমরা এখানেই পশু জবাই করেছি। এই এলাকায় যারা কোরবানি দেবে তারা নিজেদের বাড়িতে দেবে। তবে জবাইয়ের জন্য তারা কোনও কসাই ভাড়া নেননি। নিজেরাই নিজেদের ব্যবস্থাপনায় পশু জবাই দিয়েছেন।’
সিটি করপোরেশন থেকে কোরবানির আগে কী ধরনের সুবিধা পান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো তেমন কিছু বলা হয় না। আমরা কোরবানি বা পশু জবাই দেয়ার পর নিজেরাই তা পরিষ্কার করে থাকি। রাস্তার পাশে বস্তায় ময়লা ভরে রেখে দিলে তা সিটি করপোরেশনের গাড়ি এসে নিয়ে যায়। এইটুকুই।’
একই রকম কথা জানালেন মো. আনোয়ার। নিজের ব্যবস্থাপনায় তিনি কোরবানি দেবেন। সেটি তিনি তার বাড়িতে দেবেন। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত জায়গা সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তেমন কিছু তিনি জানেন না। তিনিও রাস্তার পাশে বস্তায় বর্জ্য ফেলে রাখবে। গাড়ি এসে নিয়ে যাবে।
বস্তির এসব লোক কোরবানির এত ব্যবস্থাপনা নিয়ে ধারণা না রাখলেও সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে খুশি রাজধানীর অভিজাত এলাকার বাসিন্দারা।
বনানী এলাকায় একটি আবাসিক ভবনের ম্যানেজার মো. রনি নিউজবাংলাকে বলেন, তার ভবনে ১৪টি গরু ও ১৬টি ছাগল কোরবানি দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সিটি করপোরেশন থেকে সব ধরনের সুবিধা দেয়া হয়েছে। বস্তা, পলিথিন, ব্লিচিং পাউডার পেয়েছি। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের টিম মাঠে আছে। প্রতিনিয়ত খোঁজ নিচ্ছে। তবে তারা সব পশু নিজেদের ভবনে থাকা গ্যারেজে কোরবানি দেবেন।’
রনি বলেন, বেইজমেন্টেই কোরবানি দেয়া হবে। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানগুলো অনেক দূরে। কোরবানির পশুর মাংস ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনা-নেওয়ায় কষ্ট হয়ে যাবে।
উত্তর সিটি করপোরেশনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ভিড় করেছেন অনেকেই। যারা কোরবানির বর্জ্য অপসারণসহ অন্যান্য বিষয়ের জানতে সিটি করপোরেশনে ভিড় করেছেন।
মিরপুর থেকে নিজের গাড়ি নিয়ে সিটি করপোরেশনে এসেছেন তানভীর। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা জীবাণুনাশক থেকে শুরু করে বস্তা, পলিথিন, ব্লিচিং পাউডার নিয়েছি এখান থেকে। আমরা আমাদের বাড়িতেই কোরবানি দিব। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানগুলো বাসা থেকে দূরে। কোরবানির পশুর মাংস ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে ঝামেলা হয়।’
তানভীর বলেন, ‘আমাদের এলাকায় কমিশনার নিজে কোরবানির বিষয়ে তদারকি করছেন। এইগুলো যা নিয়ে যাচ্ছি সেগুলো দিয়ে প্রয়োজন না সারলে আবারও বেশি করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।’
কী ব্যবস্থা নিয়েছে সিটি করপোরেশন
ডিএসসিসি থেকে জানা গেছে, ৯০টি খোলা ট্রাক, ৫৩টি কম্পেক্টর, ১২টি পানির গাড়ি, ১০২টি ডাম্প ট্রাক, ১৪টি পে-লোডার, ৮১টি কনটেইনার ক্যারিয়ার, ৯টি টায়ার ডোজার, ২টি ট্রেইলার, ৯টি স্কিড লোডারসহ প্রায় পৌনে ৪০০ যান-যন্ত্রপাতি মাঠপর্যায়ে বর্জ্য সরানোর কার্যক্রমে যুক্ত থাকবে।
আবু নাসের জানান, তাদের নিয়মিত ৫ হাজার কর্মীর পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও ৫ হাজার কর্মী কোরবানির পশুর বর্জ্য সরানোর কাজে নিযুক্ত থাকবেন। পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রতি কাউন্সিলরকে ১ হাজার করে এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের ১ হাজার ৫০০টি পরিবেশবান্ধব ব্যাগ দেয়া হয়েছে। এসব থলে যারা কোরবানি করবেন তাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। পশুর বর্জ্য সেসব ব্যাগের মধ্যে ভরে তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করপোরেশনের নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গের কাছে হস্তান্তর করবেন।
পরিবেশ সুরক্ষা ও দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে প্রায় ৩০ টন ব্লিচিং পাউডার ও ১ হাজার ৮০০ লিটার তরল জীবাণুনাশক ছিটানো হবে।
অন্যদিকে উত্তরের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, ঈদ উপলক্ষে বর্জ্য পরিবহন সক্ষমতা কমপক্ষে ১০ হাজার টনে উন্নীতকরণে প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ঈদের আগের দিন থেকে ঈদের পরবর্তী দুই দিন নিরবচ্ছিন্নভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য বর্জ্যবাহী ড্রাম্প ট্রাক (খোলা ট্রাক), ভারী যান-যন্ত্রপাতি, পানির গাড়ি, বেসরকারি এবং ভাড়ায় পিকআপ ভ্যানসহ সর্বমোট ৪৯৩টি গাড়ি নিয়োজিত থাকবে।
এ ছাড়া ১১টি ওয়াটার বাউজার দিয়ে তরল জীবাণুনাশক মিশ্রিত পানি স্প্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া কাউন্সিলরদের সাড়ে ৬ লাখ ব্যাগ, ৫০ টন ব্লিচিং পাউডার, ৫ হাজার ক্যান (প্রতিটি ৫ লিটার) স্যাভলন দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, ‘পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশ একটি অমিত সম্ভাবনাময় দেশ। ষড়ঋতুর এ দেশকে প্রকৃতি যেমন দুহাত ভরে তার বৈচিত্র্যময় সম্পদ ঢেলে দিয়েছে, তেমনি এদেশের মেহনতি মানুষ তাদের আপন শৈল্পিক কারুকার্যের মাধ্যমে অনন্যসাধারণ সামগ্রী প্রস্তুত করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম ও খ্যাতি বৃদ্ধি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘মাটি, বায়ু, পানি, পরিবেশ, কারিগরদের দক্ষতা প্রভৃতি স্বতন্ত্র ও অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে ছোট এ ভূখণ্ডের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভৌগলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব পণ্যকে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের পাশাপাশি এর গুণগত মান ও টেকসই সংরক্ষণের দিকে নজর দিতে হবে।’
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বেইলি রোডে বাংলাদেশ ফরিন সার্ভিস অ্যাকাডেমির মাল্টিপারপাস হলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর (ডিপিডিটি) আয়োজিত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল শাড়ি, গোপালগঞ্জের রসগোল্লা ও নরসিংদীর অমৃত সাগর কলাসহ ১৪টি ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের নিবন্ধন সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিল্পমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
ডিপিডিটির মহাপরিচালক মো. মুনিম হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা দেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা, ফরিন সার্ভিস অ্যাকাডেমির রেক্টর রাষ্ট্রদূত মাশফী বিনতে শামস ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা।
মন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জিআই পণ্যের প্রচার ও প্রসারে আমাদের এখনই কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিতে হবে। বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসমূহ, দেশের সকল আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কেন্দ্রীয়ভাবে এসব পণ্য প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করতে হবে। তাছাড়া দেশে-বিদেশে বিভিন্ন মেলায় জিআই পণ্যসমূহ প্রদর্শন করা যেতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ডিপিডিটি, বিসিক ও এসএমই ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এসব পণ্যের উন্নয়ন ও প্রসারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।’
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কোনো খালি বাস্কেট নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ ভরা বাস্কেট। আমাদের সম্পদের কোনো অভাব নেই, শুধু প্রয়োজন এর সদ্ব্যবহারের। প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা, কারিগরি সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এসব সম্পদ ও পণ্যের প্রচার-প্রসার ঘটাতে হবে।’
জ্যেষ্ঠ শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে জিআই হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে এমন ৫০০টি পণ্যের প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছি। একটু দেরিতে হলেও আমরা এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় আমরা ২০১৩ সালে ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (নিবন্ধন ও সুরক্ষা) আইন প্রণয়ন করি এবং পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এ সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের জিআই পণ্যকে সুরক্ষা দিতে হবে এবং একই সঙ্গে এর পেটেন্ট দিতে হবে। জিআই পণ্যের প্রচার-প্রসারে বিভিন্ন উৎসব, পালাপার্বণ ও রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে এসব পণ্যকে আমরা উপহার হিসেবে প্রদান করতে পারি। তাছাড়া এসব পণ্য সম্পর্কে টিভিসি (বিজ্ঞাপন), ডকুমেন্টারি তৈরি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।’
অনুষ্ঠানে টাঙ্গাইল শাড়িসহ বাংলাদেশের মোট ১৪টি ঐতিহ্যবাহী পণ্যকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে সনদ প্রদান করা হয়।
সেগুলো হলো যথাক্রমে- গোপালগঞ্জের রসগোল্লা, নরসিংদীর অমৃত সাগর কলা, টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, বাংলাদেশের ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল, রংপুরের হাঁড়িভাঙ্গা আম, মৌলভীবাজারের আগর, মৌলভীবাজারের আগর আতর, মুক্তাগাছার মণ্ডা, যশোরের খেজুরের গুড়, রাজশাহীর মিষ্টি পান এবং জামালপুরের নকশিকাঁথা।
এ নিয়ে ডিপিডিটি কর্তৃক জিআই সনদপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী পণ্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩১টিতে।
আরও পড়ুন:প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, আসন্ন উপজেলা নির্বাচন ব্যর্থ হলে ৭ জানুয়ারি (দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন) যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেটি ব্যর্থ হবে।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে মাঠ প্রশাসনের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বিষয় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
সিইসি বলেন, ‘দেশের নির্বাচনে আবেগ-অনুভূতির জন্য কিছুটা বিশৃঙ্খলা হয়। ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে হবে। এই নির্বাচনে ব্যর্থ হলে বিগত সংসদ নির্বাচনে যে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তা ক্ষুণ্ন হতে পারে। বাংলাদেশে গণতন্ত্র আছে, তা সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে প্রমাণ করতে হবে।’
সভায় দেশের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ স্বরাষ্ট্র ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক জয় চৌধুরীর নেতৃত্বে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন সাংবাদিকরা।
টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের (টিসিএ) উদ্যোগে বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ, ডিইউজে সভাপতি সাজ্জাদ আলম তপু ও সোহেল হায়দার চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বাচসাস সভাপতি রাজু আলীম, সাধারণ সম্পাদক রিমন মাহফুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা নানা ক্ষেত্রে আজ নির্যাতিত। তারা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। চলচ্চিত্রে যারা অভিনয় করেন তাদেরকে আমরা মননশীল মনে করি। কিন্তু তারা যখন মাস্তানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন, তখন তারা সমাজে কী বার্তা দেন?
নারকীয় এই হামলায় নেতৃত্ব দেয়া জয় চৌধুরী, শিবা শানু ও আলেকজান্ডার বোসহ হামলায় জড়িত সবাইকে শিল্পী সমিতির সদস্যপদ বাতিলসহ আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
মানববন্ধনে আরও অংশ নেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন বিটের সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে শিবা শানু, জয় চৌধুরী ও আলেকজান্ডার বোর নেতৃত্বে সাংবাদিকদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রায় ২০ জন সাংবাদিক আহত হন। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন চারজন।
তদন্ত কমিটি
এদিকে হামলার ঘটনা তদন্তে ১১ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি ও সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে পাঁচ জন করে রাখা হয়েছে। আর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন প্রযোজক আরশাদ আদনান।
দশজনের তদন্ত কমিটিতে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে লিমন আহমেদ, রাহাত সাইফুল, আহমেদ তৌকির, বুলবুল আহমেদ জয় ও আবুল কালাম এবং শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে মিশা সওদাগর, ডি এ তায়েব, নানাশাহ, রুবেল ও রত্না রয়েছেন।
আরও পড়ুন:উপজেলা নির্বাচন থেকে মন্ত্রী ও এমপিদের স্বজনরা সরে না দাঁড়ালে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বুধবার দলের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
কাদের বলেন, ‘দলীয় সংসদ সদস্য এবং মন্ত্রীদের নিকটাত্মীয় এবং স্বজনদের প্রার্থী না হতে দলীয় যে নির্দেশনা, তা না মানলে সময়মতো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাচনের প্রথম পর্যায়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় পেরিয়ে গেছে। এদের মধ্যে অনেকেই বলেছেন যে, আমরা বিষয়টি আরও আগে অবহিত হলে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হতো। তারপরও কেউ কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, কেউ কেউ করেননি।
‘নির্বাচন কমিশনে সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে কেউ ইচ্ছা করলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারেন। এ বিষয়টা চূড়ান্ত হতে নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। এখানে কেউ অমান্য করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে দলে; সময়মতো সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে কাদের বলেন, ‘আমাদের দলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনের বিষয়টি আছে। দল যার যার কর্মকাণ্ড বিবেচনায় বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিয়ে থাকে। চূড়ান্ত পর্যায়ে যারা প্রত্যাহার করবে না, এ ব্যাপারে দলের সিদ্ধান্ত সময়মতো নেয়া হবে।’
চূড়ান্ত পর্যায়ে এসেও কেউ প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কি না, এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ ক্ষমা একটা বিশেষ পরিস্থিতিতে দলীয় রণকৌশল। সেটা হতেই পারে। সেটা দলের সভাপতি নিতে পারেন। নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সুযোগ আছে।’
বিএনপির সমাবেশের দিনে আওয়ামী লীগেরও সমাবেশ থাকে—সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির সন্ত্রাস থেকে জনগণকে রক্ষায় কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। বিএনপি একতরফা সমাবেশ করতে গেলে সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাসের আশঙ্কা থেকেই যায়। জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকারি দল হিসেবে আমাদের দায়িত্ব আছে।
‘আমরা মাঠে থাকলে তারা এসব অপকর্ম করতে মানসিকভাবে চাপে থাকবে। সে জন্য আমরা কর্মসূচি দিই। বিএনপির চোরাগোপ্তা হামলা প্রতিহত করতে জনগণের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন:গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি কাজের জন্য বুধবার তিন ঘণ্টা রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাস থাকবে না।
এদিন দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করবে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, যেসব এলাকায় সব শ্রেণির গ্রাহকদের গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে সেগুলো হলো- শনির আখড়া, বড়ইতলা, ছাপড়া মসজিদ, দনিয়া, জুরাইন, ধোলাইরপাড় ও কদমতলী।
আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহে চাপ কম থাকতে পারে জানিয়ে গ্রাহকদের সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তিতাস গ্যাস।
রাজধানীর সদরঘাটের শ্যামবাজার ঘাটে একটি লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ওই আগুনের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এমভি বাঙালি নামের লঞ্চটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।
ফায়ার সার্ভিসের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানিয়েছেন, দুপুর ১টা ৫ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চারটি ইউনিট। পরে যোগ দেয় আরও একটি ইউনিট।
তিনি জানান, দুপুর পৌনে ২টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। লঞ্চটির তৃতীয় তলায় আগুনের সূত্রপাত। আগুনের কারণ ও বিস্তারিত তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, লঞ্চটি নোঙর করা ছিল। হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে (পিএমও) গেছেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
মঙ্গলবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। খবর বাসসের
তারা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হবেন। পরে তারা দুই দেশের মধ্যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর প্রত্যক্ষ করবেন।
পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত ভিজিটরস বুকেও সই করবেন। এরপর তিনি বঙ্গভবনে যাবেন যেখানে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতার আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছেন।
সন্ধ্যায় আমির একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির সোমবার দু দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা এসেছেন।
মন্তব্য