রাত পোহালেই পবিত্র ঈদুল আজহা। রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় চার লাখ পশু কোরবানি দেয়া হবে এবার। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পশু জবাই নিয়ে সিটি কর্তৃপক্ষের উদ্যোগ নিয়ে নগরীতে দুই ধরনের চিত্র দেখা গেছে।
মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও মানুষের সঙ্গে কথা বলে নিউজবাংলা জানতে পেরেছে এবার উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কোরবানির জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে পশুর বর্জ্য সরানোর জন্য ব্যাপকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে দুই সিটি থেকেই। তবে দক্ষিণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে উদ্যোগ থাকলেও পশু কোরবানি দেয়ার জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়নি।
অন্যদিকে নির্ধারিত স্থান থাকলেও সেখানে অনেকেই পশু নিয়ে যেতে চান না। আবার অভিজাত এলাকায় যেভাবে বর্জ্য সরানো হবে, ঠিক সেভাবে বস্তি বা নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসের এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থাকছে না।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে ৩০৭টি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে কোরবানি দেয়ার জন্য। তবে অনেকেই এই বিষয়ে জানলেও তারা নিজেরাই নিজেদের ব্যবস্থাপনায় কোরবানি দিতে চান।
সিটি করপোরেশন থেকে জানান হয়েছে, ৩০৭টি স্থানে নগরবাসীর জন্যে পশু কোরবানি দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। রাস্তার ওপর কিংবা ড্রেনের পাশে কোরবানি না করার জন্য বিশেষ সচেতনতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে তারা। এ ছাড়া কোরবানির জন্য সর্বমোট ২৫০ জন ইমাম ও ২৫০ জন মাংস প্রস্ত্ততকারীকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে তারা।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) থেকে পশু কোরবানি দেয়ার জন্য কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। তবে পশুর হাটগুলোর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সরেজমিনে মাঠপর্যায়ে তদারকির জন্য ১০টি টিম গঠন করা হয়েছে। আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে করপোরেশনের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সমন্বয়ে এই টিমগুলো গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের বলেন, ‘আমরা এবার এটি বাদ দিয়েছি। আমাদের কোনো নির্ধারিত স্থান নেই। এটা আমাদের করপোরেশনের বোর্ড সভা থেকেই কাউন্সিলরবৃন্দ বাদ দিয়েছেন।’
এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমাদের আগে এমন ব্যবস্থা ছিল। তবে সেখানে কোরবানদাতারা যান না। বরং এটা সমালোচনার খোরাক হয়। এখন এমন জায়গা বানানোর পর সেখানে না গেলে অর্থের অপচয় হয়। এই কারণে আমরা এটাকে বাদ দিয়েছি।’
উত্তর সিটি করপোরেশনে এমন উদ্যোগ থাকলেও বাসিন্দাদের অনেকেই জানিয়েছেন তারা সেখানে যাবেন না। এর কারণ হিসেবে কোরবানিদাতাদের অনেকেই জানিয়েছেন পশু জবাইয়ের সময় তারা পরিবার-পরিজনের সান্নিধ্যে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এ জন্য অনেকেই বাসার আঙিনায় কোরবানি দিয়ে থাকেন।
রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে বুধবার কোরবানি দেয়া হবে। নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষের বাস এই বস্তিতে। একা একটি পশু কোরবানি দেয়ার সামর্থ্য না থাকলেও অনেকে মিলে ভাগাভাগি করে কোরবানি দেবেন তারা। আবার অনেকে আজই গরু জবাই করেছেন।
প্রশ্ন ছিল আজ ও কাল মিলিয়ে বস্তিতে এত বর্জ্য তৈরি হলে সেগুলো কীভাবে তারা সরাবেন।
কড়াইল বস্তিতে মঙ্গলবারও অনেকেই পশু জবাই করেছেন। এমন একজন জামাল হাসান। অনেকেই তার সঙ্গে রয়েছেন।
কীভাবে কোরবানি দেবেন জানতে চাইলে জামাল বলেন, ‘আমরা নিজেরাই কোরবানি দেব। মঙ্গলবার একটা গরু জবাই করেছি ভাগাভাগি করে।’
সিটি করপোরেশন থেকে যে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, সেটি জানেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলনে, ‘আমরা জানি। তবে আমরা এখানেই পশু জবাই করেছি। এই এলাকায় যারা কোরবানি দেবে তারা নিজেদের বাড়িতে দেবে। তবে জবাইয়ের জন্য তারা কোনও কসাই ভাড়া নেননি। নিজেরাই নিজেদের ব্যবস্থাপনায় পশু জবাই দিয়েছেন।’
সিটি করপোরেশন থেকে কোরবানির আগে কী ধরনের সুবিধা পান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের তো তেমন কিছু বলা হয় না। আমরা কোরবানি বা পশু জবাই দেয়ার পর নিজেরাই তা পরিষ্কার করে থাকি। রাস্তার পাশে বস্তায় ময়লা ভরে রেখে দিলে তা সিটি করপোরেশনের গাড়ি এসে নিয়ে যায়। এইটুকুই।’
একই রকম কথা জানালেন মো. আনোয়ার। নিজের ব্যবস্থাপনায় তিনি কোরবানি দেবেন। সেটি তিনি তার বাড়িতে দেবেন। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত জায়গা সম্পর্কে তার কোনো ধারণা নেই। তবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে তেমন কিছু তিনি জানেন না। তিনিও রাস্তার পাশে বস্তায় বর্জ্য ফেলে রাখবে। গাড়ি এসে নিয়ে যাবে।
বস্তির এসব লোক কোরবানির এত ব্যবস্থাপনা নিয়ে ধারণা না রাখলেও সিটি করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা নিয়ে খুশি রাজধানীর অভিজাত এলাকার বাসিন্দারা।
বনানী এলাকায় একটি আবাসিক ভবনের ম্যানেজার মো. রনি নিউজবাংলাকে বলেন, তার ভবনে ১৪টি গরু ও ১৬টি ছাগল কোরবানি দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সিটি করপোরেশন থেকে সব ধরনের সুবিধা দেয়া হয়েছে। বস্তা, পলিথিন, ব্লিচিং পাউডার পেয়েছি। এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের টিম মাঠে আছে। প্রতিনিয়ত খোঁজ নিচ্ছে। তবে তারা সব পশু নিজেদের ভবনে থাকা গ্যারেজে কোরবানি দেবেন।’
রনি বলেন, বেইজমেন্টেই কোরবানি দেয়া হবে। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানগুলো অনেক দূরে। কোরবানির পশুর মাংস ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আনা-নেওয়ায় কষ্ট হয়ে যাবে।
উত্তর সিটি করপোরেশনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে ভিড় করেছেন অনেকেই। যারা কোরবানির বর্জ্য অপসারণসহ অন্যান্য বিষয়ের জানতে সিটি করপোরেশনে ভিড় করেছেন।
মিরপুর থেকে নিজের গাড়ি নিয়ে সিটি করপোরেশনে এসেছেন তানভীর। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা জীবাণুনাশক থেকে শুরু করে বস্তা, পলিথিন, ব্লিচিং পাউডার নিয়েছি এখান থেকে। আমরা আমাদের বাড়িতেই কোরবানি দিব। সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত স্থানগুলো বাসা থেকে দূরে। কোরবানির পশুর মাংস ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে ঝামেলা হয়।’
তানভীর বলেন, ‘আমাদের এলাকায় কমিশনার নিজে কোরবানির বিষয়ে তদারকি করছেন। এইগুলো যা নিয়ে যাচ্ছি সেগুলো দিয়ে প্রয়োজন না সারলে আবারও বেশি করে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তারা।’
কী ব্যবস্থা নিয়েছে সিটি করপোরেশন
ডিএসসিসি থেকে জানা গেছে, ৯০টি খোলা ট্রাক, ৫৩টি কম্পেক্টর, ১২টি পানির গাড়ি, ১০২টি ডাম্প ট্রাক, ১৪টি পে-লোডার, ৮১টি কনটেইনার ক্যারিয়ার, ৯টি টায়ার ডোজার, ২টি ট্রেইলার, ৯টি স্কিড লোডারসহ প্রায় পৌনে ৪০০ যান-যন্ত্রপাতি মাঠপর্যায়ে বর্জ্য সরানোর কার্যক্রমে যুক্ত থাকবে।
আবু নাসের জানান, তাদের নিয়মিত ৫ হাজার কর্মীর পাশাপাশি অতিরিক্ত আরও ৫ হাজার কর্মী কোরবানির পশুর বর্জ্য সরানোর কাজে নিযুক্ত থাকবেন। পাশাপাশি ঈদ উপলক্ষে ইতোমধ্যে প্রতি কাউন্সিলরকে ১ হাজার করে এবং আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের ১ হাজার ৫০০টি পরিবেশবান্ধব ব্যাগ দেয়া হয়েছে। এসব থলে যারা কোরবানি করবেন তাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। পশুর বর্জ্য সেসব ব্যাগের মধ্যে ভরে তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে করপোরেশনের নির্ধারিত ব্যক্তিবর্গের কাছে হস্তান্তর করবেন।
পরিবেশ সুরক্ষা ও দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে প্রায় ৩০ টন ব্লিচিং পাউডার ও ১ হাজার ৮০০ লিটার তরল জীবাণুনাশক ছিটানো হবে।
অন্যদিকে উত্তরের জনসংযোগ কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, ঈদ উপলক্ষে বর্জ্য পরিবহন সক্ষমতা কমপক্ষে ১০ হাজার টনে উন্নীতকরণে প্রয়োজনীয় যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ঈদের আগের দিন থেকে ঈদের পরবর্তী দুই দিন নিরবচ্ছিন্নভাবে বর্জ্য অপসারণের জন্য বর্জ্যবাহী ড্রাম্প ট্রাক (খোলা ট্রাক), ভারী যান-যন্ত্রপাতি, পানির গাড়ি, বেসরকারি এবং ভাড়ায় পিকআপ ভ্যানসহ সর্বমোট ৪৯৩টি গাড়ি নিয়োজিত থাকবে।
এ ছাড়া ১১টি ওয়াটার বাউজার দিয়ে তরল জীবাণুনাশক মিশ্রিত পানি স্প্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া কাউন্সিলরদের সাড়ে ৬ লাখ ব্যাগ, ৫০ টন ব্লিচিং পাউডার, ৫ হাজার ক্যান (প্রতিটি ৫ লিটার) স্যাভলন দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল করা না হলে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম। তাছাড়া, অধ্যাদেশটি বাতিল না হওয়ার পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথাও জানান তিনি।
বুধবার (১৮ জুন) সচিবালয়ের ৬ নম্বর ভবনের নিচে মন্ত্রণালয়ের নতুন ভবনের নিচে আন্দোলনকালে এসব কথা জানান তিনি।
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আট বিভাগে সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গেছে। আলোচনার নামে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আস্থা ভঙ্গ করেছেন, বিশ্বাস নষ্ট করেছেন। আমরা চাই আমাদের ৫০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়া হোক। এ ছাড়া যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলা রয়েছেন, তাদের তাড়াতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সরকারি কর্মচারী, আমরা নিয়ম-শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী। অধ্যাদেশ বাতিল না হলে রবিবার (২২ জুন) আরও বৃহত্তর আন্দোলন আসবে।’
এর আগে, চাকরি অধ্যাদেশ পুরোপুরি বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের সভাপতি মো. বাদিউল কবীর।
গত ২২ মে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের পর সরকারি চাকরি অধ্যাদেশের খসড়া বাতিলের দাবিতে গত ২৪ মে আন্দোলনে নামেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা।
কর্মচারীদের আন্দোলনের মধ্যেই ২৫ মে রাতে এই অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। অধ্যাদেশ অনুযায়ী, চার ধরনের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধের জন্য বিভাগীয় মামলা ছাড়াই শুধু কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
সরকারি কর্মচারীরা অধ্যাদেশটিকে নিবর্তনমূলক ও কালো আইন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এটি বাতিল করার জন্য সচিবালয়ে বিক্ষোভ মিছিল, কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ছাড়াও আজ (বুধবার) সমাজকল্যাণ উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।
ঈদুল আজহায় টানা ছুটির মাঝে বৃষ্টি হওয়ায় ঢাকার বাতাস মোটামুটি স্বাস্থ্যকর ছিল। তবে গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিহীন শুষ্ক পরিবেশ আর ক্রমেই রাজধানীর পুরনো ভিড় বাড়তে থাকায় দূষণও বাড়ছে সমান তালে।
রবিবার (১৫ জুন) সকাল ৯টার দিকে দেখা যায়, বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় ফের শীর্ষস্থানগুলোতে জায়গা করে নিয়েছে ঢাকা। এ সময়ে ১৪২ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় দূষিত বাতাসের শহর ছিল বাংলাদেশের রাজধানী, সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য যা অস্বাস্থ্যকর।
এ সময় ১৫৩ স্কোর নিয়ে শীর্ষ দূষিত শহর ছিল ইন্দোনেশিয়ার মেদান। এ ছাড়া ১২৬ ও ১২৪ স্কোর নিয়ে ঢাকার পরেই ছিল যথাক্রমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও মিসরের কায়রো।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদের’ এক পরিবেশকের এক কোটি ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা ৫২ মিনিটে উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর সড়কে এই ঘটনা ঘটেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানায়, ‘আব্দুল খালেক নয়ন নগদের একজন পরিবেশক। তিনি উত্তরা ১৩ নম্বর সেক্টরের একটি ফ্লাটে থাকেন। শনিবার সকালে তিনি তার চারজন এমপ্লয়িকে দুইটি মোটরসাইকেলযোগে বাসার পাশেই পরিবেশক অফিসে পাঠাচ্ছিলেন। সাথে এক কোটি টাকার বেশি ছিল।’
‘তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল দুটি বারো নম্বর রোড ক্রস করে যখন তেরো নম্বর রোডে ঢুকছিল, তখন ওৎপেতে থাকা একটি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস তাদের গতি রোধ করে। মাইক্রোবাস থেকে র্যাবের পোশাক পরিহিত তিন থেকে চারজন নেমে এসে টাকার ব্যাগ বহনকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের ধাওয়া করে।’
পুলিশ আরও জানায়, এদের মধ্যে একজন আরোহী দৌড়ে পালিয়ে গেলেও তিনজনকে টাকার ব্যাগসহ তারা মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তারা উত্তরা সতেরো নম্বর সেক্টরে নগদ মাইক্রোবাস থেকে তাদের ফেলে দিয়ে টাকার ব্যাগ সহ পালিয়ে যায়।
যোগাযোগ করা হলে উত্তরা ডিভিশনের ডেপুটি কমিশনার মইদুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, ‘ঘটনার পরপরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সিসিটিভির ফোটেজ সংগ্রহ করেছেন। ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’
ঈদ উপলক্ষে লম্বা ছুটিতে বেশ কিছুদিন ধরে একপ্রকার ফাঁকা হয়ে গেছে শহর ঢাকা। সড়কগুলোতে নেই যানবাহনের চাপ; স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতও বন্ধ; রাস্তায় লোকজনও হাতেগোনা। এই অবস্থায় গত কয়েকদিন বৃষ্টি কমে গেলেও রাজধানীর বাতাসের মানে খুব বেশি অবনতি হয়নি।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকাল ১০টার দিকে ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল মাত্র ৬৬। আর দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান আরও অবাক হওয়ার মতো। প্রতিনিয়ত বায়ুদূষণে শীর্ষ শহরগুলোর তালিকায় জায়গা করে নিলেও ঢাকার অবস্থান আজ ৫৫তম।
কণা দূষণের একিউআই মান যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’। ঢাকার বাতাস আজ মাঝারি হলেও ‘ভালো’ থেকে খুব বেশি দূরে নয়।
এই সময়ে ৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত শহরের তালিকার ৫২তম স্থানে ছিল স্পেনের বার্সেলোনা, ৫০তম স্থানে সুইজারল্যান্ডের বেয়ার্ন, ৬৮ স্কোর নিয়ে ৪৯তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের সল্ট লেক সিটি, ৭০ ও ৭১ স্কোর নিয়ে ৪৪ ও ৪৩তম স্থানে নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসি, ৭৩ স্কোর নিয়ে ৩৮তম স্থানে কানাডার টরেন্টো, ৮০ স্কোর নিয়ে ২৭তম দূষিত শহর শিকাগো, ৯৯ স্কোর নিয়ে ১৫তম স্থানে ইতালির রোম এবং ১২৮ স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে রয়েছে মিলান।
তবে ১৬৮ একিউইউ স্কোর নিয়ে এই সময়ে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত শহর ছিল ভারতের দিল্লি। ১৬২, ১৫৬ ও ১৩৭ স্কোর নিয়ে এর পরের তিন দূষিত শহর যথাক্রমে ইরাকের বাগদাদ, পাকিস্তানের লাহোর ও সৌদি আরবের রিয়াদ।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
ঢাকা দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
এডিস মশার বিস্তার রোধে তাৎক্ষণিক ফল পেতে ১৪ জুন থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন(ডিএসসিসি) এলাকায় দ্বিগুণহারে কীটনাশক প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
এডিস মশার বিস্তার রোধে করণীয় নির্ধারণ ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও করোনা প্রতিরোধে ডিএসসিসি প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর ওয়াসা ভবনের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় অ্যাডাল্টিসাইডিং কার্যক্রমে (ফগার মেশিন দ্বারা পরিচালিত) বর্তমানে ব্যবহৃত ৩০ লিটার কীটনাশকের পরিবর্তে দ্বিগুণ পরিমাণ অর্থাৎ ৬০ লিটার কীটনাশক প্রতিদিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
এ ছাড়া অঞ্চলভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠন ও জনবল ঘাটতি পূরণে উদ্যোগসহ জনগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভায় মশক কর্মীদের সকাল ও বিকেলে নিয়মিত উপস্থিতি নিশ্চিত করা, সঠিক অনুপাতে কীটনাশক প্রয়োগ যাচাই, মোবাইল কোর্ট পরিচালনা এবং মশক কর্মী দ্বারা বাড়ির ভিতর, আঙিনা ও ছাদের জমানো পানিসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক এবং সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে সদস্য সচিব করে অঞ্চল ভিত্তিক ডেঙ্গু মনিটরিং টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
এছাড়া, ডেঙ্গু ও করোনা বিষয়ে ডিএসসিসি সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফারিয়া ফয়েজকে ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে মনোনীত করা হয়।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চলতি মাসের মধ্যে কীটতত্ত্ববিদদের সমন্বয়ে নগর ভবনে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে এবং প্রতিদিনের ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের হালনাগাদ তথ্য ডিএসসিসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হবে। মশক নিধনে জনবল ঘাটতি পূরণে নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখাসহ ডেঙ্গু ও করোনা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ডিএসসিসি প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. জিল্লুর রহমান, সচিব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নিশাত পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানাধীন বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) এ কে এম মেহেদী হাসান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তাররা হলেন- সেলিম (৪৫), রফিক (৪০), সাদ্দাম (৩০), উজ্জ্বল (৩২) ও শামীম (২৫)।
গতকাল সোমবার (৯জুন) মোহাম্মদপুর থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদের মধ্যে রয়েছে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ১জন, মাদক মামলায় ১জন, দূস্যতার মামলায় ১জন এবং অন্যান্য মামলায় ২জন।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
রাজধানীর পল্লবী থানার মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে পুলিশ খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করেছে।
নিহত ওই যুবকের নাম রাকিবুল হাসান সানি (২৯)। ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও মাদক চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সকাল সাতটার দিকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। পরে মরদেহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ জানানো হবে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাদক বিক্রির আধিপত্য বিস্তার ও দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে রাতের আঁধারে হত্যাকারীরা কীভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে; তা এখনও স্পষ্ট নয়।
নিহতের পরিবারের দাবি, সানি একজন অটোরিকশাচালক ছিলেন। পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, গেল রমজান মাসেও একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী চক্র তার ওপর হামলা চালিয়েছিল।
ঘটনার পর থেকে মিল্লাত ক্যাম্প এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এবং এলাকায় পুলিশ ও সিআইডি সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।
মন্তব্য