কোরবানি ঈদে রাজধানীতে গবাদিপশুর হাট বসবে কি না, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। দুই সিটি করপোরেশন হাটের সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। তবে করোনা মহামারি পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে যদি হাট বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়, তবে বন্ধ হবে হাট।
জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হবে। রাজধানীতে কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য এবার দুটি স্থায়ীসহ ২৪টি হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন।
এসব হাটে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
রোববার সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, এখনও দুই সিটিতে সবগুলো হাটের ইজারা দেয়ার কাজ শেষ হয়নি। এর মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনে ১০টি হাট রয়েছে। এর ৯টি অস্থায়ী ও একটি স্থায়ী। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৪টি হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। যার মধ্যে ১১টির ইজারা দেয়া হয়ে গেছে। তিনিটি এখনও বাকি রয়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যেও গত বছর দুই সিটি করপোরেশন রাজধানীতে ২৪টি হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় উত্তর সিটিতে ১০টির পরিবর্তে ৬টি এবং দক্ষিণে ১৪টির পরিবর্তে ১১টি হাট বসায় কর্তৃপক্ষ।
ঢাকার হাটের পশু সাধারণত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসে। দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের মধ্যে এসব হাটে বিক্রেতা ও ক্রেতার স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে নিশ্চিত হবে, সেটি এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লেলিন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সামনের দুই সপ্তাহ আমাদের কেমন যাবে, বিষয়টি তার ওপর নির্ভর করছে। যদি সংক্রমণ বাড়ার ধারাবাহিকতা থাকে, বা আমরা থামাতে না পারি, তাহলে হাটের বিকল্প চিন্তা করতে হবে। আর যদি বর্তমান অবস্থা চলতে থাকে, তবে সেখানেও আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে।’
কী পরিবর্তন আনতে হবে, জানতে চাইলে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘গত বছর আমরা অনলাইনে গবাদিপশু কেনাবেচা করেছি। সেটি ছিল প্রায় ২৫ ভাগ। এবার সেটি ৫০ শতাংশ করা উচিত। আর যদি হাট বসাতেই হয়, তবে বড় শহরের বাইরের খোলা জায়গায় সেটি বসাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এর জন্য টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ অথবা সদরঘাট থেকে মোহাম্মদপুরের যে রাস্তা, সেগুলোকে মাথায় আনতে হবে। যারা ভ্যাক্সিন নিয়েছেন, তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটে যাবেন। তবে আগের মতো এত হাট এবার বসানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।’
কী বলছে সিটি করপোরেশন
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার বলেন, ‘আমাদের এখন পর্যন্ত ১০টি হাটের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে একটি স্থায়ীসহ বাকিগুলো অস্থায়ী। এখন পর্যন্ত হাট বন্ধের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে অনলাইনে হাট পরিচালনা করার একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে আজ (রোববার)।’
ঢাকা উত্তরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. জোবায়দুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মূলত এখন অনলাইন হাটের ব্যাপারে বেশি উৎসাহিত করছি। গতবারের মতো এবারও আমরা অনলাইনে ১ লাখ গরু বেচার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে শুধু ১ লাখ গরু বিক্রি করলেই তো আর হবে না। দেশে গরুর চাহিদা ১কোটি ১৯ লাখ।’
তিনি বলেন, ‘এই সিটি করপোরেশনে ১০টি হাট রয়েছে। এটি লকডাউন পিরিয়ডে কোনোভাবেই কার্যকর হবে না। লকডাউন শেষ হলে তখন হাটের কার্যক্রম শুরু হবে।’
স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে মানা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১০টি গরুর হাটের জন্য আমার ১১টি ভ্যাটেরিনারি টিম কাজ করবে। এর মধ্যে দুইটি টিম সার্বক্ষণিক স্থায়ী হাট গাবতলীতে থাকবে। আমাদের মনিটরিং টিম থাকবে। মোবাইল কোর্ট থাকবে। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, সেটি লক্ষ্য রাখবে।
‘এ ছাড়া আমাদের একটা বড় উদ্যোগ আছে। সেটি হলো গণমাস্কিং। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটি, দেশের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও শক্তি ফাউন্ডেশন মিলে সেটি পরিচালনা করছি। আমরা ৯টি স্পটকে চিহ্নিত করেছি। যেখানে জনসমাগম বেশি হয়। সেখানে মাস্ক বিতরণ করব।’
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত সব সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর নির্ভর করছে। যদি করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি হয়, আর সে ক্ষেত্রে যদি হাট বন্ধের সিদ্ধান্ত আসে, তবে আমাদের সেটা মানতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত সরকার থেকে হাটের ওপর কোনো নিষেধ আসেনি। হাট নিয়ে পরিকল্পনা এখনও আগের মতোই আছে।’
স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলনে, ‘আমরা আমাদের ইজারাদারদের বলে দিয়েছি, তারা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটের কার্যক্রম পরিচালনা করে। যদি আমাদের কোনো বিধিনিষেধ দেয়া হয়, তবে সেটি মেয়র মহাদয় পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেবেন।’
এই সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতবারও করোনার মধ্যেই হাটের কার্যক্রম চলেছে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা পেয়েছি, সেইভাবে কাজ করছি। এবার একটু বেশি সতর্ক থেকে হাট পরিচালনা করা হবে। আমাদের প্রায় সব হাট ইজারা দেয়া হয়েছে।’
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের পঞ্চম তলায় শিশু হৃদরোগ (কার্ডিয়াক) বিভাগের আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র) লাগা আগুন পুরোপুরি নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার দুপুর দেড়টার কিছু সময় পর ওই আগুন লাগে। পরে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট প্রায় এক এক ঘণ্টার চেষ্টার পর ২টা ৪০ মিনিটে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আগুন থেকে বাঁচতে ছোটাছুটি করে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই তাদের সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বাইরের ফ্লোরে অবস্থান নিয়েছেন। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এমনিতেই বাইরে অসহনীয় গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা কান্নাকাটি করছে।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান, আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের তিনটি ইউনিট, সিদ্দিক বাজার থেকে একটি ইউনিট, তেজগাঁও থেকে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ২টা ৪০ মিনিটে আগুন পুরো নিভিয়ে ফেলা হয়।
তবে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে লাগা এই আগুনে রোগীদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসপাতালটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি বলেন, রোগীদের সবাইকে নিচে নামিয়ে আনা হয়েচে। ইউসিইউতে ১৭ জন রোগী ছিলেন আমরা নামিয়ে এনেছি। কারো কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
তিনি বলেন, হাসপাতালের বি ব্লকের ৫ তলার কার্ডিয়াক বিভাগের আইসিইউতে আগুন লেগেছে। আগুনের চেয়ে ধোঁয়া একটু বেশি ছড়িয়েছে। ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
আগুনের সূত্রপাত কীভাবে করা হলো এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনও বিস্তারিত কিছু বলতে পারছি না। তবে আশঙ্কা করছি এসি থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে।
পরে এক সংবাদ সম্মেলনে শিশু হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানান, কার্ডিয়াক বিভাগের আইসিইউতে লাগা আগুনের ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির পাঁচ সদস্যের মধ্যে কার্ডিয়াক আইসিইউ বিভাগের প্রধানকে আহ্বায়ক করা হয়েছে।
এ ছাড়া কমিটিতে একজন মেইনটেইন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার, ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, ওয়ার্ড মাস্টার, একজন নার্স ও ফায়ার সার্ভিসের প্রতিনিধি রয়েছেন। তারা তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন।
এদিকে বিকেলে দেখা যায়, আগুন লাগার পর হাসপাপতালের ৫ তলা ও ৪ তলার পুরো ধোঁয়ায় ভরে গেছে। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনদের মধ্যে। আগুন থেকে বাঁচতে ছোটাছুটি করে যে যেভাবে পেরেছেন সেভাবেই তাদের সন্তানদের নিয়ে হাসপাতালের বাইরের ফ্লোরে অবস্থান নেন।
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে এমনিতেই বাইরে অসহনীয় গরম। গরম সহ্য করতে না পেরে শিশুরা কান্নাকাটি করছে। ওপরে সবকিছু কখন ঠিক হবে তা জানেন না এ রোগী ও স্বজনরা। রোগীর অভিভাবক ও স্বজনরা আশঙ্কা করছেন, এমন অবস্থা চলতে থাকলে তাদের বাচ্চারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে।
প্রচণ্ড জ্বর, সর্দি ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে ৭ দিন আগে শিশু হাসপাতাল আইসিইউতে ভর্তি হয় পাঁচ মাসের শিশু রাইয়ান। আগুন লাগার পর শিশুটির মা আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে শিশুটিকে নিয়ে নিচে নামে আসেন। বাচ্চাকে নিয়ে এই অসহনীয় গরমে অবস্থান নিয়েছেন হাসপাতালের বাইরে।
কয়েকজন শিশুর অভিভাবক জানান, পাঁচতলার আইসিইউতে যেসব বাচ্চা ছিল তাদের সমস্যা হচ্ছে। অনেক বাচ্চাকে অক্সিজেন দেয়া হচ্ছিল। তাদের অক্সিজেন ছাড়া নিচে নামানো হয়। তাদের প্রত্যেকের অবস্থা খুবই নাজুক ছিল।
মধ্যসত্ত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে, সিন্ডিকেট করে কৃষকদের যেন বিপদে ফেলতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ।
শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরে বোরো ধান কাটা উৎসবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মধ্যস্বত্বভোগীরা যেন সুবিধা নিতে না পারে, সিন্ডিকেট করে কৃষকদের যেন বিপদে ফেলতে না পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা সজাগ থাকলে কৃষকরা বঞ্চিত হবেন না।
মন্ত্রী বলেন, কৃষকের উৎপাদিত ফসলের সঠিক মূল্য দিতে চায় সরকার। সরকারের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সুনামগঞ্জ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। এখানে বন্যা দুর্যোগ বেশি হয়। খড়াও হয়। জেলা প্রশাসনকে বলেছি, কৃষকদের ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে ব্যবস্থা নিতে।
তিনি বলেন, কৃষিকে সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ। কৃষকের ধানের মূল্য নির্ধারণ করতে আগামী পরশু মিটিং করব। দাম নির্ধারণ করে সরকারের কাছে প্রস্তাবনা পাঠাব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সুনামগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য ড. মোহাম্মদ সাদিক, ১ আসনের সংসদ সদস্য রনজিত চন্দ্র সরকার, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে ধরা আগুন প্রায় এক ঘণ্টা পর নিভিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
বাহিনীর মিডিয়া সেল জানায়, শুক্রবার বেলা দুইটা ৩৯ মিনিটে আগুন নেভানো হয়।
এর আগে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তা লিমা খানম নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে হাসপাতালের শিশু হৃদরোগ কেন্দ্রে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করে।
আগুনে হতাহতের কোনো কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।
এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বার্তায় জানায়, আগুন নিয়ন্ত্রণে যোগ দেয় নৌবাহিনী।
আরও পড়ুন:রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের কার্ডিওলজি বিভাগে শুক্রবার আগুন ধরেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম দুপুরে নিউজবাংলাকে জানান, বেলা একটা ৪৭ মিনিটে আগুন ধরার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এর পরিপ্রেক্ষিতে বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করছে।
আগুনে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন এ কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, আগুন ধরার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয় তদন্তের পর বলা যাবে।
আসন্ন জুলাইয়ের আগেই পান্থকুঞ্জকে নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার সকালে নগরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের অভ্যন্তরে পান্থপথ বক্স কালভার্টের পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মেয়র এ কথা জানান।
মেয়র তাপস বলেন, পান্থকুঞ্জ উদ্যান এই এলাকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যান। এটা উন্নয়নের জন্য ২০১৭ সালে মেগা প্রকল্পের আওতায় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক কারণে ঢাকা লিমিটেড এক্সপ্রেসওয়ে এদিক দিয়ে নওয়ার একটি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ফলে এই পার্কের উন্নয়ন কাজটা বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে তাদের সঙ্গে বিভিন্নভাবে আলোচনা করেছি, দেন-দরবার করেছি। এর ফলশ্রুতিতে তারা সুনির্দিষ্ট জায়গায় কাজ করবে। বাকি জায়গা আমাদেরকে ছেড়ে দিয়েছে। সেই জায়গায় আমরাই কাজ শুরু করেছি। বর্তমানে এটার অবকাঠামো উন্নয়ন চলছে।
মেয়র আরও বলেন, আমরা ঢাকাবাসীকে একটি নান্দনিক উদ্যান উপহার দিতে চাই। যদিও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের কারণে উদ্যানের বড় একটা অংশ তাদের কাছে চলে যাবে। তারপরও যতটুকু রক্ষা করতে পেরেছি তা ঢাকাবাসীর জন্য অচিরেই উন্মুক্ত করে দিতে পারব। পার্কের উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। জুলাইয়ের আগে পান্থকুঞ্জকে একটি নান্দনিক উদ্যানে পরিণত করা হবে।
নিউমার্কেট এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, গত বছর কয়েকটি জায়গায় জলাবদ্ধতা হয়েছে বিশেষ করে নিউমার্কেটের সামনে ও শান্তিনগরে। যেসব কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল আমরা সেগুলো পরিষ্কার করেছি। আশা করি এবার আর জলাবদ্ধ থাকবে না। নিউমার্কেট এলাকার জন্য নতুন প্রকল্প নিয়েছি।
তিনি বলেন, এর মূল কারণ হচ্ছে পিলখানা ভেতর দিয়ে আগে যে পানি প্রবাহ প্রবাহের নর্দমা ছিল সেগুলো ২০০৯ সালে বন্ধ হয়ে যায়। এজন্য গত বছর সেখানে বড় ধরনের জলবদ্ধতা হয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে আলাপ করেছি এবং সম্মতি পেয়েছি। আমরা পিলখানার ভেতর দিয়ে পানি প্রবাহের বড় নর্দমা করছি। এটা করতে পারলে ওই এলাকায় আর জলাবদ্ধতা থাকবে না। এভাবে প্রত্যেকটা এলাকায় বিচার-বিশ্লেষণ ও পর্যালোচনা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ঢাকায় বিচ্ছিন্ন কয়েকটি জায়গা ছাড়া তেমন কোন জায়গায় এখন দীর্ঘ সময় জলবদ্ধতা থাকে না উল্লেখ করে মেয়র বলেন, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের আগে সূচি অনুযায়ী বক্স কালভার্ট, খাল ও নর্দমাগুলো পরিষ্কার করে থাকি। কারণ যাতে করে বর্ষার সময় পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকে। এছাড়া ঢাকা শহরে আমরা ব্যাপকভাবে নর্দমা অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলমান রেখেছি।
পরে মেয়র সায়েদাবাদ টার্মিনাল সংলগ্ন সায়েদাবাদ সুপার মার্কেট, গেন্ডারিয়ার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কেন্দ্র পাঠাগার ও ওয়ারীর তাজউদ্দীন স্মৃতি পাঠাগার পরিদর্শন করেন।
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জামালপুর থেকে ঢাকায় আসার পথে এ দুর্ঘটনায় পড়ে ট্রেনটি।
কমলাপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস এসব বিষয় নিশ্চিত করেছেন।
দুর্ঘটনার পর ঢাকাগামী ট্রেন আটকে যায়। এ ছাড়া কারওয়ান বাজার রেলক্রসিং এবং মগবাজারে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
ফেরদৌস আহমেদ জানান, দ্রুতই উদ্ধারকাজ শুরু হয়। সকাল ১০টার দিকে লাইনচ্যুত বগি ছাড়াই ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করে।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার সকালে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। খবর ইউএনবির
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
১৯৭১ সালের এই দিনে তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার অন্তর্গত মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পরবর্তীতে স্থানটির নাম পরিবর্তন করে মুজিবনগর রাখা হয়। প্রথম সরকারের রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তাজউদ্দীন আহমদকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে মন্ত্রিসভার সদস্য করা হয়। মূল মন্ত্রিসভার সফল নেতৃত্ব সেই বছরের ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের দিকে নিয়ে যায়।
মন্তব্য