কোরবানি ঈদে রাজধানীতে গবাদিপশুর হাট বসবে কি না, সে ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। দুই সিটি করপোরেশন হাটের সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। তবে করোনা মহামারি পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে যদি হাট বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়, তবে বন্ধ হবে হাট।
জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হবে। রাজধানীতে কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য এবার দুটি স্থায়ীসহ ২৪টি হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন।
এসব হাটে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের।
রোববার সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, এখনও দুই সিটিতে সবগুলো হাটের ইজারা দেয়ার কাজ শেষ হয়নি। এর মধ্যে উত্তর সিটি করপোরেশনে ১০টি হাট রয়েছে। এর ৯টি অস্থায়ী ও একটি স্থায়ী। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১৪টি হাটের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। যার মধ্যে ১১টির ইজারা দেয়া হয়ে গেছে। তিনিটি এখনও বাকি রয়েছে।
করোনা মহামারির মধ্যেও গত বছর দুই সিটি করপোরেশন রাজধানীতে ২৪টি হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে করোনা সংক্রমণ বিবেচনায় উত্তর সিটিতে ১০টির পরিবর্তে ৬টি এবং দক্ষিণে ১৪টির পরিবর্তে ১১টি হাট বসায় কর্তৃপক্ষ।
ঢাকার হাটের পশু সাধারণত দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসে। দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের মধ্যে এসব হাটে বিক্রেতা ও ক্রেতার স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে নিশ্চিত হবে, সেটি এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লেলিন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সামনের দুই সপ্তাহ আমাদের কেমন যাবে, বিষয়টি তার ওপর নির্ভর করছে। যদি সংক্রমণ বাড়ার ধারাবাহিকতা থাকে, বা আমরা থামাতে না পারি, তাহলে হাটের বিকল্প চিন্তা করতে হবে। আর যদি বর্তমান অবস্থা চলতে থাকে, তবে সেখানেও আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে।’
কী পরিবর্তন আনতে হবে, জানতে চাইলে এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘গত বছর আমরা অনলাইনে গবাদিপশু কেনাবেচা করেছি। সেটি ছিল প্রায় ২৫ ভাগ। এবার সেটি ৫০ শতাংশ করা উচিত। আর যদি হাট বসাতেই হয়, তবে বড় শহরের বাইরের খোলা জায়গায় সেটি বসাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এর জন্য টঙ্গীর ইজতেমা মাঠ অথবা সদরঘাট থেকে মোহাম্মদপুরের যে রাস্তা, সেগুলোকে মাথায় আনতে হবে। যারা ভ্যাক্সিন নিয়েছেন, তারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটে যাবেন। তবে আগের মতো এত হাট এবার বসানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হবে।’
কী বলছে সিটি করপোরেশন
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবুল বাসার বলেন, ‘আমাদের এখন পর্যন্ত ১০টি হাটের পরিকল্পনা রয়েছে। এর মধ্যে একটি স্থায়ীসহ বাকিগুলো অস্থায়ী। এখন পর্যন্ত হাট বন্ধের কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। তবে অনলাইনে হাট পরিচালনা করার একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে আজ (রোববার)।’
ঢাকা উত্তরের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মো. জোবায়দুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মূলত এখন অনলাইন হাটের ব্যাপারে বেশি উৎসাহিত করছি। গতবারের মতো এবারও আমরা অনলাইনে ১ লাখ গরু বেচার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে শুধু ১ লাখ গরু বিক্রি করলেই তো আর হবে না। দেশে গরুর চাহিদা ১কোটি ১৯ লাখ।’
তিনি বলেন, ‘এই সিটি করপোরেশনে ১০টি হাট রয়েছে। এটি লকডাউন পিরিয়ডে কোনোভাবেই কার্যকর হবে না। লকডাউন শেষ হলে তখন হাটের কার্যক্রম শুরু হবে।’
স্বাস্থ্যবিধি কীভাবে মানা হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘১০টি গরুর হাটের জন্য আমার ১১টি ভ্যাটেরিনারি টিম কাজ করবে। এর মধ্যে দুইটি টিম সার্বক্ষণিক স্থায়ী হাট গাবতলীতে থাকবে। আমাদের মনিটরিং টিম থাকবে। মোবাইল কোর্ট থাকবে। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কিনা, সেটি লক্ষ্য রাখবে।
‘এ ছাড়া আমাদের একটা বড় উদ্যোগ আছে। সেটি হলো গণমাস্কিং। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটি, দেশের ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ও শক্তি ফাউন্ডেশন মিলে সেটি পরিচালনা করছি। আমরা ৯টি স্পটকে চিহ্নিত করেছি। যেখানে জনসমাগম বেশি হয়। সেখানে মাস্ক বিতরণ করব।’
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত সব সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর নির্ভর করছে। যদি করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি হয়, আর সে ক্ষেত্রে যদি হাট বন্ধের সিদ্ধান্ত আসে, তবে আমাদের সেটা মানতে হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত সরকার থেকে হাটের ওপর কোনো নিষেধ আসেনি। হাট নিয়ে পরিকল্পনা এখনও আগের মতোই আছে।’
স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলনে, ‘আমরা আমাদের ইজারাদারদের বলে দিয়েছি, তারা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে হাটের কার্যক্রম পরিচালনা করে। যদি আমাদের কোনো বিধিনিষেধ দেয়া হয়, তবে সেটি মেয়র মহাদয় পরবর্তী সময়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেবেন।’
এই সিটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতবারও করোনার মধ্যেই হাটের কার্যক্রম চলেছে। আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে নির্দেশনা পেয়েছি, সেইভাবে কাজ করছি। এবার একটু বেশি সতর্ক থেকে হাট পরিচালনা করা হবে। আমাদের প্রায় সব হাট ইজারা দেয়া হয়েছে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করলো ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের পরিচালনা কমিটির ৭ম (সপ্তম) কর্পোরেশন সভা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক জনাব মো. শাহজাহান মিয়ার সভাপতিত্বে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধির সমন্বয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন পরিচালনা কমিটির ২৫ (পঁচিশ) জন সদস্য আজ সোমবার নগর ভবনে উপর্যুক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতে ০৫ মে ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কর্পোরেশনের সভার কার্য বিবরণী দৃঢ়ীকরণ এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হয়। পরবর্তীতে সভার আলোচ্য সূচি অনুযায়ী আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা (অতি. দা.) জনাব আলী মনসুর। পরবর্তীতে, পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দ বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের ৩৮৪১.৩৮ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন প্রদান করেন।
বাজেট আলোচনায় অংশগ্রহণ ও অনুমোদন প্রদান করায় পরিচালনা কমিটির সদস্যবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এর প্রশাসক বলেন, “ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বাজেট কেবল গাণিতিক সংখ্যা নয়। এই বাজেট আমাদের কাছে সম্মানীত করদাতাদের আমানত। এই বাজেট সফলভাবে প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের উপর নির্ভর করছে আমাদের সবার প্রিয় এই নগরীর ব্যবস্থাপনা এবং আমাদের দৈনন্দিন নাগরিক সমস্যার সমাধান।”
সভায় ১৯৯৮ সাল থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বসবাসকারী নগরবাসীকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও মাতৃত্বকালীন বিভিন্ন সেবা প্রদানকারী ‘আরবান প্রাইমারী হেলথ কেয়ার সার্ভিসেস ডেলিভারী প্রকল্প-২ পর্যায়’ শীর্ষক প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এবং বিদ্যমান প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদানকারী এনজিওসমূহের মধ্যে সমঝোতা স্মারকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
পরবর্তীতে, অর্থ বিভাগের পরিপত্র অনুযায়ী ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত সাময়িক শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৬০০/- (ছয় শত) টাকা হতে ৮০০/- (আট শত) টাকা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া, মন্ত্রীপাড়ায় অবস্থিত অস্থায়ী মসজিদটি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক একটি তিনতলাবিশিষ্ট নান্দনিক মসজিদে রূপান্তরের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়।
সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. জিল্লুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব জনাব মুহাম্মদ শফিকুল ইসলামসহ সকল বিভাগীয়গণ উপস্থিত ছিলেন।
রাজধানীর মতিঝিলে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ব্যবসায়ীর ৩০ লক্ষ টাকা ডাকাতির ঘটনায় তিন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি’র মতিঝিল থানা পুলিশ। এ সময় ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত হাইয়েস গাড়ি ও নগদ ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. শামিম রহমান (২৯), মো. মিজান রহমান (৫১) ও রবিউল ইসলাম জুয়েল (৪২)।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৭-২৯ জুন ঢাকা ও ঝালকাঠিতে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের সময় শামিমের হেফাজতে থাকা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত হাইয়েস গাড়ি, মিজানের কাছ থেকে নগদ ৮০ হাজার টাকা ও জুয়েলের কাছ থেকে নয় হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিএমপি’র মতিঝিল থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন রাজধানীর ওয়ারীর নবাবপুরের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মো. খলিল মিয়া (২৬) ও ইব্রাহীম হোসেন রিফাত (২৪) নামের দুই ব্যক্তি নগদ ৩০ লক্ষ টাকা মতিঝিল সিটি ব্যাংক শাখায় জমা দেওয়ার জন্য একটি স্কুটিতে করে রওয়ানা দেন।
দুপুর পৌনে ১টার দিকে মতিঝিলের ঘরোয়া হোটেলের সামনে পৌঁছা মাত্রই ৬/৭ জনের একটি দল নিজেদের ডিবি পরিচয়ে তাদেরকে ডিবি লেখা একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যায়।
পরে দুজনকে মারধর করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে হাত-পা বেঁধে সাইনবোর্ড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় একটি ময়লার ডাস্টবিনে ফেলে পালিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে সাইনবোর্ডের প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির মালিক সাইদুল ইসলামের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ডিএমপি’র মতিঝিল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়।
থানা সূত্রে আরও জানা যায়, গ্রেফতারকৃত মিজানের নামে ঝালকাঠির রাজাপুর ও নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানায় আরো দুটি ডাকাতির মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও লুন্ঠন হওয়া অন্যান্য টাকা উদ্ধারসহ আত্মগোপনে থাকা ডাকাতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
রাজধানীর হাজারীবাগের একটি বাসায় পানির ট্যাংক পরিষ্কারের সময় বিস্ফোরণে দুই শিশুসহ একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছেন।
শনিবার (২৮ জুন) সন্ধ্যায় হাজারীবাগের জিগাতলা ট্যানারি মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে স্থানান্তর করা হয়।
আহতরা হলেন- মো. জিয়াউর রহমান (৪৫) ও তার দুই মেয়ে ফারিয়া (৮) ও রাইফা (৪) এবং ট্যাংক পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত শ্রমিক বেলাল হোসেন (২৮)।
আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া শাহপরান জানান, চাচার বাসায় বেলাল হোসেন নামের এক শ্রমিক ট্যাংক পরিষ্কার করছিলেন, এ সময় চাচা জিয়াউর রহমান ট্যাংকে পর্যাপ্ত আলো না থাকায় একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব চালু করার পরই এ বিস্ফোরণ ঘটে। ধারণা করা হচ্ছে, ট্যাংকের ভেতরে জমে থাকা গ্যাস থেকে এমনটা হয়েছে।
জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের রেসিডেন্ট সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান বলেন, ‘বেলাল হোসেনের শরীরের ১৭ শতাংশ, জিয়াউর রহমানের ৪ শতাংশ, ফারিয়ার ৫ শতাংশ এবং রাইফার ৬ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।’
বর্তমানে তারা সবাই শঙ্কামুক্ত এবং জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলেও জানান তিনি।
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় একই পরিবারের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন, আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী অমিত (২৩), তার আত্মীয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নাইমুল হক (৩২) এবং জাবেদ আলম খান (৫৫)।
উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোস্তফা জানান, শনিবার (২৯ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে উত্তরা পূর্ব থানাধীন আজমপুর মোড়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। এ সময় ময়মনসিংহ থেকে আসা পাথরবোঝাই একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হন বলে জানান তিনি। ওসি বলেন, অপরজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানেই মারা যান।
তিনি আরও জানান, মরদেহগুলো শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে ময়নাতদন্তের জন্য।
নিহতরা কাছাকাছি একটি হাসপাতালে রোগী দেখতে গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং এর চালক রাকিবুল ইসলামকে (৪২) আটক করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
রাজধানীর উত্তরায় ‘মব’ সৃষ্টি করে ‘হোটেল মিলিনা’ নামের একটি আবাসিক হোটেল দখলের চেষ্টা করা হয়। এমন অভিযোগে ৯ জনকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)।
রোববার র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, শনিবার দুপুরে শফিক মোল্লা নামের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে হোটেল মিলিনিার মালিক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে পূর্বের ব্যবসায়িক সূত্র ধরে ‘মব’ সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়। সেসময় ১০টি মোটরসাইকেলে করে কমপক্ষে ২৪ জন জোরপূর্বক হোটেলটি দখল করতে যায়।
এ সময় দূর থেকে ওই ঘটনার কিছু ছবি ধারণ করেন র্যাব-১ এর এক গোয়েন্দা সদস্য। ছবি ধারণের সময় ‘মব’ সৃষ্টিকারীরা র্যাব সদস্যদের ঘেরাও করে এবং ছবি তুলতে বাধা দেয়। এ ঘটনার পর র্যাব-১ এবং উত্তরা পূর্ব থানা পুলিশের টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ‘মব’ নিয়ন্ত্রণ করে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়া এবং ‘মব’ সৃষ্টির অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে মোট ৯ জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন, মো. সাজ্জাদ হোসেন (২৮), মো. শফিক মোল্লা (৩০), মো. আরিফুল ইসলাম (৩০), মো. তন্ময় হোসেন শাওন (২৭), মো. রবিউল ইসলাম (২৫), মো. আনোয়ার হোসেন আশিক (২৭), মো. সাইফুল ইসলাম সাগর (২৭), মো. জালাল খান (৩০) ও মো. আমির (২১)।
আটকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আয়কর অফিসসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসে ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য বিএনপির নামে আন্দোলন চালিয়ে একটি ‘কুচক্রী মহল’র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টার সমালোচনা করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘যারা আয়কর অফিসে বা অন্যান্য বিভাগে বিএনপির নামে আন্দোলন করছেন—তারা বিএনপির অংশ নয়। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্যই এটা করছে।’
শুক্রবার (২৭ জুন) রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী ভবনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় রিজভী এই মন্তব্য করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, কিছু ব্যক্তি বিভিন্ন ক্ষেত্র এবং সরকারি অফিসে তাদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নামে নতুন নতুন কার্যকলাপ শুরু করার চেষ্টা করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা জাতীয়তাবাদী আদর্শে বিশ্বাসী তাদের সকলেরই তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত। তারেক রহমান তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন। কিন্তু তারপরও অনেকে বিএনপির নাম ব্যবহার করে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।’
রিজভী বলেন, তিনি এমন একজনের কথা শুনেছেন যিনি বিএনপির নাম ব্যবহার করে আয়কর অফিসে আন্দোলন করছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তিনি (সেই ব্যক্তি) এখন (এনবিআর) চেয়ারম্যানকে অপসারণের চেষ্টা করছেন এবং ভবিষ্যতে অন্য কাউকে অপসারণের চেষ্টা করবেন। কে তাকে এই দায়িত্ব দিয়েছে? আমি বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব—আমি এ বিষয়ে জানি না। আপনি নিজেই বিএনপির নাম ব্যবহার করে একটি অফিসে আন্দোলন শুরু করেছিলেন। সেখানে আরও অনেক বিএনপি নেতা আছেন, কেউ এ সম্পর্কে জানেন না।’
বিএনপির নামে যারা অপকর্ম করছে তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্য বিএনপি নেতা-কর্মীদের আহ্বান জানান রিজভী। বলেন, ‘রক্তপাত এবং সংগ্রামের মাধ্যমে সৃষ্ট সুযোগ আগামী দিনে একটি উন্নত রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতির সমালোচনা করলেও সরকারের ভালো কাজের প্রতি সমর্থন জানায় বিএনপি।
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে আলোচনা অনুসারে, সরকার যুক্তিসঙ্গত সময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হাবিবুল আউয়াল স্বীকার করেছেন যে, ২০২৪ সালের নির্বাচন ছিল একটি ভুয়া নির্বাচন। ‘তার এই মন্তব্য স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে যে (শেখ) হাসিনার আমলে সমস্ত নির্বাচন অবৈধভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’
বিএনপি নেতা দাবি করেন, প্রশাসনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা কিছু লোক—যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী। তারা বিভিন্ন বিভাগে বিভিন্নভাবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের তাদের সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে।’
নির্বাচন কমিশন থেকে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) ‘শাপলা’ প্রতীক বরাদ্দ দিতে কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ হোসেনসহ ১০১ জন আইনজীবী। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আমিনা আক্তার লাভলী এবং লাবাবুল বাসার স্বাক্ষরিত বিবৃতিটি জানানো হয় এই মত।
বিবৃতিতে বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪(৩) এবং অন্যান্য বিদ্যমান আইন অনুসারে এনসিপির শাপলা প্রতীক বরাদ্দ পেতে কোনো আইনগত বাধা নেই বলে উল্লেখ করে বলা হয়, ১৯৭২ সালের অর্ডারের তৃতীয় তফসিল এবং ১৯৭২ সালের বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক তে জাতীয় প্রতীকের নকশা অংকিত আছে। নকশা অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক হচ্ছে লালচে এবং হলুদ রঙের যুগল বৃত্তের ভেতরে লালচে এবং হলুদ রঙে অংকিত পানির ওপর ভাসমান শাপলা ফুল, দু’পাশে দুটি ধানের শীষ, উপরে তিনটি সংযুক্ত পাট পাতা যার ঠিক দুই পাশে দুটি করে চারটি তারকার সন্নিবেশ ও সামষ্টিক রূপ। অর্থাৎ জাতীয় প্রতীকের নকশা এবং রঙ ১৯৭২ সালের অর্ডারের ৩য় তফসিল ও বিধিমালার পরিশিষ্ট-ক দ্বারা সুনির্দিষ্ট। তাছাড়া জাতীয় প্রতীকের শাপলাটি পানিতে ভাসমান কিন্তু এনসিপি ‘ভাসমান শাপলা’ প্রতীক হিসেবে চায়নি।
একাধিক রাজনৈতিক দলের প্রতীকে হিসেবে জাতীয় প্রতীকের উপাদান বরাদ্দ দেওয়ার নজির উপস্থাপন করে বিবৃতিতে বলা হয়, ধানের শীষ, শাপলা, পাটপাতা এবং তারকা আলাদা আলাদা করে চারটি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়। আর এই চারের সমষ্টিই হচ্ছে জাতীয় প্রতীক, যা দুই রঙের দুটি বৃত্ত দ্বারা পরিবেষ্টিত। জাতীয় প্রতীকের উপাদানের মধ্যে দুইটি উপাদান ইতোমধ্যে দুইটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রতীক হিসেবে বরাদ্দকৃত। সুতরাং প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণসাপেক্ষে এনসিপির নিবন্ধিত হবার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আইন মোতাবেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে এবং প্রতীকের তালিকায় সংযোজনপূর্বক শাপলা প্রতীকটি এনসিপিকে বরাদ্দ দিবে বলে বিবৃতিদাতা আইনজীবীরা আশা প্রকাশ করেন।
মন্তব্য