রাজধানীর মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মৃত্যু হয়েছে বেঙ্গল মিটের কর্মী মো. ইমরানের (২৫)।
ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. এস এম আইউব হোসেন জানান, বুধবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে তার মৃত্যু হয়।
ইমরানের শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। তিনি বেঙ্গল মিটের কর্মী ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এএফএম আসিফ।
এ নিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৯ জনের মৃত্যু হলো। এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে বিস্ফোরণে লন্ডভন্ড হয়ে যাওয়া ভবনের পেছনের ছোট্ট একটি কক্ষ থেকে কেয়ারটেকার মো. হারুনুর রশিদের মরদেহ উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকায় আড়ংয়ের শোরুম ও রাশমনো হাসপাতালের উল্টা দিকের মূল সড়ক লাগোয়া ভবনে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিস্ফোরণ হয়। এ ঘটনায় আহত ও দগ্ধ অনেকের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
আকস্মিক বিস্ফোরণ ও তা থেকে সৃষ্ট বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে আশপাশের কয়েক শ মিটার এলাকা। বেশ কিছু ভবনের কাচ ভেঙে যায় শব্দের প্রচণ্ডতায়।
বিস্ফোরণের কারণ এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি তদন্তকারীরা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে নিউজবাংলা জানার চেষ্টা করেছে ঘটনার পরম্পরা।
সিসিটিভি ফুটেজে যা দেখা যায়
আশপাশের বিভিন্ন ভবনের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে নিউজবাংলা। এগুলো থেকে বিস্ফোরণ-মুহূর্তের আংশিক চিত্র পাওয়া যায়।
প্রথম সিসিটিভি ক্যামেরাটির অবস্থান ঘটনাস্থল থেকে ১০০ মিটার দূরের দ্য গ্রান্ড প্লাজা শপিং মলে। সেখানে দেখা যায়, ৭টা ২২ মিনিটে হঠাৎ বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে আশপাশের এলাকা। ঘটনাস্থল থেকে দূরে হওয়া সত্ত্বেও সিসি ক্যামেরার কম্পনে অনুমান করা যায় বিস্ফোরণের ভয়াবহতা।
ওই সিসিটিভি ফুটেজে বিস্ফোরণের পরপর দুবার আগুনের বড় ধরনের ঝলকানি দেখা যায়, যা থেকে মনে হয়, এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের ব্যবধানে পরপর দুটি বিস্ফোরণ ঘটে থাকতে পারে।
বিস্ফোরণের আগুনের ঝলকানি ভবনের ভেতর থেকে বের হয়ে পাশের রাস্তায় জ্যামে আটকে থাকা দুটি বাসকে ছুঁয়ে রাস্তার অন্য পাশে ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখে আরেকটি বাসে স্পর্শ করে নিমেষেই মিলিয়ে যায়। কিন্তু এরপর আর আগুনের অস্তিত্ব দেখা যায়নি।
পরের ফুটেজটি মগবাজার প্লাজার ঠিক বিপরীতে ফ্লাইওভারের ওপারে থাকা আড়ং শপিং সেন্টারের প্রবেশপথের মুখে থাকা ক্যামেরার। সেখানে দেখা যায়, বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে দুই শিশুসহ দুজন নারী ছিটকে পড়ে যান। সেখানে উপস্থিত আড়ংয়ের অন্য কর্মচারীদেরও একই অবস্থা হয়। বিস্ফোরণের সময় মুহূর্তের জন্য আড়ংয়ের ভেতরে সব অন্ধকার হয়ে যায়।
আরেকটি ফুটেজ মগবাজার প্লাজার বিপরীতে থাকা রাশমনো স্পেশালাইজড হাসপাতালের বাইরের ও ভেতরের ক্যামেরার। বাইরের ক্যামেরার দৃশ্যে দেখা যায় বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে আগুনের ফুলকি আর কম্পন এসে ক্যামেরায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ওই এলাকা।
শেষ ফুটেজ একই হাসপাতালের পার্কিং এলাকার। সেখানে দেখা যায়, প্রবল বিস্ফোরণের কম্পনে এই ক্যামেরাও কেঁপে উঠেছে। এরপরই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ক্যামেরার সংযোগ।
বিস্ফোরণের ভয়াবহতা
সিসিটিভি ফুটেজের সময় অনুযায়ী, রোববার সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে মগবাজার প্লাজায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে তিনতলা ভবনটির নিচতলায় পাশাপাশি থাকা দুটি দোকানের ভেতরের সবকিছু গুঁড়িয়ে যায়।
এ দুটি দোকান হলো শর্মা হাউস নামে একটি রেস্টুরেন্ট ও বেঙ্গল মিট নামে একটি প্রক্রিয়াজাতকৃত মাংসের আউটলেট।
বিস্ফোরণে ভেঙে যায় ওই ভবনের নিচতলার কয়েকটি স্তম্ভ। এতে ভবনটির দোতলায় থাকা ইলেকট্রনিক সিঙ্গারের গোডাউনের একটি অংশ হেলে পড়ে। ভেঙে যায় ভবনের পেছনের সীমানাপ্রাচীরের অংশবিশেষ।
মগবাজার বিস্ফোরণে যা ঘটেছিল
বিস্ফোরণে তীব্র হল্কা ছুটে যায় রাস্তায় জ্যামে দাঁড়িয়ে থাকা মগবাজার মোড়মুখী দুটি বাসসহ অন্যান্য বাহনে। ওই ধাক্কায় বাস দুটি রাস্তার মাঝের বিভাজকে আছড়ে পড়ে। বাস দুটির সব কাচ ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। সেই কাচের আঘাতে আহত হন অনেকে।
বিস্ফোরণের ধাক্কা শুধু রাস্তার এপারের গাড়িগুলোতেই আঘাত করেনি, সড়ক বিভাজক পেরিয়ে অপর পাশে মৌচাকমুখী ফ্লাইওভার থেকে নামার মুখের একটি বাসেও আঘাত করে। ওই বাসের পরিণতিও একই।
বিস্ফোরণের ধাক্কা রাস্তা, ফ্লাইওভার ছাড়িয়ে অন্তত ৫০ মিটার দূরে ঠিক বিপরীতে অবস্থান করা চারটি ভবনকেও স্পর্শ করে। এগুলো হলো রাশমনো স্পেশালাইজড হাসপাতাল, নজরুল শিক্ষালয় স্কুল, আড়ং ও বিশাল সেন্টার শপিং সেন্টার।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই চারটি ভবনের পাঁচতলা উচ্চতা পর্যন্ত যত কাচের আবরণ ও জানালা আছে, সব গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ভেঙে পড়েছে। কিন্তু সেসব ভবনের দিকে কোনো ধরনের ধ্বংসাবশেষ ও ভারী পদার্থ বা স্প্লিন্টার ছুটে আসার আলামত পাওয়া যায়নি।
বিকট শব্দের ধাক্কায় ক্ষয়ক্ষতি?
সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ এবং পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাদের কাছ থেকে জানা যায়, বিস্ফোরণের পর সেটির শকওয়েভ ও উচ্চ শব্দের কারণে ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে ভবনের ভেতর থেকে পরপর দুবার আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়, যা রাস্তার ওপর থাকা বাসগুলোকে ছুঁয়ে আবার নিমেষেই মিলিয়ে যায়। এ ছাড়া বিস্ফোরণের সময় ঘটনাস্থলের আশপাশের অন্তত ৩০০ মিটার এলাকাজুড়ে কম্পন অনুভব করতে পেরেছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। এসব কারণে মগবাজার প্লাজার পাশের ও পেছনের আরও তিনটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মগবাজার বিস্ফোরণে যা ঘটেছিল
আচমকা বিস্ফোরণের পর শুরু হয় সাধারণদের ছোটাছুটি। ভবনের ভেতর, বাসের ভেতর, রাস্তায় শুধু আহত মানুষের আর্তনাদ।
আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থাসহ পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন স্থানীয় লোকজন।
আরও পড়ুন:কদিন ধরেই তীব্র গরম। দেশের কোথাও মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হচ্ছে, তবে গরম অবশ্য কমছে না। আবহাওয়া আপাতত এমনই থাকবে।
শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে এ তথ্য দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কুমিল্লা ও কিশোরগঞ্জ অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এতে বলা হয়, একই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহী, পাবনা ও টাঙ্গাইল জেলাসহ খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং চাঁদপুর ও মৌলভীবাজার জেলাসহ ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়ার সার্বিক পর্যবেক্ষণে বলা হয়, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।
আগামী পাঁচ দিনের পূর্বভাসে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ প্রায় একই রকম থাকতে পারে। আবহাওয়ায় তেমন পরিবতর্তন আসবে না।
দেশে চলমান দাবদাহ শুক্রবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটি শুক্রবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তায় এ কথা জানায়।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত সতর্কবার্তায় বলা হয়, ‘দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ (১৯ এপ্রিল, ২০২৪) হতে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
‘জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।’
৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাস
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলেছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে রয়েছে।
তাপপ্রবাহ বা দাবদাহের বিষয়ে বলা হয়, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে দিনাজপুর, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা এবং ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও পড়ুন:প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে মোট বৈধ প্রার্থী দাঁড়িয়েছে এক হাজর ৭৮৬ জন। মাঠ পর্যায় থেকে পাঠনো তথ্য একীভূত করার পর এ তথ্য জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন এক হাজার ৮৯০ জন। এদের মধ্যে বাছাইয়ে ১০৪ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল, আর বৈধতা পেয়েছে এক হাজার ৭৮৬ প্রার্থীর।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত আপিল করা যাবে। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। এরপর প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল এবং ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৮ মে।
অপপ্রচার রোধে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে প্রতিমন্ত্রীর নিজ দপ্তরে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মার সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আরাফাত বলেন, ‘অপপ্রচার রোধে ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান কাজ করে। তারা কীভাবে কাজ করে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং প্রক্রিয়া-পদ্ধতি বিনিময় জানা-বোঝার চেষ্টা করব। এক্ষেত্রে কোনো প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হলে আমরা তাদের কাছ থেকে সহায়তা নেব।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে যেসব কো-অপারেশন আছে, সেসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে বিটিভিতে দুই ঘণ্টার একটি চাংক নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সংবাদ বিশ্লেষণ, চলমান ঘটনাপ্রবাহ এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করতে যাচ্ছি। সেক্ষেত্রে ভারতের যে সংবাদ সংস্থাগুলো আছে, বিশেষ করে এএনআইয়ের সঙ্গে কোলাবরেশন করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
‘যেহেতু বিটিভি ইন্ডিয়াতে দেখানো হয়, সেহেতু দুই ঘণ্টার এ চাংক আমরা ধীরে ধীরে দুই, তিন, চার ঘণ্টা পর্যন্ত বাড়াব। আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতে চাচ্ছি, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে। এর বাইরেও বিভিন্ন দেশের খবর থাকবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব ভারতীয় দর্শকদের আকৃষ্ট করতে। এ ছাড়া ইন্ডিয়ান ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন নিয়ে ইনস্টিটিউশন আছে, তাদের সঙ্গে কোলাবরেশন করা, বিভিন্ন ধরনের প্রোগ্রাম ও ট্রেনিং করা।’
‘সম্প্রতি মুজিব শিরোনামের যে সিনেমাটি সহ-প্রযোজনা হয়েছে, এমন অন্য কোনো সিনেমায় সহ-প্রযোজনার সুযোগ আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে’- যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
ভারতের সিনেমা যেহেতু বাংলাদেশের বাজারে চলে সেহেতু বাংলাদেশেরও ভালো মানের সিনেমা ভারতে চালানোর বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দর্শককে জোর করে কিছু দেখানো যায় না। বাজারে কোনো জিনিসের চাহিদা থাকলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই যাবে-আসবে। সিনেমা যেহেতু প্রোডাক্ট, সেহেতু ভারতের বাজারে দর্শক থাকলে অবশ্যই যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আরও কো-অপারেশনের সুযোগ আছে, সেসব নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি মনে করি- বাংলাদেশ এ বিষয়ে বেশি লাভবান হবে। কারণ ভারতের ফিল্মে, টেলিভিশনে বা অন্যান্য জায়গায় যে অভিজ্ঞতা আছে, তা আমরা যত বেশি নেয়ার চেষ্টা করা যায়। দেশের উন্নয়নের জন্য এসব জরুরি।’
আরও পড়ুন:সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি অর্জনে অবদান রাখতে এবং দেশকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করায় অবদান রাখতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সবকিছু করছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘ডিফেন্স ডিপ্লোমেসি: স্ট্র্যাটেজি ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সূত্র: ইউএনবি
সেনাপ্রধান বলেন, ‘মাতৃভূমিকে রক্ষা করা, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা আমাদের কর্তব্য এবং আমরা তার জন্য প্রস্তুত আছি। আমরা সবকিছুই করছি।’
বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্র নীতির বাণী ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে আমরা সবকিছু করছি।’
জাতীয় নিরাপত্তা বজায় রেখে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে সেনাপ্রধান বলেন, ‘কূটনীতি যেকোনো ধরনের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের প্রচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
বেসামরিক শক্তির সহায়তায় সেনাবাহিনী কীভাবে দেশে গঠনমূলক কর্মকাণ্ড, দেশ-বিদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
সেনাপ্রধান বলেন, ‘যেখানেই সুযোগ আছে, তা প্রত্যক্ষ হোক বা পরোক্ষ, আমরা সুযোগ গ্রহণ করি এবং বাংলাদেশের স্বার্থে সবকিছু করি।’
সামরিক কূটনীতির কথা বলতে গিয়ে জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আরও সম্পদ ও বাজেট বরাদ্দ করে তাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা জানি কীভাবে এটা করতে হয়। কিন্তু আমাদের এটা করার সামর্থ্য থাকা উচিত।’
মিয়ানমার ইস্যু প্রসঙ্গে সেনাপ্রধান বলেন, ‘মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের কেউ কেউ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছেন এবং এখানে নিজেদের সমস্যায় ফেলার ঝুঁকি রয়েছে।
‘এক বন্ধুকে খুশি করার জন্য আমরা আরেক বন্ধুর বিরোধিতা করতে পারি না। বেশকিছু বিষয় রয়েছে যা আমাদের খেয়াল করতে হবে। এসব ঘটনার প্রভাবও বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি এবং আমরা সঠিক পথেই রয়েছি।’
জেনারেল শফিউদ্দিন বলেন, দূর থেকে চালানো যায় এমন কিছু যানবাহন দেশেই তৈরি হচ্ছে যা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জন্য বেশ উপকারে আসবে। আগে এসব যন্ত্রপাতি আমদানি করতে হতো। তাই এখন আমাদের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে।’
সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কেবল যুদ্ধে লড়াই করাই শেখে না, বরং জাতীয় স্বার্থে কীভাবে যুদ্ধ প্রতিরোধ বা এড়াতে হয় তা-ও জানে। আমরা সঠিক পথেই আছি এবং আমরা আমাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবো না।’
একইসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা সামরিক বাহিনীর প্রধান দায়িত্ব। এটি তারা কখনও ভুলে যায় না এবং এ কাজে সবসময় তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
‘উদ্দেশ্য রাতারাতি পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু সক্ষমতা রাতারাতি পরিবর্তন হয় না। আজ আপনি আমার বন্ধু, আগামীকাল বন্ধু না-ও হতে পারেন। কিন্তু জাতীয় স্বার্থ, মাতৃভূমি রক্ষায় আমাদের সক্ষমতা থাকতে হবে- পররাষ্ট্রনীতির এই আদেশ আমাদের সবার জন্য সমান।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিআইআইএসএস চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত এ এফ এম গওসোল আযম সরকার ও মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. আবু বকর সিদ্দিক খান।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
বিজিবি মহাপরিচালক বৃহস্পতিবার সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ১১ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরের কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন শেষে বিজিবি কার্যালয় পরিদর্শন করেন। দুপুরে মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেয়া প্রতিবেশী দেশটির জান্তা বাহিনীর সদস্যদের খোঁজখবর নেন তিনি।
পরে তিনি ১১ বিজিবির অধীন চাকঢালা বিওপি (বর্ডার অবজারবেশন পোস্ট) পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি মিয়ানমার থেকে জান্তা বাহিনীর সদস্যদের পালিয়ে আসার স্পটগুলো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে বিজিবি মহাপরিচালকের সঙ্গে ছিলেন কক্সবাজার রিজিয়ন কমন্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমসহ বিজিবি রামুর সেক্টর ও অধীনস্ত বিজিবি ব্যাটালিয়নে নাইক্ষ্যংছড়ি ১১ বিজিবি’র জোন কমন্ডার ও অধিনায়ক লে. কর্নেল সাহল আহমদ এসিসহ বিজিবির কর্মকর্তারা।
বান্দরবানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রুমা থানার দুটি মামলায় বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি এক নারীকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদসহ মামলায় ৫৭জনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বান্দরবান সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইন বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে একাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীরা জানান, রুমা থানার জিআর মামলা নং- ৪ ও ৭ মামলায় পুলিশ আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে। আদালত উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ৫৩জনের রিমান্ড মঞ্জুর করে। এর মধ্যে ৫২জনকে দু’দিন করে রিমান্ড এবং একজনকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয়া হয়।
এর আগে বান্দরবান জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তায় ১৮জন নারী ও ৩৯জন পুরুষ বন্দিকে দুটি গাড়িতে করে আদালতে হাজির করা হয়। সম্প্রতি বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে লুটের ঘটনায় তাদেরকে রুমা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে বান্দরবানে চলমান যৌথ অভিযানে সন্দেহভাজন আরও একজনকে আটক করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৬৬জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য