সরকারঘোষিত চার দিনের আংশিক লকডাউনের প্রথম দিন সড়কে দীর্ঘ যানজট দেখল রাজধানীবাসী। ঘোষণা অনুযায়ী গণপরিবহন চলতে দেখা না গেলেও সড়কগুলো ছিল প্রাইভেট কার ও রিকশার দখলে।
অন্যদিকে গণপরিবহন না থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে অফিসগামীদের। গন্তব্যস্থলে যেতে তাদের একমাত্র ভরসা ছিল রিকশা। আর সুযোগ বুঝে রিকশাচালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন অনেক যাত্রী।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সোমবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত আংশিক লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার। এই সময়ে সারা দেশে রিকশা ছাড়া যাত্রী পরিবহনে আর কোনো বাহন চলবে না বলে প্রজ্ঞাপনে নিশ্চিত করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখেছেন নিউজবাংলার প্রতিবেদকরা।
নিউজবাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আব্দুল জব্বার খান জানান, সকাল থেকেই রামপুরা-গুলিস্তান সড়কে দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে।
তিনি বলেন, ‘সড়কে বাস বা সিএনজিচালিত অটোরিকশার মতো পরিবহন দেখা যায়নি। তবে প্রচুর ব্যক্তিগত গাড়ি চলতে দেখা গেছে।
‘রাস্তার মোড়ে মোড়ে অফিসগামীরা অপেক্ষায় ছিলেন গণপরিবহনের। অনেকেই রিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন।’
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মীকে আনার কথা থাকলেও বেশির ভাগ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তা মানেনি। আর এ কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি আরও বেড়েছে।
রাজধানীর শান্তিনগর মোড় থেকে মালিবাগ সড়কটি সকাল থেকেই রিকশার দখলে থাকতে দেখেছেন নিউজবাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সামদানী হক নাজুম।
তিনি বলেন, ‘রিকশার কারণে সড়কটিতে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।’
এ ছাড়া বিমানবন্দর সড়কেও যানজট ছিল সকাল থেকে। এই সড়কে কোনো বাস চলতে দেখা না গেলেও মূলত ব্যক্তিগত গাড়ি দেখা গেছে। সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে ঘরের বাইরে আসা মানুষকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা গেছে পুলিশকে।
মিরপুর রোডসহ অন্য সড়কগুলোতেও দেখা গেছে একই চিত্র।
সড়ক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ধানমন্ডি ট্রাফিক জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার জাহিদ বলেন, ‘আমরা চেকপোস্ট বসিয়েছি। কোনো গণপরিবহন চলছে না।
‘সব ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল করছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় গাড়ির চাপ কম।’
করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সোমবার থেকেই কঠোর লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। তবে বাজেট অধিবেশন ও ব্যাংকের জুন ফাইনালের কারণে শনিবার সে অবস্থান থেকে সরে আসে কর্তৃপক্ষ।
এদিন সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক ভার্চুয়াল সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সোমবার থেকে দেশজুড়ে দেয়া হবে আংশিক লকডাউন। আর বৃহস্পতিবার থেকে দেয়া হবে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন, যা পরিচিতি পেয়েছে শাটডাউন নামে।
আংশিক লকডাউনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সারা দেশে সব শপিং মল, মার্কেট, পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ খাবার বিক্রি করতে পারবে কেবল সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
সরকারি-বেসরকারি অফিস ও প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের ব্যবস্থাপনায় শুধু প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আনা-নেয়ার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, জনসাধারণকে মাস্ক পরানোর প্রচার-প্রচারণা আরও জোরদার করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পাহাড়ি টিলা কেটে প্রায় ১ একর জায়গাজুড়ে স্থাপিত হয়েছে ব্যক্তি মালিকানাধীন পার্ক। বাঁশখালী পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের উত্তর জলদি এলাকায় স্থাপিত এই পার্কটির নামকরণ করা হয়েছে ‘আমানা পার্ক’। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে পাহাড়ি টিলার সঙ্গে প্রায় ৫ হাজার গাছ কেটে ওই পার্কটি নির্মাণ করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশখালী পৌরসভার মিয়ার বাজার থেকে পূর্বপাশে ২ কিলোমিটারের মধ্যেই চোখে পড়ে পাহাড়ি অঞ্চল। মিয়ার বাজার থেকে দুর্গম পথ ধরে পৌঁছাতে হয় সেই পার্কে। বর্ষায় যাতায়াতের রাস্তা চলার অযোগ্য হয়ে ওঠায় দর্শনার্থী তেমন চোখে পড়েনি। যে কয়জন চোখে পড়ল দম্পতি কিংবা জুটি বেঁধে আসা তরুণ-তরুণী। প্রবেশ মুখেই টিকেট কাউন্টার, প্রতি টিকিটের প্রবেশ মূল্য নেওয়া হচ্ছে ৩০ টাকা। টিলায় উঠার জন্য দৃষ্টিনন্দন সিড়ি করে দেওয়া হয়েছে। টিলার ওপরে বন্য পশুর আদলে গড়ে তোলা হয়েছে ভাস্কর্য। দর্শনার্থীদের বসার জন্য তৈরি করা হয়েছে কংক্রিটের আসন। আয়োজন বলতে এইটুকুই।
স্থানীয়রা জানান, ‘২০২৪ সালের শুরুর দিকে ওই স্থানে টিলা কেটে পার্ক স্থাপনের কাজ শুরু হয়। ১ বছর পর ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে এটি দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ধারণা করা হচ্ছে, চারপাশে বনাঞ্চল বেস্টিত পার্কটির জায়গায় এক সময় গাছ ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারাও দাবি করেছেন, উক্ত জায়গায় প্রায় ৫ হাজারের মত বিভিন্ন প্রজাতির গাছগাছালি ছিল। স্বাভাবিকভাবে এই পাহাড়ি টিলা বনবিভাগের জায়গা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পার্কটির উদ্যোক্তা মোহাম্মদ মুমিন বলেন, ‘ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে আমি এই পার্ক স্থাপণ করেছি। এটি আমার মালিকানাধীন জায়গা। আমি গাছপালা ও পাহাড় কাটিনি। উপজেলা প্রশাসন কিংবা বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে এই স্থাপনা করেছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি এবং প্রতিবেদককে কোন প্রকার অনুমতি পত্র তিনি দেখাতে পারেননি।
কলেজ পড়ুয়া এনামুল হক নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, ‘পার্কে উঠতি বয়সি ছেলেমেয়েদের আনাগোনা বেশি, আর ইউটিউবার-টিকটকার যায়। পার্ক হওয়ার মত কিংবা অবলোকন করার মত কিছুই তো নেই সেখানে। শুধু পাহাড়ের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য এটি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ এমন একটা জায়গায় পার্ক করার অনুমতি কীভাবে পেল? পাহাড়ের মোহনীয়তা তো প্রকৃতির দান এর বাইরে আর কিছু নেই।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস্ ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ‘পাহাড় কেটে পার্ক তৈরি করা এটি তো আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। স্থানীয় প্রশাসনকে হাইকোর্ট থেকেও নির্দেশ দেওয়া আছে, পাহাড় ও গাছ কাটলে কঠোর আইণানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। এরপরও যদি পাহাড় কাটা হয়, গাছ কাটা হয় তাহলে আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হল। এসব কারণে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
কলেজ শিক্ষক নুরুল মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ‘বন বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসনের অবহেলার সুযোগে একের পর এক পাহাড় বন ধ্বংস হচ্ছে। বাঁশখালীর একাধিক জায়গায় ভূমিদস্যুরা পাহাড় ও বনভূমি উজাড় করলেও উপজেলা প্রশাসন এবং বন বিভাগ এ বিষয়ে কখনোই পদক্ষেপ নেয় না।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা দীপান্বিতা ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি। জায়গা যদি ব্যক্তিমালিকানাধীন হয়, তবে এটি উপজেলা প্রশাসন দেখার কথা। যদি বন বিভাগের জায়গা হয় সেক্ষেত্রে বিষয়টা বন বিভাগ দেখবে।’
এ বিষয়ে চুনতি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যের জলদি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, ‘বন অধিদপ্তর থেকে কোন প্রকার অনুমতি গ্রহণ করা হয়নি। তাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বর্ষার পর জরিপ করে সীমানা চিহ্নিত করা হবে। সেখানে বন বিভাগের জায়গা থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
বাঁশখালীসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের বনাঞ্চলের পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে লোকালয়ে হাতির আনাগোনা বেড়ে যায় এবং অনেক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের বনাঞ্চলের পরিবেশ ক্ষুন্ন হয় এমন ঘটনা চলমান থাকলে সামনে আরও বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসবে। আইনের যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামশেদুল আলম বলেন, ‘আমি বাঁশখালীতে যোগদানের আগেই এটি তৈরি করা হয়েছে। পার্কটির সম্পর্কে গতকালকে আমি অবগত হলাম। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জায়গা হলেও ব্যবসায়িক উদ্দেশে সেখানে স্থাপনা করলে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতির একটি ব্যাপার-স্যাপার থাকে। আমি আরও খোঁজখবর নিয়ে দেখতেছি।’
সারা দেশে লঘুচাপের প্রভাবে গত দুদিন ধরে বৃষ্টিপাতের কারণে বাতাসে দূষণের উপস্থিতিও কমে এসেছে অনেকটা। গত দুদিনের মতো আজও ঢাকার বায়ুমান ‘ভালো’র কাছাকাছি রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকাল ৯টায় ঢাকার বাতাসের একিউআই স্কোর ছিল ৬৪। এই সূচক ‘মাঝারি’ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত, যেকোনো প্রকার অস্বাস্থ্যকার শ্রেণি থেকে যা অনেক দূরে।
কণা দূষণের একিউআই সূচক যদি ০ থেকে ৫০-এর মধ্যে থাকে, তবে তা ‘ভালো’ হিসেবে বিবেচিত হয়। ৫১ থেকে ১০০-এর মধ্যে হলে সেটি ‘মাঝারি’।
একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়। এই পর্যায়ে সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় বাইরে পরিশ্রম না করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫১ থেকে ২০০ হলে তা ‘অস্বাস্থ্যকর’, ২০১ থেকে ৩০০ হলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১-এর বেশি হলে তা ‘বিপজ্জনক’ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে।
ফলে আজ সকালে রাজধানী ঢাকার বাতাস দূষণ থেকে দূরে এবং ‘ভালো’র একপ্রকার কাছাকাছি বলা চলে।
এই সময়ে ১৬৭ একিউআই স্কোর নিয়ে বিশ্বের শীর্ষ দূষিত শহর ছিল পাকিস্তানের লাহোর। সূচক ১৫২, ১৩৯, ১৩৭ ও ১৩৫ নিয়ে তারপরই ছিল যথাক্রমে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা, চিলির রাজধানী সান্তিয়াগো, ফিলিপাইনের ম্যানিলা এবং কুয়েত সিটি।
এ ছাড়াও ৯৯ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে ছিল পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের শহর দিল্লি। তবে দূষণের মাত্রা কম থাকায় একই সময়ে ঢাকার অবস্থান ছিল অনেক নিচে; ৫৪ নম্বরে।
বাংলাদেশে একিউআই সূচক নির্ধারিত হয় পাঁচ ধরনের দূষণের ভিত্তিতে— বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড (এনও₂), কার্বন মনো-অক্সাইড (সিও), সালফার ডাই-অক্সাইড (এসও₂) ও ওজোন।
দীর্ঘদিন ধরেই বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় ভুগছে ঢাকা। শীতকালে এখানকার বায়ুমান সাধারণত সবচেয়ে খারাপ থাকে, আর বর্ষাকালে তুলনামূলকভাবে উন্নত হয়। বর্ষার শুরুতেই অবশ্য এই আভাস মিলতে শুরু করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতিবছর বিশ্বে আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক, হৃদরোগ, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট (সিওপিডি), ফুসফুসের ক্যান্সার এবং শ্বাসযন্ত্রের তীব্র সংক্রমণ।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রস্তাবিত ইলেকট্রোরাল কলেজব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘জনগণের ভোটাধিকার হরণে এই ব্যবস্থাকে আরেকটি ছলচাতুরী হিসেবে দেখা হচ্ছে।’
গতকাল বুধবার বিকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য কমিশনের যে প্রস্তাব তাতে একটা ইলেক্টোরাল কলেজ করা হবে। এবং প্রায় ওনাদের ভাষ্য অনুযায়ী ৭০ হাজারের মতো ভোটার থাকবে। ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে স্থানীয় সরকার পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এখানে ভোটার হবেন। এবং রাষ্ট্রপতিকে সৎ, দক্ষ ও অভিজ্ঞ একজন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য ওখানে প্রস্তাব করা হয়েছে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) গঠনের প্রস্তাবে আগের মতোই একমত নয় বিএনপি।
এই কাউন্সিলের জবাবদিহি না থাকায় সমর্থন করে না বিএনপি। এই কাউন্সিলে আরেকটি ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করি আমরা।’
স্বাধীন বিচারব্যবস্থার দাবি জানিয়ে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীন বিচারব্যবস্থা হলে ভারসাম্যহীনতা দূর হবে, ফ্যাসিবাদ দমন করবে। প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, অন্য সাংবিধানিক পদ, সংস্থা স্বাধীন করতে পারলে সমস্যা থাকবে না।’
বিএনপি মনে করে সুশাসন নিশ্চিত করতে ন্যায়পাল করা যেতে পারে। বিদ্যমান ব্যবস্থা বজায় রেখে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ হলে তাদের যোগ করা যেতে পারে, বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন আইন সংশোধন করা যেতে পারে। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপি মনে করে, দুদক ও মানবাধিকার কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিদ্যমান আইনগুলো সংস্কারের প্রয়োজন।
রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে মানি এক্সচেঞ্জে ব্যবসায়ীর ২২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এ ঘটনার পর আসামিদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সূত্র ধরেই অস্ত্রসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গত মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন-চক্রের হোতা মো. জলিল মোল্লা (৫২), মো. জাফর (৩৩), মোস্তাফিজুর রহমান (৪০), সৈকত হোসেন ওরফে দিপু মৃধা (৫২), মো. সোহাগ হাসান (৩৪) ও পলাশ আহমেদ (২৬)। এ ঘটনায় ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস, তিনটি মোটরসাইকেল, পিস্তল, গুলি, জাল টাকা ও লুণ্ঠিত টাকা-বিদেশি মুদ্রাও উদ্ধার করা হয়েছে।
পেশাদার চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে টাকা ও স্বর্ণালংকার ডাকাতি করে আসছিল। চক্রটি দীর্ঘদিন মানি এক্সচেঞ্জের মালিকের ওপর নজরদারি করে।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মিন্টুরোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান যুগ্ম-কমিশনার ডিবি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গত ২৭ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক রাসেল ও তার ভগ্নিপতি জাহিদুল হক চৌধুরী মিরপুর-১১ সি-ব্লকের বাসা থেকে ২১ লাখ টাকা ও বিভিন্ন দেশের মুদ্রা নিয়ে হেঁটে মিরপুর-১০ নম্বরের অফিসে যাচ্ছিলেন। শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝামাঝি গলির মুখে পৌঁছালে মোটরসাইকেলযোগে ওত পেতে থাকা ৭ থেকে ৮ জন মুখোশধারী ছিনতাইকারী তাদের গতিরোধ করে। তাদের একজন পিস্তল ঠেকিয়ে টাকা ভর্তি ব্যাগটি ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিলে আরেকজন গুলি ছোড়ে এবং একজন ধারালো চাপাতি দিয়ে জাহিদুলের কোমরে আঘাত করে। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদুল রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। ডাকাতরা চারটি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার ভিডিও একজন পথচারী মোবাইল ফোনে ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিলে তা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় আহত জাহিদুল হক চৌধুরী বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় একটি ডাকাতি মামলা করেন। ঘটনার পরপরই ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশে ডিবির একাধিক টিম মাঠে নামে। গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিবি প্রথমে ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস শনাক্ত করে। মাইক্রোবাসের চালক জাফরকে (৩৩) গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জাফর ছিনতাইয়ের ঘটনায় তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে তথ্য বিশ্লেষণ করে একযোগে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও যশোরে অভিযান চালিয়ে ডাকাত দলের মূল পরিকল্পনাকারী জলিল মোল্লাসহ চক্রের আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতি, হত্যা ও অস্ত্র আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। আসামিদের কাছ থেকে ডাকাতির ৫ লাখ ৩ হাজার টাকা, ১০৬টি বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, ২ লাখ ১২ হাজার টাকার জাল নোট, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, একটি চাপাতি এবং তিনটি খেলনা পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, এ চক্র আগেও ভয়াবহ কয়েকটি ঘটনায় জড়িত ছিল। গত ২৪ জানুয়ারি কামরাঙ্গীরচর এলাকায় গুলি করে ৫০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই এবং ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর ধানমন্ডি সাত মসজিদ রোডে গুলি চালিয়ে ৫২ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এ চক্রের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন আসামিরা।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধ ডাকাতি চালাতে এ চক্র আধুনিক প্রযুক্তি, আগ্নেয়াস্ত্র ও বিভিন্ন ছদ্মবেশে কার্যক্রম পরিচালনা করতো। বাকি অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত সম্পদ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে যুগ্ম-কমিশনার ডিবি (দক্ষিণ) মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
কেরানীগঞ্জের শাক্তা ও তারানগর ইউনিয়নের বুক চিরে চলা ভাওয়াল-চন্ডিপুর-অগ্রখোলা সড়কের বেহাল দশায় নিত্যদিন ভোগান্তিতে পড়ছে হাজারো মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে এখন গর্ত আর ধুলাবালি। সামান্য বৃষ্টিতে কাদায় যানবাহন আটকে যায়, আর শুকনো মৌসুমে উড়ে ধূলোর ঝড়।
রাস্তাটির বেহাল অবস্থার কারণে প্রায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা। ছোট-বড় গর্তে হোঁচট খেয়ে পড়ে আহত হন অনেক পথচারী। অন্যদিকে, যানবাহন চলাচলের অযোগ্য এই সড়কে প্রতিনিয়তই নষ্ট হয়ে পড়ে ভ্যান, অটোরিকশা, ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি। আকিজ ফাউন্ডেশন স্কুল, মেকাইল মাদ্রাসা ও অগ্রখোলা কমিউনিটি হাসপাতালের সামনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে মাঝে মাঝেই উল্টে যায় যাত্রী বোঝাই যানবাহন ।
সড়কের করুণ অবস্থার কারণে অনেক চালক ও পথচারী এখন পাশের বেলনা, কলাতিয়া ও নয়াবাজার হয়ে বিকল্প রাস্তায় যাতায়াত করছেন। এতে সময়, অর্থ ও দুর্ভোগ বাড়ছে।
এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন কেরানীগঞ্জ ছাড়াও নবাবগঞ্জ, দোহার, সিরাজদিখানসহ দক্ষিণবঙ্গের হাজার হাজার মানুষ মোহাম্মদপুর হয়ে রাজধানীতে প্রবেশ করে। অথচ বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পড়ে আছে সড়কটি।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটার অবস্থা এমন যে, অটোরিকশা সিএনজিতে ওঠা মানেই কোমর ভাঙা। মাঝে মাঝেই যানবাহন পড়ে মানুষ আহত হয়। স্কুলের বাচ্চারা পর্যন্ত ভয়ে এই রাস্তায় যেতে চায় না। কোন এমপি-মন্ত্রী একবার এই রাস্তা দিয়ে গেলে বুঝত কষ্টটা কেমন।
একই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পণ্যবাহী ট্রাকচালক রাকিব হাওলাদার। তিনি বলেন, একবার গর্তে পড়লে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। ট্রাকে থাকা জিনিসপত্র পড়ে যায়, এভাবে থাকলে এই রাস্তা দিয়ে আর চলাচল করা সম্ভব নয়। এটি দ্রুত সংস্কার করা উচিত।
এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ বলেন, সড়কটি ইতোমধ্যে ডিপিপিতে অনুমোদন পেয়েছে। তাই এখন সংস্কার করা হচ্ছেনা। বছরের শেষ দিকে ২০ ফুট প্রশস্ত করে এবং আরও শক্তিশালী করে কাজ শুরু হবে। তখন রাস্তাটি আরো টেকসই হবে।
এদিকে এলাকাবাসীর দাবি, সংস্কার কাজ শুরুর আগ পর্যন্ত অন্তত গর্ত ভরাট করে সাময়িক চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে। নইলে প্রতিদিন দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
একটা ভাঙাচোরা বাইসাইকেলই তার ভরসা। এ সাইকেল চালিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের দুর্গম খাসিয়া পল্লীতে কাজ করে দুই-আড়াইশ টাকা রোজগার করে কিশোর তোফাজ্জল (১৪)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের কাঁঠালকান্দী গ্রামের আলী আহমেদ (৬৫) এর ছেলে তোফাজ্জল হোসেন। পরিবারে সে একমাত্র উপার্জনক্ষম। বাবা হার্টের রোগী, বোন আয়েশা খাতুন (২৫) মানসিক ভারসাম্যহীন আর বয়োবৃদ্ধ দাদী সমিতা বিবি (৮২) দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী।
তোফাজ্জল কান্নাজড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিদিনি সকালে ভাঙাচোরা একটি সাইকেল নিয়ে ১৫ কিলোমিটার দুরের খাসিয়া পল্লীতে কাজে যাই। সন্ধ্যায় ফিরি। যা রোজগার হয়, দুবেলাও খেতে পাইনা। এ দুনিয়ায় আল্লাহ ছাড়া আমাদের আর কেউ নাই। প্রতিবেশী ফজল মিয়া, আবু শহীদ এ পরিবারের দুরাবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, প্রকৃতই তারা খুব অসহায় ও মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনজনই অসুস্থ। মাঝে মধ্যে আমরা যতটা সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।
সরেজমিন তোফাজ্জলদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি আবাসন প্রকল্পের ছোট্ট একটি ঘরে মেঝেয় জীর্ণ-শীর্ণ কাঁথায় শুয়ে আছেন সমিতা বিবি। অপুষ্টি আর ক্ষুধার যন্ত্রণায় ক্লান্ত। ঠিকমতো কথা বলতে পারছেন না। যা বললেন বোঝা গেলো, ডালভাত খেয়ে ঈদের দিন পার করেছি। ক্ষিদের জ্বালায় রাতে ঘুম আসে না। একরত্তি নাতি আর কিইবা করবে। তবু যা করছে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। চাল ডাল আনলে ওষুধ আনতে পারে না। তবু প্রায়ই অনাহারে থাকতে হয়। ঈদে চান্দে প্রতিবেশীরা কেউ খাবার দেয়, কেউ সামান্য টাকা-পয়সা দেয়। এইভাবেই টিকে আছি।
স্থানীয়দের সহযোগিতাই একমাত্র ভরসা। মানুষের সাহায্যে দুমুঠো ভাত খেতে পারেন, যদি কেউ সাহায্যে না করে তাহলে না খেয়েই থাকতে হয়। তার বিলাপে চোখে জল চলে আসে। এ যেন দারিদ্র্যের এক করুণ চিত্র। এই অসহায় নারীর জীবন কাটছে অভাব আর কষ্টে। পা ভেঙে এক বছর ধরে শয্যাশায়ী। ছেলে আলী আহমেদও হার্টের রোগী। কোন কাজকর্ম করতে পারেন না। তাই ১৩/১৪ বছরের নাতি তোফাজ্জলের কাঁধেই সংসারের ভার। দুর্গম খাসিয়া পুঞ্জিতে কাজ করে দিনে আয় করে দুই-আড়াইশ টাকা মাত্র। এ টাকায় দুবেলা খাবার যোগানোই মুশকিল। তার ওপর অসুস্থ দাদি, বাবা আর মরার উপর খাঁড়ার ঘা মানসিক প্রতিবন্ধী বড় বোন আয়েশা খাতুন।
ইসলামপুর ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি সদস্য ফারুক আহমেদ জানান, একসময় তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিলো না। কয়েক বছর আগে সরকারি আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে এ পরিবারের জন্য একটি ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোফাজ্জলদের দুরাবস্থা জেনে অনেকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে তাদের সহায়তা করছেন। তবে বয়োবৃদ্ধ সমিতা বিবি ও মানসিক প্রতিবন্ধী আয়েশা খাতুনের সুচিকিৎসা ও তোফাজ্জলদের আত্মনির্ভরশীল হওয়ার ব্যবস্থা জরুরি।
গানবাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কৌশিক হোসেন তাপস জামিনে মুক্ত হয়েছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তিনি জামিনে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে যান। সন্ধ্যায় জামিনের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন ঢাকা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিন্স) মো. জাহাঙ্গীর কবির। তিনি বলেন, ‘গানবাংলার কৌশিক হোসেন তাপসের জামিনের কাগজপত্র গত বুধবার দুপুরে কারাগারে আসে। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বের হন।’ গত বছরের ৩ নভেম্বর গভীর রাতে রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে কৌশিক হোসেন তাপসকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার বাদী ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মাহমুদ। অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ১৮ জুলাই উত্তরার আজমপুরে নওয়াব হাবিবুল্লাহ হাইস্কুলের সামনে আয়োজিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার এক কর্মসূচিতে অংশ নেন ইশতিয়াক। সেখানে আওয়ামী লীগ, যুব লীগ ও ছাত্র লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালান। অভিযুক্তরা অতঙ্কিত হামলা চালিয়ে ইশতিয়াক মাহমুদকে মারধর ও গুলি করেন। আহতের পেটে, পিঠে, হাতে ও মাথায় গুলি লাগে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার পেট থেকে গুলি বের করা হয়। ঘটনার ৩ মাস পর, ২৯ অক্টোবর উত্তরা পূর্ব থানায় ইশতিয়াক মাহমুদ নিজেই একটি হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলায় তৎকালীন আইজিপি আব্দুল্লাহ আল মামুনসহ ১২৬ জনকে আসামি করা হয়। কৌশিক হোসেন তাপস ছিলেন মামলার ৯ নম্বর আসামি। গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। মামলাটি আদালতে শুনানির পর্যায়ে রয়েছে এবং তদন্ত কার্যক্রম চলমান।
মন্তব্য