করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন রাখতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা আদৌ কোনো কাজে আসছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সড়কপথে রাজধানীতে আসতে হলে যে চার জেলার সড়ক পাড়ি দিতে হয়, সেই মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুরে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ঢাকায় ঢুকতে বা বের হতে পারছে না কোনো গাড়ি।
গাজীপুরের পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উত্তরার আবদুল্লাহপুর, মানিকগঞ্জের পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গাবতলী, নারায়ণগঞ্জের পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাইনবোর্ড এবং মুন্সিগঞ্জের পথে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে জুরাইন ব্রিজ ও কেরানীগঞ্জের বাবুবাজার ব্রিজ অতিক্রম করতে পারছে না কোনো গাড়ি।
গত মঙ্গলবার থেকেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি স্থানেই পুলিশ সেতুর আগে ও পরে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে। পুরো সড়কেই দেয়া হয়েছে বার।
কিন্তু এই বাধা অতিক্রম করে মানুষ যার যার মতো করে হেঁটে আসছেন, আবার যারা উল্টো পথে যেতে চান, তারা ঠিকই একইভাবে ফিরছেন।
এই মানুষগুলো আবার হাঁটছেন দল বেঁধে, গাড়িতে উঠছেন গাদাগাদি করে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেনিন চৌধুরীর চোখেও পড়েছে এই বিষয়টি। তিনি বলেছেন, গাড়িতে করে না আসলে করোনা সংক্রমণ হয় না, এমনটি তো নয়। কাজেই বিধিনিষেধ যদি দেয়া হয়, তাহলে সেটি কার্যকরভাবেই দেয়া উচিত।
অন্যদিকে যারা রাজধানী লাগোয়া জনপদ থেকে ঢাকায় আসেন, তাদের প্রশ্ন, তাদের চাকরির কী হবে। অফিসে বা ব্যবসার জন্য রাজধানীতে আসতেই হয়। তাদের কেন বাধা দেয়া হবে।
সাভার থেকে প্রতিদিন ঢাকায় অফিস করেন এস এম নুরুজ্জামান। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সাভার কিন্তু ঢাকার বাইরে নয়। তাই বাস সাভার পর্যন্ত চলাচল করা উচিত। অন্যদিকে কাউকেই কিন্তু আটকে রাখা যাচ্ছে না। ব্রিজের এই পাশে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে আবার ঢাকায় ঢুকতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তি বাড়ছে। করোনার ঝুঁকি কমছে না।’
ছয় প্রবেশপথে একই চিত্র
নারায়ণগঞ্জ থেকে যেসব গাড়ি আসে, সেগুলো সাইনবোর্ড এলাকায় বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু ঢাকায় প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষকে ব্যবসা, চাকরি, চিকিৎসা অথবা অন্য কোনো কারণে আসতে হয়।
গত মঙ্গল থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিনই শত শত গাড়ি এসেছে সাইনবোর্ড পর্যন্ত। কিন্তু আর আগাতে না পারার কারণে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট।
কিন্তু সেখান থেকে ফিরে যেতে দেখা যায়নি কাউকে। গাড়ি থেকে নেমে আধা কিলোমিটারের মতো হেঁটে যাত্রাবাড়ীর কাছাকাছি আসেন মানুষজন। সেখান থেকে ইজিবাইক, পিকআপ বা মোটরচালিত রিকশায় করে ভেতরের সড়ক দিয়ে ধুপখোলা মাঠ হয়ে সায়েদাবাদের দিকে আসেন।
জুরাইন ব্রিজ এলাকাতেও একই চিত্র। গাড়ি আটকে দিলে হেঁটে সেতু পার হয়ে এপারে কোনো একটি বাহনে করে চলে আসেন তারা যাত্রাবাড়ীর দিকে।
বাবুবাজার ব্রিজের চিত্রটিও একই রকম। সেখানে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে সেতু পার হতে হয় না। বিপুলসংখ্যক ভ্যানগাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে, আরও আছে ইজিবাইক, রিকশা। এগুলো দিয়ে তারা বিনা বাধায় আসেন তাঁতীবাজারের দিকে। পরে গুলিস্তানের দিকে বা অন্য যেকোনো গন্তব্যে যান।
যারা ঢাকা ছেড়ে উল্টোপথে যেতে চান, তারাও এই তিন পথে ব্যারিকেড পর্যন্ত গিয়ে হেঁটে সেটি পার হন। এরপর সেখান থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে টেম্পো বা বাসে করে চাষাঢ়ার দিকে যান। আর যারা কাঁচপুরের দিকে প্রথমে ইজিবাইক বা অন্য কোনো বাহনে চড়েন। এরপর আরও একটি তল্লাশিচৌকির আগে থামেন। সেটি পার হয়ে আবার বাহনে চড়েন।
ঢাকা-সাভার সড়কে যেতে বাধা গাবতলী ব্রিজের আগে। সেখানেও সেই একই চিত্র। কোনো যানবাহন পার হতে পারে না আমিনবাজার হয়ে। কিন্তু হেঁটে ঢাকায় যাওয়া বা আসার পথে বাধা দেয়া হয় না কাউকে।
হেঁটে সেতু পার হয়ে আরও কিছুটা পথ এগিয়ে গেলে কোনো না কোনো বাহন পাওয়া যায়। আর সেভাবেই ঢাকা ছাড়ছেন হাজার হাজার মানুষ। একইভাবে ঢুকছেন হাজারো মানুষ।
রাজধানীতে আসা এই মানুষদের একটি অংশ সাভারের, আবার দূরের জেলারও আছে যারা ভেঙে ভেঙে তল্লাশিচৌকি হেঁটে কোনো না কোনো বাহনে করে এগিয়েছেন।
ঢাকা-গাজীপুর সড়ক ধরে এগোতে চাইলে বা ঢাকায় আসতে হলে আব্দুল্লাহপুরের টঙ্গী ব্রিজের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার হাঁটতে হয়। সেখানেও এই ভোগান্তি ছাড়া আর যেটা হয়, সেটি হলো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে চলতে হচ্ছে মানুষকে। আবার সেই সব বাহনে ভিড় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি, আর বেশি ভিড় মানেই করোনা সংক্রমণের বাড়তি ঝুঁকি।
এই এলাকায় ঢাকার আরেকটি প্রবেশমুখ সাভারের বেড়িবাঁধ এলাকায়। টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কটি দিয়ে যানবাহন বেড়িবাঁধ হয়ে একদিকে মিরপুর ও অপরদিক দিয়ে আব্দুল্লাহপুর প্রবেশ করে থাকে।
কিন্তু লকডাউন শুরুর প্রথম দিন থেকে বেড়িবাঁধের কিছু আগেই ঢাকা জেলার শেষ সীমানায় যানবাহন থামিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। পরে রাজধানীমুখী যাত্রীরা ৫ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছে যাচ্ছেন ডিএমপির সীমানায়। সেখান থেকে রাজধানীর অভ্যন্তরে চলাচলরত বাসে তারা ঢুকে পড়ছেন ঢাকায়।
আমিনবাজার ব্রিজ পার হয়ে বলিয়ারপুর পর্যন্ত হেঁটে অথবা রিকশায় যাওয়া যাচ্ছে। সেখানে কিছু ছোট লোকাল বাসে উঠে সাভার ও এর আশপাশে পৌঁছানো যায়।
হাঁটার পর বাড়তি ভাড়া
আবদুল্লাহপুর টঙ্গী ব্রিজ পার হলে গাজীপুর যাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ঢাকা থেকে গাজীপুরমুখী বাসগুলো আব্দুল্লাহপুর এসে ঘুরিয়ে নিলেও সাধারণ যাত্রীরা এই পাশে এসে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে গাজীপুর চৌরাস্তা যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ভাড়া ২০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
একটি অটোরিকশায় তোলা হয় পাঁচজন। পেছনে তিনজন, আর সামনে চালকের দুই পাশে দুইজন।
যারা সাভারের দিকে যেতে চান, তারা আমিনবাজার সেতু পার হয়ে বলিয়ারপুর পর্যন্ত হেঁটে বা রিকশায় গিয়ে চড়েন বাসে। স্বাভাবিক সময়ে এই রুটের ভাড়া ২০ টাকা হলেও এখন আদায় করা হচ্ছে ৪০ টাকা। আর দেড় কিলোমিটার কেউ রিকশায় চড়লে ভাড়া দিতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা। মঙ্গলবার বিধিনিষেধ শুরু হওয়ার পর এটুকু পথ পাড়ি দিতে এক চালককে ২৫০ টাকা ভাড়া হাঁকতে দেখা যায়।
বাবুবাজার ব্রিজ স্বাভাবিক সময়ে ভ্যানগাড়িতে ১০ টাকা ভাড়া নেয়া হলেও এখন নেয়া হয় ২০ টাকা। আর ইজিবাইক ৫০ টাকা নেয় ন্যূনতম।
জুরাইন থেকে মাওয়া ঘাট পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা। যাত্রী তোলা হচ্ছে পাঁচজন। আর পিকআপে যাত্রী তোলা হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ জন, ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা।
এই রুটে বাস বন্ধ আছে।
পরিবহনসংশ্লিষ্টরা কী বলছেন
আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বাস আশুলিয়ার নবীনগর থেকে ছাইড়া যায়। পরে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের ধউরের একটু আগে বাস থামায় দেয় পুলিশ। মূলত ওইটায় ঢাকা জেলার শেষ সীমানা। পরে ওখান থাইকা পাঁচ মিনিট হাঁটলেই ডিএমপির এলাকা শুরু। যাত্রীরা পরে ওখান থাইকা ঢাকার ভেতরের বাস দিয়া যার যার মতো চলে যায়।’
ওয়েলকাম পরিবহনের পরিচালক জি এম মিন্টু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিন দিন ধরেই আমিনবাজার থেকে আমাদের গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সালেহপুর ব্রিজ পার হলেই ইউটার্ন থেকে গাড়ি ঘোরাতে হয়। ঢাকার মধ্যে কোনো গাড়ি পুলিশ ঢুকতে দেয় না। তবে যাত্রীরা ওখান থেকে যে যার মতো পায়ে হেঁটে ঢাকায় যান।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ যা বলছেন
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লেনিন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে আমাদের আগে বুঝতে হবে করোনা সংক্রমণ হয় মানুষ থেকে মানুষে। মানুষ যারা এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় যাচ্ছে, সেটা কি গাড়ি কি পায়ে হেঁটে, তাতে সংক্রমণ ছড়ানো বা না ছড়ানোর কিছু নেই। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয় মানুষের চলাচলকে সীমিত করার জন্য। তবে মানুষের চলাচল যদি সীমিত করা না হয় তবে কোনো ফল আসবে না।’
তিনি বলেন, ‘এভাবে তাহলে যান চলাচল সীমিত করা অর্থহীন। যে করোনা ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে সেটি নিঃসন্দেহে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। বাস্তবে তাই দেখা যাচ্ছে।’
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো লকডাউন কেন সফল হচ্ছে না তা নিয়ে কোনো গবেষণা কিন্তু হচ্ছে না। কারণগুলো খুঁজে বের করে তা সমাধান করা হচ্ছে না। যারা সাভার বা মানিকগঞ্জ থেকে অফিস করে তাদের কী হবে সেটি কিন্তু জানানো হয়নি।’
কী বলছে কর্তৃপক্ষ
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ করিম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আমিনবাজারে কিছুই করছি না। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে যা করার করছে।’
টঙ্গীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাব্বির আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘দেখেন আপনি তো এভাবে কোনো মানুষকে আটকাতে পারবেন না। একটা লোককে তো রাস্তায় রেখে যেতে পারব না। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তাদের তো বের হওয়া উচিত হয়নি। কিন্তু তারা বের হয়েছে। এটা অন্যায় করেছেন তারা।’
প্রজ্ঞাপনে গাড়ির সঙ্গে সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। তবে মানুষের চলাচল কে নিয়ন্ত্রণ করবে তা জানা নেই কারও।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এই বিষয়ে জানান, ‘বাস্তবায়নকারী সংস্থা কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী নয়, সেটা হলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে তারা রিকোয়েস্ট করছে তারা যেন এই কাজটি করে। সে অনুযায়ী আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজটি করছে। তারা যেখানে যেভাবে লকডাউন করার কথা বলে, পুলিশ সেখানে সহযোগিতা করে থাকে।’
আরও পড়ুন:১৮ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ইমপ্যাক্ট র্যাঙ্কিংস ২০২৫-এর ফলাফলে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) বাংলাদেশের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের শীর্ষ ২০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় জায়গা করে নিয়ে একটি গৌরবময় অবস্থান নিশ্চিত করেছে। বিশ্বব্যাপী ২,৩১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ডিআইইউ ১০১ থেকে ২০০-এর মধ্যে অবস্থান করেছে। বাংলাদেশ থেকে তালিকাভুক্ত ১৯টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ডিআইইউ-ই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যা এই মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।
টাইমস হায়ার এডুকেশন ইমপ্যাক্ট র্যাঙ্কিং মূলত জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-এর ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদান মূল্যায়ন করে থাকে। ২০২৫ সালের র্যাঙ্কিংয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনন্য সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষভাবে, বিশ্ববিদ্যালয়টি মানসম্মত শিক্ষা (এসডিজি-৪) এবং লক্ষ্যের জন্য অংশীদারিত্ব (এসডিজি-১৭) এই দুই ক্যাটেগরিতে বিশ্বব্যাপী ১৯তম স্থান অর্জন করেছে। এছাড়া শালীন কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (এসডিজি-৮) ক্ষেত্রে ৩৩তম, শূন্য দারিদ্র্য (এসডিজি-১) ক্ষেত্রে ৩৬তম, জিরো হাঙ্গার (এসডিজি-২) ক্ষেত্রে ৫৩তম এবং বৈষম্য হ্রাস (এসডিজি-১০) ক্ষেত্রে ৬০তম স্থান অর্জন করেছে।
এই কৃতিত্ব ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টেকসইতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও বৈশ্বিক প্রভাব সৃষ্টির প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারের পরিচায়ক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সাফল্যে তাদের সম্মানিত অনুষদ সদস্য, নিবেদিতপ্রাণ কর্মী, প্রতিভাবান শিক্ষার্থী, গর্বিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং মূল্যবান অংশীদারদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন, যারা এই যাত্রার অংশ হয়ে ডিআইইউ-কে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অর্জন বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্প, সারাবছর আয়োজিত একাডেমিক ও সামাজিক কার্যক্রম এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রচেষ্টারই স্বীকৃতি। এই সাফল্য একাধারে সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা শিক্ষা ব্যবস্থার এবং তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর জ্ঞানচর্চার ধারাবাহিক উন্নয়নের প্রতিফলন।
কুষ্টিয়া বিজিবির পৃথক যৌথ টাস্কফোর্স এর অভিযানে ২৮৮০ কেজি বেহুন্দী জাল, ৪৭০ কেজি কারেন্ট জাল ও ১৫টি তেলের ড্রাম জব্দ এবং ৮টি নৌকার মালিককে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ১১ টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুষ্টিয়া বিজিবি-৪৭ ব্যাটালিয়ন।
বিজিবি জানায়, ১৬ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মানিকের চর এলাকায় একটি যৌথ টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় দৌলতপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, মৎস্য অফিসার, এবং বিজিবির ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার সহকারী পরিচালক মোঃ জাকিরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে বিজিবি ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালিত হয়।
পরিচালিত অভিযানে এ বিপুল পরিমাণ অবৈধ ২৮৮০ কেজি বেহুন্দী জাল, ১৫টি তেলের ড্রাম জব্দ সহ মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০-এর ৪(ক) ধারা লঙ্ঘনের দায়ে ৬টি নৌকার মালিককে ৫ হাজার টাকা করে মোট ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দকৃত জাল ও তেলের ড্রামের আনুমানিক মূল্য ৭২,৭৫,০০০ হাজার টাকা।
জব্দকৃত জাল ও তলের ড্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হাই সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এছাড়াও মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে জেলার মিরপুর উপজেলার গরুর হাট সংলগ্ন এলাকায় আরেকটি যৌথ টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালিত হয়।
এ সময় ৪৭০ কেজি ভারতীয় অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত অবৈধ কারেন্ট জাল মিরপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং একই ধারায় অভিযুক্ত ২জনকে ১ হাজার টাকা করে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দকৃত কারেন্ট জালের আনুমানিক মূল্য ৭,০৫,০০০ টাকা।
বিজিবি আরো জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মাদক ও চোরাচালানসহ সকল অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে সর্বদা কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড। এই অভিযান মাদক ও চোরাচালানবিরোধী জিরো টলারেন্স নীতির একটি সফল বাস্তবায়ন। ভবিষ্যতেও এই ধরনের অপরাধ দমনে কঠোর এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখবে বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়ন।
কক্সবাজারের আলোচিত সাবেক এমপি জাফর আলম কে আদালতে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখাতে চকরিয়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হয়েছে আজ।
জাফর আলম সর্বশেষ কক্সবাজার-১ আসনের এমপি এবং চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন।
বুধবার সকাল ৯টার পর পরই জেলা পুলিশের একটু প্রিজন ভ্যানে করে যৌথ বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় তাকে আদালতে আনা হয়।
তাকে আজ আদালতে তোলার খবরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালত চত্বর ও আশপাশের অন্তত অর্ধ কিলোমিটার এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে।
আদালত সূত্র জানায়- বিগত ৫ আগষ্ট পরবর্তী চকরিয়া ও পেকুয়া থানায় দায়ের করা একাধিক হত্যাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাকে শ্যােন অ্যারেস্ট দেখানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। সেসব মামলার শুনানি করা হয় আজ। এ সময় আদালতের বিচারক মো. আনোয়ারুল কবির শুনানী শেষে ৭ মামলায় সর্বমোট ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তন্মধ্যে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব মামলায় সর্বোচ্চ চারদিন ও সর্বনিম্ন ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলাগুলোর মধ্যে চকরিয়া থানার ৫টি ও পেকুয়া থানার ২টি মামলা রয়েছে।
আরও জানান- আদালতের শুনানী চলাকালে জাফর আলমের পক্ষে শুনানী করেন অসংখ্য আইনজীবী। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে তথা জাফর আলমের বিপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট মো. মঈন উদ্দিন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন এপিপি মঈন উদ্দিন-ই।
আদালতের শুনানী শেষে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীরা জাফর আলমের মুক্তির দাবিতে সাড়ে দশটার দিকে একটি ঝটিকা মিছিল বের করেন।
এর আধাঘন্টা পর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জাফর আলমের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে পাল্টা মিছিল করে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে গিয়ে শেষ করেন।
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর অধীনে 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর' প্রতিষ্ঠিত হবে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনসহ গণ-অভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছে এ অধ্যাদেশ। অধ্যাদেশটি জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে প্রকাশ করা হয়।
এই অধ্যাদেশের দ্বিতীয় অধ্যায়ে অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যাবলীসহ নানাবিধ বিষয় অর্ন্তভূক্ত রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন 'জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর' প্রতিষ্ঠিত হবে।
অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থাকবে ঢাকায়। সরকার প্রয়োজনে ঢাকার বাইরে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অধিদপ্তরের শাখা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
অধিদপ্তরের কার্যাবলী হচ্ছে- সরকারি গেজেটে প্রকাশিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা ও ডাটাবেজ সংরক্ষণ, প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন এবং হালনাগাদ আকারে সরকারি গেজেটে প্রকাশের জন্য সুপারিশ।
এছাড়া রয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত এককালীন ও মাসিক আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ।
আরো রয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন।
কার্যাবলীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশী সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয়সাধনের কথা রয়েছে।
অধিদপ্তরের একজন মহাপরিচালক থাকবেন এবং তিনি অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী হবেন।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, এটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনসহ গণ-অভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছে।
অধ্যাদেশ আরো বলা হয়েছে, তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের বর্ণবাদী, নিপীড়নমূলক ও বৈষম্যমূলক নীতি এবং বাংলাদেশের জনগণকে নির্বিচারে হত্যার কারণে মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জনগণের অব্যাহত সংগ্রাম ও ত্যাগ তিতিক্ষা সত্ত্বেও স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরও সুবিচার, মর্যাদাপূর্ণ গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। জানুয়ারি ২০০৯ সাল থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দলীয়করণ, দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ফলে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান অকার্যকর হয়। অন্যায়ভাবে শক্তি প্রয়োগ করে বিরোধীমত দমন, গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হয়। দেশের অর্থ পাচার ও লুটপাট নীতির ফলে অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি, নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী কাঠামোগত সহিংসতার শিকার হয়। জনগণের বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকার হরণ করে জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার সৃষ্ট প্রেক্ষাপট জনগণকে শঙ্কিত করে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই ২০২৪ এ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ-নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আপামর জনতার দীর্ঘ পনেরো বৎসরের ফ্যাসিবাদ ও বিচারহীনতার ফলে পুঞ্জীভূত ক্ষোভে এক গণআন্দোলন হতে ক্রমান্বয়ে গণঅভ্যুত্থানে রূপ লাভ করে ৫ আগস্ট, ২০২৪ এ ফ্যাসিবাদী শাসককে জনগণের কাছে পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়ে পলায়নে বাধ্য করে। এ গণঅভ্যুত্থানে ব্যাপক সংখ্যক নারী ও পুরুষ অংশগ্রহণ করেছেন এবং দেশব্যাপী সহস্রাধিক নিরস্ত্র দেশপ্রেমিক ছাত্রজনতা শহীদ হয়েছেন।
এছাড়া অসংখ্য মানুষ আহত, কেউ কেউ গুরুতর আহত হয়েছেন। অধিকাংশই আঘাত ও নৃশংসতার বিভীষিকায় পর্যুদস্ত এবং তাদের এই আত্মত্যাগকে যথার্থ সম্মান প্রদর্শন অপরিহার্য।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই আন্দোলনে ত্যাগের দৃষ্টান্ত জাতির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসাবে সমুন্নত রাখা কর্তব্য।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত স্বীকৃতি, সম্মান, কল্যাণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়। এই অধ্যাদেশ 'জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫' নামে অভিহিত হবে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও গেজেটে বলা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যদের জনবিচ্ছিন্ন না হয়ে বরং জনসংযোগ ও নিরাপত্তার মেলবন্ধনের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত 'প্রধান উপদেষ্টার দরবার' অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এ কথা বলেন।
এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যদের সকল রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুস সামাদ চৌধুরী বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, তিন বাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মাসুদপুর সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ২০ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বুধবার (১৮ জুন) ভোর পৌনে ৫টার দিকে ভারত থেকে তাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়। এরপর মাসুদপুর বিজিবি ক্যাম্পের একটি টহল দল তাদের আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ।
তিনি জানান, আটকদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ, ৭ জন মহিলা ও ১০টি শিশু রয়েছে। তারা কুড়িগ্রামের বাসিন্দা বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
এ ছাড়া আটকদের নাম ও ঠিকানা যাচাইয়ের কাজ শেষে তাদের শিবগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
কর্নেল ফাহাদ বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে জোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’
এর আগে, গত ৩ জুন জেলার ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারি সীমান্ত দিয়ে ৮ জনকে ও ২৭ মে গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৭জনকে পুশইন করে বিএসএফ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার গোসাইপুর-জালশুকা সড়কের নির্মাণ কাজ ১১ মাসেও শেষ হয়নি। অথচ ঠিকাদারের শর্ত অনুসারে এ কাজ নয় মাসে শেষ করার কথা। অভিযোগ রয়েছে- ঠিকাদার লোকমান হোসেন এ সড়কের বক্সকাটিং করে ১১ মাস ধরে ফেলে রেখেছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতা ও গাফিলতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। উল্লেখ্য তিতাস নদীর উত্তর পাড়ে বড়াইল ইউনিয়নের একটি গ্রাম গোসাইপুর। গ্রামের পশ্চিম অংশে বাজার। বাজারের পূর্ব দিকে দিয়ে চলে গেছে গোসাইপুর-জালশুকা সড়কটি। এ বাজারের যাতায়াতের জন্য রাধানগর, চরগোসাইপুর, জালশুকা, বড়াইল, মেরাতুলী গ্রামের মানুষেরাও সড়কটি ব্যবহার করে।
গোসাইপুর বাজারের মুদি মালের ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন বলেন-"আমার গ্রামের বাড়ি জালশুকা । প্রতিদিন এ সড়কে বাজারে আসি। সড়কটি বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেই পানি ও কাঁদা মিলে চলাচলে অযোগ্য হয়ে যায়"। বড়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বাসার বলেন-"পূর্ব অঞ্চলের জনগণের জন্য এই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গোসাইপুর বাজার ও রাধানগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজে আসা-যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। সড়কটির কাজ শেষ না হওয়ার কারণে জনগণের যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে"। গোসাইপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার ডা. হুমায়ুন কবীর বলেন-"সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই। নির্মাণ কাজ করতে এসে ঠিকাদার আর কাজ করছেন না। এখন বর্ষার বৃষ্টির কারনে মোড়ে মোড়ে রাস্তা ভেঙে মাটি পড়ে যাচ্ছে। যাত্রীরা পা পিছলে পড়ে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরাও"। কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন- "সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে আমি কয়েকবার তাগিদ দিয়েছি"। এ বিষয়ে ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব হোসেন বলেন-"এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে"। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী বলেন-"এই সড়কের কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করব"।
মন্তব্য