করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন রাখতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা আদৌ কোনো কাজে আসছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সড়কপথে রাজধানীতে আসতে হলে যে চার জেলার সড়ক পাড়ি দিতে হয়, সেই মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও গাজীপুরে কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। ঢাকায় ঢুকতে বা বের হতে পারছে না কোনো গাড়ি।
গাজীপুরের পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে উত্তরার আবদুল্লাহপুর, মানিকগঞ্জের পথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে গাবতলী, নারায়ণগঞ্জের পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাইনবোর্ড এবং মুন্সিগঞ্জের পথে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে জুরাইন ব্রিজ ও কেরানীগঞ্জের বাবুবাজার ব্রিজ অতিক্রম করতে পারছে না কোনো গাড়ি।
গত মঙ্গলবার থেকেই এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি স্থানেই পুলিশ সেতুর আগে ও পরে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে। পুরো সড়কেই দেয়া হয়েছে বার।
কিন্তু এই বাধা অতিক্রম করে মানুষ যার যার মতো করে হেঁটে আসছেন, আবার যারা উল্টো পথে যেতে চান, তারা ঠিকই একইভাবে ফিরছেন।
এই মানুষগুলো আবার হাঁটছেন দল বেঁধে, গাড়িতে উঠছেন গাদাগাদি করে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ লেনিন চৌধুরীর চোখেও পড়েছে এই বিষয়টি। তিনি বলেছেন, গাড়িতে করে না আসলে করোনা সংক্রমণ হয় না, এমনটি তো নয়। কাজেই বিধিনিষেধ যদি দেয়া হয়, তাহলে সেটি কার্যকরভাবেই দেয়া উচিত।
অন্যদিকে যারা রাজধানী লাগোয়া জনপদ থেকে ঢাকায় আসেন, তাদের প্রশ্ন, তাদের চাকরির কী হবে। অফিসে বা ব্যবসার জন্য রাজধানীতে আসতেই হয়। তাদের কেন বাধা দেয়া হবে।
সাভার থেকে প্রতিদিন ঢাকায় অফিস করেন এস এম নুরুজ্জামান। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘সাভার কিন্তু ঢাকার বাইরে নয়। তাই বাস সাভার পর্যন্ত চলাচল করা উচিত। অন্যদিকে কাউকেই কিন্তু আটকে রাখা যাচ্ছে না। ব্রিজের এই পাশে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে আবার ঢাকায় ঢুকতে হচ্ছে। এতে ভোগান্তি বাড়ছে। করোনার ঝুঁকি কমছে না।’
ছয় প্রবেশপথে একই চিত্র
নারায়ণগঞ্জ থেকে যেসব গাড়ি আসে, সেগুলো সাইনবোর্ড এলাকায় বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু ঢাকায় প্রতিদিনই বিপুলসংখ্যক মানুষকে ব্যবসা, চাকরি, চিকিৎসা অথবা অন্য কোনো কারণে আসতে হয়।
গত মঙ্গল থেকে বৃহস্পতিবার প্রতিদিনই শত শত গাড়ি এসেছে সাইনবোর্ড পর্যন্ত। কিন্তু আর আগাতে না পারার কারণে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ যানজট।
কিন্তু সেখান থেকে ফিরে যেতে দেখা যায়নি কাউকে। গাড়ি থেকে নেমে আধা কিলোমিটারের মতো হেঁটে যাত্রাবাড়ীর কাছাকাছি আসেন মানুষজন। সেখান থেকে ইজিবাইক, পিকআপ বা মোটরচালিত রিকশায় করে ভেতরের সড়ক দিয়ে ধুপখোলা মাঠ হয়ে সায়েদাবাদের দিকে আসেন।
জুরাইন ব্রিজ এলাকাতেও একই চিত্র। গাড়ি আটকে দিলে হেঁটে সেতু পার হয়ে এপারে কোনো একটি বাহনে করে চলে আসেন তারা যাত্রাবাড়ীর দিকে।
বাবুবাজার ব্রিজের চিত্রটিও একই রকম। সেখানে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে সেতু পার হতে হয় না। বিপুলসংখ্যক ভ্যানগাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে, আরও আছে ইজিবাইক, রিকশা। এগুলো দিয়ে তারা বিনা বাধায় আসেন তাঁতীবাজারের দিকে। পরে গুলিস্তানের দিকে বা অন্য যেকোনো গন্তব্যে যান।
যারা ঢাকা ছেড়ে উল্টোপথে যেতে চান, তারাও এই তিন পথে ব্যারিকেড পর্যন্ত গিয়ে হেঁটে সেটি পার হন। এরপর সেখান থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়কে টেম্পো বা বাসে করে চাষাঢ়ার দিকে যান। আর যারা কাঁচপুরের দিকে প্রথমে ইজিবাইক বা অন্য কোনো বাহনে চড়েন। এরপর আরও একটি তল্লাশিচৌকির আগে থামেন। সেটি পার হয়ে আবার বাহনে চড়েন।
ঢাকা-সাভার সড়কে যেতে বাধা গাবতলী ব্রিজের আগে। সেখানেও সেই একই চিত্র। কোনো যানবাহন পার হতে পারে না আমিনবাজার হয়ে। কিন্তু হেঁটে ঢাকায় যাওয়া বা আসার পথে বাধা দেয়া হয় না কাউকে।
হেঁটে সেতু পার হয়ে আরও কিছুটা পথ এগিয়ে গেলে কোনো না কোনো বাহন পাওয়া যায়। আর সেভাবেই ঢাকা ছাড়ছেন হাজার হাজার মানুষ। একইভাবে ঢুকছেন হাজারো মানুষ।
রাজধানীতে আসা এই মানুষদের একটি অংশ সাভারের, আবার দূরের জেলারও আছে যারা ভেঙে ভেঙে তল্লাশিচৌকি হেঁটে কোনো না কোনো বাহনে করে এগিয়েছেন।
ঢাকা-গাজীপুর সড়ক ধরে এগোতে চাইলে বা ঢাকায় আসতে হলে আব্দুল্লাহপুরের টঙ্গী ব্রিজের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার হাঁটতে হয়। সেখানেও এই ভোগান্তি ছাড়া আর যেটা হয়, সেটি হলো স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে চলতে হচ্ছে মানুষকে। আবার সেই সব বাহনে ভিড় স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি, আর বেশি ভিড় মানেই করোনা সংক্রমণের বাড়তি ঝুঁকি।
এই এলাকায় ঢাকার আরেকটি প্রবেশমুখ সাভারের বেড়িবাঁধ এলাকায়। টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কটি দিয়ে যানবাহন বেড়িবাঁধ হয়ে একদিকে মিরপুর ও অপরদিক দিয়ে আব্দুল্লাহপুর প্রবেশ করে থাকে।
কিন্তু লকডাউন শুরুর প্রথম দিন থেকে বেড়িবাঁধের কিছু আগেই ঢাকা জেলার শেষ সীমানায় যানবাহন থামিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। পরে রাজধানীমুখী যাত্রীরা ৫ মিনিট হাঁটলেই পৌঁছে যাচ্ছেন ডিএমপির সীমানায়। সেখান থেকে রাজধানীর অভ্যন্তরে চলাচলরত বাসে তারা ঢুকে পড়ছেন ঢাকায়।
আমিনবাজার ব্রিজ পার হয়ে বলিয়ারপুর পর্যন্ত হেঁটে অথবা রিকশায় যাওয়া যাচ্ছে। সেখানে কিছু ছোট লোকাল বাসে উঠে সাভার ও এর আশপাশে পৌঁছানো যায়।
হাঁটার পর বাড়তি ভাড়া
আবদুল্লাহপুর টঙ্গী ব্রিজ পার হলে গাজীপুর যাওয়ার ব্যবস্থা আছে। ঢাকা থেকে গাজীপুরমুখী বাসগুলো আব্দুল্লাহপুর এসে ঘুরিয়ে নিলেও সাধারণ যাত্রীরা এই পাশে এসে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে গাজীপুর চৌরাস্তা যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে ভাড়া ২০০ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
একটি অটোরিকশায় তোলা হয় পাঁচজন। পেছনে তিনজন, আর সামনে চালকের দুই পাশে দুইজন।
যারা সাভারের দিকে যেতে চান, তারা আমিনবাজার সেতু পার হয়ে বলিয়ারপুর পর্যন্ত হেঁটে বা রিকশায় গিয়ে চড়েন বাসে। স্বাভাবিক সময়ে এই রুটের ভাড়া ২০ টাকা হলেও এখন আদায় করা হচ্ছে ৪০ টাকা। আর দেড় কিলোমিটার কেউ রিকশায় চড়লে ভাড়া দিতে হচ্ছে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা। মঙ্গলবার বিধিনিষেধ শুরু হওয়ার পর এটুকু পথ পাড়ি দিতে এক চালককে ২৫০ টাকা ভাড়া হাঁকতে দেখা যায়।
বাবুবাজার ব্রিজ স্বাভাবিক সময়ে ভ্যানগাড়িতে ১০ টাকা ভাড়া নেয়া হলেও এখন নেয়া হয় ২০ টাকা। আর ইজিবাইক ৫০ টাকা নেয় ন্যূনতম।
জুরাইন থেকে মাওয়া ঘাট পর্যন্ত সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৫০০ টাকা। যাত্রী তোলা হচ্ছে পাঁচজন। আর পিকআপে যাত্রী তোলা হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ জন, ভাড়া নেয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা।
এই রুটে বাস বন্ধ আছে।
পরিবহনসংশ্লিষ্টরা কী বলছেন
আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহন লিমিটেডের চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের বাস আশুলিয়ার নবীনগর থেকে ছাইড়া যায়। পরে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের ধউরের একটু আগে বাস থামায় দেয় পুলিশ। মূলত ওইটায় ঢাকা জেলার শেষ সীমানা। পরে ওখান থাইকা পাঁচ মিনিট হাঁটলেই ডিএমপির এলাকা শুরু। যাত্রীরা পরে ওখান থাইকা ঢাকার ভেতরের বাস দিয়া যার যার মতো চলে যায়।’
ওয়েলকাম পরিবহনের পরিচালক জি এম মিন্টু নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিন দিন ধরেই আমিনবাজার থেকে আমাদের গাড়ি ঘুরিয়ে দিচ্ছে পুলিশ। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সালেহপুর ব্রিজ পার হলেই ইউটার্ন থেকে গাড়ি ঘোরাতে হয়। ঢাকার মধ্যে কোনো গাড়ি পুলিশ ঢুকতে দেয় না। তবে যাত্রীরা ওখান থেকে যে যার মতো পায়ে হেঁটে ঢাকায় যান।’
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ যা বলছেন
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লেনিন চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আসলে আমাদের আগে বুঝতে হবে করোনা সংক্রমণ হয় মানুষ থেকে মানুষে। মানুষ যারা এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় যাচ্ছে, সেটা কি গাড়ি কি পায়ে হেঁটে, তাতে সংক্রমণ ছড়ানো বা না ছড়ানোর কিছু নেই। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয় মানুষের চলাচলকে সীমিত করার জন্য। তবে মানুষের চলাচল যদি সীমিত করা না হয় তবে কোনো ফল আসবে না।’
তিনি বলেন, ‘এভাবে তাহলে যান চলাচল সীমিত করা অর্থহীন। যে করোনা ভাইরাসকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে সেটি নিঃসন্দেহে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। বাস্তবে তাই দেখা যাচ্ছে।’
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো লকডাউন কেন সফল হচ্ছে না তা নিয়ে কোনো গবেষণা কিন্তু হচ্ছে না। কারণগুলো খুঁজে বের করে তা সমাধান করা হচ্ছে না। যারা সাভার বা মানিকগঞ্জ থেকে অফিস করে তাদের কী হবে সেটি কিন্তু জানানো হয়নি।’
কী বলছে কর্তৃপক্ষ
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ করিম খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আমিনবাজারে কিছুই করছি না। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে যা করার করছে।’
টঙ্গীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাব্বির আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেছিলেন, ‘দেখেন আপনি তো এভাবে কোনো মানুষকে আটকাতে পারবেন না। একটা লোককে তো রাস্তায় রেখে যেতে পারব না। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তাদের তো বের হওয়া উচিত হয়নি। কিন্তু তারা বের হয়েছে। এটা অন্যায় করেছেন তারা।’
প্রজ্ঞাপনে গাড়ির সঙ্গে সাধারণ মানুষের চলাচল সীমিত করার কথা বলা হয়েছে। তবে মানুষের চলাচল কে নিয়ন্ত্রণ করবে তা জানা নেই কারও।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এই বিষয়ে জানান, ‘বাস্তবায়নকারী সংস্থা কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী নয়, সেটা হলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে তারা রিকোয়েস্ট করছে তারা যেন এই কাজটি করে। সে অনুযায়ী আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী কাজটি করছে। তারা যেখানে যেভাবে লকডাউন করার কথা বলে, পুলিশ সেখানে সহযোগিতা করে থাকে।’
আরও পড়ুন:বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইস বৃহস্পতিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
সাক্ষাৎকালে লুইস জাতিসংঘ এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মধ্যে জোরালো সহযোগিতার প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রাধিকার এবং চলমান সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
আলোচনার মূল বিষয় ছিল আসন্ন জাতীয় নির্বাচন। জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়ক ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে সংস্থাটির চলমান সহায়তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
লুইস বলেন, ‘জাতিসংঘ সম্পূর্ণভাবে ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচনের পক্ষে। এটি দেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
সাক্ষাৎকালে তারা অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য জাতিসংঘ কীভাবে সহায়তা করতে পারে তা নিয়েও আলোচনা করেন।
দুই পক্ষই সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষী সংস্কার উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে জাতিসংঘের সম্প্রসারিত সহায়তার উপায় খুঁজে দেখেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের আসন্ন সভা এবং এই মাসের শেষ দিকে রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রস্তুতিও পর্যালোচনা করা হয়। উভয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কমে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা তহবিলের ঘাটতি মোকাবিলা এবং রোহিঙ্গা জনগণের জন্য টেকসই আন্তর্জাতিক সংহতি ও বাড়তি সমর্থনের জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
লুইস বাংলাদেশের সংস্কার ও রূপান্তর প্রক্রিয়ার প্রতি জাতিসংঘের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন এবং দেশের টেকসই উন্নয়ন ও দীর্ঘমেয়াদি সমৃদ্ধি অর্জনে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
দৈনিক বাংলা পত্রিকার ৪র্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জে কেক কেটে দিনটি উদযাপন করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ আয়োজন করা হয়।
জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, দৈনিক বাংলা পত্রিকার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রতিষ্ঠানটিকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে পত্রিকাটি আরও এগিয়ে যাবে সেই কামনা করছি।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহসভাপতি ও এনটিভির প্রতিনিধি বিল্লাল হোসেন রবিন বলেন, দৈনিক বাংলা প্রতিষ্ঠানটিকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে এই প্রতিষ্ঠান কাজ করে আসছে। আগামীর পথচলা আরও সুদৃঢ় হবে বলে প্রত্যাশা করছি। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র সাংবাদিক তমিজ উদ্দিন, একাত্তর টেলিভিশনের হাবিবুর রহমান, একুশে টেলিভিশনের রবিউল ইসলাম, বাংলা ট্রিভিউনের আরিফ হোসাইন কনক, দৈনিক বাংলার প্রতিনিধি সেলিম আহমেদ ডালিম, দৈনিক বাংলার ফটো সাংবাদিক পাপ্পা ভট্টাচার্য, প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক সংবাদের প্রণব কৃষ্ণ রয়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক ও ১৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি দিদার খন্দকারসহ প্রমুখ।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে মাদারীপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মর্তুজা আলম ঢালী ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাউছ উর রহমানের নেতৃত্বে বর্ণিল উৎসবে বিশাল আনন্দ র্যালি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বুধবার মাদারীপুর সদর উপজেলা কমপ্লেক্সের সম্মুখে এ আলোচনা সভা ও আনন্দ র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মর্তুজা আলম ঢালীর সভাপতিত্বে ও সাংগঠনিক সম্পাদক গাউছ-উর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাড. জাফর আলী মিয়া, সদস্য সচিব জাহান্দার আলী জাহান, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক মো. ফারুক বেপারী, সদস্য সচিব মনিরুজ্জামান ফুকু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. শাহাদাত হোসেন হাওলাদার প্রমুখ। এতে জেলা কৃষকদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক লালচান, পৌর বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান কিচলু খানসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত হাজার হাজার নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নির্দেশনায় এদেশের মানুষ বিএনপি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপর আস্থা রেখেছে, তাই তারেক রহমানকেই আগামী দিনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় মানুষ। আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি নিরপেক্ষ, অবাধ, শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের মানুষ বিএনপিকে ক্ষমতায় আনবে ইনশাআল্লাহ।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নজরুল ইসলাম বাবু হত্যা মামলায় তাওলাদ ওরফে জহিরুল নামে এক আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই মামলায় আরও ১৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. মোমিনুল ইসলাম এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত মোহাম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হলেন, তাওলাদ ওরফে জহিরুল। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ১৭ জন হলেন, মিজান, মোহাম্মদ আলী, আব্দুল লতিফ, হানিফ, সোহেল, সবুজ, মিলন, সেলিম, গুলজার, লেদা ফারুক, রাসেল, মোমেন, সাদ্দাম, শাহীন, রুহুল আমিন, আবুল, পণ্ডিত।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট একেএম ওমর ফারুক নয়ন বলেন, ২০১২ সালের ওই হত্যা মামলায় ২৬ জনকে আসামি করা হয়। এদের মধ্যে তাওলাদকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া ৬ জন খালাস এবং ২ জন আসামি মৃত্যুবরণ করেছেন। রায় ঘোষণার সময় একজন আসামি উপস্থিত ছিলেন, বাকি আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ২ মে রূপগঞ্জের মাছিমপুর এলাকার নজরুল ইসলাম বাবু (৪৮) মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে তাকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত নজরুলের বাবা জালালউদ্দিন বাদী হয়ে ভিপি সোহেল ও তার লোকজনদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় বিচার কার্যক্রম শেষে আদালত এই রায় দেন।
নিম্নাঞ্চল ও জলাভূমি বেষ্টিত গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার প্রায় দুই শতাধিক খাল-বিলে এক সময় ভরপুর থাকতো শোল, টাকি, কৈ, শিং, মাগুর, পাঙ্গাস, বোয়াল, চিতল, ফলি, পুটি, খলসে, চুচড়া, মলা, ভুষি চিংড়ি, টেংরাসহ শতাধিক রকমের মাছে। দিন দিন এসকল খাল-বিলগুলো দখল ও দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। যার কারণে দেশীয় এই মাছগুলো এখন বিলুপ্তির পথে।
জানাগেছে, উপজেলার অর্ধশত ছোট-বড় বিলের প্রায় দেড় শতাধিক সরকারি খালের উপর বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে খাল দখল করে মাছের ঘের বানিয়েছে প্রভাবশালী মহল। অন্যদিকে ব্রিজ নির্মাণ ও খাল খনন কাজের জন্য প্রায় ৩০টি খাল বছরের পর বছর বাঁধ দিয়ে রাখায় খালজুড়ে জমাট বেঁধে আছে কচুরিপানা। কচুরিপানা জমে থাকায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক গতি হারিয়েছে খালগুলো।
সরেজমিনে দেখা যায়, শুধুমাত্র উপজেলার পিঞ্জুরি ইউনিয়নের কলমুনিয়া খাল, তিতাল বাড়ি খাল, পেত্নীখালী খাল, বাসাখালী খাল, কুমলাবতী খাল, গোদার খাল, পুকুরিয়া খাল, পাথরিয়া খাল, চৌদ্দবুনিয়া খাল, রামমানির খাল, কুইচা মোড়া খাল, চাইর খাল, সিমানার খাল, কাটা খাল, দেওপুরা খালসহ প্রায় ৩০টি খাল বছরের পর বছর দখল করে রেখেছে ১৩ প্রভাবশালী ব্যক্তি। মৎস্য প্রজেক্টের নামে প্রতিটি প্রজেক্টে এদের এক একজনের রয়েছে ৫০ থেকে ১০০টি শেয়ার। সাধারণ মানুষের রয়েছে নামমাত্র শেয়ার। এই খাল দখলে ১৩ ব্যক্তির মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা, ইউপি মেম্বার, বিএনপি নেতাসহ স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা।
কোটালীপাড়া উপজেলার রামনগরের বিল, রথিয়ারপাড় বিল, মাছপাড়ার বিল, কুমুরিয়া বিল, বৈকণ্ঠপুর বিল, লখন্ডার বিল, মুশুরিয়ার বিল, পিড়ারবাড়ি বিল, পলোটানা বিল, ধোরাল বিল, চিথলিয়ার বিল, পশ্চিম দীঘলিয়ার বিল, পূর্বপাড়া বিল, চিত্রাপাড়া-শুয়াগ্রাম বিল, সাতুরিয়ার বিল, কান্দি বিল, আশুতিয়ার বিল, পোলশাইর বিল, বর্ষাপাড়া বিল, ছত্রকান্দা বিল, দেওপুরা বিল, সোনাখালি বিল, ফুলবাড়ি বিল, কোনের বাড়ি বিলসহ প্রায় অর্ধশত ছোট বড় বিল রয়েছে। এসবে অধিকাংশেই খাল দখল করে নিয়ে মাছ চাষ করছে প্রভাবশালী মহল।
খালগুলো আটকিয়ে মাছের ঘের করায় ক্ষুদ্র মৎস্যজীবীরা খাল-বিল থেকে মাছ ধরতে পারছে না। যে কারনে চরম অভাব অনাটনে কাটছে দরিদ্র মৎস্যজীবীদের সংসার।
অন্যদিকে গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া খালটি খননের জন্য ঘাঘর নদীর মোহনায়, কুশলা ব্রিজের নিচে, ধোরালসহ আরো কয়েক জায়গায় জায়গায় প্রায় ১ বছর ধরে বাঁধ দেওয়া হয়। বছর পার হলেও সামান্য কিছু জায়গা খনন করে বন্ধ রয়েছে খনন কাজ। বর্তমানে বাঁধ দেওয়ার কারণে কচুরিপানায় আটকে বন্ধ হয়ে গেছে পানির প্রবাহ।
পুরো খালের পানি পচে যাওয়ায় এই পানি ব্যবহার করতে না পারায় ও মালামাল নিলে খাল দিয়ে চলাচল বন্ধ হওয়ায় সীমাহীন দুর্ভোগে খালপাড় এলাকার বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা।
কোটালীপাড়া-পয়সারহাট খালের গচাপাড়া এলাকায় ব্রিজ নির্মাণের জন্য এবং ওয়াবদারহাট এলাকায় স্লুইস গেট নির্মাণের জন্য দুই স্থানে বাঁধ দিয়ে খাল আটকে রাখায় এই খালেরও একই অবস্থা দেখা দিয়েছে। একই অবস্থা গোপালপুর-পিঞ্জুরি খালের। এই খালের পূর্ণবতী ব্রিজ নির্মাণের জন্য ৩ বছর ধরে বাঁধ দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে খালটি। এছাড়া কালিগঞ্জ, লখন্ডা, টিহাটি, মান্দ্রা, কুশলাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ২০ টি খাল ব্রিজ নির্মানের জন্য বছরের পর বছর বাঁধ দিয়ে আটকে রাখায় চরম সমস্যায় হাজার হাজার জনসাধারণ।
মুক্ত জলাশয় থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করা মৎস্যজীবী ও সাধারণ জনগণ দ্রুত সময়ের মধ্যে দখলকৃত খাল উদ্ধারের দাবি জানিয়ে গত ১৩ আগস্ট গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামানের কাছে গণশুনানিতে অভিযোগ জানিয়েছে কয়েকজন ভুক্তভোগী। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে গত ১৮ আগস্ট খাল উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে কোটালীপাড়ার ইউএনওকে লিখিতভাবে জানানো হলেও কার্যকরী কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গণশুনানিতে খাল দখলের অভিযোগ জানানো শিক্ষার্থী মাহফুজ শেখ।
এনিয়ে কোটালীপাড়া সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিসার এস এম শাহজাহান সিরাজ বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলার বিভিন্ন খালে বাধঁ দিয়ে মাছচাষ করার বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের নজরে এসেছে। এসকল অবৈধ বাঁধ দিয়ে মাছচাষ করার কারণে দেশীয় মাছের প্রজনন ও বিস্তারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দেশীয় মাছের প্রজনন ও উৎপাদন নিশ্চিত করতে এখন থেকে উপজেলা প্রশাসন ও সিনিয়র উপজেলা মৎস্য অফিস ও অন্যান্য সংশ্লিস্ট দপ্তরকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মিত অবৈধ বাঁধ উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
কোটালীপাড়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার (অ: দা:) মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, এ উপজেলা একটি নিম্ন জলাভূমি এলাকা। এখানে অধিকাংশ জণসাধারণ কৃষি ও মৎস্য কাজে জড়িত। এই এলাকায় প্রচুর মাছের ঘের রয়েছে। যা মৎস্য উৎপাদনে ভূমিকা রাখে। আমরা এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছি। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে অভিযান হয়েছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির গাছ সংরক্ষণে যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে রাঙামাটি ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগ। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগ ২০২৩ সালে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে রাঙামাটির কাউখালি উপজেলার খাসখালী রেঞ্জ এলাকায় ইতোমধ্যে বিলুপ্তপ্রায় ৩৬ প্রজাতির দূর্লভ গাছ নিয়ে একটি বাগান সৃজন করা হয়েছে। পাশাপাশি গড়ে তোলা হচ্ছে এসব গাছের বীজ ভাণ্ডার।
দেশের এক দশমাংশ ভূখণ্ড নিয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিলো শত শত বছরের দূর্লভ গাছপালার ভাণ্ডার। তবে দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা ও নির্বিচারে বন উজাড়ের কারণে বিপন্ন হয়ে পড়েছে পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য। এই বাস্তবতায় বন বিভাগের এ উদ্যোগকে বিশেষজ্ঞরা যুগান্তকারী বলছেন।
ঝুম নিয়ন্ত্রণ বনবিভাগের খাসখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল গফুর খান চৌধুরী বলেন,
‘এই বাগানটিকে যদি সংরক্ষণ করতে পারি, ভবিষ্যতে এটি বন বিভাগের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। বিলুপ্তপ্রজাতির চারাগুলো আমরা বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট, চট্টগ্রাম থেকে সংগ্রহ করেছি। এছাড়া বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মো. জাহিদুর রহমানও বিভিন্ন জায়গা থেকে চারা এনে বনায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন।’
মাত্র ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা এই বাগানে রয়েছে চিকররাশি, কাঠবাদাম, গুটগুটিয়া, অর্জুন, আমলকী, হরতকী, হিজল, ঢাকিজামসহ ১২ প্রজাতির বনজ গাছ, ১৪ প্রজাতির ঔষধি গাছ এবং ১০ প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ, যেগুলো শুধু জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণেই নয়, পাখিদের খাদ্য যোগানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এর পাশাপাশি বাগানে সংরক্ষিত হয়েছে আরও বেশ কিছু দুর্লভ প্রজাতির গাছ। এর মধ্যে রয়েছে—
লোহাকাঠ, চম্পাফুল, তেলসুর, সোনালু, ঢাকিজাম, রাধাচূড়া, কাঠবাদাম, জগা ডুমুর, বান্দর হোলা, শাল, উদাল, বকফুল, তমাল, খেজুর, বহেরা, সিভিট, ধারমারা, অশোক, কাঞ্চনভাদী, কৃষ্ণচূড়া, পিতরাজ, ছাতিয়ান, বোদ্ধ নারিকেল ও পলাশ।
রাঙামাটি ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মো. তবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা ১০০ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় গাছের তালিকা তৈরি করেছি। এর মধ্যে ৩৬ প্রজাতির গাছ খাসখালী রেঞ্জে রোপণ করা হয়েছে। পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আশা করছি, এই বাগান সংরক্ষণের মাধ্যমে আমরা জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারব।’
এরই মধ্যে বাগান থেকে চারা বিক্রির কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। মাত্র ৭ টাকায় এখান থেকে সাধারণ মানুষ চারা সংগ্রহ করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তারা।
এ প্রসঙ্গে রাঙামাটি কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক শাওন ফরিদ বলেন, ‘অতীতে ঝুম নিয়ন্ত্রণ বন বিভাগের মাধ্যমে ফরেস্ট অফিসের আশপাশে ও রাঙাপানি এলাকায় প্রচুর চারা উৎপাদন এবং স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানুষের মাঝে বিতরণ করা হতো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে এ কার্যক্রম দেখা যাচ্ছিল না। বন বিভাগ যদি এখন বিলুপ্তপ্রায় বনজ, ঔষধি ও ফলদ বৃক্ষ সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তাদের ধন্যবাদ জানাই।’
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বন বিভাগের এ উদ্যোগ পাহাড়ের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। পাশাপাশি পাহাড়ি অঞ্চলে বন সম্প্রসারণেও এর প্রভাব পড়বে ইতিবাচকভাবে।
বিগ ডেটা এবং রিয়েল-টাইম ডেটা-ড্রিভেন প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রাহকদের নিরাপদ ও উদ্ভাবনী সেবা দেয়ার স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক ‘ডেটা ইমপ্যাক্ট অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে বিকাশ। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিগ ডেটা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ক্লাউডেরা, ডেটা ব্যবস্থাপনা ও অ্যানালিটিক্সে উদ্ভাবনী প্রয়োগকে স্বীকৃতি দিতে ২০১৩ সাল থেকে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। এ বছর এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ‘ডেটা ইন মোশন অ্যান্ড স্ট্রিমিং সাকসেস’ বিভাগের বিজনেস ইনোভেশন ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হিসেবে পুরস্কার জিতে নিয়েছে বিকাশ।
প্রথম বারের মতো কোনো বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ‘ক্লাউডেরা ডেটা ইমপ্যাক্ট অ্যাওয়ার্ডস’ জিতেছে বিকাশ। সম্প্রতি সিঙ্গাপুর-এর মেরিনা বে-তে এক জমকালো অনুষ্ঠানে বিকাশ-এর পক্ষ থেকে প্রোডাক্ট ও টেকনোলজি ডিভিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: মহিউদ্দিন এই পুরস্কার গ্রহণ করেন। বিকাশ-এর পাশাপাশি ‘ডেটা ইন মোশন অ্যান্ড স্ট্রিমিং সাকসেস’ বিভাগের অন্য ক্যাটাগরিতে সিঙ্গাপুরের ওসিবিসি গ্রুপ এবং ভারতের ভোডাফোন আইডিয়া পুরস্কার পায়। পুরস্কার প্রদানের পাশাপাশি আধুনিক প্রযুক্তি ও ডেটা-অ্যানালিটিক্স নিয়ে বিশেষজ্ঞদের অংশগ্রহণে নানা সেশনও অনুষ্ঠিত হয়।
২০১১ সালে যাত্রা শুরুর সময় থেকেই বিকাশ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সবার জন্য সহজ, নিরাপদ ও সময়সাশ্রয়ী ডিজিটাল আর্থিক সেবা নিশ্চিত করেছে। সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দৈনন্দিন লেনদেনে স্বাধীনতা ও সক্ষমতা এনে দিয়ে তাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে বিকাশ। নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল আর্থিক সেবা প্রদানের পাশাপাশি বিকাশ হয়ে উঠেছে মানুষের স্বপ্নপূরণের সারথি, তাদের পরিবারেরই একজন সদস্য। আর তাই, সাধারণের কাছে ডিজিটাল আর্থিক লেনদেনের সমার্থক শব্দ হয়ে উঠেছে ‘বিকাশ করা’।
মন্তব্য