মানহীন ওয়্যারিং, আর ঘরে আর্থিং না থাকায় বর্ষায় বিদ্যুতায়িত হওয়ার সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনিই বাড়ছে মৃত্যু।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীতে দুই শিশুসহ পাঁচজন এই ত্রুটির কারণে মারা গেছেন। সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে মালিবাগের চৌধুরীপাড়ার সোনামিয়া গলির এক বসতিতে। সেখানে শনিবার দুপুরে দুই শিশুসহ তিনজন বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন।
ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ডিপিডিসির দায়িত্বশীলরা।
তারা বলছেন, বাড়ির ঘরগুলো টিনের তৈরি। ঘরগুলোতে যে যেভাবে পেরেছে সেভাবেই ওয়্যারিং করেছে; নেই কোনো আর্থিংয়ের ব্যবস্থা। যে কারণে বৃষ্টি হওয়ার পর বিদ্যুতায়িত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ডিপিডিসি মগবাজার জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনছুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকালকে (শনিবার) আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আজও আমাদের একটি টিম পরিদর্শন করে এসেছে। আমাদের টিম বেশ কয়েকটি ত্রুটি ওই বাড়িতে পেয়েছে।’
ওই বাড়িতে যত্রতত্র ওয়্যারিং করা। এ ছাড়া বিদ্যুতায়িত হওয়া থেকে বাঁচতে আর্থিংও করা নেই। যে কারণে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
মালিবাগ আবুল হোটেলসংলগ্ন রাস্তা ধরে কিছুটা ভেতরে যাওয়ার পর সোনামিয়ার গলি। ওই পথ ধরে আরও কিছুটা গেলে বেকারির কারখানা। তার পাশেই ওয়াজ আলী মোল্লার মালিকানাধীন বসতি। দুই অংশে বিভক্ত বসতিতে অন্তত ৪০টি পরিবার বসবাস করে।
বাড়ির মালিক ওয়াজ আলী মোল্লা অনেক আগে মারা গেছেন। তার মেয়ে মাজেদা বেগম বর্তমানে ওই বাড়ির মালিক।
ডিপিডিসি জানিয়েছে, ওই বাড়িতে চারটি মিটার রয়েছে। আর এই মিটারগুলো থেকে সবগুলো ঘরে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। এই লাইন টানতে গিয়ে সঠিকভাবে ওয়্যারিং করা হয়নি। কোনো রকমে একটি তার জোড়া দিয়ে নতুন নতুন স্পট তৈরি করেছে।
বাড়িতে বাস করা অন্যরা জানান, যেখানে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজন মারা গেছেন, ওই অংশে কাটআউট বা সুইচের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। যে কারণে তাৎক্ষণিকভাবে আটকে পড়াদের সরানো সম্ভব হয়নি।
পরে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন এসে মূল তার কেটে দেয়ার পর বিদ্যুতায়িত হয়ে আটক পড়ারা ছিটকে পড়েন। এর আগে কেউ তাদের ধরতে পারছিলেন না, সরানোও যাচ্ছিল না।
প্রথমে ঝুমা নামে ৯ বছরের এক শিশু আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে ধরতে যায় পাখি নামে আরেক শিশু, সে-ও বিদ্যুতায়িত হয়। এই দুই শিশুকে ছাড়াতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হন আব্দুল। তিনজনই ঘটনাস্থলে মারা যান।
তিনজনের মৃত্যুর পর ওই বাড়ির বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ডিপিডিসি। পুরো বাড়ি নতুন করে ওয়্যারিং করে সব শর্ত পূরণ করা সাপেক্ষে আবার সংযোগ দেয়া হবে।
ওয়্যারিং ও আর্থিংয়ের দুর্বলতার পাশাপাশি অবৈধ সংযোগও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে আসছে বলে জানিয়েছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) লিমিটেড।
চলতি বছর ঢাকায় প্রথম ভারী বৃষ্টিপাত হয় ১ জুন। সেদিন উত্তরা ১০ নং সেক্টরের ২১ নম্বর সড়কে হানিফ আলী মোড়সংলগ্ন তরিকুলের রিকশা গ্যারেজে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান দুজন। তারা হলেন রিকশার গ্যারেজ মালিক মো. রাজ্জাক ও চায়ের দোকানদার মো. জিয়া।
স্থানীয়রা জানান, ১ জুন ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজধানীতে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি চলাকালে রাজ্জাক, চায়ের দোকানি জিয়ার স্টলে বসা ছিলেন। বৃষ্টির পানি জমে রিকশার চাকার অনেকটা ডুবে যাচ্ছিল। এ অবস্থায় বৃষ্টির পানি থেকে রিকশা সরাতে যান রাজ্জাক। রিকশার কাছে যাওয়ামাত্রই রাজ্জাক কাঁপাকাঁপি শুরু করেন। তার এই অবস্থা দেখে জিয়াও সেখানে যান। পরে তারা দুইজনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ডেসকো। খবর পেয়ে তাদের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কোনা বৈধ সংযোগ পাননি তারা।
ডেসকোর উত্তরা পশ্চিম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কোনো সংযোগ ওই জায়গাটিতে ছিল না। তবে শুনেছি, বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে। আমরা কোানো সংযোগের তারও পাইনি। আমাদের ধারণা, ঘটনার পর এগুলো সরানো হয়েছে।’
অবৈধভাবে রিকশার গ্যারেজে বিদ্যুৎ-সংযোগ নেয়া হয়েছিল বলে ধারণা ডেসকোর। সার্টিফাইড টেকনিশিয়ান ছাড়া বিদ্যুতের সংযোগ ও কাজ করালে ত্রুটি থাকে। যাতে করে ঝুঁকি বাড়ে বলে জানান শওকত আলী।
বৃষ্টির দিনে বিদ্যুতায়িত হওয়া থেকে বাঁচতে করণীয়
টিনের ঘরে সঠিকভাবে ওয়্যারিং করা না হলে বিদ্যুতায়িত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে বলে জানান ডিপিডিসি মগবাজার জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনছুর।
তিনি বলেন, ‘সস্তা তার ব্যবহার করে মানহীন ওয়্যারিং করলে তারে ইনসুলেশন (তার কাভার করা প্লাস্টিক অংশ) যেকোনো সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এতে করে টিন দিয়ে নির্মাণ করা পুরো ঘর বিদ্যুতায়িত হতে পারে। শুধু ঘর নয়, গেটসহ পুরো বাড়ি বিদ্যুতায়িত হতে পারে। এ জন্য ওয়্যারিং খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ নেয়ার পর বাধ্যতামূলকভাবে আর্থিং ব্যবস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন আবুল মনছুর। তিনি বলেন, ‘মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে আর্থিং ব্যবস্থা থাকলে তা হতো না। আর্থিং রড প্রতিটি বাড়িতেই বসানো উচিত।’
এ ছাড়া বাড়িতে ওয়্যারিংয়ে ব্যবহার করা তার মানসম্মত হওয়া উচিত বলে জানান তিনি।
প্রকৌশলী আবুল মনছুর বলেন, নকল তারে সয়লাব বাজার। মানুষ মানসম্মত তার কেনার পরিবর্তে তুলনামূলক কম দামে মানহীন তার কিনে ওয়্যারিং করে। এতে করে মানুষ নিজেই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে রাখছে।
বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হলে খোলা তারে বিদ্যুতায়িত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেসব বাড়িতে বৃষ্টি হলে পানি জমে, সে ক্ষেত্রে নিচু জায়গায় বিদ্যুতের কোনো সকেট না লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন ডিপিডিসির এই কর্মকর্তা।
তবে ডিপিডিসির নির্ধারিত এলাকায় নিচু স্থানে কোনো খোলা তারে বিদ্যুতের সংযোগ নেই বলে জানান আবুল মনছুর।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর ইউনিয়নের কালোর ও জিঞ্জিরাম নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন সীমান্তবর্তি ভন্দুরচর গ্রামে পরিকল্পিত ভাবে একই পরিবারের তিনজনক হত্যা করা হয় গত ২৪জুলাই। এই ঘটনার প্রতিবাদে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৬জুলাই শনিবার দুপুরে রৌমারী উপজেলার সর্বস্তরের জনগনের ব্যানারে এই কর্মসূচি করা হয়। রৌমারী টু ঢাকা মহাসড়কে ঘন্টাব্যাপি বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করে স্বজন ও এলাকাবাসী। এসময় বক্তব্য রাখেন, ওয়াজেদ আলী,ইকতার হোসেন, আনোয়ার হোসেন,নিহত বুলু মিয়ার স্ত্রী আসকেতারা বেওয়া,কন্যা শাপলা বেগম,ফুলবাবুর স্ত্রী ফুলোরানী বেওয়া এবং নুরুল আমিনের স্ত্রী আনজু আরা বেওয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য,গত ১৯ জুলাই ভন্দুর চরের রাজু আহমেদের গরু প্রতিবেশি শাহজামালের বীজতলার ধানের চারা খেয়ে ফেলে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজামালের লোকজন গরু বেঁধে রাখতে বলে। এরই জেরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় ২০/২৫জনের একটি দল শাহজামালের বাড়িতে হামলা চালিয়ে মহিলাদেরকে মারধর করে ও বাড়িঘর ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় ২০জুলাই আহত নুরজাহান বাদী হয়ে রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ করেন। কিন্তু সেই অভিযোগ আমলে না নিয়ে বাদীপক্ষকে মীমাংসা করে নিতে বলে পুলিশ। থানায় অভিযোগ দেবার জের ধরে গত ২৪জুলাই আবারও রাজু আহমেদের গ্রপের সদস্যরা দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় প্রতিপক্ষ শাহজামালদের উপর। দিনদুপুরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে একই পরিবারের তিন সদস্যকে হত্যা করে। নিহতরা হলেন,শাহজামালের দুই ভাই ফুলবাবু,বুলু মিয়া এবং ভাতিজা নুরুল আমিন। উভয় পক্ষের প্রায় ১০জন আহত হয়। এই ঘটনায় গত ২৬ জুলাই নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী রৌমারী থানা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করে।
পরে শাহজামাল বাদী হয়ে ২৪জুলাই ৩৪জনের নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৮/১০জনকে আসামী করে রৌমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৮জনকে গ্রেফতার করেছে।
এই বিষয়ে রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লুৎফর রহমান ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের উদ্দেশে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আপনাদের মতে চিকিৎসা খাতে ৪-৫ বিলিয়ন ডলারের একটা বাজার আছে। এই বাজার আপনারা নিতে পারেন না? কেন মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে চায়? ভারত, ব্যাংককে এমন মানুষও চিকিৎসা নিতে যায়, যারা কখনও ঢাকায় আসেনি। তারা বিরক্ত ও নিরুপায় হয়ে যায়। তাদের যাওয়া বন্ধ করেন। এখানে সেবা দিলে মানুষ কখনোই বিদেশ যাবে না। যাওয়ার কোনও কারণই নাই। এই বাজার দখল করলে আপনাদের লাভ, দেশেরও লাভ।
শনিবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শহীদ আবু সাইদ ইন্টারন্যাশনাল কনভনেশন সেন্টারে বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির অভিষেক ও বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, অনেক চিকিৎসক অনর্থক টেস্ট দেন। আমার বাসার হেল্পিং হ্যান্ড, গরিব ছেলে, ঢাকার একটি হাসপাতালে ১৪টি টেস্ট দিয়েছে। সে রাগ করে বাড়ি চলে গেছে। সেখান থেকে টেস্ট ছাড়া ভালো হয়ে ফেরত এসেছে। ওখানে তার পরিচিত ডাক্তার ছিল। এই অত্যাচার বন্ধ হয় নাই। গরিব রোগীদের অনর্থক ১৪-১৫টা টেস্ট দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ করা দরকার। আরেকটা বিষয় হলো, নির্দিষ্ট ওষুধ কিনতে হবে, কেন? পৃথিবীতে কোন জায়গায় প্রাইভেট ক্লিনিকে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধির জন্য নির্দিষ্ট সময় থাকে ডাক্তারের। আপনারা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল, এ দেশের বড় বড় হাসপাতালের ডাক্তাররা কি ওষুধ কোম্পানির মধ্যসত্ত্বভোগী? কোন জায়গায় নামান আপনারা নিজেদের!
আইন উপদেষ্টা বলেন, আরেকটা অভিযোগ করা হয়, টেস্টের রেজাল্ট ভুল। অনেক জায়গায় অনেক ভালো রেজাল্ট হয়, আমি খারাপ জায়গার কথা বলছি। একটা জেনারেল কমপ্লেইন যেটা আমার কাছে হৃদয়বিদারক লাগে, নার্সদের ব্যবহার খারাপ। নার্সদের মন খারাপ থাকে, হাসপাতালের কর্মচারীদের মন খারাপ থাকে, তারা ক্ষিপ্ত হয়ে থাকেন, ভালো সেবা দিতে চায় না। কেন চায় না– নার্সদের বেতন ১২ হাজার টাকা, আপনারা কি কম টাকা লাভ করেন? আপনারা যারা অনেকে হাসপাতালের মালিক আছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি, আপনাদের কোটি টাকার বাগানবাড়ি থাকতে পারে, নার্সদের ভালো বেতন দিতে পারেন না? নার্স যদি ১২ হাজার টাকা বেতন পায়, তাহলে কি ভালো সেবা দেবে? সে তো বিরক্ত হয়ে থাকবে। আপনারা লাভ করেন কিন্তু ন্যায্যভাবে করেন।
তিনি বলেন, আজ মানুষ ভারত-থাইল্যান্ড যেতে চায় না। আপনাদের চিকিৎসা দেওয়ার সক্ষমতা আছে। আপনারা করোনাকালে প্রমাণ করেছেন। নিজের জীবন উৎসর্গ করে সেবা দিয়েছেন। কর্মীর যদি বেতন বাড়িয়ে দেন সামান্য লাভ থেকে কতো টাকা চলে যাবে? যদি ১০০ কোটি টাকা লাভ করেন, তাহলে ১০ শতাংশ কম লাভ হয়। ১০ শতাংশ কম লাভের বিনিময় সেই কর্মী যে সেবা দেবে সেটা দিয়ে পূরণ হয়ে যায়। আপনারা এদিকে একটু লক্ষ্য রাখবেন।
শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার রাতে দেওয়া এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি সকলের সুস্বাস্থ্য, সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করেন।
শুভেচ্ছা বার্তায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, জন্মাষ্টমী সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত পুণ্যতিথি ও গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি শুধু আনন্দ-উৎসবের দিন নয়, বরং ভ্রাতৃত্ব, সৌহার্দ্য ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়ার এক মহামিলন ক্ষেত্র।
তিনি বলেন, জন্মাষ্টমী সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের জন্য অবারিত উৎসবের প্রাঙ্গণ সৃষ্টি করে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশের সমাজ সংস্কৃতির মূল ভিত্তি হলো ধর্মীয় সম্প্রীতি। ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করেছে। আমরা সব ধর্মের মানুষের সমঅধিকারে বিশ্বাসী। হিংসা, বিদ্বেষ, অশান্তি, হানাহানি, বৈষম্য ও অবিচার দূর করে সমাজকে শান্তিময় করে তুলতে আমাদের সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব এ সময় দেশবাসীর প্রতি সম্প্রীতি, শান্তি ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন সুদৃঢ় করার আহ্বান জানান।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিশেষ অভিযানে ৪৩ পিস ইয়াবাসহ চার মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় উপজেলার জামিরদিয়া এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
থানা সূত্রে জানা যায়, ভালুকা মডেল থানার একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চারজনকে হাতেনাতে আটক করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন—জামিরদিয়ার মোঃ আবুল হোসেনের ছেলে মোঃ সজিব মিয়া (২৬), একই এলাকার মোঃ নাবিল হোসেন নবীর ছেলে মোঃ আলী হোসেন ওরফে নাজমুল (২৫), গাজীপুরের শ্রীপুরের উদয়খালী এলাকার মোঃ মফিজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ রফিকুল ইসলাম (২৭) এবং ডুমবারিরচালা এলাকার মোঃ রফিকুল ইসলামের ছেলে মোঃ নাঈম খান (২৫)।
এসময় সময় তাদের কাছ থেকে ৪৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় চারজনের বিরুদ্ধে ভালুকা মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, মাদক নির্মূলে আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি। এ ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চালানো হবে।
নওগাঁর আত্রাই নদীর একটি স্থানে কয়েক সেন্টিমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে লোকালয়ে ঢুকছে পানি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) সকালে মান্দা উপজেলার কসব ইউনিয়নের তালপাতিলা এলাকায় এই বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যায়। এতে তালপাতিলা গ্রামসহ আশেপাশের চকবালু, চকরামপুরসহ কয়েকটি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। পানি বন্দী হয়ে পড়েন কয়েকশ পরিবার।
স্থানীয়রা বলছে, এই একই স্থানে গেলো বছর ভেঙ্গে যায়। এরপর মাসখানেক আগে বেড়িবাঁধের এই অংশটুকু মেরামত করা হয়। কিন্তু নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আবার ভেঙে গেছে।
বেড়িবাঁধ ভাঙ্গার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শক করেছেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আখতার জাহান সাথী। এসময় তিনি উক্ত দ্রুত সময়ের মধ্যে বেড়িবাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন।
এদিকে দুপুর ১২টার দিকে দেওয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী আত্রাই নদীর মান্দা উপজেলার জোত বাজার পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ও রেলওয়ে ব্রিজ পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও নওগাঁর ছোট যমুনা ও পুনর্ভবা নদীর পানি বিদসীমার নিচে থাকলেও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
আত্রাই নদীর পানি বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হওযায় মান্দা উপজেলার চকরামপুর, উত্তর চকরামপুর, কয়লাবাড়ী, জোকাহাট, দ্বারিয়াপুর, নুরুল্লাবাদ, পারনুরুল্লাবাদ ও তালপাতিলা এলাকার অন্তত ১০টি বেড়িবাঁধকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাধের লক্ষ্মীরামপুর, আয়াপুর, পাঁজরভাঙ্গা, পলাশবাড়ী, মিঠাপুর, নিখিরাপাড়া ও গোয়ালমান্দাসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টকে উচ্চ ঝুঁকির তালিকায় রাখা হয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেট পরিদর্শন করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি দেশব্যাপী নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন, পরিবহন ও বিপণন রোধে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এই মার্কেট পরিদর্শন করেন ।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মোহাম্মদপুরের কৃষিমার্কেটে যান। এরপর তিনি কৃষিমার্কেটের বিভিন্ন দোকান পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দোকানিদের পলিথিন ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করেন এবং পলিথিন ব্যবহারের ভয়াবহতা তুলে ধরেন ।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন ও লুটের ঘটনায় মামলা করেছে খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিএমডি মহাপরিচালক আনোয়ারুল হাবিব বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় এই মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, অজ্ঞাতনামা কিছু দুষ্কৃতিকারীর মাধ্যমে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট-পরবর্তী সময় থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার গেজেভুক্ত পাথর কোয়ারি থেকে অবৈধ বা অননুমোদিতভাবে সম্প্রতি কোটি কোটি টাকার পাথর লুট করা হয়েছে মর্মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
তথ্য অনুযায়ী, পাথর লুটপাটে অজ্ঞাত ১৫০০ থেকে ২০০০ ব্যক্তি জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে, যাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়নি। সরকারের গেজেটভুক্ত কোয়ারি থেকে লুট বা চুরি এ ধরনের কর্মকাণ্ড খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২-এর ধারা ৪(২) (ঞ) এবং খনি ও খনিজ সম্পদ বিধিমালা ২০১২-এর বিধি ৯৩ (১)-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় মৌখিক নির্দেশনায় খনি ও খনিজ সম্পদ (নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন) আইন, ১৯৯২ এর ৫ ধারা অপরাধে ও দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ৩৭৯ নম্বর ধারা ও ৪৩১ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা প্রয়োজন। এ অবস্থায় সরকারি স্বার্থে ভোলাগঞ্জ কোয়ারি থেকে পাথর লুট ও চুরির ঘটনায় দায়ী অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে।
সম্প্রতি সিলেটের দুই পর্যটনকেন্দ্র কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সাদাপাথর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং থেকে পাথর লুটের ঘটনা ঘটে। সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি করা এ ঘটনায় হাইকোর্ট পাথর উদ্ধার করে যথাস্থানে প্রতিস্থাপন এবং লুটেরাদের তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।
এরপর সিলেটসহ সারা দেশে সাঁড়াশি অভিযানে নামে র্যাব, পুলিশসহ যৌথবাহিনী। গত তিন দিনে জাফলং ও সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথরের মধ্যে মোট ১ লাখ ৯ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এর মধ্যে অবশ্য নারায়ণগঞ্জ থেকে গত বৃহস্পতিবার রাতে উদ্ধার হওয়া ৪০ হাজার টন পাথরও রয়েছে।
সর্বশেষ সিলেট জেলার জৈন্তাপুর থানাধীন আসাম পাড়া এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ পাথর উদ্ধার করেছে র্যাব। র্যাব-৯-এর টহল দল, সাদা পোশাকধারী সদস্য এবং সিলেট জেলা প্রশাসনের সহায়তায় একটি যৌথ আভিযানিক দল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আসাম পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আনুমানিক ৭ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
মন্তব্য