মানহীন ওয়্যারিং, আর ঘরে আর্থিং না থাকায় বর্ষায় বিদ্যুতায়িত হওয়ার সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনিই বাড়ছে মৃত্যু।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীতে দুই শিশুসহ পাঁচজন এই ত্রুটির কারণে মারা গেছেন। সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে মালিবাগের চৌধুরীপাড়ার সোনামিয়া গলির এক বসতিতে। সেখানে শনিবার দুপুরে দুই শিশুসহ তিনজন বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন।
ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি)। বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজনের মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ডিপিডিসির দায়িত্বশীলরা।
তারা বলছেন, বাড়ির ঘরগুলো টিনের তৈরি। ঘরগুলোতে যে যেভাবে পেরেছে সেভাবেই ওয়্যারিং করেছে; নেই কোনো আর্থিংয়ের ব্যবস্থা। যে কারণে বৃষ্টি হওয়ার পর বিদ্যুতায়িত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
ডিপিডিসি মগবাজার জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনছুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতকালকে (শনিবার) আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। আজও আমাদের একটি টিম পরিদর্শন করে এসেছে। আমাদের টিম বেশ কয়েকটি ত্রুটি ওই বাড়িতে পেয়েছে।’
ওই বাড়িতে যত্রতত্র ওয়্যারিং করা। এ ছাড়া বিদ্যুতায়িত হওয়া থেকে বাঁচতে আর্থিংও করা নেই। যে কারণে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
মালিবাগ আবুল হোটেলসংলগ্ন রাস্তা ধরে কিছুটা ভেতরে যাওয়ার পর সোনামিয়ার গলি। ওই পথ ধরে আরও কিছুটা গেলে বেকারির কারখানা। তার পাশেই ওয়াজ আলী মোল্লার মালিকানাধীন বসতি। দুই অংশে বিভক্ত বসতিতে অন্তত ৪০টি পরিবার বসবাস করে।
বাড়ির মালিক ওয়াজ আলী মোল্লা অনেক আগে মারা গেছেন। তার মেয়ে মাজেদা বেগম বর্তমানে ওই বাড়ির মালিক।
ডিপিডিসি জানিয়েছে, ওই বাড়িতে চারটি মিটার রয়েছে। আর এই মিটারগুলো থেকে সবগুলো ঘরে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। এই লাইন টানতে গিয়ে সঠিকভাবে ওয়্যারিং করা হয়নি। কোনো রকমে একটি তার জোড়া দিয়ে নতুন নতুন স্পট তৈরি করেছে।
বাড়িতে বাস করা অন্যরা জানান, যেখানে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজন মারা গেছেন, ওই অংশে কাটআউট বা সুইচের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। যে কারণে তাৎক্ষণিকভাবে আটকে পড়াদের সরানো সম্ভব হয়নি।
পরে বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন এসে মূল তার কেটে দেয়ার পর বিদ্যুতায়িত হয়ে আটক পড়ারা ছিটকে পড়েন। এর আগে কেউ তাদের ধরতে পারছিলেন না, সরানোও যাচ্ছিল না।
প্রথমে ঝুমা নামে ৯ বছরের এক শিশু আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে ধরতে যায় পাখি নামে আরেক শিশু, সে-ও বিদ্যুতায়িত হয়। এই দুই শিশুকে ছাড়াতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হন আব্দুল। তিনজনই ঘটনাস্থলে মারা যান।
তিনজনের মৃত্যুর পর ওই বাড়ির বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে ডিপিডিসি। পুরো বাড়ি নতুন করে ওয়্যারিং করে সব শর্ত পূরণ করা সাপেক্ষে আবার সংযোগ দেয়া হবে।
ওয়্যারিং ও আর্থিংয়ের দুর্বলতার পাশাপাশি অবৈধ সংযোগও দুর্ঘটনার কারণ হয়ে আসছে বলে জানিয়েছে ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (ডেসকো) লিমিটেড।
চলতি বছর ঢাকায় প্রথম ভারী বৃষ্টিপাত হয় ১ জুন। সেদিন উত্তরা ১০ নং সেক্টরের ২১ নম্বর সড়কে হানিফ আলী মোড়সংলগ্ন তরিকুলের রিকশা গ্যারেজে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান দুজন। তারা হলেন রিকশার গ্যারেজ মালিক মো. রাজ্জাক ও চায়ের দোকানদার মো. জিয়া।
স্থানীয়রা জানান, ১ জুন ভোর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত রাজধানীতে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি চলাকালে রাজ্জাক, চায়ের দোকানি জিয়ার স্টলে বসা ছিলেন। বৃষ্টির পানি জমে রিকশার চাকার অনেকটা ডুবে যাচ্ছিল। এ অবস্থায় বৃষ্টির পানি থেকে রিকশা সরাতে যান রাজ্জাক। রিকশার কাছে যাওয়ামাত্রই রাজ্জাক কাঁপাকাঁপি শুরু করেন। তার এই অবস্থা দেখে জিয়াও সেখানে যান। পরে তারা দুইজনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাটিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে ডেসকো। খবর পেয়ে তাদের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে কোনা বৈধ সংযোগ পাননি তারা।
ডেসকোর উত্তরা পশ্চিম অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত আলী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের কোনো সংযোগ ওই জায়গাটিতে ছিল না। তবে শুনেছি, বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছে। আমরা কোানো সংযোগের তারও পাইনি। আমাদের ধারণা, ঘটনার পর এগুলো সরানো হয়েছে।’
অবৈধভাবে রিকশার গ্যারেজে বিদ্যুৎ-সংযোগ নেয়া হয়েছিল বলে ধারণা ডেসকোর। সার্টিফাইড টেকনিশিয়ান ছাড়া বিদ্যুতের সংযোগ ও কাজ করালে ত্রুটি থাকে। যাতে করে ঝুঁকি বাড়ে বলে জানান শওকত আলী।
বৃষ্টির দিনে বিদ্যুতায়িত হওয়া থেকে বাঁচতে করণীয়
টিনের ঘরে সঠিকভাবে ওয়্যারিং করা না হলে বিদ্যুতায়িত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে বলে জানান ডিপিডিসি মগবাজার জোনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনছুর।
তিনি বলেন, ‘সস্তা তার ব্যবহার করে মানহীন ওয়্যারিং করলে তারে ইনসুলেশন (তার কাভার করা প্লাস্টিক অংশ) যেকোনো সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এতে করে টিন দিয়ে নির্মাণ করা পুরো ঘর বিদ্যুতায়িত হতে পারে। শুধু ঘর নয়, গেটসহ পুরো বাড়ি বিদ্যুতায়িত হতে পারে। এ জন্য ওয়্যারিং খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
বাড়িতে বিদ্যুৎ-সংযোগ নেয়ার পর বাধ্যতামূলকভাবে আর্থিং ব্যবস্থা রাখার কথা জানিয়েছেন আবুল মনছুর। তিনি বলেন, ‘মালিবাগ চৌধুরীপাড়ায় যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেখানে আর্থিং ব্যবস্থা থাকলে তা হতো না। আর্থিং রড প্রতিটি বাড়িতেই বসানো উচিত।’
এ ছাড়া বাড়িতে ওয়্যারিংয়ে ব্যবহার করা তার মানসম্মত হওয়া উচিত বলে জানান তিনি।
প্রকৌশলী আবুল মনছুর বলেন, নকল তারে সয়লাব বাজার। মানুষ মানসম্মত তার কেনার পরিবর্তে তুলনামূলক কম দামে মানহীন তার কিনে ওয়্যারিং করে। এতে করে মানুষ নিজেই বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে রাখছে।
বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হলে খোলা তারে বিদ্যুতায়িত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেসব বাড়িতে বৃষ্টি হলে পানি জমে, সে ক্ষেত্রে নিচু জায়গায় বিদ্যুতের কোনো সকেট না লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন ডিপিডিসির এই কর্মকর্তা।
তবে ডিপিডিসির নির্ধারিত এলাকায় নিচু স্থানে কোনো খোলা তারে বিদ্যুতের সংযোগ নেই বলে জানান আবুল মনছুর।
আরও পড়ুন:রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরে একটি গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৭টি ইউনিট ঘটনাস্থলে কাজ করছে। এছাড়া আরও ১টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ফায়ার সার্ভিসের কাছে আগুনের সংবাদ আসে। পরে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ১১টা ৫৬ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তরের মিডিয়া সেল-এর কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম বলেন, রাজধানীর মিরপুরের রূপনগরের শিয়ালবাড়ী এলাকায় গার্মেন্টস ও কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমাদের সাতটা ইউনিট কাজ করছে, আরও একটা ইউনিট যাচ্ছে ঘটনাস্থলের উদ্দেশে।
প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এছাড়া আগুনে কেউ হতাহত হয়েছে এমন সংবাদও আমাদের কাছে এখন পর্যন্ত আসেনি।
পটুয়াখালীর বাউফলে নৌ-পুলিশের ধাওয়া খেয়ে তেঁতুলিয়া নদীতে ঝাঁপ দেওয়া রাসেল খান (৩৫) নামের এক যুবকের লাশ নিখোঁজের তিন দিন পর উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চরওয়াডেল এলাকার তেঁতুলিয়া নদীর বাতিঘর পয়েন্ট থেকে তার স্বজনরা লাশ উদ্ধার করে।
নিহত রাসেল খান উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বড় ডালিমা গ্রামের ইউসুফ খানের ছেলে। তিনি পেশায় একজন দর্জি ছিলেন এবং স্থানীয় বড় ডালিমা ব্রিজ এলাকায় তার একটি দর্জির দোকান ছিল। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে রেখে গেছেন।
জানা যায় , গত শনিবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে ইলিশ ধরার ওপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা চলাকালে রাসেল খান তিন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে ট্রলারযোগে তেঁতুলিয়া নদীতে ইলিশ কিনতে যান। এ সময় মা ইলিশ রক্ষায় নৌ-পুলিশের একটি স্পিডবোর্ড অভিযান চালালে তারা ধাওয়া খায়। ধাওয়া থেকে বাঁচতে গিয়ে রাসেল খান নদীতে ঝাঁপ দিলে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান।খবর পেয়ে নৌ-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান চালালেও তাকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আখতারুজ্জামান সরকার বলেন, “লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে নৌ ফাঁড়ির পুলিশ অবস্থান করছে। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে লাশের ময়নাতদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।"
জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, যারা ভারতীয় আধিপত্যের বাইরে থাকবে, তাদের সাথে এনসিপি জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের চিন্তা করছে। আজ রাতে শেরপুর শহরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ ও কর্মীদের নিয়ে সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, এনসিপি’র শাপলা প্রতীকে আইনগত কোন বাঁধা নেই, তাই শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করবে। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টি যেকোন এলায়েন্সে যেতে পারে, তবে সেটা এনসিপি নিজের প্রতীকে নির্বাচন করবে।
সারজিস আলম বলেন, এনসিপি উচ্চ কক্ষে পিআর চায়, নিম্নকক্ষে পিআর চায় না। এই মুহুর্তে বাংলাদেশের বাস্তবতায় এবং উচ্চকক্ষের পিআর পদ্ধতির মাধ্যমে দেখতে পারি কতটুকু কাজ হলো। একইসাথে এটা দিয়ে বাংলাদেশ উপকৃত হয় কি না।
এসময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপি’র ময়মনসিংহ বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলম, শেরপুর জেলার প্রধান সমন্বয়কারী ইঞ্জিনিয়ার লিখন মিয়াসহ অনেকেই।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৬৩৩ টি খামারের ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদি পশু নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে খামারিরা। এসব গবাদি পশুর মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি নামে একটি রোগ। যাকে পক্সভাইরাস বলা হয়। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়া অ্যানথ্রাক্স নিয়েও আতঙ্কে রয়েছে এ অঞ্চলের গরুর খামারিরা। গবাদি পশুর পাশাপাশি সাধারণ মানুষও আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারিভাবে নেই কোন উদ্যোগ। এই রোগের জন্য সরকারিভাবে টিকা দেওয়া কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রয়েছে সম্পুর্ন উদাসীন। তারা উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে এসব রোগ সম্পর্কে অবহিত না করে ঘুমিয়ে আছেন। গরুর খামারিদের জনসচেতনতা নিয়ে কোন সহায়তা করছেনা বলে অভিযোগ খামারিদের।
পশু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগটি গবাদি পশুর জন্য খুবই ক্ষতিকর। এর মধ্যে যদি অ্যানথ্রাক্স রোগটিও ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে এ অঞ্চলে ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদি পশু ও সাধারণ মানুষের অবস্থা খারাপ হতে পারে। তাই শুরুতেই কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
পক্সভাইরাস ও অ্যানথ্রাক্স মুলত গবাদি পশুর থেকে ছড়িয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ঠুকে পড়ে। এই রোগের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারিভাবে টিকা দেওয়া কথা রয়েছে। কিন্তু লক্ষ্মীপুরের উপকূলীয় অঞ্চল রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
ইতিমধ্যে অধিকাংশ খামারের গরু ছাগল ও ভেড়ার মধ্যে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগ ছড়িয়ে পড়লেও উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাউকে পাশে পাচ্ছেনা বলে জানান কয়েকজন খামার মালিক।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, রামগতিতে ১০২ টি গরুর খামারে ৬৭ হাজার ২৫১টি গরু, ১৩৯ টি ছাগলের খামারে ১৩ হাজার ৩৩৮ টি ছাগল, ৫৯ টি বেঁড়ার খামারে ১০ হাজার ২২৮ টি ভেড়া ও ৮ হাজার মহিষ সহ মোট ৯৯ হাজার ১০৭ টি গবাদি পশু রয়েছে।
কমলনগরে ২৫০ টি গরুর খামারে ২০ হাজার ২৩০টি গরু,৫০টি মহিষের খামারে ৬ হাজার ৫২৫ টি মহিষ, ২৫ টি ছাগলের খামারে ৪ হাজার ৫৯৮ ছাগল ও ৮ টি ভেড়ার খামারে ৪৫৫টি ভেড়া সহ মোট ৩১ হাজার ৮০৮ টি গবাদি পশু আছে। দুই উপজেলায় মোট ১ লাখ ৩০ হাজার ৯১৫টি গবাদি পশু রয়েছে।
রামগতির চরগাজী ইউনিয়নের ডেইরী ফার্মের মালিক মোঃ মিলন বলেন, উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস আছে শুধু নামেই,কাজের বেলা তাদেরকে পাওয়া যায়না। খামারিদেরকে কোন প্রকার সহায়তা বা সময়মত ঔষধও দিচ্ছেনা।
আনোয়ার ডেইরী ফার্মের মালিক মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাণী সম্পদ অফিসের কাউকে ফোন করলেও ফোন ধরেনা। আমাদের খামারের কোন খোঁজ খবর নেয়না। গরু ছাগল ও ভেড়াগুলো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।
রামগতি উপজেলার চরগাজী ইউনিয়নের চরলক্ষ্মীগ্রামের খামার মালিক গোলাম রব্বানী বলেন,তার খামারের সবগুলো গরুর মধ্যে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগ রয়েছে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে ফোন দিলে তারা ফোন ধরেনা। কোন খবরও নিচ্ছেনা।
কমলনগর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন ও রামগতি উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার রুবেল সরকার বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে গবাদি পশু বা মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স রোগ ধরা পড়লেও আমাদের এ অঞ্চলে এখন পর্যন্ত এই ধরনের রোগের খবর আমরা পাইনি। তবে কয়েকটি গরু ছাগলের খামারে লাম্বি ভাইরাস বা এলএজটি রোগ ধরা পড়েছে। আমরা কিছু কিছু খামারের গরুকে টিকা দিচ্ছি। পর্যায়ক্রমে সবগুলো খামারে টিকা দেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর আসামিকে ১২টি ধাপ অতিক্রম করতে হয়। টাকা খরচসহ সব ধাপেই হয়রানির শিকার হতে হয়। হয়রানি নিরসনে অনলাইন জামিননামা চালু করতে যাচ্ছে আইন মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, বুধবার (১৫ অক্টোবর) অনলাইন জামিননামা (বেইল বন্ড) উদ্বোধন করা হবে। এতে জামিন পাওয়াদের মুক্তির পথ সহজ হবে। এক ক্লিক করবে, আদালতের রায় থেকে সরাসরি জেলখানায় পৌঁছে যাবে, যেখানে আসামি আছে।
‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন–২০২৫’ সংশোধনের দাবিতে এবং সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকা কলেজের শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনার প্রতিবাদে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করে ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধের পর অধ্যক্ষের অনুরোধে মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে তারা সড়ক ছেড়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যায়। এতে সড়কে বন্ধ হয়ে যাওয়া যান চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, অবরোধ চলাকালে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস ও উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক পারভীন সুলতানা হায়দার সায়েন্সল্যাব মোড়ে আসেন। এসময় তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে অবরোধ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। পরে শিক্ষার্থীরা তাদের আহ্বান মেনে সড়ক ছেড়ে ক্যাম্পাসে ফিরে যান।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, নতুন ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন–২০২৫’-এর বর্তমান ধারায় ঢাকা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট বিভাগ বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটির শতবর্ষের ঐতিহ্য নষ্ট হবে বলে দাবি করেন তারা।
উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিব হোসেন বলেন, ঢাকা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট বিভাগ শুধু একটা শিক্ষা ধাপ নয়, এটা আমাদের ইতিহাসের অংশ। এই বিভাগ তুলে দিলে কলেজের ঐতিহ্য ধ্বংস হয়ে যাবে।
সামিউল ইসলাম নামের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী বলেন, আমরা চাই না আমাদের পরের প্রজন্ম এই কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সুযোগ হারাক। শত বছরের পুরোনো এই ধারা বজায় রাখা উচিত। ঢাকা কলেজ সবসময়ই মাধ্যমিকের পর শিক্ষার্থীদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় করার পরিকল্পনা ভালো, কিন্তু ঐতিহ্য মুছে দিয়ে নয়। আমাদের দাবি ঐতিহ্য সংরক্ষণ করেই এগোতে হবে।
অন্যদিকে, অবরোধের কারণে ওই এলাকায় প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকায় তীব্র ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। ফলে আজিমপুর, নীলক্ষেত, শাহবাগ, ধানমন্ডি ও কলাবাগান, মোহাম্মদপুরসহ আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
এর আগে, সোমবার (১৩ অক্টোবর) ঢাকা কলেজে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন–২০২৫’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা শুরুর প্রস্তুতির সময় ঢাকা কলেজে শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে ‘দালাল’ মন্তব্যের অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে শিক্ষকরা ধরে কমনরুমে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে সহপাঠীকে ছাড়িয়ে আনেন।
এসময় উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও স্নাতকের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মারামারিতে জড়ান।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফসহ ৪ জনকে আদালতে হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার সকালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে হানিফসহ চার আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়েছেন ট্র্যাইব্যুনাল। একইসঙ্গে পলাতক এই চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আগামী ১৪ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার কোটা সংস্কার ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দুপুর দেড়টা থেকে চারটার মধ্যে কুষ্টিয়ার বক চত্বর থেকে অনুমান ৫০ গজ উত্তরে শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, বার্মিজ গলিতে সুরুজ আলী বাবু, হরিপুর গামী রাস্তা আড়ং এর সামনে শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুত্তাকিন, মো. উসামা, তুলা পট্টির গলিতে ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী ও ফায়ার সার্ভিসের বিপরীত দিকে রাস্তার ওপর চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ শহীদ হন।
মন্তব্য