চিকিৎসক সাবিরা রহমানকে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে ধারণা করছে পুলিশ। সুরতহালে তার শরীরে ধারাল অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। মুখমণ্ডল ছিল ঝলসানো।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর কলাবাগানের ৫০/১ নম্বর বাড়ির একটি ফ্ল্যাট থেকে সাবিরার মরদেহ উদ্ধার করে কলাবাগান থানা পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রমনা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ ও সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও।
সাবিরা যে ফ্ল্যাটটিতে থাকতেন, সেটি তিনি এ বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন বাড়িওয়ালা মাহবুব। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আমি এই সময় লালমাটিয়া ছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসার এক নারী।
‘তার এই বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট আছে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই সাবলেটে ভাড়া থাকা মেয়েটা আসে। মেয়েটিকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখি রুম লক করা। পরে মিস্ত্রি এনে লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুম ধোঁয়াচ্ছন্ন। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি তিনি বেডের ওপরে পড়ে আছেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে ফোন করা হয়।’
সাবিরার আত্মীয়রা জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন সাবিরা। স্বামী শামসুদ্দীন আজাদের সঙ্গে তার বনিবনা হচ্ছিল না। এক বছর ধরে তারা আলাদা থাকছিলেন। অবশ্য তাদের ভেতর ভালো যোগাযোগ ছিল।
সাবিরার দুই ছেলে-মেয়ের মধ্যে ছেলে আগের স্বামীর। তার ছেলে বিবিএ পড়ছে; আর মেয়ের বয়স ৯ বছর।
চিকিৎসক সাবিরার এক আত্মীয় জাকিয়া খন্দকার মমি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সাবিরা গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছেন। ফ্ল্যাটে উনি আর ওনার মেয়ে থাকতেন।
‘তার স্বামী এক্স ব্যাংকার, ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিলেন। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মেয়ে গতকাল নানুর বাসায় গিয়েছিল। ছেলে নানুর বাসায় থাকে। আমার মনে হয় আশপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
ঘটনাস্থলে ছুটে আসা সাবিরার স্বামী শামসুদ্দীন আজাদ বলেন, ‘আমি বেলা ১১টার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, ‘প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বলি এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।’
সাবিরা যে ফ্ল্যাটটিতে ভাড়া থাকতেন সেখানে দুই নারী শিক্ষার্থী সাবলেটে ভাড়া নিয়েছিলেন। একজন ঈদের পর বাড়ি থেকে আসেননি। অপরজন ঢাকাতেই ছিলেন।
ঢাকায় থাকা সাবলেট ভাড়াটিয়া জানান, মর্নিংওয়াক করে সকাল আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান সাবিরার রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। পরে তিনি বাড়ির সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়াচ্ছন্ন এবং সাবিরা বেডে শুয়ে আছেন। এরপর পুলিশকে খবর দেয়া হয়।
পুলিশ সাবিরার গায়ে তিন-চারটি আঘাতের চিহ্ন দেখতে পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে তারা ধারণা করছেন, এটি হত্যাকাণ্ড। পরে ভবনের সুপারভাইজার, দারোয়ান ও সাবলেটে ভাড়ায় থাকা নারী শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেটা বোঝা যাচ্ছে, সাবিরাকে ধারাল অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা হয়েছে। তার ঘাড়ে ও পিঠে ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। ঘাড়ের নিচে গভীর ক্ষতের দাগ আছে। তাকে মার্ডার করার পরেই শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সাবিরার রুমের ভেতরে সবকিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তার বালিশ, কাঁথা এলোমেলো ছিল। সে উপুড় হয়ে ছিল। আঘাতগুলো সব পেছন থেকে করা হয়েছে। ঘাড়ে দুইটা ও পিঠে দুইটাসহ মোট চারটি আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে গলার নিচে আঁচড়ের মতো দাগ আছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয় নাই, তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে, সে অস্ত্রটি এখানে পাওয়া যায়নি। এই কিলারকে প্রফেশনাল কিলার মনে হয়নি।’
সম্প্রতি জানা যায় যে, কিছু অসাধুচক্র দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র অনুপ্রবেশ করানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিজিবির নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ০৩ মাসে বিজিবি ১৬টি দেশি-বিদেশি পিস্তল, ০২টি রিভলভার, ০২টি এসএমজি, ০৫টি রাইফেল, ১৬টি দেশীয় বন্দুক, ০৩টি শর্টগান, ০৩টি মর্টার শেল, ০৮টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ২৭টি অন্যান্য অস্ত্র, ২১টি ম্যাগাজিন এবং ১০০৩ রাউন্ড বিভিন্ন অস্ত্রের গোলাবারুদ জব্দ করেছে।
সীমান্ত দিয়ে দেশে অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মাঠ পর্যায়ে বিজিবির গোয়েন্দা তৎপরতা ও আভিযানিক কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়েছে। অবৈধ অস্ত্রের অনুপ্রবেশ রোধে বিজিবির টোল ফ্রি ০১৭৬৯৬০০৫৫৫ নাম্বারে তথ্য দিয়ে সহায়তা করার জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ করা যাচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ ১২ তরুণকে ‘ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান করেছেন। স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ ও তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণামূলক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এ বছর পাঁচটি ভিন্ন ক্যাটাগরিতে তরুণদের এই সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে জাতীয় মহিলা ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারও রয়েছেন।
মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের রাস্তার পাশে জনবসতি এলাকায় বালুর স্তূপ করে চলছে রমরমা ব্যবসা। সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের প্রভাবশালী, অর্থ-বিত্ত-বৈভবের মালিক ইলিয়াস ব্যাপারী গং এ ব্যবসা চালিয়ে জনদূর্ভোগ তৈরী করছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটা থেকে শুরু করে বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে যাওয়ায় অনেক পরিবার গৃহহীণ হওয়ার উপক্রম। এ পরিস্থিতিতে ভুক্তভোগীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
পেয়ারপুর ইউনিয়নের বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় প্রভাবশালী ইলিয়াস ব্যাপারী জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বালু বিক্রি করছেন। এর ফলে আঞ্চলিক সড়কগুলো বালুর স্তূপে বেশীরভাগ সময় অবরুদ্ধ থাকে, যা পথচারী ও যানবাহন চলাচলে মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করে। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে এ সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারণ করে। ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ নুরুল হক জমাদ্দার জানান, বালু ব্যবসাস্থলের জমি নিয়ে আমাদের আদালতে মামলা চলছে, বালু ব্যবসার আড়ালে বেরিকেড, কাদাপানি সহ বিভিন্ন সমস্যা তৈরী করে কৌশলে আমাদের বাড়ি থেকে বিতাড়িত করার জন্য বাড়ির সামনে বালুর স্তূপ করে রেখে রমরমা অবৈধ ব্যবসা চালাচ্ছেন ইলিয়াস ব্যাপারী গং। এ কারণে চলাফেরা করাই কঠিন হয়ে পড়েছে। বালুর স্তূপ করে চলাচলের রাস্তা টুকু বন্ধ্ করে দেয়া হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই বালুর সাথে পানি মিশে কাদা হয়ে যায় এবং পানি সরাসরি আমাদের ঘরে ঢুকে যায়। পানির কারনে আমাদের বাড়ি-ঘর বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। উক্ত এলাকায় আরেকজন বাসিন্দা আঃ আজিজ জমাদ্দার বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা ঠিকঠাকমতো স্কুলে যেতে পারে না, কারণ রাস্তা পুরোটাই পানি ও বালুতে ভরা থাকে। আমরা একাধিকবার আমাদের অসহনীয় দূর্ভোগের কথা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি, তারা এখানে এলে সাময়িকভাবে তা বন্ধ করা হয় এবং চলে গেলে আবার তা চালু করা হয়। তাই বাধ্য হয়ে আমরা আদালতের কাছে আইনি প্রতিকার চেয়েছি।
তারা অবিলম্বে এ অবৈধ বালু বিক্রি ও দূর্ভোগ তৈরীকারী ব্যবসা বন্ধ বা অন্যত্র সরিয়ে নিতে আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এলাকার মানুষের দাবি বালুর ব্যাবসা বন্ধ করে তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেয়া হোক।
এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাবের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং আদালতের নির্দেশনা পেলে সে মোতাবেক দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
স্থানীয়রা এখন তাকিয়ে আছেন আদালতের দিকে। কেননা আদালত তাদের আস্থার ও ন্যায়বিচার পাওয়ার স্থল- যেখানে তাদের আশা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তারা এ দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাবেন। উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে বালু ব্যবসায়ী ইলিয়াস ব্যাপারী কাছে এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে মুঠোফোনে কল করলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
হবিগঞ্জের মাধবপুরে এক পাগলা কুকুরের কামড়ে এ পর্যন্ত অন্তত ৬ জন আহত হয়েছেন।উপজেলার চৌমুহনি ইউনিয়নের কমলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এতে শিশুসহ পুরো গ্রামবাসীর মাঝে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। শিশু-কিশোররা ভয়ে স্কুলে যেতেও সাহস পাচ্ছে না।এ নিয়ে সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে স্থানীয় একটি মসজিদে পাগাল কুকুরটি থেকে সাবধান থাকতে ও একে নিধন করতে মসজিদে মাইকিং করে সতর্ক করা হয়।
আহতদের মধ্যে মিলাদ মিয়া ও মনোয়ারা বেগমের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ এক কুকুর গ্রামে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি কামড়ে একের পর এক মানুষকে আহত করে। আতঙ্কের মাত্রা বাড়তে থাকায় গ্রামবাসীকে সতর্ক করতে মসজিদে মাইকিং করা হয়। তবে কুকুরটিকে এখনও আটক বা নিধন করা যায়নি।
স্থানীয় সেলিম মিয়া বলেন, “পাগলা কুকুরের ভয়ে আমাদের বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারছে না।কুকুরটির লাল বর্ণের কুকুরি। আমরা মসজিদ থেকে মাইকিং করেছি। সরকারি উদ্যোগে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।”
এ বিষয়ে মাধবপুরের প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মিঠুন সরকার জানান, “কুকুরকে ধরে র্যাবিস টিকা দেয়ার প্রযুক্তি আমাদের নেই। এটি বন বিভাগ করলে করতে পারে। আপাতত এলাকাবাসীকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।”
এদিকে গ্রামবাসী দ্রুত সরকারি হস্তক্ষেপ ও স্থায়ী সমাধান দাবি করেছেন।
কুমিল্লা নগরীতে নিখোঁজের একদিন পর রেল সড়কের পাশ থেকে জামশেদ ভূঁইয়া নামের এক ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় শহরতলীর পালপাড়া রেললাইনের পাশের একটি ঝোপ থেকে পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে। জামশেদ ভূঁইয়া কুমিল্লা নগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড কালিয়াজুরী ভূঁইয়া বাড়ির সাবেক কমিশনার প্রয়াত আব্দুল কুদ্দুস ভূঁইয়া তৃতীয় পুত্র।
মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম।
পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত শনিবার সন্ধ্যায় বাসা থেকে মাগরিবের নামাজ আদায় করার জন্য বের হন জামশেদ। এরপর তিনি বাসায় ফেরেননি। এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। রোববার বিকেলের পর রেললাইনের পাশে একটি ঝোপে ওই ব্যক্তির মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন মরদেহ শনাক্ত করে।
রাতে কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, নিখোঁজের বিষয়ে শনিবার রাতে জামশেদ ভূঁইয়া ভাই থানায় অভিযোগ করেছিলেন। রোববার সন্ধ্যায় আমরা মরদেহ উদ্ধার করেছি। তবে ওই ব্যক্তির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। এখনো মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। সোমবার কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তা শেষ করতে ‘আপ্রাণ চেষ্টার’ তাগিদ দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি। এজন্য ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমান প্রতিবেদনের জন্য আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন।
এ নিয়ে সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ১২১তম বার পেছান হলো। আদালতের শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিজুল আদালতে উপস্থিত হন। বেলা ১২টা ১০ মিনিটে শুনানি শুরু হয়। আদালত আজিজুলের কাছে জানতে চান, তিনি সিআইডিতে আছেন কিনা? আজিজুল জানান, পিবিআইতে আছেন।
আদালত– তদন্তের অগ্রগতি কতদূর?
কর্মকর্তা– উচ্চ আদালতের নির্দেশে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়। এরপর আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তদন্তের। আমি এই মামলা সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক, প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন ও ডিএনএ এক্সপার্টদের জিজ্ঞাসাবাদে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি। দুজনের মিক্সড ডিএনএ তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এসব কারণে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে দেরি হচ্ছে। কিছুদিন আগে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময় পার হলেও উচ্চ আদালত থেকে আরও সময় নেওয়া হয়েছে।
বিচারক– যা বুঝলাম, এই মামলার আগের তদন্ত কর্মকর্তা যিনি ছিলেন, তিনিও একই কথা বলেছেন। আপনার তদন্তের অগ্রগতিতে আদালত অসন্তুষ্ট। আপনি আপ্রাণ চেষ্টা করবেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে হত্যা করা হয়। এরপর নিহত রুনির ভাই নওশের আলম রোমান মামলা করেন।
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে এক স্কুলছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগে পাঁচ বখাটে পিটিয়ে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলের দিকে উপজেলার ষাইট ঘর তেওতা বটতলা মোড়ে এ ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের সাতুরিয়া গ্রামের পান্নু শেখের ছেলে ইমরান শেখ ৩), একই এলাকার আলী চাঁনের ছেলে আশিক খাঁ (২৪), পার্শ্ববর্তী চরধুবলীয়া গ্রামের মৃত বিষা খাঁর ছেলে শিপন খাঁ (২৪), পয়লা গ্রামের তোতা শেখের ছেলে ইয়াছিন শেখ (২২) এবং ভাঙ্গাবাড়ি এলাকার মৃত আজাহার আলীর ছেলে ফরিদ শেখ (২০)। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্য়াতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
মামলা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী তার বান্ধবীর সঙ্গে রবিবার বিকালের দিকে স্কুল থেকে বাসায় ফিরছিল। পথিমধ্যে আরিচা-জাফরগঞ্জ সড়কের ষাইট ঘর তেওতা আবুলের বটতলা মোড় এলাকায় ইমরান, আশিক, শিপন, ইয়াসিন এবং ফরিদ নামের পাঁচজন বখাটে ওই ছাত্রীকে গতিরোধ করে। এসময় তারা তাকে ওড়না ধরে টান দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। ঘটনার আকস্মিকতায় ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার বান্ধবী আত্মচিৎকার করলে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার ও বখাটের আটক করে।
এসময় উত্তেজিত হয়ে লোকজন তাদের পিটিয়ে শিবালয় থানা পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, ইভটিজিংয়ের দায়ে পাঁচ বখাটেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্য়াতন দমন আইনে মামলা রুজু হয়েছে। আজ সোমবার তাদের আদালতে পাঠানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। শিবালয় থানা পুলিশ ইভটিজিংয়ের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স রয়েছে।
মন্তব্য