রাজধানীর কলাবাগানের একটি ফ্ল্যাট থেকে এক নারী চিকিৎসকের মরদেহ পাওয়া গেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে সিআইডি।
ওই চিকিৎসকের নাম সাবিরা রহমান। দুপুরের দিকে কলাবাগানের ৫০/১ নং বাড়ির একটি ফ্ল্যাটে তার মরদেহ পাওয়ার খবর পায় কলাবাগান থানা পুলিশ।
রমনা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক নিউজবাংলাকে জানান, কলাবাগান থানা ও রমনা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। সেখানে কাজ করছে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগও।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলছেন, প্রাথমিক আলামত দেখে মনে হচ্ছে ওই চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে।
জাকিয়া খন্দকার মমি নামে সাবিরার এক আত্মীয় বলেন, ‘সে (সাবিরা) আমার মেজো খালার মেয়ে। বয়স ৪৭ এর মতো। গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছেন। ফ্লাটে উনি আর ওনার মেয়ে থাকতো। তার স্বামী এক্স ব্যাংকার, ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিলেন। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মেয়ে গতকাল নানুর বাসায় গিয়েছিলেন। ছেলে নানুর বাসায় থাকে। আমার মনে হয় আশেপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
সাবিরা ফ্ল্যাটটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানালেন বাড়িওয়ালা মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমি এই সময় লালমাটিয়া ছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসার এক নারী। তার এই বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট আছে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই সাবলেট মেয়েটা আসে। মেয়েটিকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে রুম লক করা। পরে মিস্ত্রি এনে লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুম ধোঁয়াচ্ছন্ন। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি তিনি বেডের উপরে পড়ে আছেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে ফোন দেয়া হয়।’
সিআইডি অফিসার রাসেল জানান, সাবিরার রুমের ভিতরে সবকিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তার বালিশ কাঁথা এলোমেলো ছিল। সে উপর হয়েছিল। আঘাতগুলো সব পেছন থেকে করা হয়েছে। ঘাড়ে দুইটা ও পিঠে দুইটাসহ মোট চারটি আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে গলার নিচে আঁচড়ের মতো দাগ আছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয় নাই তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে সে অস্ত্রটি এখানে পাওয়া যায়নি। এই কিলারকে প্রফেশনাল কিলার মনে হয়নি।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘যেটা বোঝা যাচ্ছে সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা হয়েছে। তার ঘাড়ে ও পিঠে ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। ঘাড়ের নিচে গভীর ক্ষতের দাগ আছে। তাকে মার্ডার করার পরেই শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে। আগুন লাগার কোনো আলামত আমরা পাইনি। আগুনটা লাগানো হয়েছে তার শরীরে।’
সাবিরার স্বামী সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল এগারোটার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
সাবিরার মামাতো ভাই জানান, সাবিরার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। ছেলে বিবিএ পড়ে, মেয়ের বয়স ৯ বছরের মত। ওনার স্বামী আবুল কালাম আজাদ এখানে থাকেন না। মনোমালিন্যের কারণে এক বছর ধরে আলাদা থাকেন সাবিরা-আজাদ। তবে ওনাদের ভেতরে যোগাযোগ ছিল এবং ভালো সম্পর্ক ছিল।
সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর। আমি অফিসে ছিল আমার এক চাচাতো ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি এখানে আসি। প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বল এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।’
পুলিশ এসে দেখতে পান, সাবিরার গায়ে তিনটা আঘাতের দাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড। ভবনের সুপারভাইজার, দারোয়ান ও সাবলেটে ভাড়ায় থাকা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির অফিসে নেয়া হচ্ছে।
সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফাস্ট লেনের যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেখানে দুই নারী শিক্ষার্থীও সাবলেটে ভাড়া ছিলেন। একজন ঈদের পরে আসেননি। অপর জন ঢাকাতেই ছিলেন। তিনি জানান, মর্নিং ওয়াক করে সকাল আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান সাবিরার রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ি সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়াচ্ছন্ন হওয়া এবং তিনি বেডে শুয়ে আছেন। এরপর উনারা পুলিশকে খবর দেন।
রমনা জোনের ডিবির উপ-পুলিশ কমশনার এইস. এম আজিমুল হক জানান, চিকিৎসক সাবিরার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা বুড়িচংয়ে। রাজধানীর গ্রিন হাসপাতালের রেডিওলজিস্টের দায়িত্বে ছিলেন।
সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসক সাবিরা রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত পেয়েছেন। তার মুখমণ্ডলও ঝলসানো। পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত বৃহস্পতিবার (২৯ মে) থেকে প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবেন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এই কর্মবিরতি পালন করা হবে বলে বুধবার (২৮ মে) সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের কো-চেয়ারম্যান বাদিউল কবীর।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের যে ন্যায্য দাবি অবৈধ কালাকানুন বা কালো আইন সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আমরা মোটামুটি একটি সবুজ সংকেত পেয়েছি। আশা করি, আলাপ-আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে যে ফলাফল আসবে আশা করি এতে তারা (কর্মচারী) সন্তুষ্ট হবেন।’
ইতিমধ্যে অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে উত্থাপিত দাবি নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলে বিচার-বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেই বিষয়টির কুফল সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। এই কালো বা নিবর্তনমূলক আইন রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণ ও কর্মচারীদের জন্য ফলপ্রসূ নতুন কোন কিছু বয়ে আনবে না।’
‘রাষ্ট্রের স্বার্থ সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে কর্মচারীদের মান-মর্যাদা ও কর্মস্থলের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ অনুকূল কর্মপরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে আমরা উপদেষ্টামণ্ডলীর সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি। সচিব পর্যায়েও আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।’
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের একাংশের সভাপতি বাদিউল বলেন, ‘গতকালকে সাতজন সচিবের সঙ্গে আমাদের যে বৈঠক হয়েছে, সেটার ধারাবাহিকতায় ওই সচিবরা আজকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয়ের সঙ্গে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা করেছেন। তারা পরিষ্কারভাবে কোনো কিছু না বললেও বিষয়টি আমাদের বুঝতে বাকি নেই, আমরা আশা করছি, তাদের এই আলোচনায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মহোদয় ইতিবাচক কোনো কিছু আমাদের জন্য এনে দিতে পারবেন।’
কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা দেশে ফিরলেই কাঙ্ক্ষিত বিষয়টির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে, ইনশাআল্লাহ। কিন্তু আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, রাষ্ট্রের ক্রান্তিকাল অতিক্রম হতে চলছে। আপনারা জানেন সামনেই কোরবানির ঈদ এবং বাজেট ঘোষণার সময়। যেহেতু আমরা সাধারণ মানুষের সেবক। সাধারণ মানুষের দুঃখ লাঘবে আমরা সেবা প্রদান করে থাকি। সরকারি কর্মচারীরা যাতে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কারণ না হয় আমরা সেই বিষয়টিও বিবেচনায় এনেছি।’
এই কর্মচারী নেতা বলেন, ‘আমরা সব বিষয় চিন্তা-ভাবনায় রেখে আগামী দিনগুলোতে আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সঙ্গে সঙ্গে আমরা জরুরি সেবার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে সচিবালয়ে শুধু প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মবিরতি চলতে থাকবে। মাঠ পর্যায়ে সব দপ্তর, পরিদপ্তর, অধিদপ্তর এবং ডিসি অফিস, বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত, আমাদের পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।’
কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘এর সঙ্গে সঙ্গে আপনাদেরকে একটি বিষয়ে অবহিত না করলেই নয়; সারাদেশে যে সব জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান আছে, বাজেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং যারা হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিয়ে থাকেন, সেই সব কর্মকর্তা-কর্মচারী ভাই-বোনদের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে- আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যত কম সময় কর্মবিরতি পালন করতে পারেন, অভ্যন্তরীণভাবে আপনারা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
‘তবে আমার প্রস্তাব আধা-ঘণ্টার বেশি নয়। যদি আরও কম সময় আপনারা কর্মবিরতি পালন করে সাধারণ মানুষের সেবাটা নিশ্চিত করতে পারেন, সেই বিষয়টি বিবেচনার জন্য আপনাদের প্রতি অনুরোধ রইলো,’ যোগ করেন তিনি।
‘আমরা এর মধ্যেই উপদেষ্টা মহোদয়দের কাছে এ বিষয়ে যৌক্তিকতা আরও নিবিড়ভাবে বোঝানোর জন্য ব্যক্তিগত যোগাযোগ এবং স্মারকলিপির মাধ্যমে তাদেরকে বিষয়টি অবহিত করব।’
প্রধান উপদেষ্টা আসা পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্যের সঙ্গে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বাদিউল কবীর। অধ্যাদেশ বাতিলের বিষয়ে সবুজ সংকেত কিভাবে পেয়েছেন জানতে চাইলে- তিনি বলেন, ‘সার্ভিসে আমাদের দীর্ঘ মেয়াদি অভিজ্ঞতা আছে। সেই অভিজ্ঞতার সূত্রটি আমরা অ্যাপ্লাই করেছি- কোন কাজের কোন আলোচনার কি ফলাফল আসতে পারে।’
জাকিয়া খন্দকার মমি নামে সাবিরার এক আত্মীয় বলেন, ‘সে (সাবিরা) আমার মেজো খালার মেয়ে। বয়স ৪৭ এর মতো। গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছেন। ফ্লাটে উনি আর ওনার মেয়ে থাকতো। তার স্বামী এক্স ব্যাংকার, ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিলেন। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মেয়ে গতকাল নানুর বাসায় গিয়েছিলেন। ছেলে নানুর বাসায় থাকে। আমার মনে হয় আশেপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
সাবিরা ফ্ল্যাটটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানালেন বাড়িওয়ালা মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমি এই সময় লালমাটিয়া ছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসার এক নারী। তার এই বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট আছে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই সাবলেট মেয়েটা আসে। মেয়েটিকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে রুম লক করা। পরে মিস্ত্রি এনে লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুম ধোঁয়াচ্ছন্ন। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি তিনি বেডের উপরে পড়ে আছেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে ফোন দেয়া হয়।’
সিআইডি অফিসার রাসেল জানান, সাবিরার রুমের ভিতরে সবকিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তার বালিশ কাঁথা এলোমেলো ছিল। সে উপর হয়েছিল। আঘাতগুলো সব পেছন থেকে করা হয়েছে। ঘাড়ে দুইটা ও পিঠে দুইটাসহ মোট চারটি আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে গলার নিচে আঁচড়ের মতো দাগ আছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয় নাই তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে সে অস্ত্রটি এখানে পাওয়া যায়নি। এই কিলারকে প্রফেশনাল কিলার মনে হয়নি।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘যেটা বোঝা যাচ্ছে সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা হয়েছে। তার ঘাড়ে ও পিঠে ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। ঘাড়ের নিচে গভীর ক্ষতের দাগ আছে। তাকে মার্ডার করার পরেই শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে। আগুন লাগার কোনো আলামত আমরা পাইনি। আগুনটা লাগানো হয়েছে তার শরীরে।’
সাবিরার স্বামী সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল এগারোটার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
সাবিরার মামাতো ভাই জানান, সাবিরার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। ছেলে বিবিএ পড়ে, মেয়ের বয়স ৯ বছরের মত। ওনার স্বামী আবুল কালাম আজাদ এখানে থাকেন না। মনোমালিন্যের কারণে এক বছর ধরে আলাদা থাকেন সাবিরা-আজাদ। তবে ওনাদের ভেতরে যোগাযোগ ছিল এবং ভালো সম্পর্ক ছিল।
সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর। আমি অফিসে ছিল আমার এক চাচাতো ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি এখানে আসি। প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বল এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।’
পুলিশ এসে দেখতে পান, সাবিরার গায়ে তিনটা আঘাতের দাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড। ভবনের সুপারভাইজার, দারোয়ান ও সাবলেটে ভাড়ায় থাকা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির অফিসে নেয়া হচ্ছে।
সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফাস্ট লেনের যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেখানে দুই নারী শিক্ষার্থীও সাবলেটে ভাড়া ছিলেন। একজন ঈদের পরে আসেননি। অপর জন ঢাকাতেই ছিলেন। তিনি জানান, মর্নিং ওয়াক করে সকাল আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান সাবিরার রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ি সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়াচ্ছন্ন হওয়া এবং তিনি বেডে শুয়ে আছেন। এরপর উনারা পুলিশকে খবর দেন।
রমনা জোনের ডিবির উপ-পুলিশ কমশনার এইস. এম আজিমুল হক জানান, চিকিৎসক সাবিরার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা বুড়িচংয়ে। রাজধানীর গ্রিন হাসপাতালের রেডিওলজিস্টের দায়িত্বে ছিলেন।
সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসক সাবিরা রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত পেয়েছেন। তার মুখমণ্ডলও ঝলসানো। পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খাবার খেতে গিয়ে মাদক কারবারিদের কাছে ট্রেজার গান (ইলেক্ট্রিক শক দেওয়ার মেশিন) দেখতে পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য। সেই ট্রেজার গান দেখতে চাওয়া নিয়ে তাৎক্ষণিক ধস্তাধস্তিতে মাদক কারবারিদের সুইস গিয়ারের ছুরিকাঘাতে নিহত হন তিনি।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এ-সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী ও ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম।
এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে তিনজনকে ঘটনার দিন রাতে গ্রেপ্তার করে শাহবাগ থানা পুলিশ এবং পরে আরো আটজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির হাতে গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. রাব্বি ওরফে কবুতর রাব্বি (২৫), মেহেদী হাসান (২৫), নাহিদ হাসান পাপেল (২১), মো. রিপন (২০), মো. সোহাগ (৩৩), মো. রবিন (১৮), মো. হৃদয় ইসলাম (২৪) ও সুজন সরকার (২৭)।
এর আগে গত ১৩ মে ঘটনার রাতেই শাহবাগ থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- তামিম হাওলাদার (৩০), সম্রাট মল্লিক (২৮) ও পলাশ সরদার (৩০)।
এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের মধ্যে দুই জন ইতোমধ্যে ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দিও দিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত বলেন, গত ১৩ মে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কতিপয় দুর্বৃত্তদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা রুজু হয়। এবং ঘটনার রাতেই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ, প্রাপ্ত গোয়েন্দা তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনাস্থলে সরাসরি উপস্থিত ও হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীদের শনাক্ত করা হয়। আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে কক্সবাজার, মুন্সীগঞ্জ ও ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন জায়গায় ডিবির একাধিক দল ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে এই সংক্রান্ত আরো ৮ জনকে গ্রেপ্তার করে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম বলেন, ঘটনার দিন ১৩ মে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে সাম্য এবং তার দুই বন্ধু একটি মোটরসাইকেলে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মূলত মাদক ব্যবসার একটি চক্র আছে। মেহেদী সেই চক্রের মূল হোতা। তার গ্রুপের একজন রাব্বির হাতে একটি ট্রেজার গান ছিল। সেই ট্রেজার গানটি দেখে সাম্য সেটি কি জানতে চায়। জানতে চাওয়ার একটি পর্যায়ে তাদের মধ্যে যখন ধস্তাধস্তি হয়। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীদের অন্য যারা সেখানে ছিল তারা ঘটনাস্থলে আসে এবং ধস্তাধস্তির একটি পর্যায়ে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।
তিনি আরো বলেন, এই হত্যাকাণ্ডে আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি, ওই মাদক কারবারিদের একজন সদস্য রাব্বি তাৎক্ষণিকভাবে সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনেক ফুডকার্ট (খাবার গাড়ি) ছিল। সেখানে অনেক রাত পর্যন্ত খাবার পাওয়া যেত। আমরা এখন পর্যন্ত জানতে পেরেছি, সাম্য এবং তার দুই সহপাঠী খাবার খেতে সেখানে যায়। খাবারের জন্য গেলে ট্রেজার গানটি দেখে সাম্যের সন্দেহ হয়। জিনিসটা কি সেটি দেখার জন্য এবং সেটি নিতে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাটি ঘটে।
তিনি আরও বলেন, তদন্ত কার্যক্রম এখনো চলমান আছে। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে এখন পর্যন্ত আমরা পেয়েছি। এর নেপথ্যে আর কোনো ঘটনা আছে কিনা, অন্য কোনো বিষয় আছে কি না সেটি নিবিড়ভাবে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা তদন্ত করতে গিয়ে দেখেছি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাদক কারবারিদের তিনটি গ্রুপ রয়েছে। একটি গ্রুপ তিন নেতার মাজারের ওখানে, একটি মাঝখানে, একটি ছবির হাটে। তিনটি গ্রুপই মাদক ব্যবসা পরিচালনা করে। একটি গ্রুপের দায়িত্বে আছে মেহেদী। যে ৮ জন গ্রেপ্তার হয়েছে সবাই মেহেদীর গ্রুপের। সে ওই গ্রুপের দলনেতা। মেহেদী মূলত সুইস গিয়ারগুলো সাপ্লাই দিয়ে থাকে। ঘটনার দিন একটি কালো ব্যাগে করে মেহেদী সুইস গিয়ারগুলো আনে এবং তাৎক্ষণিকভাবে বাকিদের কাছে সরবরাহ করে।
এই হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই ঘটনার মূল আসামি আমাদের রিমান্ডে এলে আমরা হত্যাকাণ্ডের মূল মোটিভটি বের করার চেষ্টা করব।
জাকিয়া খন্দকার মমি নামে সাবিরার এক আত্মীয় বলেন, ‘সে (সাবিরা) আমার মেজো খালার মেয়ে। বয়স ৪৭ এর মতো। গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছেন। ফ্লাটে উনি আর ওনার মেয়ে থাকতো। তার স্বামী এক্স ব্যাংকার, ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিলেন। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মেয়ে গতকাল নানুর বাসায় গিয়েছিলেন। ছেলে নানুর বাসায় থাকে। আমার মনে হয় আশেপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
সাবিরা ফ্ল্যাটটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানালেন বাড়িওয়ালা মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমি এই সময় লালমাটিয়া ছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসার এক নারী। তার এই বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট আছে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই সাবলেট মেয়েটা আসে। মেয়েটিকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে রুম লক করা। পরে মিস্ত্রি এনে লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুম ধোঁয়াচ্ছন্ন। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি তিনি বেডের উপরে পড়ে আছেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে ফোন দেয়া হয়।’
সিআইডি অফিসার রাসেল জানান, সাবিরার রুমের ভিতরে সবকিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তার বালিশ কাঁথা এলোমেলো ছিল। সে উপর হয়েছিল। আঘাতগুলো সব পেছন থেকে করা হয়েছে। ঘাড়ে দুইটা ও পিঠে দুইটাসহ মোট চারটি আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে গলার নিচে আঁচড়ের মতো দাগ আছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয় নাই তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে সে অস্ত্রটি এখানে পাওয়া যায়নি। এই কিলারকে প্রফেশনাল কিলার মনে হয়নি।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘যেটা বোঝা যাচ্ছে সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা হয়েছে। তার ঘাড়ে ও পিঠে ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। ঘাড়ের নিচে গভীর ক্ষতের দাগ আছে। তাকে মার্ডার করার পরেই শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে। আগুন লাগার কোনো আলামত আমরা পাইনি। আগুনটা লাগানো হয়েছে তার শরীরে।’
সাবিরার স্বামী সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল এগারোটার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
সাবিরার মামাতো ভাই জানান, সাবিরার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। ছেলে বিবিএ পড়ে, মেয়ের বয়স ৯ বছরের মত। ওনার স্বামী আবুল কালাম আজাদ এখানে থাকেন না। মনোমালিন্যের কারণে এক বছর ধরে আলাদা থাকেন সাবিরা-আজাদ। তবে ওনাদের ভেতরে যোগাযোগ ছিল এবং ভালো সম্পর্ক ছিল।
সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর। আমি অফিসে ছিল আমার এক চাচাতো ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি এখানে আসি। প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বল এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।’
পুলিশ এসে দেখতে পান, সাবিরার গায়ে তিনটা আঘাতের দাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড। ভবনের সুপারভাইজার, দারোয়ান ও সাবলেটে ভাড়ায় থাকা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির অফিসে নেয়া হচ্ছে।
সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফাস্ট লেনের যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেখানে দুই নারী শিক্ষার্থীও সাবলেটে ভাড়া ছিলেন। একজন ঈদের পরে আসেননি। অপর জন ঢাকাতেই ছিলেন। তিনি জানান, মর্নিং ওয়াক করে সকাল আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান সাবিরার রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ি সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়াচ্ছন্ন হওয়া এবং তিনি বেডে শুয়ে আছেন। এরপর উনারা পুলিশকে খবর দেন।
রমনা জোনের ডিবির উপ-পুলিশ কমশনার এইস. এম আজিমুল হক জানান, চিকিৎসক সাবিরার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা বুড়িচংয়ে। রাজধানীর গ্রিন হাসপাতালের রেডিওলজিস্টের দায়িত্বে ছিলেন।
সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসক সাবিরা রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত পেয়েছেন। তার মুখমণ্ডলও ঝলসানো। পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
ইনোভেশন প্রদর্শনী আয়োজনের লক্ষ্যে আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন জাদুঘর ক্যাম্পেইন। ‘পরিচ্ছন্ন জাদুঘর, হোক আমাদের অঙ্গীকার’ এই স্লোগানে জনসাধারণের সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শো-কেসিং পরিচালনার ক্যাম্পেইনটি ২৬ থেকে ২৮ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
আজ সোমবার জাদুঘরে পরিচ্ছন্নতা ক্যাম্পেইনটির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সচিব মো. সাদেকুল ইসলাম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের কীপার মো. সুলতান মাহমুদ ও উপকীপার দিবাকর সিকদার।
এদিন বর্ণাঢ্য র্যালির মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইটির সূচনা হয়। পরবর্তীতে জাদুঘর প্রাঙ্গণে একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা হয়েছে।
জাতীয় জাদুঘরের সচিব মো. সাদেকুল ইসলাম আহসান মঞ্জিলের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন এবং খুব দ্রুতই জনসাধারণের সুবিধার্থে আরও কয়েকটি ওয়াশরুম স্থাপনের নির্দেশনা দেন। এছাড়াও গ্যালারি আরও আধুনিকায়ন, প্রয়োজনীয় স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করার বিষয়েও আস্বস্ত করেছেন।
ক্যাম্পেইনটির বিষয়ে জানতে চাইলে আহসান মঞ্জিল জাদুঘরের কীপার মো. সুলতান মাহমুদ জানান, জনসাধারণকে সচেতন করতেই মূলত আমাদের এ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যারা আহসান মঞ্জিলে আসে তারা যেনো নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলে এবং নোংরা না করে সে লক্ষ্যেই আমরা সকলকে সচেতন করবো।
সার্বিক বিষয়ে আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে উপকীপার দিবাকর সিকদার বলেন, আহসান মঞ্জিলে পূর্বে যেসব ডাস্টবিন ছিল সেগুলোর অধিকাংশই নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। আমরা নতুন করে বিভিন্ন স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন করেছি। পর্যায়ক্রমে আমরা জাদুঘরের বিভিন্ন স্থানে ২৫টি ডাস্টবিন স্থাপনের পরিকল্পনা করেছি। এছাড়াও সকলে যেনো জাদুঘরের আঙ্গিনা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে সে ব্যাপারে সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
ক্যাম্পেইনটি পরিচালনা করছে আহসান মঞ্জিলের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ বিডি ক্লিনের ভলেন্টিয়াররা। ক্যাম্পেইন চলাকালীন বিডি ক্লিনের সহযোগিতায় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অভিযান পরিচালনা করা হবে।
জাকিয়া খন্দকার মমি নামে সাবিরার এক আত্মীয় বলেন, ‘সে (সাবিরা) আমার মেজো খালার মেয়ে। বয়স ৪৭ এর মতো। গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছেন। ফ্লাটে উনি আর ওনার মেয়ে থাকতো। তার স্বামী এক্স ব্যাংকার, ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিলেন। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মেয়ে গতকাল নানুর বাসায় গিয়েছিলেন। ছেলে নানুর বাসায় থাকে। আমার মনে হয় আশেপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
সাবিরা ফ্ল্যাটটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানালেন বাড়িওয়ালা মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমি এই সময় লালমাটিয়া ছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসার এক নারী। তার এই বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট আছে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই সাবলেট মেয়েটা আসে। মেয়েটিকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে রুম লক করা। পরে মিস্ত্রি এনে লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুম ধোঁয়াচ্ছন্ন। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি তিনি বেডের উপরে পড়ে আছেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে ফোন দেয়া হয়।’
সিআইডি অফিসার রাসেল জানান, সাবিরার রুমের ভিতরে সবকিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তার বালিশ কাঁথা এলোমেলো ছিল। সে উপর হয়েছিল। আঘাতগুলো সব পেছন থেকে করা হয়েছে। ঘাড়ে দুইটা ও পিঠে দুইটাসহ মোট চারটি আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে গলার নিচে আঁচড়ের মতো দাগ আছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয় নাই তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে সে অস্ত্রটি এখানে পাওয়া যায়নি। এই কিলারকে প্রফেশনাল কিলার মনে হয়নি।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘যেটা বোঝা যাচ্ছে সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা হয়েছে। তার ঘাড়ে ও পিঠে ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। ঘাড়ের নিচে গভীর ক্ষতের দাগ আছে। তাকে মার্ডার করার পরেই শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে। আগুন লাগার কোনো আলামত আমরা পাইনি। আগুনটা লাগানো হয়েছে তার শরীরে।’
সাবিরার স্বামী সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল এগারোটার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
সাবিরার মামাতো ভাই জানান, সাবিরার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। ছেলে বিবিএ পড়ে, মেয়ের বয়স ৯ বছরের মত। ওনার স্বামী আবুল কালাম আজাদ এখানে থাকেন না। মনোমালিন্যের কারণে এক বছর ধরে আলাদা থাকেন সাবিরা-আজাদ। তবে ওনাদের ভেতরে যোগাযোগ ছিল এবং ভালো সম্পর্ক ছিল।
সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর। আমি অফিসে ছিল আমার এক চাচাতো ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি এখানে আসি। প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বল এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।’
পুলিশ এসে দেখতে পান, সাবিরার গায়ে তিনটা আঘাতের দাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড। ভবনের সুপারভাইজার, দারোয়ান ও সাবলেটে ভাড়ায় থাকা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির অফিসে নেয়া হচ্ছে।
সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফাস্ট লেনের যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেখানে দুই নারী শিক্ষার্থীও সাবলেটে ভাড়া ছিলেন। একজন ঈদের পরে আসেননি। অপর জন ঢাকাতেই ছিলেন। তিনি জানান, মর্নিং ওয়াক করে সকাল আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান সাবিরার রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ি সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়াচ্ছন্ন হওয়া এবং তিনি বেডে শুয়ে আছেন। এরপর উনারা পুলিশকে খবর দেন।
রমনা জোনের ডিবির উপ-পুলিশ কমশনার এইস. এম আজিমুল হক জানান, চিকিৎসক সাবিরার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা বুড়িচংয়ে। রাজধানীর গ্রিন হাসপাতালের রেডিওলজিস্টের দায়িত্বে ছিলেন।
সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসক সাবিরা রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত পেয়েছেন। তার মুখমণ্ডলও ঝলসানো। পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার (২৬ মে) সকালে উপাচার্য ভবনে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান প্রতিবেদনটি উপাচার্যের হাতে জমা দেন। এ সময় প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ এবং কমিটির সদস্য সচিব সহকারী প্রক্টর শারমীন কবির উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমদ জানান, ‘উপাচার্য স্যার আজ (সোমবার) প্রতিবেদনটি রিসিভ করেছেন। আগামীকাল (মঙ্গলবার) সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
হত্যাকাণ্ডে নিহতের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম গত ১৪ মে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর জানিয়েছে মামলাটি ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
গত ১৩ মে রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে আহত হন শাহরিয়ার আলম সাম্য। রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। তার বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলায়।
সাম্য হত্যার ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পরে ব্যারিস্টার নুরুল আজিমকে কমিটিতে কো-অপট করা হয়।
জাকিয়া খন্দকার মমি নামে সাবিরার এক আত্মীয় বলেন, ‘সে (সাবিরা) আমার মেজো খালার মেয়ে। বয়স ৪৭ এর মতো। গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছেন। ফ্লাটে উনি আর ওনার মেয়ে থাকতো। তার স্বামী এক্স ব্যাংকার, ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিলেন। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মেয়ে গতকাল নানুর বাসায় গিয়েছিলেন। ছেলে নানুর বাসায় থাকে। আমার মনে হয় আশেপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
সাবিরা ফ্ল্যাটটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানালেন বাড়িওয়ালা মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমি এই সময় লালমাটিয়া ছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসার এক নারী। তার এই বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট আছে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই সাবলেট মেয়েটা আসে। মেয়েটিকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে রুম লক করা। পরে মিস্ত্রি এনে লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুম ধোঁয়াচ্ছন্ন। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি তিনি বেডের উপরে পড়ে আছেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে ফোন দেয়া হয়।’
সিআইডি অফিসার রাসেল জানান, সাবিরার রুমের ভিতরে সবকিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তার বালিশ কাঁথা এলোমেলো ছিল। সে উপর হয়েছিল। আঘাতগুলো সব পেছন থেকে করা হয়েছে। ঘাড়ে দুইটা ও পিঠে দুইটাসহ মোট চারটি আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে গলার নিচে আঁচড়ের মতো দাগ আছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয় নাই তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে সে অস্ত্রটি এখানে পাওয়া যায়নি। এই কিলারকে প্রফেশনাল কিলার মনে হয়নি।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘যেটা বোঝা যাচ্ছে সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা হয়েছে। তার ঘাড়ে ও পিঠে ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। ঘাড়ের নিচে গভীর ক্ষতের দাগ আছে। তাকে মার্ডার করার পরেই শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে। আগুন লাগার কোনো আলামত আমরা পাইনি। আগুনটা লাগানো হয়েছে তার শরীরে।’
সাবিরার স্বামী সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল এগারোটার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
সাবিরার মামাতো ভাই জানান, সাবিরার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। ছেলে বিবিএ পড়ে, মেয়ের বয়স ৯ বছরের মত। ওনার স্বামী আবুল কালাম আজাদ এখানে থাকেন না। মনোমালিন্যের কারণে এক বছর ধরে আলাদা থাকেন সাবিরা-আজাদ। তবে ওনাদের ভেতরে যোগাযোগ ছিল এবং ভালো সম্পর্ক ছিল।
সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর। আমি অফিসে ছিল আমার এক চাচাতো ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি এখানে আসি। প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বল এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।’
পুলিশ এসে দেখতে পান, সাবিরার গায়ে তিনটা আঘাতের দাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড। ভবনের সুপারভাইজার, দারোয়ান ও সাবলেটে ভাড়ায় থাকা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির অফিসে নেয়া হচ্ছে।
সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফাস্ট লেনের যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেখানে দুই নারী শিক্ষার্থীও সাবলেটে ভাড়া ছিলেন। একজন ঈদের পরে আসেননি। অপর জন ঢাকাতেই ছিলেন। তিনি জানান, মর্নিং ওয়াক করে সকাল আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান সাবিরার রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ি সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়াচ্ছন্ন হওয়া এবং তিনি বেডে শুয়ে আছেন। এরপর উনারা পুলিশকে খবর দেন।
রমনা জোনের ডিবির উপ-পুলিশ কমশনার এইস. এম আজিমুল হক জানান, চিকিৎসক সাবিরার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা বুড়িচংয়ে। রাজধানীর গ্রিন হাসপাতালের রেডিওলজিস্টের দায়িত্বে ছিলেন।
সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসক সাবিরা রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত পেয়েছেন। তার মুখমণ্ডলও ঝলসানো। পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
দশ দফা দাবিতে সারাদেশে চলছে আধাবেলা পেট্রোল পাম্প ধর্মঘট, বন্ধ ডিপো থেকে তেল উত্তোলন ও পরিবহন, বিপাকে পড়েছেন রাজধানীবাসী।
উত্তর বাড্ডার বাসিন্দা বাইক চালক জিয়া হোসেন সকালে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বের হলে দেখেন আশপাশের সব পেট্রোল পাম্প বন্ধ।
নিজের দুরবস্থার কথা জানিয়ে জিয়া বলেন, অনেকেই জানে না আজকে ধর্মঘট চলছে। বাইক ঢেলে ঢেলে নানা পাম্পে ঘুরেও তেল পাওয়া যায়নি।
রাইড শেয়ারের আরেক বাইক চালক মনসুর বলেন, "আমরা প্রতিদিন সকালে তেল নিয়ে কাজে বের হই। আজকে সকাল থেকে প্রতিটা পাম্প বন্ধ। বাইকে তেল না থাকায় বসে থাকতে হচ্ছে।"
প্রাইভেট গাড়ির ড্রাইভার নজরুল জানান, পাম্পে তেল থাকলেও বিক্রি বন্ধ রেখেছে কর্মচারীরা। জ্বালানি না থাকায় সড়কে গাড়ির চাপও তুলনামূলক কম।
সরেজমিনে রাজধানীর মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা, মধুবাগ, শাহজাহানপুর এলাকা ঘুরে দেখা যায় বেশিরভাগ পাম্প বন্ধ।
রামপুরার হাজিপাড়া পেট্রোল পাম্পের কর্মচারী আকবর বলেন, সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ ধর্মঘট চলবে। এসময় তেল উত্তোলন এবং বিপণন বন্ধ থাকবে।
বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদের ডাকা এই ধর্মঘটের মূল দাবি তেল বিক্রির কমিশন ন্যূনতম ৭ শতাংশ করা এবং সড়ক জনপথ অধিদপ্তরের ইজারা মাশুল আগেরটাই বহাল রাখা।
পাম্প সংযোগ সড়কের ইজারা নবায়নের সময় পে-অর্ডারকে নবায়ন হিসাবে গণ্য করা, বিএসটিআই কর্তৃক আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন, ডিপ রড পরীক্ষণ ফি এবং নিবন্ধন প্রথা বাতিল, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিইআরসি, কলকারখানা পরিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্স গ্রহণের নিয়ম বাতিল, বিপণন কোম্পানি থেকে ডিলারশিপ ছাড়া সরাসরি তেল বিক্রি বন্ধ, অননুমোদিতভাবে ঘর বা খোলা স্থানে তেল বিক্রয় বন্ধ, ট্যাংকলরি চালকদের লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স ইস্যুতে জটিলতা দূর করা এবং সব ট্যাংকলরির জন্য আন্তঃজেলা রুট পারমিট প্রদানের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এছাড়া যেখানে-সেখানে ট্যাংকলরি থামিয়ে কাগজপত্র পরীক্ষা না করে ডিপো গেইটে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা এবং সব ট্যাংকলরির জন্য আন্তঃজেলা রুট পারমিট ইস্যু করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রলপাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ ট্যাংকলরি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলে গঠিত এ ঐক্য পরিষদ।
এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সকালে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। বৈঠকের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ নেতারা।
জাকিয়া খন্দকার মমি নামে সাবিরার এক আত্মীয় বলেন, ‘সে (সাবিরা) আমার মেজো খালার মেয়ে। বয়স ৪৭ এর মতো। গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছেন। ফ্লাটে উনি আর ওনার মেয়ে থাকতো। তার স্বামী এক্স ব্যাংকার, ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিলেন। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মেয়ে গতকাল নানুর বাসায় গিয়েছিলেন। ছেলে নানুর বাসায় থাকে। আমার মনে হয় আশেপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
সাবিরা ফ্ল্যাটটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানালেন বাড়িওয়ালা মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমি এই সময় লালমাটিয়া ছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসার এক নারী। তার এই বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট আছে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই সাবলেট মেয়েটা আসে। মেয়েটিকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে রুম লক করা। পরে মিস্ত্রি এনে লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুম ধোঁয়াচ্ছন্ন। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি তিনি বেডের উপরে পড়ে আছেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে ফোন দেয়া হয়।’
সিআইডি অফিসার রাসেল জানান, সাবিরার রুমের ভিতরে সবকিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তার বালিশ কাঁথা এলোমেলো ছিল। সে উপর হয়েছিল। আঘাতগুলো সব পেছন থেকে করা হয়েছে। ঘাড়ে দুইটা ও পিঠে দুইটাসহ মোট চারটি আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে গলার নিচে আঁচড়ের মতো দাগ আছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয় নাই তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে সে অস্ত্রটি এখানে পাওয়া যায়নি। এই কিলারকে প্রফেশনাল কিলার মনে হয়নি।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘যেটা বোঝা যাচ্ছে সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা হয়েছে। তার ঘাড়ে ও পিঠে ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। ঘাড়ের নিচে গভীর ক্ষতের দাগ আছে। তাকে মার্ডার করার পরেই শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে। আগুন লাগার কোনো আলামত আমরা পাইনি। আগুনটা লাগানো হয়েছে তার শরীরে।’
সাবিরার স্বামী সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল এগারোটার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
সাবিরার মামাতো ভাই জানান, সাবিরার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। ছেলে বিবিএ পড়ে, মেয়ের বয়স ৯ বছরের মত। ওনার স্বামী আবুল কালাম আজাদ এখানে থাকেন না। মনোমালিন্যের কারণে এক বছর ধরে আলাদা থাকেন সাবিরা-আজাদ। তবে ওনাদের ভেতরে যোগাযোগ ছিল এবং ভালো সম্পর্ক ছিল।
সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর। আমি অফিসে ছিল আমার এক চাচাতো ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি এখানে আসি। প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বল এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।’
পুলিশ এসে দেখতে পান, সাবিরার গায়ে তিনটা আঘাতের দাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড। ভবনের সুপারভাইজার, দারোয়ান ও সাবলেটে ভাড়ায় থাকা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির অফিসে নেয়া হচ্ছে।
সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফাস্ট লেনের যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেখানে দুই নারী শিক্ষার্থীও সাবলেটে ভাড়া ছিলেন। একজন ঈদের পরে আসেননি। অপর জন ঢাকাতেই ছিলেন। তিনি জানান, মর্নিং ওয়াক করে সকাল আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান সাবিরার রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ি সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়াচ্ছন্ন হওয়া এবং তিনি বেডে শুয়ে আছেন। এরপর উনারা পুলিশকে খবর দেন।
রমনা জোনের ডিবির উপ-পুলিশ কমশনার এইস. এম আজিমুল হক জানান, চিকিৎসক সাবিরার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা বুড়িচংয়ে। রাজধানীর গ্রিন হাসপাতালের রেডিওলজিস্টের দায়িত্বে ছিলেন।
সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসক সাবিরা রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত পেয়েছেন। তার মুখমণ্ডলও ঝলসানো। পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কর্মকর্তাদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে রাজধানীর এনবিআর প্রধান কার্যালয়ের সামনে সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ মে) সকাল থেকেই এনবিআর ভবনের সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অবস্থান নিতে দেখা যায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক এনবিআর কর্মকর্তা জানান, ‘আমরা জেনেছি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ এনবিআর চেয়ারম্যান কার্যালয়ে আসার কথা রয়েছে। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, আজ সরকারি, আধা-সরকারি অফিস, ব্যাংক, স্কুল-কলেজ খোলা রয়েছে। যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
এর আগে, বুধবার আন্দোলনের অংশ হিসেবে এনবিআর চেয়ারম্যানের সঙ্গে সব ধরনের অসহযোগিতাসহ একাধিক নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। ঘোষণা অনুযায়ী, শনিবার সকাল থেকে এনবিআর ভবনে প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেয় কর্মকর্তারা।
সংগঠনের বিবৃতি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাজধানীসহ সারাদেশের এনবিআর কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। তবে রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
আগামী ২৪ ও ২৫ মে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব কার্যালয়ে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালিত হবে, কাস্টমস হাউস ও এলসি স্টেশন বাদে। রপ্তানি ও আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা কর্মবিরতির বাইরে থাকবে।
২৬ মে থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা বাদে ট্যাক্স, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব কার্যালয়ে পূর্ণ কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সংগঠনটি। বুধবার এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানের অবিলম্বে অপসারণের নতুন দাবি যোগ করেছে সংগঠনটি।
এর আগে, সংগঠনের তিনটি প্রধান দাবি ছিল—প্রথমত, প্রস্তাবিত অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে; দ্বিতীয়ত, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ে উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশ ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে; এবং তৃতীয়ত, এনবিআরের প্রস্তাবিত খসড়া ও উপদেষ্টা কমিটির সুপারিশ পর্যালোচনার পর সব স্টেকহোল্ডার—অকাঙ্ক্ষী সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠন, সিভিল সোসাইটি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মতামতের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য ও টেকসই রাজস্ব সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে।
এদিকে, এনবিআরের কাস্টমস, ভ্যাট ও ট্যাক্স বিভাগের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের একটি অ্যাড হক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
জাকিয়া খন্দকার মমি নামে সাবিরার এক আত্মীয় বলেন, ‘সে (সাবিরা) আমার মেজো খালার মেয়ে। বয়স ৪৭ এর মতো। গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছেন। ফ্লাটে উনি আর ওনার মেয়ে থাকতো। তার স্বামী এক্স ব্যাংকার, ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিলেন। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মেয়ে গতকাল নানুর বাসায় গিয়েছিলেন। ছেলে নানুর বাসায় থাকে। আমার মনে হয় আশেপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
সাবিরা ফ্ল্যাটটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানালেন বাড়িওয়ালা মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমি এই সময় লালমাটিয়া ছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসার এক নারী। তার এই বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট আছে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই সাবলেট মেয়েটা আসে। মেয়েটিকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে রুম লক করা। পরে মিস্ত্রি এনে লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুম ধোঁয়াচ্ছন্ন। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি তিনি বেডের উপরে পড়ে আছেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে ফোন দেয়া হয়।’
সিআইডি অফিসার রাসেল জানান, সাবিরার রুমের ভিতরে সবকিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তার বালিশ কাঁথা এলোমেলো ছিল। সে উপর হয়েছিল। আঘাতগুলো সব পেছন থেকে করা হয়েছে। ঘাড়ে দুইটা ও পিঠে দুইটাসহ মোট চারটি আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে গলার নিচে আঁচড়ের মতো দাগ আছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয় নাই তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে সে অস্ত্রটি এখানে পাওয়া যায়নি। এই কিলারকে প্রফেশনাল কিলার মনে হয়নি।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘যেটা বোঝা যাচ্ছে সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা হয়েছে। তার ঘাড়ে ও পিঠে ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। ঘাড়ের নিচে গভীর ক্ষতের দাগ আছে। তাকে মার্ডার করার পরেই শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে। আগুন লাগার কোনো আলামত আমরা পাইনি। আগুনটা লাগানো হয়েছে তার শরীরে।’
সাবিরার স্বামী সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল এগারোটার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
সাবিরার মামাতো ভাই জানান, সাবিরার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। ছেলে বিবিএ পড়ে, মেয়ের বয়স ৯ বছরের মত। ওনার স্বামী আবুল কালাম আজাদ এখানে থাকেন না। মনোমালিন্যের কারণে এক বছর ধরে আলাদা থাকেন সাবিরা-আজাদ। তবে ওনাদের ভেতরে যোগাযোগ ছিল এবং ভালো সম্পর্ক ছিল।
সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর। আমি অফিসে ছিল আমার এক চাচাতো ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি এখানে আসি। প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বল এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।’
পুলিশ এসে দেখতে পান, সাবিরার গায়ে তিনটা আঘাতের দাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড। ভবনের সুপারভাইজার, দারোয়ান ও সাবলেটে ভাড়ায় থাকা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির অফিসে নেয়া হচ্ছে।
সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফাস্ট লেনের যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেখানে দুই নারী শিক্ষার্থীও সাবলেটে ভাড়া ছিলেন। একজন ঈদের পরে আসেননি। অপর জন ঢাকাতেই ছিলেন। তিনি জানান, মর্নিং ওয়াক করে সকাল আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান সাবিরার রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ি সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়াচ্ছন্ন হওয়া এবং তিনি বেডে শুয়ে আছেন। এরপর উনারা পুলিশকে খবর দেন।
রমনা জোনের ডিবির উপ-পুলিশ কমশনার এইস. এম আজিমুল হক জানান, চিকিৎসক সাবিরার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা বুড়িচংয়ে। রাজধানীর গ্রিন হাসপাতালের রেডিওলজিস্টের দায়িত্বে ছিলেন।
সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসক সাবিরা রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত পেয়েছেন। তার মুখমণ্ডলও ঝলসানো। পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
টানা বৃষ্টি এবং আন্দোলন-অবরোধে রাজধানী ঢাকাবাসীর নগর জীবন বিষিয়ে উঠেছে। একটু বৃষ্টি হলেই ঢাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গিয়ে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এতে যানবানবাহনের গতি কমে গিয়ে মানুষের চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি ঢাকায় চলমান বিভিন্ন আন্দোলন ও সড়ক অবরোধের কারণে যানজটের মাত্রা বেড়েছে। এতে মানুষের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে।
বেশ কিছুদিন ধরে তীব্র দাবদাহের পর গত কয়েক দিন থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে কমবেশি বৃষ্টি হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় আজ (বৃহস্পতিবার) সকালেও ঢাকায় বৃষ্টি নামে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এদিন সকালে ঢাকায় ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে টানা মৌসুমি বর্ষণে ঢাকার অলিগলির পাশাপাশি প্রধান সড়কগুলোরও অনেকাংশ তলিয়ে যায়। কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমের পর এই বৃষ্টি স্বস্তি নিয়ে এলেও ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
এদিন সকালে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে সড়কে ধীর হয়ে গেছে যানবাহনের গতি।
এদিকে, বিভিন্ন দাবিতে ঢাকার কয়েকটি স্থানে আন্দোলন ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি চলছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই রাজধানীর শাহবাগ থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী শাহবাগ মোড়ে জড়ো হয়ে দিনব্যাপী অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেন।
একই সময়ে, সকাল ১০টা থেকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নগর ভবন থেকে হাইকোর্ট এলাকা ও মৎস্য ভবন হয়ে কাকরাইল যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেন। ফলে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে তীব্র যানজট; সবকিছু মিলিয়ে নাকাল নগরবাসী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে যানবাহন আটকে থাকতে দেখা যায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন অফিসগামী ও অফিসফেরত, পথচারী, নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। অফিসকর্মীরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন। ছাতা থাকলেও ভারি বর্ষণের কারণে আধভেজা হয়ে অফিসের পথে রওনা দিতে হয় অনেককে।
এদিন ভারি বৃষ্টিপাতে নিউমার্কেট এলাকার সড়কে পানি জমে জলাবদ্ধতা ও তীব্র যানযট সৃষ্টি হয়। এতে জনবহুল নিউমার্কেটের স্বাভাবিক ব্যবসা কার্যক্রমে বাধার সৃষ্টি হয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
এ বিষয়ে আলী খান নামে নিউমার্কেট এলাকার এক হকার বলেন, ‘সকালে মাত্র দোকান খুলেছি, তার কিছু পরেই বৃষ্টি নামল। বৃষ্টি হলেই এই রাস্তায় পানি উঠে যায়, দোকানপাট খোলা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘গত ৪-৫ বছর ধরেই নিউমার্কেট এলাকার এই অবস্থা দেখে আসছি। সিটি করপোরেশন এই বিষয়ে অবশ্যই জানে, তারপরও তারা এ নিয়ে কোনো কাজ করে না। এ কারণে আমাদের কষ্টও আর ফুরায় না।’
আরেক ব্যবসায়ী আব্দুর রব আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘কোনো সরকারই আমাদের দিকে সুনজর দেয়নি। নিউমাকের্ট এলাকায় দ্রুততার সঙ্গে ড্রেন করে পানি বের করার ব্যবস্থা করা দরকার।’
পানি ওঠার কারণে ভোগান্তির কথা তুলে ধরে এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘এখন দুপুর ২টা বাজে, অথচ দিনের বেচাকেনা শুরু করলাম মাত্রই। এভাবে চললে তো আমাদের ব্যবসা গুটিয়ে যাবে। আমাদের সব শেষ। ঋণ হতে হতে এমন অবস্থা যে, নিজের রক্ত বেঁচলেও ঋণ পরিশোধ হবে না।’
জরুরিভিত্তিতে সিটি করপোরেশন যাতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নতি করে, অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে সেই দাবি জানান নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
জাকিয়া খন্দকার মমি নামে সাবিরার এক আত্মীয় বলেন, ‘সে (সাবিরা) আমার মেজো খালার মেয়ে। বয়স ৪৭ এর মতো। গ্রিন লাইফ হাসপাতালে বেশ কয়েক বছর ধরে চাকরি করছেন। ফ্লাটে উনি আর ওনার মেয়ে থাকতো। তার স্বামী এক্স ব্যাংকার, ন্যাশনাল ব্যাংকে ছিলেন। আজকে সাবিরার অফিস ছিল এবং বেশ কয়েকজনের সাথে বাইরে যাওয়ার কথা ছিল। মেয়ে গতকাল নানুর বাসায় গিয়েছিলেন। ছেলে নানুর বাসায় থাকে। আমার মনে হয় আশেপাশের কেউ শত্রুতার জের ধরে তাকে হত্যা করেছে।’
সাবিরা ফ্ল্যাটটি চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভাড়া নিয়েছিলেন বলে জানালেন বাড়িওয়ালা মাহবুব। তিনি বলেন, ‘আমি এই সময় লালমাটিয়া ছিলাম। আমি যতটুকু জানতে পেরেছি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এই ফ্ল্যাট থেকে ধোঁয়া দেখতে পান পাশের বাসার এক নারী। তার এই বাড়িতে একটা ফ্ল্যাট আছে। তার অল্প কিছুক্ষণ পরেই সাবলেট মেয়েটা আসে। মেয়েটিকে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে রুম লক করা। পরে মিস্ত্রি এনে লক ভেঙে ভেতরে ঢুকে দেখি রুম ধোঁয়াচ্ছন্ন। এর কিছুক্ষণ পরে দেখি তিনি বেডের উপরে পড়ে আছেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে ফোন দেয়া হয়।’
সিআইডি অফিসার রাসেল জানান, সাবিরার রুমের ভিতরে সবকিছু এলোমেলোভাবে ছড়ানো-ছিটানো ছিল। তার বালিশ কাঁথা এলোমেলো ছিল। সে উপর হয়েছিল। আঘাতগুলো সব পেছন থেকে করা হয়েছে। ঘাড়ে দুইটা ও পিঠে দুইটাসহ মোট চারটি আঘাতের দাগ পাওয়া গেছে। এর বাইরে গলার নিচে আঁচড়ের মতো দাগ আছে। শ্বাসরুদ্ধ করে তাকে মারা হয় নাই তাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে। যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারা হয়েছে সে অস্ত্রটি এখানে পাওয়া যায়নি। এই কিলারকে প্রফেশনাল কিলার মনে হয়নি।
সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের পরিদর্শক শেখ রাসেল কবির বলেন, ‘যেটা বোঝা যাচ্ছে সাবিরাকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হত্যা করা হয়েছে। তার ঘাড়ে ও পিঠে ক্ষতের দাগ পাওয়া গেছে। ঘাড়ের নিচে গভীর ক্ষতের দাগ আছে। তাকে মার্ডার করার পরেই শরীরে আগুন লাগানো হয়েছে। আগুন লাগার কোনো আলামত আমরা পাইনি। আগুনটা লাগানো হয়েছে তার শরীরে।’
সাবিরার স্বামী সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, ‘আমি সকাল এগারোটার দিকে খবর পেয়ে এখানে আসি। পুলিশ প্রথমে ভেতরে ঢুকতে দেয় নাই। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি রক্তাক্ত লাশ। আমি কাউকে সন্দেহ করতে পারছি না। পুলিশের তদন্তের মাধ্যমে আমি এর সঠিক বিচার চাই।’
সাবিরার মামাতো ভাই জানান, সাবিরার এক ছেলে, এক মেয়ে। ছেলে বড় মেয়ে ছোট। ছেলে বিবিএ পড়ে, মেয়ের বয়স ৯ বছরের মত। ওনার স্বামী আবুল কালাম আজাদ এখানে থাকেন না। মনোমালিন্যের কারণে এক বছর ধরে আলাদা থাকেন সাবিরা-আজাদ। তবে ওনাদের ভেতরে যোগাযোগ ছিল এবং ভালো সম্পর্ক ছিল।
সাবিরা রহমানের মামাতো ভাই মো. দুলাল বলেন, ‘আমার বাসা মোহাম্মদপুর। আমি অফিসে ছিল আমার এক চাচাতো ভাইয়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস দেখে আমি এখানে আসি। প্রথমে আমি শুনেছিলাম আমার বোন আগুনে পুড়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে পুলিশের সাথে কথা বল এবং এখানে এসে দেখলাম যে তার গলা এবং পিঠে আঘাতের দাগ দাগ আছে। এখন মনে হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড।’
পুলিশ এসে দেখতে পান, সাবিরার গায়ে তিনটা আঘাতের দাগ আছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটা একটা হত্যাকাণ্ড। ভবনের সুপারভাইজার, দারোয়ান ও সাবলেটে ভাড়ায় থাকা মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবির অফিসে নেয়া হচ্ছে।
সাবিরা কলাবাগানের ৫০/১ ফাস্ট লেনের যে বাসায় ভাড়া থাকতেন সেখানে দুই নারী শিক্ষার্থীও সাবলেটে ভাড়া ছিলেন। একজন ঈদের পরে আসেননি। অপর জন ঢাকাতেই ছিলেন। তিনি জানান, মর্নিং ওয়াক করে সকাল আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান সাবিরার রুমটা বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ি সুপারভাইজার এবং দারোয়ানকে ডেকে রুমের লকটি ভাঙেন। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়াচ্ছন্ন হওয়া এবং তিনি বেডে শুয়ে আছেন। এরপর উনারা পুলিশকে খবর দেন।
রমনা জোনের ডিবির উপ-পুলিশ কমশনার এইস. এম আজিমুল হক জানান, চিকিৎসক সাবিরার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লা বুড়িচংয়ে। রাজধানীর গ্রিন হাসপাতালের রেডিওলজিস্টের দায়িত্বে ছিলেন।
সুরতহাল করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসক সাবিরা রহমানের শরীরে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত পেয়েছেন। তার মুখমণ্ডলও ঝলসানো। পুলিশের ধারণা, হত্যাকাণ্ডের পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
মন্তব্য